Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাকিস্তানে ইসলামী শাসন কিভাবে কায়েম হবে? [তাকী উসমানী সাহেবের বয়ান।]

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাকিস্তানে ইসলামী শাসন কিভাবে কায়েম হবে? [তাকী উসমানী সাহেবের বয়ান।]

    পাকিস্তানে ইসলামী শাসন কায়েম হবে কিভাবে – এ প্রসঙ্গে তাকী উসমানী সাহেব বলেন,

    বক্তব্যের ভিডিও লিংক:
    https://www.youpak.com/watch?v=SqkR3bF3KA0

    “পাকিস্তানের বাইরে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ইসলামী রাষ্ট্র রয়েছে। কিন্তু এই সৌভাগ্য পাকিস্তান এবং একমাত্র পাকিস্তানেরই রয়েছে যে,
    (১). তার এবং তার বুনিয়াদি যে সংবিধান রয়েছে তাতে আল্লাহ জাল্লা জালালুহু’র হাকিমিয়্যাহকে ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়টি আপনি অন্য কোন মুসলিম রাষ্ট্রে পাবেন না। এমনকি সৌদি আরবেও যেহেতু ঐরকম কোন সংবিধান নেই তাই তাতেও এত সুস্পষ্টভাবে বিদ্যমান নেই যে, হাকিমিয়্যাতে আ’লা আল্লাহ তাআলার জন্য সোপর্দ এবং এই রাষ্ট্রে যে হুকুমত কায়েম হবে তাতে হাকিমিয়্যাহ আল্লাহ তাবারাকা ও তাআলার জন্য সাব্যস্ত থাকবে এবং তারই প্রদত্ত আইনের উপর তা প্রতিষ্ঠিত হবে। এই সৌভাগ্য আর কোন রাষ্ট্রের নেই। এতই (নিয়ামত) আল্লাহ তাআলা তাবারাকা ওয়া তাআলা এই পাকিস্তানকে দান করেছেন।
    (২). তদ্রূপ এই সৌভাগ্যও আর কোনও রাষ্ট্রের নেই যে, পাকিস্তানের সংবিধানে পরিষ্কার বলা আছে, পাকিস্তানে কুরআন ও সুন্নাহর বিপরিত কোনও আইন বানানো যাবে না এবং বর্তমানে বিদ্যমান আইনকে পরিবর্তন করে কুরআন সুন্নাহর ধাঁচে রূপ দেয়া হবে। অন্য কোনও রাষ্ট্রে এত সুস্পষ্টভাবে এই দফা বিদ্যমান নেই।
    (৩). শুধু এতটুকুই নয়, এই সংবিধানে এও সুস্পষ্ট বিদ্যমান আছে যে, প্রতিটি নাগরিকের এই অধিকার আছে, যদি কেউ কুরআন সুন্নাহ বিরোধি কোন আইন দেখতে পায় তাহলে এই আইনকে রহিত করে তদস্থলে ইসলামী আইন প্রবর্তন করার দাবি আদালতে পেশ করতে পারবে। আদালত যদি তার দাবি গ্রহণ করে তাহলে আদালতের এই অধিকার রয়েছে যে, এই আইনকে রহিত করে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করার আদেশ জারি করতে পারবে। আফসোস! এই মহান দফা তো পাকিস্তানের সংবিধানে বিদ্যমান আছে কিন্তু হুকুমত, হুকুমতের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আমি বলবো যে, আফসোস! দ্বীনদার সমাজের অনুভূতিহীনতার কারণে এই দফা বেকার পড়ে রয়েছে। এর থেকে তেমন কোন ফায়েদা লাভ করা যাচ্ছে না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এই দফা বিদ্যমান আছে। আজও যদি আমরা দাবি করি, আমরা এই দফাকে বাস্তবায়িত করবো তো আলহামদুলিল্লাহ এর রাস্তা খোলা রয়েছে। কাজেই যেসব লোক এই প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে যে, পাকিস্তানে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য অস্ত্র হাতে নেয়া ব্যতীত দ্বিতীয় কোন রাস্তা নেই তাদের এই প্রোপাগান্ডা সম্পূর্ণ গলদ এবং ধোঁকাবাজি। শান্তিপূর্ণ পন্থায় ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আলহামদুলিল্লাহ রাস্তা বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু শর্ত হচ্ছে এই অনুভূতিহীনতা খতম করে অনুভূতি সৃষ্টি করতে হবে। অনুভূতি সৃষ্টি করে এই দফাকে বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমি সতের বছর শরয়ী আদালতে কাজ করেছি। এই সময়ে আলহামদুলিল্লাহ আমরা দুইশতেরও বেশি আইন আদালতের মাধ্যমে ইসলামী ধাঁচে বানানোর হুকুম জারি করেছি এবং হুকুমত ঐসব আইন বদলিয়েছে । কিন্তু আফসোস! এই দফা থেকে ফায়েদা লাভের নিমিত্তে আমাদের দ্বীনদার সমাজের পক্ষ থেকে কোনও দরখাস্ত দায়ের করা হয়নি। আমি হাত জোড় করে বলেছি, মিনতি করে বলেছি যে, আল্লাহর ওয়াস্তে এই দফা থেকে ফায়েদা লাভের নিমিত্তে আপনারা দরখাস্ত পেশ করুন। কিন্তু আফসোস! আমাদের পক্ষ থেকে কোনও দরখাস্ত দায়ের করা হয়নি। বেদ্বীনদের তরফ থেকে দরখাস্ত এসেছে, মুলহিদদের তরফ থেকে এসেছে এবং এর উপর যাচাই বাছাই হয়েছে। আমরা তখন দুইশতেরও বেশি আইন বদলিয়ে ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ সারা দুনিয়াতে শুধু পাকিস্তানেরই এই সৌভাগ্য যে, তাতে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে কুরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে কোন আইনকে চ্যালেঞ্জ করে তা পরিবর্তন করাতে পারে।”


