Announcement

Collapse
No announcement yet.

দরসুল হাদিস; জিহাদ; ইমানের পরে সর্বোত্তম আমল

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দরসুল হাদিস; জিহাদ; ইমানের পরে সর্বোত্তম আমল

    عن أبي هريرة، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سئل: أي العمل أفضل؟ فقال: «إيمان بالله ورسوله». قيل: ثم ماذا؟ قال: «الجهاد في سبيل الله» قيل: ثم ماذا؟ قال: «حج مبرور». صحيح البخاري: (26) صحيح مسلم: (83)

    আবু হুরাইরা রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ইমান আনা। প্রশ্ন করা হলো, এরপর কোনটি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। প্রশ্ন করা হলো, এরপর কোনটি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হজ্জে মাবরুর (মকবুল হজ্জ) -সহিহ বুখারী, ২৬ সহিহ মুসলিম, ৮৩

    عن أبي ذر، قال: قلت: يا رسول الله، أي الأعمال أفضل؟ قال: «الإيمان بالله والجهاد في سبيله». صحيح البخاري: (2518) صحيح مسلم: (84)

    আবু যর রাযিআল্লাহু বলেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, সর্বোত্তম আমল কোনটি? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর প্রতি ইমান আনা এবং তার পথে জিহাদ করা। -সহিহ বুখারী, ২৫১৮ সহিহ মুসলিম, ৮৪

    আবু সাইদ খুদরী রাযিআল্লাহু আনহু বলেন,
    قيل: يا رسول الله أي الناس أفضل؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «مؤمن يجاهد في سبيل الله بنفسه وماله». صحيح البخاري: (2786) صحيح مسلم: (1888)

    রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়, হে আল্লাহর রাসুল, সর্বোত্তম ব্যক্তি কে? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ঐ মুমিন যে নিজের জানমাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে। -সহিহ বুখারী, ২৭৮৬ সহিহ মুসলিম, ১৮৮৮

    আবু হুরাইরা রাযি. বলেন,
    جاء رجل إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقال: دلني على عمل يعدل الجهاد؟ قال: «لا أجده» قال: «هل تستطيع إذا خرج المجاهد أن تدخل مسجدك فتقوم ولا تفتر، وتصوم ولا تفطر؟»، قال: ومن يستطيع ذلك؟، قال أبو هريرة: «إن فرس المجاهد ليستن في طوله، فيكتب له حسنات». صحيح البخاري: (2785) صحيح مسلم: (1878)

    একব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বললো, আমাকে এমন কোন আমলের কথা বলে দিন যা জিহাদের সমতূল্য, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তো এমন কোন আমল দেখতে পাচ্ছি না। তুমি কি পারবে, মুজাহিদ জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হলে তুমি মসজিদে প্রবেশ করে অনবরত নামায পড়তে থাকবে, ক্লান্ত হবে না। প্রতিদিন রোযা রাখবে, রোযা ভাঙ্গবে না। প্রশ্নকারী বললেন, এটা কেই বা পারবে? আবু হুরাইরা বলেন, মুজাহিদের ঘোড়া রশিতে বাধা অবস্থায় বিচরণ করলেও মুজাহিদের জন্য সওয়াব লিখা হয়। -সহিহ বুখারী, ২৭৮৫, সহিহ মুসলিম, ১৮৭৮

    হাফেয ইবনে হাযার বলেন,
    وهذه فضيلة ظاهرة للمجاهد في سبيل الله تقتضي أن لا يعدل الجهاد شيء من الأعمال. فتح الباري: 6/5 ط. دار الفكر)

    এটি মুজাহিদের জন্য সুস্পষ্ট ফযিলত, যা প্রমাণ করে কোন আমলই জিহাদের সমতূল্য নয়। -ফাতহুল বারী, ৬/৫

