Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইসলামে দাস প্রথা- ২

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইসলামে দাস প্রথা- ২

    ইসলামে দাস প্রথা
    পর্ব-২

    কাফেরদেরকে হত্যা করা:

    এজন্য যখন কাফেররা এ আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করে, তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে হত্যা করার আদেশ করেছেন, যেন তাদের ভাইরাস অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে না পড়ে এবং তারা অন্যদের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে। কারণ কুফরের ধর্মই হল, ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ও ইসলামের পথে বাধা সৃষ্টি করা। তাই কাফেররা কখনো বসে থাকবে না। তারা অবশ্যই সর্বদা বাঁধা সৃষ্টি করেই যাবে। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেছেন:
    وَلَا يَزَالُونَ يُقَاتِلُونَكُمْ حَتَّى يَرُدُّوكُمْ عَنْ دِينِكُمْ إِنِ اسْتَطَاعُوا “তারা অনবরত তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে, যতক্ষণ না তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে নিতে পারে।”(সূরা বাকারাহ:২১৭)

    আল্লাহ ত’আলা আরো বলেছেন: إِنَّ الْكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُبِينًا “নিশ্চয়ই কাফেরগণ তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (সূরা নিসা: ১০১)

    তাই তারা সর্বদা শত্রুতা করেই যাবে।

    কাফেরদের উপর লাঞ্ছনার বিধান:

    কাফেররা যদি যুদ্ধ ও হত্যার আগেই মুসলমানদেরকে জিযিয়া প্রদান করতে রাজি হয় এবং জিযিয়া প্রদান করে মুসলমানদের প্রজা হিসাবে থাকে, সেক্ষেত্রেও কুফরীর কারণে তাদেরকে লাঞ্ছিত করে রাখা আবশ্যক। সব সময় তাদের উপর লাঞ্ছনার চিহ্ন প্রকাশ পেতে হবে। যেমন:

    আল্লাহ আল্লাহ তা’আলা বলেন:

    قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ

    “যে সকল আহলে কিতাব আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না, আল্লাহ যা হারাম করেছেন তাকে হারাম মানে না এবং সত্য দ্বীনকে নিজের দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে না, তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাক, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা লাঞ্ছিত হয়ে স্বহস্তে জিযিয়া প্রদান করে।” (সূরা তাওবা: ২৯)

    হযরত ইকরিাম রাযি. লাঞ্ছনার বিষয়টিকে স্পষ্ট করতে গিয়ে বলেন:

    عَنْ عِكْرِمَةَ: " {حَتَّى يُعْطُوا الْجِزْيَةَ عَنْ يَدٍ وَهُمْ صَاغِرُونَ} [التوبة: 29] قَالَ: أَنْ يَكُونَ قَائِمًا وَأَنْتَ جَالِسٌ

    “যতক্ষণ পর্যন্ত তারা লাঞ্ছিত হয়ে জিযিয়া প্রদান না করে” অর্থাৎ সে (যিম্মী কাফের) দণ্ডায়মান থাকবে আর তুমি (মুসলিম) উপবিষ্ট থাকবে।”
    এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস ও ইবনে ওমর রাযি. এর ব্যাখ্যাও লক্ষণীয়:

    "وعن ابن عمَر قال: قال رسولُ الله – صَلَّى الله عليه وسلم -: لا تبدَؤُوا اليهودَ والنَّصَارَى بالسلام"؛ لأنَّ الابتداءَ بالسلام إعزازٌ للمسلَّم عليه، وهؤلاءِ المَخْذُولون لا يجوزُ إعزازُهم.
    "فإذا لقيتُم أحدَهم في طريقٍ فاضطرُّوه إلى أَضْيَقهِ"؛ أي: مُروه ليعدِلَ عن وسطِ الطريق إلى أحدِ طَرَفَيه.

