Announcement

Collapse
No announcement yet.

সেক্যুলারদের বিভ্রান্তিকর উপস্থাপনা এবং তার জবাব ।

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সেক্যুলারদের বিভ্রান্তিকর উপস্থাপনা এবং তার জবাব ।

    বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ।


    ভূমিকা:'প্রথমেই আমরা শুরু করছি এই কথা বলে,যে আমাদের এই উম্মাত বানু ইসরাইল এর দুই প্রধান ধর্মীয় ধারা ইহুদি ও খৃষ্টানদের ব্যর্থতার পরে এসেছে ।
    আল্লাহর রাসূল হাদীছে আমাদেরকে বানু ইসরাইল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, তাদের সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করতে বলেছেন এই কারণে যে,তাদের ভুলগুলা সম্পর্কে যেন আমরা সচেতন হই । তাদের ভুলগুলা পরিহার করি ।

    আল্লাহর রাসূল হাদীছে আরো বলেছেন তাদের ভুল গুলা আমাদের মাঝে আসবে ।
    আমাদেরকে সূরাহ ফাতিহায় যেই হেদায়েত বিচ্যুত জাতির কথা বলা হয়েছে;
    সেই দুই দুই জাতির কথাই বিস্তারিত বলা হয়েছে,
    সূরা বাকারাহ এবং আলে ইমরান এ এই দুই জাতির ব্যর্থতার বিশদ বর্ণনা দিয়ে আমাদেরকে তা থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে।
    তারা জঘন্য বড়ো দুটি অপরাধ করেছে:
    ১।প্রথম অপরাধটি হলো :-নিজেদের স্বার্থে ধর্মের বিধানের তাওরাত- ইঞ্জিলের মধ্যে বিভক্তি এনেছিল,
    সোজা কোথায় নিজেদের সুবিধার জন্য তারা ধর্মকে ভাগ করে ফেলেছিলো ,যার কারণে পথভ্রষ্ট হয়েছিল,
    যা আল্লাহ বলছেন সূরাহ বাকারার ৮৫ নম্বর আয়াতে;
    ﺍَﻓَﺘُﺆۡﻣِﻨُﻮۡﻥَ ﺑِﺒَﻌۡﺾِ ﺍﻟۡﻜِﺘٰﺐِ ﻭَﺗَﻜۡﻔُﺮُﻭۡﻥَ ﺑِﺒَﻌۡﺾٍؕ ﻓَﻤَﺎ ﺟَﺰَﺁﺀُ ﻣَﻦۡ ﻳَّﻔۡﻌَﻞُ ﺫٰﻟِﻚَ ﻣِﻨۡﮑُﻢۡ ﺍِﻟَّﺎ ﺧِﺰۡﻯٌ ﻓِﻰۡ ﺍﻟۡﺤَﻴٰﻮﺓِ ﺍﻟﺪُّﻧۡﻴَﺎۚ ﻭَﻳَﻮۡﻡَ ﺍﻟۡﻘِﻴٰﻤَﺔِ ﻳُﺮَﺩُّﻭۡﻥَ ﺍِﻟٰٓﻰ ﺍَﺷَﺪِّ ﺍﻟۡﻌَﺬَﺍﺏِؕ ﻭَﻣَﺎ ﺍﻟﻠّٰﻪُ ﺑِﻐٰﻔِﻞٍ ﻋَﻤَّﺎ ﺗَﻌۡﻤَﻠُﻮۡﻥَ
    তাহলে কি তোমরা কিতাবের একটি অংশের ওপর ঈমান আনছো এবং অন্য অংশের সাথে কুফরি করছো? তারপর তোমাদের মধ্য থেকে যারাই এমনটি করবে তাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কি হতে পারে যে, দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছিত ও পর্যুদস্ত হবে এবং আখেরাতে তাদেরকে কঠিনতম শাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে? তোমাদের কর্মকান্ড থেকে আল্লাহ বেখবর নন।
    ২।দ্বিতীয় অপরাধটি হলো :-নিজেদের স্বার্থে কম দামে তারা কিতাবের আয়াত কে বিক্রি করতো মানে ভুল ব্যাখ্যা করতো স্বার্থ হাসিলের জন্য,
    যা আজকের যুগে কিছু দরবারী আলেম করে থাকে,
    ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺸۡﺘَﺮُﻭۡﺍ ﺑِﺎٰﻳٰﺘِﻰۡ ﺛَﻤَﻨًﺎ ﻗَﻠِﻴۡﻼً ﻭَّﺍِﻳَّﺎﻯَ ﻓَﺎﺗَّﻘُﻮۡﻥِ
    সামান্য দামে আমার আয়াত বিক্রি করো না।আমার গযব থেকে আত্মরক্ষা করো । আয়াত নাম্বার-৪১

