Announcement

Collapse
No announcement yet.

দাওয়াতের ফজিলত।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দাওয়াতের ফজিলত।

    দাওয়াতের ফজিলতঃ
    ১. রাসুল সাঃ বলেছেনঃ আল্লাহ তার বান্দার তাওবাতে তোমাদের সে ব্যক্তির চেয়েও বেশী খুশী হন।যে বিজন প্রান্তরে তার বাহনের উপর ছিলো।এরপর বাহনটি তার খাদ্য পানীয় সহকারে তার কাছ থেকে মরুভমিতে হারিয়ে গেলো।এক পর্যায়ে ( এটাকে খুজে না পেয়ে) সে হতাশ হয়ে পড়লো।এরপর সে নিরাশাবস্তায় একটি গাছের নিচে এসে এর ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়লো।তারপর ঘুম থেকেই জেগেই দেখে বাহনখানী তার পাশে দাড়িয়ে আছে।সে তার লাগাম ধরে ফেলে এবং খুশিতে আত্নহারা হয়ে বলে ফেললো, হে আল্লাহ, তুমি আমার বান্দা আর আমি তোমার প্রভু।ভীষন খুশীর চোটেই সে ভুল করে ফেললো।(সহিহ মুসলিম)
    হাদীসটি নিয়ে একটু চিন্তা করুন।একজন লোক মরুভুমিতে হারানো বাহন খুজে পাওয়ার পর ভীষন খুশিতে বলে ফেললো আল্লাহ তুমি আমার বান্দা আর আমি তোমার প্রভু। আল্লাহর কোন বান্দা যখন তাওবা করে আল্লাহ তার চাইতেও বেশি খুশি হন।
    এবার আপনি একটু চিন্তা করুন আপনার দাওয়াতে দ্বারা যদি পাচ জন বা দশ জন মানুষ তাওবা করে দ্বীনের পথে ফিরে আসে আল্লাহ আপনার প্রতি কত বেশি খুশি হবেন!!
    এই পৃথিবীতে যদি কোন বাচ্ছা পানিতে পড়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়।আর আপনি যদি বাচ্ছাকে পানি থেকে উঠান।আপনার প্রতি সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন বাচ্ছার মা। কারন একটা বাচ্ছাকে তার মা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। এবার ভেবে দেখুন, একটা বাচ্ছাকে তার মা যতটা ভালোবাসে। তার চেয়েও কোটিগুন বেশি ভালোবাসে আল্লাহ তার বান্দাকে।আপনি যদি তার কোন বান্দাকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাচানোর জন্য চেষ্টা করেন দাওয়াত দেন আল্লাহ আপনার প্রতি কত বেশি খুশি হবেন!
    ২. রাসুল সাঃ বলেনঃ তোমরা জমিনবাসীর প্রতি দয়া কর।আসমানবাসী তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।
    দ্বীনের সঠিক দাওয়াত দেওয়া যেমন আপনার দায়িত্ব তেমনি মানুষের প্রতি অনেক বড় দয়া।
    মনে করুন আপনি একজন ক্যান্সার রুগীকে চিকিৎসার জন্য একলক্ষ টাকা দিলেন। আপনি তার প্রতি অনেক বড় দয়া করলেন। কিন্তু আপনি যদি এমন কাউকে দ্বীনের দাওয়াত দিলেন। যে কিনা যিনা করার ইচ্ছা করেছে। আপনি যদি তাকে দাওয়াত দেওয়ার মাধ্যমে যিনা থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় ফিরাতে পারেন। আপনি জানেন আপনি তার কত বড় উপকার করেছেন? হাদিসে এসেছে। রাসুল সাঃ বলেছেন ঃ যিনার দুনিয়ায় তিনটি শাস্তি তা হলো ১. চেহারার উজ্জলতা কমে যায়। ২.আয়ু কমে যায়।. ৩চিরকাল দারিদ্রতার ভেতর থাকবে।
    আখেরাতের তিনটি শাস্তি তা হলো১. আল্লাহর অসন্তষ্টি।২.কঠিন হিসেব।৩.জাহান্নামের শাস্তির সম্মুখীন।( ইবনুল জাওযী)
    লোকটি যদি যিনা করত তাহলে এ কঠিন বিপদগুলোতে পড়ত। কিন্তু আপনার দাওয়াতের দ্বারা আল্লাহ লোকটিকে অনেক বড় বিপদ থেকে বাচালেন।
    অনেক বড় দয়া করলেন। আল্লাহও আপনার প্রতি অনেক বড় দয়া করবেন।
    আপনার দাওয়াতের দ্বারা যদি কেউ সামান্যও শান্তি পায় আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাতে অনেক শান্তি দিবেন। ইনশাআল্লাহ। যেমন ধরুনঃ একজন লোক মারাত্নক দুশ্চিন্তায় আছে। সে দুশ্চিন্তা দুর করার কোন উপায় পাচ্ছে না।আপনি শুধু তাকে বললেন যে, আপনি কয়েক দিন নিয়মিত কোরান তেলোয়াত করুন। দেখবেন দুশ্চিন্ত কোথায় চলে যাবে টেরও পাবেন না।
    লোকটি যদি সত্যিই কুরআন তেলোয়াত করে তার দুশ্চিন্তা গুলো কিন্তু চলে যাবে।
    দেখুন আপনার সামান্য কথায় লোকটির কত বড় উপকার হলো।
    লোকটি হয়ত মারাত্নক দুশ্চিন্তায় পড়ে আত্নহত্যা করত। কারন দুশ্চিন্তা দুর করার কোন ওষুধ নেই। কোটি টাকা দিয়েও দুশ্চিন্তা দুর করা যায় না।
    যেহেতু আপনার সামান্য কথায় সে অনেক শান্তি পেল। আল্লাহও আপনাকে অনেক শান্তি দিবেন।

