Announcement

Collapse
No announcement yet.

খুন ও ধর্ষণের ব্যাপকতা লাভ, দেশ ও জাতির জন্য গভীর অশনি সংকেত!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • খুন ও ধর্ষণের ব্যাপকতা লাভ, দেশ ও জাতির জন্য গভীর অশনি সংকেত!

    খুন ও ধর্ষণের ব্যাপকতা লাভ, দেশ ও জাতির জন্য গভীর অশনি সংকেত!


    দেশে একের পর এক খুন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেন তা দেখেও না দেখার ভান করে আছে।
    মানুষরূপী কিছু নরপিশাচ কিছুদিন পূর্বে টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে রূপাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে পরে তাকে হত্যা করে। সেই ধর্ষণ ও হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ঘটল আবার একই ঘটনা। বাসে ধর্ষণ করাটা যেন এখন একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। এটা এক নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছরে প্রতিবেশী ভারতে এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এখন ঘটছে আমাদের দেশে।

    ধর্ষণের মতো রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা যেন দিন দিন বাড়ছে। রাস্তায় যানবাহন যে নারীদের জন্য চরম অনিরাপদ, এ কথাই যেন স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে এসব ঘটনা। সময়ের সঙ্গে সভ্যতার পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি মানুষের মানসিকতার, কমেনি নারীর প্রতি সহিংসতা বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা অনেক বেড়েছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় ধর্ষণের ক্ষেত্রে নিত্যনতুন বাজে দৃষ্টান্ত তৈরি হচ্ছে।

    গত ৩০ ডিসেম্বরের নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ধর্ষিতা মহিলার ‘তোদের পায়ে পড়ি, আমাকে বেইজ্জতি করিস না, পোলাপাইন আমাকে মা বলে ডাকবে না’ করুণ বিলাপ দুষ্কৃতদের মন টলাতে পারে না। রাজনৈতিক ও নির্বাচনি প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে ঘৃণ্য অপকর্ম করেছে তারা। এর পর একের পর এক আলোচনায় আসছে ধর্ষণ ও হত্যা। গত ৬ জানুয়ারি (রোববার) রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ২ বছরের শিশুর ওপর পাশবিকতা ও হত্যার অভিযোগে থানা ঘেরাও হয়। ডেমরায় ২ শিশুর লাশ উদ্ধার। মাঝে সাতক্ষীরায় ৩য় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা, বগুড়ায় ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ, সাভারের আশুলিয়ায় গণধর্ষণে কিশোরীর মৃত্যু, মৌলভীবাজার ও মাগুরায় শিশু ধর্ষণ এবং নারায়ণগঞ্জে কবিরাজের হাতে ৫ম শ্রেণির শিশুছাত্রীর শ্লীলতাহানি।

    এসব ঘটনায় দেশজুড়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ধিক্কার ও নিন্দার ঝড় ওঠেছে। নোয়াখালীতে গণধর্ষণের ঘটনার আসামিকে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের বানানোর চেষ্টা, সাভারের আশুলিয়ায় গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়া এবং ভুক্তভোগীর মৃত্যুর ঘটনা সর্বাধিক সমালোচিত। এসব ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে সুশীলসমাজসহ সব বিবেকবান মানুষ। নতুন বছরের সপ্তাহ পার না হতেই দেশজুড়ে এ ধরনের পাশবিকতা-ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় শঙ্কা ও উৎকণ্ঠায় অভিভাবকমহল। তারা চান ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

    এসব ধর্ষকের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে আইনি সহায়তা না দিতেও তারা আহবান জানান। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু ধর্ষণের ঘটানয় মানুষের মূল্যবোধ-নৈতিকতার অবক্ষয়, পর্নোগ্রাফি ও মাদকের প্রভাব বিশেষভাবে দায়ী। এছাড়া ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে সহজে সবাই পর্নোগ্রাফি দেখতে পাচ্ছেন। ফলে জৈবিক ও মান্সিক বিকারগ্রস্ততা থেকে অনেকে শিশুদের ধর্ষণ করছে।

