Announcement

Collapse
No announcement yet.

সাহাবায়ে কেরামের ওয়ালা-বারার কিছু বিস্ময়কর চিত্র

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সাহাবায়ে কেরামের ওয়ালা-বারার কিছু বিস্ময়কর চিত্র

    ওয়ালা-বারা ইসলামের একটি মৌলিক আকীদা। সাহাবায়ে কেরাম ওয়ালা-বারার উপর এমনভাবে আমল করেছেন যার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল, তাই এ ব্যাপারে তাদের কিছু বিস্ময়কর ঘটনা সংক্ষেপে তুলে করছি, যেন আমরা ওয়ালা-বারার উপর আমলের স্বরুপ জানতে পারি।
    ১ – ইমাম মুসলিম ইবনে আব্বাস রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণণা করেন, “বদর যুদ্ধে সত্তরজন কাফের বন্দী হলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ব্যাপারে আবু বকর ও উমরের সাথে পরামর্শ করেন, আবু বকর রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, এরা তো আমাদেরই আত্মীয়-স্বজন, সুতরাং আমার মত হলো তাদেরকে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া, যেন এই অর্থের মাধ্যমে আমরা কাফেরদের বিরুদ্ধে শক্তি অর্জন করতে পারি। এবং আশা করি আল্লাহ তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তাওফিক দিবেন। কিন্তু উমর বলেন, আমার মত আবু বকরের মতের থেকে ভিন্ন, আমার মত হলো, আমরা নিজ হাতে তাদেরকে হত্যা করবো, আলী তার ভাই আকীলকে হত্যা করবে, আমি আমার আত্মীয় অমুককে হত্যা করবো। কেননা এরাই কুফরের নেতৃবৃন্দ”। মুসনাদে আহমদের বর্ণণায় অতিরিক্ত এসেছে, “যেন আল্লাহ তায়ালা দেখে নেন, কাফেরদের প্রতি আমাদের অন্তরে কোন নম্রতা নেই”। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবুবকরের পরামর্শ গ্রহণ করে বন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাযিল করে জানিয়ে দেন, কাফেরদের শক্তি খর্ব করার জন্য হত্যা করাই সংগত ছিল। মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদীস নং: ১৭৬৩ মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং: ২০৮)
    ২ - আব্দুল্লাহ বিন শাওযাব রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, বদর যুদ্ধের দিন আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাযিআল্লাহু আনহুর বাবা তাকে হত্যা করার জন্য চেষ্টা করছিলো, কিন্তু আবু উবাইদাহ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন সে বারবার এমন করলো তখন আবু উবাইদাহ রাযিআল্লাহু আনহু তাকে খতম করে দিলেন। এই প্রেক্ষিতেই অবতীর্ণ হয়, لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ (যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে তাদেরকে তুমি আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধীদের ভালোবাসতে দেখবে না, যদিও বিরোধীবাদীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা জ্ঞাতী-গোষ্ঠী হয়। সুরাতুল মুজাদালা, আয়াত: ২২) (আলমু’জামুল কাবীর তবরানী, হাদীস : ৩৬০, আলইসাবাহ, হাফেয ইবনে হাযার, ৫/২৮৬, হাফেয ইবনে হাযার এই হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন)
    ৩ – একব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল আমার পিতা আপনার নিন্দা করতো, তাই আমি তাকে হত্যা করে ফেলেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কাজে কোন কষ্ট পাননি। (সুনানে বাইহাকী, হাদীস : 17042, আলইসাবাহ, লিলহাফেয ইবনে হাযার, ৯/৬২ বাইহাকী বলেন, এটি সহীহ সনদে বর্ণিত মুরসাল হাদীস)
    ৪ - বদরের যুদ্ধের সময় আবুবকর রাযিআল্লাহু আনহুর ছেলে আব্দুর রহমান কাফের ছিল এবং মুশরিকদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতে এসেছিল, পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণের পর তিনি আবুবকর রাযিআল্লাহু আনহুকে বলেন, “বদরের যুদ্ধের দিন আমি আপনাকে দেখেছিলাম, (এবং ইচ্ছে করলে আপনাকে টার্গেট করতে পারতাম কিন্তু হত্যা করার ইচ্ছা না থাকায়) পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিলাম। জবাবে আবুবকর বলেন, কিন্তু আমি যদি তোমাকে দেখতে পেতাম তাহলে তোমাকে হত্যা করে ফেলতাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৭৯৫০)
    ৫ – বদরের যুদ্ধে মুসয়াব বিন উমায়েরের ভাই আবু আযীয বিন উমায়ের বন্দী হয়। এক আনসারী সাহাবী তাকে বন্দী করে বাঁধছিলেন, তখন মুসয়াব বিন উমায়ের তাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন। ভাইকে বন্দী করতে দেখে তিনি আনসারীকে বলেন, একে কষে বাঁধো, এর মা অনেক সম্পদশালী, তুমি বেশ ভালো মুক্তিপণ পাবে। এ কথা শুনে আবু আযীয বলল, ভাইয়ের জন্য এটাই আপনার অসিয়্যাত ? মুসয়াব রাযিআল্লাহু আনহু বললেন, আমার ভাই তো এই আনসারী, তুমি নও !! (আলবিদায়া ওয়াননিহায়া, ইবনে কাসীর, ৫/১৯১)
    ৬ - ইবনে হিশাম তার সীরাত গ্রন্থে বর্ণনা করেন, “উমর রাযিআল্লাহু আনহু সাইদ বিন আস রাযিআল্লাহু আনহুকে বলেন, সম্ভবত তোমার ধারণা, আমি তোমার বাবাকে হত্যা করেছি, যদি আমি তাকে হত্যা করতাম তাহলে তোমার কাছে ওযরখাহি করতাম না। কিন্তু আমি তাকে হত্যা করিনি। বরং আমি আমার মামা আস বিন হিশাম বিন মুগিরাকে হত্যা করেছি। তোমার পিতাকে তো তার চাচাত ভাই আলী হত্যা করেছে।” আলইসাবাহর বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে, “উমর রাযিআল্লাহুর কথা শুনে সাইদ বিন আস বলেন, যদি আপনি তাকে হত্যা করতেন তাহলে আপনি হতেন হকের উপরে আর সে হত বাতিলের উপরে”। (সীরাতে ইবনে হিশাম, ২/৩০১, আলইসাবাহ ৪/৩৪২)
    ৭ - আবুয্ যিনাদ বলেন, বদরের যুদ্ধের সময় আবু হুযাইফাহ রাযিআল্লাহু আনহু তার বাবা উতবাকে দ্বন্দযুদ্ধের প্রতি আহ্বান করেন, কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বাবার সাথে যুদ্ধ করতে নিষেধ করেন। ওয়াকেদী বলেন, আব্দুর রহমান বিন আবু বকর বদরের দিন মুশরিকদের পক্ষ থেকে মুসলমানদের দ্বন্দযুদ্ধের প্রতি আহ্বান করে, তখন আবু বকর রাযিআল্লাহু তার মোকাবেলা করার জন্য তার দিকে অগ্রসর হন। কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এই বলে নিবৃত্ত করেন, হে আবু বকর, (তোমার জীবন বাঁচিয়ে রেখে) আমাদেরকে তোমার দ্বারা উপকৃত হতে দাও। (সুনানে বাইহাকী, হাদিস : ১৬৭৭৪)

