Announcement

Collapse
No announcement yet.

Inspire magazine ১৭তে আমির আল কায়েদা ইসলামী মাগরেব শায়েখ আবু মুসাআব আবদুল ওয়াদুদ (হাঃ) এর সাক্ষাৎকার

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • Inspire magazine ১৭তে আমির আল কায়েদা ইসলামী মাগরেব শায়েখ আবু মুসাআব আবদুল ওয়াদুদ (হাঃ) এর সাক্ষাৎকার

    [সাক্ষাৎকারের অনুবাদ আরও দুই বছর আগে করেছিলাম, কিন্তু দিতে পারিনাই]
    আমির আল কায়েদা ইসলামী মাগরেবের আমির শায়েখ আবু মুসাআব আবদুল ওয়াদুদ (হাঃ)

    পরম করুনাময়, অসীম দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু করতেছি। আল্লাহ শান্তি বর্ষিত করুক রাসুলাল্লাহ (সঃ) ও উনার পরিবারের উপর এবং উনার সাহাবা (রাঃ) দের উপর। শায়েখ আমির কাইদা-তুল-জিহাদ ইসলামিক মাগরেব আবু মুস’আব আবদুল ওয়ুদুদ (হাঃ) কে ইন্সপায়ার এর মেহমান হিসেবে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের সম্মানিত শায়েখ কে ইন্সপায়ার এর সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে উষ্ণ মোবারকবাদ জানাতে চাই। আমরা খুবই কৃতজ্ঞ উনার প্রতি, আমাদের অনুরোধ রক্ষা করে ইন্টারভিউ নির্বাহ করার জন্য।
    ▶ আপনার ব্যক্তি জীবন এবং আপনার জিহাদি জীবনের উপর একটা অবলোকন জানার অনুরোধ রইল।
    শায়েখঃ শুরু করছি মহান আল্লাহ তা’আলার নামে, শান্তি বর্ষিত হোক রাসুল্লাল্লাহ (সঃ) ও উনার পরিবারের উপর এবং উনার মনোনীত সাহাবা (রাঃ) এর উপর, এবং যারা উনার প্রদর্শিত পথে অনুসরণ করে কেয়ামত পর্যন্ত। সর্বপ্রথম, প্রশংসা জানাই ভাইদের যারা ইন্সপায়ারের তত্ত্বাবধানে আছেন, এবং প্রাণবন্ত শুভেচ্ছা ও রইল ইন্সপায়ারের টিমের প্রতি। আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই দাওয়াতের ময়দানে (লোকদের আল্লাহর দিকে আহবান) ও তাদের অসাধারণ প্রচেষ্টার জন্য, সচেতনতা উত্থাপন, মুসলিম ও মুজাহিদদের মধ্যে কি ধরনের কল্যাণ অভ্যাহত তাদের দ্বীন এবং দুনিয়ার ব্যাপারে, মুসলিমদের উত্সাহ প্রদান জিহাদের প্রতি। আমরা প্রশংসা জানাতে চাই ভাইদের তাদের দৃঢ় সঙ্কল্প এবং উদ্বেগ সারা বিশ্বের মুজাহিদদের অবস্থার জন্য। আল্লাহ আপনাদের কাজের উত্তম জাযা দান করুন, আপনাদের প্রচেষ্টাগুলো গ্রহন করুন, আপনাদেরও প্রদান করুন শ্রেষ্ঠ পুরস্কার যেটা নির্ধারিত জিহাদ ও মুজাহিদদের জন্য।
    আপনাদের ইন্তারভিওী হিসাবে, সে প্রভুর অনুগত গোলাম ক্ষমাপ্রাথি তারই প্রভুর কাছে, আমি আবদুল মালিক দ্রউকদেল বিন রাবেহ বিন আল-ওয়ানাস, জম্ম ২০ এপ্রিল ১৯৭০, আনুমানিক ১৩ সফর ১৩৯০ হিজরি, আলজেরিয়ার আল-বালীদা স্টেট এর রাজধানীর পশ্চিমে মিফতাহ জিলার যায়ান গ্রামে।
    শৈশব থেকেই উত্তরাধিকারসূত্রে আমি দ্বীনের প্রতি ভালবাসা এবং আনুগত্য পাই আমার পরিবার থেকে। আমি প্রতিদিনই শরীক থাকতাম নামাজে আমাদের গ্রামের মসজিদে, এবং পরে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষানবিশ অবস্থায় মিফতাহের মসজিদেও।
    আমি প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করি আমাদের গ্রামে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পূর্ণ করি মিফতাহ জেলায় ১৯৮৯ সালে। আমি গণিতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করি। এরপরে আমি আল-বালীদা বিশ্ববিদ্দ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তিতে ভর্তি হই এবং সেখানেই আমার শিক্ষা পূর্ণ করি ১৯৯৩ সালে।
    আমি কিছু মনে করবনা একটা ছোট্ট গল্প জানাতে এখানে আমার ভাইদেরকে, এবং এটা ঘটে ছিল আমি যখন ছোট ছিলাম। আমাদের গ্রামের মসজিদের মাইক একদিন সমস্যার সম্মুখীন হয়, এবং এইটা ওই সময় তখন মাইক মার্কেট গুলোতে খুব একটা পাওয়া যেতো না। ছেলেবেলা থেকেই ইলেকট্রনিক এবং ইলেকট্রনিক সামগ্রীর উপর আমার প্রবল কৌতূহল ছিল যা আল্লাহর তরফ থেকে একটা উপহার। আমি ইলেকট্রনিক কাজের উপর সিদ্ধহস্ত ছিলাম। তো, আপাতত সাধারণ জিনিস পত্র দিয়ে একটা মাইক বানিয়ে ফেলি, শুরু করতে একটা রেডিও আমপ্লিফায়ার, একটা ফ্লাস্ক এবং কিছু কপার ওয়ার দিয়ে আমি মাইকের বডির একটা ডিজাইন করে ফেলি। তারপর যোহরের আযান দিয়ে মাইক পরীক্ষা করি, এবং কেউই বুঝতে পারেনি আমি আপাতত উপস্থিত একটা মাইক তৈরি করেছি। আসলে সকলে মনে করেছিল মসজিদ কমিটি একটা নতুন মাইক ক্রয় করেছে। সমস্যা দূর হওয়াতে সকলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে, এবং সেটা সে দিনের আলোচিত বিষয় হয়ে উঠে। কোনভাবে যখন মসজিদ কত্রিপক্ষ জানতে পারে কিভাবে আসলে সমস্যা দূর হয়েছে, এতে তারা আমাকে মন্দ বলেনি সম্মানই করে, সত্যি কি তখন থেকে আমি সবার ভালবাসা এবং সম্মানের পাত্র হয়ে উঠি। এমনকি তারা আমাকে আমাদের মসজিদের ইলেকট্রনিক মেইনটেনেন্সের দায়িত্বও দিয়ে দেয়। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর প্রতি, যিনি শুরু থেকে শেষ, সততা এবং পথপ্রদর্শনের পথে পরিচালিত করেছেন। রক্ষা করেছেন বিপথগমন এবং অবক্ষয়ের পথ থেকে শৈশবকাল থেকেই।
    সশস্র সংগ্রামের শুরু
    আমার হাই স্কুলের দিন গুলোতেই, পুরো দুনিয়ার মুসলিমদের খবরগুলো দেখতে শুরু করি সাধারণভাবেই, এবং বিশেষ করে আফগান জিহাদ। এই সময়টা ফিলিস্থিনের পাথর নিক্ষেপ কারীদের ইন্তিফাদার সঙ্গে মিলিত হয়, এবং ইয়াহুদি দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের নতুন এক অভ্যুদয়। মুজাহিদদের খবর শুনে আমার হৃদয় ভালবাসায় প্রজ্বালিত হত। এটা অনুসৃত হয় একটা বিকাশলাভের এবং আন্তজাতিক সংগ্রামের নিগূঢ় বোধশক্তির এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদের আক্রমণের সময়ে। এইটা ছিল ১৯৯১ সালের প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়কার, যেটা অনুসৃত হয় ওই সব ঘটনাবলী গুলোর মধ্যে যা ইসলামিক সালভেসান ফ্রন্ট এর অভ্যুদয় হয়। মিলিটারি দলটি পরাজিত হয় (১৯৯২)চক্রান্তকারি জেনারেলদের দ্বারা পরিচালিত যারা ফ্রান্সের একান্তই অনুগত এবং সমর্থিত ছিল, কিছু শক্তি যারা ছিল ফ্রান্সি চিন্তা চেতনায় প্রবৃত্ত। তরুণ হিসেবে, আমাদের আত্মাগুলো খুবই মর্মাহত হত উম্মাহর এই অতুল দুর্দশা গ্রস্ত পরিণতিতে। অধিকাংশ সমস্যা ছিল দুঃখজনক ঘটনা যা ঘটে ছিল আলজেরিয়ান সন্তানদেরই। মরুভুমির কারাগার এবং কয়েদ শিবির গুলো আলজেরিয়ানদেরকে দিয়ে ভরে গিয়েছিল যাদের কোন ধরনের অপরাধই ছিল না, ‘আল্লাহই আমাদের একমাত্র প্রভু।’
    ১৯৯২ (১৪১২ হিজরি) সালের শুরুর দিকে জ্বিহাদী সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গ উস্কে উঠে, এবং প্রথম জ্বিহাদী দল সংগঠিত হয়। আল্লাহর আশীর্বাদ যে আমার সাথে শায়েখ সাঈদ মাখলুফি (রঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়, আলজেরিয়ার জিহাদের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতাদের একজন, এবং হারকা-তু দাওলা ইসলামিয়াহ (the Islamic State Movement) এর আমির। উনার কার্যক্রমের কেন্দ্র ছিল মিফতাহ অঞ্চলের আশেপাশেই যেটা রাজধানী আলজিএরস এর কাছেই ছিল। আমি শহরে থাকা অবস্থায় উনাদের সাথে বেশ কিছু দিন কাজ করি। ১৯৯৩ সালের শেষের দিকে আমি জিহাদের ময়দানে শরীক হই।
    আমার শিক্ষার মূল্যায়ন করা হয়, আমার পুরনো সখ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির সদ্ব্যবহার হয়, তথা আমার জানা কেমিক্যাল এবং মেকানিক্যাল তত্ত্বগুলোর জন্য। আমি বিস্পোরক তৈরির কাজ এবং বিস্পোরক জনিত কাজে নিয়োজিত হই, যেটা বৈচিত্র্যময়, দূরপ্রসারিত সুযোগ। পরে আমি কিছু দিনের জন্য আল-কুদস ডিভিসানের দায়িত্ব পালন করি। তারপর, আমি নিজে থেকেই বিস্পোরক উত্পাদন, ট্রেইনিং প্রদান এবং মিলিটারি সংঘটনের কাজে নিয়োজিত হই।
    ২০০১ সালে আমি জামা’আহ আস-সালাফিয়াহ লিয়াদ-দাওয়াহ ওয়াল কিতাল (Salafist Organization for Dawah and Combat) এর প্রধান কার্যালয়ে আমন্ত্রিত হই। আমি জোন ২ এর একজন সুপারভাইজার হিসেবে নিযুক্ত হই। ২০০৩ সালে আবু হামযা হাসসান হাত্তাব জামা’আহ থেকে পদত্যাগের পর, শায়েখ আবু ইব্রাহিম মুস্তাফা নাবীল আস-সাহরাওি(রঃ) জামা’আহর আমির হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৪ সালে শায়েখ আবু ইব্রাহিম মুস্তাফা এক জ্বিহাদী মিশনে উত্তর আলজেরিয়ায় আমাকে একটা প্রতিনিধিদলের প্রধান করে পরিদর্শনে পাঠান। যখন ২০০৪ সালের জুনে আমরা যখন জ্বিহাদী মিশনে ব্যস্ত ছিলাম, আমাদের কাছে খবর আশে শায়েখ আবু ইব্রাহিম মুস্তাফা শহীদ হয়ে যান। আল্লাহ উনার উপর শান্তি বর্ষিত করুন। এই ঘটনা উনি আমির হওয়ার এক বছর পরে হয়। সম্মানিত শায়েখ, শহীদ হওয়ার আগে আমাকে উনার যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলে, এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থী।
    ২০০৫ সালে আল-কায়েদার সাথে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনার ব্যাপারে জাম’আহ এর মজলিস ই শুরার সাথে কয়েক দফা আলোচনা করি, শুহাদার অনুসন্ধানকারীদের আমির শায়েখ আবু মুস’আব আল যারকাওি (রঃ) এর অফিসে। আল্লাহ এটা আমাদের জন্য সহজকরে দেয় এবং ২০০৬ সালের শেষ নাগাদ যুক্ততা সম্পূর্ণ হয়। আল-কায়েদার সাথে যুক্ত হওয়ার পর আমরা শায়েখ উসামা (রঃ) এর সাথে আলোচনা করি জামা’আহ (Salafist Organization for Dawah and Combat) এর নাম পরিবরতনের জন্য। সম্মানিত শায়েখ আমাদের পরামর্শ দেন তান্ধীম কা’এদাতুল-জিহাদ বি বিলাদ আল মাগরেব আল ইসলামি’ (Al-Qa’eda in the Islamic Maghreb) নামে পরিবর্তন করতে। এটা যথাযথভাবে সংঘটিত হয় বুধবার, ৫ই মুহাররাম, ১৪২৮(২০০৭)।
    আমারা শায়েখ এর কাছে আরও প্রস্তাব জানাই সংস্থার শাখার একজন নতুন আমির নিয়োগের। আমরা উনাকে অনুরোধ জানাই যাতে কোন দ্বিধা না করে; বাস্তবে আমরা জিদ করি উনি যেন সিদ্ধান্ত নেয় এবং যোগ্য কাউকে পদে নিয়োগ দান করে, এবং যেটা তিনি পাবেন সুগ্রাহি, আনুগত্য, ভালবাসার সাথে। আমরা এই জন্য অপেক্ষা করতেছি – বাস্তবে এটাও প্রত্যাশা করতেছি – সম্মানিত শায়েখ আমাদের আমির হিসাবে নিয়োগ দেন আমাদের জন্য, নেতা, ওস্তাদ শায়েখ আবুল লায়থ আল-লিব্বি(রঃ) কে।
    আজ, আপনাদের ভাই এই আকর্ষণহীন পদে অধিষ্ঠিত দায়িত্বের সাথে। আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাই আমাদের ভুলত্রুটি গুলোর, সহিহ করে দেন আমাদের ভুলগুলোর, আমাদের কাজ গুলো কবুল করে নেন এবং আশীর্বাদ করুন শুহাদা প্রদানের মাদ্যমে তারই পথে ফিতনার শিকার অথবা পথভ্রষ্ট হওয়া ছাড়াই। আমিন।
    ▶ আমরা আপনাকে অনুরোধ জানাব ইসলামিক মাগরেবের জিহাদ এবং মুজাহিদিনদের সর্বজনীন পরিস্থিতি আমাদের জানাতে।
    ইসলামিক মাগরেগের জিহাদ স্বচ্ছন্দেই চলতেছে, সকল প্রশংসা আল্লাহর প্রতি, তা সত্ত্বেও মুরতাদ সরকার এবং তাদের দোসর কুফুরি রাষ্ট্র গুলোর বিরুদ্ধে মুজাহিদীনগন ভয়াবহ যুদ্ধে রত আছে দুই দশক ধরে আল্লাহর আশীর্বাদে, কোরআনে উপযুক্ত ব্যাখ্যা বর্ণিত আছে, {যার চারা গাছগুলো অঙ্কুরিত হয় পরে সেগুলো শক্ত ও পুষ্ট হয় পরে কাণ্ডের উপর দাড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীকে আনন্দিত করে। এভাবে (আল্লাহ মু’মিনদের সমৃদ্ধির দ্বারা) কাফিরদের অন্তরজ্বালা সৃষ্টি করেন}
    হ্যাঁ আমরা এবং আমাদের শত্রুর মাঝে যুদ্ধ একটা চক্রের মধ্যে আছে, প্রতিনিয়ত। কখনও কখনও আমরাই প্রথমে হামলা চালাই, তারা আমাদের চেয়ে বেশী সুসজ্জিত, কিন্তু আমাদের কোন সন্দেহ নাই আমাদের শত্রু কতটুকু ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আল্লাহ সুবহানা তাআলা তারই কিতাবে বলেছেন, {তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও চক্রান্ত করেছিল, সমস্ত পরিকল্পনা আল্লাহর ইখতিয়ারে; প্রত্যেক ব্যক্তি যা করে তা তিনি জানেন এবং কাফিররা শিগ্রই জানবে শুভ পরিনাম কাদের }
    ▶ আমরা দেখতে পাচ্ছি ইসলামিক মাগরেবে মুজাহিদের সংখ্যা তীব্রহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দাওয়াতের কাজ ব্যাপক বিস্তার লাভ করছে। কি কি কারণগুলো অন্তর্ভুক্ত আপনার দৃষ্টিতে।
    হ্যাঁ এটা সার্বজনীন ভাবে সত্য, আলজেরিয়ান ফ্রন্ট ব্যতীত, যারা আটকে আছে একটা দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধে। আলজেরিয়ান ফ্রন্ট পর্যাপ্ত অবস্থানের অভাবে পীড়িত, এটা সে সময় অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগতদের সাহায্য এবং সহযোগিতা করার কথা অথচ তাদের পরিপূর্ণ অনুপস্থিতি। এতে এটার যথেষ্ট প্রভাব পড়ে (আলজেরিয়াতে)। অন্যান্য ফ্রন্টস দের ব্যাপারে, বিশেষ করে তিউনেসিয়া, লিবিয়া, সাহেল, সাহারা এই দল গুলোতে দেখা যায় এক অভূতপূর্ব জ্বিহাদী জাগরণ। আমরা বিশ্বাস করি এটা সবার উপর আল্লাহর তরফ থেকে এক বিশেষ রহমত তার পথে এই মঙ্গলময় জিহাদে অংশগ্রহণ কারীদের। হ্যাঁ এটা এমন এক জাগরণ, পশ্চিমাদের শঙ্কিত করে এবং যুদ্ধের গভীরের বিভ্রান্তি যেটায় তাদের জড়াতে বাদ্য করে এবং সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মুজাহিদদের সঙ্গে।
    আজ, ফ্রাঞ্চ সরাসরি লড়াই করছে এই যুদ্ধে সাহেল এবং সাহারায়, যখন আমেরিকা জড়িত আছে তাদের দিক থেকে লিবিয়া এবং তিউনেসিয়ায়। এটা একটা বাস্তবতার প্রমান যা পুতুল মক্কেল সরকার গুলো প্রমানিত করেছে যে নিজেদেরকে বিজয় অর্জন নিশ্চিত করতে অক্ষম মনিবদের দেওয়া প্রতিজ্ঞায়, যারা পশ্চিমাদের প্রতিনিধি হয়ে লড়ছে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে।
    মুল কথা হচ্ছে, সন্ত্রাসবাদ নির্মূলের উপর মিলিটারি শ্রেষ্ঠত্বের এই অহেতুক দাবী নিরর্থক দর্প ছাড়া আর কিছু নয়। আলজেরিয়ার বিপ্লবের ইতিহাসই বাস্তব সাক্ষ্য দেয় যে যখন আলজেরিয়া থেকে ফ্রান্স অপসারিত হয়, যারা মিলিটারি শক্তির চুড়ায় থাকা সত্ত্বেও বিপ্লবীদের কাছে ফ্রান্সের অপসারণ, অপদস্থ এবং শোচনীয় পরাজয় হয়। অতএব বস্তুগত শক্তি কখনও নির্ধারণ করেনা জয় পরাজয়ের।
    এটা বলতেছিলাম , আমাকে স্পষ্ট করতে দিন যে বিজয়ের সবচেয়ে সুস্পষ্ট প্রদর্শণের মধ্যে, আমাদের উদ্দেশ্য গুলোর জন্য দৃঢ়তার উপর নির্ভর করি এবং নীতিগুলোকে প্রাধান্য দেই। এটার মানে হচ্ছে আপনার উদ্দেশ্যকে বদলান অথবা নিজের সিদ্ধান্তকে নিয়ে দরপত্র না করা। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানাই তাহার সাথে মিলিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদেরকে তারই মনোনীত দ্বীনের উপর কায়েম রাখে।
    ▶ ইসলামী শক্তি গুলো ৯০ এর দশকের শুরুর দিকে আলজেরিয়ার অধিষ্ঠিত ক্ষমতার একেবারে শেষপ্রান্তে ছিল। ইসলামী চিন্তাধারাকে ব্যাপকভাবে আঁকড়ে ধরা জনগনের উপর সরকারের এটা কি সুসংবদ্ধভাবে সমন্বিত আঘাত ছিল না। আরব বসন্তের পরে একই দৃশ্য মিশরেও ছিল। তাই এই ব্যাপারে মুসলিম জনসাধারণের প্রতি কোন মেসেজ দিতে চান আপনি?
    দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর, একটা আন্তর্জাতিক সিস্টেম তৈরি হয় নির্দিষ্ট ভিত্তির উপর যা ব্যক্তি, ধর্ম অথবা জাতি নির্বিশেষে সবার জন্য অলঙ্ঘনীয় বিবেচিত হয়। যে কেউই এই আন্তঃজাতিক সিস্টেম এর এই সাধারণ ভিত্তির কোন অংশকে অনিষ্ট অথবা পরিবর্তন করতে চেয়েছে সেই নির্দয়ভাবে চূর্ণ হয়েছে। কেবল সিস্টেম এর ক্ষমতার লাগাম কন্ট্রোল করা উপদলগুলোর তিক্ততার প্রতিবাদ অথবা অনুরূপভাবে ব্যক্তি, গ্রুপ ও রাজ্যের উচ্চাকাঙ্ক্ষা না মানিয়া লওয়া অনুমোদনযোগ্য বলে গণ্য হয়না। সাম্প্রতিক ইতিহাসে কিছু উদাহরণ চিত্রায়িত হয় পরিষ্কারভাবে। CIA নিজেই জানিয়েছে যে, তারা এই পর্যন্ত ৩০০ এর ও বেশী সামরিক অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, এর মূল্য ইঙ্গিত করে যে, এই অভ্যুত্থানের অংশ হিসেবে আফ্রিকা কিছু সিংহ লাভ করে। তাই এটা যদি ইন্টারন্যাশনাল সিস্টেম এর অবস্থান হয় সামনা-সামনি ইসলামের প্রতি আনুগত্যের অস্বীকার প্রকাশ করা, তাহলে আপনি কি প্রত্যাশা করবেন ওই গ্রুপ গুলোর ব্যাপারে যাদের সাধারণ দিক নির্দেশ করে একটা ইসলামিক স্টেট এর সৃষ্টি, যদিও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ?
    আর এটাই প্রকাশিত হয় আলজেরিয়াতে, এখন মিসরে। মুসলিমগণ অবশ্যই গভীরভাবে অবলোকন করা উচিত এই দুইটা অভিক্রিয়ার উপর, উভয় অভিজ্ঞতাই শিক্ষামূলক এবং পরিপূর্ণ পাঠ। {তার জন্যে যার আছে অন্তঃকরণ অথবা যে শ্রবণ করে একাগ্র চিত্তে}.। প্রথম অভিজ্ঞতার পরে উম্মাহকে অবশ্যই বাস্তবতা বুঝা উচিত, পাছে প্রচেষ্টা এবং সময় দুইটাই নষ্ট হয়ে যায় আবার বিভ্রান্তির শিকার হয়। এই দুইটা পরীক্ষা, আরও অনেক আমরা এখানে উল্লেখ করি নাই, অনেক কার্যকরী শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। উম্মাহ অবশ্যই উপলব্ধি করা উচিত যে ইসলামিক স্টেট গঠন হবে না কাফের দের উপকরণ দিয়ে তৈরি যেমন ইলেকশান, মিছিল, হরতালের মত। বরং, একটা ইসলামিক স্টেট কেবল গঠন হতে পারে হিজরাহ, জিহাদ কোরবানির দ্বারা। ইমাম মালিক বিন আনাস (রঃ) বর্ণিত, “উম্মাহর শেষ প্রজন্মই কেবল সেই কল্যাণ অর্জন করবে যে কল্যাণ অর্জন করেছিল প্রথম প্রজন্ম”। এমন কি আরব বিপ্লব – বাস্তবে গণতন্ত্র এবং জিহাদের মধ্যে একটা মধ্যস্থ পথ – ইসলামের বিজয় এবং কোরআনের ভাষ্য মতে প্রমান করেছে অপর্যাপ্ত কার্যসম্পাদন।
    এইসব তিক্ত অভিজ্ঞতার পরে, এটা বাধ্যতামূলক উম্মাহর জন্য একই সাথে সম্পন্ন করা ‘জিহাদ এবং দাওয়াহ’ ছাড়া বিকল্প কিছু। উম্মাহকে অবশ্যই ইন্তারন্যসানাল সিস্টেমের অত্যাচারী আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য কাজ করা। উম্মাহকে নিশ্চিত করতে হবে যে এই সিস্টেমের সাথে মিলিত হওয়া অথবা শত্রুদের দ্বারা তৈরি কাঠামোর সাথে কাজ করে সিস্টেমের একটা অক্ষের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, উম্মাহ কে অবশ্যই এটা বন্ধ করতে হবে। একইভাবে, তাদের ডেমোক্রেটিক গেইমে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা, আমাদের দ্বীনের জন্য এটা একটা গুরুতর ব্যাপার, এবং এটা কোন ঠাট্রার ব্যাপার নয়। আমাদের রাসুলাল্লাহ (সঃ) আমাদেরকে সতর্ক করেছেন “একজন মুমিন কখনোই দুইবার একই গর্তে দংশিত হয়না”।
    ▶ আল-কায়েদাকে ইসলামিক মাগরেবের মুসলিমগন কিভাবে দেখে, বিশেষ করে আলজেরিয়ানরা, যদি তুলনা করা হয় তাদের সাথে ৯০ এর দশকের সেই গ্রুপ গুলোর সাথে যারা মুসলিমদের কাফের সাব্যস্ত করে এবং মুসলিমদের হত্যার অনুমোদন দিয়েছিল। কি ধরনের প্রচেষ্টা গুলোর কারনে আল-কায়েদা কে জনপ্রিয় করে তোলে যা জনগনের প্রতিক্রিয়ার মাদ্যমে একটা ব্যবদান দেখা যায় আল-কায়েদা এবং অন্য উগ্রবাদী দলগুলোর মধ্যে।
    আলজেরিয়ার মুসলিমগণ জানত যে প্রাথমিকভাবে দুইটা দল জিহাদের নামে নৃশংসতায় জড়িত ছিল: আলজেরিয়ান ইনটিলিজেন্স সার্ভিস এবং GIA (আর্মড ইসলামিক গ্রুপ)। এদের এই অধঃপতনের কারনে, সালাফিস্ট গ্রুপ কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ পরিবর্তিত হয়ে আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরেবে নাম ধারণ করে। এবং নিজেদের ওইসব জঘন্য কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখে। এই জন্য জনগণের এর ভাবমূর্তি অটুট আছে। এর পরেও সরকারী মালিকাদিন মিডিয়া গুলো ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মুজাহিদদের ভাবমূর্তি ছোট করার আর জনগণকে মুজাহিদদের কাছ থেকে দূরে রাখার। অথচ এই সংগঠন প্রতিষ্ঠিতই হয়েছে সব ধরনের বিচ্যুতি এবং বিকৃতমুতিতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। এবং দ্বীনের সত্যনিস্ট পূর্বসূরিদের আদর্শ অনুযায়ী আল্লাহর পথে জিহাদ করে যাওয়া। (আল্লাহ যেন তাদের উপর খুশি হন)
    একটা বিশেষ পর্যায়ের দিকে আপনি আরোপ করতে চাইছিলেন যে ওদের নিজেদেরই জন্য দুঃখ জনক ব্যাপার হচ্ছে, স্বৈরচারী সরকার এবং উগ্রবাদী GIA এর কৃত অপরাধ তাদের উপর জনগণের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
    সে যাই হোক, এটা একটা অভিজ্ঞতা ছিল যা থেকে মুজাহিদগন লাভবান হয়, যেহেতু এটি তাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্নতা দিয়েছিল যেগুলি দ্বারা তারা অত্যন্ত কঠিন এবং জটিল পরিস্থিতি সফলভাবে এবং গুরুতর বিপত্তি ছাড়া মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়নি। এটা গোপন নয় যে জিহাদের মঞ্চে যে ব্যাদিতে সাধারনভাবে আক্রান্ত হয় তা হল নীতিবিগর্হিত চরমপন্থা তাকফির অথবা ইরজা অযৌক্তিক কোমল অবস্থান, এতে দ্বীন ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথবা পারস্পরিক অনৈক্য তৈরি হয় যা তাদেরকে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ আমাদের ইসলামিক মাগরেবকে এই সব বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। প্রথমত এটা আল্লাহর ইচ্ছা ছিল এবং মুজাহিদগণ দৃঢ় ছিল এবং অর্জন করেছিল সচেতনতা ও পরিপক্বতা। এইজন্য সকল প্রশংসা জানাই আল্লাহর প্রতি।
    ▶ ৯০ এর দশকে আলজেরিয়াতে মুসলিমদের কাফের সাব্যস্ত ও তাদেরকে হত্যার অনুমোদনে জিহাদি সংগঠন গুলোর আদর্শগত যে অবনতি হয় এতে করে তাদের গতিপথের উপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ঠিক সেরকম এখন সেটা শাম এবং ইরাকে। উভয় ক্ষেত্রে, অনেক বড় ধরনের বিচ্যুতি ঘটেছে মুজাহিদ গ্রুপ গুলোর লিডারগণ এই পদ্ধতি গ্রহন করার ফলে। আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরেব কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের লিডারদের এই ধরনের বিপর্যয় থেকে বাচাতে।