    ইবনে ওমর রাযি. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ইহুদী-নাসারাদেরকে প্রথমে সালাম দিবে না।” কেননা শুরুতে সালাম দেওয়ার দ্বারা, যাকে সালাম দেওয়া হয়, তাকে সম্মান করা হয়। অথচ এরা লাঞ্ছিত, এদেরকে সম্মান করা জায়েয নেই।

    “আর যখন তাদের কারো সঙ্গে রাস্তায় সাক্ষাত হবে, তখন তাকে রাস্তার সংকীর্ণ স্থান দিয়ে যেতে বাধ্য করবে।” অর্থাৎ তাকে রাস্তার মধ্যভাগ থেকে কোন এক পার্শ্বে সরে যেতে আদেশ করবে।”

    ফিকহে হানাফির প্রসিদ্ধ কিতাব আল-হিদায়ার গ্রন্থকার আল্লামা বুরহানুদ্দীন মারগিনানী রহ. বলেন:

    قال: " ويؤخذ أهل الذمة بالتميز عن المسلمين في زيهم ومراكبهم وسروجهم وقلانسهم فلا يركبون الخيل ولا يعملون بالسلاح وفي الجامع الصغير ويؤخذ أهل الذمة بإظهار الكستيجات والركوب على السروج التي هي كهيئة الأكف " وإنما يؤخذون بذلك إظهارا للصغار عليهم وصيانة لضعفة المسلمين ولأن المسلم يكرم والذمي يهان ولا يبتدأ بالسلام ويضيق عليه الطريق فلو لم تكن علامة مميزة فلعله يعامل معاملة المسلمين وذلك لا يجوز والعلامة يجب أن تكون خيطا غليظا من الصوف يشده على وسطه دون الزنار من الإبريسم فإنه جفاء في حق أهل الإسلام ويجب أن يتميز نساؤهم عن نسائنا في الطرقات والحمامات ويجعل على دورهم علامات كيلا يقف عليها سائل يدعو لهم بالمغفرة قالوا الأحق أن لا يتركوا أن يركبوا إلا للضرورة وإذا ركبوا للضرورة فلينزلوا في مجامع المسلمين فإن لزمت الضرورة اتخذوا سروجا بالصفة التي تقدمت ويمنعون من لباس يختص به أهل العلم والزهد والشرف.

    “যিম্মীদেরকে পোষাক, বাহন, গদিত ও টুপিতে মুসলিমদের থেকে ভিন্নতা অবলম্বন করতে বাধ্য করা হবে। তাই তারা ঘোড়ায় চড়তে পারবে না। অস্ত্র নিয়ে কাজ করতে পারবে না। জামে সগীরের মধ্যে আছে, যিম্মীদেরকে পোষাকের উপর বাঁধার জন্য অনুন্নত মোটা রশি ব্যবহার করতে এবং বাহনের উপর বসার জন্য হাতের তালুর আকৃতির নিম্নমানের গদি ব্যবহার করতে বাধ্য করা হবে।

    তাদেরকে এগুলো করতে বাধ্য করা হবে তাদের উপর লাঞ্ছনা প্রকাশ করা এবং দুর্বল মুসলমানদের সম্মান রক্ষা করার জন্য। কারণ মুসলিমগণকে সম্মানিত আর যিম্মীদেরকে হীন করা আবশ্যক। তাদেরকে প্রথমে সালাম দেওয়া যাবে না। রাস্তায় তাদেরকে সংকীর্ণ অংশে চলতে বাধ্য করা হবে।
    তাই যদি শনাক্তকারী কোন আলামত না থাকে, তাহলে হয়ত তাদের সাথেও মুসলমানদের মত আচরণ করে ফেলবে। আর এটা জায়েয নেই। আর আলামত হতে হবে সূতার মোটা রশি, যেটা কোমরবন্ধনী হিসাবে ব্যবহার করবে। পশমের বেল্ট হতে পারবে না। কারণ এটা মুসলমানদের জন্য অসম্মান হবে। রাস্তা ও শৌচাগারসমূহে তাদের নারী ও আমাদের নারীদের মাঝে পার্থক্যকারী আলামত থাকতে হবে। তাদের ঘর-বাড়ির উপর বিভিন্ন ধরণের আলামত রাখা আবশ্যক করা হবে, যেন কোন মুসলিম ভিক্ষুক তাদের ঘরের সামনে দাড়িয়ে তাদের জন্য ক্ষমার দু’আ করে না ফেলে।
    আলেমগণ বলেছেন, সর্বাধিক সঙ্গত হল, তাদেরকে অতি প্রয়োজন ব্যতিত কোন বাহনে চড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। যদিও বিশেষ জরুরতের কারণে চড়ে, তবে মুসলিমদের সমাগমের স্থানে নেমে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে একান্ত প্রয়োজন হলে পূর্বোল্লেখিত নিম্নমানের গদি ব্যবহার করবে। তাদের জন্য এমন পোষাক নিষিদ্ধ করা হবে, যা আলিম, ইবাদতগোযার ও সম্মানিত লোকদের বিশেষ পোষাক।” (আল-হিদায়া: ২/৪০৪)

