Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইমারতে ইসলামিয়ার ভবিষ্যত: মোল্লা খায়রখাহ –র সাক্ষাতকার

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইমারতে ইসলামিয়ার ভবিষ্যত: মোল্লা খায়রখাহ –র সাক্ষাতকার

    ইমারতে ইসলামিয়ার ভবিষ্যত: মোল্লা খায়রখাহ –র সাক্ষাতকার
    ২৯শে ফেব্রুয়ারি আমেরিকার সাথে দোহা চুক্তির পর (ইসলামি ইমারতের ভবিষ্যত নিয়ে) আলজাযিরা টিভি চ্যানেল মোল্লা খায়রুল্লাহ খায়রখাহ -এর একটি তাফসিলি ইন্টারভিও নেয়। তালেবানদের অফিসিয়াল উর্দু সাময়িকি ‘মাসিক শরীয়ত’ জুলাই ২০২০ইং (মোতাবেক জিলদক ১৪৪১হি.) সংখ্যায় সেটি প্রকাশ হয়। ইন্টারভিওটিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে। পড়ার সময় মনে হলো সারসংক্ষে লিখে ফেলি। অনেকের উপকার হবে। এ হিসেবেই এ লেখাটি। সুওয়াল জওয়াব হুবহু অনুবাদ নয়। নিজের ভাষায় সারসংক্ষেপ। বিস্তারিত শরীয়ত সংখ্যায় পাবেন।


    মোল্লা খায়রুল্লাহ খায়রখাহ –এর পরিচয়

    তিনি তালেবানদের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্যদের অন্যতম। তালেবান শাসনামলে প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। শেষ দু বছর হেরাতের গভর্নর ছিলেন। আমেরিকান আগ্রাসনের সময় গ্রেফতার হন। ১৩ বছর গোয়ান্তানামুতে বন্দী জীবনের পর তালেবানদের হাতে আটক হওয়া আমেরিকান এক জেনারেলের সাথে বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে ২০১৪ সালে তাকে মুক্ত করা হয়। তিনি দোহা আলোচনা কমিটির সদস্য ছিলেন।

    ইন্টারভিও (সারসংক্ষেপ)
    আলজাযিরা: কাবুল প্রশাসন বলছে, আপনারা কাবুল সেনাদের উপর আরও জোরদার হামলা করছেন। যদি শান্তিই আপনাদের উদ্দেশ্য তাহলে হামলা করছেন কেন?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ: হামলার জন্য তারাই দায়ী। তারা তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে চৌকি বানাতে আসে। তখন হামলা না করে উপায় কি?

    তাছাড়া কাবুল প্রশাসনের সাথে যুদ্ধ বিরতির কোনো কথা হয়নি। চুক্তি হয়েছে আমেরিকার সাথে। তারা আমাদের উপর হামলা করবে না আমরা তাদের উপর হামরা করবো না। কাবুল পুতুল সেনাদের উপর হামলা হবে না এমন কোনো চুক্তি হয়নি। এতদসত্বেও আমরা শহরগুলোতে এবং তাদের বড় সেনা ক্যাম্পগুলোতে হামলা করছি না।

    আলজাযিরা: আপনারা কি মনে করছেন অচিরেই আফগান শান্তি আলোচনা শুরু হবে?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ:
    জি, হ্যাঁ। এমনটাই আশা করছি।

    আলজাযিরা: কিন্তু আপনারা তো কাবুল প্রশাসনকে স্বীকৃতিই দেন না। একে অপরকে হত্যা করতে প্রস্তুত। তাহলে শান্তি আলোচনা কিভাবে হবে?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ: শান্তি আলোচনা কাবুল প্রশাসনের সাথে হবে এমনটাতো আমরা বলিনি। আমেরিকার সাথে চুক্তিতে কথা হয়েছে আমরা আফগান জনগণের সাথে আলোচনা করবো। কাবুল প্রশাসনের সাথে আলোচনা হবে তা তো চুক্তিতে বলা হয়নি। আমরা আফগানের প্রতিটি নাগরিকের সাথে আলোচনায় বসতে সম্মত। এটাই আমরা বলেছি। কাবুল প্রশাসনকে তো আমরা একটা বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবেও স্বীকৃতি দেই না যে, তাদের সাথে আলোচনায় যাব। চুক্তিতে পাঁচ হাজার মুজাহিদ মুক্তির শর্ত এজন্যই লাগানো হয়েছিল যে, কাবুল প্রশাসনকে আমরা বিশ্বাস করতে পারি না। তবে যদি তারা শর্তমতো পাঁচ হাজার তালেবানকে মুক্তি দিয়ে দেয় তাহলে কিছুটা বিশ্বাস জন্মাবে। এজন্যই বন্দী মুক্তির শর্তটি করা হয়েছে।

    অধিকন্তু শর্তটি তো কাবুল প্রশাসনের সাথে করা হয়নি। করা হয়েছে আমেরিকার সাথে। আমরা কখনই কাবুল প্রশাসনের কাছে বন্দী মুক্তি তলব করবো না। আমেরিকা কাবুল প্রশাসনকে আদেশ দেবে আর কাবুল প্রশাসন আমাদের বন্দীদের মুক্তি দেবে। আমরা কাবুল প্রশাসনের কাছে তলব করবো না।

