Announcement

Collapse
No announcement yet.

নেককারদের কবরে ৩টি নয়, ৪টি প্রশ্ন হবে!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নেককারদের কবরে ৩টি নয়, ৪টি প্রশ্ন হবে!

    নেককারদের কবরে ৩টি নয়, ৪টি প্রশ্ন হবে!
    জেনে নিই চতুর্থ প্রশ্ন ও তার উত্তর

    আমরা সকলেই জানি কবরে ৩ টি প্রশ্ন করা হবে। কিন্তু সহীহ একটি হাদীস থেকে জানা যায় নেককার বান্দারা যখন তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন তখন তাকে চতুর্থ আরেকটি প্রশ্ন করা হবে। তা হচ্ছে "তিনি কিভাবে এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর জানলেন?" এই প্রশ্নের উত্তরটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি নেককার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে তিনটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে চাই, তাহলে চতুর্থ প্রশ্নের উত্তরের মাঝেই আছে প্রকৃত গাইডলাইন। চলুন হাদীসের অনুবাদটি জেনে নিই।

    *** *** ***
    আল-বারাআ ইবনু ‘আবিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,

    আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আনসার গোত্রের এক ব্যক্তির জানাজায় শরীক হওয়ার জন্য রওয়ানা হয়ে কবরের নিকট গেলাম। কিন্তু তখনও কবর খনন শেষ হয়নি। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসলেন এবং আমরাও তাঁর চারিদিকে নীরবে তাঁকে ঘিরে বসে পড়লাম, যেন আমাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। তখন তাঁর হাতে ছিল একখানা লাঠি, তা দিয়ে তিনি মাটিতে আঁচড় কাটছিলেন। অতঃপর তিনি মাথা তুলে দুই বা তিনবার বললেন, তোমরা আল্লাহর নিকট কবরের আযাব হতে আশ্রয় চাও।

    বর্ণনাকারী জারীর তার আরো উল্লেখ করেন, তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মৃত ব্যক্তি তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায় যখন তারা ফিরে যেতে থাকে। আর তখনই তাকে বলা হয়, হে অমুক! তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কী এবং তোমার নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে?

    হান্নাদ (রহঃ) বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অতঃপর তার নিকট দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে উভয়ে প্রশ্ন করে, তোমার রব কে? তখন সে বলে, আমার রব আল্লাহ।

    তাঁরা উভয়ে তাকে প্রশ্ন করে, তোমার দ্বীন কী? সে বলে, আমার দ্বীন হলো ইসলাম।

    তারা প্রশ্ন করে, এ লোকটি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন, তিনি কে? তিনি বলেন, সে বলে, তিনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

    তারপর তারা উভয়ে আবার বলে, তুমি কী করে জানতে পারলে? সে বলে, "আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি এবং তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং সত্য বলে স্বীকার করেছি।"
    [চতুর্থ প্রশ্নের উত্তরটি খেয়াল করে আবার পড়ুন ও মনে রাখুন!]

    জারীর বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ এটাই হলো আল্লাহর এ বাণীর অর্থঃ “যারা এ শাশ্বত বাণীতে ঈমান এনেছে তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন” (সূরাহ ইবরাহীমঃ ২৭)। এরপর বর্ণনাকারী জারীর ও হান্নাদ উভয়ে একইরূপ বর্ণনা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

    অতঃপর আকাশ হতে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন, আমার বান্দা যথাযথ বলেছে। সুতরাং, তার জন্য জান্নাতের একটি বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জান্নাতের পোষাক পরিয়ে দাও। এছাড়া তার জন্য জান্নাতের দিকে একটা দরজা খুলে দাও। তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সুতরাং, তার দিকে জান্নাতের স্নিগ্ধকর হাওয়া ও তার সুগন্ধি বইতে থাকে। তিনি আরো বলেন, ঐ দরজা তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করা হয়।

    অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফিরদের মৃত্যু প্রসঙ্গে বলেন। তার রূহকে তার শরীরে ফিরিয়ে আনা হয় এবং দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করে, তোমার রব কে? সে উত্তর দেয়, হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর তারা প্রশ্ন করেন, তোমার দ্বীন কী? সে বলে, হায়! আমি কিছুই জানি না। তারা প্রশ্ন করে, এ লোকটি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে বলে, হায়! আমি তো জানি না। তখন আকাশের দিক হতে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করেন, সে মিথ্যা বলেছে। সুতরাং, তার জন্য জাহান্নামের একটি বিছানা এনে বিছিয়ে দাও এবং তাকে জাহান্নামের পোষাক পরিয়ে দাও, আর তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটা দরজা খুলে দাও।

