Announcement

Collapse
No announcement yet.

আল্লাহর দুশমনরা তো মাকড়সার চেয়েও দুর্বল, আমরা কি ওদের ভয় করব!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আল্লাহর দুশমনরা তো মাকড়সার চেয়েও দুর্বল, আমরা কি ওদের ভয় করব!

    সুরা আনকাবুতের ৪১ নম্বর আয়াতটা নিয়ে চিন্তা করছিলাম। কিছু কথা মাথায় এলো।
    مثل الذين اتخذوا من دون الله اولياء كمثل العنكبوت. اتخذت بيتا، وان اوهن البيوت لبيت العنكبوت. لو كانوا يعلمون.
    আল্লাহ তা'আলা বলেন: যারা আল্লাহকে ব্যতীত অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে তাদের উদাহরণ হল মাকড়সার মতো। যে ঘর তৈরি করে, আর ঘর সমূহের মধ্য থেকে সবচেয়ে দুর্বল ঘর হল মাকড়সার ঘর, যদি তারা জানত।

    কি চমৎকার দৃষ্টান্ত আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন! আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন যে, যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে, আল্লাহকে অস্বীকার করে, মুমিনদের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তারা একটা মাকড়সার ঘরের চেয়েও দুর্বল। তাহলে আমরা কেন এত ভয় পাই তাদের কে? তাদের দাম্ভিকতা দেখে, তাদের সেনা সমাবেশ দেখে, তাদের প্রযুক্তি দেখে, তাদের মিডিয়া প্রোপাগান্ডায় আমরা কিভাবে ভীত হতে পারি? আমরা কি একটা মাকড়সাকে ভয় করব?
    আল্লাহ আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, যতই ক্ষমতার বড়াই করুক না কেন, তারা তো আসলে একটা মাকড়সার ঘরের মতই দুর্বল। আল্লাহ তাআলার এই বাণী এই দৃষ্টান্ত মুসলিম উম্মাহকে যুগে যুগে সাহস যুগিয়েছে। তারা পরাজিত হওয়ার পূর্বে কখনো পরাজিত হতেন না।
    ঈমানদার ব্যক্তিরা বাস্তবেই আল্লাহ তাআলার এই দৃষ্টান্ত সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেন। এজন্যই ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম একজন ব্যক্তি হয়ে পুরো এক জাতিকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন: তোমরা কি আল্লাহ সম্বন্ধে আমার সঙ্গে বিতর্ক করো? অথচ তিনি আমাকে হেদায়েত দান করেছেন। আর আমি তাদের ভয় করিনা, তোমরা যাদের তাঁর শরিক সাব্যস্ত করো। তবে আমার রবই কোন কষ্ট দিতে চাইলে ভিন্ন কথা। আমার রবের জ্ঞান সকল বস্তুকে বেষ্টন করে রেখেছে। তোমরা কি চিন্তা করো না? আর আমি কিভাবে তোমাদের শরীকদের ভয় করব? অথচ তোমরা এ বিষয়কে ভয় করো না যে তোমরা ওদের আল্লাহর শরীক করে, যাদের শরিক হওয়ার ব্যাপারে তিনি তোমাদের প্রতি কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। অতএব দুই দলের মধ্যে কোন দল নিরাপত্তা বেশি অধিকারী? বল যদি তোমরা জ্ঞান বুদ্ধি রাখো। সুরা আনআম ৮০-৮১।
    হুদ আলাইহিস সালাম তাঁর কওমকে বলেছিলেন: আমি আল্লাহকে সাক্ষী বানাচ্ছি এবং তোমরাও সাক্ষী থাকো যে, তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই যাতে তোমরা শরিক করো আল্লাহ ব্যতীত। অতএব তোমরা সকলে মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করো, অতঃপর আমাকে অবকাশ দিওনা। সুরা হুদ ৫৪-৫৫।
    মক্কী জীবনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর কাফেররা একবার উটের নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দিয়েছিল। এরপর সেখান থেকে উঠে তিনি তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন আমি তোমাদেরকে জবাই করার জন্য এসেছি।
    ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন ইসলাম গ্রহণ করার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থান স্থল দারুল আরকামে আসলেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন তাকে আসতে দিবেন কিনা। সে সময় তার হাতে খোলা তরবারি ছিল। তখন হামজা রাদি আল্লাহ আনহু বললেন তাকে আসতে দাও, যদি সে ভালো উদ্দেশ্যে এসে থাকে তাহলে তো ভালো। অন্যথায় তার তরবারি দিয়ে তাকেই হত্যা করা হবে।
    সুহাইব রুমি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হিজরতের সময় কাফেররা ধাওয়া করলো। এক পর্যায়ে তিনি রুখে দাঁড়ালেন। তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা জানো আমি তীর চালনায় কতটা দক্ষ। আমার তূণীরে একটা তির বাকি থাকা অবস্থায় তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে না। তীর শেষ হয়ে গেলে আমি তরবারি দিয়ে তোমাদের মোকাবেলা করবো। তার দৃঢ় সংকল্প দেখে কাফেররা তার সাথে সমঝোতা করতে বাধ্য হল।