    সব চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, অপরাধের বিচারে দীর্ঘসূত্রতার কারণে এ ধরনের ঘটনায় সাহস পাচ্ছে অপরাধীরা। ধানের শীষে ভোট দেয়ার অপরাধে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের রাতে গণধর্ষণের শিকার হন ৪ সন্তানের জননী। ঘটনার আগে ওই নারীর স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রাখে ধর্ষকরা। যার নেতৃত্বে এ বর্বর এ ঘটনা ঘটে, সে স্থানীয় আওয়ামী লীগনেতা। বলা হয়, ধর্ষণের নেতৃত্ব দেয়া অভিযুক্ত ব্যক্তি আগে বিএনপি করত। বক্তব্যের পর ঘটনাটি নতুন করে আবার আলোচনায় আসে। সব মহল থেকে দাবি ওঠে ধর্ষকের পরিচয় ধর্ষক। তাকে ধর্ষক হিসেবেই বিচার করতে হবে।

    রাজধানীর পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডের ৫৩/১/ছ নম্বর চারতলা বাড়ির পাশে টিনশেড বস্তিতে মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে থাকত ২ বছরের শিশু আয়েশা। গত ৫ জানুয়ারি (শনিবার) তার মা অন্যের বাড়িতে কাজে যায়। খেলতে বের হয় আয়েশা। সন্ধ্যায় তার রক্তাক্ত লাশ মেলে পাশের ৪তলা বাড়ির সামনে। অভিযোগ রয়েছে, পাশের চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে ভাড়াটিয়া বাসিন্দা নাহিদ (৪৫) শিশুটিকে খিচুড়ি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। ঘটনা ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় চারতলা ভবনের তিনতলা থেকে তাকে নিচে ফেলে হত্যা করেছে।

    প্রতিবাদে এলাকাবাসী সোমবার দুপুরে গেন্ডারিয়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। সোমবার রাজধানীর ডেমরায় একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই শিশু নুসরাত জাহান (৪) ও ফারিয়া আক্তার দোলার (৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় মোস্তফা নামের এক ব্যক্তি ঘটনার দিন দুপুরে খেলারত শিশু দুটিকে ডেকে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর শিশু দুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

    ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সাভারে একটি পোশাক কারখানার তিন কর্মকর্তা ও কথিত প্রেমিকসহ ৫ জন মিলে ধর্ষণ করে গার্মেন্টস শ্রমিক কিশোরী নাজমাকে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন কিশোরী ও তার বাবা। পুলিশ তা আমলে নেয়নি। বলেছিলো ধর্ষণের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিয়ে যেতে। তবে ১ দিন পর মারা যাওয়ার পর নাজমার লাশ উদ্ধারসহ ধর্ষণ ও হত্যামামলা নেয় পুলিশ। ক্ষোভের সঙ্গে নাজমার বাবা হানিফ আলী বলেন, পুলিশ অভিযোগ আমলে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে আমার মেয়ে প্রাণে বেঁচে যেতো। ২ জানুয়ারি সকালে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ি আমতলা রেল কলোনিতে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার সময় লতিফ প্রামাণিক নামে লম্পটকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। শিশুটিকে কৌশলে একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে ফেলে যায় লম্পট।ভোটের দিন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে রুশন মিয়া নামে এক লম্পট। শিশুটিকে আদমপুর ইউনিয়নের কামারছড়া রাবার বাগানে নিয়ে যাওয়া হয় কৌশলে। স্থানীয়রা শিশুটিকে বাগান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

    গত ৭ জানুয়ারি (সোমবার) কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় কাজী ইউনুস (৫৫) নামে এক লম্পট। শিশুটিকে রুটি খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত জমিতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। শিশুটি চিৎকার করলে লম্পট ইউনুস পালিয়ে যায়। গত সোমবার মাগুরার শালিখায় ৩ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটি বাড়ির পাশে খেলা করার সময় প্রতিবেশী সাকিব মোল্লা খড়ের গাদায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে সাকিব পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

