Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদ’কে বাদ দিয়ে ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বুলি, এক কঠিন চক্রান্ত! # হুজাইফা (

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদ’কে বাদ দিয়ে ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বুলি, এক কঠিন চক্রান্ত! # হুজাইফা (

    সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর সাহাবা (রা) ও যুগে যুগে যারা তাঁর অনুসরণ করবেন তাদের প্রতি।

    بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

    জিহাদ’কে বাদ দিয়ে ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বুলি, এক কঠিন চক্রান্ত! # হুজাইফা (দ্বিতীয় পর্ব)

    স্পেন ছিল ইয়াহুদি ও খৃস্টানদের দেশ তাতে ইসলাম প্রবেশ করেছে তারিক বিন জিয়াদের আক্রমণের এবং বিজয়ের সাথে তথা জিাহাদের সাথে। বাঙ্গাল মুলুকে ইসলাম কোন দাওয়াতি অভিযানের মাধ্যমে বিজয় লাভ করেনি। বাঙ্গাল মুলুকে ইসলাম বিজয় লাভ করেছিল মুহাম্মাদ বিন কাসিমের তরবারির সাথে এবং তার পরে যারা জিহাদের পথ ধরে এসেছিলেন বখতিয়ার খিলজির মত আরো অনেকের তরবারির সাথে। আপনি, আমি, আমাদের বাপ-দাদারা যে ইসলাম শিখেছি আমাদের কাছে তা এসেছে জিহাদের বিজয়ের মাধ্যমে। অথচ আজকে আমরা সেই জিহাদকেই অপছন্দ করছি কত দুঃখজনক ব্যাপার!!!!!
    মুসলিম ভূখন্ড সমূহ হারানোর কারণ- মুসলিমরা আজ স্পেনকে হারিয়েছে, গ্রীসকে হারিয়েছে যাতে মসজিদসমূহ এখন নাইট ক্লাবে পরিণত হয়েছে। তুরস্কে আজান, নামাজ, পর্দা সব কিছু নিষিদ্ধ হয়েছিল মুসলমানদের খিলাফাত ব্যবস্থাকে মুছে দেয়ার মাধ্যমে। মুসলিমরা আজ দেশে দেশে নির্যাতিত, তাদের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই কারণ এখন আর কোন সুপ্রতিষ্ঠিত খিলাফাত ব্যবস্থা নেই। সর্বশেষ ওসমানী খিলাফাত ব্যবস্থা যতদিন ছিল ততদিন কোথাও মুসলিমরা নির্যাতিত হলে খলিফা মুসলিমদের পক্ষে থাকতেন এটা ইংরেজদের আর সহ্য হল না তাই তারা চক্রান্ত করে খিলাফাত ব্যবস্থা মিটিয়ে দিল। প্রতিষ্ঠিত ইসলামি খিলাফাত নেই এর কারণ মুসলিমরা জিহাদকে বর্জন করেছে। আর ভারতবর্ষে জিহাদকে বিদায় করেছে ইংরেজদের দালাল কাদিয়ানীরা, যারা নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবী করত নামায, রোযা, হজ্জ সবই করত আর মুসলিমদেরকে জিহাদ থেকে ফিরিয়ে রাখতে দিন রাত সদা ব্যস্ত থাকত। আজকেও তাদের এজেন্টরা আমাদের ডানে বামে ছড়িয়ে আছে।
    অথচ আল কুরআনে ঈমান, জিহাদ, নামায, যাকাত, রোযা, হজ্জ নিয়ে যদি বিধানাবলী অনুসন্ধান করা যায় তবে দেখা যাবে পুরো আল কুরআনে ঈমান ও জিহাদের আলোচনা সবথেকে বেশী। আর নামায, যাকাত, রোযা ও হজ্জ সেই তুলনায় অনেক কম তথা আদেশ নিষেধ নিয়ে আলোচনা এসেছে। আর জিহাদের আলোচনা এসেছে ব্যাপক বিস্তারিতভাবে, মাদানী সূরাগুলো যার স্পষ্ট প্রমাণ।
    চক্রান্ত বনাম সুন্নাহ- কুরআন সুন্নাহ থেকে স্পষ্ট, প্রকৃত ঈমানদার মুসলিমরা সব সময়েই কম ছিল, কম আছে এবং সংখ্যায় তারা কমই থাকবে। ইসলামের প্রথম পর্যায়ে তথা মক্কায় মুসলিমরা সংখ্যায় কম’ই ছিল আর এজন্যই তারা সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিকসহ বিভিন্ন ধরণের চাপের নিচে থাকত, এমনকি তারা দ্বীন ইসলাম পুরোপুরি অনুসরণ তো দূরের কথা তারা যে ইসলাম গ্রহণ করেছে তা মুখে প্রকাশ করা পর্যন্ত অনেকের পক্ষে সম্ভব ছিল না। যখন বাতিল দ্বীন বিজয়ী থাকবে তখন ইসলাম পরিপূর্ণভাবে পারিবারিক, সামাজিক তো দূরের কথা ব্যক্তিগতভাবেও পালন করা সম্ভব নয়। অতীত মুসলিমদের জীবন ইতিহাস যার স্পষ্ট প্রমাণ।
    কিছু সংখ্যক আলেম আছেন যারা মানুষকে আশার বাণী শোনান, দাওয়াতি অভিযানের মাধ্যমে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে তারা যখন সংখ্যায় অধিক হবেন এবং তারা নিজেরাই ইসলামি খিলাফাত চাইবেন তখন এমনিতে খিলাফাত প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। আবার গণতান্ত্রিক আকীদার মাধ্যমে মুসলিমদেরকে ইসলামি খিলাফাতের স্বপ্ন দেখান। আর এভাবেই তারা মুসলিমদের জিহাদী প্রেরণাকে গলাটিপে হত্যা করেন।
    শুধু মাত্র ঈসা (আঃ) এর সময় ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করা হবে না তখন মুসলমানদের সংখ্যা থাকবে অনেক। এ ছাড়া তাঁর আগমনের আগ পর্যন্ত প্রকৃত ঈমানদাররা সবসময় কমই হবে। তাহলে এই কমসংখ্যক মুসলিম কি কোন দিন ভোট যুদ্ধে বিজয়ী হতে পারবে? কোন দিন বিজয়ী হতে পারবে না আর ভোটের মাধ্যমে ইসলামি খিলাফাত প্রতিষ্ঠা হওয়াও সম্ভব নয়।
    আর যারা ভাবছেন দাওয়াতের মাধ্যমে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে আর এভাবে একদিন ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। তাদের মনে রাখা উচিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাওয়াতি অভিযানের মাধ্যমে ইসলামকে মক্কায় টিকিয়ে রাখতে পারলেননা কেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে কি আপনারা দাওয়াতি অভিযানে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেন মদীনায় হিজরত করতে হল?
    শুধুমাত্র দাওয়াতের মাধ্যমে দ্বীন বিজয়ী হয় না। কারণ প্রকৃত মুসলিমরা সংখ্যায় কমই হয়। মক্কায় ইসলাম বিজয়ী হয়েছিল জিহাদের মাধ্যমে, আর মুজাহিদদের সংখ্যা যত কমই থাকুক না কেন। যার ফলাফল হিসেবে দূর্বল মুসলিমরা সহজে তাদের কালিমার সাক্ষ্যপ্রদান ও ইসলামকে বাস্তব জীবনে পালন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কারণ ইসলাম বিজয়ী হলে মুসলিমরা আর কোন চাপের নিচে আটকে থাকেননা।
    মুসলিমরা সংখ্যায় তখনই বেশী থাকে যখন ইসলাম বিজয়ী থাকে, তখন যারা অন্তরে ঈমান রাখে না তারাও সমাজে ফায়দা উঠানোর লোভে নিজেকে মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করে। মাক্কী জীবনে দেখেন কোন মুনাফিক ছিল না কারণ যে কেউ ঈমানের সাক্ষ্য দিবে তার উপর নেমে আসবে চরম অত্যাচার, নির্যাতন। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের মত মুনাফিক নেতা, কপটরা তখনই জন্ম নিবে যখন ইসলাম একটা সম্মানজনক ও প্রতিষ্ঠিত রূপ নিবে।
    প্রকৃত ঈমানদাররা সংখ্যায় কম হলেও যদি তারা জামায়াত বদ্ধ থাকেন এবং জিহাদের পথে থাকেন তবে এই কমসংখ্যকই যথেষ্ট হবেন ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। ইসলাম যখন বিজয়ী থাকে তখন মানুষ দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করে।

