Announcement

Collapse
No announcement yet.

যে সকল ক্ষেত্রে মুসলিম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব (পর্ব-৪ তাকী উসমানী দা. বা. এর মত পর

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যে সকল ক্ষেত্রে মুসলিম শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ ওয়াজিব (পর্ব-৪ তাকী উসমানী দা. বা. এর মত পর


    গতপর্বে বিধান পরিবর্তনকারী শাসক -তাকে মুরতাদ বলা হোক বা না হোক সর্বাবস্থায় তার- বিরুদ্ধে বি্দ্রোহ ফরয হওয়ার স্বপক্ষে কুরআন-সুন্নাহ ও কয়েকজন আলেমের বক্তব্য পেশ করেছি। এ পর্বে আরো কয়েকজন আলেমের উদ্ধৃতির পাশাপাশি এ মাসয়ালাতে আল্লামা তাকী উসমানী দা. বা. এর বক্তব্যের পর্যালোচনা পেশ করছি ইনশাআল্লাহ-

    ৪. মুহাদ্দিস আবুল আব্বাস কুরতুবী মালেকী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৬৫৬ হি.) বলেন,
    وكذلك لو ترك إقامة قاعدة من قواعد الدين كإقام الصلاة وصوم رمضان وإقامة الحدود ومَنَع من ذلك، وكذلك لو أباح شرب الخمر والزنا ولم يمنع منها لا يختلف في وجوب خَلعِهِ. (المفهم لما أشكل من تلخيص صحيح مسلم: 4/39 ط. دار ابن كثير: 1497)

    এমনিভাবে শাসক যদি নামায, রমযানের রোযা, হুদুদ তথা দণ্ডবিধির মতো দ্বীনের মৌলিক কোন বিধান প্রতিষ্ঠা করা ছেড়ে দেয় এবং সেগুলো পালনে বাধা দেয়, তদ্রুপ সে যদি মদপান ও যিনাকে বৈধতা দান করে এবং সেগুলো থেকে বারণ না করে, তখনও তার অপসারণ ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। -আলমুফহিম, ৪/৩৯

    ৫. মুফাসসির আবু আব্দুল্লাহ কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৬৭১ হি.) বলেন,

    الإمام إذا نصب ثم فسق بعد انبرام العقد فقال الجمهور: إنه تنفسخ إمامته ويخلع بالفسق الظاهر المعلوم، .... وقال آخرون: لا ينخلع إلا بالكفر أو بترك إقامة الصلاة أو الترك إلى دعائها أو شي من الشريعة، لقوله عليه السلام في حديث عبادة: (وألا ننازع الأمر أهله قال: إلا أن تروا كفرا بواحا عندكم من الله فيه برهان وفي حديث عوف بن مالك: (لا ما أقاموا فيكم الصلاة) الحديث. أخرجهما مسلم. (الجامع لأحكام القرآن: 1/271 ط. دار الكتب المصرية: 1384)

    ইমাম ফাসেক হয়ে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমদের মতে সে অপসারিত হয়ে যাবে, এবং প্রকাশ্য ও সুবিদিত ফিসকের কারণে তাকে অপসারণ করতে হবে, ….. আর অন্যান্য আলেমদের মতে ইমাম অপসারিত হবে না, যতক্ষণ না সে কুফরে লিপ্ত হয় কিংবা নামায পরিত্যাগ করে, অথবা নামাযের দিকে আহ্বান করা ছেড়ে দেয়, কিংবা শরিয়তের কোন বিধান কায়েম করা ছেড়ে দেয়। কেননা উবাদা বিন সামেত রাযি. বলেছেন, “রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের থেকে এ মর্মে বাইয়াত নিয়েছেন যে, আমরা আমিরদের সাথে ক্ষমতা নিয়ে যুদ্ধ করবো না, (রাসূল বলেছেন) তবে যদি তোমরা সুস্পষ্ট কুফরী দেখতে পাও, যে ব্যাপারে তোমাদের নিকট আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে।” আউফ বিন মালিকের সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, “যতদিন তারা তোমাদের মাঝে নামায কায়েম করবে ততদিন তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে না।” ইমাম মুসলিম উল্লিখিত হাদিসদ্বয় বর্ণনা করেছেন। -তাফসীরে কুরতুবী, ১/২৭১


    ৬. ইমাম মুহাম্মদ আলআব্বী রহ . (মৃ: ৮২৭ হি.) বলেন,

    لا خلاف أنه يجب على المسلمين عزل الإمام إذا فسق بكفر، وكذلك إذا ترك إقامة الصلاة والدعاء إليها أو غير شيئا من أصول الشرع.(إكمال إكمال المعلم: 5 : 180 ط. دار الكتب العلمية)

    এ ব্যাপারে ইমামদের মাঝে কোন মতভেদ নেই যে, ইমাম মুরতাদ হয়ে গেলে তাকে অপসারণ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে, তেমনিভাবে নামায পরিত্যাগ করলে, নামাযের দিকে আহ্বান করা পরিত্যাগ করলে কিংবা শরিয়তের কোন মৌলিক বিধান পরিবর্তন করলে তাকে অপসারণ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। -ইকমালু ইকমালিল মু’লিম, ৫/১৮০

    ৭. শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. (মৃত্যু ৭২৮ হি.) বলেন,
    فأيما طائفةٍ امتنعت من بعض الصلوات المفروضات، أو الصيام، أو الحج، أو عن التزامِ تحريم الدِّماء، والأموال، والخمر، والزنا، والميسِرِ، أو عن نكاحِ ذوات المحارمِ، أو عن التزام جهاد الكفار، أو ضربِ الجزية على أهل الكتاب، وغيرِ ذلك من واجبات الدين ومُحرَّماتِه التي لا عُذرَ لأحد في جحودِها وتركِها التي يُكَفَّرُ الجاحدُ لوجوبها، فإن الطائفةَ الممتنِعَةَ تُقَاتَلُ عليها وإن كانت مُقِرَّةً بها، وهذا مما لا أعلمُ فيه خِلافا بين العلماء. (مجموع الفتاوى: 28/503)

