Announcement

Collapse
No announcement yet.

হে প্রিয়বন্ধু তোমাকেই বলছি! (চার)

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হে প্রিয়বন্ধু তোমাকেই বলছি! (চার)


    মানবজীবনের প্রতিটি মূহুর্ত সহস্র চ্যালেঞ্জ ও বাধা-বিপত্তির আবর্তে ঘুর্ণয়নশীল। এজন্যই তুমি দেখবে মানবজীবন প্রতিটি মুহুর্তে অঘোষিতভাবে একজন মানুষের বিরুদ্ধে অজস্র চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় এবং যা তখন স্বাভাবিকভাবেই একজন মানুষকে রক্তিম চুখে বলে দেয়, “ও হে! যদি পার আমার মোকাবেলায় চলে এসো। এটি মহাসত্য চিরন্তন এক বাস্তবতা। নিতান্ত বিনাবাক্যে যে বাস্তবতা মেনে নেওয়াই হলো মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।

    হে আমার প্রাণপ্রিয় হৃদয়ের বন্ধু! এ মহাসত্যের তাত্ত্বিক ও যৌক্তিক দিকটি তোমার সামনে উদঘাটন করতে গিয়ে তোমার সত্যসন্ধানী বিবেককে মাত্র দুটো প্রশ্নই আমি করতে চাই।

    প্রথমত: মানবতারজনক তোমার আদিপিতা আদম আ: এর জীবনচরিত্রে একটু লক্ষ কর তো! তাঁর জীবনচরিত্রে কোনো ধরণের বাধা-বিপত্তি, ঝড়-তুফান ও চ্যালেঞ্জের ছাপ তুমি দেখতে পাও কি না? যদি একটু দূরদৃষ্টি দিয়ে লক্ষ কর, তাহলে দেখতে পাবে তোমার আদিপিতা আদম আ: এর জীবনচরিত্রের রন্দ্রে রন্দ্রে শিক্ষণীয়, রহস্যময়ী অজস্র চ্যালেঞ্জের ছাপ খুব আটুশাটো ভাবেই লেগে আছে। যেসব চ্যালেঞ্জগুলোকে তার জীবনচরিত্র থেকে আলাদা করে তাঁর জীবনচরিত্রকে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা সে মহামানবের জীবনচরিত্রের সাথে বাতুলতা বৈ অন্য কিছু নয়।

    দ্বিতীয়ত: তোমার জন্মধারিণী মমতাময়ী মায়ের সেই প্রসব বেদনার প্রতি একটু লক্ষ কর তো! যিনি ‘তুমি ছোট্ট খোকাকে ভালোবাসেন বলে, কেমন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করে এ পৃথিবীতে তোমাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। আর তখন তুমি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কেমন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করেই ‘না’ সূক্ষ্ম একটি পথ অতিক্রম করে এ ধরাদমে পা রেখেছ। ওসব ভুলে গিয়েছ? আমার বিশ্বাস ‘না’ তুমি ওসব ভুলতে পার না। কারণ তুমি আমার একজন বুদ্ধিমান বন্ধু। তা হলে বল এরপরও কী তুমি এ ব্যাপারে সন্দিহান? মানবজীবন যে সার্বক্ষণিক চ্যালেঞ্জেময়ী দাবা খেলার চতুর্ভূজ কোনো একটি বৃত্ত। এ বস্তুবাদি সমাজ ও সামাজিকতায় তোমার জন্মই যেখানে তোমার জন্য মস্তবড়ো চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাহলে এতে তোমার কোনো সন্দেহই থাকতে পারে না যে, মানবজীবন হলো একটি সার্বক্ষণিক যুদ্ধ ও চ্যালেঞ্জের নাম।

    এখানে তোমাকে আরো একটি বিষয় খুলে বলি? শোনো! মানবজীবনের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জগুলো হলো মানুষের বিপরীত ভিন্ন একটি জাতির সাথে। ভিন্ন একটি সত্তার সাথে। শয়তান ও তার বংশীয় দূসরদের সাথে। আরে জানো না? তোমার জন্মলগ্নে সেই তো অশুভ উদ্দেশ্যে তোমাকে স্পর্শ করেছিল। তোমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তাহলে বুঝতে পারলে, শয়তান ও তার বংশীয় দূসরেরাই সর্বপ্রথম তোমার জীবনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু যখন তুমি বড় হলে, কোনো এক মহাসত্যের দিকে হাটি হাটি পা পা করে আগে বেড়ে চলতে লাগলে। তখন তুমি দেখতে পেয়েছ যে, এখন তোমার শত্রু সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক। সেই পুরনো শত্রু এবং মানুষের বেশধারী মানবশত্রু। তুমি মহাসত্যের অনুসারী হতে চাও বলে, যারা এখন তোমার জীবনের জন্য মস্তবড়ো চ্যালেঞ্জ। যে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করে নিজেকে চির সফলতা ও মুক্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হলো, এখন তোমার কাছে তোমার অবশিষ্ট বিবেক বুদ্ধির হাতজোর দাবি।

    হে আমার প্রাণপ্রিয় হৃদয়ের বন্ধু! আমার কথা ও হৃদয়ের ব্যথা যদি তুমি বুঝতে পার। তা হলে আর কালক্ষেপন না করে, বন্ধুত্বের অপরিহার্য গুণাবলীর প্রতি লক্ষ রেখে সত্যের অনুসারী কাউকে হৃদয়ের বন্ধু বলে গ্রহণ করে নাও। তোমার প্রতি যার শ্রদ্ধাবোধ থাকবে অপরিসীম। তোমার বন্ধত্বের প্রতি যার মূল্যবোধ হবে মানবতার প্রতি কল্যাণকামিতার মোড়কে মোড়ানো।