    এ হলো তাকী উসমানী সাহেবের বক্তব্য। উল্লেখ্য যে, ১-২-৩ নাম্বার তিনটি বুঝার সুবিধার্থে আমার নিজের থেকে লাগানো।



    তাকী উসমানী সাহেবের এ বক্তব্যের উপর আমাদের কিছু পর্যালোচনা:
    ১. তাকী উসমানী সাহেবের বক্তব্যে একটি বাস্তব সত্য উঠে এসেছে যে, একমাত্র পাকিস্তান ব্যতীত মুসলিম নামধারী পৃথিবীর অন্য কোন রাষ্ট্রের সংবিধান হাকিমিয়্যাহ’র উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এমনকি সৌদি আরবও সুস্পষ্টরূপে হাকিমিয়্যা’র উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তদ্রূপ পৃথিবীর কোন মুসলিম নামধারী রাষ্ট্রের সংবিধানে স্পষ্টভাবে এ কথা নেই যে, সে দেশের শাসন ব্যবস্থা ইসলামী আইনের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। এমনকি সৌদি আরবেও না। অর্থাৎ পাকিস্তান ব্যতীত বাকি সকল মুসলিম রাষ্ট্র কুফরের উপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু আফসোস এমন ধ্রুব সত্যটি স্বীকার করে নেয়ার পরও মুফতী সাহেব মুসলিম নামধারী পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে দারুল ইসলাম তথা ইসলামী রাষ্ট্র বলে দাবি করেছেন এবং ফুকাহায়ে কেরামের কতক বক্তব্যের তাহরীফ-অপব্যাখ্যা করে দলীল পেশ করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন। ঐসব কুফরী রাষ্ট্রের শাসকদেরকে ইমামুল মুসলিমীন দাবি করে তাদের আনুগত্যকে ফরয সাব্যস্ত করেছেন। হায়! কুফরের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েও দারুল কুফর হল না, হয়ে গেল দারুল ইসলাম। মুসলামনদের দ্বীনের দুশমনরা হয়ে গেল তাদের ধর্মীয় ইমাম। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন!!