    উপরোক্ত হাদিসসমূহ থেকে সুস্পষ্ট যে, ইমানের পরে সর্বোত্তম আমল হলো আল্লাহর পথে জিহাদ, উলামায়ে কেরাম বলেন, হাদিস মূলত কুরআনের ব্যাখা, এবং হাদিসের সব বিষয়ই ইশারা-ইঙ্গিতে হলেও কুরআনে আছে (দেখুন, আসসুন্নাহ ও মাকানাতুহা, মুস্তফা সিবায়ী, ১/৩৮৬ আলমাকতাবুল ইসলামী) এ দৃষ্টিকোন থেকে আমরা বলতে পারি এ হাদিসসমূহ আল্লাহর তায়ালার নিম্মোক্ত বাণী থেকেই সংগ্রহীত,

    أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا يَسْتَوُونَ عِنْدَ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ (التوبة: 19)

    তোমরা কি হাজিদের পানি পান করানো এবং মসজিদে হারাম আবাদ করাকে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ইমান আনা এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করার সমতূল্য মনে করো? তারা তো আল্লাহর তায়ালার নিকট সমান নয়। আল্লাহ তায়ালা জালেমদের হেদায়াত দান করেন না। যারা ইমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জানমাল দিয়ে জিহাদ করেছে তারা আল্লাহর তায়ালার নিকট উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, এবং তারাই তো সফলকাম। -সুরা তাওবা, ১৯-২০

    এ আয়াতের শানে নুযুলে ইমাম মুসলিম নোমান বিন বাশির রাযিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণণা করেন,

    «كنت عند منبر رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقال رجل: ما أبالي أن لا أعمل عملا بعد الإسلام إلا أن أسقي الحاج، وقال آخر: ما أبالي أن لا أعمل عملا بعد الإسلام إلا أن أعمر المسجد الحرام، وقال آخر: الجهاد في سبيل الله أفضل مما قلتم، فزجرهم عمر، وقال: لا ترفعوا أصواتكم عند منبر رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو يوم الجمعة، ولكن إذا صليت الجمعة دخلت فاستفتيته فيما اختلفتم فيه، فأنزل الله عز وجل: {أجعلتم سقاية الحاج وعمارة المسجد الحرام كمن آمن بالله واليوم الآخر} الآية إلى آخرها. (1879)

    আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বারের নিকট বসা ছিলাম, তখন এক ব্যক্তি বলে উঠলো, ইসলাম আনার পর হাজিদের পানি পান করানো ব্যতীত অন্য কোন আমল না করলেও আমার কোন পরোয়া নেই, আরেকজন বললো, ইসলাম আনার পর মসজিদুল হারাম আবাদ করা ব্যতীত অন্য কোন আমল না করলেও আমার কোন পরোয়া নেই। তৃতীয় একব্যক্তি বললো, তোমরা যে আমলগুলোর কথা বলছো তার চেয়ে জিহাদ উত্তম, উমর রাযিআল্লাহু আনহু তাদের ধমক দিয়ে বললেন, তোমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বারের নিকট উচ্চস্বরে কথা বলো না, বরং জুমুআর নামাযের পর আমি রাসুলের নিকট তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছো সেই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবো। তখন আল্লাহ তায়ালা এই আয়াত অবতীর্ণ করেন, ‘তোমরা কি হাজিদের পানি পান করানো এবং মসজিদে হারাম আবাদ করাকে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ইমান আনা এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করার সমতূল্য মনে করো? (সুরা তাওবা, আয়াত, ১৯) -সহিহ মুসলিম, ১৮৭৯

    মসজিদুল হারাম আবাদ করা দ্বারা তাতে ইবাদত বন্দেগী করা এবং তার নির্মানকাজ করা উভয়টিই উদ্দেশ্য, (দেখুন, আহকামুল কুরআন, ইমাম জাসসাস, ১/৭৫ দারু ইহয়াউত তুরাস, তাফসীরে সা’দী, পৃ: ৩৩১ মুয়াসসাসাতুল রিসালা) সুতরাং আয়াত থেকে স্পষ্ট যে নফল হজ্জে গিয়ে মসজিদুল হারামে ইবাদত বন্দেগী করার চেয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করাই উত্তম, এজন্যই আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমানের পর জিহাদকে সর্বোত্তম আমল বলেছেন এবং হজকে তৃতীয় স্তরে রেখেছেন।

