Announcement

Collapse
No announcement yet.

“ফুরসান তাহতা রায়াতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” সিরিজ-২২

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • “ফুরসান তাহতা রায়াতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” সিরিজ-২২

    তৃতীয় অধ্যায়: ময়দানে প্রত্যাবর্তন-দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: আব্দুল্লাহ আয্যাম- হিন্দুকুশ পর্বত চূড়ায় আল কুদসের জখম

    (পূর্ব প্রকাশের পর)
    ৫- আরব তাগুতদের প্রতি শত্রুতা পোষণকারী জিহাদি সংগঠনগুলোর তিনি ভূয়সী প্রশংসা করতেন:
    তিনি বেলাল রাযি. এর নির্যাতনকালীন অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:

    “আল্লাহর শপথ, তারা যদি আমার ডান হাতে সূর্য এবং বাম হাতে চন্দ্র এনে রেখে দেয়, যাতে আমি এ বিষয় পরিত্যাগ করি, তবু আমি তা পরিত্যাগ করব না, যতক্ষণ না আল্লাহ তাকে বিজয়ী করেন অথবা আমি তার পথে নি:শেষ হয়ে যাই-” “এমন উজ্জল পরিস্কার বক্তব্য ব্যতিত দাওয়াত শক্তি লাভ করে না। এ ধরণের দৃষ্টান্ত দ্বারা দাওয়াত শক্তি লাভ করে। পক্ষান্তরে এমন লোক, যারা মাটির নিচে বসবাস করে এবং একটি কিতাব খুলে মাটির নিচেই পাঠ করে- এটা দাওয়াত প্রসারে কোন উপকার করতে পারে না। দাওয়াত সেই রক্ত দ্বারা শক্তি লাভ করে, যা তার জন্য ঢেলে দেওয়া হয়, সেই প্রাণ দ্বারা সাহায্য লাভ করে, যা তার পথে হরণ করা হয়, সেই লাশ দ্বারা শক্তি লাভ করে, যা তার জন্য ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। পক্ষান্তরে গুটিয়ে থাকা, পরিস্থিতির সাথ আবর্তিত হওয়া ও জাহিলী প্রতারণা দ্বারা দাওয়াত শক্তি লাভ করে না।

    মানুষ ত্যাগী আদর্শের দ্বারা প্রভাবিত হয়। সেই দর্শনের দ্বারা প্রভাবিত হয় না, যা এখান থেকে গুটিয়ে ওখানে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

    উস্তাদ সায়্যিদ কুতুব রহ.কে সৈনিকরা ক্ষমতাসীন সরকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তিনি বললেন: কাফের। তখন তার জনৈক শিষ্য তাকে জিজ্ঞেস করল: আপনি কেন আদালতের সামনে এত স্পষ্টবাদি হলেন, অথচ আপনার গর্দান জল্লাদদের হাতের মুঠোয় ছিল? তিনি বললেন: দু’ কারণে। প্রথম কারণ হল, আমরা কথা বলছি আকিদার বিষয়ে। আর আকিদার বিষয়ে দ্ব্যর্থবোধক কথা বলা জায়েয নেই। দ্ব্যর্থবোধক কথা জায়েয নেই! দ্ব্যর্থবোধক কথা বৈধ নয়। দ্ব্যর্থবোধক কথা হল: কেউ একজনকে জিজ্ঞেস করল: এই শাসনের ব্যাপারে আপনার মতামত কি? সে উত্তর করল: আল্লাহর শপথ, আল হামদু লিল্লাহ, ভালো। কিন্তু তার উদ্দেশ্য হল নিজের ব্যাপারে একথা বলা যে, সে ভালো আছে। অথবা অন্য কোন লোকের ব্যাপারে বলা যে, সে ভালো। এ ধরণের দ্ব্যর্থবোধক কথাও আকিদার ক্ষেত্রে জায়েয নেই।
    .............
    সায়্যিদ বলছেন: আকিদার ক্ষেত্রে এ ধরণের তাওরিয়া বা দ্ব্যর্থবোধক কথা বলা জায়েয নেই। এছাড়া যাকে মানুষ দেখে ও অনুসরণ করে, তার জন্য কুফরী কথা উচ্চারণ করা জায়েয নেই। যেমন জাহিলী শাসনব্যবস্থা বা সমাজবাদ বা জাতীয়তাবাদ- এগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া তার জন্য জায়েয হবে না। এটা জায়েয আছে অনুসারীদের জন্য।، ﴿إِلاَّ مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالإِيمَانِ﴾ “তবে (সে ব্যক্তি কুফরী কথা উচ্চারণ করতে পারবে,) যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য করা হয়েছে, তবে তার অন্তর ঈমানে স্থির রয়েছে।”

    কিন্তু যারা অনুসরণীয়, তাদের জন্য এটা জায়েয় নেই।
    ..........

