Announcement

Collapse
No announcement yet.

ধারাবাহিক "ভাষার ভয়াবহতা"সিরিজ ভলিউমঃ০২

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ধারাবাহিক "ভাষার ভয়াবহতা"সিরিজ ভলিউমঃ০২

    ধারাবাহিক "ভাষার ভয়াবহতা"সিরিজ
    ভলিউমঃ০২

    [CENTER]প্রথম ভয়াবহতা"অনর্থক দূর্লভ কথনও কৌতুহল"


    [SIZE=4][COLOR="#006400"]বিসমইল্লাহির-রহমানির-রহিম।
    আলহামদুলিল্লা-হি রব্বিল আ-লামী-ন। ওয়াস্-সলাতু ওয়াস্-সালামু আলা- সাইয়িদিল আম্বিয়া-ই ওয়াল-মুরসালীন, ওয়া আলা- আলিহী-, ওয়া আসহাবিহী-, ওয়া মান তাবিয়াহুম বি ইহসা-নিন ইলা- ইয়াওমিদ্দী-ন, মিনাল উলামা-ই ওয়াল মুজাহিদী-ন, ওয়া আ-ম্মাতিল মুসলিমীন, আমী-ন ইয়া- রাব্বাল আ’-লামীন।

    আম্মা বা’দ,
    এখন আমরা আলোচনা করবো "]অনর্থক দূর্লভ কথা নিয়ে.

    মুতারাম পাঠকবৃন্দ!
    মানুষ তাদের মাল কে হেফাজত করে। যেহেতু সে তার থেকে ব্যয় করে। এই কারণে সে দৈনন্দিন হিসেব করে, সে তা থেকে কী আয় করলো আর কী ব্যয় করলো। কিন্তু সে তার মূল সম্পদ থেকে ভূলে রয়েছে। আর তা হচ্ছে তার "সময়"।
    যখন মানুষ তার পালনকর্তার আনুগত্য করতে অস্বীকৃতি জানায় তখন সে ধোঁকা খায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

    অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর রাসূল, মুহাম্মাদে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এই হাদীস কে ভূলে আছে। আর তা হলো
    "আলী (যাইনুল আবিদীন) ইবনুল হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্নিতঃ
    তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা।

    [জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৩১৮, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস]

    সুতরাং মানুষ নিষেধকৃত কথা কিংবা কাজকে ছেড়ে দেওয়াটাই হুসনে ইসলামের দলীল হবে।

    ইবনে আব্বাস রাঃ বলেনঃ পাঁচটি বিষয় আমার নিকট উৎকৃষ্ট ঘোড়া থেকেও উত্তমঃ

    (১) যে বিষয় তোমার কাজে আসবেনা, তুমি সেই বিষয়ে কথা বলোনা। কেননা তা হচ্ছে অতিরিক্ত। এবং তুমি কারো থেকে নিরাপদ নও।
    (২) উপযুক্ত জায়গা ব্যতিত কথা বলো না।
    (৩) তুমি কাউকে সহনশীল কিংবা নির্বোধ মনে করো না।
    (৪)তুমি যা স্বরণ করতে পছন্দ করো তা তোমার ভাইকে স্বরণ করিয়ে দাও।
    (৫)এবং তুমি মানুষদের সাথে এমন আচরণ করো যেমন আচরণ তুমি কামনা করো।

    যেমন ধরো:তুমি কোন ক্বওমের কাছে বসে তোমার সফর সম্পর্কে আলোচনা করলে। এবং সেথায় ( সফরে ) যেই পাহাড়, নদি , খাবারদাবার এবং পোশাকাদি যা দেখেছো সেগুলোরও আলোচনা করলে। আর এগুলো এমন বিষয় যেগুলোর কথা বললে তুমি গোনাহগার হবে না। তবে ভয় হলো যখন তোমার কথার সাথে গর্ব অহংকারের দৃষ্টি কোণে নিজের বড়ত্বের আলোচনা মিস্রিত হয়, এই সমস্ত স্থান দেখার কারণে। তাহলে তোমার আমল নষ্ট হয়ে যাবে।

    অথবা কোন ব্যাক্তির পশ্চাতে তার এমন জিনিসের তিরস্কার করা যা আল্লাহ সুবহানা হু তাআলা সৃষ্টি করেছেন ।আর সে ব্যাক্তি মনে করছে যে, সে গীবত করছে না এ কারণে সে এ কথার মধ্যেই অটল তাহলে ( আমি বলব ) তুমি তোমার সময় অনর্থক কথায় নষ্ট করছ ।সুতরাং উত্তম হল সময় নষ্ট না করার জন্য অথবা ভুলে নিপতিত না হওয়ার জন্য চুপ থাকা। আর পরিশেষে (আমি বলব তুমি )সময় নষ্ট না করে আল্লাহর যিকির কর, এটাই অধিক বেটার।

