Announcement

Collapse
No announcement yet.

“ফুরসান তাহতা রায়াতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” সিরিজ-১১

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • “ফুরসান তাহতা রায়াতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” সিরিজ-১১

    দ্বিতীয় অধ্যায়: সাদাত নিহত, অতঃপর আসামী

    তৃতীয় পরিচ্ছেদ
    ইসাম আল কামারি: মহত্ব, বীরত্ব ও শাহাদাহ

    ১- নিরাপত্তাবাহিনী যে সকল গুরুত্বপূর্ণ জিহাদি গ্রুপগুলোর সন্ধান পেয়েছিল, তন্মধ্যে আরেকটি হল, ভাই শহীদ ইসাম আল কামারির গ্রুপ।

    ইসাম আল কামারির আলোচনা আসলেই একটু বিরতি নিতে হয়। কারণ তিনি ছিলেন সেসকল বিরল প্রতিভাবান ব্যক্তিদের অন্যমত, যারা নিজেদের জিহাদী পরিচিতি ও মর্যাদার যথাযথ হক পাননি। আমাদের দেশের মিডিয়া ও প্রচারমাধ্যমগুলো ইসলামের শত্রুদের হাতে, যারা এদের বিষয়গুলো যথাযোগ্য প্রচার করে না। মুসলিমদেরকে এদের থেকে বঞ্চিত করে। আর তা সেই পশ্চিমা রাজনীতি অনুসরণের কারণেই, যারা সকল মিডিয়া ও প্রচার মাধ্যমগুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করে আছে।

    ইসাম আল কামারি ছিলেন একজন প্রেরণাশীল পুরুষ। যৌবনের সূচনালগ্ন থেকেই ইসলামকে নিজের প্রেরণার উৎসরূপে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার সরকার অপসারণের আবশ্যকীয়তা উপলব্ধির প্রাথমিক অবস্থাগুলো সম্পর্কে আমাকে বলেন, তার মাধ্যমিক লেভেলে পড়াশোনার কোন এক সময়ে তার পাড়ায় একজন অচল যুবক ছিল। কিন্তু সে অশ্লীলভাষী ছিল। যুবতীদেরকে অশালীন কথাবার্তা বলত। তাই ইসাম আল কামারি তাকে থামাতে গিয়ে প্রহার করলেন। তখন উক্ত যুবকের বাবা এসে ইসামের বাবার নিকট ইসামের ব্যাপারে অভিযোগ করলে তার বাবা তাকে এই অচল লোকটিকে মারার জন্য শাশাতে লাগলেন। তখন ইসাম তাকে এই যুবকের অশ্লীল কথাবার্তার বিষয়টা জানালেন। এ সময় তাদের ঘরে বেড়াতে আসা তার এক আত্মীয় ছিল। তিনি ইসামকে বললেন: তুমি এই ছোট অপরাধিকে মারার পরিবর্তে তোমার উচিত হল বড় অপরাধিকে মারা, যে এই দেশ শাসন করছে।

    তার এই উপলব্ধি হওয়ার পরই তিনি মিশরের ভ্রষ্ট শাসনব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে সামরিক কলেজে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ ছিল তার উচ্চাভিলাস, অথচ তিনি সবেমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাস করা শিক্ষার্থী।

    তিনি রহ. আমাকে বলেন: তিনি সামরিক কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তার পিতাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন: আপনি কি জানেন আমি কেন সামরিক কলেজে ভর্তি হয়েছি? তার পিতা বললেন: কেন? বললেন: যেন আমি মিশরে একটি সামরিক বিপ্লব ঘটাতে পারি। তার পিতা নির্বাক হয়ে গেলেন। কিন্তু তিনি কিছু করতে পারলেন না। কারণ ইতিমধ্যে ইসাম সামরিক কলেজে ভর্তি হয়ে গেছেন।

    মাধ্যমিকের ফাইনাল পরিক্ষায় ইসামের মোট নম্বর তাকে চিকিৎসা, প্রকৌশল ও এজাতীয় বিষয়গুলো সহ একাধিক থিওরিক্যাল কলেজে ভর্তির যোগ্য প্রমাণ করেছিল। স্বাভাবিকভাবে মানুষ সামরিক কলেজের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যা কলেজে ভর্তি হওয়াকে শ্রেষ্ঠ মনে করত এবং এখনো করে। কিন্তু ইসাম তার মনের ভিতরের সুপ্ত কারণে এই ব্যাপক প্রচলনের বিপরীত করলেন।


