Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিতে গেলো সরকার, হেরে গেলো ভবিষ্যত!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিতে গেলো সরকার, হেরে গেলো ভবিষ্যত!

    জিতে গেলো সরকার, হেরে গেলো ভবিষ্যত!







    যে জবান দিয়ে শেখ হাসিনাকে তুলোধুনো করেছিলেন, সেই জবানে এমন তৈলমর্দনে লজ্জার সীমা অতিক্রম কারো কাম্য নয়। লালবাগের নেতারা বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দেবে ওলামায়ে কেরাম! নিউজ করেছে ইনসাফ টুয়েন্টিফোর। দেখে লজ্জায় মাথা নুয়ে গেছে। প্রতিবাদ করেছি। কারো বক্তব্যে কওমীর ঐতিহ্য ধুলিস্যাত হলে ছেড়ে কথা বলবো না ইনশাআল্লাহ। তাতে সে যেই হোক! যদিও মিথ্যা বারবার উচ্চারণ করলে একসময় সত্য মনে হয়, কিন্তু সবকিছুর পরও পৃথিবীর সব এক হয়ে গেলেও সত্য সত্যই থেকে যাবে। আর সেই সত্যের ধারক বাহক যদি একজন হয়, আমি চেষ্টা করবো সেটি যেনো আমি হতে পারি। আমি স্বীকৃতির পক্ষে না থাকলে কি আমার কবিরা গুনাহ হবে? প্রশ্নই আসে না। কিন্তু মুরব্বীরা পক্ষে থাকায় বিরোধীতাও করি না।

    স্বীকৃতি। কওমী শিক্ষার স্বীকৃতি কেউ দিক চাই না দিক, তাতে কওমী আলেমদের কিছু যায় আসে না। স্বীকৃতি পেয়ে কেউ এলিয়েন হয়ে যাননি/যাবেন না। স্বীকৃতি না পেয়েও কেউ আলেম থেকে খারিজ হয়ে যাননি/যাবেন না। আমাদের ওস্তাদরা শিখিয়েছেন, আমরা একমাত্র আল্লাহ তাআলার রেজামন্দির জন্য কওমী মাদরাসায় পড়েছি, সার্টিফিকিটের জন্য নয়। তবুও মুরব্বীরা মনে করেছেন স্বীকৃতি দরকার, তাই এ নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। যদিও আমি আগাগোড়া কওমী শিক্ষার সরকারী স্বীকৃতির বিপক্ষে। আমি চাই কওমীতে স্কুলের নতুন শাখা চালু করে আমরা নিজেরাই সরকারের সমীহ আদায় করবো। সে সামার্থ আমাদের আছে। অধিকার আদায়ের নামে নিজেদের স্বকীয়তা বিলিয়ে দেবার যৌক্তিকতা দেখি না।

    যাহোক! কওমী শিক্ষার সরকারী স্বীকৃতি দিয়েছে আওয়ামী সরকার। সরকারী স্বীকৃতির জন্য সবচেয়ে বেশী অবদান বলবো আল্লামা শায়খুল হাদীস রহমাতুল্লাহি আলাইহির। স্বীকৃতির দাবীতে তাঁর সেই ঐতিহাসিক অনশন এবং সে অনশনে পীর সাহেব চরমোনাই রহমাতুল্লাহি আলাইহির একাত্মতা জাতি ভুলে যাবার কথা নয়। এ সময়ে এসে আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাফিজাহুল্লাহ ও আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ হাদাহুল্লাহ’র নেতৃত্বে এ স্বীকৃতি অর্জিত হয়েছে। কিন্তু-

    যখন মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ হাদাহুল্লাহ স্বীকৃতির জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছিলেন, তখন তাকে হটাবার মিশন নিয়ে কওমীমহল গরম! অনেকে ফরিদ উদ্দীন মাসউদ সাহেবকে নাস্তিক টাস্তিকও বলে ফেলেছিলো শেখ হাসিনার কাছে স্বীকৃতি চান বলে। আরজাবাদের এক মিটিংয়ে বক্তাদের বলতে শুনেছি, স্বীকৃতি নিবো, তবে শাপলার খুনি থেকে নয়! শেখ হাসিনার কাছে স্বীকৃতি চাই না! এই স্বীকৃতির ওপর প্রস্রাব করি! ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রশ্ন হলো, সেই বক্তারাই ক’দিনের মাথায় শেখ হাসিনার সঙ্গে ওপেন বৈঠক করলো এবং সেটি ফরিদ উদ্দীন মাসউদ সাহেবের মিডিয়া হয়েই! ঐ বৈঠকের পর মাসউদ সাহেবকে বিভিন্ন জায়গায় ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনাও দেয়া হয়েছিলো!