    বরং শাইখুত তাফসীর শাইখ আহমদ আলী লাহোরী বলেন, এ আয়াতে তাদের অযুহাত খন্ডন করা হয়েছে, যারা মসজিদ (ও খানকায়) বসে বসে ইবাদত ও যিকির করার বাহানায় জিহাদ থেকে বিরত থাকে। -ফাতহুল জাওয়াদ, ২/৪৩১

    জিহাদের ফযিলত সম্বলিত এ ধরণের অসংখ্য আয়াত ও হাদিসের কারণে সাহাবায়ে কেরামও জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করতেন, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দীকা রাযিআল্লাহু আনহা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন,

    يا رسول الله، نرى الجهاد أفضل العمل، أفلا نجاهد؟ قال: «لا، لكن أفضل الجهاد حج مبرور».

    হে আল্লাহর রাসূল আমরা জানি জিহাদ সর্বোত্তম আমল, আমরা কি জিহাদ করবো না? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হলো হজ্জে মাবরূর, (মকবুল হজ) –সহিহ বুখারী, ১৫২০

    সুনানে নাসায়ীর বর্ণণায় আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহার প্রশ্নটি এভাবে এসেছে,
    إني لا أرى عملا في القرآن أفضل من الجهاد. (سنن النسائي: 2628)
    আমি তো কুরআনে জিহাদের চেয়ে উত্তম কোন আমল দেখছি না ...। -সুনানে নাসায়ী, ২৬২৮

    উল্লেখিত হাদিসটির ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৮৫২ হি.) বলেন,

    أي نعتقد ونعلم، وذلك لكثرة ما يسمع من فضائله في الكتاب والسنة، وقد رواه جرير عن صهيب عند النسائي بلفظ: «فإني لا أرى عملا في القرآن أفضل من الجهاد». اختلف في ضبط (لكن) فالأكثر بضم الكاف خطاب للنسوة، قال القابسي وهو الذي تميل إليه نفسي، وفي رواية الحموي لكن بكسر الكاف وزيادة ألف قبلها بلفظ الاستدراك، والأول أكثر فائدة، لأنه يشتمل على إثبات فضل الحج، وعلى جواب سؤالها عن الجهاد. (فتح الباري: 3/382 ط. دار الفكر)

    অর্থাৎ আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি, (জিহাদ সর্বোত্তম আমল) কেননা কুরআন-সুন্নাহয় এর অসংখ্য ফযিলত এসেছে। … অধিকাংশ বর্ণণায় لكن শব্দের কাফ অক্ষরে পেশ এসেছে (অর্থাৎ لِكُنَّ তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ) ….

    আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
    «ما العمل في أيام أفضل منها في هذه؟» قالوا: ولا الجهاد؟ قال: «ولا الجهاد، إلا رجل خرج يخاطر بنفسه وماله، فلم يرجع بشيء». صحيح البخاري: (969)

    জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনে আমল করা অন্য কোন দিনে আমল করার সমতূল্য নয়। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করলেন, (অন্য দিনগুলিতে) জিহাদ করাও কি এই দশদিনে আমল করার সমতূল্য নয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, জিহাদও নয়, তবে যে ব্যক্তি নিজের জানমালের ঝুকি নিয়ে জিহাদে অংশগ্রহণ করে এবং জানমাল কোন কিছুই না নিয়েই ফিরে আসে (সেই ব্যক্তির আমল জিলহজের আমলের চেয়েও উত্তম) । -সহিহ বুখারী, ৯৬৯

    হাফেয ইবনে হাযার বলেন,
    ودل سؤالهم هذا على تقرر أفضلية الجهاد عندهم. (فتح الباري: 2/460)

    সাহাবীদের এই প্রশ্ন প্রমাণ করে তাদের নিকট জিহাদ সর্বোত্তম হওয়ার বিষয়টি সুবিদিত ছিল। -ফাতহুল বারী, ২/৪৬০

    ইমাম ইবনে কুদামা আলামাকদিসী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৬২০ হি.) তার বিখ্যাত ফিকহগ্রন্থ আলমুগনীতে বলেন,

    قال الأثرم: قال أحمد: لا نعلم شيئا من أبواب البر أفضل من السبيل. وقال الفضل بن زياد: سمعت أبا عبد الله، وذكر له أمر العدو؟ فجعل يبكي، ويقول: ما من أعمال البر أفضل منه. وقال عنه غيره: ليس يعدل لقاء العدو شيء. ومباشرة القتال بنفسه أفضل الأعمال، والذين يقاتلون العدو، هم الذين يدفعون عن الإسلام وعن حريمهم، فأي عمل أفضل منه، الناس آمنون وهم خائفون، قد بذلوا مهج أنفسهم.