    হিজরতের সময় ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কাফেরদের কাছে গিয়ে বললেন কেউ যদি চায় তার স্ত্রীকে বিধবা করতে এবং তার সন্তানকে এতিম করতে তাহলে সে যেন আমাকে বাধা দেয়।
    রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর পুরো আরব ইরতিদাদের ফেতনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিল। তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু পুরো আরবের মুরতাদদের বিরুদ্ধে একই সাথে যুদ্ধ শুরু করেছেন।
    মারাকেশের মুজাহিদ আব্দুল কারিম খাত্তাবি অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত স্প্যানিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পুরোনো যুগের তীর তলোয়ার বর্ষা সজ্জিত ছোট সেনাদল নিয়ে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। এই সেকেলে অস্ত্রধারী মুজাহিদদের ভয়ে স্প্যানিশ বাহিনীর ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল।
    বুশ পুরো মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। পুরো বিশ্ববাসীকে একটা প্রশ্নের সম্মুখীন করেছিল। আমাদের সাথে না হয় সন্ত্রাসীদের সাথে। তখন মোল্লা ওমর বলেছিলেন বুশ আমাদের ধ্বংসের ওয়াদা দিয়েছে। আল্লাহ আমাদের বিজয়ের ওয়াদা দিয়েছেন। আল্লাহর ওয়াদাই সত্য।
    মুসলিম উম্মাহর অনুসৃত ব্যক্তিবর্গের এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, তারা কাফেরদেরকে মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল মনে করতেন। তাদের (কুফফারদের) সমস্ত বস্তুগত উৎকর্ষতা তাদের কাছে তুচ্ছ ছিল।
    আজ ওরা আমাদের ভয় দেখায়। আমাদের ঘাড় মটকে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমাদেরকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেবে বলে দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে। তাদের উপাস্যের কোন ক্ষতি করলে হাত ভেঙে দেওয়ার কথা বলে। মুসলিম উম্মাহর পক্ষে কথা বললে, নির্যাতিত উম্মাহর পক্ষ নিলে আমাদের গ্রেফতারির ভয় দেখায়। অহংকারের সাথে ঘোষণা দেয় আমাদেরকে নাকি তারা 24 ঘন্টা নজরদারিতে রাখে। বলে আমাদের দেশে নাকি মৌলবাদীর জায়গা নেই।
    আসলে তাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ড তাদের দুর্বলতা প্রমাণ করে। হেফাজতে ইসলামের মতো নিরস্ত্র দলের বিরুদ্ধে তাদের এতো কঠোর প্রতিক্রিয়া প্রমাণ বহন করে যে, তারা মাকড়সার চেয়েও দুর্বল। হেফাজতের আক্রমণের আশঙ্কায় থানায় থানায় লাইট মেশিনগান বসানো এ কথাই প্রমাণ করে যে, তারা সত্যিকারের মুজাহিদদের সামনে পড়লে চোখে অন্ধকার দেখবে। ঈমান ও সুন্নাহর প্রাচীরের সাথে ধাক্কা খেলে তারা উঠে দাঁড়ানোর শক্তি পাবে না। ঘোড়ায় চড়ে হরতাল করা ছেলেটির গ্রেফতারি তাদের অসহায়ত্বই শুধু প্রকাশ করছে। মাদ্রাসার ছুরিগুলো জব্দ করার নাটক দেখে মনে হচ্ছে, তারা এক অজানা আশঙ্কায় আতঙ্কিত। সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যাচার ও ছোট খাট গড়নের আবেগি বক্তা রফিকুল ইসলামের গ্রেফতারি ও সাত দিনের রিমান্ড দাবি করা এবং জেল হাজতে প্রেরণ তাদের কাপুরুষতার প্রমাণই বহন করে।
    তারা তাদের শক্তিগুলো ব্যয় করুক। পরিশেষে তা তাদের আফসোসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে বিইযনিল্লাহ। আল্লাহ তাআলা সত্য বলেছেন-
    ان الذين كفروا ينفقون اموالهم ليصدوا عن سبيل الله فسينفقونها ثم تكون عليهم حسرة ثم يغلبون،
    নিশ্চয় যারা কাফের, তারা নিজেদের ধন-সম্পদ এই জন্য ব্যয় করে, যাতে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বাধা দিতে পারে। সুতরাং করা তা ব্যয় করতে থাকবে, তারপর তা হবে ওদের জন্য আফসোসের কারণ এবং অবশেষে তারা পরাজিত হবে। সুরা আনফাল ৩৬।
    ওরা যখন ওদের শক্তিগুলো ব্যয় করতে থাকবে, চক্রান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে থাকবে, তারপর যখন আসল যোদ্ধাদের মুখোমুখি হবে তখন তারা ব্যয় করার মত কিছুই পাবে না। দেয়ার মত নতুন কোন চাল তাদের হাতে অবশিষ্ট থাকবে না। কারণ দুর্বল শত্রুকে মারতেই তো তারা এগুলো খরচ করে ফেলেছে। সুতরাং ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই। বরং আমাদের আরো খুশি হওয়া উচিত। আল্লাহর সামনে কারো শক্তি চলবে না। আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আর চূড়ান্ত সফলতা তো মুত্তাকিদের জন্য।