    “মুসলমানদের কোনো দল যদি কোন ফরজ নামাজ, রোযা, হজ্জ ‘আদায় করতে’ অস্বীকৃতি জানায় বা অন্যায় রক্তপাত, অন্যের মাল ভক্ষণ, মদ, জিনা, জুয়া, মাহরামকে বিয়ে করা ইত্যাদি বিষয়কে নিজেদের উপর নিষিদ্ধ করতে সম্মত না হয় কিংবা কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ও আহলে কিতাবদের উপর জিযিয়া ধার্য করাকে নিজেদের উপর আবশ্যক করে না নেয়, তেমনিভাবে দ্বীনের এমন ফরজ বা হারাম বিষয়াবলী মেনে নেয়া থেকে বিরত থাকে যেগুলোকে অস্বীকার করা বা ছাড়ার ব্যাপারে কোনো ওজর গ্রহণযোগ্য হয় না এবং যার অস্বীকারকারী কাফের বলে বিবেচিত হয়, তবে এইসব আমল পালনে অসম্মত দলের বিরুদ্ধে কিতাল করতে হবে। যদিও তারা এ ইবাদাতগুলোকে স্বীকার করে। এ ব্যাপারে আমার জানামতে উলামায়ে কেরামের মাঝে কোনো দ্বিমত নেই।” -মাজমুউল ফাতাওয়া, ২৮/৫০৩

    ৮. আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ. (মৃত্যু ১৩৫২ হি.) বলেন,
    نعم إذا رأوا منه كفرا بواحا لا يبقى فيه تأويل، فحينئذ يجب عليهم أن يخلعوا ربقته عن أعناقهم، فإن حق الله أوكد. ثم هل من طاقة البشر أن لا يختار إلا حقا في جميع الأبواب، فإذا تعذر أخذ الحق في جميع الأبواب - وإن أمكن ذهنا - لا بد أن يحد له حد، وهو الإغماض في الفروع، فإذا وصل الأمر إلى الأصول حرم السكوت، ووجب الخلع. وهو معنى قوله: «وإن أمر عليكم عبد حبشي». فافهم. (فيض الباري: 6 : 459 ط. دار الكتب العلمية: 1426 هـ).

    “হাঁ, প্রজারা যদি শাসক থেকে কোন সুস্পষ্ট কুফর দেখতে পায়, যাতে তাবীলের কোন অবকাশ থাকে না, তখন তাদের উপর আবশ্যক হবে তার থেকে আনুগত্যের হাত গুটিয়ে নেয়া। ..... কেননা মানুষের জন্য (মানবীয় দূর্বলতাবশত) সবক্ষেত্রে হক অবলম্বন করা সম্ভব হয় না, তাই শাসকের ছোট-খাট বিচ্যুতির ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে না, কিন্তু যখন শাসকের বিচ্যুতি ইসলামের মৌলিক বিষয়ের সাথে সাংঘর্ষিক হবে (অর্থাৎ সে ইসলামের মৌলিক কোন বিধান পরিবর্তন করবে) তখন চুপ থাকা হারাম হবে, এবং তাকে অপসারণ করা ফরজ হবে। এটাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, “যদিও তোমাদের উপর কোন হাবশীকে আমীর নিযুক্ত করা হয় যে তোমাদের আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পরিচালনা করে তাহলে তোমরা তার আনুগত্য করো” এর অন্তর্নিহিত অর্থ।” -ফয়যুল বারী, ৬/৪৫৯

    ৯. হাকিমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ ইমামের বিপক্ষে বিদ্রোহের বিধানকে সাত প্রকারে বিভক্ত করেছেন, সপ্তম প্রকারে তিনি বলেন,

    فسق متعدي يعني ظلم اختيار كرے او اس كا محل مظلمومين كا دين هو، يعني أن كو معاصي پر مجبور كرے ، مگر يه فسق أسي وقت تك هے جبكه اس كا منشاء استخفاف يا استقباح دين أور استحسان كفر يا معصيت نه هو، بلكه إغاظت مُكْرَه هو، جيسے أكثر كسي خاص وقتي اقتضاء سے كسي خاص شخص پر اكراه كرنے ميں إيسا هي هوتا هے، ورنه يه بھي حقيقتا كفر هے، أور قسم ثالث ميں داخل هے، يا في الحال تو منشاء إكراه كا استخفاف وغيره نه هو، ليكن اكراه بشكل قانون أيسے طور ر هو كه إيك مدت تك اس پر عمل هونے سے في المآل ظن غالب هو كه طبائع ميں استخفاف پيدا هو جاوےگا ، تو إيسا إكراه بھي بناء بر أصل مقدمة الشيء بحكم ذلك الشيء بحكم كفر هوگا. (أمداد الفتاوى: 5/130 ط. مكتبة دار العلوم كراتشي: 1431 ه.)

    “যদি শাসক ফিসকে মুতাআদ্দী করে, অর্থাৎ এমন জুলুম-ফিসক করে যার সম্পর্ক প্রজাদের দ্বীনের সাথে হয় এবং তাদেরকে গুনাহতে বাধ্য করে, কিন্তু এই ফিসকের কারণ দ্বীনের প্রতি ঘৃণা কিংবা কুফরকে পছন্দ করার কারণে না হয়, অন্যথায় তা হাকিকি কুফর হবে, কিংবা এখন তো গুনাহতে বাধ্য করার কারণ শরিয়তের বিধানকে তাচ্ছিল্য করা না হয় কিন্তু কানুন তৈরী করে ব্যাপকভাবে গুনাহতে বাধ্য করা হয়, যা দীর্ঘদিন পর্যান্ত চালু থাকার কারণে পরিশেষে শরিয়তের বিধানের প্রতি ঘৃণা তাচ্ছিল্য এসে যাওয়ার প্রবল ধারণা হয়, তো এভাবে কানুন তৈরী করে মানুষকে গুনাহতে বাধ্য করাও কুফরের হুকুমে।” -ইমদাদুল ফাতাওয়া, ৫/১৩০

    এরপর এর টীকায় তিনি বলেন,
    چنانچه فقهاء كا أذان وختان كے (جو كه سنن ميں سے هيں) ترك عام كو استخفاف دين يا موجب محاربۀ تاركين فرمانا صريح دليل هے ايسے عموم كے بحكم كفر هونے كي- ملاحظه هو در مختار و رد المحتار باب الأذان ومسائل شتى حكم الختان - 12- أشرف علي-