    বেড়ানোর কথা বলে ৩১ ডিসেম্বর বিকালে কুমিল্লার দাউদকান্দির একটি ইটভাটায় আটকে রেখে ৫ম শ্রেণির এক শিশু ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নূর গাজী নামে এক কবিরাজ। অপর একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ৬ জানুয়ারি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায়। টিউশনি করতে প্রতিবেশী বড় বোনের কাছে গিয়েছিলো তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী। শিক্ষিকা বাসায় না থাকায় তার ভাই জয়দেব সরকার শিশুটিকে খাবার কিনে দেয়ার লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটিকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। শিশুটিকে না পেয়ে যখন ওই পুকুরে জাল ফেলার কথা হয়, ঠিক তখন শিশুর লাশটি তুলে আনা হয় পানি থেকে। এরপর লাশটি বাথরুমে স্লাবে ঢুকিয়ে রাখে। পরে সেখান থেকে লাশটি উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা।
    তবে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সাধারণ দরিদ্র পরিবারের সন্তানরাই বেশি ধর্ষণের শিকার হয়। পক্ষান্তরে ধর্ষক পক্ষ থাকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বেশি প্রভাবশালী। বিকৃত যৌনাকাক্সক্ষা, যৌনাচার ও বিকৃত মানসিকতা ছাড়াও অধিকাংশ গণধর্ষণের পেছনে অপরাধীদের শক্তি জোগায় তার রাজনৈতিক পরিচিতি অথবা আর্থিক শক্তি। যে কারণে কখনো পারিবারিক বিরোধ, প্রতিহিংসা, লোভ-লালসা ও স্বার্থের দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সি নারী। বিচার বিলম্বের কারণে কিংবা অনেক মামলা আপস হয়ে যায়। নারী ও শিশু নির্যাতনের কঠোর আইন বাংলাদেশে বিদ্যমান আছে। কিন্তু সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নেই। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বলা আছে, ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। কিন্তু এমন অনেক নজির আছে যে, বছরের পর বছর ধরে মামলা চলছে।

    অনেকে ঝামেলা এড়াতে কিংবা অজ্ঞতার কারণে আদালত বা পুলিশের দারাস্থও হয় না। যে কারণে এসব অপরাধ অহরহই ঘটছে। আমরা জানি, লুটেরাপুঁজির দৌরাত্ম্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের পাশবিক কর্মযজ্ঞের পরিসমাপ্তি ঘটানো সম্ভব নয়। আর এই দৌরাত্ম্যকে রাতারাতি সরিয়ে দেওয়াও যাবে না। সে কারণে এর লাগাম টেনে ধরার জন্য আমরা এ ধরনের অপরাধকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের পথকে উন্মুক্ত করার জোর দাবি উত্থাপন করছি।

    সমাজে এ ধরনের পৈশাচিক বর্বরতা ক্রমেই বাড়তে থাকলে, একসময় তা মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই শুরুতেই এর কবর রচনা করা আমাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে।
    ইসলামিক চিন্তাবিদদের মতামত হল, এ ধরনের পাশবিক কর্মযজ্ঞের পরিসমাপ্তি ঘটাতে চাইলে, যে ব্যবস্থার কারণে এগুলো বিস্তার লাভ করছে, তা উপড়ে ফেলে ইসলামী জীবন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলেই সকল অপরাধের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে।

    লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।মুহাম্মদ ওসমান গনি, সূত্র: উম্মাহ নিউজ

  • #2
    ইসলামী জীবন ব্যবস্থা কায়েম ছাড়া এই অপরাধের শাস্তি হবে বলে আমার মনে হয়না । তাই প্রয়োজন মুসলিমদের একতা,নিষ্ঠা,দ্বীনের আনুগত্য, ক্বিতাল ফী সাবিলিল্লাহর জন্য ই'দাদ, আমীরুল মূমিনীনের আনুগত্য, আসলিহার একত্রিকরণ ও তার বাস্তবিক প্রয়োগ । আল্লাহ্* তায়ালা আমাদের জন্য কাজের পরিবেশ তৈরী করে নেয়ার হিম্মত,মনোবল,সাহস,শক্তি ও সময়ের সঠিক ব্যবহার করার তাওফীক্ব দান করুন । আমিন ।

    হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত ।

    Comment

    Working...
    X