  • #2
    সুবহানাল্লাহ! এজন্যই উনারা ছিলেন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের সঙ্গী। আল্লাহ আমাদের এই বাস্তব উদাহরণ থেকে অন্তত এই বুঝের উপরে আমল করার তৌফিক দিন যাতে করে আমরা আমাদের পরিবার পরিজনের কুফরির বিরুদ্ধে তরবারি না ধরতে পারলেও তাদের চোখ রাঙ্গানী উপেক্ষা করে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ'র কাজ জারি রাখিতে পারি ইনশা আল্লাহ।

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ। জাযাকাল্লাহ। চমৎকার হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রতিভা আরো বাড়িয়ে দিন। অামিন। ভাই, মুল আরবী ইবারত সহ লিখলে আমাদের জন্য আরো ফায়দাজনক হতো। আশা করি সামনে থেকে এমনটি করবেন। আল্লাহ তায়ালা অাপনার ইলম বাড়িয়ে দিন। তা থেকে উম্মতকে উকৃত করুন। আমীন, ইয়া-রাব্বাল অালামিন।
      কে আছো জোয়ান, হও আগোয়ান।

      Comment


      • #4
        ইসলামী ইতিহাসে বদরের যুদ্ধ একটি কঠিনতম যুদ্ধ ছিলো। কারণ এ যুদ্ধে ছেলে পিতার বিরোদ্ধে যুদ্ধ করেছে, আর পিতা ছেলের বিরোদ্ধে যুদ্ধ করেছে! এটি সাহাবায়ে কিরাম রিদঃ এর জন্য একটি কঠিন পরীক্ষাও ছিলো। পিতা কাফের আর ছেলে মুসলিম। একজন চির জান্নাতি আরেকজন চির জাহান্নামী। কিন্তু সম্পর্কে পিতাপুত্র। কিন্তু আমাদের রব বলেছেন যে মুসলিম নয় সে তোমার পরিবার ভুক্ত নয়। নুহ আঃকে আল্লাহ বলেন কিনান তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সুতরাং তার জন্য দুয়া করো না।
        والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