    তবে ইসলামী আইন সঙ্গত উল্লেখিত শাস্তিমূলক লাঞ্ছনাগুলো ব্যতিত বেআইনীভাবে তাদের উপর কোন প্রকার জুলুম, অত্যাচার, সীমালঙ্ঘন ও সেচ্ছচারিতা করা যাবে না। ইসলামের আইনে তাদেরকে যে সমস্ত অধিকারগুলো দেওয়া হয়েছে তা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করা হবে। উভয়টার মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করাই ইসলামী আইনের শ্রেষ্ঠত্ব ও অনন্য বৈশিষ্ট্য।

    কিন্তু দু:খের বিষয় হল: আজ পরাজিত ও গোলামী মানষিকতার আলেমগণ কাফেরদের শাস্তি ও লাঞ্ছনামূলক বিষয়গুলো একেবারে উল্লেখ না করে যুদ্ধরত জালিম কাফেরদেরকেও যিম্মী বানিয়ে শুধু যিম্মীদের অধিকারগুলো আলোচনা করতে থাকে।

    এর ফলে কাফের ও মুরতাদরা আরো একধাপ এগিয়ে কাফেরদের উপর ইসলাম-নির্ধারিত শস্তিমূলক লাঞ্ছনাগুলোকেও বৈষম্য ও জুলুম বলার প্রয়াস পায়। এভাবে এগুতে এগুতো আজ কাফের-মুরতাদরা ইসলামের ভিত্তিগুলোর উপরও আঘাত হানছে।

    অথচ ইসলামের আদর্শে কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনা ও শাস্তিই তো প্রথম এবং মূল। অধিকার ও ভালো ব্যবহার তো অনেক পরে। আমাদের হাতে বন্দি হওয়ার পর বন্দি হিসাবে ভালো ব্যবহার করা হবে। আমাদের কাছে নত স্বীকার করে প্রজা হওয়ার পর প্রজা হিসাবে আইনসঙ্গত লাঞ্ছনাগুলোর সাথে সাথে আইনসঙ্গত ভালো ব্যবহারগুলোও করা হবে।

    কিন্তু আজ আমাদের থেকে নিয়ন্ত্রণহীন, বরং আমাদের উপর জুলুমকারী বা জুলুমের সাপোর্টকারী কাফেরদের সাথে ভালো ব্যবহার করার কথা বলা হয়। আফসোস! এ সকল ইসলাম-বিকৃতকারীদের উপর!!


    (চলবে)

  • #2
    জাযাকাল্লাহ। উপকারী পোষ্ট। অনেক নাস্তিকরা এটার মাধ্যমে আপত্তি করে। আর অনেক আলেম পরাজিতভাবে উত্তর দেয়। তাই এটার বস্তবতা স্পষ্ট করার দরকার ছিল।

    Comment


    • #3
      আল্লাহ আপনাকে ইলমে নাফে দান করুন ৷ আমিন
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        ইসলাম বিদ্বেষী চক্র দাসপ্রথা নিয়ে আপত্তি করলে আমরা অনেকেই বিপাকে পড়ে যাই ও যাবো। তাই তার উত্তর দেওয়ার জন্য এটা পড়া উচিত। ফায়দা হবে ইনশাআল্লাহ।

        Comment

        Working...
        X