Announcement

Collapse
No announcement yet.

চায়নার কসাইখানা (২য় পোস্ট)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • চায়নার কসাইখানা (২য় পোস্ট)

    "চায়নার কসাইখানা"

    (তৃতীয় কিস্তি)


    ওরা আমাকে বিশাল একটা বিল্ডিংএর ভেতরে নিয়ে গেলো। চারপাশে অ্যাপ্রোন পরা অনেক মানুষ ঘুরঘুর করছিলো। দেখে মনে হচ্ছিল আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু কেন জানি গতানুগতিক হাসপাতালের সাথে এটাকে মেলাতে পারছিলাম না। মন সায় দিচ্ছিলোনা। মনে হচ্ছিল এটা হাসপাতালের মতোই, কিন্তু হাসপাতাল না অন্য কিছু। আমার পুরো শরীর চেকাপ করলো ওরা। পা থেকে একবারে মাথা পর্যন্ত… কিছুই বাদ রাখলোনা। প্রথমে মহিলা ডাক্তারেরা। তারপর পুরুষ ডাক্তারেরা। চাইনিজ ভাষার এক বর্ণও আমি বুঝিনা। ওরা চেকাপের সময় কী নিয়ে যে কথা বলছিল বুঝতে পারছিলাম না। বাঁধা দিতে চাইছিলাম ওদের। কিন্তু ভয়ে হাত পা একবারে অসাড় হয়ে ছিল’

    ৩৮ বছরের ওরিনবেক ককসিবেক (Orynbek Koksebek) এভাবেই বলছিলেন চায়নার কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে তার মেডিকেল চেকাপের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। [13]

    কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের একজন গার্ড বেরিক [14] বিবেকের সাথের চিরন্তন যুদ্ধে হার মেনে বাইরের দুনিয়াকে জানিয়েছিলো ক্যাম্পের অবস্থা। মিডিয়ার কাছে লিখা তার চিঠির এই অংশটুকু আমাদের কাজে লাগবে এখানে-
    ‘ডাউনচিং ক্যাম্পে তরুণী, যুবতী এবং মধ্যবয়স্ক নারীদের প্রত্যেক মাসে একটা করে ইঞ্জেকশান দেয়া হয়। বয়স্কাদের শুধু একবারই ইনজেকশন দেয়া হয়। প্রথমবার ক্যাম্পে আনার পরপর। কর্তৃপক্ষের দাবী সর্দি কাশি বা ফ্লু যেন ক্যাম্পে না ছড়িয়ে পড়ে সে জন্যেই এই ইনজেকশন দেয়া’।

    কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থেকে ছাড়া পাওয়া গুলবাহার জেলিলোভার ভাষ্যমতে ইনজেকশন দেয়া হতো প্রতি দশ দিন পর পর। আর আল্ট্রাসনোগ্রাফি তো হতো রুটিন করে। [15]

    আপনি যদি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের বন্দীদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা শোনেন তাহলে খেয়াল করবেন একটা প্যাটার্ন বারবার অনুসরণ করা হচ্ছে। বন্দীদের আগাগোড়া চেকাপ করা হচ্ছে, নিয়মিত ইনজেকশান দেয়া হচ্ছে, অজানা ওষুধ গিলতে বাধ্য করা হচ্ছে, রক্তের স্যাম্পল নেয়া হচ্ছে নিয়মিত বিরতিতে, করা হচ্ছে ডিএনএ টেস্ট। .

    শুধু কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের বন্দীদের নয়, বরং পূর্ব তুর্কিস্থানের প্রায় সকল উইঘুর আর কাযাখ মুসলিমদের ব্লাড টেস্ট করা হয়েছে। ডিএনের ডাটা, ফিংগারপ্রিন্ট নেয়া হয়েছে, করা হয়েছে আইরিস স্ক্যান। হৃদপিন্ড, লিভার, কিডনি, ফুসফুস চেক করা হয়েছে মানবদের মৌলিক এই অর্গানগুলোও। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে ১৮ মাসের মাথাতেই প্রায় প্রত্যেক উইঘুর নারী পুরুষের মেডিকেল ডাটাবেস তৈরি করা হয়েছে। দেড়কোটির মতো উইঘুরের!

