Announcement

Collapse
No announcement yet.

যেসব কারণে একজন মুসলিম হত্যার উপযুক্ত হয়ে পড়ে- ২২

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যেসব কারণে একজন মুসলিম হত্যার উপযুক্ত হয়ে পড়ে- ২২

    তিন. বিদআতিদের গুরু
    আমরা আলোচনা করে এসেছি যে, যারা যমিনে দ্বীনি বা দুনিয়াবি কোন ধরণের ফাসাদ ছড়ায়, প্রয়োজনে ফাসাদ দূর করণার্থে তাদের হত্যা করা বা শাস্তি দেয়া বৈধ। আর স্পষ্ট যে, বিদআতিরা দ্বীনের ব্যাপারে ফাসাদ ছড়াচ্ছে। তাদের প্রতিহত করা এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআর সহীহ আকীদার সংরক্ষণ করা ফরয। এজন্য প্রয়োজনে বিদআতিদের শাস্তি দেয়ার দরকার পড়লে, গ্রেফতার-বন্দীর দরকার পড়লে তা-ই করতে হবে। যদি কিতাল ছাড়া দমন সম্ভব না হয়, তাহলে কিতাল করা হবে। মুনাসিব মনে হলে তাদের নেতৃত্বস্থানীয়দের হত্যাও করা যাবে। আর যদি বিদআত এমন পর্যায়ে উপনীত হয় যে, তা কুফর ও ইরতিদাদে পৌঁছে গেছে, তাহলে তাদের উপর মুরতাদের বিধান আরোপ হবে।

    শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (৭২৮ হি.) বলেন,
    وأما قتل الداعية إلى البدع فقد يقتل لكف ضرره عن الناس كما يقتل المحارب، وإن لم يكن في نفس الأمر كفرا. فليس كل من أمر بقتله يكون قتله لردته. وعلى هذا قتل غيلان القدري وغيره قد يكون على هذا الوجه. اهـ مجموع الفتاوى 23\349-350

    “কুফর পর্যন্ত না গড়ালেও বিদআতের প্রতি আহ্বানকারী দাঈকে কখনও হত্যা করা হয় জনসাধারণের উপর থেকে তার অনিষ্ট প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে; যেমন হত্যা করা হয়ে থাকে মুহারিব(তথা ডাকাত)কে। এমন নয় যে, যাকেই হত্যার আদেশ দেয়া হয়েছে, তা কেবল তার রিদ্দাহর কারণেই। এ হিসেবে (কদরিয়া ফিরকার গুরু) গাইলান আলকদরি ও অন্যানদের হত্যা এর ভিত্তিতে হতে পারে।”- মাজমুউল ফাতাওয়া ২৩/৩৪৯-৩৫০


    আরো বলেন,
    وجوز طائفة من أصحاب الشافعي وأحمد وغيرهما: قتل الداعية إلى البدع المخالفة للكتاب والسنة وكذلك كثير من أصحاب مالك. وقالوا: إنما جوز مالك وغيره قتل القدرية لأجل الفساد في الأرض؛ لا لأجل الردة؛ ... وهذا لأن المفسد كالصائل. فإذا لم يندفع الصائل إلا بالقتل قتل. اهـ مجموع الفتاوى 28\346-347

    “শাফিয়ি, আহমাদ ও অন্যান্য আরো অনেক ইমামের অনুসারিদের এক জামাত কুরআন সুন্নাহ পরিপন্থী বিদআতের দিকে আহ্বানকারী দাঈকে হত্যার অনুমোদন দিয়েছেন। ইমাম মালেকের অনেক অনুসারিও এর অনুমোদন দিয়েছেন। তারা বলেন, ইমাম মালেক রহ. সহ আরো অনেকে কদরিয়াদের হত্যার অনুমোদন দিয়েছেন ফাসাদ ফিল আরদের কারণে; রিদ্দাহর কারণে নয়। ... এর কারণ, ফাসাদ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি জান, মাল ও ইজ্জত-আব্রুর উপর আগ্রাসীর অনুরূপ। আর আগ্রাসী ব্যক্তি যদি হত্যা ছাড়া বিরত না হয়, তাহলে তাকে হত্যা করে দিতে হয়।”- মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৩৪৬-৩৪৭


    ইবনে আবিদিন রহ. (১২৫২ হি.) বলেন,
    وفي نور العين عن التمهيد: أهل الأهواء إذا ظهرت بدعتهم بحيث توجب الكفر فإنه يباح قتلهم جميعا إذا لم يرجعوا ولم يتوبوا، وإذا تابوا وأسلموا تقبل توبتهم جميعا ... فأما في بدعة لا توجب الكفر فإنه يجب التعزير بأي وجه يمكن أن يمنع من ذلك، فإن لم يمكن بلا حبس وضرب يجوز حبسه وضربه، وكذا لو لم يمكن المنع بلا سيف إن كان رئيسهم ومقتداهم جاز قتله سياسة وامتناعا. والمبتدع لو له دلالة ودعوة للناس إلى بدعته ويتوهم منه أن ينشر البدعة وإن لم يحكم بكفره جاز للسلطان قتله سياسة وزجرا لأن فساده أعلى وأعم حيث يؤثر في الدين. والبدعة لو كانت كفرا يباح قتل أصحابها عاما، ولو لم تكن كفرا يقتل معلمهم ورئيسهم زجرا وامتناعا. اهـ