    এজন্যই আযান ও খতনা সুন্নতে মুয়াক্কাদা হওয়া সত্ত্বেও ফুকাহায়ে কেরাম আযান ও খতনা ব্যাপকভাবে ছেড়ে দেওয়াকে দ্বীনকে গুরুত্বহীন মনে করার দলিল গণ্য করেছেন এবং যারা এবিষয়গুলো ব্যাপকভাবে ছেড়ে দিবে তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করা ওয়াজিব বলেছেন, এটা প্রমাণ করে যে কানুনের মাধ্যমে মানুষকে ব্যাপকভাবে গুনাহে বাধ্য করা কুফরীর হুকুমে।” -ইমদাদুল ফাতাওয়া, ৫/১৩০

    এখানে থানভী রহ. কথা থেকে স্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে, যে শাসক শরিয়ত পরিপন্থী কানুন তৈরী করে এবং দীর্ঘদীন পর্যন্ত তা জারী রাখে তার বিপক্ষে যুদ্ধ করা যাবে, এবং তিনি এ মাসয়ালাকে ব্যাপকভাবে আযান বা খতনা ছেড়ে দেওয়ার উপর কিয়াস করেছেন, মুফতি তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম থানভী রহ. এর বক্তব্যের যে আরবী ভাষান্তর করেছেন তা থেকে এ বিষয়টি আরো সহজে বুঝে আসে, তার ইবারত দেখুন,

    والقسم السابع: أن يرتكب فسقا متعديا إلى دين الناس، فيُكرههم على المعاصي، وحكمه حكم الإكراه المبسوط في محله، ويدخل هذا الإكراه في بعض الأحوال في الكفر حقيقة أو حكما، وذلك بأن يصرَّ على تطبيق القوانين المصادِمة للشريعة الإسلامية، إما تفضيلا لها على شرع الله، وذلك كفر صريح، أو توانيا وتكاسلا عن تطبيق شريعة الله، بما يغلب منه الظن أن العمل المستمر على خلاف الشريعة يحدث استخفافا لها في القلوب، فإن مثل هذا التواني والتكاسل، وإن لم يكن كفرا صريحا بحيث يُكَفَّرُ به مرتكبه، ولكنه في حكم الكفر، بدليل ما ذكره الفقهاء من أنه لو ترك أهل بلدة الأذان حلَّ قتالهم، لأنه من أعلام الدين، وفي تركه استخفاف ظاهر به، راجع باب الأذان من رد المحتار: (1 : 384).
    وحينئذ يلحق هذا القسم السابع بالقسم الثالث، وهو الكفر البواح، فيجوز الخروج على التفصيل الذي سبق في حكمه. (تكملة فتح الملهم: (3/275 ط. دار إحياء التراث العربي)

    সপ্তম প্রকার, ইমাম এমন কোন ফিসক করে যার সম্পর্ক মানুষের দ্বীনের সাথে, যেমন তাদেরকে গুনাহতে বাধ্য করে, তো এর হুকুম হলো “গুনাহে বাধ্য করার হুকুম” যা ফিকহের কিতাবে বিস্তারিত ভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই বাধ্যকরণ কখনো হাকিকি কুফর হয় আবার কখনো কুফরের হুকুমে হয়, যেমন শরিয়ত পরিপন্থী আইন-কানুন প্রয়োগ করার উপর জমে থাকা, যদি এটা এসব আইন-কানুনকে শরিয়তের চেয়ে উত্তম মনে করার কারণে হয় তাহলে তা হবে সুষ্পষ্ট কুফর, আর যদি অলসতাবশত দীর্ঘদিন যাবত শরিয়ত পরিপন্থী বিধান জারী করে রাখে, যার কারণে শরিয়তের প্রতি অন্তরে তুচ্ছতা এসে যাওয়ার প্রবল ধারণা হয়, তাহলে যদিও এটা এমন সুস্পষ্ট কুফরী নয় যার কারণে এমন শাসককে কাফের বলা হবে, কিন্তু এটাও কুফরের হুকুমে, এর দলিল হলো, ফুকাহায়ে কেরামের এই বক্তব্য- “যদি কোন দেশের লোকেরা আযান ছেড়ে দেয় তাহলে তাদের সাথে যুদ্ধ করা বৈধ হয়ে যাবে, কেননা আযান শরিয়তের শিয়ার বা নিদর্শন, তাই আযান ছেড়ে দেওয়া শরিয়তের প্রতি প্রকাশ্য তুচ্ছতার দলিল। দেখুন, রদ্দুল মুহতার, ১/৩৮৪ (তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, ৩/২৭৫)

    (মুফতি তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমের মত পর্যালোচনা)


    এখানে প্রশ্ন হতে পারে যে, মুফতি তাকী উসমানী তো বর্তমান শাসকদের বিপক্ষে বিদ্রোহকে সমর্থন করেন না? তাহলে তার মতের বিপক্ষে তার বক্তব্য দিয়ে দলিল পেশ করা কি ঠিক হবে?
    তো এর উত্তর হলো, প্রথমত, আমরা তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমের বক্তব্যকে স্বতন্ত্র কোন দলিল হিসেবে উল্লেখ করিনি, বরং থানভী রহিমাহুল্লাহুর ভাষা প্রাচীন উর্দু হওয়ার কারণে কিছুটা জটিল, পক্ষান্তরে আল্লামা তাকী উসমানী সাহেব তার বক্তব্যকে অত্যন্ত সহজ উসলুবে আরবীতে ভাষান্তর করেছেন, তাই থানভী রহিমাহুল্লাহুর বক্তব্য সহজে বুঝানোর জন্যই আল্লামা তাকী উসমানীর উদ্ধৃতি এসেছে।

    এখন রইল, তিনি যে বর্তমান শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সমর্থন করেন না, তো এর উত্তর হলো, আল্লামা তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম থানভী রহিমাহুল্লাহুর বক্তব্যকে এ মাসয়ালার সবচেয়ে সুন্দর বিশ্লেষণ বলে উল্লেখ করেছেন, আর থানভী রহিমাহুল্লাহুর বক্তব্যের যে আরবী ভাষান্তর তিনি করেছেন তা থেকে বর্তমান শাসকবর্গ, যারা যুগের পর যুগ শরিয়তের খেলাফ আইন-কানুন দ্বারা দেশ পরিচালনা করছে তাদের বিপক্ষে বিদ্রোহ বৈধ হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট, আর কোন আলেমের বক্তব্য যদি তার কাজের বিপরীত হয় তাহলে তার দ্বায়ভার আমাদের উপর বর্তাবে না, বরং এর দ্বায়ভার সম্পূর্ণরুপে তার উপরই বর্তাবে।