    সরকার কেনো এভাবে উইঘুরদের মেডিকেল ডাটাবেস তৈরি করছে স্বভাবতই জানতে চেয়েছিলো উইঘুররা।
    কেন আমাদের ব্লাড স্যাম্পল নিচ্ছেন? কিডনি, হার্ট, চোখ সব পরীক্ষা করছেন? সরকার বলেচিল এটা জাস্ট নরমাল মেডিকেল চেকআপ। তো মেডিকাল চেকআপের ফলাফল কী? ফলাফল উইঘুরদের জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছিলো আপনারা সুস্থ। সমস্যা থাকলে আপনাদের জানাবো! পুরো অন্ধকারে রাখা হয়েছে উইঘুর আর কাযাখদের!

    মাত্র ১৮ মাসের ব্যবধানে তড়িঘড়ি করে দুই কোটির মতো মুসলিম উইঘুর, কাযাখদের মেডিকেল ডাটাবেস তৈরি করা হলো ২৬ মিলিয়ন ইউএস ডলারেরও বেশি খরচ করে? [16,17,18]

    ‘জাস্ট নরমাল মেডিকেল চেকআপ?
    মাথার গোবর পোকা ভরা থাকলেও বুঝে নিতে সমস্যা হয়না সরকার সত্য বলেছেনা। তাহলে সত্যটা কী?

    স্পেইস অপটিক্সের একজন সিনিয়র ‘বাঘা’ ইঞ্জিনিয়ার প্রফেসর ইরকিন সিদিক। চীন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে তাঁর দহরম মহরম সম্পর্ক। প্রফেসর সাহেব, রহস্যের জট খোলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। উনার কাছ থেকে আমরা পাচ্ছি রোমহর্ষক তথ্য- ‘চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ১০ লাখেরও বেশী উইঘুরদের বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করেছে। এক গ্রুপ বিভিন্ন ধরণের বায়োলজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য, আরেকগ্রুপ অর্গান হারভেস্টিং এর জন্য! অন্য গ্রুপগুলোর জন্য অন্যান্য পরিকল্পনা। যেমন ধরুন ঠান্ডা মাথায় তালিকা ধরে ধরে মেরে ফেলা! বিশাল বিশাল কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের খরচ জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে চীন সরকার। উইঘুরদের অর্গান বিক্রি করে তারা ঘাটতি পূরণ করছে। আমি সরকারী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আমার নিজেস্ব মাধ্যম ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত তথ্য পাই। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি কারো নাম বলতে পারছিনা। পরিচয় ফাঁস হয়ে গেলে অনেকগুলো মানুষ মারত্মক বিপদে পড়বে’![19]

    অনেক কিছুই খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। ব্লাড গ্রুপিং যে স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচীর জন্য করা হয়নি এটা তো একদম নিশ্চিত। সরকার এরকম কাউকে রক্তদানের জন্য ডাকেনি। ব্লাড ব্যাংক বানানোই যদি ওদের উদ্দেশ্য হতো তাহলে রক্ত দানে সক্ষম উইঘুরদের কাছ থেকে তো রক্ত নিতো ব্যাগ ভর্তি করে। কিন্তু তারা নিয়েছে খুবই সামান্য রক্ত। দু তিন ফোঁটা!

    ইনফেকশন কন্ট্রোলের জন্য যদি রক্ত নেয়া হতো আর ইনজেকশন দেয়া হতো তাহলে তো জেলে বন্দী সব লোকদের থেকেই ব্লাড স্যাম্পল নেয়া হতো বা ইনজেকশন দেয়া হতো। কিন্তু তা করা হয়নি। শুধু উইঘুর,কাযাখদের কাছ থেকেই নেয়া হয়েছে। আগে যেমন নেয়া হতো ফালুন গং নামেরআরেক সংখ্যালঘু ধর্মের লোকদের থেকে। তাহলে?

    আরেক কারণে ব্লাড টেস্ট করা হয়ে থাকতে পারে- অর্গান হারভেস্টিং!

    অর্গান হারভেস্টিং এর জন্য রক্ত পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। ডিএনএ, রক্তের গ্রুপ ম্যাচ করতে হবে। না হলে দাতার অর্গান গ্রহীতার শরীরে খাপ খাবেনা। ঠিকমতো কাজ করবেনা। আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট করার কারণও সুস্পষ্ট - দেহের ভেতরের অর্গানের আকার আকৃতি কেমন আছে, কী অবস্থায় আছে সেটা জানা। দেখুন কতোটা আটঘাট বেঁধে ঠান্ডা মাথায় সবকিছুর ছক কষে মাঠে নেমেছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার!

