Announcement

Collapse
No announcement yet.

বৈবাহিক জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম মূলনীতি - শাইখ তামিম আল আদনানী হাফিজাহুল্লাহ্ (pdf)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বৈবাহিক জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম মূলনীতি - শাইখ তামিম আল আদনানী হাফিজাহুল্লাহ্ (pdf)

    বৈবাহিক জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম মূলনীতি - শাইখ তামিম আল আদনানী হাফিজাহুল্লাহ্

    সরাসরি অনলাইনে পড়ুন

    https://archive.org/details/TranscriptOfSalihatLecture

    পিডিএফ ডাউনলোড করুন [১১৬.৮৪ কিলোবাইট]
    https://tinyurl.com/archive119KB


    --------

    বৈবাহিক জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম মূলনীতি - শাইখ তামিম আল আদনানী হাফিজাহুল্লাহ্

    নাহমাদুহু ওয়ানুসল্লি আলা রসূলিহিল কারিম। আম্মাবাদ-
    একটি সুখি ও সমৃদ্ধ দাম্পত্য জীবনের স্বপ্ন সবাই দেখেন। কিন্তু সবার জীবন কি সুখি হয়!
    অনেক সময় দাম্পত্যজীবনে নেমে আসে হাজারো দুঃখ, অশান্তি ও হতাশা। এর অন্যতম কারণ দাম্পত্যজীবন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান, প্রস্তুতি ও আয়োজনের অভাব। দাম্পত্য জীবনকে সুখনীয় করে তুলতে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকেরই করণীয় রয়েছে। আজ আমরা বোনদের সাথে আলোচনা করবো, দাম্পত্য জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর প্রাথমিক একটি মূলনীতি নিয়ে। যা আপনার দাম্পত্য জীবনকে অনেকাংশে নির্মল ও পরিচ্ছন্ন করে তুলবে ইন শা আল্লাহ।

    প্রিয় বোন! দাম্পত্যজীবনকে সুন্দর পরিচ্ছন্ন ও সুখময় করে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মূলনীতি হলো, স্বামীর আনুগত্য। আমরা সাধারণত মনে করি স্বামীর আনুগত্য মানে স্বামীর আদেশ পালন করা। আসলে এখানে স্বামীর আনুগত্য কথাটির পরিধি আরো ব্যাপক। স্ত্রী তার কথাবার্তা, কাজকর্ম, বেশভূষা আচার-ব্যবহার সবকিছু আপন স্বামীর চাহিদা মতো সাজিয়ে নিবে। এটি হচ্ছে স্বামীর আনুগত্যের প্রকৃত মর্ম।

    একজন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমতী স্ত্রী দাম্পত্য জীবনের শুরুর দিকেই স্বামীর স্বভাব-চরিত্র, প্রিয়-অপ্রিয়, পছন্দ-অপছন্দ সবকিছু জেনে নেয়। কিছু সরাসরি জিজ্ঞেস করে শিখে নেয় আর কিছু তার দৈনন্দিন জীবনকে পর্যবেক্ষণ করে জেনে নেয় ; তারপর সে নিজেকে সেই ভাবে সাজিয়ে তোলে। এ প্রসঙ্গে প্রিয় বোনদের আমার একটি ঘটনা শোনাতে চাই যেখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