    দায়ীর জন্য যা অবশ্যই করনিয়ঃ

    একজন দায়ী যতই ব্যাস্ত থাকুন না কেন।তাকে অবশ্যই তাহাজ্জুদের অভ্যাশ করতে হবে।কারন তাহাজ্জুদের সাথে দাওয়াতে সাথে রয়েছে এক গভীর সম্পর্ক।
    রাসুল সাঃ ওহী পাওয়ার পরেই তাহাজ্জুদ পড়তে আদীষ্ট হন।অথচ তখন পাচ ওয়াক্ত নামাযও ফরজ হয় নি।আসলে তাহাজ্জুদ ও দাওয়াতের সাথে কতটা গভীর সম্পর্ক এটা আংশিক গবেশনা করে বের করতে পারলেও গুঢ় রহস্য বের করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।আল্লাহতো জানেন যে তার রাসুল সাঃ কে তিনি কত বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রাসুল কত ব্যাস্ত থাকতে হবে।এত ব্যাস্ততার পরে তাহাজ্জুদ পড়া ফরয করে দিয়েছেন।বর্তমান দায়ী ভাইরাতো উনার মত ব্যাস্ত না।
    কিন্তু দুভাগ্যের বিষয় হলো অনেকে দাওয়াতি কাজের চাপে তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন না।কারন দাওয়াতের কাজ করার কারনে দায়ীদের অনেকটা আত্মতৃপ্তি চলে আসে। অনেকে ভাবেন আমি অনেক বড় একটা কাজ করেছি।তাই তাহজ্জুদ না পড়লেও চলবে।আর এমন ভাবনার কারনে তাহাজ্জুদ পড়ার প্রতি আগ্রহ চলে যায়।আসলে তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ হয় আগ্রহ থেকে।যদি আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আর তাহাজ্জুদ পড়া হয় না।স্বাভাবিকভাবে বিজ্ঞানীরা বলেছে যখন রাতে উঠার জন্য ইচ্ছা করে তখন ব্রেনে একটা এলার্ম সেট হয়ে যায়। আপনি যখন তাহাজ্জুদ পড়ার দৃঢ় আগ্রহ রাখবেন তখন ঠিকই তাহাজ্জুদ পড়তে পারবেন।আসলে যিনি যত বড় আমল করেন তিনি যদি কোন ভুল করেন তাহলে সে ভুলটাও অনেক বড় হয়।যেমন একজন দায়ী যদি কোন ভুল করেন তাহলে উনার ভুলটাও অনেক বড় হয়।তাই একজন দায়ীর উচিৎ এত বেশী তাকওয়াবান হওয়া যেন কোন ভুল কথা বা গীবত মুখ দিয়ে বের না হয়।আর সেজন্য বেশী বেশী রোযা রাখা উচিৎ।কারন রোযা তাকওয়া বৃদ্বী করে।দেখুন শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম (রাহঃ)যিনি হাজারো ব্যাস্ততা ও ক্লান্তির মাঝেও তিনি একদিন পরপর রোযা রাখতেন।সুবহানাল্লাহ।