    ২. তিনি দাবি করেছেন, পাকিস্তান হাকিমিয়্যা’র উপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তার এ দাবি কতটুকু সত্য তা পাকিস্তানের সংবিধান দেখলেই বুঝা যাবে। হাকিমুল উম্মাহ শায়খ আইমান আযযাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ অনেকের কাছ থেকে শুনছিলেন যে, পাকিস্তানের সংবিধান ইসলামী। সেখানকার হুকুমত হাকিমিয়্যাহ’র উপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে, পশ্চিমা আদলে গড়ে উঠা আমেরিকার দালাল, চরম ইসলাম বিদ্বেষী যে পাকিস্তান তা হাকিমিয়্যাহ’র উপর প্রতিষ্ঠিত হয় কিভাবে? কিভাবে তা ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়? পরে তিনি পাকিস্তানের সংবিধান মনোযোগের সাথে অধ্যয়ন করে দেখেন, তা মূলত হাকিমিয়্যা’র উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মত পাকিস্তানের হাকিমিয়্যাহ’র মালিকও জনগণ বা অন্য কথায় সংসদ সদস্যরা। পাকিস্তানের সংবিধানেই তা স্পষ্ট বলা আছে। পাকিস্তানের সংবিধান যে কুফরের উপর প্রতিষ্ঠিত তা প্রমাণকল্পে তিনি ‘আস-সুবহু ওয়াল কিনদীল’ নামে একটি কিতাব লিখেছেন। কিতাবটি ১২৬ পৃষ্ঠার। আরবী বুঝেন এমন সকল ভাইকে আমি উপদেশ দেব কিতাবটি পড়ে নেয়ার জন্য। তাহলে পাকিস্তান সংবিধানে ইসলামের বাস্তবতা বুঝা যাবে ইনশাআল্লাহ।

    ৩. তাকী উসমানী সাহেব বার বার বড় গলায় বুলি আউড়ান যে, পাকিস্তান ইসলামের নামে সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কথা হল, শুধু নাম দিয়ে কাম কি? যে পাকিস্তান ইসলামের নামে সৃষ্টি হয়েছিল জন্মের পরমূহুর্ত থেকে আজ পর্যন্ত কি তাতে ইসলাম কায়েম হয়েছে? পাকিস্তান তো বানানো হয়েছিল ইসলামের নামে। বানানো তো হয়েছিল এই কথার উপর যে, তা চলবে কুরআন অনুযায়ী। কিন্তু কই! জন্মের পর পাকিস্তানে কি ইসলামী সংবিধান জারি করা হল নাকি কুফরী সংবিধান? আল্লাহর শরীয়তের সংবিধান নাকি ব্রিটিশদের কুফরী সংবিধান? উলামায়ে কেরামের সংবিধান না’কি ব্রিটিশ দালালদের সংবিধান? তাকী উসমানী সাহেবও এই ধ্রুব সত্যটি স্বীকার করে নিয়েছেন। দেখুন তার বক্তব্য,
    “পাকিস্তানের সংবিধানে পরিষ্কার বলা আছে, পাকিস্তানে কুরআন ও সুন্নাহর বিপরিত কোনও আইন বানানো যাবে না এবং বর্তমানে বিদ্যমান আইনকে পরিবর্তন করে কুরআন সুন্নাহর ধাঁচে রূপ দেয়া হবে।”

    অর্থাৎ বর্তমানে পাকিস্তান ব্রিটিশদের কুফরী সংবিধান দিয়েই চলবে। তবে ভবিষ্যতে কোন আইন ইসলাম পরিপন্থি বানানো যাবে না। আর বর্তমানে বিদ্যমান কুফরী আইনগুলো আস্তে আস্তে শরয়ী আদালতের মাধ্যমে ইসলামী আইনে রূপান্তর করা হবে।