    আসলে তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম যখন দেখলেন যে, অনেক আলেমদের মতানুযায়ী, বিশেষকরে আমাদের ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহর মাযহাব এবং উপমহাদেশের শীর্ষস্থানীয় আকাবিরদের একজন হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহিমাহুল্লাহর ফতোয়া থেকে বর্তমান শাসকদের বিপক্ষে বিদ্রোহ বৈধ হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট, অথচ তার নিজস্ব রুচি হলো শাসকদের বিপক্ষে বিদ্রোহ না করা, বরং তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে সংশোধন করা, তাই তিনি আবু হানিফা, থানভী সবার মত দ্বারা জগাখিচুড়ি তৈরী করে একটা হাস্যকর সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন, প্রথমে তো তিনি এই ধারণা খন্ডন করলেন যে, শাসক মুরতাদ হওয়া ব্যতীত কোন ক্ষেত্রেই তার বিপক্ষে বিদ্রোহ করা যাবে না, এক্ষেত্রে তিনি বললেন,

    وربما يفهم بعض الناس: أن الإمام الجائر لا يجوز الخروج عليه في حال من الأحوال ما دام متسميا باسم الإسلام، وليس الأمر على هذا الإطلاق، ولا سيما على مذهب الإمام أبي حنيفة رحمه الله تعالى، يقول الإمام الجصاص في أحكام القرآن تحت قوله تعالى: [لَا يَنَالُ عَهْدِي الظَّالِمِينَ]. «وكان مذهبه مشهورا في قتال الظلمة وأئمة الجور، ولذلك قال الأوزاعي: احتملنا أبا حنيفة على كل شيء حتى جاءنا بالسيف، يعني قتال الظلمة، فلم نحتمله .... وقضيته في أمر زيد بن علي مشهورة، وفي حمله المال إليه وفتياه الناس سرا في وجوب نصرته والقتال معه، وكذلك أمره مع محمد وإبراهيم ابني عبد الله بن حسن». (تكملة فتح الملهم: 3 : 271 ط. دار إحياء التراث العربي)

    “কারো কারো ধারণা হলো, যালেম শাসকের বিপক্ষে কোন অবস্থাতেই যু্দ্ধ করা যাবে না, যতক্ষণ না সে মুসলিম নামধারণ করে থাকে, কিন্তু বিষয়টা বাস্তবে এমন নয়, বিশেষকরে ইমাম আবু হানিফার মাযহাব অনুযায়ী, ইমাম জাসসাস রহ. বলেন, “যালেম শাসকদের বিপক্ষে যুদ্ধ করার ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফার মাযহাব প্রসিদ্ধ, এ কারণেই ইমাম আওযায়ী বলেন, আমরা আবু হানিফার সবকিছুই সহ্য করেছি, কিন্তু যখন সে আমাদের উপর তরবারী নিয়ে সওয়ার হলো –অর্থাৎ যালেম শাসকদের বিপক্ষে যুদ্ধের ফতোয়া দিলো – তখন আমরা আর সবর করিনি। …. যায়েদ বিন আলীর বিদ্রোহের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা তো অনেক প্রসিদ্ধ, তিনি তাকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন এবং তার সহায়তা করা ও তার সঙ্গী হয়ে যুদ্ধ করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে মানুষকে গোপনে ফতোয়া দেন। তেমনিভাবে হাসান রাযিআল্লাহু আনহুর দুই নাতি মুহাম্মদ ও ইবরাহীমের বিদ্রোহের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততাও সকলের জানা। -তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, ৩/২৭১

    এরপর আল্লামা তাকি উসমানী দা.বা. যায়েদ বিন আলী এবং মুহাম্মদ ও ইবরাহীমের বিদ্রোহের ঘটনায় আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহুর সমর্থনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ভরযোগ্য সূত্রের উদ্ধৃতিতে বর্ণণা করেন এবং ইয়াযীদের বিপক্ষে হুসাইন রাযিআল্লাহু আনহুর বিদ্রোহ ও হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বিপক্ষে বড় বড় আলেম ও যাহেদদের বিদ্রোহের দিকেও ইঙ্গিত করেন, কিন্তু এরপর তিনি যে স্ববিরোধী সিদ্ধান্তে পৌঁছেন তা যেমনিভাবে হাস্যকর তেমনিভাবে উম্মাহর এই ক্রান্তিলগ্নে তাদের এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য খুবই হতাশাজনক, তিনি বলেন,

    فالذي يظهر لهذا العبد الضعيف – عفا الله عنه – بعد مراجعة النصوص الشرعية وكلام الفقهاء والمحدثين في هذا الباب، - والله أعلم – أن فسق الإمام على قسمين: الأول: ما يكون مقتصرا على نفسه، فهذا لا يُبيح الخروج عليه، وعليه يُحمل قول من قال: إن الإمام الفاسق أو الجائر لا يجوز الخروج عليه، والثاني : ما كان متعديا، وذلك بترويج مظاهر الكفر وإقامة شعائره، وتحكيم قوانينه، واستخفاف أحكام الدين والامتناع من تحكيم شرع الله مع القدرة على ذلك لاستقباحه، وتفضيل شرع غير الله عليه، فهذا ما يلحق بالكفر البواح، ويجوز حينئذ الخروج بشروطه. (تكملة فتح الملهم: : 272 ط.

    “শরিয়তের দলিল-প্রমান এবং মুহাদ্দিস ও ফকিহদের বক্তব্য থেকে এ মাসয়ালায় আমার যা বুঝে আসছে তা হলো, ইমামের ফিসক দুই প্রকার:

    ক. যা তার নিজের উপর সীমাবদ্ধ থাকে, তো এধরণের ফিসকের কারণে তার বিপক্ষে বিদ্রোহ করা যাবে না। যে আলেমগণ বলেছেন, যালেম ও ফাসেকের শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ করা যাবে না, তাদের বক্তব্যের উদ্দেশ্য এটাই।