    আসলে প্রতিটি ইবাদাতের রয়েছে আলাদা আলাদা কল্যান। এবং পরকালেও আলাদা মার্যাদা।রোযার যেমন আলাদা কিছু কল্যান আছে তেমনি নামাযেরো আলাদা কিছু কল্যান আছে।তাইতো রাসুল সাঃ যাদের বিবাহের সামর্থ্য নাই তাদের রোযা রাখতে বলেছেন। তাদের নামায পড়তে বলেন নি বা সাদাকাও করতে বলেন নি।বলেছেন রোযা রাখতে।কারন রোযা নিবীর্যকরনস্বরুপ।আপনার শরীর যদি উত্তেজিত থাকে তাহলে নামায পড়লে তাতো কমবে না বরং নামাযে খারাপ চিন্তা আসবে।অপরদিকে রোযা রাখলে তা কমে যাবে।


    কিভাবে দাওয়াত দিবেনঃ
    আপনি হয়ত ভাবছেন আমারতো অত ইলম নেই কিভাবে দাওয়াত দিবো।আসলে দ্বীনি কাজ করার জন্য প্রয়োজন হলো ইচ্ছা বা আগ্রহ।আপনার যদি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি অনেক ভাবে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করতে পারবেন।
    আপনি যদি দশটি বই কিনে দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন। তাহলে দশটি বই দিয়ে কমপক্ষে একশত জনকে দাওয়াত দিতে পারবেন। আপনি প্রয়োজনে একটা ভালো ওয়াজ প্রতিদিন কয়েক জনকে দেন।
    বিশেষ করে জান্নাত ও জাহান্নাম সংক্রান্ত বই নিজে পড়ুন এবং অপরকেও পড়তে দিন।একজন মানুষ যখন আল্লাহকে ভয় করবে তখন তাকে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বুজাতে হবে না। বরং সে নিজেই খুজতে থাকবে কোনটা হারাম কোনটা হালাল।সে নিজেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চাইবে।দেখুন একজন যিনা কারিনি মহিলা যিনা করার পর রাসুল সাঃ এর কাছে হাজির হয়েছে। যিনার শাস্তি ভোগ করার জন্য।কিসের কারনে চলে এসেছে? কারন সে আল্লাহর ভয়ে চলে এসেছে।যিনার শাস্তি কতটা মারাত্বক। শাস্তি দেওয়ার সময় হাজার মানুষ দেখবে।এসব কোন কিছুই তাকে আটকে রাখতে পারে নি।
    তাই যেভাবে দাওয়াত দিলে তাকওয়া সৃষ্টি হবে সেভাবে দাওয়াত দিন।বিশেষ করে কোরআন থেকে দাওয়াত দিন।
    সংকলিত

  • #2
    মাশাআল্লাহ, উপকারী লেখা। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X