    বিচ্যুতি যা দ্বারা জিহাদ এখানে আক্রান্ত, এবং এর ফলে সৃষ্ট বিপজ্জনক পরিণতি, প্রাথমিক কারণ ছিল আলজেরিয়ার সরকারকে পতনের কিনারা থেকে উদ্ধার। GIA এর নেতৃত্ব নেয়ার পর, অপরিণামদর্শী এই উপদল দুর্নীতি বিস্তার ঘটাতে সক্ষম ছিল পুরো দেশে। সাধারণ আলজেরিয়ানদের উপর ভয়ঙ্কর ম্যসাকার ঘটানো হয় এবং ব্যাপকহারে মুজাহিদদেরকেও বহিষ্কার। এইকারনে কিছু সময় ধরে, জিহাদের ভাবমূর্তি খুবই খারাপভাবে খর্ব হয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদেরকে এই সময় টা অতিবাহিত করতে হয়। এই জন্য সব জিহাদি গ্রুপের প্রতি আমাদের পরামর্শ আলজেরিয়ার পরিস্থিতি থেকে যেন শিক্ষা নেয়। এবং ইতিপূর্বে এগুলোর উপরই গুরুত্ব আরোপ করেছেন অনেকে। আমরা এটা জন্য বলছি যে আমরা দেখেছি আজ কিছু গ্রুপ ইরাক এবং শামে GIA এর পদাঙ্ক অনুসরন করতেছে, একটু একটু করে। যদি এরা এদের পথকে ঠিক না করে, তাদের পথ থেকে ভুল গুলো সংশোধন না করে, হঠকারী কার্যক্রম উপর আবরণ রাখে এবং উগ্রবাদীরা তাদের নেতৃত্বে থাকে তাহলে ফলাফল হবে সন্দেহাতীত ব্যর্থতা ও অনিবার্য পতন। { পূর্বে যারা অতিবাহিত হয়ে গেছে তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর বিধান। তুমি কখনো আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাবেনা। }
    আপনি হয়ত খেয়াল করেছেন যে জিহাদি মানহাজ গুলোর মধ্যে আলজেরিয়া খুব কমই আক্রান্ত হয়েছে দওলার মত ফিতনা থেকে। কোনমতে নামহীন কোন্দলে কেউ সাড়া দিয়েছে এই ফিতনায় বেশীর ভাগই নতুন সংগৃহীত যারা ছিল কম জ্ঞান সম্পন্ন এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, কিন্তু আবেগ ও আবেগপ্রবনতা অনুপস্থিত ছিল না। বাকি সব সাধারণত মুজাহিদ গন, বিশেষ করে সংগঠনের সদস্যগণ তাদের অবস্থানের উপর অটল ছিল। কারণ এই ফিতনার পরিণতি তাদের ভাল করে জানা ছিল। আর তারা কেন জানবেনা তাদের তো এই কুফলের অভিজ্ঞতা আগে থেকেই ছিল।
    ▶ আমেরিকাতে ওবামা ডেমক্রেট এর ৮ বসর প্রেসিডেন্ট থাকার পর রিপাবলিক এর ট্রাম্প তাহার স্থলাসক্ত হয়। এটা আসলে মুসলিম বিশ্ব এবং মুসলিমদের উপর কোন তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
    আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে আমেরিকাতে ডেমক্রেট এবং রিপাবলিক টানা ১৫০ বসর ধরে পর্যায়ক্রমে ক্ষমতায় আসতেছে। তা স্বত্ত্বেও এই আমেরিকার বিদেশি পলিসির কোন ভিত্তিগত পরিবর্তন দেখা যায়নি। এই দুই পার্টির মধ্যে ভিন্নতা কেবল সুপরিচিত ডোমেস্টিক ইস্যু গুলোয় সীমিত। (করারোপণ, সোসিয়াল ইস্যু, অর্থনৈতিক পলিসি ইত্যাদি)।
    যখনি ইসলাম ও মুসলিমদের ব্যাপার আসে তখনি শক্তিশালী সামরিক ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে আক্রমনাত্মক বিদেশী নীতি সমর্থন করে এবং হুমকি ছাড়া আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব সমাধান করার নীতি থাকে না আমেরিকান রাজনীতিবিদের। ইসলামের শত্রুতার বেলায় এরা সবাই একই। ভিন্নতা হচ্ছে কেউ সরাসরি শত্রুতা করে কেউ পেছনে থেকে প্রতারণা করে। অতএব ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক দুইই সাপের বিষাক্ত বিষ বহন করে, তবে প্রথমে সৌন্দর্যতা প্রদর্শন করে, পরবর্তীতে এদের আসল রুপ প্রকাশ পায়।
    অনেক মুসলিম ছেয়েছিল ট্রাম্প নির্বাচনে পরাজিত হোক, আশা করেছিল যে হিলারি ক্লিনটন অপেক্ষাকৃত সদয় ও কম শত্রুভাবাপন্ন তাদের কাছে। এটা কেবলই একটা মিথ্যা আশা ছিল। তারা কি ভুলে গিয়েছিল ডেমোক্রেটের বিল ক্লিনটন কি করেছিল মুসলমানদের সাথে? তারা কি ভুলে গিয়েছিল এক মিলিয়নের বেশী ইরাকি শিশু নিহত হয়েছিল ডেমোক্রেটের আরোপিত নিষেধাজ্ঞায়? তারা কি ভুলে গিয়েছিল হাজারো ইরাকী শিকার হয়েছিল আমেরিকার 'smart’ বোম্ব এবং ড্রোন হামলায় ওবামার দখলের সময়? কুফর একটা একক জাতি, ট্রাম্পের এই ভোঁতা বিবৃতি এবং তার শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ ইসলাম এবং মুসলমানদের দিকে হয়ত ইসলাম এবং মুসলিমদের কল্যাণই বয়ে নিয়ে আসবে, আল্লাহ ভাল জানেন। তার হঠকারী পক্ষপাতশূন্যতা কাফেরদের প্রকৃত রুপ ইসলামিক উম্মাহ কে তাদের ঐতিহ্যবহ শক্তির ইতিহাস মনে করিয়ে দিতে পারে। এদের ব্যাপারে আমাদের রব আমাদের অবগত করেছেন কোরআন মজিদে এই শব্দ গুলো দ্বারা {তারা ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকবে যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরে না যাও,}
    এতে বিশ্বাসঘাতক পুতুল সরকারগুলোর মুখোশও উম্মচিত হয়েছে উম্মাহর সামনে। অধিকন্তু, এটা একটা ওয়েক আপ কল লক্ষ লক্ষ মুসলিম এবং আরবদের জন্য যারা বসবাস করতেছে আমেরিকা এবং ইউরোপে। এটা তাদের মনে করিয়ে দিছে তাদের ধর্ম এবং তাদের পরিচিতি, যারা ‘সম্পৃক্ত’ হয়ে গিয়েছিল ওদেরই সাথে এবং ভুলে গিয়েছে নিজেদের শিকড়। এটা একটা আন্তঃধর্মীয় সংলাপের বক্তাদের এবং সিভিলাইজেসানের মধ্যে সেতুবন্ধন কারীদের মুখে একটা বেদনাদায়ক থাপ্পড়।
    ▶ অভিমত নির্বাচনে এবং সাধারণ জনসাধারণের পক্ষ থেকে একটি বিজয়ের পূর্বাভাস হিলারি ক্লিনটনের জন্য। এই প্রত্যাশা বিভিন্ন কারণের উপর ভিত্তি করে ছিল, এর মধ্যে একটা হচ্ছে ট্রাম্পের বিবৃতিতে বর্ণবাদের উচ্চারণ ইসলামের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে নির্বাচন প্রচারণার সময়। এবং এটা, তারা মনেকরেছিল, বাহ্যিকভাবে সমর্থন আমেরিকার উপকারিতার সঙ্গে দন্ধ ছিল। অতএব আমরা কি বুঝতে পারি আমেরিকার নির্বাচনের ফলাফল থেকে?
    প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়কে ব্যাপকভাবে নিরীক্ষণ করা দরকার। সাধারণ রাজনৈতিক দৃশ্য পশ্চিমা দেশ গুলোতে (বিশেষ করে আমেরিকা এবং ইউরোপ) দেখা গিয়েছিল যে জনসাধারণের মাঝে জাতীয়বাদের পুনউদ্ধারেরে ব্যাপক প্রবণতা চরমভাবে প্রকাশ পায়। এই চরমপন্থীতার বর্তমান অবশেষে অরাজকতা বাড়ে।
    ডোনাল্ড ট্রাম্প, দেখিয়েছে প্রতিকূল বর্ণবাদী প্রকৃতি, সঠিকভাবে জনপ্রিয় দৃশ্য পড়ুন। তার নির্বাচন প্রচারণা ছিল আমেরিকান(লাল চামড়া) ভোঁটারদের প্রাকৃতিক বর্ণবাদী প্রবণতাগুলির উপর ভিত্তি করে। তাই করছেন, ট্রাম্প প্রচারণায় আমারিকার জনগণের পরম রাজনৈতিক অজ্ঞতাকে কাজে লাগান, যেখানে কখনো কখনো একটি মাত্র আবেগপূর্ণ বক্তৃতায় অনেকের দৃষি্টভঙ্গি পরিবর্তন করতে যথেষ্ট। এই জন্য আমরা দেখেছি যে তার দেওয়া ভিবিন্ন বিবৃতিতে তার অকপটতা প্রায়ই ধৃষ্টতার সীমা অতিক্রম করেছে। সে বুঝতে পেরেছিল ডেমোক্রেট এর অস্পষ্ট পলিসির কারনে সাধারণ আমেরিকান ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তাই সে জানত কিভাবে তাদের অনুভূতি নিয়ে খেলা যায় এবং তাদের আবেগ পুনর্লাভ করা যায়। সে সফল তাদের বৃদ্ধমান সমস্যা গুলোর কারনে, প্রধানতম আমেরিকান জনগণের নিরাপত্তা হ্রাস আমেরিকায় এবং আমেরিকার বাহিরে। সে দুইভাবে সফল হয়েছে : প্রথম জনগণের মধ্যে ইসলামের ভয় সঞ্চার করানো, দ্বিতীয় সে তাদের সন্তুষ্ট করতে পেরেছে যে, সেই একমাত্র আশা এই বিপদের বিরুদ্ধে।
    যদি আমরা আরও ভালভাবে অবলোকন করি, বেশির ভাগ পশ্চিমা জনগণের মধ্যে বর্ণবাদ এবং জাতিয়বাদের একটি বড়সড় ধরনের পরিবর্তন বেশ কয়েক বসর ধরে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। এই দলগুলোর দ্রুত বৃদ্ধি দৃশ্যমান হয় যারা নিজেদের ‘ডানপন্থী’ হিসেবে দাবী করে। আমরা দেখতে পাই পশ্চিমা বিভিন্ন সরকারের সিদ্ধান্ত এবং কর্মের মধ্যে প্রতীয়মান হয় এই বর্ণবাদ চিন্তাধারার একটি মূর্ত বাস্তবিকতা। প্রকৃত পক্ষে, তথাকথিত বাম্পন্থি দলের সরকার গুলোও জারি করেছে এই ধরনের পক্ষপাতমূলক নীতি।
    আমেরিকার এমন এক দেশ, এটা মান থেকে অনেক দূরে, যে কেউই তার পাবলিক বক্তৃতায় এর মান ফিরিয়ে আনতে চায়। এটা এ কারনে যে আমেরিকা ঐতিহাসিক ভাবেই লুঠতরাজ এবং হত্যাকাণ্ড দিয়ে সম্মৃদ্ধ, এর ইতিহাস অপরাধের দাগে ভরপুর, যাদের দ্বারা মুসলিম এবং অমুসলিম সবাই আক্রান্ত। এবং এই ধরনের বৈশিষ্ট্য আমেরিকাতেই সীমাবদ্ধ নয়, প্রত্যেকটা আমেরিকানদের মাঝেও দেখা যায়। এই জন্য, দেখতে পাই অপরাধের মাত্রা অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকাতে সবচেয়ে বেশী দেখা যায়, আর এটা কোন আশ্চর্যের ব্যাপার নয় যে বেশীর ভাগ অপরাধের কারণ হচ্ছে এই বর্ণবাদ। আর এমন কিছুই ওবামা অকপটে জানান দিয়েছে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে।
    ট্রাম্পের জয় এবং অবশ্যম্ভাবী ফলাফলের কারণে পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে তাঁর পছন্দসই ক্ষমতায় আসার অর্থ হলো পশ্চিমের সহ-অস্তিত্বের জায়গাটি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। এবং এতে করে শুদু মুসলিম নয়, 'white race’ (নিজেদের এই নামে মনে করতে ভালবাসে) ‘সাদা জাতি’ ছাড়া সবাই ফললাভ হবে। ইনশাল্লাহ এই প্রবণতা প্রমানিত হবে কেবল মুসলিমদের স্বার্থ, এর থেকে উম্মাহর বিবেক উম্মোচিত হবে এবং জ্ঞাত করবে বর্বর পশ্চিমা ক্রুসেডারদের বাস্তবতা। এক কথায়, উম্মাহ আবার জেগে উঠবে এবং দুশমনের মুখোমুখি হবে, এবং বীরত্বের উপমাগুলো এবং নিঃস্বার্থ কোরবানি উম্মাহর মাঝে পুনর্জাগরিত হবে। এতে করে আল্লাহর ইচ্ছায় উম্মাহকে আবার কর্তৃত্ব এবং নেতৃত্বের জায়গায় নিয়ে আসবে। আগত এই মোকাবিলা থেকে পালানোর কোন রাস্তা নাই, হয় উম্মাহ নিজেই এই যুদ্ধের দিকে ধাবিত হবে আর না হয় বাদ্য হবে এই যুদ্ধের মুখোমুখি হতে, এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই আল্লাহর হাতে। এখানে, এটা জনসাধারণকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য উপযুক্ত হবে যা ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত করে - তার দ্বারা প্রদর্শিত সমস্ত ঘৃণা এবং পক্ষপাত সত্ত্বেও, এবং ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হুমকি – শায়েখ আইমান আল জাওয়াহিরি (হাফিজুল্লাহ) কি বললেন, উনার বার্তায় আমেরিকাকে: “ক্রুসেডের জোট জাতিরা তোমাদেরকে সতর্ক ও সাবধান করেছি বারবার, কিন্তু এটা মনে হচ্ছে যে তোমরা চাইতেছ আমরা তোমাদের কঠিন মৃত্যুর স্বাদ আসাধন করাই যা তোমরা আমাদের উপর করেছ এবং এই আগ্রাসনের মূল্য তোমাদের অবশ্যই দিতে হবে। ধৈর্য্য ধরুন এবং দৃঢ় থাকুন, এটা তো কেবল যুদ্ধের প্রথম ধাক্কা।”
    ▶ ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের একজন ইন্টারভিউতে বলেছিল, “আমাদের একটা বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে যা কেউ স্বীকার করতে চায় না, কারণ রাজনৈতিকভাবে অসঙ্গত। সমস্যাটা হচ্ছে ইসলাম। আমি মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কে বলছিনা, এটা হচ্ছে স্বয়ং ইসলাম।” ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে এই ধরনের অন্য আরও বিবৃতি ছিল। এই ধরনের বিবৃতিগুলো থেকে আমরা কি মনে করব যে আমেরিকা তাদের পলিসিতে এক নতুন ধরনের ধারা চালু করেছে, অর্থাৎ সরাসরি ইসলামের উপর আগাত। এই ধরনের বিবৃতগুলোর প্রভাব কি?
    পশ্চিমা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বেশির ভাগই এই ধরনের বিবৃতি কারকদের মতো মত পোষণ করে, কিন্তু তারা এটাকে কূটনৈতিক অন্তরালে লুকিয়ে রাখে। যখন তাদের এই কূটনীতি উম্মোচিত হয়ে যায়, আমরা দেখতে পাই পশ্চিমা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এই সম্মুখস্থ মৌখিক আক্রমণ। আমরা সবাই শুনেছি, ক্রিমিনাল জুনিয়র বুশ প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে, “এটা হচ্ছে ক্রুসেড”। রোমানো ব্রাউডি ও রাস্মুসেন এর মত অনেক পশ্চিমা লিডার এবং পোপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাংবাদিক যারা একই ধমনীর, ইসলামের উপর মৌখিক আক্রমণ করেছে। তাদের শত্রুতা বিবৃতি এবং ঘোষণায় যতটুকু প্রকাশ পায়, কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি তাদের অন্তরে তার চেয়েও বেশী।
    যতদূর তাদের কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা আছে, সমস্যাটা একেবারে স্পষ্ট। তাদের ইচ্ছাকৃত পদ্ধতিগত প্রচারণা আমাদের রাসুলাল্লাহ (সঃ) এর ব্যক্তিত্ব এবং আমাদের বিশ্বাসের উপর আঘাতের অনুপ্রেরণাই এর প্রমাণ করে।
    এই সত্ত্বেও, তাদের এই লুকায়িত ঘৃণা, এটা আমেরিকান পলিটিসিয়ানদের যথাযথ কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দেবে তাদের পূর্বের ইতিহাস থেকে, যদি তাদের স্মৃতি তাদের ধোঁকা না দেয়। কোনো ব্যাপার না ট্রাম্প কতটুকু শত্রুতা করতে পারে ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে এবং কোনো ব্যাপার না কতটুকু বর্ণবাদ তারা হতে পারে, তারা পূর্বে (এক দশক আগে) এর ছেয়েও বেশী শক্তিশালী শত্রুতার অবস্থান এবং বর্ণবাদ ছিল জুনিয়র বুশ দ্বারা। কিন্তু কি হয়েছিল পরিণতি?
    শেষ পর্যন্ত তার নিজেরই জনগণ এবং বিশ্বের বেশিরভাগ পলিটিসিয়ান গণ্য করেছেন এটা ছিল আমেরিকা এবং আমেরিকানদের জন্য অভিশাপ স্বরূপ, কারো কারো যথাযথ অভিমত ছিল সে আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট ছিল। অতএব যদি ট্রাম্প তার শত্রুভাবাপন্ন পলিসি ইসলামের বিরুদ্ধে এবং মুসলিমদের উপর হামলার মাত্রা অতিক্রম করে তাহলে ট্রাম্পের ভাগ্য এর থেকে ভাল কিছু হবে না, যদি খারাপ না হয়। {অত্যাচারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের গন্তব্যস্থল কোথায় !}
    ▶ আমেরিকা দীর্ঘ এক বৈশ্বিক যুদ্ধে ফেঁসে গেছে সব সময়ের জন্য, কয়েকশ জওয়ান মুজাহিদদের কাছে। তাদের দেয়া বিবৃতির লক্ষ্যবস্তুতে পৌছা অক্ষম, বিশেষ করে জিহাদ এবং মুজাহিদদের পরাজিত করা, তা সত্ত্বেও তাদের সমর্থন এসেছে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে। আপনার দৃষ্টিতে এই পরাজয়ের কারণ কি? এবং যদি এই যুদ্ধ আরও আগে বাড়ে তাহলে কি পরিণতি হবে?
