Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদপ্রিয় তরুণদের মনোবল ভেঙ্গে দিতে 'অতি জজবাতী' আখ্যাদান এবং বিপরীত বাস্তবতা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদপ্রিয় তরুণদের মনোবল ভেঙ্গে দিতে 'অতি জজবাতী' আখ্যাদান এবং বিপরীত বাস্তবতা

    'কিভাবে ইলম তুলে নেয়া হবে' বুখারী শরীফের একটা বাব বা অধ্যায়। এখানে বলা হয়েছে, উমর ইবন্ আব্দুল আযীয রহ. মাদীনায় আবু বকর ইবন হাযম রহ. এর কাছে এক পত্রে লিখেনঃ খোঁজ কর, রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যে হাদীস পাও তা লিখে নাও। আমি ইলম লোপ পাওয়ার ও আলিমদের বিদায় নেওয়ার আশংকা করছি এবং জেনে রাখো, নবী করিম (সাঃ) এর হাদীস ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করা হবে না এবং প্রত্যেকের উচিত ইলমের প্রচার-প্রসার করা, আর তারা যেন একত্রে বসে (ইলমের চর্চা করে), যাতে যে জানে না সে শিক্ষা লাভ করতে পারে। কারণ ইলম গোপনীয় না হওয়া পর্যন্ত তা বিলুপ্ত হবে না।

    আল্লাহু আকবর! ইলম গোপনীয় না হওয়া পর্যন্ত তা বিলুপ্ত হবে না। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, আজকের সমাজে যে ইলমটা সবচেয়ে বেশী গোপনীয় তা হল 'জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ'র ইলম। এটা গোপনীয় ইলম কারণ এটার আলোচনা করতে গেলে সমাজ-রাষ্ট্রের হর্তাকর্তাদের বিরুদ্ধতার শিকার হতে হয় এবং জেল-জুলুমের সম্ভাবনা থাকে। তাই জুমুয়ার বয়ানে, ওয়াজ মাহফিলের বয়ানে জিহাদের আলোচনা শুনতে পাওয়া যায় না। যদিওবা কেউ কেউ জিহাদের আলোচনা করতে চেষ্টা করেন কিন্তু তাদের আলোচনা অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয় 'সত্যের সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণ', 'জিহাদের প্রকৃত বাস্তবতার দূরবর্তী বুঝ' অথবা 'জিহাদের অর্থ ও প্রয়োগে বিকৃতি-বিচ্যুতি'! মোটকথা জিহাদের সঠিক আলোচনা সমাজে নেই বললেই চলে। এহেন পরিস্থিতিতে যারা প্রকৃত জিহাদের কথা বলেন তাদেরকে একপ্রকারে এড়িয়েই চলা হয়, তাদেরকে প্রায়ই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হতে হয় এবং তাদের উপর জুলুম করা বর্তমানে বড়-ছোট সকলের জন্য অধিকারের পর্যায়ে পড়ে গেছে !! এরূপ কঠিন সমাজ বাস্তবতায় কেউ জিহাদের কথা বললে তাকে সাহসী সম্ভাষণে 'সিংহশাবক' বলাই সকলের জন্য যথার্থ ও শ্রেয় ছিল অথচ তাদেরকে তাচ্ছিল্যভরে বলা হচ্ছে 'অতি জজবাতী' ! কি বিস্ময়কর দ্বিমুখীতা! তারা নিজেরা জিহাদের আলোচনা করবে না অথচ কেউ আলোচনা করলে সেটা হবে বাড়াবাড়ি 'অতি জজবাতী' !

    শাইখ আনওয়ার আল আওলাকী (রাহিমাহুল্লাহ) তার এক লেকচারে বলেন---


    যে হাদিসটি জনগণের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে

    সালামাহ ইবনে নুফায়ল (রাঃ) বলেন যে... ...