        Comment


        • #5
          Originally posted by নওজোয়ান View Post
          মাশাআল্লাহ। জাযাকাল্লাহ। চমৎকার হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রতিভা আরো বাড়িয়ে দিন। অামিন। ভাই, মুল আরবী ইবারত সহ লিখলে আমাদের জন্য আরো ফায়দাজনক হতো। আশা করি সামনে থেকে এমনটি করবেন। আল্লাহ তায়ালা অাপনার ইলম বাড়িয়ে দিন। তা থেকে উম্মতকে উকৃত করুন। আমীন, ইয়া-রাব্বাল অালামিন।
          আখি, পোষ্টটি দীর্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে আরবী ইবারত উল্লেখ করিনি, তবে সামনে থেকে বিষয়টি বিবেচনায়া রাখবো ইনশাআল্লাহ, আর সুপরামর্শের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ جزاك الله خيرا في الدارين ।

          Comment


          • #6
            জাঝাকাল্লাহ আখি, আল্লাহ আপনাকে কবুল করুন আমিন।
            আমি হতে চাই খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা এর মত রণকৌশল ও ওমর (রা এর মত কাফেরদের প্রতি কঠোর।

            Comment


            • #7
              সুবহানাল্লাহ কেমন ছিলো সাহাবাদের কর্মপদ্ধাতি। আমরা এ থেকে কতই না দূরে। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের কবুল করুন।

              Comment


              • #8
                সুবাহানাল্লাহ্ কেমন ছিলো সাহাবাদের কর্ম।আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে সাহাবাদের মত করে দেন।আমিন।

                Comment


                • #9
                  হে আল্লাহ আপনি আমাদের ইমান ও সাহাবাদদের ইমানের মত মুস্বত করে দিন।


                  শহীদি সুধার খোঁজে মোরা
                  ছুটে চলি বিশ্বময়!
                  Last edited by Abu Hammad Hadi; 09-29-2018, 07:28 AM.
                  আমরা পুরুষ, যারা মৃত্যুকে ততটাই ভালোবাসি
                  যতটা তোমরা তোমাদের জীবনকে ভালোবাসো৷

                  Comment


                  • #10
                    প্রিয় ভিজিটর ভাইয়েরা, আসুন আমরা জাযাকাল্লাহ বাটন ইউস করি। জাযাকাল্লাহ লিখা বন্ধ করি।
                    আল্লাহ আমাদের মুজাহিদ হিসেবে কবুল করে নিন আমীন।

                    Comment


                    • #11
                      قال ابن مسعود رضي الله عنه «من كان منكم متأسيا فليتأس بأصحاب محمد صلى الله عليه وسلم؛ فإنهم كانوا أبر هذه الأمة قلوبا وأعمقها علما وأقلها تكلفا وأقومها هديا وأحسنها حالا، قوما اختارهم الله تعالى لصحبة نبيه صلى الله عليه وسلم، فاعرفوا لهم فضلهم واتبعوهم في آثارهم؛ فإنهم كانوا على الهدى المستقيم»
                      হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. (মৃত্যু: ৩২ হিজরী) বলেন, যদি কারো আদর্শ গ্রহণ করতে চাও, তাহলে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সাহাবীদের আদর্শ গ্রহণ করো। কারণ, তারা এ উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে বেশী নেক অন্তর বিশিষ্ট, গভীর জ্ঞানের অধিকারী, লৌকিকতা তাদের মাঝে কম, সঠিক জিবনচরিত বিশিষ্ট, অবস্থা সবচাইতে ভাল। তারা এমন মানুষ, যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সুহবত লাভের জন্য নির্বাচন করছেন। সুতরাং তাদের মরযাদা যথাযথভাবে বুঝ এবং পদাঙ্ক অনুসরণ করো। কারণ, তারাই পূর্ণ হেদায়াতের উপর আছে। ( জামিয়ূ বয়ানিল ইলমী ও ফাযলিহী- ইবনে আব্দিল বার মালেকী (৪৬৩ হিজরী) ২/৩৪৭)
                      ফিরে এসো দ্বীনের পথে।

                      Comment


                      • #12
                        হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. (মৃত্যু: ৩২ হিজরী) বলেন, যদি কারো আদর্শ গ্রহণ করতে চাও, তাহলে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সাহাবীদের আদর্শ গ্রহণ করো। কারণ, তারা এ উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে বেশী নেক অন্তর বিশিষ্ট, গভীর জ্ঞানের অধিকারী, লৌকিকতা তাদের মাঝে কম, সঠিক জিবনচরিত বিশিষ্ট, অবস্থা সবচাইতে ভাল। তারা এমন মানুষ, যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লামের সুহবত লাভের জন্য নির্বাচন করছেন। সুতরাং তাদের মরযাদা যথাযথভাবে বুঝ এবং পদাঙ্ক অনুসরণ করো। কারণ, তারাই পূর্ণ হেদায়াতের উপর আছে। ( জামিয়ূ বয়ানিল ইলমী ও ফাযলিহী- ইবনে আব্দিল বার মালেকী (৪৬৩ হিজরী) ২/৩৪৭)

                        سبحان الله কতই না উত্তম আদর্শ ।

                        Comment


                        • #13
                          জাঝাকাল্লাহ আখি, আল্লাহ আপনাকে কবুল করুন আমিন।

                          Comment

                          Working...
                          X