    জানুয়ারীর ১৯ তারিখে (২০২০) প্রফেসর ইরকিন সিদিক টুইট করেন - “Halal Organs #HalalUyghurs

    ‘এই মাত্র খুবই বিশ্বস্ত এক সূত্র থেকে জানতে পারলাম চীন কমিউনিস্ট সরকার অতি সম্প্রতি উইঘুরদের অর্গান সৌদি আরবে রফতানি করা শুরু করেছে ব্যাপক আকারে। প্রত্যেকদিন সাংহাই থেকে সৌদি আরবে উইঘুরদের অর্গান পাঠানো হচ্ছে’

    ঠিক একই রকম টুইট করেন আরেকজন ভদ্রলোক, একসময় পূর্ব তুর্কিস্থানএর এক হসপিটালে সার্জন হিসেবে কাজ করা ডাঃ ইনভার তোথি …‘Halal organs’ are real!

    সার্জন সাহেবের এরকম টুইট করার পেছনে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে আইলি নামের এক মহিলা।[20,21,22,23] এক চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেবার সময় চাইনিজ এই মহিলা দাবী করে বসে চায়নার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নাগরিকদের দেহ থেকে অঙ্গ কেটে নিয়ে বিক্রি করার যে অভিযোগ উঠেছে তা একদম সত্য। চীনের তিয়ানজিন শহরের এক হাসপাতালে সে নিজে দেখেছে জীবন্ত মানুষের শরীর থেকে জোর করে অর্গান কেটে নিয়ে বিক্রি করছে সরকার। তিয়ানজিন তাইডা হসপিটালের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ডিপার্টমেন্ট ২০০৬ সালে এই অমানবিক কাজ করেছিলো- আত্মবিশ্বাসী গলায় দাবী করে আইলি।

    এটা দেখামাত্রই সার্জন ইনভার তোথির মনে পড়ে গেলো তাঁর জীবনের সবচেয়ে কালো দিনটার কথা!

    চলবে ইনশা আল্লাহ …
    (সংগৃহীত)
    আগের পোস্ট পড়ুন- https://www.dawahilallah.com/showthr...B%26%232494%3B

    রেফারেন্স-
    [13] WEATHER REPORTS: VOICES FROM XINJIANG- https://tinyurl.com/yxszsrkc
    [14] A Letter from A Prison Guard in the Newly Built Concentration Camp in Dawanching- https://tinyurl.com/w9xmnf9
    [15] Bloody Harvest—How Everyone Ignored the Crime of the Century- https://tinyurl.com/te6lshr
    [16] China: Minority Region Collects DNA from Millions -https://tinyurl.com/ycg5v9s2
    [17] Uyghurs Forced to Undergo Medical Exams, DNA Sampling- https://tinyurl.com/w456sq9
    [18] China: Police DNA Database Threatens Privacy- https://tinyurl.com/tehwbta
    [19] China's Harvesting of Uyghur Organs Gets Darker- https://tinyurl.com/vaeevxa
    [20] Independent T ribunal into Forced Organ Harvesting from Prisoners of Conscience in China – Final [21] Judgement and Summary Report, 17 June 2019 Ibid., p26
    [22] Dr. Enver Tohti: Chinese regime harvesting organs from Uighur detainees in the concentration camps- https://tinyurl.com/vd74bjp
    [23] 410 Saudis said to buy organs on black market -https://tinyurl.com/rl73pah

  • #2
    ভাই, আপনার পোস্ট গুলো পড়ে খুবই উপকৃত হচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ। সামনের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আপনার এই মেহনতকে কবুল করুন,আমীন।
    বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
    কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাাহ ভাই্। তাড়াতাড়ি পরবর্তী পোষ্ট করুন। আল্লাহ জালিমদরকে এমন লাঞ্ছনাকর শাস্তি দেওয়ার তাওফিক দান করুন, যা পরবর্তীদের জন্যও শিক্ষা হয়ে থাকবে।

      Comment


      • #4
        খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যাধনাদায়ক তথ্য����
        আল্লাহ তা'আলা উইঘুর মুসলমানদেরকে হেফাজত করুন,,,
        আমিন

        ,,,,,আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
        মুমিনের একটাই স্লোগান,''হয়তো শরীয়াহ''নয়তো শাহাদাহ''

        Comment


        • #5
          জাঝাকাল্লাহু আহসানাল জাঝা ৷
          আল্লাহ আপনার ইলম ও আমলে বারাকাহ দান করুক ৷ আমীন ৷
          ভাই পরবর্তী কিস্তির অপেক্ষায় রইলাম,,,,,,
          আমি জঙ্গি, আমি নির্ভীক ৷
          আমি এক আল্লাহর সৈনিক ৷

          Comment

          Working...
          X