    ২- সামরিক কলেজে গিয়ে তিনি আলবি মুস্তফা আলিওয়ার ভাই মুহাম্মদ মুস্তফা আলিওয়ার সাথে পরিচিত হন, যিনি আমাদের জামাতে অনুরূপ আরেকজন উদ্যমী লোক ছিলেন। তিনি নিজ ভাইয়ের সাথে তাকেও আমাদের জামাতে যুক্ত করেন। এভাবে ইসাম আল কামারি মিশরের মুজাহিদগণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলেন। তিনি এ পথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে শাহাদাত লাভ পর্যন্ত সর্বদা এই দ্বীনের পথে ফলপ্রসু অবদান ও আন্তরিক কুরবানী রেখে গেছেন।

    এই উন্নত পথে তাকে সাহায্য করেছিল তার উন্নত স্বভাব-চরিত্র। ইসাম আল কামারি পৌরষের সর্বার্থেই একজন সুপুরুষ ছিলেন এবং উচ্চতার সর্বার্থেই একজন সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি সন্তুষ্টি ও প্রশান্তির সাথে যত কষ্ট সহ্য করেছেন এবং কুরবানী পেশ করে গেছেন, তার কারণ ছিল তার সুউচ্চ, সুউন্নত ও মর্যাদাময় ব্যক্তিত্ব।

    এমনকি তিনি পলাতক থাকাবস্থায় যখন তার কারাবন্দি অফিসার সাথীদেরকে সামরিক গোয়েন্দা হিসাবে টিম-৭৫ এর কারাগার থেকে সামরিক আদালতে স্থানান্তর করা হচ্ছিল, তখন তাদেরকে মুক্ত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে মনস্থ করেন। আমি যখন তাকে জবাব দিলাম: আমাদের তো এরকম সামর্থ্য নেই, তখন তিনি রাগান্বিত হয়ে প্রতিউত্তর করলেন: আমরা যদি এসকল ভাইদেরকে মুক্ত করার জন্য আমাদের সর্বস্ব, এমনকি আমাদের পোষাকগুলোও বিক্রি করে দেই, তবু এদের হক আদায় করতে পারব না।

    কারাগারে তার যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তাকে চির স্মরণীয় করে রাখবে, তা হচ্ছে: মৃত্যুদণ্ডাদেশের জন্য অপেক্ষমান ভাইদেরকে পালাতে সাহায্য করার চেষ্টা করা। রায় প্রকাশের পর তিনি আমার নিকট অভিযোগ জানালেন যে, তিনি দীর্ঘমেয়াদি দণ্ডপ্রাপ্ত ভাইদেরকে পলায়নের সুযোগ করে দিতে চান; কিন্তু তাদের কেউ কেউ দ্বিধাগ্রস্থ। তখন আমি তাকে উপদেশ দিলাম, তিনি যেন পলায়নের ব্যবস্থা করতে থাকেন। অতঃপর যখন সুযোগ এসে যাবে, তখন যারা একমত হবে, তারা পলায়ন করবেন আর যারা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব করবে তাদেরকে বাদ দিবেন।

    ইসাম আল কামারির মহান বৈশিষ্ট্যাবলীর অন্যতম ছিল তার শালীনতা, স্বভাবগত নম্রতা, ভাইদের খেদমতের ব্যাপারে আগ্রহ এবং ভাইদের প্রতি ভালোবাসা। কিন্তু কেউ যদি তাকে ছোঁড়ে ফেলার বা ধোঁকা দেওয়ার বা আদর্শগত অবনতিকে শুদ্ধ দেখানোর চেষ্টা করত, তখন তার ব্যাপারে খোলাখুলি ও সিদ্ধান্তমূলক কথা বলতেন, চাই সে যেই হোক না কেন।

    এমনিভাবে কাজেকর্মে তার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতাও ছিল। জনৈক নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি আমাকে জানান যে, তিনি তার শাহাদাতের কিছুদিন পূর্বে কারাগারে অবস্থানরত আল জামাআলাতুল ইসলামিয়ার নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে বলতেন: “এরা হল নবাগত সাথী”। তিনি একথাটি বলেছিলেন ১৯৮৮ সালে। অর্থাৎ ‘প্রথম উদ্যোগ’ প্রকাশিত হওয়ার প্রায় ৮ বছর আগে। আমি এ বিষয়টি গোপন রেখেছিলাম। প্রচার করিনি। কিন্তু এখন, যখন উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ যে পর্যন্ত পৌঁছার পৌঁছেছে, এখন প্রচার করতে কোন সমস্যা নেই।

