Announcement

Collapse
No announcement yet.

Transcript || সোনামণিকে রোজা রাখতে অভ্যস্ত করে তুলবেন কীভাবে? || Shaikh Tamim Al Adnani

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • Transcript || সোনামণিকে রোজা রাখতে অভ্যস্ত করে তুলবেন কীভাবে? || Shaikh Tamim Al Adnani

    ﺑِﺴْــــــــــــــــﻢِﷲِﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِﺍلرَّﺣِﻴﻢ ️

    সোনামণিকে রোজা রাখতে অভ্যস্ত করে তুলবেন কীভাবে? || Shaikh Tamim Al Adnani Hafijahullah || Salihat


    নাহমাদুহু ওয়ানুসল্লি আলা রাসূলিহিল কারীম আম্মাবাদ!

    রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র রামাদান আজ আমাদের সামনে উপস্থিত। এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিমদের জন্য রোজাকে ফরজ করেছেন।

    আল্লাহ তা'আলা বলেন,

    يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

    ‘‘হে মু'মিনগন! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’’ [সূরা আল বাকারাহ ২:১৮৩]

    প্রিয় বোন! আপনি নিশ্চয়ই পুরোদমে রমাদানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কিন্তু আপনার ছোট্ট সোনামনির কথা কি মনে আছে আপনার ! শুধু বড়দের কথা ভাবলেই চলবে না, রামাদান মাসে আপনার আদরের সন্তানটিকে নিয়েও আপনার করণীয় আছে। কারন শৈশব থেকে সঠিক তারবিয়ার মাধ্যমে সন্তানকে আল্লাহর একজন আদর্শ বান্দা রূপে গড়ে তোলা আপনার এক মহান দায়িত্ব।

    ইমাম ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ্ বলেন,
    ‘‘ছোটকাল থেকেই সন্তানদের সুন্দর চরিত্র গঠনের দিকে মনোযোগ দেয়া খুবই জরুরি। কারন শৈশব থেকে তাকে যেভাবে গড়ে তোলা হয় সে সেভাবেই বেড়ে ওঠে। ভালো আচরণ ও উত্তম চরিত্র তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ফলে বড় হয়ে অভ্যাস এর বিপরীত কিছু করা তার জন্য কষ্টকর হয়ে পরে। সন্তানদের তারবিয়ার প্রতি লক্ষ না রাখলে পরিণত বয়সে তার খারাপ প্রভাব দেখা দেয় ।’’

    প্রিয় বোন! আপনার দায়িত্ব হচ্ছে ছোটকাল থেকেই আপনার সোনামনিকে সিয়াম পালনে উৎসাহিত করা। কচি বয়স থেকে রোজার অনুশীলন করলে ধীরে ধীরে সে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। ফলে পরিণত বয়সে রোজা রাখা তার জন্য একদম সহজ বিষয় হয়ে যাবে।

    আমাদের সমাজে ছোটদের রোজা রাখার ব্যাপারটি খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয় না। তাদের নিয়ে ভাবা হয় না। অনেক সময় রোজার ব্যাপারে তাদের নিরুৎসাহিত করা হয়। এটি আমাদের সালাফদের আদর্শের বিপরীত। আমাদের সালাফগণ শৈশব থেকেই শিশুদের রোজায় অভ্যস্ত করে তোলার দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতেন।

    প্রিয় বোন! রোজার ব্যাপারে শিশুদেরকে মোটেও অবহেলা করা যাবে না। এমন কোন আচরণ করা যাবে না, যা তাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আবার অনেক মা-বাবা এ ব্যাপারে সচেতন থাকলেও সঠিক পদ্ধতিতে তারা শিশুদের উৎসাহ দিতে জানেন না। ছোটদের মনোজগৎ সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকলে তাদের সঠিকভাবে তারবিয়াহ করা বড়ই কঠিন।

    শিশুদের রোজায় অভ্যস্ত করে তুলতে সংক্ষেপে বিশেষ কিছু করণীয় এর কথা আজ আমরা আলোচনা করব:

    ● সাত বছর বয়স থেকেই সন্তানদের রোজার প্রতি মনোযোগী হন।

    ● পুরো দিন রোজা রাখতে না পারলেও অন্তত দিনের কিছু কিছু সময় রোজা রাখতে উৎসাহ দিন। আস্তে আস্তে সময়সীমা বাড়াতে থাকুন।

    ● পরিপূর্ণ একটি রোজা রাখতে সক্ষম হলে তাকে অভিনন্দন জানান, তার প্রশংসা করুন তাকে আকর্ষণীয় কোনো উপহার এনে দিন।

    ● সেহরি খাওয়ার জন্য তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিন, যাতে সবার সঙ্গে সেও সেহেরি খেতে পারে।

    ● রোজা রাখলে তার প্রশংসা করুন যাতে সে আরো উদ্যমী ও আগ্রহী হয়ে ওঠে।

    ● তার সামনে রোজার ফজিলত ও উপকারিতার কথা বর্ণনা করুন। তাকে বলুন রোজাদারগণকে আল্লাহ তাআলা অনেক নিয়ামত দান করবেন। জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য তাঁদের আলাদা দরজা থাকবে।

    ● আব্বু ও বড় ভাইয়ের সাথে তাকে মসজিদে পাঠিয়ে দিন। বিশেষ করে আসরের সময়, যাতে তাকে সালাত, তিলাওয়াত ও যিকিরে মগ্ন রাখা যায়। কারণ এই সময় তার ক্ষিধে প্রবল হয়ে উঠবে এবং বারবার খেতে চাইবে।