    এখানে তিনিটি প্রশ্ন,
    ক. জন্মের পর পাকিস্তানের ভিত্তি কি ইসলামের উপর হল না’কি কুফরের উপর হল? অস্বীকার করার জু নেই যে, কুফরের উপর হল। কুফরী সংবিধানই জারি হল। ইসলামী সংবিধান হল না। ইসলামী শাসনও কায়েম হল না। তবে শাসকরা ওয়াদা করল, ভবিষ্যতে পাকিস্তান ইসলামী করা হবে।
    মোটকথা, পাকিস্তানের ভিত্তি কুফরের উপর। আর ইসলামী হবে কি’না সেটা ভবিষ্যতের বিষয় ছিল। জন্মের মূহুর্তে পাকিস্তান ইসলামী ছিল না। পরবর্তীতে ইসলামী হয়েছে কি’না সেটা পরের দুই প্রশ্নের উত্তরের উপর নির্ভর শীল।

    খ. পরবর্তীতে কি পাকিস্তানে কুরআন সুন্নাহ বিরোধি আইন করা হয়নি? উত্তর হবে নি:সন্দেহে হয়েছে। ব্রিটিশ সংবিধানে মুসলিম পারিবারিক আইনের অনেক ধারা ইসলামী শরীয়তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। এ আইন দিয়েই ইংরেজরা হিন্দুস্তান শাসন করত। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠালগ্নে এই আইনগুলো আগের মতোই পাকিস্তানের সংবিধানে ছিল। কিন্তু পরে এ কয়টা আইনও পরিবর্তন করে তদস্থলে কুফরী আইন চাল করা হয় যা এখনো চালু আছে। এ ছাড়াও হয়তো আরো অনেক কুফরী আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

    গ. শেষের প্রশ্নটি হল, শাসকরা যে ওয়াদা করেছিল প্রচলিত কুফরী আইনগুলোকে পরিবর্তন করে তদস্থলে ইসলামী আইন চালু করা হবে- আদৌ সেটা কি হয়েছে? সবাই জানে যে, তা আর হয়নি।

    যখন শাসন শুরু হল কুফরী আইন দিয়ে, পরবর্তীতে আরোও নতুন নতুন কুফরী আইন প্রণয়ন করা হল আর আগের কুফরী আইনগুলো পরিবর্তন না করে আপন অবস্থায় বহাল রাখা হল – তখন কি পাকিস্তান ইসলামী রাষ্ট্র হল না’কি আগের তুলনায় আরোও শক্ত কাফের রাষ্ট্র হল?? এরপরও পাকিস্তানকে ইসলামী রাষ্ট্র বলে দাবি করা হয় কিভাবে??

    ৪. সংবিধানে যে বলা ছিল,
    “প্রতিটি নাগরিকের এই অধিকার আছে যে, যদি কেউ কুরআন সুন্নাহ বিরোধি কোন আইন দেখতে পায় তাহলে এই আইনকে রহিত করে তদস্থলে ইসলামী আইন প্রবর্তন করার দাবি আদালতে পেশ করতে পারবে। আদালত যদি তার দাবি গ্রহণ করে তাহলে আদালতের এই অধিকার রয়েছে যে, এই আইনকে রহিত করে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করার আদেশ জারি করতে পারবে।”


    এখানে প্রশ্ন হল,
    ক. “আদালত যদি তার দাবি গ্রহণ করে তাহলে আদালতের এই অধিকার রয়েছে যে, এই আইনকে রহিত করে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করার আদেশ জারি করতে পারবে।”
    এখানে তো একথা নেই যে, আদালত অবশ্যই দাবি কবুল করবে। বরং যদি কবুল করে তবে করতে পারে। তাহলে আইন পরিবর্তনটা আদালতের দয়ার উপর রয়ে গেল।

    দ্বিতীয়ত আদালত কুফরী আইন রহিত করে ইসলামী আইন চালু করবে- তা তো বলা হয়নি। বরং চালু করার আদেশ জারি করবে। কিন্তু আদেশ পার্লামেন্ট সদস্যরা যে অবশ্যই মানবে এবং অবশ্যই ইসলামী আইন চালু করবে তা তো বলা হয়নি। যদি তারা ইসলামী আইন জারি করতে রাজি না হয় তাহলে অস্ত্র ও শক্তি প্রয়োগে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করা হবে তা তো বলা হয়নি। তাহলে সংবিধানের এই দফা – যাকে তাকী সাহেব ‘মহান দফা’ বলে গর্ববোধ করছেন, আশার বাঁধ যার উপর বাঁধছেন – তার মাধ্যমে কুফরী আইন রহিত করে ইসলামী আইন চালু করা তো নিশ্চিত হল না।

