Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইসলামে দাস প্রথা-৪ (শেষ পর্ব)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইসলামে দাস প্রথা-৪ (শেষ পর্ব)

    ইসলামে দাস প্রথা
    পর্ব-৪ (শেষ পর্ব)


    দ্বিতীয়ত: দাসীদের সঙ্গে মনিবের সহবাস:

    অনেকেই এটাকে আরো অস্বাভাবিক মনে করে। কিন্তু ব্যাপারটিকে আরেকটু গভীরভাবে চিন্তা করলে এর সৌন্দর্যই ফুটে উঠে। বিষয়টি বলার পূর্বে ভূমিকা স্বরূপ কিছু কথা বলা প্রয়োজন। তা হল:
    যারা দাস-দাসী যুগের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে অবগত নয় এবং ইসলামের ইতিহাস ও অন্যান্য ইতিহাসের ব্যাপারে তেমন ধারণা রাখে না, তারা পূর্বযুগে প্রচলিত ও ইসলামে বৈধ দাস-দাসী প্রথাকে বর্তমান যামানার কাজের ছেলে ও কাজের মেয়েদের ন্যায় মনে করে। তাই ভাবে, কাজের মেয়ের সাথে কোন বিয়ে ছাড়া সহবাস করা তো কোনভাবেই সভ্যতা হতে পারে না।

    কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হল, দাস-দাসীদের ব্যাপারটি বর্তমান যুগের কাজের ছেলে ও কাজের মেয়েদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাজের ছেলে ও কাজের মেয়ের নিজস্ব স্বাধীনতা থাকে। তারা একটা চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করে। যখন মনে চায়, চলে যায়। মালিকের বাধা দেওয়ার অধিকার নেই।

    পক্ষান্তরে দাস-দাসীরা হয় সম্পূর্ণ মালিকের সম্পদ। সারা জীবনের জন্য তাদের কোন স্বাধীনতা নেই। তাদের নিজস্ব কোন মালিকানাও নেই। তাদের কোন আলাদা বাড়ি-ঘর ও পরিবারও নেই। তাদের আলাদা পরিচয়ও নেই। তাদের সাথে মালিকের কোন চুক্তি করতে হয় না। সারা জীবনের জন্য তাদের সম্পূর্ণ দায়ভার মালিকের উপর। মোটকথা, মালিকই তাদের একমাত্র পরিচয়।
    এবার আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করি, যার কারণে বাদীর সঙ্গে সহবাস করা যৌক্তিক ও কল্যাণময় হয়:

    ১. যখন একজন দাসি মনিবের অধীনে থাকবে, মনিবের ঘরের স্থায়ী লোক হিসাবে থাকবে এবং ঘরের ভেতরের কাজকর্ম করবে, তখন তো অবশ্যই সর্বদাই মনিবের দৃষ্টি তার উপর পড়বে। এখন যদি তাদের সঙ্গে স্ত্রীর মতই সহবাস করা বৈধ না হত, তাহলে হয়ত যিনামুক্ত মনিব-দাসী পাওয়া যাওয়াই দুস্কর হয়ে যেত। কারণ সারা জীবন নিজের ঘরের ভেতর একজন সুন্দর বেগানা নারী থাকলে সব সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে যাওয়া মানব প্রকৃতির জন্য অসম্ভব প্রায়। তাই এটা বৈধ হওয়া প্রকৃতিরই দাবি ছিল।

    বিবাহ যেরকম আল্লাহ প্রদত্ত একটি সহবাসের মাধ্যম, মাত্র দু’টি কথার মাধ্যমে বৈধ হয়ে যায় এবং আমাদের সমাজে প্রচলিত হওয়ার কারণে স্বাভাবিকও মনে হয়, তেমনি দাসির মালিক হওয়াও আল্লাহ প্রদত্ত একটি সহবাসের মাধ্যম, তাকে ক্রয় করা দ্বারাই এটি বৈধ হয়ে যায়, কিন্তু এটা আমাদের যুগে প্রচলিত না থাকার কারণে অস্বাভাবিক মনে হয়।
    ২. দাসি যখন মনিবের অধীনে স্থায়ীভাবে ক্রীত দাসি হিসাবেই আছে, তখন মনিব তার সঙ্গে সহবাসের সম্পর্ক করার দ্বারা তার সম্মান ও মর্যাদাই বৃদ্ধি পায়। কারণ তখন তার অবস্থানটা দাসির স্তর থেকে স্ত্রীর পর্যায়ে চলে আসে।