    লোকেরা সায়্যিদকে বলত: সায়্যিদ, আপনি একটি ক্ষমার আবেদন করতে পারেন না? তিনি বললেন: যে শাহাদাত আঙ্গুল নামাযে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়, তা এমন একটি অক্ষর লিখতেও সম্মত হয় নয়, যা তাগুতের শাসনকে স্বীকৃতি দেয়। তাহলে আমি কিভাবে ক্ষমার আবেদন করব? যদি আমার ব্যাপারে হকের ফায়সালা দেওয়া হয়, তাহলে আমি হকের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্ট। আর যদি আমার ব্যাপারে অন্যায় রায় দেওয়া হয়, তাহলে আমি বাতিলের কাছে করুণা ভিক্ষার চেয়ে উর্ধ্বে।

    এ ধরণের দৃষ্টান্ত দ্বারা জনসাধারণ প্রভাবিত হয়। পরবর্তী প্রজন্ম এর পথে চলতে থাকে এবং যুবকরা এর অনুসরণ করে। পক্ষান্তরে আপনি একজনের পা থেকে মাথা চিনেন না, পেট থেকে পিঠ চিনেন না এবং সে কিসের দিকে মানুষকে আহ্বান করছে তাও জানেন না, তাহলে আপনি কিভাবে তার অনুসরণ করবেন? প্রত্যেক দিন একেক রং। প্রতিদিন কোন শাসকের কাছে, কোন আমিরের কাছে, কোন নেতার কাছে। কিভাবে সম্ভব যে, মানুষ তাকে অনুসরণ করবে? কিভাবে? চাই তার কাছে পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের সকল জ্ঞান থাকুক না কেন। সে টিকা, মূল পাঠ, ব্যাখ্যা, সংযোজন ও সূত্র সব মুখস্ত করে ফেলুক না কেন। কিভাবে মানুষ তাকে অনুসরণ করবে?

    আপনাদের মাঝে কে আদালতে কারিম আল আনাদুলির বক্তব্য শুনেছেন? আপনারা কি বক্তব্যটা শুনেছেন? এ সামান্য বক্তব্যটি দশ শতাব্দি বা তারও বেশি সময় ধরে জাতির অনাগত প্রজন্মের মাঝে প্রভাব সৃষ্টি করে যাবে। শায়খুল আযহারদের লিখনী থেকেও দশ শতাব্দি বেশি বা তার চেয়েও বেশি।
    সত্যিই, আমি যখন তার বক্তব্যটা শুনি, আমি কেঁপে উঠি। একজন যুবক আদালতের সামনে দাঁড়িয়েছে। এভাবে আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে: বিষয়টি সামরিক শিল্পের ব্যাপার নয়, এটি সালিহ সারিয়্যার ব্যাপারও নয় বা এটি কারিম আল আনাদুলির ব্যাপারও নয়, এটি হল ইসলামের ব্যাপার। যে ইসলামকে মিশরে যবাই করা হচ্ছে। এটি আহমাদ বিন হাম্বল, ইজ্জুদ্দিন ইবনে আব্দুস সালাম, হাসান আল বান্না ও সায়্যিদ কুতুব রহ. এর ব্যাপার। এমন শোনানী, যার থেকে শক্তিশালী শোনানী আমি কখনো শুনিনি। একজন যুবক!! একজন যুবক!! কারিম আল আনাদুলিকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তার কথাগুলো আজও আমাদের কর্ণকুহরে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আমি শায়খুল আযহারদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি প্রভাবিত কারিম আল আনাদুলির দ্বারা, অথচ আমি একজন শায়খুল আযহার।