    খ. ইসলামের নামে যদি পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল তো শুরুতেই কুফরী সংবিধান কেন চালু করা হল? দ্বিতীয়ত জনগণ কি এই কুফরী সংবিধানকেই ইসলামী পাকিস্তানের (!!) ইসলামী সংবিধানরূপে মেনে নিয়েছিল? না’কি তারা এর বিরোধিতা করেছিল? সন্দেহ নেই যে, পাকিস্তানের আলেম উলামা, মুসলিম জনতা এই কুফরী সংবিধান মেনে নেয়নি। তারা একে প্রত্যাখান করেছিল। ইসলামী শরীয়তের জন্য মাঠে নেমেছিল। মিটিং মিছিল, দাবি দাওয়া সবই করেছিল। রক্তও ঝরিয়েছিল। উলামায়ে কেরাম ইসলামী সংবিধানের রূপরেখা তৈয়ার করে শাসকদের কাছ পেশও করেছিলেন। এক নয় দুই নয়, বছরের পর বছর তারা এর জন্য আন্দোলন করেছে। এখনও পর্যন্ত আন্দোলন চলছে। বাধ্য হয়ে তালেবানে ইসলামরা প্রসাশনের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়েছে। যুদ্ধও চলছে। কিন্তু কই! ইসলাম কি কায়েম হয়েছে? এরপরও পাকিস্তান ইসলামী রাষ্ট্র? কুফরের উপর ভিত্তি হয়েও ইসলামী রাষ্ট্র? কুফরের উপর অটল থেকেও ইসলামী রাষ্ট্র? ইসলাম পরিত্যাগ করেও ইসলামী রাষ্ট্র? ইসলাম প্রত্যাশীদের ইসলাম প্রত্যাশার কারণে হত্যার পরও ইসলামী রাষ্ট্র? ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত থেকেও ইসলামী রাষ্ট্র? হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে বুঝ দাও! আমীন! আমীন!


    ৫. ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ সত্তর বছরের মাথায়ও পাকিস্তান থেকে কুফরী সংবিধান সরানো গেল না। ইসলামী শাসন কায়েম করা গেল না। কেন গেল না? তাকী সাহেব বড়ই অদ্ভূত কারণ বাতলিয়েছেন। দেখুন উনার বক্তব্য,
    “আফসোস! এই মহান দফা তো পাকিস্তানের সংবিধানে বিদ্যমান আছে কিন্তু হুকুমত, হুকুমতের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আমি বলবো যে, আফসোস! দ্বীনদার সমাজের অনুভূতিহীনতার কারণে এই দফা বেকার পড়ে রয়েছে । এর থেকে তেমন কোন ফায়েদা লাভ করা যাচ্ছে না।”

    আহা! যুগ যুগের বাস্তবতাকে তাকী সাহেব এক বক্তৃতার মঞ্চেই অস্বীকার করে ফেললেন। পাকিস্তানের মুসলামনদের কি কোন অনুভূতি ছিল না? এই সত্তর বছরেও তাদের কোন অনুভূতি জাগেনি না? কিভাবে তাকী সাহেব অস্বীকার করলেন এতবড় বাস্তবতাকে! উলামায়ে কেরাম কি ইসলামের দাবি জানাননি? কুফরকে কি প্রত্যাখান করেননি। সাধারণ মুসলমান কি শত হাজারো আন্দোলন করেনি? ইসলামের দাবিতে শত হাজারো মুসলমানের লাশ কি পড়েনি? আজও কি দাবি হচ্ছে না? আজও রক্ত ঝরছে না? এত কিছুর পরও কি করে বলতে পারলেন, ‘আবেদনের অভাবে, অনুভূতির অভাবে ইসলাম কায়েম হচ্ছে না?’