    ইসাম আল কামারির অনন্য বৈশিষ্টাবলীর আরেকটি হল কঠিন মুহূর্তে ও বিপদের সময়গুলোতে অবিচলতা ও স্থিরতা। ভাই নাবিল নাঈম (আল্লাহ তাকে কারামুক্ত করুন!) আমাকে জানান: জামালিয়ার যুদ্ধে তারা তিনজন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীর একটি দল ও পুলিশ বাহিনীর অন্যান্য কয়েকটি গ্রুপ দ্বারা বেষ্টিত ছিলেন। সেখানে ইসাম সীমাহীন স্থিরতার সাথে কাজ করতে লাগলেন। যেন তিনি স্বাভাবিক কাজকর্মে আছেন, কোন যুদ্ধে নেই।


    ৩- ইসাম আল কামারি সামরিক কলেজ থেকে বের হওয়ার পর সাঁজোয়া কর্পসে যুক্ত হন, যা তিনি ভালোবাসতেন এবং একাজে উচ্চস্তরেও পৌঁছেছিলেন। তিনি আমাদেরকে মাঝে মাঝে বলতেন: এই অস্ত্রটি মুসলমানদের অস্ত্র হওয়া উচিত। কারণ এতে প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করা ও যুদ্ধ চূড়ান্ত করে ফেলার শক্তি আছে।

    সাঁজোয়া কর্পসে ইসাম আল কামারি অনন্য লক্ষণীয় উচ্চতর অবস্থান অর্জন করেছিলেন। কারণ ইসাম সামরিক জ্ঞান অধ্যয়ন ও উপলব্ধি করা এবং বাস্তব ময়দানের অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন। কেননা তিনি এটাকে আল্লাহর পথের পরিশ্রম মনে করতেন। একারণে ইসাম তার প্রত্যেকটি প্রশিক্ষণ কোর্সে উচ্চস্থান লাভ করা এবং নিজ সহকর্মীদের মাঝ্যে সেরা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।

    একারণেই তিনি আমেরিকায় ব্যাটালিয়ন প্রধানদের কোর্সের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন আর সেখানেও তিনি ছিলেন অগ্রগামী এবং তারপর রিপাবলিকান গার্ডে ‘সাঁজোয়া ব্যাটালিয়ন প্রধান’ হিসাবে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল। ইসাম খুব গুরুত্বের সাথে এ পদটির জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন।

    অবশেষে কেবল একজন ভাইয়ের জোর প্রচেষ্টার ফলে তিনি এ কোর্স থেকে ফিরে আসেন। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। উক্ত ভাই তাকে এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, ১৯৮১ সালই হবে মিশরে পরিবর্তনের বছর এবং তিনি যুবকদের বিশাল একটি সংখ্যাকে জিহাদী জামাতে ভেড়াতে সক্ষম হবেন।
    এ বিশাল কল্পনার ভিত্তিতেই ইসাম আমেরিকা সফর না করার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে এর পরিবর্তে ‘আরকানুল হারব’ কলেজের জন্য মনোনীত হন। এভাবে তিনি সাঁজোয়া কর্পসের একজন দুর্লভ অফিসারে পরিণত হন, যাকে এমন কলেজের জন্য মনোনীত করা হচ্ছে আর এখানেও তিনি অগ্রগামী।


    ৪- জিহাদী কর্মকান্ডে ইসামের বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ও দর্শন ছিল। তিনি তার প্রয়োজনীয় উপকরণ সামগ্রীর যোগান দিতেও আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা ভাগ্যে লিখা ছিল না বলে হয়ে উঠেনি।

    এ দৃষ্টিভঙ্গিটি বাস্তবায়ন করার মত উপকরণ যোগান দেওয়া সম্ভব হলে এর যথাযোগ্য কার্যকরিতাও ছিল। নিম্নে উক্ত দৃষ্টিভঙ্গির মূলকথাগুলো দেওয়া হল:

    ক. আমাদের দেশের শাসনব্যবস্থা এত বেশি নিরাপত্তা সতর্কতা অবলম্বন করেছে, যেগুলো স্বশস্ত্র শক্তি ব্যতিত মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এমন স্বশস্ত্র শক্তি, যাদের বিরাট পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র ও কিছু সাঁজোয়াযান থাকবে, যার মাধ্যমে রাজধানীতে প্রভাব বিস্তার ও যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে এবং এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ টিকে থাকতে পারবে। এ সময়ের মধ্যে সরকারের প্রধান প্রধান ভিত্তিগুলো পরিস্কার হয়ে যাবে আর অবশিষ্ট বাহিনীর মাঝে হতাশা ছেয়ে যাবে।

