Announcement

Collapse
No announcement yet.

রমাদান ই হোক ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রমাদান ই হোক ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ!

    বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু আস সালাম আলা রাসুলিল্ললাহ -

    আসছে রমাদান! আরেকটি সুযোগ, রব্বে কারীমের রহমত, মাগফিরাত এবং নাজাত লাভের ওয়াসিলা হয়ে। ইয়া আল্লাহ আপনি আমাদের জন্য রমাদান এর পূর্ণ ফায়দা হাসিলের তাউফিক দান করুন, আমিন।

    আসলে আল্লাহর নিয়ামত বলে শেষ করা সম্ভব না। আমি, আমরা বড়ই অধম, বড়ই দুর্ভাগা যে আমরা আল্লাহর নিয়ামতের দিকে তাকাইনা। নিয়ামত গুলো বুঝিনা। এজন্য নিয়ামত আসে আবার চলে যায় কিন্তু আমাদের জীবনের কোন পরিবর্তন হয়না! কারণ নিয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের সুযোগ আমাদের হয়না। আমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছেন যিনি আল্লাহর নিকট রমাদানের ব্যাপারে সুপারিশ করেছিলেন? এমন কেউ কি আছেন যিনি রমাদানের মধ্যে লাইলাতুল কদর এর জন্য সুপারিশ করেছিলেন?

    না, কেউই নেই। বরং আল্লাহ নিজ দয়া এবং অনুগ্রহে আমাদের এই নিয়ামত গুলো দিয়েছেন। ভাবা যায়, যদি আমাদের জন্য কোন রমাদান ই না থাকতো? না ভাবা যায়না! ভাবতে গেলে দম বন্ধ হয়ে আসে। রমাদান নাই! কিন্তু এটা অবাস্তব কিছু না -

    এখানে এসে একটু অন্য প্রসঙ্গে সরে যাচ্ছি। ঐ যে বললাম, ভাবা যায় রমাদান নাই? আসলে এটা দুনিয়াতে লক্ষ লক্ষ মুসলিমের জন্য বাস্তবতা। উইঘুরের লক্ষ লক্ষ মুসলিমের জীবনে রমদান থেকেও রমাদান নাই! আল্লাহ আমাদের ভাইবোনদের হেফাযত করুন।

    আচ্ছা লক্ষ্য করুন, গত রমাদানে কেউ ভাবতে পারতো আমরা জুমার জামাত থেকে বঞ্চিত হব? না কেউই না। ঐ সময় পর্যন্ত জুমার জামাতের নিয়ামতের ব্যাপারে আমরা হয়ত সেভাবে কখনো ভাবিইনি। যখন জুমা আমাদের থেকে বেরিয়ে গেলো তখন কস্ট লাগলো! তাই নিয়ামত চলে যাবার আগে নিয়ামতকে চিনে নেয়া, চিনতে পারা অনেক জরুরী।

    কোথায় যেন দেখেছিলাম, জামাত হাতছাড়া হয়ে গেলো তাই আজ মিম্বার গুলো গরম হয়ে গেলো, কিন্তু ইসলামের চূড়া হাতছাড়া হয়ে গেলো তখন কেউ টু শব্দও করলোনা! কেন করেনি? কারণ তারা সেই মহান ফরজের মর্যাদাই বুঝেনি কিংবা বুঝলেও ভেবেছে আরে এর চেয়ে আমার আপাত স্বার্থ বেশী দামী! সম্ভব সাইয়েদ কুতুব রহঃ এর একটা কথা ছিলো এমন, ইসলামের শাসন না থাকা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জুলুম। আর ইসলামের শাসন কেন নাই এই প্রশ্নের উত্তর যদি খুজতে যান তাহলে খুঁজে পাবেন ঐ যে ফরজটি যেদিন মিম্বার থেকে হারিয়ে গেলো সেদিনের সুত্র! হায় যদি আমরা সেদিন এই ফরজকে অবহেলা না করতাম!

