Announcement

Collapse
No announcement yet.

তাকফীরের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তাকফীরের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ

    তাকফীরের ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ
    মূল: শায়খ আবু মুহাম্মদ আসিম আলমাকদিসি রহ.

    বইটি নিয়মিত পোষ্ট দেওয়া হবে ইংশাআল্লাহ। সকল ভাইদেরকে পড়ার আহ্বান করছি। বেশ উপকারী।



    প্রথম পরিচ্ছেদ
    ‘তাকফীর’ তথা কাফের আখ্যাদানে বাড়াবাড়ি থেকে সতর্কীকরণ
    التحذير من الغلو في التكفير

    সম্মানিত পাঠক! আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এবং আপনাকে উপকারী ইলম অর্জন ও তার উপর আমল করার তাওফিক দান করুন! তাকফীরের মাসআলাটি দ্বীনের অন্যান্য বিধি-বিধানের মতই একটি শরয়ী বিধান। তার রয়েছে অনেক গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং তার সাথে সম্পর্ক রাখে অনেক বিধি-বিধান ও মাসায়েল।
    এটি একটি স্পর্শকাতর মাসআলা। চূড়ান্ত স্পর্শকাতর। এর উপর ভিত্তি করে ইহকালীন ও পরকালীন অনেক ফলাফল আবর্তিত হয়। কিন্তু বহু লোক তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এখানে অনেক পা স্খলিত হয়েছে এবং অনেক বুঝ বিভ্রান্ত হয়েছে।

    মূলত: দ্বীনের গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি সংক্রান্ত মাসআলাসমূহের মধ্যে এটাই সর্বপ্রথম মাসআলা, যার ব্যাপারে উম্মতের মতভেদ হয়েছে। এটা হচ্ছে শাস্তির ধমকি সংক্রান্ত মাসআলা। যেমন ইবনে তাইমিয়া রা: উল্লেখ করেন:

    “মনে রাখবেন, কাফের বা ফাসেক আখ্যাদানের মাসআলাসমূহ হল নাম ও বিধান আরোপ সংক্রান্ত এমন মাসআলা, যার সাথে পরকালে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি, জাহান্নামের সতর্কবাণী এবং দুনিয়াতে বন্ধুত্ব, শত্রুতা, হত্যা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিধি-বিধান সম্পর্ক রাখে। কারণ আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের জন্য জান্নাত রেখেছেন আর কাফেরদের জন্য তা হারাম করেছেন। এটা সর্বসময় এবং সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য সামগ্রীক বিধি-বিধানের অন্তর্ভূক্ত”। (মাজমূউল ফাতাওয়া ১২/২৫১)

    উদাহরণত: তাকফীর বিষয়ে ফিকহের কিতাবসমূহ অনুসন্ধানকারী ব্যক্তি স্পষ্টভাবে দেখতে পাবে যে, কী পরিমাণ মাসায়েল ও বিধি-বিধান এর সাথে সম্পর্কিত আর এ বিষয়টির গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতাও জানতে পারবে।
    * উদাহরণ স্বরূপ শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সাথে সম্পর্কিত মাসআলাগুলো দেখুন: সেখানে রয়েছে-
    - মুসলিম শাসকদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা, তাদের সাহায্য করা ও তাদের আনুগত্য করা ওয়াজিব এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তারা স্পষ্ট কুফর প্রকাশ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ও তাদের সাথে যুদ্ধ করা জায়েয নেই।
    - যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ইসলামের গণ্ডির ভিতর থাকে এবং আল্লাহর শরীয়ত অনুযায়ী ফায়সালা করে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের পিছনে নামায পড়া ও তাদের সঙ্গে মিলে জিহাদ করা শরীয়তে বৈধ; চাই তারা নেককার হউক বা বদকার হউক।
    -যে সমস্ত মুসলিমদের অভিভাবক নেই, মুসলিম শাসক তাদের অভিভাবক হবে।