    এটা আল্লাহ তাআলার দয়া ও অনুগ্রহ মুসলিমদের উপর যে আল্লাহ তাদেরকে সহজভাবে আল্লাহর দ্বীনের ক্ষমতা প্রদান করবেন। বিশেষ করে দাওয়াহ ও জিহাদের মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ তাদের (আমেরিকা) পছন্দকে এততুকু নিখুঁত করেছেন যে তারা বিপদ সীমার বাহিরে যেতে বাদ্য হয় এবং তাদের প্রচেষ্টার উপর মনোযোগ নিবদ্ধ থাকে। আমেরিকা যুদ্ধের জন্য যে ঘোষণা দিচ্ছে তাদের এজেন্টস এবং প্রতিনিধির শয়তানি অ্যালায়েন্স এর সাথে, এই ভাগ্য নির্ধারিত, এবং মুজাহিদগন নিশ্চিত করেছেন তাদের পলিসি বিভিন্ন ভাবে।
    এই পলিসি আরো পরিষ্কার ভাবে উচ্চারিত হয়েছে শায়েখ আয়মান (হাঃ) এর বিবৃতিতে, “শান্তি একটা কমন লভ্যাংশ। যদি আমরা নিরাপধে থাকি তোমরাও নিরাপধে থাকবে। যদি আমরা শান্তি দেখি তোমরাও শান্তি দেখবে। যদি আমরা আঘাত প্রাপ্ত হই ও মৃত্যু বরন করি নিশ্চিত তোমরাও আঘাত প্রাপ্ত হবে এবং মৃত্যুবরণ করবে। এটাই হচ্ছে সঠিক সমীকরণ। অতএব বুঝতে চেষ্টা কর, যদি তোমরা প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধিমান হয়ে থাক। ”
    মুজাজিদগন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শায়েখ উসামা বিন লাদেন (রঃ) এর অঙ্গীকার পুরা করতে “আমেরিকা ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তিতে ঘুমাতে পারবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের মুসলিমগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, এবং যতক্ষণ না কাফের সৈন্যরা রাসুলাল্লাহ (সাঃ) এর ভুমি ত্যাগ না করে।” এই ধরনের প্রতিজ্ঞা ওয়ালাকে না কেউ হারাতে পারবে না দমন করতে পারবে।
    উল্লেখ করার প্রয়োজন নাই যে ইসলামিক উম্মাহ একটি উর্বর এবং উদার উম্মাহ। উম্মাহর কোন প্রজন্মই আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত নয়, যেহেতু এটা অঙ্কিত অনুপ্রেরণাময় একটা অনুকরণ যোগ্য প্রসিদ্ধ অতীত এবং নি:স্বার্থ আত্মত্যাগের উদাহরণে ভরপুর, {আল্লাহ্*ই হচ্ছেন মু’মিনদের অভিভাবক।}
    এটা কেবল আমেরিকার বিরুদ্ধে, যে জাতির না আছে কোন ঐতিহ্য মণ্ডিত ইতিহাস। যাদের আছে স্বল্প অভিজ্ঞতা ইসলাম সম্পর্কে, ইসলামের সাথে সংঘর্ষটা তাদের বেশী দিনের না, যেখানে ইউরোপের ব্রিটিশ এবং ফ্রান্সদের এই অবিজ্ঞতা প্রাচীন কাল থেকেই।
    অতএব আমরা যদি ইসলাম এবং মুসলিমদের মহান ঐতিহ্যের ব্যাপারে আমেরিকার মূর্খতা যোগ করি – এদের সামরিক এবং অর্থনৈতিক প্রতাপ একই রুপ পরিগণিত হয় যে ফেরাউন বলেছিল, {আমাদের চেয়ে কে বেশী শক্তিশালী}। এবং এটা এখন আমরা বুঝতে শিখেছি আমেরিকা কিভাবে একই ধরনের যুদ্ধে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে জড়িয়ে গেছে।
    যাইহোক, এটা প্রতীয়মান হয়েছে আমেরিকা মুজাহিদদের যুদ্ধ দক্ষতা সম্পর্কে পরিচিতি লাভ করেছে, প্রমাণিত হয়েছে মুজাহিদদের শক্তি, ধৈর্য এবং সহনশীলতা। ফলস্বরূপ, তাদের আগের চেয়ে অহংকার ম্লান হয়ে এসেছে, এরপর বাস্তবতার একটা মাত্রা প্রতিস্থাপন হবে। আমেরিকা মুজাহিদদের হাতে দেখেছে অন্ধকার এবং বেদনাদায়ক দিন গুলো আফগানিস্তানে আর ইরাকে, যা ছিল তাদের মূর্খতার ফল। আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের প্রার্থনা আমেরিকার প্রতি {ফলে আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা ভোগ করালেন এবং আখেরাতের শাস্তিতো কঠিনতর, যদি তারা জানত।} অতএব এই প্রেসিডেন্ট তার কাণ্ডজ্ঞানের সঠিক পরিচালনা করবে, এবং মুসলিমদের স্বাধীনভাবে ও সম্মানের সাথে বাঁচতে দেবে তাদের ভুমিতে, আর না হয় সে পতিত হবে সেই ফাঁদে যেই পরিণতি ঘটেছিল সিনিয়র বুশ এবং পরবর্তীতে তার পুত্রের।
    ▶ আল-কায়েদা কেন পশ্চিমা শত্রুদের টার্গেট করে তাদের বার্তায় এবং অপারেশনে। কেউ কেউ বলে আপনাদের এখানে সেখানে বিচ্ছিন্ন অপারেশনগুলো আদৌ কোন প্রতিক্রিয়া ফেলবে না, এবং এটা শুরু করা ভাল হয় জালিম সরকার গুলোকে উৎখাত করা নিজেদের এলাকাগুলো থেকে। এটা, তাদের দৃষ্টিতে, জনপ্রিয় বিপ্লবের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া হবে (আরব বিশ্বে), এবং এর ফলে আমরা ইসলামিক আকৃতির একটা সরকার গঠন করতে সক্ষম হব। তাদের এই চিন্তাধারার উপর আপনার অভিমত কি?
    জিহাদি নেতৃত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে, উনাদের অভিমত হচ্ছে ইস্তিহাদের উপর ভিত্তি করে, যেটা তারা অর্জন করেছে একটা গভীর ও পুঙ্খানুপুঙ্খ জিহাদি আন্দোলনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে পার করার পর। তাদের চিন্তা ধারা হচ্ছে উম্মাহকে একীভূত করনের উপর ভিত্তি করে একটি প্রকল্প তৈরি করা যাতে করে উম্মাহ তার হারানো সম্মান ফিরে পায় রবের দেয়া শরয়িহ পদ্ধতির ছায়াতলে, আর বহিরা শক্তির কর্তৃত্ব এবং হস্তক্ষেপ থেকে দূরে রাখা, এবং এটা অবশ্যই একই সাথে উম্মাহর ভুমি গুলোকে সব ধরনের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করা ও সব ধরনের বহিরাগত লুঠতরাজের হাত থেকে উম্মাহর সম্পদকে বাচান। জিহাদের নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছে যে উম্মাহকে এই মতে ঐক্যবদ্ধ করানো যে তাদের বিরুদ্ধে বহিরা শক্তির শত্রুতা ও আক্রমণ স্পষ্ট। এটা জিহাদি নেতৃত্বের সবার দৃষ্টিকোণ থেকে।
    বাস্তব এবং কৌশলগত যুক্তি হিসাবে, যারা পশ্চিমা শত্রুদের টার্গেট করতেছে, বিশেষ করে আমেরিকা, বিশ্বাস করুন তারা তারা এক বিষাক্ত সাপের সাথে যুদ্ধ করতেছে, যার মাথা হচ্ছে আমেরিকা আর লেজ হচ্ছে তাদের প্রতিনিধিত্বকারী মুরতাদ পুতুল সরকারগুলো। সুতারাং যে কেহই একটা সাপকে মেরে ফেলতে চায় তাহলে অবশ্যই সাপের মাথায় আঘাত করতে হবে লেজে নয়। অতএব উনাদের দৃষ্টিতে আমেরিকার পতনের সাথে সাথে একটা পরিমণ্ডলে সরকার গুলোরও পতন ঘটবে। এবং এর সাথে উম্মাহ কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও প্রচেষ্টা এবং সময় ব্যয়সংক্ষেপ হবে।
    আমেরিকার সাথে মুখোমুখি আমাদের বর্তমান এই অবস্থা হচ্ছে মুসলিমগণ যখন কোরাইশদের মুখোমুখি ছিল তা একই। কোরাইশ ছিল প্রাক ইসলামী যুগে আরব গোত্র গুলোর মধ্যে অগ্রবাহিনী। যখন কোরাইশদের পতন ঘটে তখন এমনিতেই বাকি গোত্র গুলো নিঃশেষ হয়ে যায় এবং ইসলাম খুব দ্রুত আরব উপদ্বীপে স্বল্প সময়ের মধ্যে চড়িয়ে পরে।
    অন্য দিকে,, যারা তাদের প্রচেষ্টা গুলো মুরতাদ সরকারদের উপর বেশী জোর দেয়, বলে থাকেন সরকার গুলো বিদেশী শত্রুদের ছেয়েও আরও বেশী তীব্র হয়ে উঠে তাদের অবিশ্বাস এবং ভণ্ডামির উপর, এবং তারা আমাদের খুব কাছের ও আরও বেশী ক্ষতিকর আমাদের জন্য। আল্লাহ সুবহানা তাআলা বলেন, {হে ঈমানদারগণ, লড়াই কর ঐ কাফেরদের সাথে যারা তোমার নিকটের, তোমার মধ্যে তাদেরকে কঠোরতা খুঁজে পেতে দাও, এবং জেনে রাখ আল্লাহ ইমানদারদের সাথে।}
    তাই তাদের মতে এই স্বৈরসরকারদের নির্গমন ফলে আমেরিকাকে দুর্বল করে দিবে এবং তার মিত্রদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিবে। এই গ্রুপ বিবেচনা করে এতে করে বহিরা শক্তির হাত কেটে যাবে এই দিক থেকে, স্থানীয়দের সাহায্য ছাড়া তারা তাদের অপশক্তির হাত বাড়াতে পারবেনা। তাই অপরিহার্য স্থানীয় অপশক্তির হাত কেটে দেওয়া।
    সত্যের উপলব্ধিটা আমরা জিহাদের ময়দানের ইস্তেহাদকারি গনের হাতে ছেড়ে দেই, এবং তাদের জন্য অপশনগুলো সংকুচিত করি না। প্রত্যেক গ্রুপের সামর্থ্য অনুযায়ী সম্পদ এবং সুযোগ থাকে না আমেরিকার স্বার্থে আঘাত হানার। তাই কেউ যদি ইচ্ছা করে প্রথমে স্থানীয় শত্রুকে নিষ্ক্রিয় করার সুতারাং তারা পরে বাহিরের শত্রুর সাথে করবে। তাদেরকে তাদের উপায় গ্রহন করতে দিন।
    এটা বলতেছিলাম যে, আমাদের মনে রাখতে দিন যে বহিরাগত শত্রু এবং স্থানীয় শত্রুর মাঝে এখন পৃথকীকরণ পদ্ধতি একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিছু আরব এবং ইসলামিক রাষ্ট্রে কাছের শত্রু হচ্ছে আমেরিকা কারণ এদের ভূ-অভ্যন্তরে ভারী ও স্থায়ী অবস্থান এবং আকাশ সীমায় উপস্থিতি, এবং বিদেশী শত্রুদের সাথে একটা সরাসরি ও বারংবার সংঘর্ষ স্থানীয়দের মতই তুলনা হয়। আর শায়েখ আবু হুরাইরাহ আল সান’আই (হাঃ) ও এই ইস্যুটাই আল-মালাহেম(আল্লাহ আল মালাহেমের এই তত্ত্বাবধানের উত্তম জাযা দান করুন) এর একটা সংখ্যায় তুলে ধরেছেন।
    আমাদের শায়েখ আমির ডঃ আইমান আল জাওয়াহিরি (হাঃ), পূর্বেই স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন, “যুদ্ধ এবং এর সমস্যাগুলো যদি আমরা বুঝতে পারি, এটা আমাদের সহজেই উপলব্ধি হয়েছে মিথ্যার অবস্থান হচ্ছে যে স্থানীয় শত্রুদের বাদ দিয়ে বিদেশী শত্রুদের সাথে আমাদের মুখোমুখি হওয়া। এই ভ্রান্ত দাবী দুই ভাবে উপেক্ষা করে, প্রথমত, যখন এর উপর পর্যবেক্ষণ করা হয় বাস্তবতা হচ্ছে যে বিদেশী শত্রু স্থানীয় শত্রুদের সমন্বয় ছাড়া কাজ করেনা, এর জন্য প্রত্যেক রাজধানিতে একজন কারজাই আছে এবং প্রত্যেক গভর্নমেন্টে একজন মালিকি আছে। এবং দ্বিতীয়ত হচ্ছে যদি এই বাস্তবতার দিকে অন্ধভাবে না দেখে, যারা বিদেশী শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাদেরকে দেশি শত্রুদের উপর দিয়েই লড়াই করতে হচ্ছে। তাহলে কারা ক্রুসেডের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইরাক, আফগানিস্তান, চেচনিয়া, আলজেরিয়া, ও সোমালিয়ায় ......।”
    ▶ আমরা দেখতেছি মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বোম্বিং এর মাধ্যমে আমেরিকা একটি চলমান সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, আফগানিস্থান থেকে ইসলামিক মাগরেব, ইরাক, সিরিয়া, আরাবিয়ান পেনিনসুলা এবং সোমালিয়া। একেবারে সুস্পষ্ট হচ্ছে আফগানিস্থান এর উপর যে মেসাকার তাদের বাচবিচারহীন এরিয়েল বোম্বিং এর ফলে হাজার হাজার নারি, শিশু এবং বৃদ্ধের মৃত্যু। আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন এই বর্বরতার ও পশুত্ব যেটা আমেরিকার লক্ষ্য হচ্ছে এই বোম্বিং করার মাধ্যমে অর্জন করা?
    এটাই হচ্ছে কাফেরদের সত্যতা {তারা কোন মু’মিনের ব্যাপারে আত্মীয়তার মর্যাদাও রক্ষা করেনা এবং অঙ্গীকারেরও না; আর তারাই হল সীমালংগনকারী।} এবং তাদের পূর্বসূরিরা (ইয়াহুদি) যা বলে, { কিতাবীদের মধ্যে এরূপ আছে যে, যদি তুমি তার নিকট পুঞ্জীভূত ধনরাশিও গচ্ছিত রেখে দাও, তবুও সে তা তোমার নিকট ফেরত দেবে এবং তাদের মধ্যে এরূপও আছে যে, যদি তুমি তার নিকট একটি দিনারও গচ্ছিত রাখ, তবে সে তাও তোমাকে ফেরত দেবে না; যে পর্যন্ত তুমি তার শিরোপরি দণ্ডায়মান থাক, কারণ তারা বলে যেঃ আমাদের উপর ঐ অশিক্ষিতদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই এবং তারা আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, অথচ তারাও জানে।} কেউ যদি এই আয়াত গুলো অনুধাবন করে তাহলে বুঝতে পারবে যাতে উম্মাহর শত্রুদের অন্তর সম্পর্কেই বর্ণিত হয়, তাদের হীন চিন্তাভাবনা কিভাবে আমাদের উপর পোষণ করে। সে পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পারবে তাদের লিডাররা বিবৃতির মাধ্যমে যখন আমাদের আক্রান্তদেরকে নিয়ে উপহাস করে। উদাহরণস্বরূপ, যখন Madeleine Albright কে জিজ্ঞাশ করা হয়েছিল তাদের আগ্রাসনের অনুমোদনের ফলে ইরাকে ভয়াবহ ভাবে হাজার হাজার নারি ও শিশুর মৃত্যুবরণ হয়েছে, সে বলল “এটাই তাদের জন্য উচিত মূল্য পরিশোধ ছিল”। এটা ছিল নিরপরাধ জীবন গুলোর প্রতি সরাসরি উপহাস, এই ভয়ঙ্কর আচরন চালিয়েছিল সেই নিরপরাধ শিশু গুলোর জীবনের উপর যারা কোন অপরাধেরই জন্য প্রস্তুত না।
    সুতরাং আমেরিকার বিভিন্ন মুসলিম দেশের নিরপরাধ লোকদের উপর নজিরবিহিন অনবরত ড্রোন হামলা পশুচারিত আচরন বহন করে। আমেরিকার এই রূপকেই প্রতীয়মান করে মুসলিমদের উপর তাদের উপহাস।
    কোন ব্যাপার না আমেরিকা যতই দাবী করে বোঝানোর চেষ্টা করুক এই টার্গেট সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, আমরা দেখতে পাই এই আগ্রাসনের ফলে কারো চিন্তারও অধিক নিরপরাধরাই মৃত্যুবরণ করছে। এই ব্যাখ্যা আমেরিকার শত্রুতা মুসলিম এবং ইসলামের বিরুদ্ধে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, এই ব্যাপারে আমরা আগের প্রশ্নটাতে আলোচনা করেছি। অত্যন্ত আপত্তিজনক যে, কখনও ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না কিছু সংখ্যক “টেররিস্ট” হত্যার অজুহাতে খুব বড় সংখ্যক নিরপরাধ বেশীর ভাগই নারী ও শিশুদের হত্যা করা। এটা আমেরিকাকে কলঙ্কিত করবে, অনুগামিত হবে পতনের এবং প্রদর্শিত হবে মিথ্যা 'civilization’ এর। আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা আমেরিকা যে ড্রোন প্রোগ্রামের অবলম্বন করেছে এতে করে কোন আমেরিকানের জিবনবসান গঠবেনা। ক্রমানুযায়ী আমেরিকান এডমিনিস্ট্রেসান ঠিকই বুঝতে পেরেছে তাদের ভিরু সৈনিকেরা যুদ্ধে সাহসিকতা প্রমাণ করতে একেবারে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের সৈন্যদের এই অবস্থা কোরআনে বর্ণিত ইহুদিদের সাথে মিলে যায়, { তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেনা, সুরক্ষিত দুর্গ অথবা প্রাচীরবেষ্টিত জায়গা ছাড়া }। আমেরিকা মুজাহিদিনদের বিরুদ্ধে গভীর সমুদ্রের রণতরী থেকে পাইলট বিহীন ড্রোন ছাড়া যুদ্ধ করতে পারেনা।
    এছাড়াও, এভাবে, তারা চায় মুসলিমদের ভয় দেখাইয়া বাধ্য করা এবং তাদের জ্ঞাপন করা একটা সহজ বার্তা: নিজের ভাগ্যকে শৃঙ্খল থেকে অবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা অথবা ওয়াশিংটনের নির্দেশ অনুযায়ী কথা বলা, এবং কেউ যদি নিজেকে নির্দোষ মনে করে তাহলে অবশ্যই নিজেকে 'terrorists’ সম্পর্ক থেকে দূরে রাখা।
    ▶ আমেরিকা এবং ফ্রান্সের ব্যাপারে আসছি, আমেরিকা ফ্রাঞ্চের ব্যাপারে কি গুরুত্ব রাখে, এবং তাদের বিপরীতমুখী কি অবস্থান রাখে। বিশেষ করে ইসলামিক মাগরেবের ব্যাপারে এদের দুইয়ের মধ্যে সহযোগিতার রুপ কেমন?