    কারন তখন ইসলাম গ্রহণে সাধারণ মানুষ আর কোন বাধার সম্মুখীন হন না, যা মক্কা বিজয়ের সময় ও তারপরে বিভিন্ন রাষ্ট্র বিজয়ের পরেও দেখা গেছে। আর এটাই বাস্তবতা। আর এই জিহাদ ও বিজয়ের মাধ্যমেই ইসলাম বিভিন্ন দেশে দেশে ছড়িয়ে পরেছে।
    রোম, পারস্য , স্পেন, তুরস্ক, রাশিয়া, ভারতবর্ষ সহ আফ্রিকা মহাদেশে জিহাদ ও বিজয়ের মাধ্যমেই ইসলাম ছড়িয়ে পরেছে। আর জিহাদ মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া সর্বশেষ চুড়ান্ত নির্দেশ। আল্লাহর নির্দেশ অবশ্যই যথার্থ ।
    বর্তমান যুগে অনেক আলেমদের ক্ষেত্রে দেখবেন তারা নামায, রোযা অন্যান্য বিষয়ে কোন সমাধান দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক গভীর জ্ঞানগর্ভ কথা বলেন কিন্তু জিহাদের কথা বললেই তারা অন্ধ হয়ে যান আর তা থেকে মানুষকে অনুৎসাহীত করেন এবং জিহাদ ছেড়ে শুধু দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে বা ভোট যুদ্ধের মাধ্যমে মানুষকে ইসলামী রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখান যা কখনো পূর্ণ হবার নয়। এরা গভীর চক্রান্তে নিমজ্জিত।
    যারা জিহাদকে স্থায়ী ফলদায়ক হিসেবে বলতে চায় না তারা মূলত আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া একটা ফরয বিধান থেকে মুসলিমদেরকে ফিরিয়ে রাখতে চায়, যে বিধান তিনি তার কিতাবে সবথেকে বেশী গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেছেন। যারা জিহাদকে সবথেকে মোক্ষম ও অধিক ফলদায়ক বলতে নারাজ এমনকি তারা জিহাদকে বর্জনের নীতিতে সদা অটল তারা মূলত আল্লাহ যে মহাজ্ঞানী এ ব্যাপারে সন্দেহে তথা মুনাফেকীতে নিমজ্জিত। তারা জিহাদের ব্যপারে আল্লাহর ফায়সালাকে তেমন গুরুত্ব আরোপ করতে চায় না। তারা জিহাদকে বর্জন করে শুধু দাওয়াতী অভিযান নিয়ে থাকতে চায়। অথচ জিহাদকে বর্জন বা তা থেকে অব্যহতি খোঁজা মুনাফিকদের নীতি।