    * পক্ষান্তরে কাফের শাসকের হাতে বাইআত হওয়া, তার সাহায্য করা, তার সাথে সখ্যতা করা বা তার সহযোগীতা করা জায়েয নেই।
    - তার পতাকাতলে যুদ্ধ করা, তার পিছনে নামায পড়া বা তার কাছে বিচার-ফায়সালার জন্য যাওয়া বৈধ নয়।
    - মুসলিমদের উপর তার কর্তৃত্ব বৈধ নয়। মুসলিমদের উপর তার আনুগত্য আবশ্যক নয়। বরং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, তাকে অপসারণের চেষ্টা করা, তাকে প্রতিহত করার জন্য কাজ করা এবং তার স্থানে একজন মুসলিম শাসক বসানোর চেষ্টা করা ওয়াজিব।

    - এর উপর ভিত্তি করে মাসআলা আরো বের হয়ে আসে:- যে তার সাথে বন্ধুত্ব করে বা তার কুফর বা কুফরী আইন-কানুনের সাহায্য করে, তার রক্ষণাবেক্ষণ করে, তা দৃঢ় করার কাজে অংশগ্রহণ করে, তার বিধান পাশ করে বা তদানুযায়ী বিচার ফায়সালা করে, সে কাফের। যা বর্তমানে বিচারপতি ও এধরণের লোকদের চলমান অবস্থা।

    * নেতৃত্ব সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - কোন মুসলিমের উপর কাফেরের কর্তৃত্ব বৈধ নয়। সুতরাং কোন কাফেরের জন্য মুসলমানদের গভর্ণর বা বিচারক হওয়া, নামাযের ইমামতি করা, কোন মুসলিম রমনীর বিবাহের অভিভাবক হওয়া, মুসলমানদের সন্তানদের অভিভাবক হওয়া বা তাদের লালন-পালন করা অথবা মুসলমানদের ইয়াতীম বা এধরণের লোকদের সম্পদের তত্ববধান করা বৈধ নয়।

    * বিবাহ সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - কোন কাফেরের জন্য কোন মুসলিম নারীকে বিবাহ করা জায়েয নেই এবং সে তার বিবাহের অভিভাবকও হতে পারবে না...।
    - যখন কোন মুসলিম পুরুষ মুসলিম নারীকে বিবাহ করে, অত:পর সে মুরতাদ হয়ে যায় তখন তাদের বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে এবং তাদেরকে পৃথক করে দেওয়া আবশ্যক।

    * উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - জমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ধর্মের ভিন্নতা উত্তরাধিকারী হওয়ার জন্য প্রতিবন্ধক।

    * রক্ত ও ‘কিসাসের বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - কাফেরের বদলায় মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না...।
    - হারবী কাফের বা মুরতাদকে ইচ্ছাকৃত বা ভুলবশত: হত্যা করলে কোন কাফ্ফারা বা দিয়্যত নেই। পক্ষান্তরে মুসলিমের বেলায় দিয়্যত ওয়াজিব...।

    * জানাযা সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - কাফেরের জানাযা পড়া যাবে না, গোসল দেওয়া যাবে না এবং মুসলমানদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা যাবে না।
    - তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা বা তার কবরের পাশে দণ্ডায়মান হওয়া জায়েয নেই।
    * পক্ষান্তরে মুসলিমের বিধান এর বিপরীত।

    * বিচার সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - কাফেরের বিচারপতি হওয়া বৈধ নয়।
    - মুসলিমের উপর কাফেরের সাক্ষ্য জায়েয নেই...।
    - কুফরী আইনের মাধ্যমে বিচারকারী কাফের বিচারকের নিকট বিচার-ফায়সালার জন্য যাওয়া জায়েয নেই; শরয়ীভাবে তার ফায়সালা কার্যকর হবে না এবং তার কোন ফলাফলও বর্তাবে না।

    * যুদ্ধ সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - কাফের, মুশরিক ও মুরতাদদের সাথে যুদ্ধ আর বিদ্রোহী ও অবাধ্য মুসলিমদের সাথে যুদ্ধের মাঝে পার্থক্য করতে হবে।
    - তাই মুসলিমদের মুদাব্বার (মুনিবের মৃত্যুর সাথে যে ক্রীতদাসের মুক্তিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে) কে কিছু বলা হবে না।
    - তাদের আহতদেরকে মেরে ফেলা যাবে না, তাদের সম্পদর গনিমত হবে না, তাদের নারীদেরকে বন্দী করা হবে না ইত্যাদি..। পক্ষান্তরে কাফেরদের সাথে যুদ্ধে এসব বৈধ।
    - মুসলিমের রক্ত, সম্পদ ও সম্মানের ক্ষেত্রে মূল বিধান হচ্ছে তার ঈমানের কারণে তা সুসংরক্ষিত বা নিরাপদ। পক্ষান্তরে কাফেরের এ সমস্ত বিষয়ের মূল বিধান হচ্ছে তা মুসলিমদের জন্য বৈধ; তবে যদি নিরাপত্তাচুক্তি বা এ ধরণের কোন মাধ্যমে তা সংরক্ষিত হয়, তবে ভিন্ন কথা।

