Announcement

Collapse
No announcement yet.

খেলাফত না থাকলে কি অন্য কোন তানজীম করা যাবে না? একটি সংশয়ের নিরসন

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • খেলাফত না থাকলে কি অন্য কোন তানজীম করা যাবে না? একটি সংশয়ের নিরসন

    এক ভাই একটা হাদিস উল্লেখ করে বর্তমান যামানার আলোকে হাদিসটির ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন। ভাইয়ের উদ্দেশ্য সম্ভবত এই যে, এ হাদিসের আলোকে বর্তমান যামানায় - যেখানে খেলাফত নেই – অন্য কোন জিহাদি তানজীম গঠন করা বা তাতে যোগ দেয়া নাজায়েয প্রমাণিত হয়। হাদিসটি সহীহ বুখারীসহ অন্যান্য কিতাবে এসেছে। সহীহ বুখারীতে হাদিসটি এমন:

    بَاب كَيْفَ الأَمْرُ إِذَا لَمْ تَكُنْ جَمَاعَةٌ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيَّ أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ يَقُولُ كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْخَيْرِ وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنْ الشَّرِّ مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللهُ بِهَذَا الْخَيْرِ فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ نَعَمْ وَفِيهِ دَخَنٌ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ قَوْمٌ يَهْدُونَ بِغَيْرِ هَدْيِي تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ.

    “হুযাইফাহ ইবনু ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কল্যাণের বিষয়াবলী জিজ্ঞেস করত। কিন্তু আমি তাঁকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম এ ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো জাহিলীয়্যাত ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রজাল থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রজাল কিরূপ? তিনি বললেনঃ এক জামা‘আত আমার তরীকা ছেড়ে লোকদেরকে অন্য পথে পরিচালিত করবে। তাদের থেকে ভাল কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সে কল্যাণের পর কি আবার অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের কিছু স্বভাবের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। আমি বললাম, যদি এমন অবস্থা আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কী করতে হুকুম দেন? তিনি বললেন, মুসলিমদের জামা‘আত ও তাদের ইমামকে আঁকড়ে থাকবে। আমি আরজ করলাম, যদি তখন মুসলিমদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামা‘আত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেন, তাহলে তুমি তখন ঐ সকল (গোমরাহ) দল-মত পরিত্যাগ করে আলদা হয়ে যাবে। এ কারণে যদি কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকতে হয়-তাহলেও। যতক্ষণ না সে (বিচ্ছিন্ন) অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।” – সহীহ বুখারী, কিতাবুল ফিতান, হাদিস নং ৬৬৭৩


    হাদিসে সংশয়ের অংশটুকু হল, فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا (তুমি তখন ঐ সকল দল-মত পরিত্যাগ করে আলদা হয়ে যাবে।)


    সংশয়ে যারা পড়েছেন তারা বলতে চাচ্ছেন, এ অংশ থেকে বুঝা যায়, খেলাফত না থাকলে অন্য সকল দলমত পরিত্যাগ করে আলাদা হয়ে যেতে হবে। কোন দল বা তানজীমে যোগ দেয়া যাবে না। বর্তমানে যেহেতু খেলাফত নেই, তাই কোন জিহাদি তানজীম করা যাবে না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ও একাকী থাকতে হবে।
    এ হলো সংশয়। যেহেতু এ পোস্ট যাদের নজরে পড়বে, তাদের কেউ কেউ হাদিসের সহীহ ব্যাখ্যা না জানার কারণে সন্দেহের শিকার হয়ে পড়তে পারেন, তাই সন্দেহ নিরসনকল্পে হাদিসের সহীহ ব্যাখ্যা তুলে ধরা আবশ্যক মনে করছি। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ্।


    হাদিসের সহীহ ব্যাখ্যায় গেলে দুই দিক থেকে সন্দেহটা খণ্ডন হয়ে যায়:


    এক.

    হাদিসে হক-বাতিল সকল দল ও তানজীম পরিত্যাগ করতে বলা হয়নি, বরং গোমরাহ দল পরিত্যাগ করতে বলা হয়েছে। এসব গোমরাহ দলের পরিচয় হাদিসে একটু আগেই এভাবে দেয়া হয়েছে,

    دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا
    ‘জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে।’


    হাদিসের পরের অংশে এদের ব্যাপারেই বলা হয়েছে, فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا (তুমি তখন ঐ সকল দল-মত পরিত্যাগ করে আলদা হয়ে যাবে।)


    হাদিসের উদ্দেশ্য, খেলাফতে রাশেদা পার হওয়ার পর ফেতনা দেখা দেবে। তখন যদিও খেলাফত থাকবে, কিন্তু খেলাফতের রাশেদার মতো হবে না। তারা বিভিন্ন *জুলুম অত্যাচার ও গোমরাহির শিকার হবে। এ সময় জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী বিভিন্ন ফেরকা সৃষ্টি হবে। তোমরা তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে না। ইমামুল মুসলিমীন ও তার জামাতকে আঁকড়ে ধরে থাকবে। যদিও তারা জালেম ও অত্যাচারি হয়, তথাপি তাদের আনুগত্য পরিত্যাগ করে ঐসব বিচ্ছিন্ন ও গোমরাহ এবং জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী দলসমূহের কোনটাতে গিয়ে মিলিত হবে না। আর যদি খেলাফত না থাকে, তাহলে বিচ্ছিন্ন থাকবে। তবুও কোন গোমরাহ দলে মিলিত হবে না। কোন গোমরাহ দলে যোগ দেয়ার চেয়ে একাকী মৃত্যুবরণ করা ভাল।

    মোল্লা আলী কারী রহ. (১০১৪ হি.) বলেন,

    قال: "فاعتزل تلك الفرق كلها" أي الفرق الضالة الواقعة على خلاف الجادة من طريق أهل السنة والجماعة. اهـ

    “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তাহলে তুমি তখন ঐ সকল দল-মত পরিত্যাগ করে আলাদা হয়ে যাবে’- অর্থাৎ ঐ সকল দল-মত, যেগুলো আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআর সঠিক রাস্তা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।” – মিরকাত: ১৫/৩৪২


    তাহলে হাদিসের অর্থ দাঁড়ালো, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর আকীদা মানহাজ থেকে বিচ্যুত সকল দলমত পরিত্যাগ করতে হবে। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর আকীদা মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত দলের সাথে মিলিত হতে হাদিসে নিষেধ করা হয়নি।


    এ হাদিসের মর্ম পরিষ্কার হয় অন্য একটি হাদিস দ্বারা। ইমাম তিরিমিযি রহ. বর্ণনা করেন; রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

    وتفترق أمتي على ثلاث وسبعين ملة كلهم في النار إلا ملة واحدة، قالوا ومن هي يا رسول الله؟ قال ما أنا عليه وأصحابي.
    “আমার উম্মত তেয়াত্তর (৭৩) দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। তাদের এক দল ব্যতীত বাকি সব জাহান্নামী হবে। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে (মুক্তিপ্রাপ্ত) দলটি কোনটি? তিনি উত্তর দিলেন, তারা হল সেই দল, যারা আমি ও আমার সাহাবাদের ত্বরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত।” – তিরমিযি: ১৭১

    হাদিসটি বিভিন্ন কিতাবে বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। সবগুলো মিলে হাদিসটি হাসান পর্যায়ের তথা দলীল হওয়ার উপযুক্ত।


    এ হাদিসে যে গোমরাহ বায়াত্তর (৭২) ফেরকার কথা বলা হয়েছে, তাদের ব্যাপারেই আমাদের আলোচ্য হাদিসে বলা হয়েছে, فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا (তুমি তখন ঐ সকল দল-মত পরিত্যাগ করে আলদা হয়ে যাবে।) অবশিষ্ট একদল, যারা মুক্তিপ্রাপ্ত হবে, তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের ত্বরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর দল- তাদের সাথে মিলিত হতে নিষেধ করা হয়নি।



    দুই.