    খ. ফিসকে মুতাআদ্দী বা এমন ফিসক যা শাসকের নিজের উপর সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং প্রজাদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে, যেমন শাসক যদি কুফরের শায়ায়ের ও নিদর্শনাবলীর রেওয়াজ দেয়, প্রচার-প্রসার করে, কুফরী আইন-কানুন জারী করে, শরিয়তের বিধি-বিধানকে নগন্য মনে করে এবং শক্তি থাকা সত্ত্বেও শরিয়তের বিধান জারী করা হতে বিরত থাকে, শরিয়তের বিধানকে ঘৃণা করা এবং শরিয়তের বিধানের তুলনায় কুফরী আইন-কানুনকে উত্তম মনে করার কারণে, তাহলে তা সুস্পষ্ট কুফরীর হুকুমে হবে, এবং তখন শর্তসাপেক্ষে বিদ্রোহ বৈধ হবে।” -তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, ৩/২৭২

    পাঠকের কাছে আবেদন প্রথমে আপনি তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুমের পুরো বক্তব্য গভীর মনোযোগে পড়ুন, এরপর এ পর্যালোচনাগুলো দেখুন,

    ১. তিনি বলছেন, “যদি শাসক শরিয়তের বিধানকে ঘৃণা করে এবং শরিয়তের বিধানের তুলনায় কুফরী আইন-কানুনকে উত্তম মনে করে কুফরী কানুন জারী করে তাহলে এটা সুস্পষ্ট কুফরের হুকুমে হবে”। অর্থাৎ তখনও এটা কুফরে বাওয়াহ বা সুস্পষ্ট কুফর হবে না বরং কুফরে বাওয়াহর হুকুমে হবে, অথচ এ ব্যাপারে পুরো উম্মত একমত যে, শরিয়তের কোন বিধান ঘৃণা করা, তাচ্ছিল্য করা কিংবা অন্য কোন বিধানকে শরিয়তের বিধানের চেয়ে উত্তম মনে করা সুস্পষ্ট কুফরী, আল্লাহ তায়ালা বলেন,
    وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ. سورة محمد:8- 9

    “আর যারা কুফর অবলম্বন করেছে তাদের জন্য আছে ধ্বংস। আল্লাহ তায়ালা তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিয়েছেন। তা এই জন্য যে, তারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা অপছন্দ করেছিল। তাই আল্লাহ তায়ালা তাদের আমলসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন।” -সুরা মুহাম্মদ, ৮-৯

    আয়াতের তাফসীরে ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন,
    أي ذلك الإضلال والإتعاس، لأنهم "كرهوا ما أنزل الله" من الكتب والشرائع. "فأحبط أعمالهم" أي ما لهم من صور الخيرات، كعمارة المسجد وقرى الضيف وأصناف القرب، ولا يقبل الله العمل إلا من مؤمن. (تفسير القرطبي: 16/233)

    “এই ধ্বংস ও আমলের ব্যর্থতার কারণ হলো তারা আল্লাহ তায়ালার নাযিলকৃত কিতাব ও বিধানাবলীকে অপছন্দ করেছে। তাই আল্লাহ তায়ালা তাদের নেক আমল, যেমন মসজিদ আবাদ করা, (মুসাফিরদের) মেহমানদারী করা, ইত্যাদিকে বরবাদ করে দিয়েছেন। কেননা আল্লাহ তায়ালা মুমিন ব্যতীত অন্য কারো আমল কবুল করেন না।” -তাফসীরে কুরতুবী, ১৬/২৩৩

    হানাফী মাযহাবের অন্যতম ফকীহ আল্লামা ইবনে নুজাইম রহ. বলেন,
    وبتحسين أمر الكفار اتفاقا حتى قالوا لو قال ترك الكلام عند أكل الطعام من المجوسي حسن أو ترك المضاجعة حالة الحيض منهم حسن فهو كافر. (البحر الرائق: 5/133 ط. دار الكتاب الإسلامي).

    কাফেরদের কোন বিষয়কে ভাল মনে করলে সর্বসম্মতিক্রমে কাফের হয়ে যাবে, এমনকি যদি কেউ বলে, অগ্নীপূজারীরা যে খাবারের সময় কথা না বলা, কিংবা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীর সাথে একশয্যায় না শোয়া এগুলো ভালোই তাহলে সেও কাফের হয়ে যাবে। -বাহরুর রায়েক, ৫/১৩৩

    ফিকহে হান্বলীর বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আল্লামা মুসা বিন আহমদ হাজাভী রহ. (মৃ: ১০৫৪ হি.) বলেন,

    من أشرك بالله ... أو سب الله أو رسوله أو استهزأ بالله أو كتبه أو رسله قال الشيخ: أو كان مبغضا لرسوله أو لما جاء به اتفاقا وقال: أو جعل بينه وبين الله وسائط يتوكل عليهم ويدعوهم ويسألهم إجماعا انتهى أو سجد لصنم أو شمس أو قمر أو أتى بقول أو فعل صريح في الاستهزاء بالدين ... كفر. الإقناع: (4 : 285)ط. دارة عبد العزيز 1423.

    যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে, ..... আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়, আল্লাহ বা আল্লাহ তায়ালার নাযিলকৃত কিতাবসমূহ কিংবা তাঁর প্রেরিত রাসূলগণকে নিয়ে উপহাস করে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বা তার আনীত কোন বিধানকে অপছন্দ করে তবে সে সর্বসম্মতিক্রমে ... কাফের হয়ে যাবে। -আলইকনা’ ৪/২৮৫


    ইমাম ইবনুল হুমাম রহ. বলেন,
    ولاعتبار التعظيم المنافي للاستخفاف كفر الحنفية بألفاظ كثيرة، وأفعال تصدر من المنتهكين لدلالتها على الاستخفاف بالدين .....بل بالمواظبة على ترك سنة استخفافا بها بسبب أنه فعلها النبي صلى الله عليه وسلم زيادة أو استقباحها كمن استقبح من آخرَ ..... إحفاءَ شاربه. (البحر الرائق: 5/129 رد المحتار: 4/222)

    ইমানের জন্য (আল্লাহ, আল্লাহর রাসূল ও তাদের বিধানের প্রতি) সম্মানবোধ থাকা আবশ্যক, এজন্যই হানাফী ফকিহগণ এমন অনেক কথা ও কাজের কারণে মানুষকে তাকফীর করেছেন যা থেকে শরিয়তের বিধানের প্রতি তাচ্ছিল্য বুঝে আসে, ..... কিংবা রাসূলের কোন সুন্নতের প্রতি ঘৃণা বুঝে আসে, যেমন কেউ মোচ খুব ছোট করে ছাটলো এটা দেখে কেউ ঘৃণা প্রকাশ করলো, (তো তার এই কাজের দ্বারা যেহেতু মোচ ছোট করে ছাটা যা সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ পায় তাই এটা কুফরী হবে।) -আলবাহরুর রায়েক, ৫/১২৯ ফতোয়ায়ে শামী, ৪/২২২