    খ. জিহাদী আন্দোলনের আছে হাজার হাজার যুবক, যারা শাহাদাত লাভের জন্য পরস্পর প্রতিযোগীতা করে। কিন্তু এ সকল যুবকরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বা যুদ্ধবিদ্যা সম্পন্ন নয়।

    গ. ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা সেনাবাহিনীর ভেতরে ঢুকে পড়লে সর্বদাই শুদ্ধি অভিযানের মুখোমুখী হবে। ইসলামী আন্দোলনের জন্য সেনাবাহিনীর ভেতরে থেকে নিজেদের তথ্য ফাঁস হওয়া ব্যতিত বিরাট সংখ্যক সেনা অফিসার তৈরী করা বড় কঠিন। যেহেতু স্বশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে অনেক সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম নিরাপত্তা নজরদারি রয়েছে।

    ঘ. একারণে ইসামের চিন্তা ছিল মুসলিম যুবকদের মধ্য থেকে কয়েক শ’ যুবককে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং ট্যাংক ব্যবহার ও পরিচালনার যোগ্যতা তৈরী করা, চাই প্রাথমিক পর্যায়ের হোক না কেন।

    ঙ. আর পুলিশ ফোর্স এবং ফাড়ি নিরাপত্তারক্ষী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত নিরাপত্তা বাহিনীকে ইসাম খুব হালকা দৃষ্টিতে দেখতেন। মুজাহিদগণের জন্য সামিরক পরিস্থিতির উপর তথ্য নির্ভর বিশ্লেষণমূলক থিওরিক্যাল দৃষ্টি না রেখে শুধু পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া বা তাদের উপর আক্রমণ করাকে ইসাম পছন্দ করতেন না।

    ইসাম প্রশিক্ষিত মুসলিম যুবকদের ব্যাপারে খুব আস্থাশীল ছিলেন। তিনি বলতেন: পুলিশরা আমাদের উপর বীরত্ব দেখায়, যেহেতু আমাদের ভাইয়েরা প্রশিক্ষিত নন। কিন্তু আমরা যদি তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেই এবং সামান্য কিছু অস্ত্র দেই, তাহলে একজনও তাদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।
    কারাগারে ঢোকার আগে ও কারাগারে থাকাবস্থায় দীর্ঘদিন এ দর্শনটি আমার ও তার মাঝে প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে: পরবর্তী অনেকগুলো ঘটনাই তার দৃষ্টিভঙ্গি সত্যে পরিণত করেছিল।

    এ দর্শনটি ছিল দু:সাহসী। যা বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন ও বাস্তব তথ্যাদির দূরদর্শী বিশ্লেষণের উপর নির্ভরশীল ছিল। এজন্য এটা পরিপূর্ণ খাপ খায় ইসামের ব্যক্তিত্বের সাথেই, যার মাঝে এ সকল উপাদানগুলোর সমন্বয় ঘটেছিল, তথা দু:সাহসী অন্তর, সামরিক জ্ঞান ও নিয়মিত পরিশ্রম। আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন!

    এ দর্শনের অনেক বিস্তারিত আলোচনা ও বিভিন্ন দিক আছে। আমি এখানে শুধু মৌলিক চিন্তাগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম।


    ৫- ‘১৯৮১ সাল হতে পারে পরিবর্তনের বছর’ মর্মে যে মতামত পেয়েছিলেন, তার উপর আস্থা রেখেই তিনি ও তাঁর সহযাত্রী অফিসারগণ পরিশ্রম করে যেতে লাগলেন, যাদেরকে তিনিই সেনাবাহিনীর ভেতর থেকে যত সম্ভব অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। আর আমরা এ সকল অস্ত্রগুলো জমা করার দায়িত্ব পালন করছিলাম।

    এ সকল অস্ত্রের সর্বশেষ চালানটি আমার ক্লিনিক থেকে তার নির্ধারিত স্থানে স্থানান্তর করার সময়ই ব্যাগ বহনকারী গ্রেফতার হন। ব্যাগটি ছিল কাগজের, যার মধ্যে কিছু কিতাব ও সামরিক বই-পুস্তকের সাথে কতগুলো অস্ত্র ছিল। তবে ব্যাগ বহনকারী ব্যাগ ফেলে পলায়ন করতে সক্ষম হন। কিন্তু ব্যাগের কিছু কাগজ-পত্র এবং কায়রোর ট্যাংক এরিয়ার স্বাক্ষর সংবলিত কিছু মানচিত্রের কারণে ইসাম আল কামারির অধীনস্ত অফিসার দল পর্যন্ত পৌঁছা সম্ভব হয়ে গেল। তাদের পৌঁছার পূর্বেই ইসাম আল কামারি ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে পলায়ন করলেন। কিন্তু তার সহযোগীদের মধ্য থেকে কয়েকজন অফিসার গ্রেফতার হলেন।

