Announcement

Collapse
No announcement yet.

আসাম থেকে আরাকান কত দূরে?!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আসাম থেকে আরাকান কত দূরে?!

    আসাম! একসময়ের বনজঙ্গলে পূর্ণ ম্যালেরিয়া ও মহামারীর দেশ আসাম! পূর্ববেঙ্গর মুসলিম কৃষকদের জীবন-মরণ সংগ্রামের ফলে আবাদ হওয়া শস্যশ্যামল আসাম!!
    সেই আসাম সম্পর্কে আজ বাংলাদেশের প্রতিটি মুসলিমের উৎকণ্ঠিত প্রশ্ন, কী হতে যাচ্ছে আসামে?!
    ভারতে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলিম নিধনে নির্লজ্জ সমর্থন যুগিয়েছে। এবার আশঙ্কা হয়, খোদ ভারতের মুসলিম জনপদঅধ্যুসিত আসামেই বিজেপি সরকার আরাকানের মুসলিম নিধনযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে বদ্ধপরিকর।
    এ আশঙ্কা ও উৎকণ্ঠা শুধু বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীরই নয়, বরং রোহিঙ্গা-ট্রাজেডির নির্মম অভিজ্ঞতা থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এখন অত্যন্ত জোরালোভাবে এ প্রশ্ন উঠে এসেছে যে, আসামের মুসলমানরাও কি বরণ করতে যাচ্ছে আরাকানের অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর পরিণতি?
    ভারতের অন্ধপ্রেমে মজে থাকা এবং বিবেক বন্ধকরাখা শ্রেণী, (সম্মানজনক ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে) যাদের বলা হয় সুশীল সমাজ, তারা বলতে চান, আসাম ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমাদের তাতে চিন্তিত হওয়ার কী আছে? এ জ্ঞানপাপীদের কোন্ ভাষায় বোঝাবো যে, আরাকানের রোহিঙ্গা ট্রাজেডিও ছিলো মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়, যার পরিণতি আজ ...!!
    এই সুশীল বাবুদের শুধু বলা যায়, যে ভূমির শস্য থেকে তিন বেলা ক্ষুধা নিবারণ করো, সেই ভূমির প্রতি কিছুটা হলেও দায় বোধ থাকা দরকার।
    চলতি বছরের শুরুতে কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ সমর্থনে রাজ্যসরকার আসামের বৈধ নাগরিকদের তালিকা প্রকাশ করেছে, যা এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজন) নামে পরিচিত। রাজ্যসরকারের মুখপাত্র সংবাদসম্মেলনে বলেছেন, তালিকায় যাদের নাম নেই তাদের অবশ্যই বিতাড়ন করা হবে।
    প্রশ্ন হলো; কোথায়, কোন্ ভূখণ্ডে তাদের তাড়ানো হবে? এরপরো কী ‘সুশীলবাবুরা’ বুঝতে পারছেন না, কেন বাংলাদেশের মানুষের আজ এত উৎকণ্ঠা?!
    এ প্রসঙ্গে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটা আসামের রাজ্যমন্ত্রী প্রকাশ করেছেন তা এই যে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত হিন্দুদের তাড়ানো হবে না, তারা নিরাপদেই আসামে থাকতে পারবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় অচেতন সুশীল সমাজ বিষয়টা অবশ্যই নোট করুন।
    গত ৩১শে ডিসেম্বর আসামের রাজ্যসরকার যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে দেখানো হয়েছে, এককোটি চল্লিশ লাখ মানুষ আসামে অবৈধভাবে বসবাস করছে, যাদের প্রায় সবাই বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম। উল্লেখ্য বর্তমানে আসামের মোট জনসংখ্যা তিনকোটি ত্রিশলাখের মত।
    এর মধ্যে ২১শে ফেব্রুয়ারী ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত দিল্লীতে প্রদত্ত ‘নযিরবিহীন’ এক রাজনৈতিক বক্তব্যে বলেছেন, ‘আসামে মুসলিমদের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলেছে। ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধের অংশ হিসাবে পাকিস্তান উত্তর-পূর্বভারতে বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশে মদদ দিচ্ছে, আর এ কাজে সহায়তা করছে চীন।
    দিল্লীর সেমিনারে প্রদত্ত বক্তব্যে ভারতীয় সেনাপ্রধান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পরিকল্পিতভাবে মুসলিমদের পাঠানোর ফলে, কয়েক বছর আগেও যেখানে আসামে মাত্র পাঁচটি জেলা ছিলো মুসলিমপ্রধান সেখানে এখন নয়টি জেলায় মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ অবস্থানে পৌঁছে গেছে।
    ভারতীয় সেনাপ্রধানের এরূপ রাজনৈতিক বক্তব্যকে অভিজ্ঞ আসামে কী .../৫৮-এর পর মহল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী বলে মনে করছেন। তাদের জোরালো আশঙ্কা, এ অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের অনুরূপ আরেকটা বড় ধরনের মুসলিম উদ্বাস্তুসঙ্কট আসন্ন।
    মূলত ১৯৮০ সাল থেকেই আসামে বিদেশী খেদাও আন্দোলন শুরু হয়। ৮৫ সালে পাশ করা এক প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের আগে থেকে যারা এখানে বাস করছে তারাই শুধু আসামের বৈধ নাগরিক। পরবর্তী সময়ে যারা এসেছে তারা অবৈধ। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই কাগজপত্র দ্বারা বিষয়টি প্রমাণ করতে হবে।
    সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৪৮ লাখ মানুষ তাদের বৈধ নাগরিকত্বের পক্ষে কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি। এতে আন্তর্জাতিক মহলে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে যে, আসামের অন্তত পঞ্চাশ লাখ মুসলিম বিতাড়নের শিকার হতে চলেছে। আর কোন সন্দেহ নেই যে, বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে এই বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিতাড়নক্ষেত্র, আসাম রাজ্যের সঙ্গে যার সীমান্ত রয়েছে উত্তরে লালমনির হাট জেলার সঙ্গে।
    পর্যবেক্ষক মহলের মতে, বাংলাদেশের সরকার আরাকান ট্রাজেডি মুকাবেলায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু আসামের মুসলিমদের যেন রোহিঙ্গাদের ভাগ্যবরণ করতে না হয় এবং বাংলাদেশ যেন আরেকটি ভয়াবহ উদ্বাস্তুসঙ্কটে পতিত না হয়, এখন থেকেই সেজন্য বাংলাদেশ সরকারের কর্তব্য হবে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করা। ‘মানবতার মা’ হওয়ার বিড়ম্বনা আশা করি এরি মধ্যে সবার বোঝা হয়ে গেছে। আরেকবার মা হওয়ার কোন ইচ্ছে কারোই থাকার কথা নয়।
    বন্ধুদেশ বলে যদি বালুতে মুখ গুজে বসে থাকা হয় তাহলে তার পরিণতি কী ভয়াবহ হতে পারে তা ভাবতেও আমাদের ভয় হয়। বন্ধুত্বের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সবই তো উজাড় করে দেয়া হয়েছে তারপরো যদি বন্ধুদেশ এরূপ আচরণ করে তাহলে ....*

    #সংগৃহীত #মাসিক আল-কলম #পুষ্প
    Imma As Shoria Wa Imma As Sahada
Working...
X