    ২. তিনি প্রথমে এ মূলনীতি দাড় করাচ্ছেন যে, ফিসকে লাযেম বা যে ফিসক শুধু শাসকের ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ, প্রজাদের উপরে তার প্রভাব পড়ে না, সে ফিসকের কারণে বিদ্রোহ বৈধ নয়, পক্ষান্তরে যে ফিসক শাসকের ব্যক্তিগত জীবনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রজাদের উপরও তার মন্দ প্রভাব পড়ে সে ফিসকের কারণে বিদ্রোহ বৈধ। বরং এখানে তিনি তাদের মত খন্ডন করছেন যারা মনে করে হানাফী মাযহাব অনুযায়ী কুফর ব্যতীত অন্য কোন সূরতেই শাসকের বিপক্ষে বিদ্রোহ যায়েজ নেই।
    এরপর ফিসকে মুতাআদ্দীর উদাহরণ টানতে গিয়ে তিনি বলছেন, “যেমন, কুফরের রীতিনীতির প্রসার করা, কুফরের শায়ায়ের বা নিদর্শনাবলী প্রতিষ্ঠা করা, কুফরী কানুন জারী করা, দ্বীনের বিধিবিধানকে তুচ্ছজ্ঞান করা, শক্তি থাকা সত্ত্বেও শরয়ী বিধান চালু করা হতে বিরত থাকা”। এ পর্যন্ত তো অনেকটা ঠিকই ছিল, কিন্তু এরপর হযরত এক আশ্চর্য কথা বলেন, তিনি এ বিষয়গুলো ফিসকে মুতাআদ্দী হওয়ার জন্য দুটি শর্ত আরোপ করলেন,
    ক. শাসকরা এবিষয়গুলো পছন্দ করা এবং ইসলামের বিধানকে ঘৃণা করা।
    খ. ইসলামী আইন জারী করার ক্ষমতা থাকা স্বত্বেও তা থেকে বিরত থাকা।

    পাঠক একটু ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করুন, শাসক কুফরী আইনকে উত্তম মনে করা বা ইসলামী বিধি-বিধানকে ঘৃণা করা- ফিসক মুতাআদ্দী হওয়া না হওয়ার সাথে এর কি সম্পর্ক? তাহলে কি শায়েখে মুহতারাম বলতে চাচ্ছেন যে, শাসক ইসলামী আইন উত্তম মনে করা সত্ত্বেও যদি কুফরী আইন জারী করে তখনও তা ফিসকে লাযেম হবে, ফিসকে মুতাআদ্দী হবে না অর্থাৎ জনগণের উপর এর কোন মন্দ প্রভাব পড়বে না।

    এমনিভাবে “ইসলামী আইন জারী করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকা” এখানেও প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি শাসক কাফেরদের চাপে বা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভয়ে অক্ষমতার দরুন - যেমনটা হযরত বুঝাতে চাচ্ছেন - ইসলামী হুকুমত কায়েম করতে না পারলে সেটাও ফিসকে লাযেম হবে, জনগণের দ্বীনের উপর এর কোন প্রভাব পড়বে না। সুবহানাল্লাহ, এ কেমন আশ্চর্য ফিকহ
    !!!

    ৩. শায়খে মুহতারাম ফিসকে মুতাআদ্দী পাওয়া গেলে শাসকের বিপক্ষে যুদ্ধকে জায়েয বলছেন এবং সাহাবীদের যমানা থেকে আবু হানিফার যমানা পর্যন্ত যারাই বিদ্রোহ করেছেন তাদের সবাই শাসকের ফিসকে মুতাআদ্দীর কারণেই বিদ্রোহ করেছেন বলে মত প্রকাশ করছেন। তথাপিও তিনি বর্তমান শাসকদের বিপক্ষে বিদ্রোহকে সমর্থন করছেন না। তাহলে কি তিনি বলবেন যে, তখনকার শাসক ইয়াযীদ, মারওয়ান, আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান, হাজ্জাজ, মানসুর যাদের বিপক্ষে সাহাবী ও তাবেয়ীগণ বিদ্রোহ করেছেন তারা তো ফিসকে মুতাআদ্দীতে লিপ্ত ছিল, তাদের দ্বারা জনসাধারণের দ্বীন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিল, কিন্তু বর্তমান শাসকরা ফিসকে মুতাআদ্দীতে লিপ্ত নয়, তারা জুলুম-অত্যাচার করলেও ওদের দ্বারা জনগণের দ্বীনী ক্ষতি হচ্ছে না!!!

    অথচ কে না জানে বাস্তবতা এর পুরো একশো আশি ডিগ্রি উল্টো। কেননা যাদের বিপক্ষে সাহাবী-তাবেয়ীগণ বিদ্রোহ করেছেন তাদের ফিসকই ছিল ফিসকে লাযেম। তাদের যমানায় রাষ্ট্রে ইসলামী আইন জারী ছিল। আলেমগণ কাযী হয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করতেন। নিজেদের স্বার্থের পরিপন্থী না হলে শাসকরা এতে কোনরুপ হস্তক্ষেপ করতো না। বেশি থেকে বেশি তারা কিছু জুলুম-অত্যাচার করতো আর বাইতুল মালের সম্পদ নিজেরা যথেচ্ছা ভোগ করতো।