    আচ্ছা, আবার মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি -

    নিয়ামতকে বুঝে আসা খুব জরুরী। আল্লাহ বড় দয়া করেই আমাদের এই রমাদান দান করেছেন, আমি আপনি কেউই এই রমাদান এর জন্য কিছুই করিনি। একভাব ভেবে দেখেন তো, যদি বলা হত, এইবারের রমাদানে সারা দুনিয়া থেকে মাত্র ১/২/৫/১০ লক্ষ মুসলিমকে ক্ষমা করা হবে, কেমন অবস্থা হত! আর যদি সেই সাথে আল্লাহ শর্ত দিয়ে দিতেন এই শর্ত সাপেক্ষে! আর যদি আল্লাহ চাইতেন সেই শর্ত সমুহকে আরো শক্ত করে দেয়া হবে!

    আল্লাহ বলেছেন, "তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে এবং আল্লাহ তাওবা কবুলকারী, প্রজ্ঞাময় না হলে কত কিছুই যে হয়ে যেত" [সূরা আন নুর-১০]

    রমাদান আসে, আবার চলে যায় এই অধমের হাল যেমন ছিলো তেমনই থেকে যায়, ও আল্লাহ তোমার নিকট আশ্রয় চাই!

    রমাদানে আমরা কি করতে পারি? এ ব্যাপারে আসলে সুনির্দিষ্ট কিছু না বলাই উত্তম, কারণ সে অধিকার এখতিয়ার কোনটাই আমার নাই। আর যারা কল্যাণকামী তারা বিভিন্ন রুটিন, আমাল একে অপরকে জানাচ্ছন, উৎসাহিত করছেন আলহামদুলিল্লাহ। এমন অবস্থায় এ ব্যাপারে আমি আপনাদের সামনে নিজের কিছু চিন্তা পেশ করলাম।

    আমরা এই রমাদানে কুরআনের সাথে সীরাহ এর আলোচনা, তালিম রাখতে পারি কিনা। আবু দাউদ শরীফে উম্মুল মুমিনিন আয়িশা রাঃ থেকে একটি হাদিস আছে, ভাবার্থে, উম্মুল মুমিনিন রাসুল সাঃ চরিত্র এর ব্যাপারে বললেন, তোমরা কুরআন পড়োনা? কুরআনই তো ছিল তাঁর চরিত্র।

    সাহবাগণ কুরআন বুঝার জন্য তাঁদের সন্তানদের সীরাহ শিক্ষা দিতেন, কারণ তাঁরা জানতেন সীরাহ ব্যাতিত কুরআনের বুঝ সম্পূর্ণ নয়। এ ব্যাপারে ফোরামে বিজ্ঞ ভাইগণ সুযোগে আলাদা আলোচনা করতে পারেন ইনশা আল্লাহ, সীরাহ শিক্ষা এবং এর গুরত্ব, ফজিলত নিয়ে।

    এর বাইরে সীরাহ শিক্ষা আমাদের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য একটি শিক্ষা। এর কোন বিকল্প নাই, ব্যাতিক্রম নাই, থাকা উচিৎ নয়। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের কথা, জাতি হিসেবে আমাদের সন্তানরা মুজিবের জীবনী খুব ভালো ভাবে শিখে কিন্তু সৃষ্টি জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটির ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞানই থাকেনা! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)

    আর শুধু সন্তানরাই বা কেন হবে, আমাদের মধ্য থেকেও অনেকে আমরা রাসুলের পূর্ণ সহিহ সীরাহ তো অনেক দুরের কথা, রাসুলের পবিত্র জীবনের সামান্য ছিটেফোটাও আমরা বিশুদ্ধ ভাবে জানিনা। সীরাহ আমরা আলাদা ভাবে শিখিনা, কেউ আমাদের শেখায়না। এভাবে একটি জাতি বড় হয় এভাবে যে তারা, আর তাদের সন্তানেরা জানেনা রাসুলের পবিত্র জীবন সম্পর্কে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)