    দ্বিতীয়ত যদি এ হাদিস দ্বারা ব্যাপক অর্থ তথা সকল দলমত ত্যাগ করে বিচ্ছিন্ন থাকার অর্থও গ্রহণ করা হয়, তাহলেও সঠিক আকীদা মানহাজের কোন তানজীম গড়ে তোলা বা তাতে যোগ দেয়া নাজায়েয সাব্যস্ত হয় না। কেননা, শরীয়তের বিধান শুধু দুয়েকটা আয়াত বা হাদিসে থেকে নেয়া যায় না, শরীয়তের বিধান নিতে হয় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত সকল আয়াত ও হাদিসের সমষ্টি থেকে। সকল আয়াত ও হাদিস একত্র করলে দেখা যাবে একটা হাদিস বাহ্যত আম, কিন্তু অন্য হাদিসের দ্বারা সেটা খাছ। আরেকটা হাদিস বাহ্যত মুতলাক, কিন্তু অন্য হাদিসের দ্বারা সেটা মুকাইয়্যাদ। এভাবে সকল আয়াত হাদিস জমা করে আম-খাছ, মুতলাক-মুকাইয়্যাদ নির্ধারণ করার পর শরীয়তের বিধান গ্রহণ করতে হয়। তখন সঠিক ফলাফল অর্জন হবে। অন্যথায় শুধু বিশেষ কিছু আয়াত বা হাদিসের দিকে তাকিয়ে বিধান গ্রহণ করে নিলে, আর বাকি আয়াত হাদিস ত্যাগ করলে ফলাফল ভুল হবে এবং গোমরাহির শিকার হতে হবে।


    আমরা দেখতে পাই, অসংখ্য হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুসংবাদ দিয়ে গেছেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক, হকের উপর প্রতিষ্ঠিত, দ্বীনের জন্য কিতালরত একটা দল সর্বদাই বিদ্যমান থাকবে। যাদেরকে ‘তায়েফায়ে মানুসুরাহ্’ বলা হয়। তাদের মাঝেই ঈসা আলাইহিস সালাম অবতরণ করবেন এবং সর্বশেষ তারাই দাজ্জালের সাথে কিতাল করবে। এ ব্যাপারে অসংখ্য হাদিস এসেছে। যেমন, সহীহ মুসলিম শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

    « لا تزال طائفة من أمتى يقاتلون على الحق ظاهرين إلى يوم القيامة - قال - فينزل عيسى ابن مريم -صلى الله عليه وسلم- فيقول أميرهم تعال صل لنا. فيقول لا. إن بعضكم على بعض أمراء. تكرمة الله هذه الأمة ».

    “আমার উম্মতের একটা দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে কেয়ামত পর্যন্ত কিতাল করতে থাকবে। (এই ধারাবাহিকতা চলতে চলতে) অবশেষে ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালাম (তাদের মাঝে) অবতরণ করবেন। তখন তাদের আমীর (অর্থাৎ ইমাম মাহদি) তাঁকে বলবেন, ‘আসুন, আমাদের নিয়ে নামায পড়ান।’ তিন বলবেন, না। তোমরা নিজেরাই পরস্পর পরস্পরের আমীর। এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এ উম্মতের সম্মানস্বরূপ।” – সহীহ মুসলিম: ৪১২


    এ ধরণের অসংখ্য হাদিস থেকে প্রমাণিত যে, হকের উপর প্রতিষ্ঠিত আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা-মানহাজবিশিষ্ট একটা দল সর্বদাই কিতাল করতে থাকবে।

    অন্যদিকে বিভিন্ন হাদিস থেকে এটাও প্রমাণিত [যেমনটা আমাদের আলোচ্য হাদিসের এ অংশ থেকেও বুঝা যায়- فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ - যদি তখন মুসলিমদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামাআত ও ইমাম না থাকে?] এমন একটা সময় আসবে, যখন মুসলমানদের কোন একক খলিফা থাকবে না। কিন্তু তায়েফায়ে মানুসুরার হাদিস থেকে বুঝা যাচ্ছে, খলিফা না থাকার এ সময়েও একটা দল জিহাদরত থাকবে।

    যদি খলিফা না থাকাবস্থায় যেকোন দল ও তানজীম নাজায়েয হতো, তাহলে তায়েফায়ে মানুসুরাও নাজায়েয হতো। অথচ হাদিসে এ তায়েফাকে মুসলমানদের জন্য সুসংবাদরূপে বিষয় বলা হয়েছে। এ তায়েফার সাথে মিলিত হওয়ার কথা এসেছে। সকলে একমত যে, সামর্থ্য পেলে ফেতনার সময় এ তায়েফার সাথে মিলিত হতে হবে। তার সাথে মিলে কাফের মুরতাদদের বিরুদ্ধে কিতাল করতে হবে।

    এবার যদি আমরা উভয় শ্রেণীর হাদিস সমন্বয় করি, তাহলে স্পষ্ট বুঝে আসবে, যে হাদিসে বলা হয়েছে- فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا , সে হাদিসে তায়েফায়ে মানুসুরা অন্তর্ভুক্ত নয়। তায়েফায়ে মানসুরার হাদিস দ্বারা এ হাদিস এবং এ ধরণের অন্যান্য হাদিস মাখসূস হয়ে যাবে। অর্থাৎ ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা উদ্দেশ্য না হয়ে বিশেষ ফেরকা তথা গোমরাহ ফেরকা থেকে নিষেধ করা উদ্দেশ্য হবে। ইমাম ইবনে বাত্তাল রহ. (৪৪৯ হি.) এ বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেন,

    هذه الأحاديث وما جانسها معناها الخصوص، وليس المراد بها أن الدين ينقطع كله فى جميع أقطار الأرض حتى لا يبقى منه شىء؛ لأنه قد ثبت عن النبى (صلى الله عليه وسلم) أن الإسلام يبقى إلى قيام الساعة إلا أنه يضعف ويعود غريبًا كما بدأ، وروى حماد بن سلمة، عن قتادة، عن مطرف، عن عمران بن حصين قال: قال النبى (صلى الله عليه وسلم) : (لا تزال طائفة من أمتى يقاتلون على الحق ظاهرين حتى يقاتل آخرهم المسيح الدجال) ... فبين (صلى الله عليه وسلم) فى هذا الخبر خصوصه سائر الأخبار التى خرجت مخرج العموم. اهـ

    “এ সকল হাদিস এবং এ জাতীয় অন্যান্য হাদিসের দ্বারা বিশেষ অর্থ উদ্দেশ্য (ব্যাপকতা উদ্দেশ্য নয়)। এমনটা উদ্দেশ্য নয় যে, দুনিয়ার সকল ভূখণ্ড থেকে দ্বীনে ইসলাম এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে যে, তার কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত আছে যে, কেয়ামত পর্যন্তই দ্বীনে ইসলাম টিকে থাকবে। তবে দুর্বল হয়ে পড়বে। ইসলামের শুরু যামানার মতো গরীব-অসহায় হয়ে পড়বে। যেমন, হযরত ইমরান ইবনে হুছাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার উম্মতের একটা দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে সর্বদা কিতাল করতে থাকবে। (এই ধারাবাহিকতা চলতে চলতে) অবশেষে তাদের সর্বশেষ দলটি মাসীহে দাজ্জালের সাথে কিতাল করবে।’ ... রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদিসে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এ হাদিসের দ্বারা (বাহ্যত) ব্যাপকতা নির্দেশক অন্য সকল হাদিস খাছ হয়ে যাবে তথা বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হবে।”শরহু সহীহিল বুখারী লি ইবনি বাত্তাল: ১০/৬০


    হাফেয ইবনে হাজার রহ. (৮৫২ হি.) তিনিও একই কথা বলেছেন।


    উপরোক্ত আলোচনা থেকে আশাকরি স্পষ্ট যে, হাদিসের নিষেধাজ্ঞা গোমরা দলের ব্যাপারে। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর আকীদা মানহাজ বিশিষ্ট দল গঠন করতে বা তাতে যোগ দিতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং জিহাদের প্রয়োজনে অনেক সময় তা আবশ্যক- যেমনটা অন্যান্য পোস্টে আলোচনা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।

    وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصحبه أجمعين


  • #2
    জাযাকাল্লাহু খাইরান। আল্লাহ তায়ালা আপনার ইলম ও আমলের মধ্যে বরকত দান করুন। আপনার ইলম দ্বারা সকলকে উপকৃত করুন। আপনাকে বাতিলের অপব্যাক্ষা, অসার যুক্তি, অপপ্রচারকে খন্ডন করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
    ফিরে এসো দ্বীনের পথে।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহু খাইরান। আল্লাহ তায়ালা আপনার ইলম ও আমলের মধ্যে বরকত দান করুন।আমীন

      Comment


      • #4
        প্রিয় আখি, কী বলে যে, আপনাকে শুকরিয়া জানাবো ভাষা পাচ্ছি না। আজ মুসলিমদের কচু কাটা করা হচ্ছে আর এক শ্রেণীর ভণ্ডরা বলে বেড়াচ্ছে কাফিরদের সাইস করার জন্য তানজিম করা নাকি নাজায়েজ! এদের কে বুঝাবে??? হিদায়ত আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে।
        ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহ, বেশ উপকারী পোষ্ট টি দিয়েছেন। এটা খুব প্রয়োজন ছিল।

          Comment


          • #6
            যখন জাম‘আত (মুসলিমরা সংঘবদ্ধ) থাকবে না তখন কী করতে হবে।

            بَاب كَيْفَ الأَمْرُ إِذَا لَمْ تَكُنْ جَمَاعَةٌ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيَّ أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ يَقُولُ كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْخَيْرِ وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنْ الشَّرِّ مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللهُ بِهَذَا الْخَيْرِ فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ نَعَمْ وَفِيهِ دَخَنٌ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ قَوْمٌ يَهْدُونَ بِغَيْرِ هَدْيِي تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ.

            ৭০৮৪. হুযাইফাহ ইবনু ইয়ামান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কল্যাণের বিষয়াবলী জিজ্ঞেস করত। কিন্তু আমি তাঁকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম এ ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো জাহিলীয়্যাত ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রজাল থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রজাল কিরূপ? তিনি বললেনঃ এক জামা‘আত আমার তরীকা ছেড়ে অন্য পথ ধরবে। তাদের থেকে ভাল কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সে কল্যাণের পর কি আবার অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী এক সম্প্রদায় হবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাদের কিছু স্বভাবের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। আমি বললাম, যদি এমন অবস্থা আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কী করতে হুকুম দেন? তিনি বললেনঃ মুসলিমদের জামা‘আত ও ইমামকে অাঁকড়ে থাকবে। আমি বললাম, যদি তখন মুসলিমদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামা‘আত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তখন সকল দলমত ত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।

            গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী** অধ্যায়ঃ ৯২/ ফিতনা (كتاب الفتن) হাদিস নম্বরঃ ৭০৮৪,[৩৬০৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৫) হাদিসের মানঃ সহিহ,
            ==========
            লক্ষ করুন ভাই!
            -----------
            ঊপরে উল্লেখিত হুজাইফা বিন ইয়ামান এর ফিতনা সংক্রান্ত দির্ঘ হাদিসের শেষের দিকে বলা হয়েছেঃ-
            قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ অর্থঃ “আর যদি এমন জমানা আসে যখন (খেলাফতের) জামাআত ও থাকবে না এবং খলিফাও থাকবে না তখন কি করার নির্দেশ দেন?” তিনি বললেনঃ তখন সকল দলমত ত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে,যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।**
            হাদিসের এই অংশের ব্যাখ্যায় ইবনে হাযার আসকালানী রাহঃ বুখারি শরিফের প্রসিদ্ধ ব্যখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারি এর ১৩/৩৬ এ আল্লামা বাইজাবী কি বলেছেন দেখুনঃ-
            قال البيضاوي المعنى إذا لم يكن في الأرض خليفة فعليك بالعزلة والصبر على تحمل شدة الزمان وعض أصل الشجرة كناية عن مكابدة المشقة
            অর্থঃ- "আল্লামা বাইযাবী রাহ বলেনঃ এর অর্থ হলোঃ তখন পৃথিবীতে যদি কোন খলিফা না থাকে তাহলে তখন তোমার উপর আবশ্যক হলো সকল দল/ফেরকা থেকে দুরে থাকা। ফেতনার এই জমানার কঠিন হালতে সবর করা।......।"

            ভাই এর চেয়ে আর কি স্পষ্ট দলিল দরকার আছে??!! আখেরী জমানায় অন্ধকার আমাবস্যার এই ফিতনার যমানায় কি করনীয় তা সাহাবী রাঃ প্রশ্ন করে জেনে নিয়েছেন + আমাদের কি করনীয় তাও বাতলে দিয়েছেন। আমরা এমন জমানা আছি যেখানে শরয়ী খলিফাও নেই খেলাফত ও নেই। তাই আমাদেরকে সব দল মত ছেড়ে নিরেটভাবে কোরআন হাদিস অনুযায়ী আমল করে যেতে হবে। না হয় ৭২ ফিরকার মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
            আমরা দেখতেছি যে,খেলাফত না থাকলে দল বা জামাতের অভাব থাকে না। কেউ কাউকে মানে না। দলাদলি এমন রুপপরিগ্রহ করে যে, এক মুজাহিদ আরেক মুজাহিদকে তাকফির ও হত্যা পর্যন্ত করছে। তাই শেষ যমানায় নবীর নির্দেশনা হচ্ছেঃ ফিতনা থেকে বেচে থাকা।দল থেকে দুরে ত্থেকে কোরআন হাদিসের উপর আমল করা। সামর্থের মধ্যে থকা দ্বীনের কাজগুলো(তাওহীদের দাওয়াহ,সৎ কাজের আদেশ-অসত কাজের বাধা দান, ইত্যাদি)** তায়াউন এর ভিত্তিতে ভাই ভাই হয়ে (ইমারাহ ও দল ব্যতীত) করে যাওয়া। আল্লাহু আ'লাম।**

            Comment


            • #7
              ভাই, তাহলে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন। একটি দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে কিয়ামত পর্যন্ত কিতাল করবে, এই হাদিসের ব্যাখ্যা কি???
              আরেকটা কথা, আল কায়দা কোনো দল নয়। আল কায়দার ভাইয়েরা মুসলিমদের হিফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা ঐ সব ভণ্ডদের থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই যারা নিজেদের ভাইদের হত্যা হওয়াকে চেয়ে চেয় দেখে।
              والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

              Comment


              • #8
                সত্য প্রকাশ ভাই, আশা করি আপনি সেফটি ফ্রাস্ট ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তর দিবেন! আর উত্তর না দিলে ভাববো এখানে আপনার আগমন কেবল ফিতনা ছড়ানোর জন্য। ভাই আপনি নিজেই বলছেন ভাই ভাই হয়ে তায়াউনের ভিত্তিতে কাজ করে যেতে, ভাই আমরা সেটাই করছি। ভাই, আপনি হয়ত ভুল বুঝতেছেন আল কায়দা কোন দল নয়। আল কায়দা মুসলিমদের থেকেই।শুধু কাজের নিজাম টিক রাখার জন্য একটি নাম দেয়া। নিরাপত্তার সার্থে জনসাধারণকে সিদ্ধান্ত জানানো হয় না।
                ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