    প্রথমত, আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জার্মান নাযির দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে ফ্রান্স আমেরিকার কাছে ঋণী। এবং এই দিনে, ফ্রাঞ্চের আমেরিকার প্রোটেকশান দরকার; যদিও এখন জার্মান নাযির ভয়ে নয়, ভূমধ্যসাগরের বিপরীতের ক্রমবর্ধমান জিহাদি জোয়ারের ভয়ে, এবং অনুরূপভাবে “সন্ত্রাসবাদ” যেটা এর স্বার্থের হুমকির সম্মুখীন এর পেছনের দিক থেকে(আফ্রিকা)। কিন্তু এটার মানে নয় যে আমেরিকা ফ্রাঞ্চকে ছাড়া কিছু করতে পারবে, বরং আমেরিকার মিত্রদের মধ্যে ফ্রান্স একটি অপরিহার্য মিত্র তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, কারণ তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে মুসলিম, ইসলাম এবং বিগত উপনিবেশের, এবং এটা গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান যেটা আমেরিকা ভোগ করে নাই।
    ইসলামিক মাগরেবের অবস্থানের পৃথকীকরণ এর জন্য, এটা সুস্পষ্ট যে এমনকি সাধারণ জনগণের জন্যও : আমেরিকা তার বহুজাতিক সহযোগীদের মাধ্যমে তেল এবং গ্যাস সম্পদের বেশীর ভাগই নিজেদের কন্ট্রোলে, যেখানে ফ্রান্স নিজেকে সতন্ত্র করে রেখেছে তার নিজস্ব শিক্ষা, কালচার, প্রশাসনবিভাগকে। এটা সবার জানা যে ভাষাগত এবং কালচার দিক থেকে তাদের একটা নিজস্ব সংস্কার রয়েছে, এবং এই জন্য আমরা দেখতে পাই ফ্রান্স সব সময় তাদের ভাষার সাহিত্য চর্চার জন্য পুরস্কার প্রদান করে থাকে, এবং এটার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে ফ্রেঙ্কোফোন ফোরামের জন্য ফ্রান্সের পৃষ্ঠপোষকতা।
    তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে, AFRICOM এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে আমেরিকা নিজেদের স্বার্থের জন্য কিছু উপযুক্ত পুতুল পাওয়ার চেষ্টা করতেছে, অথচ দুই দিকেরই পরস্পর মিলিটারি সহযোগিতা খুবই শক্তিশালী। আফ্রিকার গভর্নমেন্টগুলোর সাথে ফ্রান্সের খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। এটা আফ্রিকাকে ফ্রান্সের পেছনের দিককার শক্তি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, এবং বিশেষ করে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ এর সাথে তাদের ন্যাশনাল সিকিউরিটি, উদাহরণ স্বরূপ নাইজারের ইউরেনিয়াম খনি।
    অন্য দিকে, আমেরিকার যথেষ্ট মিলিটারি পাওয়ার রয়েছে তাদের স্বার্থকে রক্ষার জন্য আফ্রিকার কোন ধরনের ক্রমবর্ধমান হুমকি থেকে, হোক গভর্নমেন্ট অথবা বিদ্রোহী গ্রুপগুলো, প্রধানতম হচ্ছে মুজাহিদিন। এটা প্রত্যাশিত যে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না বড় ধরনের কোন আঘাত এক আন্তর্জাতিক প্রণালীর মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিভাজনের বহিঃসীমায় না পোঁছে সম্পূর্ণ বিপর্যয়ের দিকে। এবং আমরা অধীর অপেক্ষায় আছি একটা বিপর্যয়ের মাধ্যমে তাদের দমনের জন্য, যেটা আল্লাহর তরফ থেকে আমাদের হাতের দ্বারা।
    অতএব, তাদের মৈত্রীতার যোগসূত্র গুলো ভেঙ্গে ফেলার জন্য ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদকে ধ্বংস করার জন্য মুজাহিদদের অবশ্যই কাজ করা দরকার, এবং এটা তেমন অসম্ভব কিছু নয়। আমরা এখনও ভুলি নাই কিভাবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জাকুএস ছিরাক জুনিয়র বুশের বিরোধিতা করেছিল আন্তর্জাতিক জোটের সাথে অংশগ্রহণ না করার, যেটা বিপদজনক ছিল যে আন্তর্জাতিক জোটের সাথে যোগ দেয়ার ফলে সাদ্দামের পদচ্যুতের কারনে ফ্রান্সের স্বার্থের আঘাত আসতে পারে। অতএব সামঞ্জস্যপূর্ণ চাপের ফলে এই ধরণের জোটকে প্রকৃতপক্ষে ধ্বংস করে দিতে পারে।
    আরেকটা ঘটনা যোগ করা যায় স্পেনের রাজধানীতে আঘাত হানা হয় অত্যাচারী ও আধিপত্যবাদী পলিসির সাথে স্পেনের সম্পৃক্ততা থাকার কারনে এতে করে স্পেনের রুলিং পার্টি তাদের বাহিনী উইথড্র করে ইরাক থেকে।
    ▶ ফ্রান্সের একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার এবং দখলদারিত্বের একটা তিক্ত স্মৃতি এবং বর্তমানে মুসলিমদের নির্যাতনের ঘটনা। দয়া করে আপনি এর বাস্তবতার ব্যাপারে একটু পরিষ্কার করবেন যা এটা নিজেকে উপস্থাপন করে স্বাধীনতা, সমতা এবং ভ্রাতৃত্বের মশালধারী হিসাবে।
    ইসলামের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের শত্রুতা ঐতিহাসিক ও দৃঢ়মূল, এবং মুসলিমদের সাথে এদের ইতিহাস খুবই কলঙ্কিত। ফ্রান্স ছিল ক্রুশের পতাকা ধারী প্রথম ক্রুসেডার। তার সমসাময়িক ইতিহাসে, মুসলিমদের স্মৃতিতে দুঃখজনক ঘটনায় ভরপুর যা তারা এদের আগ্রাসনের হাতে পতিত হয়েছিল। এই স্মৃতি ও অপরাধের শিক্ষাই ক্রমাগতভাবে প্রজম্ম পেয়ে আসছে। আমাদের জাতি এই বিস্মৃতি কখনই ভুলবেনা ... যতক্ষণ না প্রজম্ম আগ্রাসী অনধিকার প্রবেশকারীদের থেকে পরিপূর্ণ প্রতিশোধ গ্রহন না করে।
    আরব অঞ্চলসহ মুসলিম ভূমি গুলো ফ্রান্সের দখলদারিত্বে ছিল এবং যার বেশীর ভাগই ছিল তাদের অপকর্মের শিকার। ফ্রান্স কেবল মুসলিমদের ভূমি দখলদারিত্বেই ক্ষান্ত ছিল না, মুসলিমদের সম্পদ জব্দ করা, তাদের ধনসম্পদ লুণ্ঠন, অনুর্বর এলাকার দিকে তাদের বিতাড়িত করা ও সেখানে ইউরোপিয়ানদের পুনর্বাসন করা, তাদের সবচেয়ে উন্নত উর্বর কৃষি জমি প্রদানের মাধ্যমে উপনিবেশকরণে উত্সাহিত করার একটি প্রচেষ্টা চালায়।
    ফ্রান্সের অপরাধ এখানেই শেষ হয় নাই। সত্যি হচ্ছে, ফ্রান্স মুছে দিতে চেয়েছিল মুসলিমদের পরিচিতি, তাদের অতীত, তাদের ইতিহাস এবং ধর্মীয় ঐতিহ্য, ধর্মান্তর, ভাষা এবং সংস্কৃতি...। ফ্রান্স অভিযান চালিয়েছিল ইসলামিক এবং আরাবিক শিক্ষা ক্ষেত্রে যাতে যেভাবেই হোক মসজিদ ও শরিয়াহ মাদ্রাসা গুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফ্রান্স শরিয়াহ আদালত বন্ধ করে দেয় এবং মিশনারি মুভমেন্ট গুলোর কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য উৎসাহ প্রদান করতে থাকে।
    সংক্ষেপে বলা যায়, ফ্রান্সের দখলদারিত্বের ফলে এখানকার জনগোষ্ঠী গুলোর সামাজিক অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়ে। এর ফলে তাদের মাঝে চড়িয়ে পড়ে দারিদ্রতা, অজ্ঞতা, রোগ ব্যাধি এবং ধর্মত্যাগ ও নব্য সংস্কৃতির বৃদ্ধি। এবং আল্লাহ ছাড়া এখানে সাহায্য করার কেউ নেই। তাহলে বলুন কোথায় স্বাধীনতা, সমতা ও ভ্রাতৃত্ব... বিপ্লবের স্লোগান যেটাকে ফ্রান্স দাবী করে মাদার অফ রেবুলেসান?
    কোথায় স্বাধীনতা আলজেরিয়ার বালুকা ভুমির জন্য যেখানে প্রতিনিয়ত উম্মোচন হচ্ছে নতুন নতুন অপরাধের?!
    কোথায় ভ্রাতৃত্ববোদ ... যে ভ্রাতৃত্ববোদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চারটা নিউক্লিয়ার বোম্ব পরীক্ষার মাধ্যমে আলজেরিয়ার মরুভূমিতে, যার উৎপন্ন ক্ষমতা হচ্ছে হিরোশিমাতে নিক্ষেপিত এটম বোম্ব এর চেয়ে অনেক অনেক গুন বেশী শক্তিশালী?
    কোথায় সে সমতা, রাক্কানের অধিবাসীদেরকে আলজেরিয়ার মরুভুমি গিনিয়া পিগসের মধ্যে নির্বাসন জন্য ফ্রান্সের নিউক্লিয়ার টেস্ট চালানো হয়?
    মুসলিমদের উপর তারা যে পরিমান শয়তানী অপকর্ম চালায় মনুষ্যত্ব মূল্যবোদের সর্বনিম্মে পৌছার দাবী রাখে, কল্পনা করতে পারেন ফ্রান্স সিভিলাইজসান এর কি কি করেছিল?
    মুসলিম ভূমি থেকে ফ্রান্স চলে যাওয়ার ৫০ বসর পরও, এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে স্বাধীনতা ছিল আসলে একটা রূপকথা। ফ্রান্স তার সেনাবাহিনী সহ চলে গিয়েছে, কিন্তু তারা পেছনে ফেলে যায় এক ধরণের ফ্রান্সবাদী মনোভাব ও তাদের সংস্কৃতিতে ডুবে থাকা, ফ্রান্স এবং ফ্রান্সের কালচারের দিকে প্রবল উৎসাহের সাথে ধাবমান ও এর প্রতি আন্তরিকতা, সুতারাং এটা ফ্রান্সের সম্রাজ্যবাদ প্রকল্পেরই পরিচয় বহন করে। প্রত্যেক মুসলিমকে এই ভাবে উপলব্ধি করতে হবে যে, এই মুরতাদ পুতুল সরকার গুলোর বিরুদ্ধে জিহাদ মানে হচ্ছে ফ্রান্সেরই সাথে জিহাদ। এই সরকার গুলো থেকে স্বাধীনতা মানে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা ।
    ▶ পশ্চিমা দেশ গুলোতে লোণ জিহাদ অপারেসান: ইসলাম এবং কুফরের মধ্যে যুদ্ধে এর অবস্থান কি, আমাদের দৃষ্টিতে এই যুদ্ধের ভূমিকা এবং গুরুত্ব কতটুকু?
    আমেরিকা, এর মিলিটারি নেতৃত্ব, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এবং রাজনৈতিকবিদরা স্পষ্টভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে সমগ্র দুনিয়া একটা যুদ্ধক্ষেত্র আর এই যুদ্ধের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে ‘terror’, আর তারা দুনিয়ার কোথাও নিরাপদ রাখবেনা এই ‘terrorists’ দের জন্য।
    এইভাবে আমরা পারস্পরিকভাবে আমেরিকার সাথে মোকাবেলা করে থাকি। তাদের অপরিহার্য স্বার্থের উপর আগাত করে, আমরা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবো আমেরিকার দুনিয়ার কোথাও নিরাপত্তা অনুভব করতে পারবেনা। এটা একটা, একটি বৈধ অধিকার, তার কারন হচ্ছে যারা প্রথম যুদ্ধবিগ্রহ শুরু করে তারাই এর জন্য দায়ী। {তবে সে তোমাদের প্রতি যে রুপ অত্যাচার করবে তোমরাও তার প্রতি সে রূপ অত্যাচার কর}
    জিহাদের এই পদ্ধতি হচ্ছে পশ্চিমাদের সাথে আমাদের একটা সংগাতের ধরন- এমনকিছু যা নতুন এবং পুরনোকে মিলিয়ে তাদেরকে তাদের সমস্যার মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলা এবং তাদের শক্তি সামর্থ্য কে দুর্বল করে ফেলা। অসম যুদ্ধের এই ধরন হাজার বসর আগে আমাদের পূর্বসূরি গনের দ্বারা প্রবর্তিত ।
    লোণ জিহাদ প্রমাণ করেছে এর কার্যকারিতা এবং আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা। পশ্চিমাদের বেশিরভাগ রাষ্ট্র, যারা তাদের মিলিটারি শক্তি দেখিয়ে উম্মাদনা প্রকাশ করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে একটা চিরস্থায়ী আগ্রাসনের পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, কোন মুসলিম রাষ্ট্র অথবা কোন ইসলামিক গ্রুপ তাদের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোন প্রতিরোদ গড়ে তুলতে না পারে। এই দেশগুলি বাহিরের অ্যাটাক থেকে হয় সামরিকভাবে মুক্ত উদাহরণস্বরূপ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অথবা ভৌগোলিক দিক থেকে মুক্ত, ইউনাইটেড স্টেটের কথাই ধরুন, এই দেশে বহিরাগত কোন শক্তি আক্রমণ করা খুবই অসম্ভব এই দেশের মহাদেশটি অ্যাটলান্টিক মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত যার আয়তন ৬০০০ কিলোমিটার। এটি একটি প্রাকৃতিক বাধা যা কোন সেনাবাহিনী অতিক্রম করতে পারে না। লোণ জিহাদ অপারেশনের ব্যাপারে যদি বলা হয়, তারা সম্ভাবনার রাজত্বের মধ্যে আছে, আল্লাহর রহমতে।
    শত্রুদের কি কারণে বিভ্রান্ত এবং অতিষ্ঠ করে তোলে সেটা হল যারা এই ধরণের হামলা গুলো সম্পন্ন করে নিরাপত্তা নিচিদ্রকে ভেঙ্গে দেয়। নেটওয়ার্ক ও গ্রুপগুলোকে ফিল্টারিং করার জন্য ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি গুলোর তাদের অভিযান পদ্ধতি রয়েছে, কিন্তু তারা কারো অন্তরকে অনুধাবন করা কখনই সম্ভব নয়!। আমার পরামর্শ হচ্ছে সর্বজনীনভাবে মুসলিম এবং বিশেষভাবে মুজাহিদেগনের উপর এই ধরণের জিহাদ সম্পাদন করার জন্য নিজে অনুপ্রাণিত হওয়া এবং অন্যদের উদ্দীপ্ত করা । নিজের জীবনের মূল্য দিয়ে হলেও মুসলিমদের জান ও মালের জন্য এটা করা জরুরী, এতে করে শত্রুদের উপর এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে। আমরা অনেক ঘটনায় দেখেছি কিভাবে একজন একক সুহাদা অন্বেষণ কারীর হামলার ফলে পুরা দেশ প্রায়ই পেরালাইজগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
    একটু সংশয় আছে যে এই ধরণের জিহাদ কুফরদের ক্ষেপীয়ে দেয় যা কিনা তাদের নিজেদের দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্রীয় কোন হামলার থেকে প্রত্যাবর্তন এর চেয়েও বেশী ...... এটা এরকম, কেউ একজন তাদের দেশের এবং তাদেরই ধর্মের ছিল আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করে ইসলামেরই দিকে এবং জিহাদের পথে। ইসলামের শত্রুদের এই দিশেহারাই প্রমাণ করে দেয়, ইসলাম লঙ্ঘন করে তাদের সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ এবং মুসলিমদের আনুগত্য ইসলামের প্রতি তার দেশের প্রতি নয়। এই প্রত্যাশা খুবই বেদনাদায়ক তাদের জন্য একটা হামলার ঘটনার চেয়েও, তাই আসুন আমরা এর উপরই প্রতিফলিত হই। আর এই উত্তেজনাই হচ্ছে তাদের দুর্বলতা গুলোর একটা অংশ। এটা ভাল সুফল অর্জনের একটা রাস্তা ... { নিশ্চয় আল্লাহ সৎ কর্মশীলদের পুণ্যফল নষ্ট করবেন না }. অতএব আমাদেরকে লড়াই করে এর পুরস্কার গুলো অর্জন করতে দিন এবং গুণাবলী অর্জন করে উত্তম কাজ করে উত্তম এর সুফল ভোগ করতে দিন।
    পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাস কারী মুসলিমদের প্রতি, জিহাদি মানহাজের ওলামাগণ এবং আমিরগণ উত্সাহিত করেছেন পশ্চিমা দেশগুলোতে ফেদায়ী হামলা চালানোর জন্য। লোণ জিহাদের পুরস্কার এবং মর্যাদা জিহাদের ময়দানে হিজরতকারীদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
    একটা জিনিস আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে মুজাহিদ তার লোণ জিহাদের শরয়িহ বিধান গুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। টার্গেট সিলেকসানের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং টার্গেটের ব্যাপারে অবশ্যই সুস্পষ্ট বৈধতা থাকতে হবে।
    শায়েখগন এই ব্যাপারে খুবই গুরুত্বারোপ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, শায়েখ আতিয়ল্লাহ(রঃ) উল্ল্যেখ করেছেন, “এই ধরণের জিহাদ এবং শত্রুদের সম্পদে আঘাত হানা, হয় শত্রুদের এলাকায় না হয় অন্য কোথায়ও, অবশ্যই সেটা মজবুতভাবে শরিহার অধীন হতে হবে। এটা অবশ্যই মুজাহিদদের সাধারণ কৌশল অনুযায়ী পরিবেশিত হতে হবে, এবং টার্গেট সিলেকসানের শর্তাবলী সুসংগত হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা, যথেষ্ট অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন, দৃঢ় সংকল্প থাকতে হবে এবং সত্য উদ্দেশ্য থাকতে হবে।”
    হামলার জন্য এই গাইডলাইন অনুযায়ী নিশ্চিত হওয়ার পর বলার বাকী থাকল, { অনন্তর যখন তুমি সংকল্প করেছ তখন আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর এবং নিশ্চয় আল্লাহ নির্ভরশীলগনকে ভালবাসেন}।
    বাকিটুকু কমেন্টে দেখুনঃ
    Last edited by Khalji-The-Seventeen; 09-18-2019, 10:55 AM.