    অনুভূতিহীনতা আর গাফলতের অভিযোগ শাসকদের ব্যাপারেও করেছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও করেছেন। তাদের গাফলতের কারণে ইসলাম কায়েম হচ্ছে না। এটা যে কত বড় বাস্তবতার অস্বীকার কোন চক্ষুষ্মানের কাছে তা অস্পষ্ট নয়। গাফলত দু’চার দিন হতে পারে। কেউ স্মরণ করানোর অভাবে হতে পারে। সত্তর বছর ধরেই কি গাফলত চলছে? যে রাষ্ট্র ইসলামের নামেই জন্মেছিল তা থেকে ইসলাম প্রত্যাহার করে কুফর চালু করা কি গাফলত? যুগ যুগ ধরে হাজারো আন্দোলনের পরও, হাজারো হাজার লাশ পড়ার পরও ইসলাম কায়েম না করা কি গাফলত? ইসলাম প্রত্যাশীদেরকে হত্যা করা কি গাফলত? ক্রুসেডারদের সাথে জোট বেঁধে ইসলামী ইমারতকে ধ্বংস করাও কি গাফলত? এটা কোন ধরণের গাফলত? কোন ধরণের গাফলতের কথা বলছেন তাকী সাহেব? এটা গাফলত না ইসলাম বিদ্বেষ? আপনি কি শিখাতে চাচ্ছেন আমাদেরকে? কি বুঝাতে চাচ্ছেন আমাদেরকে? মুসলিম উম্মাহকে আপনি একেবারেই অন্ধ মনে করেন? একেবারেই জ্ঞানহীন মূর্খ মনে করেন? আপনি কি মনে করেন আপনার চালবাজি তারা বুঝে না? আপনি কি মনে করেন আপনার ধোঁকাবাজি তারা বুঝে না? হ্যাঁ, যারা তাদের দ্বীন তাকী সাহেবের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে তারা একে গাফলত মনে করতে পারে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমরা আপনার চালবাজি বুঝে নিয়েছি। আপনার প্রতারণার ফাঁদে আমরা ইনশাআল্লাহ পড়বো না। হে আল্লাহ! দাজ্জালদের দাজ্জালী থেকে তুমি তোমার বান্দাদেরকে বাঁচাও! হে আল্লাহ তুমি বাঁচাও! হে আল্লাহ তুমি বাঁচাও!

    ৬. তাকী সাহেব বলেন,
    “যেসব লোক এই প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে যে, পাকিস্তানে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য অস্ত্র হাতে নেয়া ব্যতীত দ্বিতীয় কোন রাস্তা নেই তাদের এই প্রোপাগান্ডা সম্পূর্ণ গলদ এবং ধোঁকাবাজি। শান্তিপূর্ণ পন্থায় ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আলহামদুলিল্লাহ রাস্তা বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু শর্ত হচ্ছে এই অনুভূতিহীনতা খতম করে অনুভূতি সৃষ্টি করতে হবে। অনুভূতি সৃষ্টি করে এই দফাকে বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে।”