    আলজাযিরা: আমেরিকা চলে যাওয়ার পর কি হবে?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ: আমরা আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চাই। আফগান চল্লিশ বছর যাবত যুদ্ধে জড়িয়ে আছে। এ ভূমিতে শক্তির জোরে কখনও সমাধান হয়নি। তাই আলোচনা দরকার। আমরা সারা আফগানবাসীর সাথে আলোচনায় বসবো। আফগানের একটা অংশ হিসেবে কাবুল প্রশাসনও আলোচনায় শরীক থাকবে। সকলের পরামর্শক্রমে যে হুকুমত প্রতিষ্ঠা হবে তাই হবে একটি কামিয়াব হুকুমত। শক্তির জোরে ক্ষমতা দখল করে আফগান ভূমিতে কখনও সমাধান আনা সম্ভব নয়।

    আলজাযিরা: বলা হচ্ছে, আমেরিকান সৈন্যদের হত্যার বদলায় তালেবান রাশিয়া থেকে অর্থ নিয়েছে। এটি কতটুকু সঠিক?

    মোল্লাখায়রুল্লাহ: এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা। আমরা তদন্ত করে দেখেছি যে, এটি কাবুল প্রশাসানের গোয়েন্দা বিভাগের কাজ। এরা বন্দীদের উপর নির্যাতন করে স্বীকার করতে বাধ্য করেছে যে, তারা আমেরিকান সৈন্যদের হত্যার বিনিময়ে রাশিয়া থেকে অর্থ পাচ্ছে। এরপর একটি রিপোর্ট তৈরি করে মিডিয়ায় প্রচার করেছে। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না যে, তালেবান রাশিয়া থেকে অর্থ বা সামরিক সহায়তা নিয়েছে। কাবুল চাচ্ছে বিদেশি সৈন্যরা আফগান ছেড়ে না যাক। এজন্যই তারা প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে যে, আমেরিকা চলে গেলে আফগানে রাশিয়া প্রভাব বিস্তার করবে।

    আলজাযিরা: আফগানের কত ভাগ এলাকা আপনাদের দখলে? সেখানকার অবস্থা কেমন?

    মোল্লাখায়রুল্লাহ: মোটামুটি সত্তর ভাগ এলাকা তালেবানের দখলে। এখানকার অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল। আদালত ব্যবস্থা কায়েম আছে। কাবুল প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো থেকে পর্যন্ত লোকজন আমাদের এখানে মামলা নিয়ে আসে। কারণ, এখানে ঘুষ চলে না। বিচারও হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। বিনা কারণে অনর্থক দেরি করা হয় না। অবশ্য আমাদের একটা দুর্বলতা যে, আমরা এখন অর্থ সংকটে আছি। অধিকাংশ এনজিও, ট্রাস্ট কাবুলকে সহায়তা দেয়, আমাদের দেয় না। তবে আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে আশাবাদি যে, অচিরেই এ সংকট দূর হয়ে যাবে। তালেবান শাসন কায়েম হয়ে যাওয়ার পর উন্নতি হবে। আফগানবাসী শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারবে।

    আলজাযিরা: পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো বলছে যে, তালেবান ক্ষমতায় আসলে আফগানের উন্নতি বলতে কিছু থাকবে না। নারী অধিকার, নারী স্বাধীনতা কিছু থাকবে না।

    মোল্লা খায়রুল্লাহ:
    তালেবানরা প্রথমে যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও আফগানে উন্নতি হয়েছিল। যদিও যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল তথাপি যথেষ্ট উন্নতি ছিল এবং নজির বিহিন শান্তি কায়েম ছিল। নারীদের শিক্ষা দীক্ষারও সুব্যবস্থা ছিল। অবশ্য আমরা খুব বেশি এগুবার সুযোগ পাইনি সেটা ভিন্ন কথা।

    আর নারী অধিকারের ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট স্বোচ্চার। নারী জাতি বড়ই মজলুম। গোটা তালেবান শাসনামলে অল্প দুয়েকটি ছাড়া নারী নির্যাতনের কোনো ঘটনা ছিল না। অথচ আজ কাবুল প্রশাসনে অহর্নিশি নারী নির্যাতিত হচ্ছে। আমেরিকা নারী অধিকারের বুলি আওড়াচ্ছে তো এগুলোর কোনো প্রতিকার নেই কেন? আমরা ইসলামের গণ্ডির ভিতরে থেকে নারীদের শিক্ষা দীক্ষা ও উন্নতির ফিকির করছি। কিন্তু কিছু মহিলা আছে ইউরোপ আমেরিকার মতো চলতে চায়। এটা তো কিছুতেই হতে দেয়া যায় না।