    অনেক ভাই পরিবার থেকে এমন কথা শুনে থাকেন, তুই কোন কামাই রোজগার করবিনা, জিহাদ করবি, কিন্তু রাসুল সাঃ কি ব্যাবসা করেন নি? রাসুল সাঃ কি ইহুদিদের সাথে, কাফেরদের সাথে ব্যাবসা করেন নি? তারা এটুকু তো সীরাহ থেকে অবশ্যই দেখে নিয়েছেন যা ছিলো রাসুলের নবুওয়তের আগের কথা কিন্তু রাসুল সাঃ এর নবুওয়তের পর থেকে রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাসুলের রিজিক কোথায় নির্ধারণ করা ছিলো তা আর কেউ দেখেননা, কেউ আলোচনাও করেননা। রাসুল সাঃ নিজে বলেছেন, আমার রিজিক আমার বর্শার ছায়ার নিচে! জি, বর্শা! আল্লাহ নিজে যুদ্ধলব্ধ গনিমত থেকে রাসুল সাঃ এর জীবিকা নির্ধারন করে দিয়েছেন! হায়, কয়জন এ বলে উৎসাহ দেয়, রাসুলের ন্যায় জীবিকা তালাশ কর, নিজের বর্শার ছায়ার নিচে রিজিকের তালাশ কর।

    আমার আপনার সন্তানের সামনে কেউ আমাদের গালি দিলে তারা অগ্নিশর্মা হয়ে যায়, আলহামদুলিল্লাহ এটা ভালো। কিন্তু পুরা জাতির সামনে রাসুলের পবিত্র সম্মানে বেয়াদবি করা হয়, অথচ জাতির যুবকেরা বুঝেই উঠে না করনীয় কি! শুধু তাই নয়, আল্লাহ যদি তাঁর অনুগ্রহ ধন্য কোন বান্দাকে দিয়ে দেখিয়ে দেন যে, কি করতে হয় তাহলে এমনকি ইলম আছে এমন দাবীকৃত এক শ্রেণী পর্যন্ত এ নিয়ে মহা তালগোলে পড়ে যান, আরে না... আসলে শোনো কথাটা ... ঐটা এটা না, আর সেটা ঐটা না ...

    লজ্জা, বড় লজ্জা! একজন মুরতাদের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করলে তার জেল হয়, শাস্তি হয় আর সেই একই আইনে রাসুলের অবমাননা করলে পাপিষ্ঠর জামিন হয়ে যায় অথচ কারো রক্ত গরম হয়না! আমার কানে এখনো বাজে, কথিত জাতীয় মসজিদের খতিব মিম্বার গরম করে একবার কুরবানির আগে কোন জুমায় বলছিলেন ভাবার্থে এমন যে, যে কুরবানি দিবেনা সে মিল্লাতে ইবরাহিমের কেউ নয়! অথচ এই গরম রক্ত মুহুর্তে ঠান্ডা পানি হয়ে যায় মিল্লাতে মুজিবের কথা শুনলে!

    কেন? এই জিল্লতি কেন? কারণ আমরা ইতিহাস ভুলে গেছি তাই, ইতিহাস আমরা শিক্ষা করিনি তাই, আমাদের রাসুলকে আমরা চিনিনি তাই, তাঁর জীবন আমাদের পথচলার বাস্তব উদাহরণ হয়নি তাই, এমন অসংখ্য কারণ রয়েছে।


    তাই এই রমাদানকে আমরা রাসুল সাঃ এর সিরাত শিক্ষা করার উপযুক্ত সুযোগ মনে করি, যার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব হয় সেভাবেই চেস্টা করি। যদি হক্কপন্থী কোন আলিমের থেকে শিখা যায় তাহলে তো অতি উত্তম। আর সে সুযোগ না হলে, অনলাইনে বিভিন্ন লেকচার পাওয়া যায়, বই পাওয়া যায় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি, তালিম করি এবং শিক্ষাকে বাস্তবমুখী ভাবে পরিবারের সামনে উপস্থাপন করি ইনশা আল্লাহ। হয় আজ না হয় কখনই নয় এমন একটা কথা আছে মনে হয়।

    আসলে আমাদের সামনে এখন সেই অবস্থা চলে এসেছে। এখন সীরাহ শিক্ষা করা আবশ্যিক, অত্যাবশ্যিক হয়ে গেছে। আমরা পা রাখতে যাচ্ছি কিংবা রেখে দিয়েছি শেষ যামানায়। রাসুলের কথা মতে ফিতান আসবে ঢেউ এর মত। এমন সময়ে শুধু মাত্র রাসুলের সুন্নাহ এবং তাঁর দেখানো পথের অনুসরণই কেবল আমাদের অন্ধকারে পথ দেখাবে, এ ব্যাতিত অন্য আর কিছুই নয়!