    আছরম বলেন, ইমাম আহমদ বলেন, জিহাদের চেয়ে উত্তম কোন নেকআমল আছে বলে আমার জানা নেই। ফযল বিন যিয়াদ বলেন, ইমাম আহমদের নিকট শত্রুর আলোচনা করা হলে তিনি কেদে ফেলেন এবং বলেন জিহাদের চেয়ে উত্তম কোন নেক আমল নেই, ইমাম আহমদের আরেকজন ছাত্র তার থেকে বর্ণণা করেন, শত্রুর মোকাবেলার সমতূল্য কোন ইবাদত নেই, স্বশরীরে যুদ্ধে অংশ্রগহণ করা সর্বোত্তম আমল, যারা শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে তারাই ইসলামের প্রতিরক্ষা করে, সুতরাং জিহাদে চেয়ে উত্তম আমল আর কি হতে পারে? মানুষ নিরাপদে থাকে, অথচ মুজাহিদরা ভীতসন্ত্রস্ত থাকে, নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে।
    এরপর ইবনে কুদামা জিহাদের ফযীলতে কিছু হাদিস উল্লেখ করার পরে বলেন,

    ولأن الجهاد بذل المهجة والمال، ونفعه يعم المسلمين كلهم، صغيرهم وكبيرهم، قويهم وضعيفهم، ذكرهم وأنثاهم، وغيره لا يساويه في نفعه وخطره، فلا يساويه في فضله وأجره. (المغني: 9/199 ط. مكتبة القاهرة)

    তাছাড়া জিহাদে জানমাল ব্যয় করতে হয় এবং জিহাদের ফায়েদা ছোট-বড়, দূর্বল-সবল, পুরুষ-মহিলা, সকল মুসলিম ভোগ করে, অন্য কোন আমল উপকারীতা ও ঝুঁকির ক্ষেত্রে জিহাদের সমান নয়, সুতরাং ফযিলত ও সওয়াবের ক্ষেত্রেও তা জিহাদের সমতূল্য হবে না (কেননা হাদিসে এসেছে, সওয়াব পরিমাণ নির্ধারিত হয় ইবাদত আদায়ে কষ্ট-ক্লেশের পরিমাণ অনুপাতে, সহিহ বুখারী, ১৭৮৬ সহিহ মুসলিম, ১২১১)। -আলমুগনী, ৯/১৯৯

    সহিহ মুসলিমের ভাষ্যকার ইমাম আবুল আব্বাস কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৬৫৬ হি.) বলেন,

    وقد حصل من مجموع هذه الأحاديث: أن الجهاد أفضل من جميع العبادات العملية، ولا شك في هذا عند تعيينه على كل مكلف يقدر عليه، كما كان في أوّل الإسلام، وكما قد تعيَّن في هذه الأزمان؛ إذ قد استولى على المسلمين أهل الكفر والطغيان، فلا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم. (المفهم لما أشكل من تلخيص كتاب مسلم: 3/712 ط. دار ابن كثير: 1417 هـ )

    এই সকল হাদিস থেকে বুঝা যায়, জিহাদ সকল আমলী ইবাদাতের চেয়ে উত্তম, এতে কোন সন্দেহ নেই যে, জিহাদ ফরযে আইন হওয়ার সুরতে জিহাদই সর্বোত্তম আমল, যেমন ইসলামের সূচনালগ্নে জিহাদ ফরযে আইন ছিল, এবং বর্তমান যমানায়ও জিহাদ ফরযে আইন হয়ে গেছে, যেহেতু মুসলিমদের উপর কাফেররা প্রভাব বিস্তার করেছে। -আলমুফহিম, ৩/৭১২