                Comment


                • #9
                  হাদিসে ৭৩ দলে বিভক্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ১ টা সঠিক ও ৭২ টি ভ্রান্ত। যদি দল করলে ৭২ ফেরকার কোন ফিরকায় পড়তে হয় তাহলে মুসলিমদের খলিফা যখন থাকবেনা তখন আহলুস সুন্নাহর জামাত হবে কারা? আর বর্তমান যামানায় আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত কারা?সঠিক দল তো একটা আছে? সেটি কারা হবে? তারা সবাই কি একাকী বসে থাকবে?
                  খলিফা না থাকলে যখন দিফায়ী জিহাদ হবে তখন দিফায়ী জিহাদ বাদ দিয়ে কি বসে থাকতে হবে? কারন এখানে জিহাদ করতে তো সবাই একসাথে হবে তখন একটা দলের মত হয়ে যাবে। এখানে যেহেতু দল নিষেধ তাহলে এ দল করাও নিষেধ। তাহলে সমস্ত ফুকাহায়ে কেরাম যে ফতুয়া দিয়েছেন "দিফায়ী জিহাদের ক্ষেত্রে কোন আমির লাগবেনা এটার ব্যাপারে কি বলেন?
                  ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ মংগলদের সাথে জিহাদ করেছেন তখন খলিফা কে ছিল? খলিফা না থাকলে উনি দল বানালেন কেন?সালাহুদ্দীন আইয়ুবি রহিমাহুল্লাহ উনি কি খলিফা ছিলেন? নুরুদ্দীন জেংকির মৃত্যুর পরে উনি কোন খেলাফাতের অধীনে যুদ্ধ করেছেন? উনি দল বানিয়েছেন কেন?
                  আপনি কি পুরো ইসলামী ইতিহাসকে কলংকিত করবেন? হাদিসের ব্যাখ্যা কি শুধু একটি হাদিস থেকে নিলে হবে? নাকি সংশ্লিষ্ট সব হাদিস মিলেয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে?
                  আপনি বলেছেন দলমত ছেড়ে দিয়ে নিরেটভাবে কুরয়ান সুন্নাহ অনুসরন করতে হবে। বর্তমানে কেউ জিহাদ না করলে সে কিভাবে কুরয়ান সুন্নাহর অনুসরন করল? আমাকে বুঝিয়ে দিন। যখন মুসলিমদের শাসক কাফের হয়ে যায় তখন তাকে অপসারনের চেষ্টা না করে সামর্থ্যের মাঝে থাকা আমল করলে কিভাবে কুরয়ান সুন্নাহ মানা হচ্ছে? আহলুস সুন্নাহর আকিদা কি এমন?
                  সব হাদিসেরই ব্যাখ্যা আছে। সবার ব্যাখ্যা মিলতে না ও পারে। এ ব্যাখ্যায়ও মতানৈক্য থাকতে পারে। ইলম ও জিহাদ ভাই যে আলোচনা করেছেন এর বিরুদ্ধে বাইযাবীর ব্যাখ্যা দিয়ে কিভাবে দলীল দিচ্ছেন যখন অন্যান্য হাদিসের সাথে এটা সাংঘর্ষিক।
                  ইলম ও জিহাদ ভাইয়ের পোস্টটা পড়ুন। গোড়ামী ও দালালী ছাড়ু ন। ফোরামে ফিতনা ছড়াবেন না।

                  Comment


                  • #10
                    আপনি ইবনে হাজার আসকালানী রহিমাহুল্লাহর পুর্ণ ব্যাখ্যাটি এখানে লিখুন। তাহলে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এখানেই বলা আছে সব। শুধু এ অংশটি উল্লেখ করবেন না।

                    Comment


                    • #11
                      Originally posted by সত্য প্রকাশ View Post
                      লক্ষ করুন ভাই!
                      -----------
                      ঊপরে উল্লেখিত হুজাইফা বিন ইয়ামান এর ফিতনা সংক্রান্ত দির্ঘ হাদিসের শেষের দিকে বলা হয়েছেঃ-
                      قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ অর্থঃ “আর যদি এমন জমানা আসে যখন (খেলাফতের) জামাআত ও থাকবে না এবং খলিফাও থাকবে না তখন কি করার নির্দেশ দেন?” তিনি বললেনঃ তখন সকল দলমত ত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে,যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।**
                      হাদিসের এই অংশের ব্যাখ্যায় ইবনে হাযার আসকালানী রাহঃ বুখারি শরিফের প্রসিদ্ধ ব্যখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারি এর ১৩/৩৬ এ আল্লামা বাইজাবী কি বলেছেন দেখুনঃ-
                      قال البيضاوي المعنى إذا لم يكن في الأرض خليفة فعليك بالعزلة والصبر على تحمل شدة الزمان وعض أصل الشجرة كناية عن مكابدة المشقة
                      অর্থঃ- "আল্লামা বাইযাবী রাহ বলেনঃ এর অর্থ হলোঃ তখন পৃথিবীতে যদি কোন খলিফা না থাকে তাহলে তখন তোমার উপর আবশ্যক হলো সকল দল/ফেরকা থেকে দুরে থাকা। ফেতনার এই জমানার কঠিন হালতে সবর করা।......।"

                      ভাই এর চেয়ে আর কি স্পষ্ট দলিল দরকার আছে??!! আখেরী জমানায় অন্ধকার আমাবস্যার এই ফিতনার যমানায় কি করনীয় তা সাহাবী রাঃ প্রশ্ন করে জেনে নিয়েছেন + আমাদের কি করনীয় তাও বাতলে দিয়েছেন। আমরা এমন জমানা আছি যেখানে শরয়ী খলিফাও নেই খেলাফত ও নেই। তাই আমাদেরকে সব দল মত ছেড়ে নিরেটভাবে কোরআন হাদিস অনুযায়ী আমল করে যেতে হবে। না হয় ৭২ ফিরকার মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
                      আমরা দেখতেছি যে,খেলাফত না থাকলে দল বা জামাতের অভাব থাকে না। কেউ কাউকে মানে না। দলাদলি এমন রুপপরিগ্রহ করে যে, এক মুজাহিদ আরেক মুজাহিদকে তাকফির ও হত্যা পর্যন্ত করছে। তাই শেষ যমানায় নবীর নির্দেশনা হচ্ছেঃ ফিতনা থেকে বেচে থাকা।দল থেকে দুরে ত্থেকে কোরআন হাদিসের উপর আমল করা। সামর্থের মধ্যে থকা দ্বীনের কাজগুলো(তাওহীদের দাওয়াহ,সৎ কাজের আদেশ-অসত কাজের বাধা দান, ইত্যাদি)** তায়াউন এর ভিত্তিতে ভাই ভাই হয়ে (ইমারাহ ও দল ব্যতীত) করে যাওয়া। আল্লাহু আ'লাম।**


                      উম্মাহর এই দুর্দিনে উম্মাহকে উদ্ধার করার জন্য জিহাদ করতে হবে, তজ্জন্য জিহাদি তানজীম গড়তে হবে; খেলাফত না থাকার এ যামানায় খেলাফত ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে- এমন ধ্রুব সত্য কথাটি কেউ অস্বীকার করতে পারে আমার খেয়ালে প্রথমে তা আসেনি। কিন্তু পরে দেখলাম, এমনও লোক আছে, যারা এমন দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট সত্য ও বাস্তব কথাটিকেও অস্বীকার করতে পারে। এ ধরণের লোকের এসব উদ্ভট ভ্রান্তির খণ্ডন করতে যাওয়ার পরিণতিতে এসব সংশয় আরো বিস্তারই লাভ করে চলবে। তাই এসব অহেতুক, অযৌক্তিক ও অবাস্তব প্রলাপের খণ্ডনে না যাওয়াই ভাল ছিল। কিন্তু তারা তো আর বসে থাকছে না। সত্য প্রকাশের নামে এসব বিভ্রান্তি তো তারা ছড়িয়েই যাচ্ছে। ফলত অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে খণ্ডন করতে হচ্ছে। বড়ই আফসোস এমনসব লোকের উপর, যাদের কারণে উম্মাহর মেধা-শ্রম এসব অহেতুক বিষয়ের পেছনে ব্যয় করতে হচ্ছে।


                      হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপরোক্ত হাদিসের সহীহ ব্যাখ্যা আলহামদু লিল্লাহ আমি তুলে ধরেছি এবং আশাকরি স্পষ্ট যে, এ হাদিস ঐসব দল থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে বলছে, যারা জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী। কিন্তু হাফেয ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্য উল্লেখ করে সেটাকে আবার সংশয়যুক্ত করার প্রচেষ্টা চলেছে।


                      ‘সত্য প্রকাশ’ আইডি আসলে এসব কথা নিজে থেকে বলছেন না। তিনি এগুলো শায়খ আলবানী রহ. এবং তার কতক অন্ধ ও অবুঝ অনুসারি থেকে গ্রহণ করেছেন।


                      শায়খ আলবানী রহ. এর নামটা আমি এখানে নিতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু পরিস্থিতি আমাকে নিতে বাধ্য করছে। অন্যথায় বিষয়টা বুঝানো কষ্টকর হবে।


                      হাফেয ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্যের জওয়াব দেয়ার আগে ‘সত্য প্রকাশ’ ভাইকে আমি কয়েকটা বিষয় জিজ্ঞাসা করতে চাচ্ছি। ভাইয়ের কাছে আবেদন থাকবে, এতদিন পর্যন্ত আপনারা যেভাবে আমাদের জিজ্ঞাসাগুলোর জওয়াব দিতে অক্ষমতা দেখিয়েছেন, এখানে অনুগ্রহ করে তেমনটা করবেন না। এতে কোন দিন আপনি সত্য বুঝতে পারবেন না। আর প্রকাশ করা তো পরের কথা। এজন্য ভাইদের কাছে আবেদন, আপনারা যারা সংশয়টি প্রচারে উঠেপড়ে লেগেছেন, আমার জিজ্ঞাসাগুলোর জওয়াব দেবেন এবং দলীলভিত্তিক জওয়াব দেবেন।


                      জিজ্ঞাসা ১:
                      খেলাফত না থাকাবস্থায় কোন ভূখণ্ডে কোন ইসলামী ইমারা গড়ে তোলা যাবে কি’না এবং ইমারা গড়ার জন্য প্রচেষ্টা চালানো যাবে কি’না?

