Announcement

Collapse
No announcement yet.

করোনা নিয়ে আমরা কেমন আকিদা পোষণ করি?

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • করোনা নিয়ে আমরা কেমন আকিদা পোষণ করি?

    করোনা নিয়ে আমরা কেমন আকিদা পোষণ করি?

    অপ্রতিরোধ্য গতিতে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। প্রমস দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল,করোনা ভাইরাসের হতাহতের পরিসংখ্যান ওয়েবসাইট ওয়ালডুমেটারের তথ্যানুযায়ী শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ পয়তাল্লিশ হাজার আটশ পাঁচজন, মারা গেছেন দশ হাজার ছিচল্লিশ জন, আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন আটাশি হাজার চারশ একচল্লিশ জন।

    আর বাংলাদেশের আকাক্রান্ত সংখ্যা আঠার জন, এবং মৃত্যুবরণ করেছেন একজন। করোনা নিয়ে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা কল্পনা, ছড়িয়ে পড়েছে নানান গুজব ও ভুল ধারনা এছাড়াও রয়েছে মিনিস্টম মিডিয়ার বাড়াবাড়ি, অসচেতন মুসলিম ভাইয়েরা অনেকেই এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্তি হচ্ছেন।
    তাই আমরা করোনা সম্পর্কে ইসলামি শরিয়া কেমন আকিদা পোষণ করার নির্দেশ দেয় তা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করার প্রয়াস পাব ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।

    করোনা নিয়ে আমাদের আকিদা,করোনা সম্পর্কে আমাদের আকিদা হল, এটি আল্লাহর হুকুমে এসেছে আল্লাহ তায়ালা বলেন।

    مَاأصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ .

    " আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, তিনি তার অন্তরকে হেদায়াত দান করেন। (সূরা তাগাবুন,৬৪:১১)

    আমরা আরো বিশ্বাস করি করোনার মাধ্যমে আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদেরকে পরিক্ষা করছেন, আল্লাহ রব্বুল আলামিন দেখতে চান আমরা সবর করি কিনা, আল্লাহ তায়ালা বলেন,

    وَلَنَبْلُونَّكُمْ بِشَيْءِمِّنَ الْخَوْفِ وَالْخُوعِ وَنَقْصِ مِّنَ الْأَمْوَلِ وَالْأَنْفُسِ وَلثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِالصَّبِرِينَ.

    " আমি তোমাদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ ও জীবনের ক্ষতি ও ফল-ফসলের বিনষ্টের মাধ্যমে। আর তুমি সবর কারীদের সুসংবাদ দাও।
    (সূরা বাকারা,২:১৫৫)

    আমরা আরো বিশ্বাস করি আমাদের কৃত কর্মের কারণেই আমাদের উপর মুসিবত আসে, আল্লাহ রব্বুল আলামীন দুনিয়াতেই আমাদের নাফরমানীর কিছু শাস্তি দিয়ে দেন। যাতে আমরা তাওবা করার সুযোগ পায় এবং আল্লাহর পথে ফিরে আসি,আল্লাহ তায়ালা বলেন,

    ضَهَرَالْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوْ الَعَلَّهُمْ يَرْخِعُونَ.


    "জলে ও স্থলে মানুষের কৃতকর্মের কারণে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি আস্বাদন করান,যাতে তারা নাফরমানি থেকে ফিরে আসে। (সূরা রুম,৩০:৪১)

    আমারা আরো বিশ্বাস করি পৃথিবীতে যত বিপর্যয় আসে এবং আমাদের জীবনের উপর যত মুসিবত আসে তা আল্লাহর নির্ধারিত তাকদিরের অধিনেই হয়।

    مَآأَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ فیِ الْأَرْضِ وَلَافِيٓ أَنْفُسِكُمْ إِلَّا فِی كِتَبٍ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَآ إِنَّ ذَالِكَ عَلیَ اللَّهِ لَيسِير.

    "পৃথিবীতে এবং তোমাদের নিজেদের উপর যে বিপদ আসে, আমি পৃথিবী সৃষ্টি করার আগেই তা লিখিত আছে। নিশ্চয় এটি আল্লাহর জন্য সহজ।
    (সূরা রুম,৩০:৪১)

    আমাদের আকিদা হল করোনা নিজ শক্তিতে সংক্রমিত হতে পারে না। আল্লাহর নির্দেশ ও তার নির্ধারিত তাকদিরের অধিনেই করোনা সংক্রমিত হয়।আল্লাহর নির্দেশ না হলে কিংবা তাকদিরে না থাকলে তা সংক্রমিত হবে না। সহিহ বুখারিতে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
    لاعَدْوَی وَلاطِيَرَةَ

    " আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া রোগ সংক্রমিত হয় না, আর কুলক্ষণ বলে কিছুই নেই। (সহিহ বুখারী :৫৭৭৬)

    আমরা আরো বিশ্বাস করি শুধু করোনা কেন? পৃথিবীর সকল শক্তি মিলিও আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না কেবল ততোটুকুই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমার জন্য তাকদীরে লিখে রেখেছেন। তাই আমরা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করি, আল্লাহ তায়ালা বলেন,

    قُل لَّن يُصِيبَنَآ إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا هُوَ مَوْ لَناوَعَلَی اللَّهِ فَلْيَتَوَ كََّلِ الْمُؤْ مِنُون.