    (হাদীসটি এখনই বর্ণনা না করে শাইখ বলছেনঃ) এবং আমি এই হাদীসটির দিকে গভীরভাবে মনোনিবেশ করতে চাই, যা খুবই জরুরি। হাদীসটি বর্ণনা করার আগে আমি আপনাদেরকে একটি প্রশ্ন করতে চাই। জিহাদ কি এক ধরণের ইবাদত যার অর্থ নিজেই প্রকাশ করে? নাকি এটা এমন একটা ইবাদত যা ভিন্ন কিছু বুঝায়? জিহাদ কি এমন একটা ইবাদত যা শুধু জিহাদকে বুঝায় নাকি এমন একটা ইবাদত যা শেষ হয়ে গিয়েছে? মানুষ মুসলিম হয়ে গেলে কি জিহাদ শেষ হয়ে যাবে নাকি খিলাফত শেষ হয়ে গেলে জিহাদ শেষ হয়ে যাবে? অথবা জিহাদ নিজেই নিজের অর্থ প্রকাশ করে? জিহাদ নিজেই একটা ইবাদত, তাহলে তার প্রমাণ কি? কারণ এটা খুব সহজেই দাবী করা যায় যে, জিহাদ মানে খিলাফত বা দাওয়াত দেওয়াকে বুঝায়। এর অর্থ যদি এটা অন্য কিছুকে বুঝায়, যদি মানুষ মুসলিম হয়ে যায়, তাহলে জিহাদের আর কোন দরকার নাই! যদি আমরা বলি যে, এটা নিজে থেকে কোন অর্থ বহন করে না, তাহলে যদি মানুষকে জিহাদ ছাড়াই মুসলিম হবার দাওয়াত দিতে পারি, আর তারা যদি মুসলিম হয়ে যায়। তবে জিহাদের আর কোন দরকার নাই। প্রমাণ কি যে, জিহাদ নিজেই একটা ইবাদত? তাহলে আমরা এই হাদীসটা পড়ি এবং দেখি কারণ, এটা খুব জরুরি একটা বিতর্ক। যে কেউ বলতে পারে যেঃ কেন শুধু দাওয়াত দেয়া হয় না? কেন আমাদেরকে যুদ্ধ করতে হবে? যদি আমরা লিফলেট বিতরণ করতে পারি আর আমাদের হাতে সময় থাকে তাহলে কেন আমাদেরকে যুদ্ধ করতে হবে,*এর কি অর্থ আছে ?
    সালামাহ ইবনু নুফায়ল (রাঃ) বলেন, (একদিন) আমি রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক ব্যক্তি এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) লোকেরা ঘোড়াকে ছেড়ে দিয়েছে, অস্ত্রসস্ত্র পরিত্যাগ করেছে আর তারা দাবী করছে আর কোন জিহাদ নেই। এটা সম্ভবত মক্কা বিজয়ের পরের ঘটনা। বিজয় অর্জিত হয়ে গিয়েছিল। ঘোড়াগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল, আমরা অস্ত্র ত্যাগ করেছি। আমরা আমাদের কাজে ফিরে যাই, আমাদের ক্ষেত-খামারগুলো আবাদ করি, যেহেতু আর কোন যুদ্ধ নাই। রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) কি বললেন? তিনি বললেনঃ তারা মিথ্যা বলছে। যুদ্ধ তো সবেমাত্র শুরু হয়েছে। আর আমার উম্মতের একদল সর্বদা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে থাকবে। আর যারা তাদের বিরোধিতা করবে তারা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ তাদের থেকে কিছু লোকের অন্তরকে ঘুরিয়ে দিবেন যারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আর তা ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না কিয়ামতের শুরু হয়। কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ তাআ'লা ঘোড়ার ললাটে(কপালে) কল্যাণ ও মঙ্গলকে সম্পৃক্ত করে রেখেছেন, আর ইয়া'জুজ-মা'জুজ বের হবার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না। এই একই রকম একটা হাদীস ইমাম নাসাঈ বর্ণনা করেছেন এবং আমরা তার ব্যাখ্যা আলোচনা করব। সালামাহ ইবনু নুফায়ল (রাঃ) বলেন, '(একদিন) আমি রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক ব্যক্তি এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) লোকেরা ঘোড়ার মর্যদাকে ক্ষুণ্ণ করছে, অস্ত্রসস্ত্র পরিত্যাগ করেছে (দাবী করছে যে আর কোন জিহাদ নেই, জিহাদ শেষ হয়ে গিয়েছে)। তিনি বললেনঃ তারা মিথ্যা বলছে। যুদ্ধ তো সবেমাত্র শুরু হয়েছে। যুদ্ধ তো সবেমাত্র শুরু হয়েছে। সর্বদা আমার উম্মতের একদল হক্বের পথে যুদ্ধ করতে থাকবে এবং আল্লাহ তাদের দ্বারা কিছু লোকের অন্তর ঘুরিয়ে দিবেন। আর আল্লাহ তাদেরকে ওদের দ্বারা রিযিক দান করবেন কিয়ামত পর্যন্ত। আর আল্লাহ তাআ'লা কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ ও মঙ্গলকে সম্পৃক্ত করে রেখেছেন। আমাকে এ কথা ওহী দ্বারা জানানো হয়েছে যে, অচিরেই আমাকে তুলে নেয়া হবে, আমাকে( দুনিয়ায়) রাখা হবে না। আর তোমরা আমার পরে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। তোমরা একে অন্যের সাথে মারামারি কাটাকাটি করবে। আর ঈমানদারদের নিরাপদ ঠিকানা হবে শাম-এ। (সুনান আন-নাসায়ী : ৩৫৬১)

