Announcement

Collapse
No announcement yet.

হাদিসে কাফেরদের নারী-শিশু হত্যা করতে নিষেধ এসেছে কি? এ নিষেধের কারণ কি?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • হাদিসে কাফেরদের নারী-শিশু হত্যা করতে নিষেধ এসেছে কি? এ নিষেধের কারণ কি?

    প্রশ্ন. হাদিসে কাফেরদের নারী-শিশু হত্যা করতে নিষেধ এসেছে কি? এ নিষেধের কারণ কি?

    উত্তর:


    হ্যাঁ, একাধিক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইচ্ছাকৃত কাফেরদের নারী-শিশু হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন-
    «وجدت امرأة مقتولة في بعض مغازي رسول الله صلى الله عليه وسلم، «فنهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن قتل النساء والصبيان».
    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন এক যুদ্ধে এক মহিলাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল। (তা দেখে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহিলা ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করে দেন।” -সহিহ বুখারী ৩০১৫, সহিহ মুসলিম ১৭৪৪


    রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
    كنا مع رسول الله -صلى الله عليه وسلم- في غزوة، فرأى الناس مجتمعين على شيء، فبعث رجلا، فقال: "انظر علام اجتمع هؤلاء" فجاء، فقال: على امرأة قتيل. فقال: "ما كانت هذه لتقاتل"، قال: وعلى المقدمة خالد بن الوليد، فبعث رجلا، فقال: "قل لخالد: لا يقتلن امرأة ولا عسيفا". (قال شعيب الأرنؤوط: إسناده صحيح)
    “আমরা এক যুদ্ধে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। তিনি লোকদেরকে একটা কিছুর পাশে একত্রিত দেখতে পেলেন। তখন তিনি একজনকে এ বলে পাঠালেন যে, ‘দেখো তো এরা কেন একত্রিত হয়েছে’? লোকটি এসে জানালেন, (তারা) একজন নিহত মহিলার পাশে একত্রিত হয়েছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আপত্তির সুরে) বললেন, ‘এ তো লড়াই করার মতো ছিল না’। বর্ণনাকারী বলেন, সেনাবাহিনীর সম্মুখভাগের দায়িত্বে খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন লোককে তার কাছে এ নির্দেশ দিয়ে পাঠালেন যে, খালিদকে বলবে সে যেন কোন মহিলাকে বা শ্রমিককে হত্যা না করে।” –সুনানে আবু দাউদ ২৬৬৯


    এ সকল হাদীসের আলোকে উলামায়ে ইসলাম ইচ্ছাকৃত নারী-শিশুদের হত্যা করা নাজায়েয বলেছেন।
    সহিহ মুসলিমের উল্লিখিত ১৭৪৪ নং হাদীসের ব্যাখ্যায় নববী রহ. (৬৭৬ হি.) বলেন-
    أجمع العلماء على العمل بهذا الحديث وتحريم قتل النساء والصبيان.اهـ
    “উলামায়ে কেরাম এই হাদীসের মর্মের উপর আমল করা ও নারী-শিশুদের হত্যা করা হারাম হওয়ার ব্যাপারে একমত”। –শরহু মুসলিম লিননববী ১২/৪৮

    ইবনে বাত্তাল রহ. (৪৫৯ হি বলেন,
    ولا يجوز عند جميع العلماء قصد قتل نساء الحربيين ولا أطفالهم.اهـ
    “ইচ্ছাকৃত হারবিদের নারী ও শিশুদের হত্যা করা সকল আলেমের নিকটই নাজায়েয।” -শরহু সহিহিল বুখারী, ৫/১৭০

    ইমাম কাসানি রহ. (৫৮৭ হি.) বলেন-
    أما حال القتال فلا يحل فيها قتل امرأة ولا صبي ... أما المرأة والصبي، فلقول النبي - عليه الصلاة والسلام - «لا تقتلوا امرأة ولا وليدا» وروي أنه - عليه الصلاة والسلام - رأى في بعض غزواته امرأة مقتولة فأنكر ذلك وقال - عليه الصلاة والسلام -: «هاه ما أراها قاتلت، فلم قتلت؟ ونهى عن قتل النساء والصبيان».اهـ
    “যুদ্ধাবস্থায় নারী-শিশুদের হত্যা করা জায়েজ নেই। … কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা নারী ও শিশুদের হত্যা করো না। আরো বর্ণিত আছে, তিনি কোন এক যুদ্ধে একজন মহিলাকে নিহত দেখতে পেয়ে তাতে আপত্তি জানিয়ে বললেন- আফসোস! এ তো লড়াই করেছে মনে হয় না; তাহলে কেন তাকে হত্যা করা হলো? তখন তিনি নারী-শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করে দেন।” –বাদায়িউস সানায়ে ৬/৬৩

    হত্যা নিষেধ হওয়ার কারণ

    হত্যা নিষেধ হওয়ার কারণ হল, নারী-শিশুদের শরীর যুদ্ধের উপযুক্ত নয় এবং সাধারণত তারা যুদ্ধে আসে না। পুরুষরাই যুদ্ধের উপযোগী এবং সাধারণত তারাই যুদ্ধে এসে থাকে। অতএব, কাফেরদের বয়স্ক পুরুষরাই স্বাভাবিক মুসলমানদের জন্য হুমকি স্বরূপ, নারী-শিশুরা নয়, বরং তারা বন্দী হওয়ার পর মুসলমানদের গনিমতে পরিণত হবে। তাই হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন, রাবাহ ইবনে রবি রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসে দেখেছি যে, হত্যা নিষেধের কারণ বলেছেন, ‘এ তো যুদ্ধ করার মতো ছিল না’।

    কাসানী রহ. (৫৮৭ হি.) নিষেধের কারণ প্রসঙ্গে বলেন,
    لأن هؤلاء ليسوا من أهل القتال.اهـ
    “কেননা, তারা লড়াই করার উপযুক্ত নয়।”- বাদায়িউস সানায়ে ৬/৬৩

    ইবনে বাত্তাল রহ. (৪৫৯ হি.) বলেন,
    لأنهم ليسوا ممن قاتل فى الغالب .اهـ
    “কেননা, তারা সাধারণত যুদ্ধ করতে আসে না।”- শরহু সহিহিল বুখারী, ৫/১৭০

    বুরহানুদ্দিন মারগিনানী রহ. (৫৯৩ হি.) বলেন
    ولا يقتلوا امرأة ولا صبيا …" لأن المبيح للقتل عندنا هو الحراب ولا يتحقق منهم.اهـ
    “মুসলিম মুজাহিদরা নারী-শিশুদের হত্যা করবে না। … কারণ, আমাদের মতে হত্যার বৈধতা প্রদানকারী কারণ হল, যুদ্ধের উপযুক্ততা। আর তা তাদের মধ্যে নেই।” -হিদায়া ২/৩৮০
    ***

    বি.দ্র.
    ১. ইচ্ছাকৃত হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত নিহত হয়ে গেলে কোন সমস্যা নেই।

    ২. হত্যা নিষেধ করা হয়েছে এজন্য যে, তারা যুদ্ধের উপযোগী নয় এবং তারা যুদ্ধ করতে আসে না। অতএব, যাদের বেলায় এর ব্যতিক্রম হবে (তথা নারী-শিশুরাও যুদ্ধে শরীক হবে) তাদের হত্যা করতে সমস্যা নেই।
    সামনে আমরা এ দু’টি মাসআলা আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।


  • #2
    আল্লাহ আপনাদের কাজগুলো কবুল করুন আমীন।
    ان المتقین فی جنت ونعیم
    سورة الطور

    Comment

    Working...
    X