    * বন্ধুত্ব ও সম্পর্কচ্ছেদ সংক্রান্ত বিধানাবলীর মধ্যে রয়েছে:
    - মুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব রাখা ওয়াজিব; তার থেকে পরিপূর্ণভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েয নেই। তবে তার গুনাহসমূহ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে...।
    পক্ষান্তরে কাফেরের সাথে বন্ধুত্ব করা, মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করা বা মুসলমানদের গোপন তথ্য তাকে জানিয়ে দেওয়া হারাম। বরং তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে এবং তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতে হবে; তার সাথে সম্প্রীতি জায়েয নেই।

    এছাড়াও আরো অনেক শরয়ী বিধি-বিধান এই স্পর্শকাতর ও বিস্তৃত প্রভাব সৃষ্টিকারী বিধানটির সাথে সম্পর্কিত। এগুলো তার সামান্য কিছু মাত্র। এ কয়েকটির মাধ্যমে শুধু উদাহরণ দেওয়া ও সামান্য ইঙ্গিত দেওয়াই উদ্দেশ্য। আর এ সকল মাসআলা দলিল ফিকহের কিতাবসমূহ ও অন্যান্য কিতাবসমূহে স্ব-স্ব জায়গায় সকলের জানা শোনা আছে।


    চলবে ইংশাআল্লাহ

  • #2
    প্রিয় আখি,বইটি বাংলা আছে তো???
    বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আপনার কাজ কবুল করুন, আমীন।
      বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

      Comment


      • #4
        পক্ষান্তরে কাফেরের সাথে বন্ধুত্ব করা, মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করা বা মুসলমানদের গোপন তথ্য তাকে জানিয়ে দেওয়া হারাম।
        =================
        মুসলমানের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সাহায্য করা/মুসলমানদের গোপন তথ্য কাফিরদেরকে জানিয়ে দেওয়া হারাম। আপনার মাসয়ালাটি সঠিক তো?

        Comment


        • #5
          আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন, আমিন

          Comment


          • #6
            Originally posted by ibn masud View Post
            পক্ষান্তরে কাফেরের সাথে বন্ধুত্ব করা, মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করা বা মুসলমানদের গোপন তথ্য তাকে জানিয়ে দেওয়া হারাম।
            =================
            মুসলমানের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সাহায্য করা/মুসলমানদের গোপন তথ্য কাফিরদেরকে জানিয়ে দেওয়া হারাম। আপনার মাসয়ালাটি সঠিক তো?

            সম্মানিত ভাই! এটা শুধু অনুবাদ। আপনি মূল আরবিটা দেখুন:-
            وفي أحكام الولاء والبراء: تجب مولاة المسلم ولا تجوز البراءة الكلية منه ، وإنما يتبرأ من معاصيه.. وتحرم مولاة الكافر أو نصرته على المسلمين أو إطلاعه على عوراتهم.. بل تجب البراءة منه وبغضه ولا تجوز موادته.

            আসলে এখানে হারাম বলতে ”নাজায়েয” বলা উদ্দেশ্য। মানে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা আবশ্যক আর কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করা নাজায়েয। মুসলিম বা কাফের হওয়ার কারণে বন্ধুত্বের বিধানের ক্ষেত্রে এই পার্থক্যটা দেখানোই উদ্দেশ্য।

            আর এক ভাই জিজ্ঞেস করেছিলেন, বইটার অনুবাদ আছে কি না? হ্যাঁ ভাই, পুরো বইটার অনুবাদ আছে, এখন শুধু পোস্ট দেওয়ার কাজ। এটা বেশ আগেই অনুবাদ করা হয়ে গেছে।

            Comment


            • #7
              বইটিকি বাজারে পাওয়া যাবে???
              বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

              Comment


              • #8
                আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন, আমিন

                Comment

                Working...
                X