Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইসলাম চলে এসেছে। অতএব, কাফেরদের ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই ! ! !

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইসলাম চলে এসেছে। অতএব, কাফেরদের ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই ! ! !

    কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
    إن الدين عند الله الإسلام
    "আল্লাহ তায়ালার কাছে মনোনীত ধর্ম হল একমাত্র ইসলাম"।

    দ্বীন শব্দের একাধিক অর্থ লিসানুল আরবে সুবিদিত। এর একটা অর্থ হল কানুন ও পদ্ধতি। পরিভাষায় দ্বীন সে-সব নীতি-কানুন ও বিধিবিধানকে বলা হয়, যা হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে খাতামুল আম্বিয়া মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল পয়গম্বরের মধ্যে সমভাবে বিদ্যমান রয়েছে।

    আর ইসলাম শব্দের অর্থ হল আত্মসমর্পণ ও সোপর্দ করা। ইসলামকে ইসলাম এ জন্যই বলা হয় যে, একজন মুসলিম দেহমনে আল্লাহর ওয়াহদানিয়্যাত ও খোদায়ী বিধানাবলীর সামনে দ্বিধাহীনচিত্তে আত্মসমর্পণের স্বীকারোক্তি ঘোষণা করে।

    অতএব, তামাম আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের দ্বীন হল এক ও অভিন্ন। আর তা হল ইসলাম। শুরু থেকেই প্রত্যেক নবী আলাইহিস সালাম আপন আপন সময়ে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে খোদায়ী বিধিবিধান নিয়ে আগমন করেছিলেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম দোয়া করেছিলেন,

    ربنا و اجعلنا مسلمين لك و من ذريتنا أمة مسلمة لك
    "হে প্রতিপালক! আর আমাদেরকে আপনার সামনে আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) বানান এবং আমাদের বংশধরেও একদল আত্মসমর্পণকারী (উম্মতে মুসলিমাহ) সৃষ্টি করুন"।

    পার্থক্য এটুকুই, আকায়েদ অভিন্ন হলেও শারায়ে' ভিন্ন-ভিন্ন, অথবা ইসলাম দুই প্রকার, আম ইসলাম। অন্যটি হল 'ইসলামে মাখসুস' বা খাস ইসলাম। অর্থাৎ, অন্যসকল আম্বিয়ায়ে কেরাম ইসলাম নিয়ে আগমন করলেও রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরো বিশ্বের জন্য যে বিশাল দ্বীন ও পূর্ণাঙ্গ-সামগ্রীক ইসলাম নিয়ে এসেছেন, পূর্ববর্তী আম্বিয়ায়ে কেরামের হেদায়াতসহ আরো নতুন সব হিদায়াত মিলিয়ে তা নতুনরূপ ধারণ করেছে। এটিই হল আধুনিক ও অরহিতযোগ্য ইসলাম, যা এসে যাবার পর অন্যকোনো দ্বীন ও মতাদর্শ, ধর্ম ও মতবাদ বরাবরই পরিত্যাজ্য ও পরিত্যক্ত সাব্যস্ত হয়েছে। দ্ব্যার্থহীনভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করে দিয়েছেন,

    و من يبتغ غير الإسلام دينا فلن يقبل منه
    "এবার যে ইসলামভিন্ন অন্যকোনো জীবনবিধানের পিছুপিছু ছুটবে, কস্মিনকালেও তার থেকে তা গ্রহণ করে নেওয়া হবে না"।

    অতএব, মুক্তির মূলনীতি এখন একটাই, মানুষ দেহমনে একমাত্র মহান আল্লাহর সামনে নিজেকে সঁপে দেবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে যেই নির্দেশ ও বিধান আসবে, কোনোপ্রকার কী-কেন ছাড়া একজন দাসের মতো তা নিজের জন্য আবশ্যক করে নেবে।