    তিনি বলেন, অতঃপর তার দিকে জাহান্নামের উত্তপ্ত বাতাস আসতে থাকে। এছাড়া তার জন্য তার কবরকে সংকীর্ণ করে দেয়া হয়, ফলে তার এক দিকের পাঁজর অপর দিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যায়। বর্ণনাকারী জারীর বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ তিনি (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অতঃপর তার জন্য এক অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সঙ্গে একটি লোহার হাতুড়ী থাকবে, যদি এ দ্বারা পাহাড়কে আঘাত করা হয় তাহলে তা ধূলায় পরিণত হয়ে যাবে। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তারপর সে তাকে হাতুড়ী দিয়ে সজোরে আঘাত করতে থাকে, এতে সে বিকট শব্দে চিৎকার করতে থাকে যা মানুষ ও জিন ছাড়া পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত সকল সৃষ্টি জীবই শুনতে পায়। আঘাতের ফলে সে মাটিতে মিশে যায়। তিনি বলেন, অতঃপর (শাস্তি অব্যাহত রাখার জন্য) পুনরায় তাতে রুহ ফেরত দেয়া হয়।


    (হাদীসের মানঃ সহীহ। সুনানে আবু দাঊদ ৪৭৫৩ - http://www.ihadis.com:8080/books/abi-dawud/hadis/4753)

    হাদীসটি থেকে জানা গেল তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পর চতুর্থ প্রশ্ন করা হবে। তা হচ্ছে এই তিনটি প্রশ্ন কিভাবে জানলেন? উত্তরে জান্নাতী বান্দা বলবেনঃ "আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি এবং তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং সত্য বলে স্বীকার করেছি।"

    অর্থাৎ এই তিনটির উত্তর জানার জন্য আমাদেরকে আল্লাহর কিতাব পড়তে হবে, তার উপর ঈমান আনতে হবে ও সত্য বলে স্বীকার করতে হবে। এই পড়ার অর্থ কি শুধুই দেখে দেখে না বুঝে রিডিং পড়া? এর উপর ঈমান আনার মানে কী? আমি যদি না-ই বুঝি এখানে কী বলা হচ্ছে তাহলে ঈমান আনব কিভাবে? আমি তো জানিই না এখানে কী আছে না আছে। তাহলে এর উপর বিশ্বাসের প্রশ্ন আসবে কোথা থেকে আর এটাকে সত্য বলেই স্বীকার করব কিভাবে?

    এজন্য আমাদেরকে বুঝে বুঝে কুরআন-হাদীস অধ্যয়ন করতে হবে। কুরআনের তিলাওয়াতের পাশাপাশি তাফসীর পড়তে হবে। কুরআন হাদীস পড়ে পড়ে বুঝতে হবে। পূর্ব-পুরুষ বা সমাজের "শোনা কথা" দ্বারা ইসলাম মানলে ঐ তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব কি?

    অনেকে বলে থাকেন "কুরআন হাদীস পড়া আলেমদের কাজ। সাধারন মানুষ কুরআন হাদীসের অনুবাদ পড়লে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে!" আস্তাগফিরুল্লাহ! আল্লাহ কি কুরআন শুধু আলেমদের জন্য নাযিল করেছেন? বাকিরা শুধু না বুঝে আবৃত্তি করবে? সাধারণ মানুষ কুরআনের তাফসীর পড়বেন, হাদীসের ব্যাখ্যা পড়বেন। যেখানে না বুঝবে সেখানে আলেমদের থেকে জেনে নিবেন। কোনো আয়াত বা হাদীসের মাধ্যমে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো ফতোয়া দিবেন না। কোথাও খটকা লাগলে বা প্রশ্ন আসলে আলেমদের থেকে জেনে সেভাবে বুঝবেন ও মানবেন। তাফসীর পড়ে নিজেকে আলেমদের চেয়ে বড় মনে করা যাবে না। একটা হাদীস পড়েই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আলেমদের থেকে জেনে নিতে হবে যে এই হাদীসের বিপরীতে কোনো হাদীস আছে কিনা বা এই হাদীসের হুকুমটি বাতিল হয়ে গেছে কিনা।

    আসুন আমরা প্রত্যেকেই কুরআনের ছাত্র হয়ে যাই। আমরা কয়টি সূরার ইলম সারা জীবনে অর্জন করতে পারব তা মুখ্য নয়। প্রতি দিন অন্তত ১০ মিনিট ২০ মিনিট কুরআনের তাফসীর পড়ি, আরবি ভাষা শিখি। আজকেই নিয়ত করে ফেলি বাকি জীবন কোনো দিন এই ২০ মিনিটের কুরআন পড়ার কাজ বাদ দিব না। আল্লাহকে অন্তত বলতে পারব "আমি চেষ্টা করেছিলাম"।আল্লাহ তা`আলা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন, আমীন।

    সংগৃহিত
    আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন, যারা তার পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।

  • #2
    খুবই উপকারী পোষ্ট। আল্লাহ তা’আলা আপনার মেহনত কবুল করুন।
    এসো জিহাদ শিখি

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ,,।
      অনেক সুন্দর পোষ্ট করেছেন।
      আল্লাহ কবুল করুন,আমিন।
      ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

      Comment

      Working...
      X