Announcement

Collapse
No announcement yet.

জাবিল কুরবা কারা? তাদেরকে কেন খুমুসে অংশ দেয়া হতো?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জাবিল কুরবা কারা? তাদেরকে কেন খুমুসে অংশ দেয়া হতো?

    প্রশ্ন: জাবিল কুরবা কারা? তাদেরকে কেন খুমুসে অংশ দেয়া হতো?

    উত্তর:

    জাবিল কুরবা অর্থ- নিকটাত্মীয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটাত্মীয়রা খুমুসে একটা অংশ পেত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
    وَاعْلَمُوا أَنَّمَا غَنِمْتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ
    “(হে মুসলিমগণ!) জেনে রাখ, তোমরা যা কিছু গনিমত হিসেবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ আল্লাহর, রাসূলের, (রাসূলের) নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনের এবং এতীম, মিসকিন ও মুসাফিরদের।” –সূরা আনফাল: ৪১


    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটাতত্মীয় চার বংশ: ১. বনু হাশিম; ২. বনু মুত্তালিব; ৩. বনু নওফেল; ও ৪. বনু আব্দে শামস।


    কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উর্ধ্বতন পিতৃ-পুরুষ আব্দে মানাফের চার সন্তান: হাশিম, মুত্তালিব, নওফেল ও আব্দে শামস। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাশিমি বংশের। কাজেই এই চার বংশের সবাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটাত্মীয়। (মাবসূত- সারাখসী, ১০/১২)


    তবে আয়াতে উদ্দেশ্য বনু হাশেম ও বনু মুত্তালিব। এ দুই বংশের মুসলমানগণই শুধু খুমুসে অংশ পেতেন। বনু নওফেল ও বনু আব্দে শামস পেতো না। ইমাম সারাখসী রহ. (৪৯০ হি.) বলেন,
    وهم صلبية بني هاشم وبني المطلب. اهـ
    “জাবিল কুরবা হলেন, হাশিম এবং মুত্তালিবের বংশধরগণ।” –মাবসূত: ১০/১২


    জাবিল কুরবাকে অংশ দেয়ার কারণে

    জাবিল কুরবাকে অংশ দেয়া হয়েছে তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নুসরত করার কারণে। জাহিলি-ইসলাম উভয় যামানায় তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিল। মক্কার কুরাইশরা যখন একজোট হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামসহ মুসলিমদের বয়কট করেছিল, তখন বনু হাশেম এবং বনু মুত্তালিব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিল। তারাও শিয়াবে আবী তালেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বন্দীদশায় ছিলেন। যেহেতু বনু হাশেম ও বনু মুত্তালিব সর্বদা রাসূলের সাথে ছিল এবং দুর্দিনে নুসরত করেছিল, তাই আল্লাহ তাআলা এ নুসরতের প্রতিদানস্বরূপ তাদেরকে খুমুস অংশ দিয়েছেন; শুধু নিকটাত্মীয় হওয়ার কারণে নয়। বনু আব্দে শামস ও বনু নাওফেল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিপক্ষে কুরাইশের পক্ষে যোগ দিয়েছিল। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে অংশ দেননি। বংশীয়ভাবে নিকটাত্মীয় হওয়া সত্তেও তারা হকদার ছিল না; যেহেতু তারা নুসরত করেনি। (রদ্দুল মুহতার ৪/১৪৯)


    যুবায়র ইবনু মুতঈম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,
    لما قسم رسول الله صلى الله عليه وسلم سهم القربى من خيبر بين بني هاشم وبني المطلب جئت أنا وعثمان بن عفان، فقلت: يا رسول الله، هؤلاء بنو هاشم لا ينكر فضلهم لمكانك - الذي وصفك الله عز وجل به - منهم، أرأيت إخواننا من بني المطلب أعطيتهم وتركتنا، وإنما نحن وهم منك بمنزلة واحدة. قال: " إنهم لم يفارقوني في جاهلية ولا إسلام، وإنما هم بنو هاشم وبنو المطلب شيئا واحدا" قال: ثم شبك بين أصابعه. [رواه النسائي في سننه (4137)، وأحمد فى المسند (16741)؛ قال شعيب الأرؤوط في تحقيق المسند: إسناده حسن، محمد بن إسحاق- وإن كان مدلسا وقد عنعن- قد صرح بالتحديث عند الطبري والبيهقي، فانتفت شبهة تدليسه، وبقية رجاله ثقات رجال الشيخين. اهـ ]
    “যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাইবারের গনিমত থেকে জাবিল কুরবার অংশ বনু হাশিম এবং বনু মুত্তালিবের মাঝে বন্টন করলেন; আমি এবং উসমান বিন আফফান রাসূলের নিকট আসলাম এবং আরজ করলাম, ওহে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তাআলা আপনার মর্যাদার যে বিবরণ দিয়েছেন, সে কারণে আপনি বনু হাশিমের মধ্য থেকে হওয়ায় বনু হশিমের মর্যাদা আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। কিন্তু আপনি আমাদের ভাই বনু মুত্তালিবকে দিচ্ছেন আর আমাদেরকে দিচ্ছেন না- অথচ আমরা এবং তারা উভয়ই আপনার একই স্তরের নিকটাত্মীয়! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জওয়াব দিলেন, তারা জাহেলি-ইসলাম কোন যুগেই আমার থেকে পৃথক হয়নি। বনু হাশেম এবং বনু মুত্তালিব তো এক দেহের ন্যায়। এ বলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তার এক হাতের অঙ্গুলি অপর হাতের অঙ্গুলিতে প্রবেশ করালেন।” –মুসনাদে আহমদ: ১৬৭৪১, সুনানে নাসায়ী: ৪১৩৭