    ৩. দাসীকে সাময়িক ভোগ করা হয় না। বরং স্ত্রীর মত স্থায়ীভাবে গ্রহণ করা হয়। স্ত্রীকে যেমন ভরণপোষণ দিতে হয়, তেমনি তাকেও দিতে হয়। স্ত্রীর গর্ভে বাচ্চা হলে যেমন স্বামীর বাচ্চা হিসাবে গণ্য হয়, তেমনি দাসির গর্ভে বাচ্চা হলেও তার মনিবের বাচ্চা হিসাবে গণ্য হয়, এক্ষেত্রে কোনই পার্থক্য নেই। স্ত্রীর সন্তানরা যেমন তার ছেলে হিসাবে তার উত্তরাধিকার লাভ করে, তেমনি দাসির সন্তানরাও তার ছেলে হিসাবেই তার উত্তরাধিকার লাভ করে। এক্ষেত্রে কোনই পার্থক্য নেই। আরেকটি মজার ব্যাপার হল, দাসির গর্ভে বাচ্চা হওয়ার দ্বারা দাসি আযাদ হয়ে যায়! তবে মনিবের মৃত্যুর পর এটা কার্যকর হয়। আর আযাদ লাভ করা কতটা প্রাপ্তি, তা কেবল তখনকার লোকেরাই বুঝবে।


    কুফরী বিশ্বের সাথে তুলনা:

    এবার আমরা এটাকে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়াও বর্তমান কাফেরদের নীতির সাথেও তুলনা করে দেখি…

    বর্তমান বিশ্বের কাফের দেশগুলো অন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে কী করে?? আমেরিকা কোন দেশের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে প্রতিপক্ষ দেশের যারা তাদের আধিপত্য মেনে নেয় না, তাদেরকে কী করে?? রাশিয়া কী করে? ভারত কী করে??

    এরা সকলেই প্রতিপক্ষের অবাধ্যদেরকে বন্দি করে হয়ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় অথবা হত্যা করে। যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে বাংলাদেশের কাফের সরকারও এমনটাই করে। বর্তমান সভ্যতা ও মানবতার দাবিদার কাফেররা তো প্রতিপক্ষের নারী-শিশুসহ নির্বিচারে হত্যা করে। অবাধে নারীদের ধর্ষণ করে, ইজ্জত লুট করে। এমনকি বাবার সামনে, ছেলের সামনে, ভাইয়ের সামনে এবং স্বামীর সামনেও এসব পৈশাচিক আচারণ করে। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ভারত তো প্রতিপক্ষের ক্ষেত্রে কোন নিয়ম-নীতি ও মানবতাই রক্ষা করে না।

    এখন হত্যা করা, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া ও অবাধে পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ করার তুলনায় কি দাসত্ব অনেক উত্তম নয়? আরেকটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে, মুসলমানদের দাস-দাসীও কাফেরদের প্রজাদের তুলনায় অধিক স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করে। তাই ইসলামের দাস প্রথা প্রতিপক্ষের প্রতি দয়ারই বহি:প্রকাশ, যা বর্তমান কাফেরদের যুদ্ধনীতি থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে।
    পরিশেষে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাদের পরিবারবর্গ ও সকল সাহাবীগণের উপর।

  • #3
    উত্তম পোষ্ট। গুগোলে এ বিষয়ে অনেকগুলো লেখা পাওয়া যায়, কিন্তু সকলেই কেমন যেন কোন রকমে বাঁচার মত উত্তর দেয়। অনেক কষ্টে দোষ ঢাকার চেষ্টা করে। কেউ প্রকৃত হাকিকতটা তুলে ধরে না। যার কারণে এ বিষয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন করলে সকলের মাথা কেমন যেন নিচু হয়ে যায়। তাই এ লেখাটা ইসলামের এ বিধানটিকে স্বগৌরবে প্রকাশ করার মত উত্তর দিযেছে আলহামদু লিল্লাহ। জাযাকাল্লাহ।

    Comment


    • #4
      অনেক দ্বীনদার আছেন , যারা ইসলামের এই দাস দাসী প্রথা সম্পর্কে খুব ভাল ভাবে জানে না।আবার জানলেও অনেকে মানতে / স্বীকার করতে চায় না, অনেকে আবার এটাকে অসম্মানের কারণ মনে করে। এই লেখনীটা আসলে তাদের জন্যই। আল্লাহ্ আপনার কলমে বারাকাহ দান করুন।আমিন।
      দাওয়াত এসেছে নয়া যমানার,ভাঙ্গা কেল্লায় ওড়ে নিশান।

      Comment


      • #5
        Originally posted by নিশানে হক View Post
        অনেক দ্বীনদার আছেন , যারা ইসলামের এই দাস দাসী প্রথা সম্পর্কে খুব ভাল ভাবে জানে না।আবার জানলেও অনেকে মানতে / স্বীকার করতে চায় না, অনেকে আবার এটাকে অসম্মানের কারণ মনে করে। এই লেখনীটা আসলে তাদের জন্যই। আল্লাহ্ আপনার কলমে বারাকাহ দান করুন।আমিন।
        আমীন! ইয়া রাব্বাল আলামীন!

        Comment

        Working...
        X