    এখন আমরা দেখবো নব্য সেক্যুলাররা-ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা উপস্থাপনকারীরা কী বলে:
    ১।ইসলামে খেলাফত সিস্টেম নাই । ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথাটা ভুল ধারণা ।
    ২।ইসলামী সার্বভৌমত্বের ধারণা নতুন; শুধু সায়্যেদ কুতুব এইগুলো বলেছেন ।
    ৩।খেলাফত- আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করার বিষয় নয় । এইটা বড়ো -জোর বিশ্বাসের ব্যাপার
    ৪।ইসলামে সার্বভৌমত্বের ধারণা খারেজীদের আকীদা ছিল ।

    এক্ষেত্রে আমাদের মোটা দাগে জবাব হলো:
    ১।ইসলামের খেলাফতের বিষয়টি সবচেয়ে মৌলিক এবং প্রাথমিক
    আদম আঃ কে খলিফা হিসেবেই আল্লাহ প্রথম পাঠাবেন বলেছেন । এবং আদমের সন্তান হিসেবেই সেই খিলাফতের দায়িত্ব পালন করার দায়িত্ব আমাদের উপরও অত্যাবশ্যকীয় ।
    ২। ইসলামের সার্বভৌমত্বের ধারণাটি খেলাফতের মতোই সবচেয়ে পুরনো । খেলাফত না বুঝলে সার্বভৌমত্ব বুঝা যাবেনা । সার্বভৌমত্ব না বুঝলে খেলাফত বুঝা যাবেনা ।
    ৩।খিলাফতের দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিমুসসাল্লামগণ জিহাদ করেছেন এবং খিলাফত এর প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করেছেন । শুধু আল্লাহর সার্বভৌমত্বে -উলুহিয়াতে বিশ্বাস করেই বসে থাকেননি ।
    ৪। ইসলামের সাবভৌমত্বের ধারণাটি আলী রাঃ সঠিক বুঝেছিলেন কিন্তু খারেজীরা ভুল বুঝেছিলো। আমরা কোরানের আলী (রঃ) এবং সাহাবায়ে কিরামের সার্বভৌমত্বের ধারণাটিকে গ্রহণ করি খারিজীদের ধারণাটিকে বর্জন করি ।
    ৫। কেউ যদি খেলাফতের দায়িত্ব পালনের চেষ্টায় রত নয় তাহলে তাঁর বিশ্বাসে বড় ত্রুটি রয়ে যাবে এবং খেলাফত প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব টি অস্বীকার করলে কুফরি করবে ।

    আমরা এখন কিছু ব্যাখ্যায় যাবো ।

    সাবভৌমত্ব কী?খেলাফত কী? এই দুই কনসেপ্ট এর মাঝে সম্পর্ক কী?