    আর বর্তমান শাসকরা তো কুফর, নাস্তিকতা, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা সবকিছু মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে, বরং আইন তৈরী করে এগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করছে, নিজেদের পেটুয়া বাহিনী দ্বারা এর কর্মীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। রাসুলকে গালি প্রদানকারী নাস্তিকরা তো এদের অধীনে সুরক্ষা পাচ্ছে, কিন্তু এর প্রতিবাদকারী নিরীহ মুসলিমদের বুকে গুলি চলছে। প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ইসকন বাংলাদেশ দখল করার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে, কিন্তু কেউ এর বিপক্ষে মুখ করলে তাকে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও উস্কানীদাতা বলে জেলে পুরা হচ্ছে। “সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্ম প্রচারের অধিকার রয়েছে” এই অজুহাতে হেফাযতে ইসলামের এনজিও বিরোধী দাবী প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। কিন্তু মুসলিমরা হিন্দুদের মাঝে ইসলামপ্রচার করতে গেলে হিন্দুরা প্র্রশাসনের সহায়তা নিয়ে মুসলিমদের ধর্মপ্রচারে বাধা দিচ্ছে। এনজিওরা সাহায্যের নামে রোহিঙ্গাদের ধর্মান্তরিত করার কাজ নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছে, অথচ মুসলিমদের জন্য নিজেদের রোহিঙ্গা ভাইদের সরাসরি সাহায্য করার অনুমতি নেই। সাহায্য করতে চাইলে সরকারী ফান্ডে অর্থ প্রদান করতে হবে। এমনকি একবার ভীতি প্রদর্শনের জন্য রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে যাওয়া আলেম ও অন্যান্যদের একরাতের জন্য গ্রেফতারও করা হয়। এসব কিছুর পরও কি বলা হবে বর্তমান শাসকরা ইয়ায়ীদ, মারওয়ান, আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান ও মানসুরের চেয়ে ভালো? তাদের ফিসক শুধু নিজেদের উপরই সীমাবদ্ধ?

    শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর তথাকথিত সব দারুল ইসলামেরই আজ এই দশা, পাকিস্তানের শাসকদের ব্যাপারে তো খোদ মুফতি তাকী উসমানী দা. বা. এর পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব আল্লামা ইউসুফ বিন্নুরী রহ. আজ থেকে ত্রিশবছর আগেই বলে গেছেন,

    جس بنيادي مقصد كا باربار اعلان كيا جاتاتھا كه اسلامي حكومت قائم ہوگي اور يوں عالمٍ اسلامي سے اتحاد ہوگا، اس كے لۓ حكمرانوں اور حكومتو ں نے كيا كيا؟ اپنے وعدوں كو كهاں تك پورا كيا؟ يهاں كون كون سے اسلامي قوانين جاري هوۓ؟ كفر والحاد كو كهاں تك ختم كيا گيا؟ اسلامي معاشرت قائم كرنے كے لۓ كيا كيا اقدام كۓ گۓ؟ ان تمام سوالات كا جواب حسرت ناك نفي مں ملے گ، آخر امتحان كا يه عبوري دور تھا، كون سي نعمت تھي جو حق تعالى نے نه دي هو؟ كون سي فرصت تھي جو نه ملي هو؟ ليكن واحسرتاه! كه ربع صدي سے زياده عرصه گزر گيا، مگر پاكستان كے مقصدِ وجود كا خواب شرمند‏ہ تعبير نه هوا، كون سا وعده پورا كيا گيا؟ كون سي اسلامي عدالت قائم هوئي؟ زاني اور شرابي كو كون سي سزادي گئي؟ بد اخلاقي كا كيا انسداد كيا گيا؟ ظلم، عدوان، رشوت ستاني، كنبه پروري، بے حيائي وعرياني، سودخوري وبدمعاشي كو ختم كرنے كے لۓ كون سا قدم اٹھايا گيا؟ بلكه اس كے برعكس يه هوا كه سودخوري، شراب نوشي، بد اخلاقي اور بے حيائي كي نه صرف حوصله افزائي كي گئي، بلكه سركاري ذرائع سے اس كي نشر واشاعت ميں كوئي كسر باقي نہيں اٹھا ركھي گئي، "بينات" كےصفحات ميں ان دردناك داستانوں كو باربار دهرايا گيا هے - (مجلة بينات، العدد : جمادى الأخرى 1437 ص 17)

    “পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার যে মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বারবার ঘোষণা করা হতো যে, ইসলামী হুকুমত কায়েম হবে আর এভাবেই ইসলামী বিশ্বের সাথে পাকিস্তানের ঐক্য হবে, এ লক্ষ্য পূরণে সরকার ও শাসকশ্রেণী কি কাজ করেছে? নিজেদের কৃত ওয়াদা কতটুকু পূর্ণ করেছে, এদেশে ইসলামের কোন কোন বিধান বাস্তবায়ন হয়েছে? কুফর ও ধর্মদ্রোহীতা কোন স্তর পর্যান্ত মেটানো হয়েছে? ইসলামী অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর অত্যন্ত দুঃখজনক ও নেতিবাচক ভাবেই মিলবে। এটা তো পরীক্ষাস্বরুপ অন্তর্বর্তীকাল ছিল। আল্লাহ তায়ালা কোন নেয়ামত দিতে বাকী রেখেছিলেন? কোন সুযোগটা হাতছাড়া রয়ে গিয়েছিল?

    হায় আফসোস! পচিশ বছরেরও বেশি পেরিয়ে গেল, কিন্তু পাকিস্তান গঠনের স্বপ্ন পূরণ হল না।কোন ওয়াদাটা রক্ষা করা হয়েছে? কোথায় ইসলামী আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? ব্যাভিচারী ও মদ্যপকে কি শাস্তি দেওয়া হয়েছে? অনৈতিকতা ও বদআখলাকী কতটুকু মেটানো হয়েছে? জুলুম-অত্যাচার, ঘুষখোরী-সুদখোরী, বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা ও জাতিয়তাবাদ দমন করার জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে? বরং এর বিপরীত সুদখোরী, মদপান, অনৈতিকতা ও বেহায়াপনার প্রতি শুধু উৎসাহিত করাই হয়নি, এরচেয়েও আগে বেড়ে সরকারী মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে এগুলোর প্রচার-প্রসার করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে!!! -বাইয়িনাত, সংখ্যা: জুমাদাল উখরা ১৪৩৭ পৃ: ১৭

    আসলে এই শাসকরা তো কাফেরদেরই দালাল, কাফেররা আমাদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য সরাসরি কাফের গভর্ণর নিয়োগ করার চাইতে নামধারী মুসলিম শাসকদের দ্বারাই কার্যসিদ্ধি করা নিরাপদ মনে করছে। লর্ড ম্যাকলের সেই কুখ্যাত উক্তিটা কি মনে নেই “ভারতীয়দের জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থারে একমাত্র উদ্দেশ্য হল এমন এক যুব সম্প্রদায় সৃষ্টি করা, যারা রঙ ও বংশের দিক থেকে ভারতীয় হলেও মন ও মস্তিষ্কের দিক থেকে হবে সম্পূর্ণ বিলাতী।”-দেওবন্দ আন্দোলন, মাওলানা আবুল ফাতাহ ইয়াহইয়া, পৃ: ১৫১