    উল্লেখ্য, যুবায়র ইবনু মুতঈম রাদিয়াল্লাহু আনহু বনু নওফেলের আর উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বনু আব্দে শামসের লোক ছিলেন। এ কারণেই মূলত তাদের খটকা লেগেছিল। (মাবসূত- সারাখসী, ১০/১২)





  • #2
    মাশাআল্লাহ, উপকারী পোষ্ট।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তা‘আলা আপরার ইলমে আরো বারাকাহ দান করুন। আমীন
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        আল্লাহ আপনাদের কাজ কবুল করুন আমীন।
        والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

        Comment


        • #5
          আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। প্রিয় পোষ্টকারী ভাই লিখাটি অনেক উপকারি ও গুরুত্বপূর্ন এবং অনেক সুন্দর উপস্থাপন হয়েছে মাশাা আল্লাহ । তবে ভাইএকটাউপসংহার থাকলে আরো সুন্দর হতো ইনশাআল্লাহ। আশা করি একটা উপসংহার দিয়ে ইডিট করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
          হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

          Comment


          • #6
            ভাই! বনু হাশেম ও বনু আব্দুল মুত্তালিবের ধনী-গরীব সকলকেই কি খুমুস থেকে অংশ দেওয়া হবে? নাকি শুধু তাদের মধ্যে দরিদ্রদেরকে?
            আরেকটা বিষয় হল, এই হুকুমটা কি এখনো বাকি আছে?

            অনেক আগে পড়ার কারণে এগুলো অস্পষ্ট হয়ে গেছে যেহেনে। তাই অনুগ্রহ পূর্বক উত্তর দিলে উপকৃত হবো।

            Comment


            • #7
              Originally posted by salahuddin aiubi View Post
              ভাই! বনু হাশেম ও বনু আব্দুল মুত্তালিবের ধনী-গরীব সকলকেই কি খুমুস থেকে অংশ দেওয়া হবে? নাকি শুধু তাদের মধ্যে দরিদ্রদেরকে?
              আরেকটা বিষয় হল, এই হুকুমটা কি এখনো বাকি আছে?

              অনেক আগে পড়ার কারণে এগুলো অস্পষ্ট হয়ে গেছে যেহেনে। তাই অনুগ্রহ পূর্বক উত্তর দিলে উপকৃত হবো।
              হানাফি মাযহাব মতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লামের ওফাতের পর জাবিল কুরবার অংশটি বহাল নেই। কারণ, জাবিল কুরবার অংশ শুধু নিকটাত্মীয়তার কারণে নয় বরং রাসূলকে নুসরত করার কারণে দেয়া হতো- যেমনটা আগের প্রশ্নে আলোচনা করা হয়েছে। (রদ্দুল মুহতার ৪/১৪৯)


              রাসূলের ইনতিকালের পর তাদের এ বিশেষত্ব বাকি না থাকায় জাবিল কুরবার অংশ এখন আর বহাল নেই। অতএব, খুমুস এখন শুধু এতিম ও গরীব-মিসকিনদের হক। ধনীদের এতে কোন অংশ নেই। রাসূলের যামানায় জাবিল কুরবার ধনী-গরীব সকলেই এ অংশটি পেতেন নুসরতের কারণে। রাসূলের ইন্তেকালের পর যেহেতু নুসরতের ভিত্তিতে দেয়া হবে না, বরং গরীব ও হাজতমন্দ হওয়ার ভিত্তিতে দেয়া হবে, তাই জাবিল কুরবার ধনীরা খুমুসে কোন অংশ পাবে না। তবে অন্যান্য গরীবদের ন্যায় জাবিল কুরবার গরীবরাও হকদার। বরং জাবিল কুরবার গরীবদেরকে অন্যা গরীবদের আগে দিবে। কারণ, অন্য গরীবরা যাকাতের অংশ পায়; কিন্তু জাবিল কুরবার জন্য যাকাত খাওয়া জায়েয নেই। (রদ্দুল মুহতার ৪/১৪৯)

              Comment


              • #8
                অনেক অনেক জাযাকাল্লাহ!! শুকরিয়া। নিয়মিত চালিয়ে গেলে অনেক ফায়দা হবে।

                Comment


                • #9
                  আল্লাহ আমাদের কাজ কবুল করুন আমীন।
                  ان المتقین فی جنت ونعیم
                  سورة الطور

                  Comment


                  • #10
                    মুহতারাম ভাই- ফোরামে আপনার পোষ্ট নিয়মিত চাই..................।
                    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                    Comment


                    • #11
                      জাযাকাল্লাহ ভাই খুবই উপকারী পোষ্ট দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পারলাম।

                      Comment

                      Working...
                      X