    যারা সায়্যেদ কুতুবের সমালোচনা করেছেন তারা একবারও কোরআনে বর্ণিত নবীদের ও রাসূলের সুন্নাতে প্রতিষ্ঠিত খিলাফতের দায়িত্বটির কথা স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না ।
    তারা হয়তো খিলাফত ইন্সটিটিউশন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন না বা ইচ্ছাকৃত-ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন ।
    সার্বভৌমত্বের আরবি প্রতিশব্দ হলো হাকিমিয়্যাহ;
    ইংরেজিতে যাকে বলে sovereignty ।
    পলিটিকাল সাইন্স এ sovereignty র কয়েকটি ধরণ রয়েছে ।
    আগে রাজা/রাণীরা sovereignty র মালিক ছিল । আর এখন গণতন্ত্রে জনগণকে সাবভৌমত্বের মালিক বলা হয় । sovereignty র মূল কথা হলো :-যে কোন ক্ষমতার মালিক জনগণ ।
    হাকিমিয়ার অরিজিনাল মাসদার হলো হুকম ।
    হুকম এর মৌলিক অর্থ হলো রুল করা , শাসন করা, বিচার করা, আইন প্রণয়ন করা, ইত্যাদি
    যদিও বিভিন্ন কনটেক্সট আরও বিভিন্ন অর্থ হয় ।

    ইসলামী আকীদা যা বলছে তাহলো ।

    এই মহাবিশ্বের সকল বস্তুর মালিক আপনি, আমি কেউনা । সকল কিছুর মালিকানা আল্লাহর, যিনি আপনাকে-আমাকে এবং এই মহাবিশ্বের সকল কিছুকে সৃষ্টি করেছেন । তাই আল্লাহ সার্বভৌমত্বের মালিক sovereignty র মালিক । এবং absoute sovereignty শুধু আল্লাহর এই দুনিয়াতে এবং দুনিয়ার বাহিরে ।

    তাহলে আপনার-আমার পজিশন কী এই মহাবিশ্বে?আপনার-আমার কি কোনো মালিকানা নাই এই পৃথিবীতে?
    আসলে সত্যিকার মালিকানা নেই;
    আছে temporary ব্যবস্থাপনার মালিকানা ;
    এরই নাম খেলাফত/প্রতিনিধিত্ব করা।
    আপনি-আমি আল্লাহর তরফ থেকে শুধুই খলিফা বা প্রতিনিধি আল্লাহর সৃষ্ট সকল কিছুকে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী, সন্তুষ্টি, বিধান অনুযায়ী পরিচালনা করার জন্য । এই দায়িত্ব দিয়েই আল্লাহ আদম (আঃ) কে এবং সকল নবীদেরকে এবং আপনাকে-আমাকে পরীক্ষাগারে রেখেছেন যে আল্লাহর বিধান বা হুকম অনুযায়ী আল্লাহর সৃষ্ট সকল কিছু,আপনার-আমার জীবন,পরিবার,সমাজ,রাষ্ট্রকে পরিচালিত করি কিনা ।


    ক্ষুদ্র পরিসরে আমরা প্রত্যেকটা মানুষই ই খলিফা এবং আমাদের পরিসরের খেলাফতের দায়িত্ব পালনের জন্য জবাব দিহি করতে হবে । আর বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় পরিসরে মুসলমানদের নির্বাচিত বৈধ শাসক ই খলিফা ।
    বৃহত্তর পরিসরে শাসক বা খলিফা যদি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তাঁর খিলাফাত পরিচালনা না করে, আল্লাহর সন্তুষ্টিতে তাঁর রাজ্য পরিচালনা না করে তাহলে কোরআন অনুযায়ী সে কুফরি করলো ।
    কারণ হলো,
    সকল সৃষ্টির মালিকানা যার ,যৌক্তিকভাবে বিধানও চলবে তাঁর ।
    রাষ্ট্রনায়ক, শাসক তো শুধু খলিফা/ প্রতিনিধি । প্রতিনিধি তো নিজের ইচ্ছায় চলতে পারেনা ।