    ইমাম শা'বী রাহিমাহুল্লাহ, একবার কাজী শুরাইম রাহিমাহুল্লাহ এর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি শুরাইম রাহিমাহুল্লাহ এর কাছে তাঁর পরিবারের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। শুরাইম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আজ ২০ বছর হয়ে গেল আমার পরিবারে কোনো অশান্তি; কোনো অসঙ্গতি আমি দেখি নি। এমনকি কোনদিন আমাকে রাগান্বিত হতে হয়নি। শা'বি রাহিমাহুল্লাহ জানতে চাইলেন, এটি কিভাবে সম্ভব হলো! তিনি বলেন, বাসর রাতে যখন আমি আমার স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ ঢুকলাম তাঁর অপূর্ব সুন্দর চেহারা দেখে আমি মুগ্ধ হলাম, মনে মনে ভাবলাম আমার উচিত পবিত্র হয়ে দুই রাকাত সালাতুশ শোকর আদায় করা। সালাত যখন শেষ হলো বুঝতে পারলাম আমার স্ত্রীও আমার সঙ্গে সালাত আদায় করেছেন। আমার সাথেই সালাম ফিরিয়েছেন। ওই দিন বাসর রাতেই আমার বুদ্ধিমতী স্ত্রী আমাকে বলল, আমি আপনার কাছে একজন অপরিচিত নারী! আপনার রুচি ও স্বভাব এর ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। আপনার পছন্দনীয় বিষয়গুলো বলুন যাতে সেগুলো আমি নিয়মিত করতে পারি। আর আপনার অপছন্দনীয় বিষয় গুলো আমাকে জানিয়ে দিন যাতে আমি সেগুলো ত্যাগ করতে পারি। স্ত্রীর এমন সুন্দর কথার জবাবে আমি বললাম, তুমি এমন কিছু কথা বলেছো-যার উপর অটল থাকতে পারলে তুমি পরিপূর্ণ কল্যাণ লাভ করবে। আর এর বিপরীত কিছু করলে তোমার কথাই তোমার বিপক্ষে দলিল হবে। তারপর আমি তাকে আমার পছন্দ - অপছন্দ গুলো একে এক খুলে বললাম। সে জানতে চাইলো, আপনার প্রতিবেশীদের মধ্য থেকে কারা ঘরে আসলে আপনি খুশি হন এবং কাদের আসা আপনি অপছন্দ করেন? আমি বললাম, অমুক অমুক আমার বাড়িতে আসুক তা আমি চাইনা আর অমুক অমুক বাড়িতে এলে আমার কোন সমস্যা নেই। আমি আরো বললাম অমুক অমুক পরিবারের লোকেরা ভালো সুতরাং তুমি চাইলে তাদেরকে ঘরে আনতে পারো। আর অমুক অমুক পরিবারের লোকগুলো খারাপ তাদের ঘরে আসার অনুমতি দেয়া ঠিক হবেনা। আমার সব কথা আমার স্ত্রী মনে গেঁথে নিল। আল্লাহর কসম! সে রাত ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুখময় রাত।তারপর! একে একে পুরো বিশটি বছর যেনো খুশি ও আনন্দের হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো ; এই দীর্ঘ সময়ে তার মাঝে কেবল কল্যাণ ও সন্তুষ্টি খুঁজে পেয়েছি। একটি বারের জন্যও এমন কিছু করেনি যা আমি অপছন্দ করি। হ্যাঁ, শুধু একবার তার একটি কাজ আমি অপছন্দ করেছিলাম তবে, পরে আমি বুঝতে পারি ভুলটি মূলত আমারই ছিল। এই অবস্থাতেই সে আমাকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়। আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন।

    প্রিয় বোন! এই ঘটনা থেকে নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পেরেছেন স্বামীর আনুগত্য কিভাবে একটি মধুর ও সুখময় দাম্পত্য জীবন গঠনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে! নেককার মুমিন নারীরা অনেক বুদ্ধিমতী ও বিচক্ষণ হয়ে থাকে। পরিবারের স্বামীর কর্তৃত্বের ব্যাপারটি তারা সহজেই বুঝতে পারে।
    কেননা পবিত্র কুরআনে এসেছে:-
    ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ
    ‘‘পুরুষরা নারীর ওপর কর্তৃত্বশীল’’ [আন নিসা ৪:৩৪]
    হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন পুরুষরা স্ত্রীদের অভিভাবক তারা স্বামীর আদেশ মান্য করবে, তার পরিবারের সাথে সদাচার করবে এবং তাঁর সম্পদের হেফাজত করবে।

    প্রিয় বোন! পরিবার একটি জাহাজের মতো জীবনের স্রোত ঢেলে যেটি সামনের দিকে এগিয়ে যায়, জাহাজের জন্য যেমন একজন কাপ্তান চাই; তেমনি ভাবে পরিবারের জন্য চাই একজন অভিভাবক। অন্যথায় তার অগ্রগতি ব্যাহত হবে, এমনকি সমুদ্রের অবস্থা নাজুক হলে ডুবেও যেতে পারে। আর সে অভিভাবক হলেন আপনার স্বামী।