    প্রিয় বোন! শিশুদের উৎসাহ দিতে গিয়ে আমরা অনেক সময় ভুল করে বসি। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, শিশুদের মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

    ● তাকে প্রথমে সাওমের গুরুত্ব ও ফজিলত এর কথা বলে উৎসাহী করে তুলবেন।

    ● তারপর সাওম কিভাবে পালন করতে হয় তা বুঝিয়ে বলবেন। এমন যেন না হয় আপনি তাকে বলছেন , আগামীকাল তোমাকে রোজা রাখতে হবে। সারাদিন তোমাকে কিছুই খেতে দেয়া হবে না। এভাবে বললে সে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে এবং সাওমকে শাস্তি মনে করবে।

    ● রোজা রাখতে না চাইলে তাকে ভয় দেখানো যাবেনা। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাকে রাজি করাতে হবে।

    ● সমবয়সীদের মধ্যে যারা তার চেয়ে বেশি রোজা রেখেছে তাদের কথা তুলে এনে তাকে ছোট করবেন না। এতে সে লজ্জিত হবে এবং নিরাশ হয়ে পরবে।

    ● যতটুকু সে পারে ততটুকুর জন্য তার প্রশংসা করতে হবে।

    ● আবার অনেক সময় আমরা তাদের রোজা কে গুরুত্ব দেই না, এতে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে আমাদের তাদের রোজার গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের রোজার খোঁজ-খবর রাখতে হবে।

    প্রিয় বোন!

    ● আপনার ছোট্ট সন্তানটি ধারাবাহিক ভাবে পুরো মাস রোজা রাখতে সক্ষম নয়। তাই মাঝে মাঝে সে রোজা বাদ দিতে চাইলে না করবেন না।

    ● ইফতারের সময় তাকে দোয়া করতে শেখান। তাকে বুঝিয়ে বলুন যে আল্লাহ তাআলা রোজদারদের দুয়া কবুল করেন।

    ● আপনি নিজেও তার জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করুন, তিনি যেন আপনার সন্তানকে একজন রোজাদার হিসেবে কবুল করেন।

    ● রোজায় তার শারীরিক ঘাটতি পূরণে ইফতারের দস্তরখানায় তার পছন্দের পুষ্টিকর খাবার রাখতে ভুলবেন না।

    ● বিকালে যখন তার ক্ষুধার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে ইফতারের খাবার আয়োজনের ব্যস্ততায় তার কথা ভুলে যাবেন না। এ সময় তাকে পাশে রাখার চেষ্টা করুন। ক্ষুধার কষ্ট যেন সে পুরোপুরি বুঝতে না পারে। তাকে ব্যস্ত রাখুন।

    সাহাবাদের পূণ্যবতী স্ত্রীগণও শিশু সন্তানদের রোজা রাখাতেন। বিকেল বেলায় যখন তারা ক্ষুধায় কাতর হয়ে কাঁদতে শুরু করতো তখন তারা সন্তানদের পশমের খেলনা বানিয়ে দিতেন খেলায় মত্ত হয়ে তারা মাগরীব পর্যন্ত কাটিয়ে দিতো।

    প্রিয় বোন!

    আপনার সোনামণির সামনে রোজাকে রহমত ও খুশির বিষয় হিসেবে তুলে ধরুন। রোজাকে তার জন্য আনন্দে পরিণত করুন। সওম যেন তার কচি মানসে আনন্দময় স্মৃতি হয়ে থাকে।

    আর প্রথম প্রথম রোজা রাখার কষ্টকে তারা যেনো কঠিন মনে না করে বসে। এবং রোজা রাখার কথা শুনলেই যেন ভীত না হয়ে পরে। এতে করে প্রতিবছর সাওম তার জীবনে খুশির আমেজ নিয়ে হাজির হবে। রমাদানের আগমনের কথা শুনলে সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠবে।

    আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সন্তানদের সঠিক তারবিয়ার ব্যবস্থা করার তাওফীক দিন। তাদেরকে রোজাদার হিসেবে কবুল করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
    সাহসিকতা আয়ু কমায় না আর কাপুরুষতা আয়ু বৃদ্ধি করে না। জিহাদের মাধ্যমেই উম্মাহ জীবন লাভ করে।

  • #2
    আল্লাহ তা‘আলা পোস্টকারী ভাইয়ের মেহনতকে কবুল করুন ও উত্তম জাযা দান করুন।

    ‘‘ছোটকাল থেকেই সন্তানদের সুন্দর চরিত্র গঠনের দিকে মনোযোগ দেয়া খুবই জরুরি। কারন শৈশব থেকে তাকে যেভাবে গড়ে তোলা হয় সে সেভাবেই বেড়ে ওঠে। ভালো আচরণ ও উত্তম চরিত্র তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ফলে বড় হয়ে অভ্যাস এর বিপরীত কিছু করা তার জন্য কষ্টকর হয়ে পরে। সন্তানদের তারবিয়ার প্রতি লক্ষ না রাখলে পরিণত বয়সে তার খারাপ প্রভাব দেখা দেয় ।’’
    -ইমাম ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ,, শায়েখের কথাগুলোর উপর আমল আগেই শুরু করেছি।
      ,,সোনামণিরা আগ্রহের সাথে সিয়াম রাখতে প্রস্তুত।

      Comment


      • #4
        আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সন্তানদের সঠিক তারবিয়ার ব্যবস্থা করার তাওফীক দিন। তাদেরকে রোজাদার হিসেবে কবুল করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment

        Working...
        X