    এই পৃথিবীতে মানুষ ছাড়া আর কোনো সৃষ্টিকে প্রতিনিধিত্ব সহ আল্লাহ ইচ্ছার স্বাধীনতা দেননি আল্লাহর বিধান পালনের ব্যাপারে । জিনদের স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে কিন্তু প্রতিনিধিত্ব মানে এই দুনিয়া পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়নি । শুধু মানুষকে দেয়া হয়েছে পরীক্ষার অংশ হিসেবে ।
    কিন্তু কী হলো?
    অনেক মানুষ তাঁর স্রষ্টাকে ই ভুলে গেলো । ভুলে গেলো সে শুধু আল্লাহর খলিফা । সে কোনো কিছুর মালিকানা দাবি করতে পারেনা । সে আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে নিজের নফস অনুযায়ী নিজের জীবন অর্থ,সম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ -রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা শুরু করলো । সে নিজেকে মহাজ্ঞানী ভাবা শুরু করলো । সকল কর্তৃত্বের কৃতিত্বের দাবি শুরু করলো । আর আল্লাহ কি করলেন?বার বার নবী পাঠিয়ে স্মরণ করে দিলেন । আমরা শুধু আল্লাহর খলিফা । আমরা শুধু আল্লাহর । সৃষ্টি শাসন শুধু স্রষ্টার ই চলবে । আমরা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে পারিনা । আমরা নিজেদের জীবন বিধান রচনা করার যোগ্যতা রাখিনা । সকল নবী রাসূলরা দুনিয়াতে আল্লাহর খিলাফতের দায়িত্ব আঞ্জাম দেবার কাজটি করে গেছেন ।

    এখন আমরা দেখবো দাউদ (আঃ) কে । আল্লাহ যখন আল্লাহ খলিফা বানালেন তখন উনি কী কাজ করার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশিত হয়েছিলেন ।

    দেখুন আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে যেই হক বা বিধান এসেছে সেই অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে
    নিজের মনগড়া কোনো মতে নয় । এবং সেক্যুলার কোনো পদ্ধতিতেও নয় ।
    ﻳٰﺪَﺍﻭٗﺩُ ﺍِﻧَّﺎ ﺟَﻌَﻠۡﻨٰﻚَ ﺧَﻠِﻴۡﻔَﺔً ﻓِﻰۡ ﺍﻟۡﺎَﺭۡﺽِ ﻓَﺎﺣۡﻜُﻢۡ ﺑَﻴۡﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺑِﺎﻟۡﺤَﻖِّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺒِﻊِ ﺍﻟۡﻬَﻮٰﻯ ﻓَﻴُﻀِﻠَّﻚَ ﻋَﻦۡ ﺳَﺒِﻴۡﻞِ ﺍﻟﻠّٰﻪِؕ ﺍِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳۡﻦَ ﻳَﻀِﻠُّﻮۡﻥَ ﻋَﻦۡ ﺳَﺒِﻴۡﻞِ ﺍﻟﻠّٰﻪِ ﻟَﻬُﻢۡ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺷَﺪِﻳۡﺪٌۢ ﺑِﻤَﺎ ﻧَﺴُﻮۡﺍ ﻳَﻮۡﻡَ ﺍﻟۡﺤِﺴَﺎﺏِ
    “হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, কাজেই তুমি জনগণের মধ্যে সত্য সহকারে শাসন কর্তৃত্ব পরিচালনা করো এবং প্রবৃত্তির, কামনার অনুসরণ করো না, কারণ তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করবে। যারা আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী হয় অবশ্যই তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি, যেহেতু তারা বিচার দিবসকে ভুলে গেছে । সূরা সাদ-২৬

    আর ইবলিস শয়তান কী করল?

    মানুষকে বুঝালো,এই পৃথিবীর মালিকানা তোমার বিধান ও চলবে তোমার । এই পৃথিবী তে তোমরা থাকো । এই পৃথিবীকে তোমরা ভোগ করবে তোমাদের বিধান অনুযায়ী চলবে ।

    ফলে কী হলো?