                      যদি বলেন, যাবে না- তাহলে জিজ্ঞেস করি, শায়খ আলবানী সৌদি রাষ্ট্রকে সমর্থন দিতেন কি’না?

                      যদি বলেন, দিতেন- তাহলে আপনাদের দাবি মিথ্যা। কারণ, সৌদি রাষ্ট্র নিঃসন্দেহে খেলাফত নয়। যদি সেটা শরীয়তমতে পরিচালিত হয়, তাহলে একটা ইসলামী ইমারা হবে। শায়খ আলবানী যদি সৌদির সমর্থন দিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি খেলাফত না থাকাবস্থায় একটা ইসলামী ইমারার সমর্থন দিলেন। যদি সমর্থন দিয়ে থাকেন, তাহলে বলা যায়, খেলাফত না থাকাবস্থায় শায়খ আলবানীর মতে ইসলামী ইমারা গড়ে তোলা যাবে এবং সেটার সমর্থন দেয়া যাবে। অতএব, ইসলামী ইমারা গড়া যাবে না- এমন দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

                      আর যদি বলেন, ইসলামী ইমারা গড়ে তোলা যাবে, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে- এটা কোন দলীলে হাদিসের নিষেধাজ্ঞার বাহিরে রইল?


                      অধিকন্তু যদি ইসলামী ইমারা গড়া জায়েয হয়, তাহলে আমরা যারা আফগানিস্তানের ইসলামী ইমারার অধীনস্ত আলকায়েদার হয়ে জিহাদ করছি, তাদের দোষটা কোথায়?


                      বি.দ্র.
                      সৌদি প্রশাসন যদিও তাগুতী প্রশাসন, কিন্তু শায়খ আলবানী এদেরকে মুসলমান মনে করতেন। এ হিসেবেই এখানে প্রশ্ন করা হয়েছে। নতুবা আমরা আলহামদু লিল্লাহ সৌদি প্রশাসনকে মুরতাদ ও তাগুতী প্রশাসন মনে করি এবং এদেরকে সরিয়ে হারামাইন শরীফাইনে ইসলামী খেলাফত কায়েম ফরয মনে করি।




                      জিজ্ঞাসা ২:
                      খলিফা না থাকাবস্থায় আপনারা জিহাদ ফরয মনে করেন কি’না?

                      যদি বলেন, মনে করি- তাহলে জিজ্ঞাসা করি, এ জিহাদ আপনারা কিভাবে আদায় করবেন? এর জন্য কোনো তানজীম বা দল গঠন ছাড়া কিভাবে আঞ্জাম দেবেন? জিহাদের ফরয দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার জন্য তখন কোন দল/তানজীম/ইমারা – যাই বলেন- গঠন বা তাতে যোগ দেয়া আবশ্যক কি’না?

                      আর যদি বলেন, না, জিহাদ ফরয নয়- তাহলে জিজ্ঞাসা করি:


                      - জিহাদের অসংখ্য আয়াত ও হাদিসের কি জওয়াব আপনারা দেন?

                      - যে হাদিসে খলিফা মুরতাদ হয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে কিতাল করতে বলা হয়েছে, সে হাদিসের কি জওয়াব দেন? এখানে তো খলিফা নেই, তাহলে জিহাদ কিভাবে ফরয হল?

                      - ইবনে কুদামার এ বক্তব্যের কি জওয়াব দেবেন: فان عدم الامام لم يؤخر الجهاد – ‘ইমাম না থাকলেও জিহাদ পিছানো যাবে না’।

                      - তাতারদের হাতে আব্বাসী খেলাফত পতনের পর যেসব জিহাদ হয়েছে – সেগুলোর মধ্যে ইবনে তাইমিয়া রহ. এর জিহাদও ছিল- আপনারা সেগুলোকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন? এগুলো কি সব হারাম ছিল? ইবনে তাইমিয়া রহ. খেলাফত না থাকাবস্থায় যে জিহাদ করেছেন, তিনি কি তাহলে তা হারাম করেছেন?

                      - উসমানী খেলাফত পতনের পর যেসব জিহাদ হয়েছে – বিশেষত সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে আফগানের জিহাদ – এগুলোর কি বিধান? এগুলো কি সব হারাম হয়েছে?


                      ভাইদের কাছে আবেদন, লুকোচুরি না করে মেহেরবানী করত প্রশ্নগুলোর একটু সুস্পষ্ট দলীলভিত্তিক জওয়াব দেবেন। অন্যথায় বুঝবো, আপনারা আসলে সত্য প্রকাশের নামে অসত্যের বিস্তার করতে চাচ্ছেন।



                      জিজ্ঞাসা ৩:
                      যেসব হাদিসে কেয়ামত অবধি একটি দল জিহাদরত থাকার কথা আছে এবং তাদের মাঝেই ইমাম মাহদি এবং ঈসা আলাইহিস সালাম আগমন করবেন বলা হয়েছে এবং তারাই দাজ্জালের সাথে কিতাল করবে বলা হয়েছে- আপনারা এগুলোর কি জওয়াব দেন? খেলাফত না থাকাবস্থায় তাদের এ জিহাদ কি হারাম হবে? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তাহলে এ হারাম জিহাদকে উম্মতের সুসংবাদ বানিয়ে গেছেন? এমন হারাম দলের মাঝেই কি তাহলে ঈসা আলাইহিস সালাম আগমন করবেন? একটু কষ্ট করে জানাবেন।



                      হাফেয ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্য:

                      হাফেয ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্য উল্লেখ করে ভাই বলতে চাচ্ছেন, “এর চেয়ে আর কি স্পষ্ট দলিল দরকার আছে??!!”


                      অর্থাৎ ইবনে হাজার রহ. এর এ বক্তব্য দেখার পর আর কোন দলীল দেখার দরকার নেই। কোরআনেরও দরকার নেই, হাদিসেরও দরকার নেই। ইজমারও দরকার নেই, কিয়াসেরও দরকার নেই। শরীয়তের কোন দলীল দেখারই দরকার নেই। কুরআন হাদিসে যাই থাকুক- ইবনে হাজার রহ. এর এ বক্তব্যই তানজীম গঠন নাজায়েয হওয়ার জন্য যথেষ্ট।



                      ভাইকে বলতে চাই:

                      *যদি বাস্তবেই আপনি সত্য সন্ধানী হয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমত আমার জিজ্ঞাসগুলোর জওয়াব দিন।

                      *দ্বিতীয়ত মোল্লা আলী ক্বারী রহ. এর এ বক্তব্যের জওয়াব দিন,
                      قال: "فاعتزل تلك الفرق كلها" أي الفرق الضالة الواقعة على خلاف الجادة من طريق أهل السنة والجماعة. اهـ
                      “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তাহলে তুমি তখন ঐ সকল দল-মত পরিত্যাগ করে আলাদা হয়ে যাবে’- অর্থাৎ ঐ সকল দল-মত, যেগুলো আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআর সঠিক রাস্তা থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।”