    এছাড়া যারা গাছ, পাথর, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র, ফেরেশতা, জিন ও মানুষের পুজায় লিপ্ত, যারা আল্লাহকে মানুষের কাতারে নামিয়ে এনে আল্লাহর জন্য সন্তান, স্ত্রী, কন্যা সাব্যস্ত করছে, যারা মানুষকে আল্লাহ বানিয়ে আল্লাহর দেয়া জীবনবিধানের বদলে মানবরচিত ব্যবস্থা দিয়ে নিজেদের জীবনকে সাজিয়ে নিচ্ছে, যারা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার পরিবর্তে গাছ, পাথর ও মানুষের চরণে মাথা ঠুকাচ্ছে, তারা নিশ্চিত থাকুক যে, কিয়ামত দিবসে তাদেরকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে জাহান্নামের অভ্যর্থনাকক্ষসমূহের টিকেট ধরিয়ে দেওয়া হবে, যেখানে রয়েছে ছায়াময় আগুন আর সুস্বাদু ফুটন্ত পানি ও মজাদার কাঁটার যাক্কুম ফল আপ্যায়নস্বরূপ!!

    প্রিয় মুসলমান ভায়েরা! অতএব, ইসলাম পেয়েছি ভেবে আমাদের মন আনন্দে ভরে যাওয়া চাই। কাফেরদের থেকে ভয় খাওয়ার কোনো কারণ নেই। তারা আমাদের একটি পশমও বাঁকা করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ, যদি আমরা ঈমান ও তাকওয়ার প্রশ্নে অটল থাকি। কাজ এখন একটাই, নিজেদের মোয়ামালা আল্লাহর সাথে ঠিক করে নেওয়া। কোরআন জানিয়ে দিয়েছে,

    اليوم يإس الذين كفروا من دينكم فلا تخشوهم و اخشون
    "আজ কাফেরগোষ্ঠী তোমাদের ধর্ম থেকে নিরাশ হয়ে গিয়েছে। অতএব, তাদেরকে ভয় করো না ; বরং আমাকে ভয় করো"।

    এ আয়াতটি তখন অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন যিন্দেগীর প্রত্যেকটি বিভাগে ও হেদায়াতের প্রতিটি অধ্যায় নিয়ে এমন সব নীতি-কানুন জমিনে চলে এসেছে এবং আমালি জিন্দেগীর প্রতিটি সেক্টরে (ব্যাক্তিজীবন, পারিবারিক, সামাজিক, আন্তর্জাতিক) ফুরুয়ি ও আমালি মাসায়িল এমন পূর্ণাঙ্গভাবে সবিস্তারে চলে এসেছে, যার পর কানুনে এলাহী ছাড়া অন্যকোনো কানুন ও সংবিধানের প্রতি মুসলমানদের চোখ তুলে তাকানোরও প্রয়োজন রইল না। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনন্য তরবিয়ত পেয়ে হাজারো এমন জানবাজ সাহাবায়ে কেরামের উত্থান ঘটে গিয়েছিল, যাদের প্রকৃত অর্থে কুরআনের আমালি জিন্দেগীর নমুনা বলা চলে। মক্কা মুয়ায্যামাহ বিজিত হয়ে গিয়েছিল। সাহাবায়ে কেরাম পুঙ্খানুপুঙ্খ আল্লাহপ্রদত্ব হিদায়াত ও প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ণ করে যাচ্ছিলেন। শয়তানকে জাজিরাতুল আরব থেকে নিরাশ হয়ে যেতে হয়েছিল, কাফের-মুশরিকদেরকে জাজিরাতুল আরব থেকে কান ধরে বের করে দেওয়া হয়েছিল।

    এটাই আল্লাহ বলছেন যে, " আজ কাফেররা তোমাদের থেকে নিরাশ হয়ে গিয়েছে"। এখন তারা যে তোমাদেরকে আবার নিজেদের ধর্মে ফিরিয়ে নেবে সে আশা ছেড়ে দিয়েছে। এখন না আছে ইসলামকে পরাজিত করার কোনো পন্থা, না আছে কানুনে এলাহীর মাঝে তাহরিফাত ও তাওয়িলাতের কোনো সুরত।

    আল্লাহ তোমাদের জন্য আপন অনুগ্রহের ডানা বিছিয়ে দিয়েছেন এবং কিয়ামত পর্যন্তের জন্য দ্বীনে ইসলামকে একমাত্র ধর্ম বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কুরআন তার অস্বাভাবিক বর্ণনাশৈলিতে তা আমাদের জানিয়ে দিয়েছে,