  • #2
    ▶ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেখা গেছে লোণ জিহাদ অপারেশনের একটা অভ্যুত্থান ঘটেছে আমেরিকা এবং ফ্রান্সে। আপনার অভিমত কি এই অপারেশন গুলোর ব্যাপারে?
    শায়েখ আনোয়ার আল আওলেকি বলেছেন, “আমরা মুসলিমদের মধ্যে কোন জাতিগত দল এবং কোন জাতির প্রতি একটা সহজাত বিদ্বেষ নাই। আমরা আমেরিকানদের বিরুদ্ধে এই জন্য নয় যে তারা আমেরিকান, আমরা হচ্ছি শয়তানের বিরুদ্ধে, আর আমেরিকা পুরপুরিভাবে শয়তানী জাতিতে পরিণত হয়েছে।”
    খুবই ভাল করে জানা আছে, মুজাহিদিনগন রাষ্ট্র এবং তাদের জাতিদেরকে তাদের শত্রুতার ধরণের উপর নির্ভর করে তাদেরকে আলাদা করেছেন, টার্গেট সিলেক্ট এর জন্য অগ্রগণ্যদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সুতারাং শয়তানী মিত্রদের নেতৃত্বদের অথবা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অনধিকারপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে হামলার জন্য সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য দেয়া হয়। আমরা যদি আমেরিকা এবং ফ্রান্সকে গণ্য করি, আমরা দেখতে পাই যে তারা ঘৃণা এবং আগ্রাসনের সীমা অতিক্রম করেছে। তারাই হচ্ছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন এবং সীমা লঙ্গন কারীদের পতাকা ধারক – সংস্কৃতি, সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে। এবং এতে করে মুসলিম যুবকদের ক্রোদ হামলায় রূপান্তর লাভ করে আমেরিকা এবং ফ্রান্সের মাটিতে।
    লোণ জিহাদের ব্যাপারে আমরা এর আগের আলোচনায় উল্লেখ করেছি যে যারাই এই ধরণের হামলা পরিচালনা করেছে বেশীর ভাগই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কৌশলে এড়িয়ে গেছে। তাই এটা একটা দুঃস্বপ্ন যে দেশেই এই ধরণের হামলা পরিচালিত হয়েছে।
    উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আমেরিকা এবং ফ্রান্সের মত যে দেশ গুলোই এই ধরণের জিহাদি অপারেশানে পতিত হয়েছে তারা কল্পনাও করতে পারে নাই যা ঘটবে এই অব্যর্থ পদ্ধতির মোকাবেলা করার। ইন্টেলিজেন্সগুলো প্রায়ই অকার্যকর সতন্ত্র মুজাহিদদের নির্ণয় করা, কেননা তার কারো সাথে যোগাযোগের অথবা সোসিয়েল মিডিয়া নেটওয়ার্ক এর প্রয়োজন নেই। ইনভেস্টিগেসানও অকার্যকর কারণ বেশীর ভাগ পরিস্থিতিতে তার কোন অস্র, বহন করার জন্য খুব ধরণের কিছু অথবা বিস্পোরকের প্রয়োজন নেই। অতএব অপারেশান সম্পাদনের পূর্বে , এটা খুবই কঠিন এমন কি খুব পেশাধারী ইন্টেলিজেন্সের জন্যও এই ধরণের অপারেশানকে সনাক্ত করা। তো এটা হচ্ছে পশ্চিমাদের দুশ্চিন্তার ব্যাখ্যা, বিশেষ করে আমেরিকা এবং ফ্রান্স, তাদের সমাজে এই ঘটনা বৃদ্ধির এবং বিস্তার সম্পর্কে। এটি একটি দুঃস্বপ্ন যা তাদের অন্তরকে চূর্ণ করে ফেলেছে ।
    এই জন্য আমাদের উপর আরোপিত এই অস্র উপেক্ষা না করা। বাস্তবে, আমাদেরকে আরও সর্বজনীন পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত এবং এই মেথুডকে আরও ডেভেলপ করা শত্রুদের বৃহত্তর ক্ষতিস্বাদন করতে। এভাবে আমরা তাদের যেকোনো নিরাপত্তার অনুভূতিতে আঘাত করে তাদের হারাতে পারি। এতে, হতে পারে তাদের সুবুদ্ধি ফিরে আসতে পারে এবং তাদের এই আগ্রাসন বন্ধ করবে যেটা একটা দীর্ঘ সময় ধরে তারা চালিয়ে আসছে।
    ▶ এই নিপীড়ন থেকে বেরোবার উপায় কী যার মধ্যে দিয়ে উম্মাহ এখন অতিবাহিত করছে ভবিষ্যতের জন্য আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি?
    এটা কারো থেকে লুকায়িত নয় সুউচ্চ বোধগম্য দ্বারা এবং এর সমসাময়িক ইতিহাসে যদি কোন একটি জাতি আক্রমণ ও ষড়যন্ত্রের শিকার দুনিয়ার অন্যান্য জাতির চেয়ে বেশী আর সেটা হল মুসলিম জাতি। আমাদের উম্মাহ এই আগ্রাসনের যতটুকু শিকার হয়েছে যদি অন্য কোন জাতি এর চার ভাগের এক ভাগও হত তাহলে তাদের পুরোপুরি পতন ঘটতো এবং দুনিয়ার মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতো। এখানে কোন সন্দেহ হতে পারেনা যে আগ্রাসন এবং ষড়যন্ত্রের শিকার এই উম্মাহ পেছনে ফেলে এসেছে অবশিষ্টাংশ এবং গভীর ছাপ। এর রূপরেখাগুলি নিম্মে আলকপাত করা হল:
    উম্মাহর পতনের প্রথমত কারণ হচ্ছে উম্মাহর উপর শাসক গুলোর ক্ষমতা গ্রহন ও তাদের ইচ্ছা গুলো উম্মাহর চাপিয়ে দেয়া। এতদনুসারে জীবনযাপনের সমস্ত দিক থেকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরে গেছে: শাসন, রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা, শিক্ষা, অর্থনীতি, বাণিজ্য, নৈতিকতা এবং বিনয়। এটা হচ্ছে সমস্যা গুলোর একটি যাতে উম্মাহ পোঁছে গেছে দুর্বলতা, অপমান এবং অনৈতিকতার পর্যায়ে যাতে করে এটি প্রত্যেক লোভী শত্রুদের জন্য একটি সহজ শিকার হয়ে ওঠে। এতদনুসারে আল্লাহ বলেন, {যে আমার স্মরণে বিমুখ তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত}। তাই আমাদের মাঝে অবশ্যই পরিবর্তন আসা দরকার, পরিবর্তন করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে যা আল্লাহ এই আয়াতের মাঝে বর্ণনা করেছেন, {নিশ্চয় আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে}। দ্বীনের দিকে প্রত্যাবর্তন এবং ইসলামী আদলে জীবনগঠন যার কর্তৃত্ব থাকবে কোরআন এবং সুন্নাহর উপর। রাসুলাল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “আমি তোমাদের মাঝে দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি বিপথে চালিত হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এগুলোকে আঁকড়ে ধরঃ আল্লাহর কোরআন এবং আমার সুন্নাহ”। অতএব এই যুগে এই দুটি বিশুদ্ধ উৎসের দিকে প্রত্যাবর্তন অবশ্যই প্রধান কারণ হতে হবে। কোন সন্দেহ নেই এই প্রত্যাবর্তন খুব সহজ অথবা তাড়াতাড়ি সম্ভব নয়, অবশ্যই এর জন্য অনেক মূল্য পরিশোধ করতে হবে। মূল্য এগুলোর তুলনায় মোটেও কম নয় আর তা হল, গর্দান, মৃতদেহ, চোখের পানি, আর রক্ত {মানুষ কি মনে করে যে, আমরা ঈমান এনেছি, একথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেয়া হবে? আমি তো তাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; আর আল্লাহ অবশ্যই জেনে নিবেন কারা সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী}। যদি উম্মাহ তাদের হারানো ভূমি এবং গৌরব ফিরে যেতে চায় এবং সম্মান ও মর্যাদা ফিরে পেতে চায়, ভালকে আলিঙ্গন এবং অন্যায় বর্জন করার মাধ্যমে নিজের ভূমিকা পালন করতে হবে। এটা অবশ্যই আল্লাহর প্রতি সত্যবাদী হতে হবে, আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ এবং প্রচুর কাজ করতে হবে ভুলে যাওয়া জিহাদি দায়িত্বকে পুনরজ্জীবিত করতে পরবর্তী জেনারেশানকে নিয়ে। পুনর্জাগরণের চিহ্নগুলো ইতিমধ্যে উদীয়মান হতে শুরু করেছে এই দিগন্তে এবং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে। উম্মাহ জিহাদের এক মহান পদক্ষেপ গ্রহন করেছে, যেটার কাজ দুনিয়ার সব কোনায় পৌঁছে গেছে, দুনিয়া এমন দেশ কমই আছে ছোট হোক বড় হোক, দূরে হোক কাছে হোক যেখানে জিহাদের কাজ প্রবেশ করে নাই, সম্মানের পথ দ্বারা অথবা অপদস্থের পথে হোক; সম্মান হচ্ছে আল্লাহ ইসলাম এবং মুসলিমদের শক্তিশালী করার মাধ্যমে, আর অসম্মান কুফরকে অপদস্থের মাধ্যমে।
    এটাই সেই জিনিস যেটা আমাদের নতুন ভোরের প্রত্যাশা দেয় যা বিজয়ের সাথে আগে বাড়বে, যার চিহ্ন আমরা অবলোকন করতেছি দুনিয়ার একপ্রান্ত থেকে ওপর প্রান্ত পর্যন্ত। সত্যের পতাকা উড়া শুরু করেছে দুনিয়ার উত্তর থেকে দক্ষিণে, এবং ইসলামের বীরেরা জিহাদের ঝাণ্ডা উঁচু করে ধরেছে আমাদের দখল করে নেয়া আল আকসা থেকে একটা পাথর নিক্ষেপ করে হলেও। এটা অনেক ইসলামের শত্রুদের অভিমত- মুসলিমদের আগে- দুনিয়ার ভবিষ্যৎ একদিন এই দ্বীনের অধিকারভুক্ত হবে, এটা উম্মাহর হাতে চলে আসবে। এই জন্য মুজাহিদ গন এবং তাদের মুসলিম ভাইয়েরা যারা মুজাহিদদের সাপোর্ট করে অবশ্যই তাদের সহনশীলতার আরো অনুশীলন এবং সতর্ক থাকতে হবে দুর্বলতা অথবা ব্যর্থতা থেকে। সময়ের প্রয়োজনে আরও নিঃস্বার্থপরতা আরও কোরবানির দরকার। ইবনুল কাইয়ুম (রঃ) যা বলেছেন, “মানুষের মূঢ়তা হচ্ছে যে তার যাত্রার শেষ পজিশনে এসে সে তার পথ হারায়, অথচ সে প্রায় তার গন্তব্য পৌঁছে গেছে।” {আর তোমরা দুর্বল হইয়ো না ও বিষণ্ণ হইয়ো না এবং যদি তোমরা বিশ্বাসী হও, তবে তোমরাই জয়ী হবে।}
    লোণ মুজাহিদদের প্রতি বার্তা
    এটা সম্ভবত একটি অত্যুক্তি হবে যদি আমরা বলি লোণ মুজাহিদ নিজেই একজন উম্মাহ। আমরা দেখেছি মাঝে মাঝে আল্লাহর আশীর্বাদে এই মুজাহিদগণের এই ধরনের সফলতা সৈন্যরা অথবা পুরো সেনাবাহিনী ও অর্জন করতে পারেনা। কতগুলো লোণ জিহাদ অপারেশানের ফলে তাদের পলিসি পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে, পলিটিকেল পার্টির পতনে বাদ্য করেছে এমন কি যাদের কেউ কেউ খুব শক্তিশালী সরকার ছিল এবং খুব প্রভাবশালী দেশ ছিল পুরো দুনিয়াতে। এই জন্য ইশ্তেশাদি এবং ইঙ্গিমাশি শত্রুদের অন্তরে ধীরে ধীরে ভয় প্রবেশ করায় অন্যান্য ফাইটারের চেয়েও বেশী।
    এই লোণ জিহাদ অপারেশানের ইতিবাচক ফলাফলের কারণে যে আমরা আবেদন জানাই আমাদের উম্মাহর সন্তানদের জিহাদের এই নতুন মেথুডের অবলম্বন করার জন্য এবং এই পথে শক্ত ভাবে অটল থাকার জন্য। এর মাধ্যমে আমরা নিপীড়িত মুসলিমদের প্রতিশোধ নিতে পারব যারা গণহত্যা সম্মুখীন বার্মা, মসুল, আলেপ্পো, আলকুদস, গাজা, বেনগাযি, ডারনা এবং মুসলিম দুনিয়ার অন্যান্য জায়গায়।
    ফ্রন্ট মুজাহিদদের প্রতি বার্তা
    আমি আমার মুজাহিদ ভাইদের মনে করিয়ে দিতে চাই আমিরুল মু’মেনিন হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) উনার সেনাবাহিনীর আমির কে যে পরামর্শ বাণী দিয়েছিলেন, যেভাবে বর্ণিত হয়েছিলঃ
    আমি তোমাকে ও তোমার সৈন্যদের আদেশ দিচ্ছি আল্লাহকে ভয় কর যে কোন পরিস্থিতিতে, আল্লাহকে ভয় করা শত্রুদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভাল প্রস্তুতি এবং শক্তিশালী অভিসন্ধি যুদ্ধের ময়দানে। আপনাদের প্রতি আমার আদেশ হচ্ছে শত্রুদের মোকাবেলার করার চেয়ে অধিক সতর্ক হন আপনার গুনাহর উপর, কারণ লোকদের নিজের গুনাহ শত্রুদের প্রতি সতর্ক থাকার চেয়ে বেশী মারাত্মক। মুসলিমদের উপর শুধুমাত্র বিজয় অর্পিত হয়েছে কারণ তাদের শত্রুদের আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতা; আর না হয় তাদেরকে পরাজিত করা সম্ভব ছিল না, আমাদের সৈন্য এবং হাতিয়ার তাদের তুলনায় অনেক কম। অতএব যদি গুনাহর দিক দিয়ে আমরা যদি তাদের সমান হয়ে যাই, এবং ক্ষমতা অনুযায়ী তাহলে তারা আমাদের উপর বিজয় লাভ করবে। এবং যদি আমরা আমদের নৈতিক শ্রেষ্ঠতা দ্বারা তাদের হারাতে না পারি, আমাদের শক্তি দিয়ে তাদের হারানো সম্ভব নয়। জেনে রাখুন আপনার চলার পথে আল্লাহর ফেরেশতাদের আপনাদের সাহায্যকারী হিসেবে পাবেন; তারা জানে আপনারা কি করতেছেন। অতএব তাদের ব্যাপারে লজ্জিত হোন। অবাধ্য কাজে লিপ্ত হয়ো না, মনে করো না, “আমাদের শত্রু আমাদের চেয়ে দুর্বল, তাই এটি আমাদের উপর আরোপিত হবে না” আল্লাহ্* তাআলার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন আপনার নফসের বিরুদ্ধে যে ভাবে আপনি সাহায্য প্রার্থনা করেন আপনার শত্রুর বিরুদ্ধে।
    অতএব, তাদের প্রতি আমার বার্তা হল : আপনার শত্রুদের ভয় করবেন না, আপনার গুনাহকে ছাড়া আর কিছুকেই ভয় করবেন না। আপনারা নিজেদেরকে বিভক্ত করবেন না ইউনিটে, সংঘাতে এবং ভিন্ন দলে। নিজেদের মধ্যে কলহ তৈরি করবেন না। যদি করেন, আল্লাহ আপনার শক্তি কেড়ে নেবেন এবং আল্লাহ আপনাদের উপর তাদের ভয় তাদের অন্তর থেকে উঠিয়ে নেবেন। অথচ আমরা আল্লাহর কিতাবে পড়েছি, {এবং তোমাদের এই জাতি একই জাতি} অতএব কেন আমাদের দল একটি দলের অন্তরভুক্ত হতে পারেনা। আল্লাহ সুবহানা তা’আলা কি তার কিতাবে বলে নাই, {নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে সারিবদ্ধভাবে শীশা ডালা সুদৃঢ় প্রাচীর এর মত, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন} তাহলে কি ধরণের ভালর জন্য আমরা আমাদের যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করব তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পতাকা তলে, বিক্ষিপ্তভাবে এবং বিদীর্ণ মনে।
    এই ব্যাপারে আমরা তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই শায়েখ ওসামা (রঃ) বলেছেন, “ যদি এটা সত্য হয় পরাজয় এবং শক্তি অবক্ষয়ের মধ্যে সবচেয়ে বিশেষ কারণ হচ্ছে পারস্পরিক বাদানুবাদ এবং অনৈক্য যার থেকে উম্মাহ আজ পীড়িত। এটা সমানভাবে সত্য যে ঐক্য, দলবদ্ধ, আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে থাকা হচ্ছে জয় এবং সফলতার চাবিকাঠি, এবং আধিপত্য এবং নেতৃত্বের দরজা।” আল্লাহর সুবহানা তা’আলা আমাদের হুকুম করছেন একত্বতা মেনে চলতে, {আর তোমরা একযোগে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ়রূপে ধারণ কর ও বিভক্ত হয়ে যেওনা }। এবং আল্লাহ সুবহানা তা’আলা আমাদের সাবধান করতেছেন অনৈক্য এবং বিতর্কের বিরুদ্ধে, { এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ করবে না, অন্যথায় তোমরা সাহস হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের মনের দৃঢ়তা ও শক্তি বিলুপ্ত হবে, আর তোমরা ধৈর্য সহকারে সব কাজ করবে, অবশ্যই আল্লাহ্* ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। }
    অতএব আমার বন্ধুগণ আল্লাহর দ্বীনের জন্য আল্লাহকে ভয় করুন, এবং আল্লাহকে ভয় করুন যখন উম্মাহ নিপীড়িত এবং দখলদারিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। এবং যে অবিশ্বাসীদের দ্বারা আমরা আক্রান্ত আমরা তাদের বিরুদ্ধে নিজেদের পাহারাদার করে তুলি। {যারা রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর কঠিন শাস্তি}
    আল্লাহ সুন্নাহর সাথে কারো সমর্থন করোনা।
    কুফরদের প্রধান, আমেরিকার প্রতি বার্তা