    আপনারা কার দ্বারা অধিক প্রভাবিত হয়েছেন? পৃথিবীর সমস্ত শায়খদের দ্বারা, নাকি খালিদ আল ইসলামবুলির দ্বারা? খালিদ আল ইসলামবুলি দ্বারা। কারণ ইসলাম এ ধরণের দৃষ্টান্তের মাধ্যমেই সাহায্য লাভ করে। হে আমার ভায়েরা! ইসলাম কুরবানি ব্যতিত শক্তি লাভ করে না। গুটিয়ে থাকা, পরিবেশের সাথে আবর্তিত হওয়া, বিভ্রান্ত করা, দ্ব্যর্থবোধক কথা বলা বা দার্শনিকতা দ্বারা ইসলাম সাহায্য লাভ করে না।”


    তিনি আরো বলেন:

    “তারপর ১৯৮১ এর ঘটনাবলী ঘটল। সাদাতকে হত্যা করা হল। একের পর এক জিহাদি সংগঠনের ঘটনাগুলো ঘটতে লাগল। একেকটি বছর অতিবাহিত হতে না হতেই ধ্বংস ও প্রতিশোধের অভিযানগুলো তার প্রধানদের আক্রান্ত করতে লাগল এবং তার নেতৃবৃন্দকে পিষতে লাগল।”

    তিনি শায়খ মারওয়ান হাদিদ ও তার শিষ্যদের ব্যাপারে বলেন:

    “আমি জামিয়ায় দাঁড়িয়ে আছি, ইত্যবসরে তার শিষ্যদের থেকে জনৈক যুবক আসল। বলল: আপনি কি শায়খ মারওয়ানকে দেখতে চান? আমি দীর্ঘ স্বরে বললাম: কী? আমি এসেছি একটি কার্টন নিতে। এর সঙ্গে সঙ্গেই আমি তার উদ্দেশ্যে গেলাম। তার রোমে প্রবেশ করলাম। অতঃপর তার চেহারার প্রতি তাকিয়ে লক্ষ্য করলাম, এ কখনোই এ জগতের মানুষ নয়। বিস্ময়কর স্বচ্ছতা। জ্যোতি ছড়াচ্ছে। তিনি ফিলিস্তীন আমল থেকেই আমাকে চিনেন। আমাদের সঙ্গেই এসেছিলেন। আমার উদ্দেশ্যে বলা তার প্রথম কথাটি হল: হে আবু মুহাম্মদ! তুমি কি জান্নাতের প্রতি আগ্রহি নও? এটাই তার থেকে আমার শোনা সর্বশেষ কথা।
    ............
    এরপর বাস্তবেই একজন যুবক পতাকা বহন করলেন, যিনি আমাদের সাথে ফিলিস্তীনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। তার নাম লিডার আব্দুস সাত্তার। তুর্কি প্রবাদসম এক যুবক। হাত, পায়ের উপর পড়ে। ছোট্ট। পঞ্চাশ বছরের এক দন্ত চিকিৎসক। ফলে বড় বড় প্রধানরা পরিস্কার হয়ে যেতে লাগল। তিনি তাদেরকে একটার পর একটা গুপ্ত হত্যা করতে লাগলেন। অথচ তিনি একজন যুবক।
    ...............................
    তারপর ব্যাপারটি উন্নতি লাভ করে আর্টিলারি ট্রজেডি পর্যন্ত পৌঁছল। শায়খের ছাত্র আদনান আকলাহ ইবরাহিম আল ইউসুফের সাথে একই দিনে পৌঁছলেন। ইবরাহিম আল ইউসুফ আর্টিলারির ভেতরের অফিসারদের মধ্যে একজন অফিসার ছিলেন। অন্য এক সময় আপনাদেরকে এ সকল আদর্শ পুরুষদের ব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলব, যারা পাহাড়কেও টলিয়ে দিতেন। সূরা তাওবার তাফসিরের মাঝে হয়ত সুযোগ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
    এ ধরণের দৃষ্টান্ত ব্যতিত দাওয়াত শক্তি লাভ করে না। পরিশ্রমের কষ্টিপাথরের উপরই তা বেঁচে থাকে। এ ধরণের উপমা, যা পরিশ্রমের আগুনে প্রজ্জলিত হয়, তাহাই সেই শক্ত ঘাটি হতে পারে, যার দ্বারা এই দ্বীন সাহায্য লাভ করে এবং যা বড় বড় জাতিকে পথনির্দেশ করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।”