    সুতরাং প্রিয় পাঠক!
    জেনে রেখো! অনর্থক কথাবার্তা তোমার সময় কে নষ্ট করবে। যার মূল্য তুমি দিতে পারবেনা।

    যখন তুমি কাউকে অনর্থক প্রশ্ন করো, তাহলে তুমি হবে তার সময় কে নষ্টকারী।
    যেমন ধরো তুমি কাউকে ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে বললে... তুমি কি রোজাদার..? ফলে যদি সে এতটুকু বলে যে, "হ্যাঁ" তাহলে তার ইবাদাত প্রকাশ হয়ে যাবে। আর যদি তার মধ্যে রিয়া/লোক দেখানো আমল উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে তার আমল বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি লোক দেখানো উদ্দেশ্য না হয় তাহলে সে যে আমলটা গোপন রাখতে চেয়েছিল তা তোমার প্রশ্নের কারণে প্রকাশ হয়ে যাবে। যদি সে তোমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপ থাকে, তাহলে তুমি তার প্রশ্নের উত্তর না পাওয়ার কারণে কষ্ট পাবে। আর এই সবকিছুই হয়েছে তোমার অনর্থক প্রশ্নের কারণে।
    যদি সে তোমার থেকে বাস্তবতাকে আড়াল করতে কোন কৌশল অবলম্বন করে তবে তাকে হয়তো বহু কষ্ট ও পেরেশানি পোহাতে হবে আবার কখনো কখনো তাকে মিথ্যার আশ্রয় ও নিতে হতে পারে। সুতরাং তোমার এই প্রশ্নের কারণে বহু পেরেশানি কিংবা মিথ্যা অথবা লোকদেখানো আমলের সম্মুখীন হতে হবে।

    আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
    তিনি বলেন, কোন এক সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এক সাহাবী মারা গেলে এক ব্যক্তি বলল, জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতুমি তো জান না, হয়ত সে বেহুদা কথা বলেছে অথবা যা দান করলে তার কোন ক্ষতি হত না তাতেও সে কৃপণতা করেছে?


    [যঈফ, তা’লীকুর রাগীব (৪/১১)]

    আল্লাহ তায়ালা আমাদের অনর্থক দূর্লভ কথা থেকে হেফাজত করুন। আমীন

    এখন আমরা আলোচনা করবো "কৌতূহল" নিয়ে। ওমা তাওফিকি- ইল্লা বিল্লাহ্। আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওইলাইহি উনি-বু।


    "কৌতূহল"হলো যেমনঃ এমন কিছু বিষয়ে প্রশ্ন করা যেগুলো প্রশ্ন করা আবশ্যক না।
    -সকালে তুমি কোথায় ছিলে?
    -কার সাথে ছিলে?
    -তুমি কোথায় যাবে/যাচ্ছ?
    যার ফলে মানুষ তোমার আচরণ কে বাচ্চা সূলভ মনে করে। আর তোমার এই অনর্থক প্রশ্নের জবাবে কখনো কখনো মিথ্যা বলতে হয়। ফলে তুমি দুইটি বোঝা বহন করোঃ-
    -কৌতূহল এর বোঝা।
    -তোমার মু'মিন ভাইকে মিথ্যা বলতে বাধ্য করা।
    আর তার প্রতিশোধক হলোঃ যে এই সমস্ত কথা বলে তাকে অন্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে অভ্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকতে বাধ্য করা। এবং অনর্থক কথাবার্তা কে ছেড়ে দেওয়া।

    এই ঘটনার প্রতি লক্ষ্য করুন!
    একদা হযরত আনাছ ইবনে মালেক রাঃ এর মা তার আসতে দেরী হওয়ায় তাকে প্রশ্ন করলেন। -আনাছ! তুমি এতোক্ষণ কোথায় ছিলে?
    হযরত আনাস রাঃ বললেন, আমি রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খেদমতে ছিলাম।
    তার মা তাকে পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, কি সেই কাজ।?
    অতপর আনাস রাঃ বলেছেনঃ আমি কি আল্লাহর রাসূলের বিষয় কে গোপনঔকারী হবো না?
    ফলে তার মা তার কথায় অবাক হয়ে গেলেন। এবং তাকে বললেন তুমি সারা জীবন এমনি হও। এবং কখনো তা থেকে বিচলিত হইওনা।
    এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হলো,
    তার মা তাকে এটা বলতে পারতেন যে, তুমি এই বিষয়টা তোমার মাকে ব্যতীত সবার কাছে গোপন রেখো। হয়তো তিনি তার মার এই কথা টাই গ্রহণ করতেন।