    স্বীকৃতিতে যে আন্দোলনের পাশাপাশি লিয়াজোঁও ছিলো, তা স্পষ্ট। বাংলাদেশে ইসলামী লিয়াজোঁ এন্ড দালালিস্টরা কীভাবে এবং কার দালালী করছে তা এখন ওপেন সিক্রেট।

    স্বীকৃতি এলো। প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মোবারকবাদ পাবেন। কিন্তু বক্তাদের আলোচনার মূলকেন্দ্রে এবং ফেসবুকে মোবারকবাদ পাবার কথা ছিলো বিশেষ করে চারজন ব্যক্তির- শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক রহমাতুল্লাহি আলাইহি, চরমোনাইর মরহুম পীর রহঃ, আল্লামা শাহ আহমদ শফী হাফিজাহুল্লাহ এবং আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ হাদাহুল্লাহ। কিন্তু এ চারজনকে হাইলাইটস করে তেমন কোনো বক্তব্য শোনলাম না। হাইলাইটস করা হলো শেখ হাসিনাকে। যেমন তেমন হাইলাইটস নয়, বক্তব্যে মনে হলো শেখ হাসিনাই হুজুরদের সবচেয়ে বড় নেতা! জানের জান! একেবারে জীবন দিয়ে দিবে অবস্থা!

    ইনসাফ টুয়েন্টিফোর সম্পাদক মাহফুজ ভাই ইনবক্স করলেন, ভাই শিরোনাম একটু সংশোধিত হয়েছে। মূল শিরোনাম হবে, ‘স্বীকৃতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে আলেম-উলামারা রুখে দেবে’। অনেকে বললেন বক্তব্যের ভিডিওটা যেনো শুনে নেই। ভাবলাম শোনা দরকার। বক্তব্য শুনে তো লজ্জা আরো বেড়ে গেলো! যারা ভিডিও দেখতে বলেছে, কেনো বলেছে খুঁজে পেলাম না। বক্তব্যে তো একেবারে শেষবিন্দু রক্ত দিয়ে হলেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হবে বলে ঝড় তুলেছেন! তার বক্তব্যের মূল থিমটা ছিলো- নাস্তিক, বেদআতী মাজারপুজারীরা যদি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, তাহলে ওলামায়ে কেরাম শেষবিন্দু রক্ত দিয়ে তা রুখে দিবে!

    আচ্ছা, শেখ হাসিনার জন্য ওলামায়ে কেরাম যে রক্ত দিবেন, এ রক্তের ডিলারশীপ উনি কবে নিলেন বা কে দিয়েছে? ওনারা কি আলেম ওলামার রক্ত নিয়ে খেলতেই পছন্দ করেন? নাকি আলেম ওলামার রক্ত না দেখলে ওনাদের ভালো লাগে না? শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হবে কেনো? নাস্তিক, বেদআতী ও মাজারপুজারীরা তো সরকারের সঙ্গেই আছে! মাজারপুজারীরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বলেও নি, বলেছে স্বীকৃতির বিরুদ্ধে। তাহলে উনি গায়ে পড়ে এ কথা কেনো বললেন? আসলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কিছু বলার একটি ক্ষেত্র দরকার ছিলো, সেটির যথাযথ ব্যবহার করেছেন। না হয় বক্তব্যটা ভিন্নভাবে হওয়া লাজেম ছিলো, ‘স্বীকৃতির বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হলে ওলামায়ে কেরাম তা রুখে দিবেন’।