    আমেরিকার জানা উচিত মুসলিম উম্মাহ সব সময় চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইরত ছিল, আছে এবং থাকবে মানবজাতির কল্যাণের জন্য শ্রেষ্ঠ উম্মাহ হিসেবে। এটি একটি উম্মাহ যা অন্য সকল জাতির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়াবে(বিচার দিবসে)।
    এটি একটি বিজয়ী নির্দোষ উম্মাহ, আল্লাহর তত্ত্বাবধানে ও রহমতে; দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, অসুস্থ হয়ে পরতে পারে, কিন্তু কখনো মারা যায় না।
    অন্যান্য জাতির উপর এই উম্মাহর প্রভাব কেমন সুন্দর, অথচ এই উম্মাহর উপর অন্যান্য জাতির প্রভাব কতই না নিকৃষ্ট !
    তাতারিরা এই উম্মাহর উপর দখলদারিত্ব করেছিল। কিন্তু তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, উম্মাহ এখনও টিকে আছে।
    সাম্রাজ্যবাদ এই উম্মাহকে আয়ত্ত করতে ছেয়েছিল। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস হয়ে গেসে, উম্মাহ এখনও টিকে আছে।
    এখন, আমেরিকা দাঙ্গাহাঙ্গামার সাথে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়েছে এবং উম্মাহকে হারানোর জন্য আলায়েন্স তৈরি করেছে। আমেরিকাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে, এই উম্মাহ ঠিকই রয়ে যাবে, সিনা উঁচু করে দাড়িয়ে থাকবে, উচ্চ মর্যাদা নিয়ে থাকবে।
    অবশেষে আমরা তাদের প্রতি বলতে চাই মুজাহিদ শায়েখ আনোয়ার আল আওলাকি (রঃ) উনার বার্তায় বলেছিলেন, আমেরিকান জনগণের প্রতি বার্তা’, “ আমেরিকায় বসবাসরত মুসলিমদের কে আমি বলতে চাই, আপনার জ্ঞান আপনাকে অনুমোদন দেয় শান্তিপূর্ণ সহবাস্থানের জন্য ছেড়ে যেতে তাদের সাথে বসবাস করতে যারা তোমার নিজের ভাই বোনের উপর নির্যাতন এবং অপরাদের জন্য দায়ী! আপনি কিভাবে এমন এক সরকারকে আনুগত্য দেখাতে পারেন যে ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করছে! আমেরিকাতে মুসলিম সম্প্রদায় প্রত্যক্ষ করতেছে একটি ক্রমশ ক্ষয় এবং পতন ঘটছে ইসলামের মুল অভ্যন্তরে, সুতারাং আপনাদের মাঝে অনেক আলেম এবং ইসলামী সংস্থা সরাসরি অনুমোদন করতেছে ইউ এস আর্মিতে কাজ করে মুসলিমদের হত্যা করতে, FBI তে যোগ দিচ্ছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গুপ্তচর বৃত্তি করার জন্য এবং জিহাদের অন্তরায় হচ্ছেন। ধীরে ধীরে এবং নিশ্চিত ভাবে আপনাদের অবস্থা অনুরূপ হয়ে উঠছে স্পেনের গ্রানাডার পতনের পর মুসলিমদের যা হয়েছিল। পশ্চিমার মুসলিমগণ চিন্তা-ভাবনা করুণ এবং ইতিহাস থেকে শিক্ষা অর্জন করুণ। আপনার দিগন্তে অশুভ মেঘের গনগটা দেখা দিচ্ছে। আমেরিকা কাল ছিল একটা দাসত্ব, জাতিগত পৃথকীকরণ, বিনা কারনে হত্যাকাণ্ড এবং Ku Klax Klan এর দেশ। আগামীকাল এটা হবে ধর্মীয় বৈষম্য এবং বন্দী-শিবিরের দেশ।
    আপনার অধিকার সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দ্বারা প্রতারিত হবেন না, যে সরকার এই মুহূর্তে আপনার ভাই বোনদের হত্যা করে যাচ্ছে। আজ মুসলিম এবং পশ্চিমাদের মধ্যে দ্রুত বৃদ্ধির এই যুদ্ধে, আপনি এক নাগরিক সংহতি অথবা রাজনৈতিক দল থেকে পাওয়া মিথ্যা আশ্বাসের উপর ভরসা করতে পারেন না; অথবা সমর্থন বানী শোনানো আপনার সুসম্পর্কের প্রতিবেশী ও সহকর্মী থেকেও না। পরিশেষে পশ্চিমারা তাদের নিজেদের নাগরিকভুক্ত মুসলিমদের বিরুদ্ধেও গুরে দাঁড়াবে।”
    ফ্রান্সের প্রতি হুঁশিয়ারি বার্তা