    যেমনটি আস সিন্দী রহ. সুনানে নাসায়ী'র ব্যাখ্যাগ্রন্থে বলেছেন, লোকেরা ঘোড়ার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করছে অর্থ, তাদেরকে পরিত্যাগ করা হয়েছে, আর তাদের গুরুত্বকে খাটো করা হয়েছে বা যুদ্ধে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে না। জিহাদ তো সবে মাত্র শুরু হয়েছে! জিহাদ তো সবে মাত্র শুরু হয়েছে! এই কথার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, (বাক্যের) পুনরাবৃত্তি দ্বারা এই বার্তার গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছে এবং যার অর্থ জিহাদ শুধু বাড়তেই থাকবে, আল্লাহ এটা নির্ধারিত করে দিয়েছেন। তাহলে কিভাবে এটা এত তারাতারি শেষ হয়ে যাবে? এটার মানে হল যে, সত্যিকার যুদ্ধ তো মাত্র শুরু হয়েছে। কারণ এতদিন তারা যুদ্ধ করছিল আরব সীমানার ভিতরে। কিন্তু এখন তাদের সময় হয়েছে এই যুদ্ধকে বাহিরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। বাস্তবে আবু বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ) ই জিহাদকে আরব ভূমি থেকে বাহিরে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং সেটাই ছিল জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর স্বর্ণযুগ। ওই সময় মুসলিমরা বেশী যুদ্ধ করত রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) এর সময় থেকে। তারা তাদের চারপাশের সবগুলো জিহাদের দরজা উন্মুক্ত করেছিল। তারপর উনি যা বলেছিলেন সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাদের জন্য কিছু লোকের অন্তর ঘুরিয়ে দিবেন, এর মানে কি? এর মানে হলঃ আল্লাহ সর্বদা মু'মিনদের এই দলকে(ত্বয়িফা) যোগান দিবেন কিছু মানুষদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য যদিও কিছু মানুষের মন ঈমান থেকে ঘুরে কুফরীতে চলে যায়। রসূল সাঃ বলেছেন, ধরে নেই (পৃথিবীর) সবাই মুসলিম হয়ে গিয়েছে, তাহলে আল্লাহ কিছু মনকে ঘুরিয়ে দিবেন (যাতে জিহাদের প্রয়োজনে কিছু হলেও কাফির অবশিষ্ট থাকে এবং তারা মু'মিনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে)। সুতরাং জিহাদের ইবাদত কোনদিন বন্ধ হবে না। তাই তা নিজেই নিজের অর্থ প্রকাশ করে আর তা নিজেই একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। এটা অন্য আর কিছুকেই প্রকাশ করে না। এটা মু'মিনদের জন্য আশির্বাদ যে, তাদেরকে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করার সম্মান দেয়া হয়েছে, যাতে আল্লাহ সর্বোচ্চ সন্তুষ্ট হন। অন্যভাবে বলা যায়,........