                      *তৃতীয়ত হাফেয ইবনে হাজার রহ. এর জন্মের আরো প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বের স্বীকৃত ইমাম ইবনে বাত্তাল রহ. এর এ বক্তব্যের জওয়াব দিন,
                      قال النبى (صلى الله عليه وسلم) : (لا تزال طائفة من أمتى يقاتلون على الحق ظاهرين حتى يقاتل آخرهم المسيح الدجال) ... فبين (صلى الله عليه وسلم) فى هذا الخبر خصوصه سائر الأخبار التى خرجت مخرج العموم. اهـ
                      “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার উম্মতের একটা দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে সর্বদা কিতাল করতে থাকবে। (এই ধারাবাহিকতা চলতে চলতে) অবশেষে তাদের সর্বশেষ দলটি মাসীহে দাজ্জালের সাথে কিতাল করবে।’ ... রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদিসে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এ হাদিসের দ্বারা (বাহ্যত) ব্যাপকতা নির্দেশক অন্য সকল হাদিস খাছ হয়ে যাবে তথা বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হবে।”

                      *চতুর্থত হাফেয ইবনে হাজার রহ. নিজেও ইবনে বাত্তাল রহ. এর এ বক্তব্য সমর্থন করেছেন। বুখারী শরীফের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারিতে তিনি বলেন,
                      قال بن بطال هذا الحديث وما أشبهه ليس المراد به ان الدين ينقطع كله في جميع اقطار الأرض حتى لا يبقى منه شيء لأنه ثبت ان الإسلام يبقى إلى قيام الساعة الا انه يضعف ويعود غريبا كما بدأ ثم ذكر حديث لا تزال طائفة من أمتي يقاتلون على الحق الحديث قال فتبين في هذا الحديث تخصيص الأخبار الأخرى. اهـ
                      “ইবনে বাত্তাল রহ. বলেন, ‘এ হাদিস এবং এ জাতীয় অন্যান্য হাদিসের দ্বারা এমনটা উদ্দেশ্য নয় যে, দুনিয়ার সকল ভূখণ্ড থেকে দ্বীনে ইসলাম এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে যে, তার কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। কেননা, (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে) প্রমাণিত আছে যে, কেয়ামত পর্যন্তই দ্বীনে ইসলাম টিকে থাকবে। তবে দুর্বল হয়ে পড়বে। ইসলামের শুরু যামানার মতো গরীব-অসহায় হয়ে পড়বে।’
                      এরপর তিনি এ হাদিস উল্লেখ করেন ‘আমার উম্মতের একটা দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে সর্বদা কিতাল করতে থাকবে।’ তারপর বলেন, ‘এ হাদিস থেকে স্পষ্ট যে, অন্য সকল হাদিস খাছ তথা বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হবে।” – ফাতহুল বারি: ১৩/৭৬



                      এ বক্তব্যে ইবনে হাজার রহ. স্পষ্ট বলে দিচ্ছেন যে, খেলাফত না থাকাবস্থায়ও একটা দল জিহাদরত থাকবে। এতে বুঝা যায়, ইবনে হাজার রহ. এর উদ্দেশ্য এমনটা নয় যে, কোন হক্ব তানজীম গঠন করা যাবে না। বরং তার উদ্দেশ্য, যেসব দলে যোগ দিলে ফিতনায় পড়তে হতে পারে, সেগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা। এটা অব্যশই উদ্দেশ্য নয় যে, উম্মাহর উপর কাফের মুরতাদরা চেপে বসলেও তাদের প্রতিহত করার জন্য কোন জিহাদি তানজীম গঠন করা যাবে না। ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্যটা লক্ষ্য করুন,

                      وفي الحديث انه متى لم يكن للناس امام فافترق الناس احزابا فلا يتبع أحدا في الفرقة ويعتزل الجميع ان استطاع ذلك خشية من الوقوع في الشر. اهـ

                      “হাদিস থেকে বুঝা যায়, ইমামুল মুসলিমীন না থাকাবস্থায় যদি লোকজন বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে, তাহলে এ বিচ্ছিন্নতার যামানায় (এসব দলের) কোনটাতেই যোগ দেবে না। সম্ভব হলে সকল দল থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে। কেননা, অন্যথায় অনিষ্টে পতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” – ফাতহু বারি: ১৩/৩৭



                      বক্তব্যটা ভাল করে বুঝার চেষ্টা করুন। উম্মাহর উপর ফরয হল, ইমামুল মুসলিমীন না থাকাবস্থায় আহলুল হল ওয়াল আকদের নির্বাচনের মাধ্যমে একজন যোগ্য ইমাম নিয়োগ দেয়া। এমতাবস্থায় যদি উম্মাহ তাদের এ ফরয আদায় না করে বরং নিজেরাই ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত হয়, একেক জন একে ভূখণ্ড দখল করে নিজেকে সেখানকার শাসক বা খলিফা দাবি করে- তাহলে এসব দলের কোনটাতেই যোগ না দিতে বলা হয়েছে। কেননা, এরা অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। অন্যদের উপর জুলুম অত্যাচার করছে। অন্যায়ভাবে মারামারি কাটাকাটিতে লিপ্ত আছে। এদের কোনটাতে যোগ দেয়ার অর্থ, নিজেও জুলুমে শরীক হওয়া। এ কারণে বলা হচ্ছে, এদের সবগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে। এ কারণে যদি কষ্টের বোঝা মাথায় নিতে হয়, তবুও। নিজে কষ্টে নিপতিত হয়ে মাজলুম অবস্থায় মারা যাওয়া, অন্যের উপর জুলুম করার চেয়ে ভাল। এ কারণে তিনি বলছেন, এসব দলের সবগুলো পরিত্যাগ করে বিচ্ছিন্ন থাকতে। ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্য থেকে বিষয়টি একেবারেই সুস্পষ্ট। এ থেকে এ কথা কিভাবে বুঝে আসে যে, উম্মাহর উপর কাফের-মুরতাদ ও তাগুতের দল চেপে বসলেও তাদের প্রতিহত করার জন্য তানজীম করা যাবে না?! এমতাবস্থায় তো উম্মাহর সকল ইমামের ইজমা-ঐক্যমত যে, কাফেরদের প্রতিহত করতে এবং ইসলামী ভূমি ও মুসলমানদেরকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করতে জিহাদ শুরু করতে হবে। স্বয়ং ইবনে হাজার রহ. স্পষ্ট বলেছেন, খলিফা মুরতাদ হয়ে গিয়ে উম্মাহর উপর চেপে বসলে তার বিরুদ্ধে কিতাল করা ফরয।



                      লক্ষ করুন তার বক্তব্য,
                      يَنعَزِلُ بالكفر إجماعا فيجبُ على كل مسلمٍ القيامُ في ذلك، فمن قَوِيَ على ذلك فله الثوابُ، ومن داهن فعليه الإثمُ، ومن عَجَزَ وجبتْ عليه الهجرةُ من تلكَ الأرضِ. اهـ
                      “কুফরীর কারণে শাসক সর্বসম্মতিক্রমে অপসারিত হয়ে যাবে। তখন প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরজ হলো, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। যে তাতে সক্ষম হবে, তার জন্য রয়েছে প্রতিদান। যে শিথীলতা করবে, সে গুনাহগার হবে। আর যে অক্ষম, তার জন্য আবশ্য হলো ঐ ভূমি থেকে হিজরত করা।” – ফাতহুল বারি: ১৩/১৫৩


                      যেকোন একজন ইনসাফগার ব্যক্তি ইবনে হাজার রহ. এর বক্তব্যগুলো পরস্পর মিলালে অনাসায়ে বুঝতে পারবে যে, যেসব দল বা তানজীমে যোগ দিলে ফেতনা হবে, তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। কিন্তু জিহাদের প্রয়োজনে তানজীম গঠনে কোন অসুবিধা নেই। শুধু তাই নয়, বরং কেয়ামত অবধি একটা সংঘবদ্ধ জামাত জিহাদরত থাকবে। ইবনে হাজারের সবগুলো বক্তব্যের সমন্বয় করলে বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট বুঝা যায়। আর আহলে হকের বৈশিষ্ট্য এটাই যে, তারা নুসূস ও বক্তব্যের সবগুলোর সমন্বয় করে বিধান গ্রহণ করেন। পক্ষান্তরে বিদআতি ও খাহেশপূজারিদের ত্বরীকা হল, তারা দুয়েকটা বিশেষ নস বা বিশেষ দুয়েকটা বক্তব্য গ্রহণ করে বাকিগুলো প্রত্যাখান করে।