    নবী,নবীদের উত্তরসূরি,হক পন্থী,খেলাফতের দাবিদারদের সাথে ইবলিসের সৃষ্ট দুনিয়া পূজারীদের দ্বন্দ্ব,বস্তুবাদীদের সাথে সংঘর্ষ । সেই বস্তু পূজা ও দুনিয়া পূজারীদের রিসেন্ট দৃষ্টান্ত হলো আহলু কিতাবরা । যারা দুনিয়ার জন্য আল্লাহর বিধানকে কাঁটা ছেড়া করতো । দ্বীন দুনিয়াকে আলাদা করে ফেলতো । কোরআনের আয়াতকে নিজেদের স্বার্থে বিকৃত করতো । এই দুনিয়া পূজারী আহলু কিতাবরাই ধর্মনিরপেক্ষতার জন্ম দিয়েছে কয়েক শতাব্দী পূর্বে । চার্চ ও শাসন ব্যবস্থাকে পৃথক করেছে তাদের এই মানসিক ও চারিত্রিক অধঃপতনের কারণেই উপরে যা উল্লেখ করেছি আল্লাহ তাঁদের প্রশ্ন করেছে তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশ মানবে এবং কিছু অংশ অস্বীকার করবে?

    এখন প্রশ্ন হলো,

    আপনি-আমি কি আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে মানতে পারি?আমরা পারিনা । যদি পারতাম তাহলে আহলু কিতাবদের কেন পথভ্রষ্ট বললেন?আল্লাহ কেন তাদেরকে কাফের বললেন?
    তারা কি আল্লাহর আসমানী ক্ষমতা উলুহিয়াতকে অস্বীকার করেছিল?রুবুবিয়াতকে অস্বীকার করেছিল?
    না, বরং,তারা আল্লাহর বিধান কে খণ্ডিত করেছিল । কিছু কিতাবের কিছু অংশ মানতে চেয়েছিলো আর কিছু অংশ মানতে চায়নি ।
    আল্লাহর পরিপূর্ণ বিধান কে প্রয়োগ করেনি বলেই তাদেরকে আল্লাহ কাফের বলেছেন
    দেখুন ভালো করে আয়াত টি এবং আয়াতের কনটেক্সট টিও দেখুন:
    ﺍِﻧَّﺎۤ ﺍَﻧۡﺰَﻟۡﻨَﺎ ﺍﻟﺘَّﻮۡﺭٰٮﺔَ ﻓِﻴۡﻬَﺎ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﻧُﻮۡﺭٌۚ ﻳَﺤۡﻜُﻢُ ﺑِﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻴُّﻮۡﻥَ ﺍﻟَّﺬِﻳۡﻦَ ﺍَﺳۡﻠَﻤُﻮۡﺍ ﻟِﻠَّﺬِﻳۡﻦَ ﻫَﺎﺩُﻭۡﺍ ﻭَﺍﻟﺮَّﺑّٰﻨِﻲُّﻭۡﻥَ ﻭَﺍﻟۡﺎَﺣۡﺒَﺎﺭُ ﺑِﻤَﺎ ﺍﺳۡﺘُﺤۡﻔِﻈُﻮۡﺍ ﻣِﻦۡ ﻛِﺘٰﺐِ ﺍﻟﻠّٰﻪِ ﻭَﻛَﺎﻧُﻮۡﺍ ﻋَﻠَﻴۡﻪِ ﺷُﻬَﺪَﺁﺀَۚ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺨۡﺸَﻮُﺍ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻭَﺍﺧۡﺸَﻮۡﻥِ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺸۡﺘَﺮُﻭۡﺍ ﺑِﺎٰﻳٰﺘِﻰۡ ﺛَﻤَﻨًﺎ ﻗَﻠِﻴۡﻼًؕ ﻭَﻣَﻦۡ ﻟَّﻢۡ ﻳَﺤۡﻜُﻢۡ ﺑِﻤَﺎۤ ﺍَﻧۡﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّٰﻪُ ﻓَﺎُﻭﻟٰٓٮِٕﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟۡﻜٰﻔِﺮُﻭۡﻥَ
    আমি তাওরাত নাযিল করেছি। তাতে ছিল পথ নির্দেশ ও আলো। সমস্ত নবী, যারা মুসলিম ছিল, সে অনুযায়ী এ ইহুদী হয়ে যাওয়া লোকদের যাবতীয় বিষয়ের ফায়সালা করতো। আর এভাবে রব্বানী ও আহবারও (এরই ওপর তাদের ফায়সালার ভিত্তি স্থাপন করতো) । কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এবং তারা ছিল এর ওপর সাক্ষী। কাজেই (হে ইহুদী গোষ্ঠী!) তোমরা মানুষকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় করো এবং সামান্য তুচ্ছ মূল্যের বিনিময়ে আমার আয়াত বিক্রি করা পরিহার করো। আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী যারা ফায়সালা করে না তারাই কাফের। আয়াত নাম্বার-৪৪