    “‘নূরুল আইন’ কিতাবে ‘আততামহিদ’ কিতাব থেকে বিবৃত হয়েছে: বিদআতিদের বিদআত যদি কুফর পর্যন্ত গড়িয়ে যায় এবং তারা তাওবা করে ফিরে আসতে সম্মত না হয়, তাহলে তাদের সকলকে হত্যা করে দেয়া বৈধ। যদি তাওবা করে মুসলমান হয়ে যায়, তাহলে সকলের তাওবা কবুল করা হবে। ... আর যেসব বিদআত কুফরে গড়ায়নি, সেসবের ক্ষেত্রে তা থেকে বিরত রাখা যায় মতো তা’যির করা আবশ্যক। যদি বন্দী ও প্রহার ব্যতীত সম্ভব না হয়, তাহলে বন্দী ও প্রহার বৈধ। তদ্রূপ, যদি অস্ত্র প্রয়োগ ব্যতীত বিরত রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে নেতা ও অনুসরণীয় পর্যায়ের বিদআতি হলে সিয়াসতরূপে ও দমনের উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করা বৈধ। বিদআতি যদি লোকজনকে তার বিদআতের প্রতি দাঈ ও আহ্বানকারী হয় এবং তার কারণে বিদআত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, তাহলে তার ব্যাপারে কুফরের ফায়সালা না হলেও সিয়াসতরূপে ও দমনের উদ্দেশ্যে সুলতানের জন্য তাকে হত্যা করা বৈধ। কেননা, তার কারণে বড় ধরণের ও ব্যাপক ফাসাদ দেখা দিচ্ছে। কেননা, তার ফাসাদ দ্বীনকে আক্রান্ত করছে। বিদআত যদি কুফরে গড়ায়, তাহলে তাদের সকলকে ঢালাওভাবে হত্যা করা হবে। আর কুফর না হলে দমনের উদ্দেশ্যে তাদের উস্তাদ ও সর্দারকে হত্যা করা হবে।”- রদ্দুল মুহতার ৪/২৪৩


    মোটকথা: ইরতিদাদ হলে মুরতাদ হিসেবে সকলকে হত্যা করা হবে। আর ইরতিদাদ না হলে শাস্তি দিয়ে হলেও বিদআত দমন করতে হবে। প্রয়োজনে নেতৃত্বস্থানীয় ও গুরু পর্যায়ের বিদআতিদের হত্যা করাও জায়েয হবে- যদিও তারা কাফের হয়ে যায়নি। বিদআত দমনের জন্য হত্যা করা হবে; মুরতাদ হিসেবে নয়।


    বি.দ্র- ১

    এখানে বিদআত বলতে সাধারণ বিদআত উদ্দেশ্য নয়; কুরআন সুন্নাহর সুস্পষ্ট পরিপন্থী বিদআতে গলিজা উদ্দেশ্য। নতুবা অনেক উলামা ফুকাহাকে হত্যা করা আবশ্যক হবে। কারণ, টুকটাক ও সাধারণ কিছু বিদআত অনেক আলেম-ফকিহের মধ্যেও বিদ্যমান ছিল। এ ধরণের বিদআত এখানে উদ্দেশ্য নয়। এখানে খাওয়ারেজ, *মু’তাজিলা ও কদরিয়াদের মতো বিদআত উদ্দেশ্য। বর্তমান সময়কার মাজার ও কবর পূজারিদের নেতৃত্বস্থানীয় ভণ্ড বাবাগুলো এ শ্রেণীতে পড়বে। আর দেউয়ান বাগীদের মতো খবীসগুলো তো সুস্পষ্ট মুরতাদ। এদেরকে ফাসাদ ফিল আরদের পাশাপাশি ইরতিদাদের কারণেও হত্যা করা আবশ্যক।

    বি.দ্র-২

    যেকোন হত্যার ক্ষেত্রেই তার লাভ-ক্ষতির হিসেব করা আবশ্যক। যদি হত্যার দ্বারা লাভের তুলনায় ক্ষতি হয় বেশি, তাহলে হত্যা করা হবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাওয়ারেজদের প্রথম ব্যক্তি যুলখুয়াইসিরাকে এজন্যই হত্যা করেননি। মুনাফিকদেরও ছেড়ে দিয়েছেন। এজন্য বিদআতি কোন গুরু বা বাবাকে হত্যা করতে হলে বিজ্ঞ মুজাহিদ উলামায়ে কেরাম ও উমারাদের নির্দেশনা নিয়ে করা উচিৎ। নয়তো লাভের তুলনায় ক্ষতি হতে পারে বেশি।


  • #2
    আল্লাহ সুব. আপনার মেহনত কবুল করুন ও ইলমে বারাকাহ ফান করুন,আমীন!
    বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
    কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

    Comment

    Working...
    X