    اليوم أكملت لكم دينكم و أتممت عليكم نعمتي و رضيت لكم الإسلام دينا
    আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহের পূর্ণতা দান করলাম। আর তোমাদের জন্য ইসলামকে ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলাম"।

    অতএব, এখন যারা এ মহান অনুগ্রহশীল আল্লাহকে বিশ্বাস করে, তাঁর প্রদত্ত জীবনব্যবস্থাকে নিখুঁত ও পূর্ণাঙ্গ বলে স্বীকার করে, তাঁদের উচিত হল মনেপ্রাণে এ দ্বীনকে একদম আপন করে নেওয়া। নিজেদের ব্যক্তিজীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে এ দ্বীনে এলাহীর জয়গান গেয়ে যাওয়া। এ দ্বীনে ইসলামের ঝাণ্ডা স্থাপনে নিজেদের তাজা রক্ত ও তপ্ত খুনের স্রোত বয়ে দেওয়া। যুগের হোবালদেরকে মুহাম্মাদে আরাবীর সেই হুংকার আবার জানিয়ে দেওয়া, "আল্লাহু মাওলানা, ওয়া লা মাওলা লাকুম"!!!
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 07-22-2020, 06:40 PM.
    ভুল-ত্রুটি জানানোর অনুরোধ রইল!!!

  • #2
    জাযাকাল্লাহ,,
    অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।
    আল্লাহ তা'আলা আপনার মেহনতকে কবুল করুন।আমীন
    হয়তো শরীয়াহ নয়তো শাহাদাহ

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ্ নতুন টফিকে পোষ্ট পেলাম,আল্লাহ্ আমাদের সম্মানীত আলিম ভাইদের ইলমে বারাকা দান করুন,
      ভাইদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন,আমাদের সকল কে জান্নাতে একত্রিত করুন আমীন।

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ,জাযাকাল্লাহ,,।
        অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।
        আল্লাহ কবুল করুন,আমীন।
        ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

        Comment


        • #5
          ইসলাম চলে এসেছে। অতএব, কাফেরদের ভয় খাওয়ার কোনো দরকার নেই ! ! !
          মুৃহতারাম পোস্টকারী ভাই- শিরোনামটি এমন হলে কেমন হয়-“ইসলাম চলে এসেছে। অতএব, কাফেরদের ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই ! ! !”
          “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

          Comment


          • #6
            [QUOTE=Munshi Abdur Rahman;97411][COLOR="#FF0000"][SIZE=2][B]মুৃহতারাম পোস্টকারী ভাই- শিরোনামটি এমন হলে কেমন হয়-“ইসলাম চলে এসেছে। অতএব, কাফেরদের ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই ! ! !
            আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সচেতন থাকার তাওফিক দান করুন

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ, সুন্দর পোস্ট। এর দ্বারা ঈমানী চেতনার অনুভূতি জাগ্রত হবে, ইনশা আল্লাহ
              আল্লাহ কবুল করুন। আমীন
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment


              • #8
                Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
                মুৃহতারাম পোস্টকারী ভাই- শিরোনামটি এমন হলে কেমন হয়-“ইসলাম চলে এসেছে। অতএব, কাফেরদের ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই ! ! !”
                জ্বী বড় ভাই, সুন্দর হয়। জাযাকাল্লাহ! অথবা "কাফেরদের" শব্দের পূর্বে একটি "থেকে" লাগিয়ে দিলেও হয়। সচরাচর এর ব্যবহারও রয়েছে। মূলত আমি এটিই লিখেছিলাম, কিন্তু কোন ফাঁকে যে "থেকে" কেটে পড়ল টেরই পাইনি!!!
                ভুল-ত্রুটি জানানোর অনুরোধ রইল!!!

                Comment


                • #9
                  মাশাআল্লাহ, চেতনা জাগ্রতকারী পোস্ট!
                  .
                  আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন।
                  আমিন
                  "এখন কথা হবে তরবারির ভাষায়, যতক্ষণ না মিথ্যার অবসান হয়"

                  Comment

                  Working...
                  X