    সূরা তাওবায় মহান আল্লাহ বলেন,
    يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ كَثِيرًا مِنَ الْأَحْبَارِ وَالرُّهْبَانِ لَيَأْكُلُونَ أَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ۗ
    হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই অধিকাংশ আলেম ও ধর্মযাজকগণ মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষন করে এবং লোকদেরকে আল্লাহর পথ হতে বিরত রাখে, (সূরা তাওবা ৯:৩৪)
    لَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالْمُتَّقِينَ [٩:٤٤]
    যারা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, তারা নিজেদের ধন-সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা জিহাদ করার ব্যাপারে তোমার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করবে না, আল্লাহ এই পরহেযগার লোকদের সম্বন্ধে খুব অবগত আছেন। (সূরা তাওবা ৯:৪৪)
    إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ [٩:٤٥]

    অবশ্য ঐসব লোক তোমার কাছে অব্যাহতি চেয়ে থাকবে, যারা আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে না, আর তাদের অন্তর সমূহ সন্দেহে নিপতিত রয়েছে, অতএব তারা তাদের সংশয়ের আবর্তে ঘুর্ণিপাক খাচ্ছে। (সূরা তাওবা ৯:৪৫)
    একথা স্পষ্ট যে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ থেকে অব্যাহতি চাওয়া মুনাফেকী। আমরা শুধু দাওয়াত বা শুধু জিহাদ এ কথা বলি না। কোন ইসলামি আন্দোলনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এ সবগুলির প্রয়োজন আছে। তবে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া চূড়ান্ত বিধান, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবু বাকর (রা), ওমর (রা), ওসমান(রা) ও আলীর (রা) জীবনের বাস্তব সুন্নাহ।

    সুতরাং ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াত ও জিহাদ উভয়েরই প্রয়োজন আছে, জিহাদকে বাদ দিয়ে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের সকলকে তাঁর পক্ষ থেকে দেয়া হিদায়াত গ্রন্থ অনুসারে আমল করার তাওফিক দান করুন। তিনি আমাদেরকে প্রকৃত ঈমানদার হিসেবে কবুল করুন। আমীন............
    হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও প্রার্থনা শ্রবণকারী।
    দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁকে উচ্চ মর্যাদা দান করুন। আমীন...
    সমস্ত প্রশংসা অংশিদারমুক্ত এক আল্লাহ’র জন্য, আমি সাক্ষ্য *দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন কল্যাণ ও অকল্যাণ দাতা নেই তার কাছেই আমি তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

    রচনায়ঃ হুজাইফা

  • #2
    মাশাআল্লাহ, অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাই...
    আল্লাহ আপনাকে জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ,,,জাযাকাল্লাহ,, অনেক সুন্দর ও উপকারী পোষ্ট করেছেন ভাই,,,।
      আল্লাহ তায়া'লা আপনার কাজকে কবুল করুন,আমীন।
      ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

      Comment

      Working...
      X