    আবারো বলছি, অন্য কিছুই নয়, হোক না তা যত বড় ডিগ্রি!

    আমার এখনো স্মরন হয়, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার স্কুলে রাসুল সাঃ এর সীরাহ এর উপরে রচনা লেখা প্রতিযোগিতা হত, বিভিন্ন স্কুলে রাসুলের জীবনী নিয়ে বক্তৃতা প্রতিযোগিতা হত। এরপরে, শেষ কবে স্কুল গুলোতে আমি তা দেখেছি আমার স্মরন নাই! তাই, রাসুলের সীরাহ যে নিয়ামত এই নিয়ামতও যেন একদিন আমাদের থেকে চূড়ান্ত ভাবে হাতছাড়া না হয়ে যায়, একটি প্রজন্ম যেন এভাবে বড় না হয় যে, তারা জানেনা তাদের রাসুল কেমন ছিলেন! নাউজুবিল্লাহ!

    হ্যাঁ আমি আপনার সাথে স্বীকার করি, শুধু এতটুকুই বিশাল যুদ্ধের সমান। যেখানে প্রতিনিয়ত তাদের বিষ গেলানো হচ্ছে, মগজ ধোলাই করানো হচ্ছে। তাহলে আপনার কাছে আমার শেষ প্রশ্ন -

    ... কি বলেন, তাহলে আমরা হাল ছেড়ে দেই! যদি না হয় তাহলে ...

    এই রমাদান ই হোক ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ!


    ইয়া রব্বব, আপনি আমাদের জন্য আপনার রাসুলের সীরাহ সহিহ শুদ্ধ ভাবে শিক্ষা করার এবং তা বাস্তবে আমল করাকে সহজ করে দিন, আর আমাদেরকে সম্মানিত রাসুল সাঃ এর সাথে জান্নাতে একত্রিত করুন, আমিন।

    সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
    Last edited by s_forayeji; 04-24-2020, 05:28 AM.
    মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

  • #2
    মাশাআল্লাহ
    খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন ।
    "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ খুউব উপকারী পোষ্ট। প্রতিটা প্যারা থেকেই উপকৃত হলাম আলহামদুলিল্লাহ।
      সীরাত শিখতে আমরা আররাহীকুল মাখতুম কিতাবটির সাহায্য য্য নিতে পারি ইনশাআল্লাহ।

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ।
        অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।
        আল্লাহ আপনাদের কাজে বারাকাহ দান করুন,আমিন।
        ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ, উপকারী পোস্ট।
          আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন এবং লেখককে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন
          “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

          Comment


          • #6
            ইয়া রব্ব, আপনি আমাদের জন্য আপনার রাসুলের সীরাহ সহিহ শুদ্ধ ভাবে শিক্ষা করার এবং তা বাস্তবে আমল করাকে সহজ করে দিন, আর আমাদেরকে সম্মানিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে জান্নাতে একত্রিত করুন, আমিন।
            বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
            কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ প্রিয় ভাই অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।।।আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন।আমীন।ইলম ও আমলে বারাকাহ দান করুন।
              রাব্বে কারিম.!আমাদের সকল কাজে ইখলাস দান করুন।বান্দার বাহবাহ পাওয়ার সুপ্ত কামনা থেকে হিফাজত রাখুন।আমিন।

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহ।
                অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।
                আল্লাহ আপনাদের কাজে বারাকাহ দান করুন।
                আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন।
                আমিন
                গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

                Comment

                Working...
                X