    আমরা দেখেছি যে, সত্তর বছরের মাথায়ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় কোন কাজ হয়নি? এমনকি হাজারো হাজারো লাশ পড়েও কোন লাভ হয়নি। পাকিস্তানী তাগুতরা যারা একসময় হিন্দুস্তানী জনসাধারণের সাথে গাদ্দারী করে ইংরেজদের গোলামী করেছে, যারা ক্রুসেডারদে পক্ষ হয়ে উসমানী খেলাফতকে ধ্বসং করেছে সেই গাদ্দাররা, সেই তাগুতরাই সত্তর বছর ধরে পাকিস্তানে কুফর টিকিয়ে রাখছে। ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। কোন শরীয়তে এখনোও এদের বিরুদ্ধে কিতাল করাকে ফরয ঘোষণা দেয় না? কোন সেই শরীয়ত? শরীয়তে মুহাম্মাদী – আলা সাহিবিহা সালাওয়াতু রাব্বি ওয়া সালামুহু – তে তো ইসলামী পন্হায় নির্বাচিত ইসলামী শাসক নামায কায়েম না করলেই, কিংবা নিজে নামায ছেড়ে দিলেই কিংবা কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করে দিলেই কিংবা দ্বীনের অন্যকোন অকাট্য বিধান বর্জন করায় অটল থাকলেই তার বিরুদ্ধে কিতালকে ফরয করা হয়েছে। তাহলে এইসব তাগুতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলাকে কোন শরীয়তের আলোকে তাকী সাহেব প্রোপাগান্ডা সাবস্ত করছেন? নিশ্চয় এটা শরীয়তে মুহাম্মাদী নয়। এটা আব্রাহাম লিংকনের শরীয়ত। এটা পারভেজ মোশাররফের শরীয়ত। এটা জারদারির শরীয়ত। এটা ভুট্টোর শরীয়ত। হতে পারে এটা তাকী সাহেবের শরীয়ত। কিন্তু এটা শরীয়তে মুহাম্মাদী নয়। এটা মুসলিম উম্মাহর শরীয়ত নয়। মুসলিম উম্মাহ তাকী সাহেবের শরীয়ত থেকে মুক্ত। এর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
    اللهم أرنا الحق حقاً وارزقنا إتباعه وأرنا الباطل باطلاً وارزقنا اجتنابه


  • #2
    হ্যাঁ, যারা তাদের দ্বীন তাকী সাহেবের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে তারা একে গাফলত মনে করতে পারে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমরা আপনার চালবাজি বুঝে নিয়েছি। আপনার প্রতারণার ফাঁদে আমরা ইনশাআল্লাহ পড়বো না। হে আল্লাহ! দাজ্জালদের দাজ্জালী থেকে তুমি তোমার বান্দাদেরকে বাঁচাও! হে আল্লাহ তুমি বাঁচাও! হে আল্লাহ তুমি বাঁচাও!

    Comment


    • #3
      শরীয়তে মুহাম্মাদী – আলা সাহিবিহা সালাওয়াতু রাব্বি ওয়া সালামুহু – তে তো ইসলামী পন্হায় নির্বাচিত ইসলামী শাসক নামায কায়েম না করলেই, কিংবা নিজে নামায ছেড়ে দিলেই কিংবা কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করে দিলেই কিংবা দ্বীনের অন্যকোন অকাট্য বিধান বর্জন করায় অটল থাকলেই তার বিরুদ্ধে কিতালকে ফরয করা হয়েছে। তাহলে এইসব তাগুতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলাকে কোন শরীয়তের আলোকে তাকী সাহেব প্রোপাগান্ডা সাবস্ত করছেন? নিশ্চয় এটা শরীয়তে মুহাম্মাদী নয়। এটা আব্রাহাম লিংকনের শরীয়ত। এটা পারভেজ মোশাররফের শরীয়ত। এটা জারদারির শরীয়ত। এটা ভুট্টোর শরীয়ত। হতে পারে এটা তাকী সাহেবের শরীয়ত। কিন্তু এটা শরীয়তে মুহাম্মাদী নয়। এটা মুসলিম উম্মাহর শরীয়ত নয়। মুসলিম উম্মাহ তাকী সাহেবের শরীয়ত থেকে মুক্ত। এর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।