    লজ্জা লাগে তার এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের পরও একদল জাহেল সাফাই গেয়ে যাচ্ছে দেখে! সর্বপরি স্বীকৃতি নিয়ে রাজনীতির চালে প্রধানমন্ত্রী স্টার মার্ক পেয়ে জিতে গেলেন। হেরে গেলো ভবিষ্যত কওমীশিক্ষা। যেই শেখ হাসিনাকে ইসলামের সবচেয়ে দুশমন বলে ঘোষণা দিয়ে মন্দের ভালো হিসেবে বিএনপিতে গিয়েছিলেন, সেই তাদেরকেই শেখ হাসিনার পক্ষে রাস্তায় নামিয়ে দিলো! নির্বাচনকে নাকের ডগায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে হুজুদের রাস্তায় নেমে এভাবে সংবর্ধনা হয়তো প্রধানমন্ত্রী নিজেও এতোটা আশা করেননি।

    প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মোবারকবাদ পেতে পারেন। কিন্তু তাই বলে স্বীকৃতি ইস্যূ ব্যবহার করে নিজের দালালী সম্পাদন করার ইজারা দেয়া হয়নি কাউকে। আমি প্রতিবাদ করায় অনেকে তাসলিমা নাসরিনের সঙ্গে তুলনা করেছে আমাকে। বিবেকে কতোটুকু পচন ধরলে এমন ধৃষ্টতা দেখাতে পারে! অবশ্য লালবাগওয়ালাদের এটা নতুন কিছু নয়। আওয়ামীপ্রেমী হওয়ায় মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ সাহেবকেও একটি টিভি চ্যানেলের লাইভ প্রোগ্রামে তারা তাসলিমা নাসরিনের সঙ্গে ওজন করেছিলো। অথচ আজ সেই তারাই শেখ হাসিনার জন্য রক্ত দেবার ইজারা নিয়েছে! আর আমি তার প্রতিবাদ করায় তাসলিমা নাসরিনের সঙ্গে তুলনা! এমন ইউটার্ণ! লজ্জার মাথা এভাবে খায় কেহ?

    ওহহো! তাদের আরেকটি বক্তব্য বাকি আছে তো!- ‘স্বীকৃতি নিয়ে ফরিদ উদ্দীন মাসউদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে আলেম-উলামারা শেষবিন্দু রক্ত দিয়ে রুখে দেবে’।
    এ শ্লোগানে সম্ভবত আসন পাওয়া যাবে না, তাই…।

    সবশেষে বলি, একটি ইসলামী দল একক নির্বাচন করায় যারা ফেনা তুলতো, একক নির্বাচনে আওয়ামীলীগের উপকার হচ্ছে, আজ তাদের কাছে প্রশ্ন- স্বীকৃতির মুলা হাতে পেয়ে হুজুরদের রাস্তায় নেমে যাওয়ায় রাজনীতিতে কার ফায়দা? লীগ নাকি বিএনপির? ভুলে যাবেন না! দলটা আওয়ামীলীগ।




    যারা ঈমানদার তারা যে, ক্বিতাল করে আল্লাহর রাহেই । আল-ক্বুরআনুল কারীম ।

  • #2
    আসলে আলেমে সু দের কপালে দুক্ষ আসে, আজ যারা তাগুতের গোলাম বনে গেছে তাদের উপড়ই সর্ব প্রথম এই তাগুতের বোমা পরবে।

    Comment


    • #3
      লালবাগ!! হারিয়ে গেছে তার চেতনা। লালবাগ এখন আওয়ামেলিগের আস্তানা। কতটুকু সত্য বলতে পারব না, শুনতে ছোট আমিনী নাকি লীগের সাপোর্ট নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াই নির্বাচন করবে!! আসলে দুনিয়াতে তারাই মাস্তানি করে যাদের বাবারা নেতা/ পীর।
      আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
      আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

      Comment


      • #4
        আচ্ছা, হাসিনার প্রশংসা করবো? সে মোবারকবাদ পাবার যোগ্য? একটা ছুরির পুরোটা পেটে ঢুকিয়ে সামান্য বের করল ।আর আপনি তখন কি বলবেন , পুরোটা ছুরি ঢুকানোর পর যেহেতু কিছুটা বের করেছে তাই কিছুটা প্রশংসা পাবার যোগ্য! !মোবারকবাদ পাবার উপযুক্ত!!!

        Comment


        • #5
          এক সময়ের আওমেলীগের শুত্রু ঘাটি হয়ে বন্ধু ঘাটি।
          শিরোনামটি এমন হলে সুন্দর হতোঃ জিতে গেলো হাসিনা ত্বাগুত হেরে গেলো ভবিষ্যত।
          والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

          Comment

          Working...
          X