    যখন তুমি তোমার কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করতে যাও।এবং তাকে জিজ্ঞেস করো। যেমন কাপড় সম্পর্কে..
    -কাপড়ের দাম কতো।?
    -কাপড় কোথায় থেকে ক্রয় করেছো।?
    -এই কাপড় কে তোমাকে হাদিয়া দিয়েছে।?
    এগুলোও কৌতূহল এর অন্তরভুক্ত।

    -আতা ইবনে রিবাহ বলেছেনঃ
    তোমাদের কারো কারো জন্য লজ্জাজনক বিষয় এমন হবে যে, কিয়ামতের দিন যখন তার আমল নামা কে প্রকাশ করা হবে। যখন সে দেখবে যে তার আমল নামার অধিকাংশই দুনিয়ার সাথেও সম্পৃক্ত নয় এবং দ্বীনের সাথেও সম্পৃক্ত নয়।
    অর্থাৎ কৌতূহল কিংবা অনর্থক কথাবার্তা বলা।

    -আনাস ইবনে মালেক রাঃ থেকে বর্নিত।
    রাসূল সাঃ বলেছেনঃ সৌভাগ্যবান ঐ ব্যক্তি যে তার যবানের কৃতিত্ব থেকে বিরত থাকে এবং শ্রেষ্ঠ সম্পদ খরচ করার মাধ্যমে কৃতিত্ব অর্জন করে।

    সুতরাং তুমি লক্ষ্য করো!
    মানুষ কীভাবে বিষয়টি ঘুরিয়ে দিয়েছে।?
    মানুষ এখন শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে জবানের মাধ্যমে। আর দান কারার শ্রেষ্ঠত্ব থেকে বিরত থাকে।

    -হযরত হাসান রাঃ বলেনঃ
    যে বেশি কথা বলে তার মিথ্যা বেশি হয় এবং গুনাহ বেশি হয়। এবং যে তার চরিত্রকে খারাপ বানায় সে নিজেকে নির্যাতন করে।
    সুতরাং মানুষের উপর আবশ্যক হলো কম কথার উপর অভ্যস্থ হওয়া।


    যেমন উদহারণ স্বরূপঃ-
    -কতেক জ্ঞানীগন বলেছেনঃ কোন মজলিসে যখন কোন ব্যক্তির ঘটনা তোমাকে আশ্চর্যর্ণিত করে তাহলে তুমি চুপ থাকো। আর যদি সে চুপ থাকে আর তার চুপ থাকাটা তোমাকে আশ্চর্যন্নিত করে তাহলে কথা বলো।

    -মোট কথাঃ আমরা অনর্থক দূর্লভ কথন ও কৌতূহল থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবো.. ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অনর্থক কথন ও কৌতূহল থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন.... ইয়া রাব্বাল আলামীন।
    আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে এবং পুরো উম্মাহকে "অনর্থক কথন ও কৌতূহল" থেকে মুক্ত করে দ্বীনের উপর মজবুতির সাথে অটল থাকার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করার তাওফীক দান করুন! আমিন!
    এবং আমাদের সবাইকে ইখলাসের সাথে জিহাদ ও শাহাদাতের পথে অবিচল থাকার তাওফীক দান করুন ।আমাদের নেক দোয়ায় মাজলুম উম্মাহ এবং মুজাহিদগনকে যেন ভুলে না যাই । [COLOR="#0000CD"][COLOR="#800080"]আল্ল-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লাম ওয়া বা-রিক আলা- নাবিয়্যিনা- মুহাম্মাদ ওয়া আলা- আ-লি মুহাম্মাদ কামা- সল্লাইতা ওয়া সাল্লামতা ওয়া বা-রকতা আলা- ইবর-হী-ম ওয়া আলা- আ-লি ইবর-হী-ম ইন্নাকা হামি-দুম্মাজি-দ।

    ভাষার ভয়াবহতা সিরিজের দ্বিতীয় ভলিউম এপর্যন্তই... ইনশাআল্লাহ পরবর্তী ভলিউমে আমরা নতুন কোন ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করবা।
    وما توفيقي إلا بالله عليه توكلت و إليه أنيب..

    وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله
    واصحابه اجمعين
    وآخردعوانا ان الحمد لله ربالعالمين
    Last edited by Gundus; 04-22-2020, 04:03 PM.
    হয় শাহাদাহ না হয় বিজয়!

  • #2
    আখি, খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন আমীন। প্রিয় আখি, পর্বগুলো শেষ হলে সবগুলো পর্ব পিডিএফ করে দিয়েন।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তায়ালা আপনার দোয়া কে কবুল করুন... আমীন


      আর ইনশাআল্লাহ আমি চেষ্টা করবো একটা পিডিএফ ফাইল তৈরি করার জন্যে... আপনাদের দোয়া কাম্য....
      হয় শাহাদাহ না হয় বিজয়!

      Comment

      Working...
      X