Announcement

Collapse
No announcement yet.

ফরজে কেফায়া মানেও সকলের উপর ফরজ

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ফরজে কেফায়া মানেও সকলের উপর ফরজ

    بسم الله الرحمن الرحيم
    ফরজে কেফায়া মানেও সকলের উপর ফরজ

    কিছু আলেম বর্তমানে জিহাদ কে ফরজে কেফায়া প্রমাণে ব্যস্ত। আর ফরজে কেফায়া মানে হলো, এটা করা যাবে না। কেউ করতে চাইলে অতিজযবাতি তরুণ বা অপরিণামদর্শী বলে আখ্যায়িত করতে হবে। আবার কেউ বুঝে নেন ফরজে কেফায়া মানে হারাম। বাস্তবতা এমনই। একটুও বেশী বলছি না। নইলে যারা ফরজে কেফায়া মনে করেন, তারা কেন মুজাহিদিনকে অতিজযবাতি মনে করেন? তাদের তো উচিত ছিলো, মুজাহিদদের জন্য দোয়া করা। কারণ, তারা তাদের পক্ষ থেকে ফরজ আদায় করছেন।
    তাই আজকে ফরজে কেফায়ার হাকিকত নিয়ে আলোচনা করবো। জিহাদ ফরজে কেফায়া এর অর্থ কি?
    তাহলে দেখি এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম কী বলেন,
    ইমাম আলাউদ্দিন আল কাসানি রহ. আল হানাফি(৫৮৭ হি.) বলেন,
    فان لم يكن النفير عاما فهو فرض كفاية ومعناه ان يفترض على جميع من هو من أهل الجهاد لكن إذا قام به البعض سقط عن الباقين. (بدائع الصنائع 6/57 ط. زكريا)
    যদি নফিরে আম না হয় তাহলে জিহাদ ফরজে কেফায়া। ফরজে কেফায়ার অর্থ হলো, জিহাদ করার সামর্থ্যবান সকলের উপর ফরজ। তবে (যদি কাজ আদায় হয় মত) কিছু লোক আদায় করে নেয় বাকীদের উপর আর ফরজ থাকবে না।–বাদাইউস সানায়ে: ৬/৫৭
    ইমাম মুয়াফফাক উদ্দিন ইবনে কুদামা আল মাকদিসি আল হাম্বলি (৬২০ হি.) বলেন,
    مسألة: قال: (والجهاد فرض على الكفاية، إذا قام به قوم، سقط عن الباقين) معنى فرض الكفاية، الذي إن لم يقم به من يكفي، أثم الناس كلهم، وإن قام به من يكفي، سقط عن سائر الناس.
    فالخطاب في ابتدائه يتناول الجميع، كفرض الأعيان، ثم يختلفان في أن فرض الكفاية يسقط بفعل بعض الناس له، وفرض الأعيان لا يسقط عن أحد بفعل غيره. (المغني لابن قدامة 12/421 ط. دار الحديث)
    “জিহাদ হলো, ফরজে কেফায়া- যখন একটি তা জামাত আদায় বাকীদের উপর আর ফরজ থাকে না। ফরজে কেফায়া মানে হলো, যদি কাজ আদায় হয় মতো একটি জামাত তা আদায় না করে তাহলে সকলে গোনাহগার হবে। আর যদি যদি কাজ আদায় হয় মতো একটি জামাত তা আদায় তাহলে বাকীদের উপর আর ফরজ থাকবে না।
    তাই শুরুতে ফরজে আইনের মতো সবার উপরই ফরজ হয়ে যায়। তবে ফরজে আইন আর কেফায়ার মধ্যে পার্থক্য হলো, ফরজে কেফায়া কিছু লোকে আদায় করলে আদায় হয়ে যায়, কিন্তু ফরজে আইনের বেলায় সকলের আদায় করতে হয়” – আল মুগনি ইবনে কুদামা: ১২/৪২১
    শায়খ শামসুদ্দিন মুহাম্মদ খতিব আশ শারবিনি আশ শাফেয়ী (৯৭৭ হি.) বলেন,
    ( ؛ إذا فعله من فيهم كفاية سقط الحرج عن الباقين ) لأن هذا شأن فروض الكفايات وتعبيره بالسقوط ظاهر في أن فرض الكفاية يتعلق بالجميع وهو الصحيح عند الأصوليين. (مغني المحتاج 6/7 ط. دار الحديث)
    “যখন জিহাদের কাজ আদায় হয় মতো কিছু লোক তা আদায় করে নেয় তাহলে বাকীদের আর জিহাদ ছেড়ে দেওয়ার গোনাহ হবে না। ফরজে কেফায়া এমনই যে, কিছু লোক আদায় করলে বাকীদের আর করতে হয় না। “বাকীদের আর জিহাদ ছেড়ে দেওয়ার গোনাহ হবে না” এ কথা থেকে বুঝা যাচ্ছে, ফরজে কেফায়া সকলের উপরেই ফরজ। আর উসুল-বিদদের মতে এটিই সহিহ কথা।” –মুগনিল মুহতাজ: ৬/৭

    এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়

    এক. জিহাদের সামর্থ্যবান হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ থাকা। আর ইদাদ তো সব সময়ের জন্য ফরজ। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে যাদেরকে জিহাদের হুকুম থেকে বাদ দিয়েছেন তারা বাদে সবাই সামর্থ্যবান।

    দুই. ফরজে কেফায়ার ক্ষেত্রে এ পরিমাণ লোকের জিহাদ করতে হবে যার দ্বারা নতুন এলাকা বিজয় সম্ভব বা কাফেরদের প্রতিহত করা সম্ভব যদি এ পরিমাণ লোকে জিহাদ না করে তাহলে যারা জিহাদ করছে না -অথচ তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুস্থ- তারা সকলে গোনাহগার হবে।

    প্রিয় পাঠক! আমরা ঐ আলেমদের কথা অনুযায়ী যদি বর্তমানে জিহাদ ফরজে কেফায়া মেনে নেই, তাহলে বলবো, বর্তমানে মুষ্টিময় কিছু মুজাহিদ ভাই জিহাদ করছেন। শত্রুর তুলনায় নিতান্তই কম। এ অল্প মুজাহিদ দ্বারা কি উম্মাতে মুসলিমার উপর কাফেরদের আগ্রাসন প্রতিহত করা সম্ভব হচ্ছে? কাশ্মীরের মুসলিমদের কি মালউনদের হামলা থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে? মিয়ানমারের বৌদ্ধদের থেকে রোহিঙ্গা মুসলিম ভাইদেরকে কি রক্ষা করা গেছে? চিনের উইঘুর মুসলিমদের উপর চীনাদের অত্যাচার কি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে? সিরিয়ায় মুসলিমদের উপর বিমান হামলা কি ঠেকানো যাচ্ছে? তাহলে বুঝা গেল এখনো এ পরিমাণ লোক জিহাদ করছে না। যার দ্বারা এগুলো সম্ভব হচ্ছে। তাহলে তো জিহাদ ছেড়ে বসে থাকা সবাই ফরজ ছেড়ে দেওয়ার গোনাহে লিপ্ত। এটা তো ফরজে কেফায়ার সূরতে। যেটা আপনারাও শিকার করেন। আর যদি ফরজে আইন বলি-বাস্তবেই তো ফরজে আইন- তাহলে সকলেই ফরজে আইন তরকের গোনাহে লিপ্ত।
    বর্তমানের তো কোন ইকদাম নেই। সব দেফা। আর দিফায়ি জিহাদ তো ফরজে আইন। আমি আলেমদেরকে বলবো, আপনারা ফিকহে হানাফির নির্ভরযোগ্য যে কোন এক কিতাবের কিতাবুল জিহাদ মুতাআলা করুন। তাহলে আশা করি আমাদের সাথে এত কথার দরকার হবে না। কিতাব না পড়ে কথা বললে ভুলের মাত্রা বাড়তে থাকবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
    ফিরে এসো দ্বীনের পথে।

  • #2
    মাশাআল্লাহ। উত্তম পোস্ট। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সকলেরই জানা দরকার। আল্লাহ আপনার কলমে বরকত দান করুন। আমিন।
    কে আছো জোয়ান, হও আগোয়ান।

    Comment


    • #3
      জাযাকাআল্লাহ্ আখি আপনি খুবই গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে আলোচনা কোরেছেন।
      আল্লাহ্ আপনার ইলম আরো বাড়িয়ে দিন আমিন।
      Last edited by Rumman Al Hind; 03-01-2020, 06:22 AM.

      Comment


      • #4
        মা শা আল্লাহ!চমৎকার আলোচনা করেছেন ৷
        "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

        Comment

        Working...
        X