Announcement

Collapse
No announcement yet.

কুরআন: কখনও ভেবে দেখেছি?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কুরআন: কখনও ভেবে দেখেছি?

    কুরআন: কখনও ভেবে দেখেছি?
    চারটি দৃশ্য কল্পনা করি।এই দৃশ্যগুলোর "মানে" টাও বোঝার চেষ্টা করি।
    [এক]
    আমি নিজের গন্তব্যে হেঁটে চলছি।স্বাভাবিক গতিতেই হাঁটছি।
    - বোঝা যায়, এ অবস্থায় আমার তেমন কোনো তাড়া নেই। কোনো রকম পৌঁছতে পারলে চলবে।
    [দুই ]
    কিছুটা জোর কদমে এগোচ্ছি।একটু পর পর দৌড় দিচ্ছি।
    - বোঝা যায়, এ অবস্থায় আমি আরেকটু সিরিয়াস। সময়ক্ষেপণ হলেই কিছু একটা হারানোর আশংকা আছে।
    [তিন ]
    দৌড়াচ্ছি।আবার আশেপাশে যারা দৌড়রত আছে, সবার দিকে নজর রাখছি।আমি যেন কারও থেকে পিছিয়ে না থাকি,সে জন্যে সতর্ক আছি।
    - বোঝা যায়, এ অবস্থায় আমার উদ্বেগের
    মাত্রা একটু বেশি। সামনেই অতি মূল্যবান
    কিছু অপেক্ষা করছে, যা হাতছাড়া করতে রাজি নই।তাই পাল্লা দিয়ে দোড়ে যাচ্ছি লক্ষ্যপানে।
    [চার]
    রুদ্ধশ্বাসে ছুটে যাচ্ছি। আশেপাশে কারও দিকে তাকানোর বিরাম নেই, সামনে বা পেছনে নজর দেওয়ার ফুরসতও নেই। প্রাণ হাতে নিয়ে ছুটেই চলছি।
    - বোঝা যায়, জীবন ও মৃত্যুর ভাবনা-রেখা এক বিন্দুতে মিলে গেছে। যেদিকে ছুটছি,সেদিকটা ছাড়া আর কোথাও আশ্রয়ের সম্ভাবনা নেই। আশ্রয়স্থলে পৌছতে এক মুহূর্ত বিলম্ব করাও বিপদ!
    পৌঁছে গেলেই আমি নিরাপদ।

    এবার কুরআনের কাছে আসি।প্রিয়তম রব্ব-এর চারটি আদেশ খেয়াল করি। চারটি আদেশ প্রদানে চার ধরনের শব্দচয়ন লক্ষ করি।
    [১]
    আল্লাহ আমাদেরকে রিযক অন্বেষণের আদেশ দিয়েছেন। রিযক অন্বেষণের জন্যে আমাদেরকে বলেছেন :فامشوا 'হেঁটে যাও'(আল-মুলক-১৫)
    [২]
    জুমুআর দিন আযান শোনার সাথে সাথে সবধরনের কাজ বন্ধ করে সালাতের দিকে মনোনিবেশের আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশের সময় বলেছেন فاسعوا'দৌড়াও'(জুমুআাহ-৯(
    [৩]
    জান্নাত লাভের জন্যে আল্লাহ আমাদেরকে প্রণোদনা দিয়েছেন, উৎসাহিত করেছেন। জান্নাতের দিকে কিভাবে যেতে বলেছেন? বলেছেন وسارعوا ' তোমরা পাল্লা দিয়ে দৌড়ে যাও'
    (আলে ইমরান-১৩৩)
    [৪]
    এবার আল্লাহ নিজের ক্ষেত্রে কী বলেছেন, দেখুন। ففرو ا إلي الله 'অতএব তোমরা আল্লাহর দিকে ছুটে চল'(আয-যারিয়াত- ৫০)

    আগের চারটি দৃশ্যের সাথে এই চারটি শব্দ-কে মিলিয়ে দেখি।

    কী বুঝলাম?
    রিযক অন্বেষণের জন্যে হেঁটে গেলেই যথেষ্ট। পৃথিবীতে জীবনধারণের জন্যে প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণ সংগ্রহ করার জন্যে এত তাড়া নেই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠারও কিছু নেই।
    সালাতের দিকে মনোনিবেশ করার জন্যে আরেকটু বেশি গতিময় হওয়া চাই।বিলম্ব হলেই বিড়ম্বনা। পূণ্যের খাতায় শূন্য উঠতে পারে।
    জান্নাতের জন্যে আরও বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন আছে। জান্নাত অভিমুখে এগিয়ে যাওয়া অভিযাত্রীদের সাথে নিজের গতির তুলনা করারও দরকার আছে। খানিকটা পিছিয়ে গেলেই অনেকটা এগিয়ে যাওয়ার সংকল্প থাকা নেহায়েত জরুরি।
    আল্লাহর দিকে? সেভাবেই ছুটে যেতে হবে, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যেভাবে ভয়ার্ত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছোটে।فرار এমন এক অর্থের প্রতিনিধিত্ব করে, যা চূড়ান্ত পরিণতি থেকে পরিত্রাণের জন্যে উদ্বেগাকুল ছোটাছুটি'র দ্যোতনা-কে প্রকাশ করে। ভয় থেকে নিরাপত্তার দিকে ছুটে যাওয়া, নিশ্চিত মরণ থেকে নিশ্চিত শরণের দিকে ছুটে যাওয়া।
    পেছনে ধাবমান কোনো নেকড়ের অস্তিত্ব যখন টের পাবো,তখন তার থাবা থেকে বাঁচার জন্যে আমি এক মুহূর্তও এদিক-সেদিক না ভেবে প্রাণ হাতে নিয়ে ছুটে যাবো।ঠিক সেভাবেই শয়তানের ওয়াসওয়াসা আমার ভিতরে অনুভূত হওয়ার সাথে সাথেই আমি প্রাণভয়ে শঙ্কিত হবো,প্রাণ হাতে নিয়ে আল্লাহর কাছেই ছুটে যাবো।
    নাফসের চাবুকাঘাতে প্রাণের প্রাণনা ওষ্ঠাগত হয়ে গেলেও আমার হতাশা নেই ;কারণ, এই মুহুর্তেই আমি আমার শেষ ভরসাস্থল আল্লাহর দিকে রুদ্ধশ্বাসে ছুটে যাবো।

  • #2
    মাশাল্লাহ।
    ان المتقین فی جنت ونعیم
    سورة الطور

    Comment


    • #3
      মাসাআল্লাহ, চমৎকার লেখা।
      বারাকাল্লাহু ফিকা...আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ প্রিয় ভাই!

        জাযাকাল্লাহ ‘প্রিয় শাইখ’, আপনার উসীলায় লেখাটি এখানে আসার আগেই পড়ে ফেলেছি, এবং খুব উপকৃত হয়েছি!
        نحن الذين بايعوا محمدا، على الجهاد ما بقينا أبدا

        Comment

        Working...
        X