    ফ্রান্স ! তুমি কি জান যে তোমার ঋণ নিষ্পত্তির জন্য সময় নিকটবর্তী হয়েছে ? অতএব মনে করবে তুমি তোমার শাস্তি থেকে পালাতে পারবে ! এবং অতএব পরিশোধ করার জন্য প্রস্তুত হতে শুরু কর মুসলিমদের ঋণ, একই ভাবে নগদে।
    ফ্রান্স উত্তর দাও এই প্রশ্নের:
    তোমার কি ক্ষতি হতো মুসলিমদেরকে তাদের মত করে বাঁচতে দিলে, তাদের ধর্ম পালনে, তাদের নিজের ভাষায় কথা বলতে, তাদের রাসুলাল্লাহ(সঃ) এর সুন্নাহ মোতাবেক জীবনযাপন করতে, মসজিদে উপস্থিত হতে এবং তাদের কাজের মধ্যে তাদের পালনকর্তার শরিয়াহ প্রতিষ্ঠা করতে ?
    তোমাদের কি ক্ষতি হত যদি তোমরা মুসলিমদের সম্পদ, মুসলিম এবং মুসলিমদের ভূমি ত্যাগ করতে এবং তাদের উপর লুঠতরাজ না করতে এবং তাদের ভূমি তাদের কাছে ছেড়ে দিতে এবং এটাকে বিকৃত না করতে ?
    তুমি চক্রান্ত করেছে, ষড়যন্ত্র করেছে এবং অপরাধের সবচেয়ে জঘন্যতম পর্যায়ে পোঁছেছ। আজ, দুশো বসরের দখলদারিত্বের, তোমরাই ভয়ে শঙ্কিত ফ্রান্স ইসলামী হয়ে উঠবে। মালি ত্যাগ কর এবং তাদের ব্যাপারগুলি তাদের উপর ছেড়ে দাও, আফ্রিকা ত্যাগ কর এবং তাদের দেশ তাদের কাছে হাতে দিয়ে দাও, আমাদের ব্যাপারগুলোতে নাক গলাতে বন্ধ কর। আমরা আমদের জিহাদ কখনই বন্ধ করবনা যতক্ষণ না তোমরা মুসলিমদের উপর আগ্রাসন বন্ধ কর।
    তোমরা যদি আপনার অহংকারে স্থির থাক, তাহলে মনে রাখবে ইসলামের সেই সব লোকেরা আছে যারা নিপীড়িত অবস্থায় ঘুমায় না এবং জিল্লতির জীবন মেনে নেয় না।
    সম্মান, শক্তি এবং গৌরব আল্লাহ, তার নবী (সঃ) এবং বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু মুনাফিকেরা তা জানেনা।
    Last edited by Khalji-The-Seventeen; 09-18-2019, 10:56 AM.