    ৬- তিনি মনে করতেন, শক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বিরাজমান বাস্তবতাকে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। উম্মত যখন তরবারির পথ ছেড়ে দিল, তখনই তারা লাঞ্ছনার পথ চিনল। মানুষকে ইসলাম গ্রহণের জন্য বলপ্রয়োগ না করার অবস্থাটি তখনই আসে, যখন শক্তির মাধ্যমে জাহিলী পরিবেশ ও জাহিলী শাসনব্যবস্থা দূর করা হয়।

    তিনি বলেন:

    “এই দ্বীন সমস্ত মানব জাতির প্রতি সাধারণ ঘোষণা হিসাবে এসেছে। তা ঘোষণা করছে, তার কাজের ক্ষেত্র হল মানুষ। সমগ্র পৃথিবীর সমস্ত মানুষ। একারণে জিহাদ তার জন্য অবিচ্ছেদ্য অত্যাবশ্যকীয়। যখনই আমরা তা মানুষের নিকট পৌঁছে দিতে চাই বা পৃথিবীবাসীর মাঝে ছড়াতে চাই, তখনই জিহাদ প্রয়োজন। কারণ তার সামনে অনেক বড় বড় শত্রুঘাটি পড়বে, যেগুলো জাহিলী সমাজ ব্যবস্থার ভিত হিসাবে কাজ করবে।

    তার সামনে বড় বড় বাধা এসে দাঁড়াবে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, জাতিগত ও ভৌগোলিক। আর মানবজাতির মুক্তির জন্য আসা কোন ধর্মের জন্য এটা সম্ভব নয় যে, এ সকল বাধার সম্মুখে তা হাত গুটিয়ে শুধু মুখের মাধ্যমে প্রচার করবে। আর অস্ত্র ও লাঠি ছেড়ে দিবে জাহিলিয়ার জন্য। কারণ জাহিলিয়া অবশ্যই জেগে উঠবে নিজের অস্তিত্বকে রক্ষা করার জন্য এবং ইসলামকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলার জন্য। ﴿يُرِيدُونَ لِيُطْفِؤُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ﴾ “তারা চায়, তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলোকে নিভিয়ে দেওয়ার জন্য।”

    আর চাই জাহিলী শক্তি জেগে উঠুক বা না উঠুক, ইসলামকে তো অবশ্যই নিজ শক্তিতে চলতে হবে। যার জন্য অবশ্যই কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন।

    ﴿وَلَوْلاَ دَفْعُ اللّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَّفَسَدَتِ الأَرْضُ وَلَـكِنَّ اللّهَ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْعَالَمِينَ﴾
    “আল্লাহ যদি মানুষের কতককে কতকের মাধ্যমে প্রতিহত না করতেন, তবে পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ত। কিন্তু আল্লাহ জগতসমূহের প্রতি অতি অনুগ্রহশীল।”

    হক ও বাতিলের মাঝে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জীবনকে বাঁচার উপযোগী রাখে। অন্যথায় সমাজ নষ্ট ও বিকৃত হয়ে যেত এবং মানুষের কর্মের ফলে জল-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ত।

    ﴿إِلاَّ تَفْعَلُوهُ تَكُن فِتْنَةٌ فِي الأَرْضِ وَفَسَادٌ كَبِيرٌ﴾
    “যদি এটা না কর, তবে পৃথিবীতে ফেতনা ও ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে।”

    অর্থাৎ যদি মুমিনদের মাঝে বন্ধুত্ব এবং আল্লাহর পথে জিহাদ ও হিজরত না থাকে, তাহলে পৃথিবীতে শিরক ব্যাপক হয়ে যাবে।

    প্রতিরক্ষা নীতিই সকল ইতিহাস ও ঘটনাবলীর ইসলামী ব্যাখ্যা। ইসলাম শুধু আরব উপদ্বীপের ধর্ম হওয়ার জন্য আসেনি বা শুধু আরবের ধর্ম হওয়ার জন্য আসেনি যে, আরব বিজয়ের পর শুধু এর অঞ্চলগুলো নিয়েই বসে থাকবে আর এর সীমানা প্রতিরক্ষা করবে ও সীমান্ত প্রহরা দিতে থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সকল সাদা-কালোর জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।

    ইসলামের প্রতীকগুলোর সুরক্ষার জন্য, তার ফরজ ইবাদতগুলো এবং ইবাদতের স্থানগুলো হেফাজত করার জন্য জিহাদ জরুরী।

    وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا وَلَيَنصُرَنَّ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ...
    “আল্লাহ যদি মানব জাতির একদল (-এর অনিষ্ট)কে অন্য দলের মাধ্যমে প্রতিহত না করতেন, তবে ধ্বংস করে দেওয়া হত খানকাহ, গীর্জা, ইবাদতখানা, ও মসজিদসমূহ, যাতে আল্লাহর যিকির করা হয় বেশি বেশি। আল্লাহ অবশ্যই তাদের সাহায্য করবেন, যারা তার (দ্বীনের) সাহায্য করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী।”

    তাই পৃথিবীতে ক্ষমতা লাভ করা ও ইবাদত রক্ষা করার জন্য এটি অপরিহার্য, অত্যাবশ্যকীয় ও বিকল্পহীন বিষয়।

    ﴿الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ..﴾ “তারা এমন যে, আমি যদি দুনিয়ায় তাদেরকে ক্ষমতা দান করি, তবে তারা নামায কায়েম করবে।”

    আল্লাহর শত্রুদের দু:সাহসিকতা এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আতাতুর্ক আয়াসুফিয়া মসজিদকে জাদুঘরে রূপান্তর করার ঘোষণা দিয়েছে, আরবিতে আযান নিষিদ্ধ করেছে, জনসম্মুখে নামায নিষিদ্ধ করেছে, রাষ্ট্রের কর্মী বা রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকারী প্রতিটি নারীর জন্য বেহায়াপনা আবশ্যক করে দিয়েছে।

    আব্দুল হাকিম আমিরের নির্লজ্জতা এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সে মসজিদের খতিবদের মাঝে এই আদেশ বিতরণ করে যে, তারা সাইয়্যিদুনা মূসার প্রতিপক্ষ ফেরাউনের সমালোচনা করতে পারবে না।

    নুসাইরীদের আত্মপ্রবঞ্চনা এ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, যার ব্যাপারেই ইখওয়ানুল মুসলিমীনের সদস্য হওয়া প্রমাণিত হবে, তার উপরই এর শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ ঘোষণা করে!! আদর্শ ও মূল্যবোধ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ এ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, উলঙ্গদের সভা প্রতিষ্ঠা করে, যার নাম দেয়: ‘নীতিশাস্ত্রে শূণ্য’!!

    জামাল সালিম কুরআন নিয়ে প্রকাশ্যে ঠাট্টা করে। উস্তাদ হাদিবিকে বলে: সূরা ফাতিহা উল্টা পড়তে।

    হামযা বিসাওয়ানী শাস্তি দেওয়ার সময় যারা আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে তাদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলে: ‘যদি আল্লাহ আসে, তাহলে তাকেও সেলে ঢুকিয়ে রাখব’!!

    এটা অত্যন্ত হাস্যকর ও ধ্বংসাত্মক প্রহসন হবে, যদি কেউ বলে: এ ধরণের লোকদের ক্ষেত্রে ইসলামের কাজ হল উপদেশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা, তাদেরকে মুখে উপদেশ দেওয়া। অস্ত্রের সাথে তার কোন কাজ নেই। কারণ দ্বীনের মধ্যে কোন জোর-জবরদস্তি নেই!!

    ইসলামের জন্য অবশ্যই মুখেও বক্তব্য দেওয়া আবশ্যক এবং তার দাওয়াতের সামনে যত বাধা আসে, তা অস্ত্র দিয়ে দূর করাও আবশ্যক।

    হ্যা, মানুষের নিকট ইসলাম পৌঁছার পথে আড়াল সৃষ্টিকারী, মানুষকে এই ধর্মে প্রবেশ করতে বাধা দানকারী এবং মানুষকে বিশ্বজগতের প্রতিপালক ব্যতিত অন্য কারো ইবাদতে নিয়োজিতকারী প্রতিবন্ধকতাগুলো চূর্ণ করার পর দ্বীনের মধ্যে কোন জোর-জবরদস্তি নেই। হক ভৌগলিক সীমারেখা মানতে অস্বীকার করে, ভ‚গোলবিদদের আবিস্কৃত সংকীর্ণ সীমান্তে সীমাবদ্ধ হতে চায় না। হক নির্ভেজাল মানব-মস্তিস্ককে চ্যালেঞ্জ করে বলে: তোমাদের কী হল, তোমরা বল, অমুক ব্যাপারটি পাহাড়ের বা এই নদীর এই পাড়ে ঠিক, কিন্তু তা যখন এই উপকূল অতিক্রম করে ওই উপকূলে যাবে, তখন বেঠিক।”