    ধর্মনিরপেক্ষ ভাইয়েরা উপরের আয়াত টি ভালো করে ।

    আল্লাহর নবীরা আল্লাহর হুকম অনুযায়ী ফায়সালা করতে শাসনকার্য পরিচালনা করতে আদিষ্ট হয়েছিল,শুধু ঈমান আনয়নের জন্য নয় । নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন করতে আদিষ্ট হয়নাই । আল্লাহর খলিফা অনুযায়ী আল্লাহর বিধান অনুযায়ী শাসন কাজ করতে, বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছিলেন । এবং পরে আল্লাহ স্পষ্ট করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন "যারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী হুকম/শাসন বিচার পরিচালনা করবেনা তারা কাফের" ।


    এখন আপনারা বলুন,

    আপনারা কোন ইসলামের কথা বলছেন?
    এরপর, আসুন দেখেন আপনার-আমার ঈমান থাকে কিনা যদি রাসূল যেই শরিয়াহ অনুযায়ী বিচার করতেন সেই বিচার কে না মানি,অর্থাৎ রাসূলের রেখে যাওয়া শরীয়াতকে যদি রাসূলের অবর্তমানে না মানি,রাসূলের শরীয়াত কে যদি স্ট্যান্ডার্ড মনে না করি
    আমাদের ঈমান থাকে কিনা:
    ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺭَﺑِّﻚَ ﻟَﺎ ﻳُﺆۡﻣِﻨُﻮۡﻥَ ﺣَﺘّٰﻰ ﻳُﺤَﻜِّﻤُﻮۡﻙَ ﻓِﻴۡﻤَﺎ ﺷَﺠَﺮَ ﺑَﻴۡﻨَﻬُﻢۡ ﺛُﻢَّ ﻟَﺎ ﻳَﺠِﺪُﻭۡﺍ ﻓِﻰۡۤ ﺍَﻧۡﻔُﺴِﻬِﻢۡ ﺣَﺮَﺟًﺎ ﻣِّﻤَّﺎ ﻗَﻀَﻴۡﺖَ ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻮۡﺍ ﺗَﺴۡﻠِﻴۡﻤًﺎ
    না, হে মুহাম্মাদ! তোমার রবের কসম, এরা কখনো মু’মিন হতে পারে না যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্য যে কোনো প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে । আয়াত নাম্বার-৬৫
    আল্লাহ নিজের কসম করে বলছেন আমরা ঈমানদার হতে পারবোনা যদি আমরা রাসূল কে বিচাৰক না মানি । অর্থাৎ রাসূলের নিকট অবতীর্ণ কোরআন এবং তাঁর সুন্নাহকে বিচারের শাসনের মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ না করি ।
    তাহলে,
    আমরা কোরানের আলোকে দেখলাম,
    ১।সার্বভৌমত্বের মালিক এই পৃথিবীতে এবং মহাবিশ্বের সকল জায়গায় শুধু আল্লাহ যিনি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা এবং পালনকর্তা ।
    ২। আল্লাহ আমাদের পিতা আদম (আঃ) কে সকল নবীকে এবং আমাদেরকে খলিফা হিসেবে পাঠিয়েছেন খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে ।
    ৩। সার্বভৌমত্বের এবং খেলাফতের কনসেপ্ট নতুন নয় । সবচেয়ে পুরনো, মৌলিক এবং শুধু বিশ্বাস নয় কাজের অংশ, দায়িত্বের অংশ ।
    ৪।আল্লাহর বিধান কে না মানলে ব্যক্তি সমাজ জীবনে রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে মানা হয়না । এবং খেলাফতের দায়িত্ব পালন হয় না ।
    ৫। কোরান কে আল্লাহর বিধান খণ্ডিত ভাবে মানলে বনু ইসরাইলের মতো আমরাও কুফরিতে লিপ্ত হবো । এবং আল্লাহর সাজার উপযুক্ত হবো দুনিয়া এবং আখেরাতে ।
    "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