    আল্লাহ তায়ালা ইমাম কুরতুবীর উপর লাখো রহমত বর্ষণ করুন, তিনি সপ্তম হিজরীতেই কাফেরদের গলাবা ও বিজয়ের কারণে জিহাদ ফরযে আইন হওয়ার ফতোয়া দিয়েছেন। অথচ তখন কাফেররা অল্প কিছু মুসলিম ভূমিই দখল করতে পেরেছিল। হায়, তিনি যদি আজকের অবস্থা দেখতেন, যখন পৃথিবীর সব মুসলিম ভূমিই কাফেরদের অধীন, মুসলিম ভূমিগুলোর দালাল শাসকেরা কাফেরদের আজ্ঞাবহ, তাহলে না জানি তিনি কি ফতোয়ায়ই দিতেন।
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

  • #2
    ভাই,আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাধ। ভাই,আমার আকাঙ্ক্ষাটা পূর্ণ হলো।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment


    • #3
      ভাই আপনাকে আনেক আনেক শুকরিয়া।
      আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন,আমিন।

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহু খাইরান। আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন। ইলম ও আমলের মধ্যে বরকত দান করুন। আমিন।
        কে আছো জোয়ান, হও আগোয়ান।

        Comment


        • #5
          জাযাকাল্লাহু খাইরান
          আল্লাহ আপনার ইনমে বারাকাহ দান করুন। আমীন।
          ভাই একটা বিষয় জানতে চাচ্ছি!
          আমরা সাধারণ ভাবে জানি যে, একজন মানুষ নাবালেগ বা অন্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহনের পর প্রথম যে ফরজ তার উপর অবশ্যক হয় তা হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরা। এই বিষয়ে কোন দলিল আছে? ইমান আনর পর প্রথম কি ফরজ হয় নামাজ, জিহাদ নাকি অন্য কোন ফরজ ইবাদত? আপনার লেখা থেকে আমি বুঝলাম ইমানের পর জিহাদ প্রথম ফরজ হয়। শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহ. কিতাবও আছে, ইমান আনার পর প্রথম ফরজ মুসলিম ভূমির প্রতিরক্ষা।
          প্রিয় ভাই এই বিষয়টা একটু ক্লিয়ার করে দিলে ভালো হতো।
          আনসারকে ভালোবাসা ঈমানের অংশ।
          নিজে আনসার হব, অন্যকে আনসার বানানোর চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

          Comment


          • #6
            জাযাকাল্লাহু খাইরান। আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন। ইলম ও আমলের মধ্যে বরকত দান করুন। আমিন।

            Comment


            • #7
              আখি আবু খালেদ, “ইসলাম গ্রহণের পর সর্বপ্রথম ফরয হয় নামায”, এ কথার কোন দলীল আছে বলে আমাদের জানা নেই, বরং হাদিস থেকে এর বিপরীতই বুঝা যায়, নিচের হাদিসটি দেখুন,
              বারা ইবনে আযেব রাযিআল্লাহু বলেন,
              أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل مقنع بالحديد، فقال: يا رسول الله أقاتل أو أسلم؟ قال: «أسلم، ثم قاتل»، فأسلم، ثم قاتل، فقتل، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «عمل قليلا وأجر كثيرا». رواه البخاري: 2808
              ‘রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বর্মপরিহিত একব্যক্তি এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল আমি কি যুদ্ধ করবো না ইসলামগ্রহণ করবো ? রাসুল বললেন, তুমি ইসলামগ্রহণ করে যুদ্ধ করো। সে ইসলামগ্রহণ করে যুদ্ধ করলো এবং যুদ্ধে শাহাদাতবরণ করলো। রাসুল সাল্লাল্লাহু তার ব্যাপারে বলেন, সে খুব অল্প আমল করেই বিরাট প্রতিদান লাভ করেছে’। -সহিহ বুখারী, ২৮০৮

              আবু হুরাইরা রাযি. কৌতুক করে বলতেন, বল তো, কোন ব্যক্তি এক ওয়াক্ত নামাযও না পড়েই জান্নাতে চলে গেছে? -ফাতহুল বারী, ৬/২৫ দারুল ফিকর।