    যারা শুধু নামে মুসলমান হওয়ার কারণে বর্তমান শাসকদের বিপক্ষে যুদ্ধ করতে নিষেধ করছেন তারা নিজেদের অজান্তেই ইসলামের প্রজ্ঞাপূর্ণ বিধানাবলীর গায়ে কালিমা লেপন করছেন। তারা যেন বলতে চাচ্ছেন, কাফেররা কোন মুসলিম দেশ দখল করে নিলে তাদের নিয়োগকৃত গভর্ণরের মাধ্যমে যে কাজগুলো করাতো, হুবহু সেই কাজগুলো একই মাত্রায় বরং তারচেয়েও বেশি মাত্রায় কোন নামধারী মুসলিম শাসকের মাধ্যমে করালেও তার বিপক্ষে বিদ্রোহ করা যাবে না!!! তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে মহা প্রজ্ঞাবান আল্লাহ তায়ালার নাযিলকৃত শরিয়তে কি কাফেরদের এ চালবাজী ধরার মতো কোন পদ্ধতি নেই? ইসলামে কি তাহলে মূল বিষয়ের পরিবর্তে শুধু নামের উপর ভিত্তি করেই বিধান ভিন্ন হয়?

    না, কক্ষনো নয়, আল্লাহ তায়ালা এই দালাল শাসকদের কুফর ও ইরতেদাদ বুঝার জন্য অনেক অনেক দলিল রেখেছেন। যা মুজাহিদ আলেমগণ বারবার প্রচার করেছেন। এরপরও যদি কারো জন্য এদের কুফর ও ইরতেদাদ বুঝা জটিল মনে হয় তবে তা বুঝার জন্য বাহ্যিক কিছু আলামতও রেখেছেন, যার অন্যতম দুটি আলামত হলো নামায না পড়া এবং কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী শাসন না করা। কিন্তু বহু আলেম এসব দলিলাদী উপেক্ষা করে নিজেদের মনগড়া দলিলবিহীন ফতোয়া দিয়ে ইসলামকে কলংকিত করছে, ইসলাম ধ্বংসে সহায়তা করছে। আর এভাবেই তাদের মাঝে রাসূলের ভবিষ্যৎদ্বানী বাস্তবায়িত হচ্ছে,

    إن الله لا ينتزع العلم من الناس انتزاعا، ولكن يقبض العلماء فيرفع العلم معهم، ويبقي في الناس رءوسا جهالا، يفتونهم بغير علم، فيضلون ويضلون صحيح البخاري : (100) صحيح مسلم : (2673)
    وقال ابن مسعود: لا يأتي عليكم زمان إلا وهو أشر مما كان قبله، ..... وما ذاك بكثرة الأمطار وقلتها، ولكن بذهاب العلماء، ثم يحدث قوم يفتون في الأمور برأيهم، فيَثْلِمون الإسلامَ ويهدمونه. (فتح الباري: 41/484 ت: شعيب الأرنؤوط)

    “আল্লাহ তায়ালা মানুষের (অন্তর) হতে ইলমকে উঠিয়ে নিবেন না, তবে আলেমদের মৃত্যু দান করবেন এবং তাদের সাথে সাথে তাদের ইলমকেও তুলে নিবেন। তখন মানুষের মাঝে কিছু মূর্খ নেতা বাকী থাকবে, তারা ইলম ব্যতীত ফতোয়া দিয়ে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে অন্যদেরও পথভ্রষ্ট করবে।” -সহিহ বুখারী, ১০০ সহিহ মুসলিম, ২৬৭৩

    ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন, “তোমাদের অবস্থা দিনদিন মন্দ থেকে মন্দতর হতে থাকবে। তবে এটা বৃষ্টি কম-বেশী হওয়া (অর্থাৎ আর্থিক স্বচ্ছলতা বা দৈন্যের) কারণে হবে না। বরং এর কারণ হবে, আলেমদের চলে যাওয়া। অতপর এমন লোকদের আবির্ভাব ঘটবে যারা (দ্বীনি) বিষয়াদীতে নিজস্ব মত ও স্বভাব-রুচি অনুযায়ী ফতোয়া দিবে, ফলে তারা ইসলামকে ধ্বংস করে ফেলবে।(ফাতহুল বারী, ৪১/৪৮৪ শুয়াইব আরনাউতের তাহকীককৃত নুসখা)

    চলবে ইনশাআল্লাহ


    ***

    প্রথম পর্বের লিংক
    https://dawahilallah.com/showthread....%26%232535%3B)
    দ্বিতীয় পর্বের লিংক
    https://dawahilallah.com/showthread....%26%232536%3B)
    তৃতীয় পর্বের লিংক
    https://dawahilallah.com/showthread....%26%232472%3B)
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 01-06-2020, 10:34 AM.
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

  • #2
    হে আল্লাহ! ইলম ও জিহাদ ভাই এবং আদনানমারুফ ভাইকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন ৷ আমিন
    গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

    Comment


    • #3
      Originally posted by ABDULLAH BIN ADAM BD View Post
      হে আল্লাহ! ইলম ও জিহাদ ভাই এবং আদনানমারুফ ভাইকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন ৷ আমিন
      আমাদের সকলকে আল্লাহ সুব. শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন,আমীন।
      বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
      কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

      Comment


      • #4
        Originally posted by কালো পতাকাবাহী View Post
        আমাদের সকলকে আল্লাহ সুব. শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন,আমীন।
        আমীন। الهم ارزقنا شهادة في سبيلك
        الجهاد محك الإيمان

        জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ, খুব গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।
          আল্লাহ তা‘আলা তা আমাদের সকলের জন্য উপকারী বানান ও লেখককে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ ,জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা,খুবই গুরত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল আলোচনা।বারাকাল্লাহু ফী হায়াতিকা ও ইলমিকা।

            Comment


            • #7
              ভাই!তকি উসমানি সাহেবের ফতোয়ার হাতে লিখিত কপি আছে?থাকলে দিলে ভাল হত ৷
              "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

              Comment


              • #8
                Originally posted by tahsin muhammad View Post
                বারাকাল্লাহু ফী হায়াতিকা ও ইলমিকা।
                ওয়াবারাকাল্লাহু ফি হায়াতিকা ও ইলমিকা ও জামিয়ি আমালিকা
                الجهاد محك الإيمان

                জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

                Comment

                Working...
                X