    ইসাম ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পালিয়েই থাকেন। অবশেষে আনওয়ার সাদাত হত্যার কিছুদিন পরই গ্রেফতার হন। এ দীর্ঘ সময়ে ইসাম ছিলেন নিজের স্বভাবমত ধৈর্যশীল। কোন অভিযোগ, অনুতাপ, বা নিন্দা করতেন না। কাউকে ভর্ৎসনা করতেন না। বরং বিষয়টাকে সহজ করে ফেলতেন, নিজ ভাইদের সংকল্প বাড়িয়ে তুলতেন এবং তাদের মনোবল শক্তিশালী করতেন।

    আমার মনে পড়ে, একবার তার জন্য পরিস্থিতি সংকীর্ণ হয়ে আসল। ফলে যে ক’দিন আমার ক্লিনিকের নার্সকে ছুটি দেই, সে ক’দিন তার থাকার জন্য আমার গৃহ ব্যতিত কোন জায়গা পেলাম না। তারপর তাকে ক্লিনিকে স্থানান্তর করি। এছাড়া যেহেতু তার জন্য রাতের বেলা যেকোন আলো না জালানো এবং দিনের বেলা যেকোন শোরগোল সৃষ্টি না করা আবশ্যক ছিল, তাই আমরা বললাম, ক্লিনিকে ছুটি চলছে।

    আমি রাতের বেলা ক্লিনিকের খোঁজ-খবর নেওয়ার অজুহাতে তার জন্য খাবার নিয়ে আসতাম এবং তাকে আশান্বিত করতাম। তখন আমি তাকে খুব ধৈর্যশীল ও সন্তুষ্ট দেখতে পেতাম। কোন অস্থিরতা প্রকাশ করতেন না।

    পলায়নরত অবস্থায়ও ইসামের উদ্যমতায় একুটুও ভাটা পড়েনি। বরং এর বিপরীতে, প্রতিটি মুহূর্তে এত বিপদ ও এত মানসিক চাপ-অস্থিরতা সত্ত্বেও তিনি কাজ ও চেষ্টা থেকে নিবৃত্ত হননি। এ সময় তিনি কয়েকটি টার্গেট, তথা ফোর্স স্পট ও পুলিশ ষ্টেশন খুঁজে বের করলেন, বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন এবং কয়েকটি প্র্যাকটিসও করলেন।


    ১ম পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232535%3B

    ২য় পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232536%3B

    ৩য় পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232537%3B

    ৪র্থ পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232538%3B

    ৫ম পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232539%3B

    ৬ষ্ঠ পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232540%3B

    ৭ম পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232541%3B

    ৮ম পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232542%3B

    ৯ম পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...-%26%232543%3B

    ১০ পর্ব
    https://82.221.139.217/showthread.ph...B%26%232534%3B

  • #2
    এ গুরুত্বপূর্ণ রিসালাহ সকলকে পড়ার আহ্বান করছি ৷
    গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আপনাদের কাজে বারাকাহ দিন। যে বিশাল কাজের জিম্মাদারী নিয়েছেন, তা আসান করে দিন।
      আপনাদের কাজগুলোকে কবুল ও মাকবুল করুন। আমীন
      মুহতারাম ভাইয়েরা- নিয়মিত পড়ার জন্য আপনাদেরকে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি...
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        আল্লাহ তায়া-লা আমাদের সকলকে ইসাম ভায়ের মত
        কবুল করুন আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।

        Comment


        • #5
          আল্লাহ আমাদেরকেও মুজাহিদ হিসেবে কবুল করুন আমীন। ইসাম রহ কে জান্নাতে উঁচু মাকাম দান করুন আমীন।
          আল্লাহ আমাদের মুজাহিদ হিসেবে কবুল করে নিন আমীন।

          Comment


          • #6
            আলহামদুলিল্লাহ,, ভাইজান নিয়মিত পড়ছি। আল্লাহ আপনাদের কাজগুলো কবুল করুন আমীন
            ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

            Comment


            • #7
              Originally posted by Bara ibn Malik View Post
              আলহামদুলিল্লাহ,, ভাইজান নিয়মিত পড়ছি। আল্লাহ আপনাদের কাজগুলো কবুল করুন আমীন
              জি ভাই, জাযাকাল্লাহ। আমীন!

              Comment

              Working...
              X