* কখনো এই উম্মতকে জিহাদ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হবে না। এই সুযোগ সবসময় থাকবে। ব্যাপার হল কে এই সুযোগ গ্রহণ করবে আর কে এই সুযোগ প্রত্যাখ্যান করবে। তাই এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ হাদীস এটা বলে যে, মহান আল্লাহ এই ইবাদত করাতে চান, আল্লাহ ত্বইফা'কে সম্মানিত করতে চান এবং আল্লাহ তাদেরকে পুরষ্কৃত করতে চান। তাই আল্লাহ সবসময় তাদের জন্য তাদের লক্ষ্যবস্তু (জিহাদ ও শাহাদাতের মর্যদা) সৃষ্টি করে দিবেন। এই লক্ষ্যবস্তু সবসময় থাকবে যাতে ত্বইফা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ'র ইবাদত চালিয়ে যেতে পারে। এখন যখন আল্লাহ বলেছেন যে তিনি কিছু মানুষদের মনকে ঘুরিয়ে দেবেন, যাতে তাদের মাধ্যমে আল্লাহ রিযিক প্রদান করতে পারেন। এটার মানে এমন হতে পারে যে আল্লাহ তাদেরকে শাহাদাতের রিযিক দিবেন, আল্লাহ তাদেরকে পুরষ্কারের রিযিক দান করবেন অথবা আল্লাহ তাদেরকে গণিমতের রিযিক দান করবেন- সবগুলো অর্থেই হতে পারে।
    এবং এটা যে কেউ জিজ্ঞেস করতে পারে যে, আমরা রসূলুল্লাহ (স্বল্লালাহু আ'লাইহি ওয়া স্বল্লাম) এর জীবনের খুটিনাটি সব কথা, ছোটখাট বিষয়ের হাদীস শুনি, সব মসজিদে তা শোনানো হয়। আর এই হাদীসের মত হাদীসকে জনসাধারণের কাছ থেকে গোপন করা হয়! যদিও এটা অতীব জরুরী একটি হাদীস, তা সত্ত্বেও জনগণ থেকে এই হাদীস লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কিভাবে এই হাদীসগুলো লোকদের সামনে উপস্থিত না হয়ে আছে? এটা শয়তানের একটা চক্রান্ত- যাতে দ্বীনের কিছু অংশকে অন্ধকারে রেখে দেয়া যায়।
    আল্লাহ আমাকে মাফ করুন ও ক্ষমা করে দিন।
    হয়তো শরীয়াহ নয়ত শাহাদাহ।

  • #2
    আল্লাহ আপনাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন,আমিন।

    Comment


    • #3
      Originally posted by হেলাল View Post
      আল্লাহ আপনাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন,আমিন।
      আমিন। ভাই, আল্লাহ তাআ'লা আপনাকেও জান্নাতে সবুজ পাখি হয়ে উড়ে বেড়াবার তৌফিক দিন। আমিন।
      আল্লাহ আমাকে মাফ করুন ও ক্ষমা করে দিন।
      হয়তো শরীয়াহ নয়ত শাহাদাহ।

      Comment

      Working...
      X