  • #2
    আলেমদের জন্য অপরিহার্য ছিলো জনগনকে বলা দেশ চলবে কুরআন সুন্নাহ অনুসারে। দেশ চলবে আল্লাহর বিধান অনুসারে। আর এটি তোমাদের উপর অকাট্যভাবে ফরজ। কিন্তু আলেমরা নিজেরাই গনতন্ত্রে জড়িয়ে গেলো। আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন আমীন। আজ বহু দলে, উপ দলে বিভক্ত হয়ে গেলো। আজকে মুসলিমদের টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে, তো একদল মিছিল করে আরেকদল ঘুমিয়ে থাকে। আজকে প্রকাশ্যে শত্রুরা কুরআন পুড়িয়ে দিচ্ছে। আর মুসলিম ব্যস্ত আছে মিছিল করা নিয়ে। নিজেদেরকে শান্তি প্রিয় প্রমাণ চেষ্টায় রত। আল্লাহ আপনি আমাদের কবুল করুন, আমরা যেনো বাস্তবেই দ্বীনের জন্য জীবন দিতে পারি আমীন।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment


    • #3
      একটা প্রশ্নঃ কেউ কি ( পবিত্র বাইবেল) বলতে পারবে???
      উল্লেখ্য একজন শাইখ একটা বই লিখেছেন পবিত্র বাইবেল। বইটি বিভিন্ন ইসলামীক লাইব্রেরীতে দেখা যাচ্ছে, ও ফেইজবুকেও বইটি বিক্রির পোস্ট চলছে!!!
      সম্মান নেইকো নাচে গানে,
      আছে মর্যাদা বিনিদ্র রজনী ও রণে।

      Comment


      • #4
        মাশা আল্লাহ, সুন্দর পোস্ট।
        Last edited by Munshi Abdur Rahman; 09-06-2020, 09:01 PM.
        “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

        Comment


        • #5
          জাযাকুমুল্লাহ
          Last edited by Munshi Abdur Rahman; 09-06-2020, 09:02 PM.
          "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

          Comment


          • #6
            Originally posted by Bara ibn Malik View Post
            কিন্তু আলেমরা নিজেরাই গনতন্ত্রে জড়িয়ে গেলো ।
            বিশেষ করে মুফতি আমিনী এবং মুফতি ওয়াক্কাসের কথা মনে পড়লে খুব খারাপ লাগে ।
            "জিহাদ ঈমানের একটি অংশ ৷"-ইমাম বোখারী রহিমাহুল্লাহ

            Comment


            • #7
              মাশাআল্লাহ, সুন্দর লেখনি। জাযাকাল্লাহ
              আল্লাহ তাতে আরো বারাকাহ দিন। আমীন
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment

              Working...
              X