      Comment


      • #4
        শরীয়তে মুহাম্মাদী – আলা সাহিবিহা সালাওয়াতু রাব্বি ওয়া সালামুহু – তে তো ইসলামী পন্হায় নির্বাচিত ইসলামী শাসক নামায কায়েম না করলেই, কিংবা নিজে নামায ছেড়ে দিলেই কিংবা কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করে দিলেই কিংবা দ্বীনের অন্যকোন অকাট্য বিধান বর্জন করায় অটল থাকলেই তার বিরুদ্ধে কিতালকে ফরয করা হয়েছে। তাহলে এইসব তাগুতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলাকে কোন শরীয়তের আলোকে তাকী সাহেব প্রোপাগান্ডা সাবস্ত করছেন? নিশ্চয় এটা শরীয়তে মুহাম্মাদী নয়। এটা আব্রাহাম লিংকনের শরীয়ত। এটা পারভেজ মোশাররফের শরীয়ত। এটা জারদারির শরীয়ত। এটা ভুট্টোর শরীয়ত। হতে পারে এটা তাকী সাহেবের শরীয়ত। কিন্তু এটা শরীয়তে মুহাম্মাদী নয়। এটা মুসলিম উম্মাহর শরীয়ত নয়। মুসলিম উম্মাহ তাকী সাহেবের শরীয়ত থেকে মুক্ত। এর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহু খাইরান । বাংলায় কথা আছে ,অন্যকে বেশী দাম দিলে নিজের দাম কমে যায়।
          #আল্লাহ আমাদের হকের উপর অটল রাখুন ,আমিন।
          আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
          আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

          Comment


          • #6
            আপনার পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
            আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
            আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

            Comment


            • #7
              জাজাকাল্লাহ।

              Comment


              • #8
                জাযাকাল্লাহ

                Comment


                • #9
                  জাজাকাল্লাহ

                  Comment


                  • #10
                    আল্লাহ ,আপনি আমাদেরকে হক্বের উপর অটল থাকার তাওফিক দান করুন ,আমিন।
                    #এই লোকের মাধ্যমে যেই ফিৎনা মুসলিমদের মাঝে নিচ্ছে তা থেকেও মুসলিমদের হিফাজত করুন ,আমিন।
                    #আল্লাহ,আল্লাহ,আল্লাহ,আপনিই সাহায্যকারী ।
                    সম্মান নেইকো নাচে গানে,
                    আছে মর্যাদা বিনিদ্র রজনী ও রণে।

                    Comment


                    • #11
                      যারা পাকিস্তানকে এখনো মুসলিম রাষ্ট্র ভাবেন, তাদের জন্য পোস্টটি অনেক উপকারে আসবে, ইনশা আল্লাহ।
                      সবাইকে অনুগ্রহ করে পড়ে নেওয়ার বিনীত অনুরোধ করছি।
                      আল্লাহ ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের সকল দ্বীনি খেদমাতকে কবুল ও মাকবুল করুন এবং উত্তম থেকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন
                      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

                      Comment


                      • #12
                        Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
                        যারা পাকিস্তানকে এখনো মুসলিম রাষ্ট্র ভাবেন, তাদের জন্য পোস্টটি অনেক উপকারে আসবে, ইনশা আল্লাহ।
                        সবাইকে অনুগ্রহ করে পড়ে নেওয়ার বিনীত অনুরোধ করছি।
                        আল্লাহ ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের সকল দ্বীনি খেদমাতকে কবুল ও মাকবুল করুন এবং উত্তম থেকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন
                        হে আল্লাহ আমাদের সকল ভাইকে কবুল করুন। উনাদের ইলম আরও বাড়িয়ে দিন। যে ইলম উপকারি। আল্লাহ দুনিয়াতে না হোক জান্নাতে এই ভাইদের সাথে মিলিত করেন।
                        فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِيَآءَ الشَّيْطٰنِ

                        Comment


                        • #13
                          মাশাআল্লাহ ভাই! আপনার সৎ সাহসকে আল্লাহ তায়ালা আরো আরো বাড়িয়ে দিন!
                          অবিচার ও কুশাসনের মধ্যে শাসকগণের পক্ষাবলম্বন করা সর্বাপেক্ষা বড় প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়,আলী রাঃ

                          Comment


                          • #14
                            Originally posted by jubayer husain View Post
                            মাশাআল্লাহ ভাই! আপনার সৎ সাহসকে আল্লাহ তায়ালা আরো আরো বাড়িয়ে দিন!
                            আল্লাহুম্মা আমীন, ছুম্মা আমীন।
                            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                            Comment

                            Working...
                            X