    তিনি আরো বলেন:

    “এই দ্বীন তরবারিসহ এসেছে, তরবারি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তরবারির মাধ্যমেই টিকে থাকবে। যখন তরবারি নষ্ট হয়ে যাবে, তখন এই দ্বীনও নষ্ট হয়ে যাবে। এই দ্বীন হল দাপট ও গাম্ভীর্যের দ্বীন, শক্তির দ্বীন, আক্রমণের দ্বীন, সম্মানের দ্বীন। এই দ্বীনে দুর্বলতা একটি অপরাধ, যার আক্রান্ত ব্যক্তি শাস্তির উপযুক্ত।”

    إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمُ الْمَلآئِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ قَالُواْ فِيمَ كُنتُمْ قَالُواْ كُنَّا مُسْتَضْعَفِينَ فِي الأَرْضِ قَالْوَاْ أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ اللّهِ وَاسِعَةً فَتُهَاجِرُواْ فِيهَا فَأُوْلَئِكَ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَسَاءتْ مَصِيرًا
    “নিজ সত্তার উপর জুলুম রত থাকা অবস্থায়ই ফিরিশতাগণ যাদের রূহ কব্জা করার জন্য আসে, তাদেরকে লক্ষ্য করে তারা বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, যমীনে আমাদেরকে অসহায় করে রাখা হয়েছিল। ফিরিশতাগণ বলে, আল্লাহর যমীন কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তাতে হিজরত করতে? সুতরাং এরূপ লোকদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং তা অতি মন্দ পরিণতি।”

  • #2
    “নিজ সত্তার উপর জুলুম রত থাকা অবস্থায়ই ফিরিশতাগণ যাদের রূহ কব্জা করার জন্য আসে, তাদেরকে লক্ষ্য করে তারা বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, যমীনে আমাদেরকে অসহায় করে রাখা হয়েছিল। ফিরিশতাগণ বলে, আল্লাহর যমীন কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তাতে হিজরত করতে? সুতরাং এরূপ লোকদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং তা অতি মন্দ পরিণতি।”

    এর চেয়ে বড় দলিল আর কি হতে পারে!
    গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

    Comment


    • #3
      যারা অর্জন করার অর্জন করে নিও।
      আল্লাহ, আমাকে মুজাহিদ হিসেবে কবুল করুন আমীন।

      Comment


      • #4
        হে আমার ভায়েরা! ইসলাম কুরবানি ব্যতিত শক্তি লাভ করে না। গুটিয়ে থাকা, পরিবেশের সাথে আবর্তিত হওয়া, বিভ্রান্ত করা, দ্ব্যর্থবোধক কথা বলা বা দার্শনিকতা দ্বারা ইসলাম সাহায্য লাভ করে না।”

        আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ বুঝ দান করুন ও পোস্টকারী সম্মানিত ভাইকে উত্তম থেকে উত্তম বদলা দান করুন। আমীন
        “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

        Comment


        • #5
          “এই দ্বীন তরবারিসহ এসেছে, তরবারি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তরবারির মাধ্যমেই টিকে থাকবে। যখন তরবারি নষ্ট হয়ে যাবে, তখন এই দ্বীনও নষ্ট হয়ে যাবে। এই দ্বীন হল দাপট ও গাম্ভীর্যের দ্বীন, শক্তির দ্বীন, আক্রমণের দ্বীন, সম্মানের দ্বীন। এই দ্বীনে দুর্বলতা একটি অপরাধ, যার আক্রান্ত ব্যক্তি শাস্তির উপযুক্ত।”

          খুবই মূল্যবান কথা। জাযাকাল্লাহ
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment


          • #6
            আল্লাহ্ তায়া-লা জালিমদের জুলুম থেকে মুসলিম উম্মাহ কে হেফাযত করুন.. এবং তাদের ধ্বংস করুন.. লাঞ্ছিত করুন দুনিয়া ও আখিরাতে.. হে আল্লাহ্ উম্মাহর বীর মুজাহিদদের সাহায্য বহাল রাখুন.. আমাদের কেও জিহাদের পথে কবুল করুন ও অটল রাখুন, আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।

            Comment

            Working...
            X