    " আপনি বলুন,আমাদের শুধু তা-ই আক্রান্ত করবে যা আমাদের জন্য আল্লাহ লিখে রেখেছেন। তিনি আমাদের রব।আল্লাহর ওপরই মুমিনের ভরসা করা উচিত। (সূরা তাওবা :৯:৫১)

    সুনানে তিরমিযিতে বর্ণিত একটি সহিহ হাদিসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম মুয়াজ বিন জাবাল রাযিঅাল্লাহু অানহু কে নাসিহা করতে গিয়ে বলেন,


    وَاعْلَمْ أَنَّ الأُمَّةَ لَوِاجْتَمَعُوا عَلَی أَنْ يَنْعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ. وَلَوِاجْتَمَعُوا عَلَی أَنْ يَضُرُّوكَ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلا بِشَيْءٍ كَتَبَهُ عَلَيْكَ. رُفِعَتِ الأَقلامُ وَجَفَّتِ الصُّحُفُ.

    " জেনে রেখো, যদি গোটা জাতিও তোমার কোনো উপকার করার জন্য একত্রিত হয়, তবে ততটুকু উপকারই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার তাকদিরে লিখে রেখেছেন। আর গোটা জাতি যদি তোমার কোন ক্ষতি করার জন্য সমবেত হয়, তবে ততটুকু ক্ষতিই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার তাকদিরে লিখে রেখেছেন। কলম তুলে নেয়া হয়েছে। তাকদিরের খাতাসমূহ শুকিয়েগেছে।
    (সুনানুত তিরমিজি:২৫১৬)

    তো, যত বড়ই মুসিবতই আসুক আমরা আতঙ্কিত হয়না, বরং সর্তকতা অবল্বনের পাশাপাশি আমরা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করি। আমরা আরো বিশ্বাস করি এই করোনার মাঝেই আল্লাহ আমাদের জন্য কল্যাণ রেখেছেন, যদি বাহ্যিক ভাবে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর মনে হয়, আল্লাহ তায়ালা বলেন।

    وَعَسَی أَنْ تَكْرَ هُوَا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَعَسَی أَنْ تُحِبُّوا شَئًا وَهُوَ لَكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لَاتَعْلَمُونَ.

    "তোমাদের কাছে হয়তো কোনো একটি জিনিস পছন্দনীয় নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তো বা কোনো একটি জিনিস তোমাদের কাছে পছন্দনীয়, অথচ তা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ তায়ালাই জানেন ;তোমরা জান না।
    (সূরা বাকারাহ,২:২১৫)

    সহিহ মুসলিমে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

    عَجَبًا لَأمْرِ الْمُرْٔمِنِ إِنَّ أَمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ وَلَيْسَ ذَاكَ لأَحَدٍ إِلاَّلِلْمُؤْمِنِ إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ جَيْرًالَهُ وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّءُصَبَرَ فَكَانَ خَيْرًالَهُ.

    " মুমিনের অবস্থা বড়ই বিস্ময়কর! সব কিছুই তার জন্য কল্যাণজনক। মুমিন ছাড়া এই কল্যাণ আর কেউ লাভ করতে পারে না। মুমিনের জীবনে যদি সুখ আসে, সে আল্লাহর শোকার আদায় করে। আর শোকর তার জন্য কল্যাণ ডেকে আনে। যদি তার জীবনে দু:খ আসে, সে সবর করে, আর সবর ও তার জন্য কল্যাণ ডেকে আনে। (সহিহ মুসলিম :২৯৯৯)

    আমরা আরো বিশ্বাস করি। করোনার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের গুণাহ মাফ করবেন, সহিহ বুখারীতে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

    مَامِنْ مُصِيْبَةٍ تُصِيبُ الْمُسْلِمَءِالَّاكَفَّرَاللَّهُ بِهَاعَنْهُ.حَتَّی الشَّوْ كَةِيُشَاكُهَا.

    " মুমিনের জীবনে যত বিপদ আসে, প্রতিটি বিপদের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহমাফ করেন। এমনকি কাঁটা ফুটলেও। (সহিহুল বুখারী: ৫৬৪০)

    আমরা বিশ্বাস করি করোনা আল্লাহর প্রেরিত একটি আযাব তবে আল্লাহ রব্বুল আলামিন এটি মুমিনের জন্য রহমত বানিয়েছেন। কারণ এর মাধ্যমে তাদের গুনাহ মাফ হবে, মর্যদা বুলন্দ হবে একং তাওবা নসিফ হবে, সহিহ বুখারীতে এসেছে একবার আয়শা রাযিঅাল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম কে মহামারী ব্যাপারে প্রশ্ন করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দেন।

    أَنَّهُ عَذَابٌ يَبْعَثُهُ اللَّهُ عَلَی مَنْ يَشَاءُ. وَأَنَّ اللَّهُ جَعَلَهُ رَحْمَةً لِلْمُؤْ مِنِينَ.

    " মহামারী হলো আজাব। এটি আল্লাহ যার কাছে ইচ্ছা পাঠান। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এটিকে মুমিনদের জন্য রহমত বানিয়েছেন।
    (সহিহুল বুখারী:৩৪৭৪)

    আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বিশুদ্ধ ঈমান ও আকিদার উপর অটল রাখুন আমিন,ইয়া রাব্বাল আলামিন।
    ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

  • #2
    আমিন, আমিন, আমিন।

    Comment

    Working...
    X