  • #2
    মাশা আল্লাহ, ঈমান ও সাহস জাগানিয়া পোস্ট।
    বারাকাল্লাহু ফি ইলমিকা ওয়া আমালিক...!
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      (গাজওয়া হিন্দের ট্রেনিং) https://dawahilallah.com/showthread.php?9883

      Comment


      • #4
        সত্য সমাগত আর মিথ্যা বিতাড়িত

        মাশাআল্লাহ,আলহামদুলিল্লাহ
        প্রিয় শায়েখ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সমপযোগী একটি পোষ্ট্।
        আল্লাহ আপনার কল্যাণ করুন।

        Comment


        • #5
          আলহামদুলিল্লাহ,, আল্লাহ আপনাদের কাজগুলো কবুল করুন আমীন।
          [[[ আমার বিশ্বাস, ত্বাগুতের বাহিনীকে একটি ইস্তেশহাদী আক্রমণ করলে তাদের মনোবল ভেঙ্গে যাবে। এবং অনেকে চাকরি ছেড়ে দিবে]]]] আমরা লক্ষ করছি কতক পুলিশ এরি মাঝে চাকরি থেকে সাসপেন্ড হয়েছে। একজন পুলিশ হুজুরদের পক্ষে কথা বলেছে। শোনতেছি এ-ই পুলিশকে ভাইকে চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়েছে। অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এরি মাঝে দল ত্যাগ করেছে। আলহামদুলিল্লাহ, হেফাজত ধাপেধাপে এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের আশা আল্লাহ ওনাদেরকে পূর্ণ মুজাহিদ হিসেবে কবুল করবেন।

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ, খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই। জাযাকাল্লাহ
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment

            Working...
            X