              আসলে উল্লেখিত কথাটি বলে সাধারণত নামাযের গুরুত্ব বোঝানো হয়, কিন্তু নামাযের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য একাধিক সহিহ হাদিস রয়েছে, সুতরাং নামাযের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য এ ধরণের কথার কোন প্রয়োজন নেই।

              জিহাদ ফরযে কেফায়া হওয়ার সূরতে নিসন্দেহে নামায জিহাদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আর ফরযে আইন হওয়ার সুরতে কেউ কেউ জিহাদকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন, ইমাম কুরতুবীর কথা থেকে তা স্পষ্ট, ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ বলেন,
              فالعدو الصائل الذي يفسد الدين والدنيا لا شيء أوجب بعد الإيمان من دفعه
              যে শত্রু দ্বীন-দুনিয়া ধ্বংস করে ইমান আনার পর তাকে প্রতিহত করার চেয়ে বড় ওয়াজিব কোন বিধান নেই। -আলফাতাওয়াল কুবরা, ৫/৫৩৮ দারুল কুতুব।

              ইমাম জাসসাস বলেন,
              ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻌﺪ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ﻓﺮﺽ ﺁﻛﺪ ﻭﻻ ﺃﻭﻟﻰ ﺑﺎﻹﻳﺠﺎﺏ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ، ﻭﺫﻟﻚ ﺃﻧﻪ ﺑﺎﻟﺠﻬﺎﺩ ﻳﻤﻜﻦ ﺇﻇﻬﺎﺭ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﻭﺃﺩﺍﺀ ﺍﻟﻔﺮﺍﺋﺾ، ﻭﻓﻲ ﺗﺮﻙ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﻏﻠﺒﺔ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻭﺩﺭﻭﺱ ﺍﻟﺪﻳﻦ، ﻭﺫﻫﺎﺏ ﺍﻹﺳﻼﻡ . ﺍﻫـ
              “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনার পর জিহাদের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং আবশ্যক কোন ফরজ নেই। তা এ কারণে যে, জিহাদের দ্বারাই ইসলাম বিজয়ী হয়, ফারায়েযগুলো আদায় করা সম্ভব হয়। আর জিহাদ ছেড়ে দিলেই শত্রু বিজয়ী হয়ে যাবে, দ্বীন মিটে যাবে এবং ইসলাম নিঃশেষ হয়ে যাবে।” – আহকামুল কুরআন; ৪/৩১৪ দারু ইহইয়াউত তুরাস।

              তবে জিহাদ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার অর্থ এই নয় যে, জিহাদের অজুহাতে নামাযে অবহেলা করা যাবে, বরং শুধু যুদ্ধ চলমান সময়ে জিহাদের প্রয়োজনে নামায কাযা করা যাবে, অন্য কোন ক্ষেত্রে জিহাদের কাজে যতই ব্যস্ততা থাক এর জন্য নামায কাযা করা যাবে না। এ বিষয়ে ভবিষ্যতে বিস্তারিত ফতোয়া আসবে ইনশাআল্লাহ, আরো কোন বিষয় অস্পষ্ট থাকলে নিসঙ্কোচে জানানোর অনুরোধ রইল।
              الجهاد محك الإيمان

              জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

              Comment


              • #8
                Originally posted by Bara ibn Malik View Post
                ভাই,আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাধ। ভাই,আমার আকাঙ্ক্ষাটা পূর্ণ হলো।
                আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, আপনি বিশেষভাবে বলার পূর্বে কাজ শুরু করতে ইতস্তত করছিলাম, আপনার উৎসাহ প্রদানই আমাকে কাজের প্রেরণা যোগায়। جزاك الله خيرا في الدارين، ورزقك الله الشهادة
                الجهاد محك الإيمان

                জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

                Comment


                • #9
                  মাসাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। অনেক সুন্দর একটি ইলমী পোষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা ভাইকে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। এবং ইলমে ও আমলে বারাকাহ দান করুন। আমীন্
                  ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                  Comment


                  • #10
                    ভাই,নিয়মিত চাই। যদি পারা যায় ইরাব দিয়ে দিয়েন।
                    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

                    Comment

                    Working...
                    X