                      অধিকন্তু যদি ইবনে হাজার রহ. বলতেনও যে, আহলুস সুন্নাহর আকীদা মানজাহ বিশিষ্ট সঠিক পথে পরিচালিত দলসমূহকেও প্রত্যাখ্যান করতে হবে, আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিত্যাগ করে ঘরে বসে থাকতে হবে- তাহলেও মনে রাখতে হবে, ইবনে হাজার কিংবা শায়খ আলবানী কেউ রব নন। কেউই শরীয়তের বিধানদাতা নয়। তাদের কারো বক্তব্যই শরয়ী দলীল নয়। তাদের বক্তব্য যদি কুরআন হাদিসের মুওয়াফিক হয়, তাহলে মানা হবে; অন্যথায় প্রত্যাখান করা হবে। আল্লাহর কিতাব আর রাসূলের হাদিসের বিপরীতে কারো কথাই ধর্তব্য নয়- চাই তিনি যত বড় ব্যক্তিই হোন না কেন। আল্লাহর কিতাব আর রাসূলের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে আলেম উলামাদের ভুল বিচ্যুতি আর পদস্খলনগুলো কিংবা তাদের অপব্যাখ্যাগুলো গ্রহণ করেই ইয়াহুদ নাসারারা গোমরাহ হয়েছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন, আমার উম্মতের মধ্যেও এমন লোকের উদ্ভব হবে। আজ এমনই বাস্তব দেখতে পাচ্ছি। আমরা যেখানে কুরআন হাদিসের বক্তব্য – সাথে গ্রহণযোগ্য আইম্মায়ে কেরামের বক্তব্যও – পেশ করছি, সেখানে তারা অমুক আলেমের অমুক বক্তব্য, অমুকের অমুক পদস্খলন: এসব পেশ করছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের গোমরাহি থেকে হেফাজত করুন।

                      رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ



                      শেষে ‘সত্য প্রকাশ’ ভাইয়ের কাছে আবেদন, সত্য প্রকাশের আগে সত্য বুঝার চেষ্টা করুন। নতুবা সত্যের নামে অসত্যের বাহক-প্রচারকে পরিণত হবেন। আমার জিজ্ঞাসাগুলোর স্পষ্ট দলীলভিত্তিক জওয়াব দিন। মনে রাখবেন, একদিন আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে। সকল কৃতকর্মের জওয়াব দিতে হবে। আপনার অসত্য আহ্বানে সাড়া দিয়ে যদি কোন আল্লাহর বান্দা বিভ্রান্তির শিকার হন, তাহলে এর পাপের বোঝা আপনাকেও বইতে হবে। এ জন্য ভাই, একটু ভাল করে চিন্তা করুন।



                      পাশাপাশি ভাইয়ের কাছে আবেদন থাকবে, তানজীম গঠনের ব্যাপারে মিম্বারুত তাওহিদের একটা ফতোয়া কিছুদিন আগে অনুবাদ করে পোস্ট করা হয়েছিল। লিংক:
                      https://dawahilallah.com/showthread....509;&%232467;)


                      ভাই সেটা একটু ভালভাবে পড়বেন। দলীলগুলো নিয়ে ফিকির করবেন। হয়তো আল্লাহ তাআলা সঠিক পথের দিশা দিতে পারেন।


                      পরিশেষে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের সকলকে হিদায়েতের পথ দেখান। তাতেই কায়েম রাখেন।

                      Comment


                      • #12
                        Originally posted by সত্য প্রকাশ View Post
                        যখন জাম‘আত (মুসলিমরা সংঘবদ্ধ) থাকবে না তখন কী করতে হবে।

                        بَاب كَيْفَ الأَمْرُ إِذَا لَمْ تَكُنْ جَمَاعَةٌ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيَّ أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ يَقُولُ كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْخَيْرِ وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنْ الشَّرِّ مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللهُ بِهَذَا الْخَيْرِ فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ نَعَمْ وَفِيهِ دَخَنٌ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ قَوْمٌ يَهْدُونَ بِغَيْرِ هَدْيِي تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ.

                        **
                        আমি “সত্য প্রকাশ” ভাইকে কয়েকটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করব:

                        ১. এই হাদিসে প্রত্যেকটি الْخَيْرِ ও الشَّرِّ বলতে মৌলিকভাবে শাসকদের শাসনব্যবস্থাকে বুঝানো হয়েছে। তাই যখন বলেছে, الْخَيْرِ থাকবে, কিন্তু তাতে ধুম্রজাল থাকবে, এর দ্বারা ঐ সকল শাসকদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাদের শাসনব্যবস্থাকে খেলাফত বলা হলেও তা খেলাফতে রাশেদার *মত নয়। তারপর যে বলা হয়েছে, আরেকটি الشَّرِّ আসবে, তথা জাহান্নামের দরজায় দাড়িয়ে আহ্বানকারীরা, এর দ্বারাও খেলাফত না থাকার যুগের অসংখ্য খণ্ড খণ্ড রাাষ্ট্রের মুরতাদ শাসক ও তাদের শাসনব্যবস্থাকেই বুঝানো হয়েছে। এই অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সকল শাসকদের সাথে না থেকে মুসলমানদের জামাত ও তাদের ইমামের সাথে থাকতে, যদি থাকে।

                        অন্যথায় মুসলমানদের জামাত ও ইমাম না থাকলেও এসকল জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী মুরতাদ শাসকদের ছত্রছায়ায় থাকা যাবে না। বরং এদের থেকে পৃথক হয়ে যেতে হবে। যেমনটা মুজাহিদগণ করছেন, এসকল মুরতাদ শাসকদের ছত্রছায়ায় আনুগত্যের জীবন যাপন না করে তাদের শাসনব্যবস্থা থেকে নিজেদেরকে পৃথক করে নিয়েছেন। আর এক্ষেত্রে তাদেরকে যামানার সবচেয়ে কঠিন কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করতে হচ্ছে। আর রাসূল সা. বলেছেন, গাছের শিকর কামড়ে ধরে হলেও এতে অবিচল থাকতে।

                        পক্ষান্তরে যারা এ সকল শাসকদের ছত্রছায়ায় আনুগত্যের জীবন যাপন করছে (অর্থাৎ তাদের শাসন ব্যবস্থা থেকে নিজেকে পৃথক করে নিচ্ছে না, তাদের আবার কষ্ট-ক্লেশ কোথায়? তাদের কি কারণে গাছের শিকড় কামড়ে ধরতে হবে?! এই যে, তাবলীগ কত শান্তিতে আছে!! তারপর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানেরা আলেমরা কত শান্তিতে আছে।

                        ২. আমি সত্যপ্রকাশ ভাইকে প্রশ্ন করবো: হুযায়ফা রাযি. এর হাদিসে ‘জিহাদ করতে হবে না’... এই কথা আপনি কোথায় পেলেন? এই হাদিসে তো এই ধরণের কোন কথা নেই। এই হাদিস থেকে আপনি এই কথা মনগড়াভাবে কিভাবে আবিস্কার করলেন? আপনি এর উত্তর দিবেন ইংশাআল্লাহ।

                        আর কিছু *মুসলমান মিলে জামাতে নামায পড়লে এটা দল হয়ে যায় না, অনেক মুসলমান মিলে ঈদগাহে একত্রিত হয়ে ঈদের নামায পড়লে এটা দল হয়ে যায় না। অনুরূপ আল্লাহ সকল মুসলমানের উপর ইবাদত হিসাবে যে জিহাদ ফরজ করেছেন, কিছু মুসলমান মিলে তা আদায় করলে এটা দল হয়ে যায় না। এটা তো হল ইবাদত হিসাবে সকলকেই করতে হবে।