    Comment


    • #3
      আলহামদু লিল্লাহ... তবে এটা আরও ২/৩ বছর আগেই উসামা মিডিয়া থেকে অনুবাদ প্রকাশ হয়েছিল...

      Comment


      • #4
        আল্লাহ তা‘আলা আপনার মেহনতকে কবুল করুন। আমীন
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          Originally posted by আবু আব্দুল্লাহ View Post
          আলহামদু লিল্লাহ... তবে এটা আরও ২/৩ বছর আগেই উসামা মিডিয়া থেকে অনুবাদ প্রকাশ হয়েছিল...
          جزاك الله خيراহুমমম এমটাই আমার মনে হচ্ছিল, আর এটা তো অবশ্যই বের হওয়ার কথা শায়েখের এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার। ঐ সময় আমি মুলত এইটা অফ লাইনে আমার আমার বন্ধুদের জন্য করেছিলাম। বিশেষ করে যাতে মাগরেবের জিহাদ সম্পর্কে তারা অবগত হতে পারে যেটা শায়েখ তুলে ধরেছেন।

          Comment


          • #6
            ভাইদের কাছে অনুরোধ থাকবে, দয়া করে লেখাটার পিডিএফ তৈরী করা। আর যদি তৈরী করা থাকে তাহলে লিংকটা দিলে অনেক ভাল হতো।
            জাযাকুমুল্লাহু খায়রান।

            Comment


            • #7
              মিডিয়া ভাইদের কাছে অনুরোধ লিখাটি পিডিএফ করে দেওয়ার জন্য। সেই সাথে লেখাগুলো আরেকটু বড় করে দেওয়ার।
              ان المتقین فی جنت ونعیم
              سورة الطور

              Comment

              Working...
              X