    শোনো! কোনো মূর্খ থেকে কবোও ভালোবাসা-বন্ধুত্ব লাভ করবে বলে আশা করবে না। কারণ তার অমার্জিত অপরাধ এটিই, সে কেন এখনও মূর্খ। আর শোনো! তোমার চলমান বন্ধুদের উপর বন্ধুত্বের দাবিতেই একটি শুদ্ধি অভিযান চালাবে। অতপর যারা ভালো শুধু তাদেরকেই বন্ধুত্বের শক্ত খুঁটিতে বেঁধে নিবে। কারণ এটি তো নিশ্চিত যে, তুমি নিজে নিজেই কিন্তু তোমার জীবনের উপর বয়ে চলা সকল চ্যালেঞ্জগুলোকে একাকি মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে না। যা তোমার পূর্ববর্তীরাও একাকি পারে নি। শোনো! আমি কেন যেন এখন আর তোমাকে বন্ধু বলে ধরে রাখতে পারছি না। কারণ তোমার জন্য লালন করা আমার সত্যিকার, পরম ভালোবাসা-বন্ধুত্ব কেন যেন আজ এ গতিশীল সমাজে অনেকের কাছে নিন্দিত। অনেকের কাছে আমার ভালোবাসা-বন্ধুত্ব ভন্ডামি বলে চি‎হ্নিত। কেন যেন আজ আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা-বন্ধুত্ব এ সমাজের সমাজপতিদের কাছে স্বার্থান্নেষী চাটুকার বলে ধিক্কিত।

    শোনো! এজন্য আমি চিন্তিত বটে কিন্তু দুঃখিত নই। কারণ বস্তুবাদি সমাজ ও সামাজিকতা, আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা-বন্ধুত্বের কি মূল্যই বা আমাকে দিতে পারবে? তারা আমার ভালোবাসা-বন্ধুত্বের কোনো মূল্য আমার হাতে তুলে দিবে তো দূরে থাক, তারা তো এ ভালোবাসা-বন্ধুত্বকে মাপার কোনো যন্ত্রই খুঁজে পাবে না। কারণ আমার বন্ধুর তরে আমার লালন করা ভালোবাসা-বন্ধুত্ব আমাতে জন্মই নিয়েছে এ বাণী নিয়ে যে, ‘এজন্য তোমাদের কাছে বিনিময় স্বরূপ কোনো কিছুই আমি চাই না’। (আল কোরআন)

    হে আমার প্রাণপ্রিয় হৃদয়ের বন্ধু! তোমার মূল্যবোধের জন্য আফসোস!! এ বস্তুবাদি সমাজে তোমার জন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা-বন্ধুত্ব লালনকারী কোনো সত্তাকে এখনোও তুমি অতি আবেগী বলে অবজ্ঞা করছ? জানি না, সে পথিক কীভাবে সফল হবে? যে তার নিঃস্বার্থ গাইডকে গলা ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

    জানো? বন্ধু বলে ‘তোমাকে ভালোবাসি বলে’ নিয়মিতই এখন আমি আশপাশ থেকে অনেক ওয়াজ নছিয়ত প্রতিনিয়ত ফ্রি ফ্রি শুনতে পাই। কেমন যেন বন্ধুত্বের ধ্বজাধারীরাও আজ আমাকে বন্ধুত্ব শিখাতে উদগ্রিব হয়ে আছে। অতচ সেসব সবকগুলো বহুদিন আগেই আমি পড়ে ফেলেছি। যুক্তির নিরিখে সেগুলোকে ছেঁকে নিয়েছি। শোনো! যদি পার তাহলে আমার পক্ষ হয়ে তুমি তাদেরকে বলে দিও! তারা যেন তাদের সম্মানিত গুরুজনদের কাছে আমার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। কারণ সত্যই আমার দ্বন্দ্ব মূলত তাদের সাথে নয়। বরং আমার দ্বন্দ্ব হলো সে আদর্শের বুদ্ধিজীবিদের সাথে। যা কখনই সুরাহ হওয়ার নয়। যতদিন ‘না’ তাদের থেকে বস্তুবাদি চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন ঘটে এবং তদস্থলে সে উক্তিই আদর্শিক স্থান পায়, যা মানবতার মুক্তিকামিরা বহুকাল আগ থেকেই ক্রমবর্ধমান ভাবে বলে আসছেন, ‘এজন্য বিনিময় স্বরূপ তোমাদের কাছে আমি কিছুই চাই না’।(আল কোরআন)

    হে প্রিয় বন্ধু! আমি যা চাই তা হলো তুমি জিহাদের পথে চলে এসো। তোমাকে জিাহদের পথে দেখতে হৃয়দ আমার আজও অস্থির। তুমি মানুষের গোলামির শিখল ছুড়ে ফেলে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর গোলামির ভিতর চলে এসো! জাহিলীয়্যাতের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে ঈশ্বরিক সেই আলোর পথটি শক্তভাবে একড়ে ধর! আল্লাহ তোমাকে তাওফিক দান করুন! আমিন!


  • #2
    মুহতারাম ভাই, আপনার এই লেখাটি দাওয়াতের ক্ষেত্রে আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর আপনার লেখনীতে আরো বারাক্বাহ দান করুন।

    Comment


    • #3
      মাসাআল্লাহ ভাই...আল্লাহ তা‘আলা আপনার কলমে আরো বারাকাহ নসীব করুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment

      Working...
      X