    আলজাযিরা: আলকায়েদা ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠন এক সময় আফগানে ছিল এবং সেখানে তাদের গোপন আস্তানা ছিল। কি নিশ্চয়তা আছে যে, তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠার পর আবার আফগান তাদের অভয়ারণ্য হবে না?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ:
    আসলে তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠার আগেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদে তারা আফগানে এসেছিলেন। তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠার পর আস্তে আস্তে নিজ নিজ দেশ ও অন্যান্য রাষ্ট্রে চলে যান। আফগান জিহাদে তখন তাদের প্রয়োজনও ছিল। এখন তো তালেবানরা যথেষ্ট শক্তিশালী। সব কিছু তাদের কঠোর নিয়ন্ত্রণে। বাহিরের লোকজনের দরকার নেই। আর আমরা এখন চুক্তিও করেছি যে, আমাদের ভূমি কারো বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। আর তারা জানেন যে, আমরা চুক্তি রক্ষায় কঠোর। তাই আশাকরি এখন তারা আর এ উদ্দেশ্যে এখানে আসবেন না। এ উদ্দেশ্যে কেউ আসতে চাইলে অনুমতি দেয়া হবে না।

    (এ প্রসঙ্গটি ইনশাআল্লাহ আমি একটি স্বতন্ত্র পোস্টে আলোচনা করবো। আশাকরি তখন এ শর্তের মূল মাকসাদ এবং শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধতা পরিষ্কার হবে। আর তালেবানরা পরিষ্কার বলেছে, সকল শর্ত শরীয়তের প্রতি লক্ষ রেখেই করা হয়েছে।)

    আলজাযিরা: আফগানে কিছু কিছু অমানবিক হামলা হয়েছে। যেমন হাসপাতালে হামলা, উলামাদের টার্গেটকিলিং। বলা হয় এগুলো তালেবান করেছে। এগুলোর ব্যাপারে কি বলেন?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ: এগুলো কাবুল গোয়েন্দা সংস্থার কাজ। জনগণের কাছে তালেবানদের বদনাম করার জন্য তারা এসব অমানবিক কাজ করেছে। কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা মাঠে মারা গেছে। জনগণ জানে যে, তালেবান মুসলমান। জাতির প্রতি দরদি। তারা এগুলো করেনি। কোনো কোনো আলেম তো বড় বড় মজলিসে প্রকাশ্যেই বলেছেন যে, এগুলো কাবুল প্রশাসনের কাজ।

    আলজাযিরা: সর্বশেষ প্রশ্ন, তালেবান শাসন পতন হয়েছে বিশ বছর হলো। এতদিনে তো আফগানের মানুষ অনেক বদলে গেছে। চিন্তাধারা পাল্টে গেছে। এখন নতুন তালেবান শাসনে তাদের উন্নতি এবং স্বাধীনতা কেমন হবে?

    মোল্লা খায়রুল্লাহ: হ্যাঁ, মানুষ অনেক বদলে গেছে। ব্যাপকভাবেই বদলে গেছে। এটা আমাদেরও ফিকির আছে। তবে আমরা সবসময় জাতির তারাক্কি-উন্নতির জন্য নিবেদিত। আমরা আমাদের জাতিকে একটি উন্নত জাতি হিসেবে দেখতে চাই। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ জাতির উন্নতিকল্পে হবে। জাতি চল্লিশ বছর যাবৎ দুঃখ কষ্টে জর্জরিত। আমরা তাদের আরও কষ্ট দিতে চাই না।

    আর ইসলামী গণ্ডির ভেতর থেকে যতটুকু স্বাধীনতা দেয়া যায় তার সর্বোচ্চটুকু আমরা দেবো। এ ধরনের স্বাধীনতার আমরা কখনই বিরোধী নই।


  • #2
    মাশা আল্লাহ, উপকারী পোস্ট। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ্ শায়েখের মত আমাদের কেও কবুল করুন,
      জান্নাতে আমাদের সকলকে একত্রিত করুন আমীন।

      Comment


      • #4
        আলহামদুলিল্লাহ,, আল্লাহ আমাদেরও কবুল করুন আমীন।
        বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ! উপকারী পোস্ট। জাযাকাল্লাহু খাইরান!

          (এ প্রসঙ্গটি ইনশাআল্লাহ আমি একটি স্বতন্ত্র পোস্টে আলোচনা করবো। আশাকরি তখন এ শর্তের মূল মাকসাদ এবং শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধতা পরিষ্কার হবে। আর তালেবানরা পরিষ্কার বলেছে, সকল শর্ত শরীয়তের প্রতি লক্ষ রেখেই করা হয়েছে।)
          সামনের পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম মুহতারাম!
          বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
          কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ, সুন্দর হয়েছে ভাই...
            আপনার পোস্টের অপেক্ষায় থাকি ভাই...
            তাই আমাদেরকে ভুলে যাবেন না ভাই...
            জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা।
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ,,,।
              অনেক উপকারী পোষ্ট করেছেন ভাই...
              প্রিয় ভাই! আপনার পোষ্টের অপেক্ষায় থাকি ভাই..
              ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহ।

                Comment

                Working...
                X