                        ৩. সত্যপ্রকাশ ভাইকে আরেকটি প্রশ্ন করবো: আপনি যে একটি মত অবলম্বন করেছেন-“তাই আমাদেরকে সব দল মত ছেড়ে নিরেটভাবে কোরআন হাদিস অনুযায়ী আমল করে যেতে হবে।”- (অর্থাৎ জিহাদ করা যাবে না।) আপনি তো এর উপর আরোপিত সকল এশকাল দফা করে এই মতটি গ্রহণ করেননি। এই মতের উপর বিশাল বড় এশকাল আসে- তাহলো রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: لن يبرح هذا الدين قائما يقاتل عليه عصابة من المسلمين حتي تقوم الساعة
                        এর ব্যাখ্যায় মিশকাত কিতাবের শরাহ মিরকাতে লিখা হয়েছে-
                        قال رسول الله لن يبرح أي لا يزال هذا الدين قائما يقاتل بالتذكير ويجوز تأنيثه أي يجاهد عليه أي على الدين عصابة بكسر أوله أي جماعة من المسلمين والمعنى لا يخلو وجه الأرض من الجهاد إن لم يكن في ناحية يكون في ناحية أخرى حتى تقوم الساعة أي يقرب قيامها قال الطيبي جملة يقاتل مستأنفة بيان للجملة الأولى وعداه بعلى لتضمينه معنى يظاهر أي يظاهرون بالمقاتلة على أعداء الدين يعني أن هذا الدين لم يزل قائما بسبب مقاتلة هذه الطائفة وما أظن هذه العصابة إلا الفئة المنصورة بالشام وفي نسخة زيادة بالمغرب قلت والأغلب في هذا الزمان بالروم نصرهم الله وخذل أعدائهم قال النووي ورد في الحديث لا يزال أهل المغرب ظاهرين على الحق حتى تقوم الساعة قيل هم أهل الشام وما وراء ذلك قلت فيه بحث فإن أهل المغرب أيضا من الأروام وغيرهم يحاربون الكفار أيدهم الله تعالى فالتحقيق أن المراد بالطائفة الجماعة المجاهدة لا على التعيين فإن فيما وراء النهر أيضا طائفة يقاتلون الكفرة قواهم الله تعالى وجزى المجاهدين عنا خيرا حيث قاموا بفرض الكفاية وأعطوا التوفيق والعناية قال النووي وفيه معجزة ظاهرة فإن هذا الوصف لم يزل بحمد الله تعالى من زمن النبي إلى الآن ولا يزال حتى يأتي أمر الله تعالى اه وهو لا ينافي أن يكون خبرا معناه الأمر كقوله تعالى إنا نحن نزلنا الذكر وإنا له لحافظون الحجر فإنا مأمورون وجوبا أن تحفظ القرآن بالقراءات المتواترة على سبيل الكفاية رواه مسلم وكذا أبو داود وفي معناه حديث لا تزال طائفة من أمتي ظاهرين حتى يأتي أمر الله وهم ظاهرون رواه الشيخان عن المغيرة وحديث ولا تزال طائفة من أمتي قوامة على أمر الله لا يضرها من خالفها رواه ابن ماجه عن أبي هريرة رضي الله عنه وحديث لا تزال طائفة من أمتي
                        ظاهرين على الحق حتى تقوم الساعة رواه الحاكم عن عمر نعم هذه الأحاديث شاملة للعلماء أيضا حتى قيل المراد بهم علماء الحديث والله أعلم

                        তো আপনি এই হাদিসের কি জবাব দিবেন? পরিস্কার হাদিস তো আপনার মতের বিপক্ষে যাচ্ছে। আপনি পরিস্কার হাদিসের এই এশকাল দফ না করেই ওই মতটা গ্রহণ করে নিলেন কিভাবে? আর এই বিষয়বস্তুর আরো অনেক হাদিস ও আয়াত তো আছেই। তাহলে কি আপনি পূর্ব হতে নিজ থেকে একটি মতকে সিলেক্ট করে রেখেছেন, এখন যে যত কথাই বলুক, আপনি আপনার কথার উপরই অটল থাকবেন?

                        এক বিষয়বস্তুর সকল নুসুসাত একত্রিত করে সকল এশকাল দফা করে একটি মত গ্রহণ না করে শুধু একটি হাদিস দেখেই একটি মত গ্রহণ করে ফেললে তো গোমরাহী সৃষ্টি হবে।

                        Comment


                        • #13
                          মুহতারাম ইলম ও জিহাদ ভাই বিশেষ করে ইবনে বাত্তাল রহ. এর যে উদ্ধৃতি পেশ করেছেন, তার মাধ্যমে হুজায়ফা রাযি. এর হাদিসের সংশয়ং পরিপূর্ণ দূর হয়ে যায়। অত:পর ইবনে হাজার রহ. এর অন্যান্য উদ্ধৃতিগুলো দ্বারাও একেবারে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, لا تزال طائفة من امتي... ل হাদিসের দ্বারা فاعتزل تلك الفرق كلها.... ا আম হাদিসটি খাস হয়ে গেছে। এরপরও যদি সত্যপ্রকাশ ভাই এ ব্যাপারে ক্লিয়ার না হন, তাহলে কি বুঝা যাবে?!

                          আমি হুযায়ফা রাযি. এর হাদিসে আরেকটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করি:

                          এই হাদিসে বলা হয়েছে- فاعتزل تلك الفرق كلها. এরকম বলা হয়নি- فاعتزل الفرق كلها অর্থাৎ تلك শব্দটি যোগ করা হয়েছে। তাহলে বুঝা গেলে, ওই যুগের পৃথিবীর সকল দল থেকে পৃথক থাকতে বলা হয়নি, বরং পূর্বে যে دعاة علي ابواب جهنم এর কথা বলা হয়েছে, তাদের দল থেকে পৃথক থাকতে বলা হয়েছে। এটা বলা হয়নি যে, ওই যুগের পৃথিবীর সকল মানুষ, সকল মুসলমান دعاة علي ابواب جهنم হয়ে যাবে। فتأمل

                          আর আমি আগে কমেন্ট করা সত্ত্বেও সেটা পরে চলে আসে। আমি দেখেছি যে, আমি কমেন্ট করার সময় অন্য একটি কমেন্ট ছিল না। এবং আমি ভাল করেই দেখিছি। কিন্তু এখন দেখি, এমন একটি কমেন্ট আমার কমেন্টের আগে চলে এসেছে। এটা আমি আগেও দেখেছি। তো সম্মানিত মডারেটর ভাইদেরকে আবেদন করছি, ভাই! এটা কেন? দয়া করে, বিষয়টা বলবেন।

                          Comment


                          • #14
                            সত্য প্রকাশ!!! ভাই। আপনি এখন কোথায় হারিয়ে গেলেন? আমি সত্য প্রকাশ আইডিদারী ভাইকে বলবো ভাই আমাদের পরিবার, আমাদের দেশ, আমাদের ইসলামকে আমরা নিজেরাই বাচাতে হবে অন্যরা এখানে আসবে না।

                            Comment


                            • #15
                              Originally posted by Mujahid of Hind
                              সত্য প্রকাশ, নয় সত্য প্রকাশ। এরা হলো ডিজিটাল ভণ্ড। তলেতলে এরা সৌদির গোলামী করে।
                              ভাই! আপনি এভামে ভিন্নমতকে আক্রমন করে গালি দিয়ে কথা বলছেন কেন?!
                              কারো সমস্যা থাকলে শালিন ভাষায় আদবের সাথে কথা বলতে শিখা দরকার আমাদের। উনি ভন্ড না ভালো সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। তাহলে তো উনি ও আপনাকে বা আমাকে উলটা একই জবাব বা এক ধাপ বেড়ে বলার সুজগ আপনি নিজেই করে দিচ্ছেন! সন্মানিত মডারেটোর ভাইদের নিকট কি এইসব গালি/আক্রমন্মূলক কথাগুলো দৃষতিগোচর হয় না।
                              আসুন আমরা শালিন হয়। আন্দাজে কাউকে কার গুলাম না বানাই। এখানে দলিল এর আলোকে আলচনা হতে পারে। তাই বলে এত কিছু কিভাবে বলেন আপনি! হাশরের মাঠে এই জন্যে হিসাব দিতে হবে আপনার দাবি মিথ্যা হলে।

                              Comment

                              Working...
                              X