    প্রিয় বোন! আপনি হয়তো ভাবছেন তাহলে সব সময় স্বামীর পছন্দের কথা ভাবতে হবে! তার সব কথা মানতে হবে! আমারও তো একটা মন আছে; আমারও তো কিছু পছন্দ-অপছন্দ আছে! আমার কি কোনো অধিকার নেই?
    প্রিয় বোন! আপনি নিঃসন্দেহে ঠিক বলেছেন। নিঃসন্দেহে আপনারও নিজস্ব পছন্দ অপছন্দ আছে। আপনারও আছে স্বতন্ত্র অধিকার, কিন্তু উভয়ের অধিকার একই পদ্ধতিতে আদায় করা যাবে না।

    এখানে স্বামীর আনুগত্য মানে নিজের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া নয়। আনুগত্য মানে স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে চলা। স্বামী তাঁর পুরুষসুলভ কর্তৃত্ব ব্যবহার করে পরিবার পরিচালনা করবে। আর আপনি আপনার নারীসুলভ আবেগ ও ভালোবাসা দিয়ে আপনার স্বামী কে পরিচালনা করবেন। পুরুষ যত বাহাদুর, যত ক্ষমতাসীন কিংবা যত বদমেজাজিই হোক না কেন সে কখনও তার প্রেমময়ী স্ত্রীর পছন্দের বাইরে পা রাখতে পারে না। আবেগ ও ভালবাসার শক্তির কাছে পৃথিবীর সব শক্তি হার মানে। সুতরাং উভয়ই আপন আপন পদ্ধতিতে তার ব্যক্তিগত সুখ, স্বাতন্ত্র্য ও অধিকার বজায় রাখবে। কিন্তু বোন! আপনি যদি আবেগ ও ভালোবাসার পরিবর্তে, কর্তৃত্বের সূরে কথা বলতে শুরু করেন তাহলে মনে রাখবেন, আপনার দাম্পত্য জীবনে আপনিই আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন। আপনি কখনো এই জীবনে সুখ শান্তির আশা করতে পারেন না।

    চলুন এই ব্যাপারে প্রিয় নবী সাল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস শোনা যাক। ইমাম তাবরানী রহিমাহুল্লাহ্ সংকলিত ‘আল মু'জামুল আওসাত’ গ্রন্থে বর্ণিত একটি সহীহ হাদিসে এসেছে, একবার রাসূলুল্লাহ্ সল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের এক মজলিসে বলেন,
    ألا أخبركم بنسائكم في الجنة
    "আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতি স্ত্রীদের সংবাদ দেবনা?"
    সাহাবারা বললেন, "অবশ্যই দেবেন হে আল্লাহর রাসূল!
    তিনি বললেন,
    ﴿ولؤد ودود، إذا غضبت، أو أسيء إليها أو غضب زوجها، قالت: هذه يدي في يدك لا أكتحل بغمض حتى ترضى﴾

    "অধিক সন্তান জন্মদানকারী প্রেমময় স্ত্রী - যে রাগান্বিত হলে বা তার প্রতি কোন খারাপ আচরণ করা হলে কিংবা স্বামী তার সঙ্গে রাগ করলে সে বলে: এই যে আমার হাত আপনার হাতে রাখলাম—আপনি আমার উপর সন্তুষ্ট হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমাব না।”

    প্রিয় বোন! আশা করি বুঝতে পেরেছেন হাদিসে
    কি বলা হয়েছে! আবেগ ও ভালোবাসা এমন এক চাবি যা দিয়ে স্বামীর অন্তরের শেষ দরজাটি পর্যন্ত আপনি অনায়াসে খুলে ফেলতে পারবেন। প্রিয়তম স্বামীর কাছ থেকে আপনার সব দাবী মানিয়ে নিতে পারবেন।
    আরো একটি হাদীস বলে আজকের এই আলোচনা শেষ করছি:
    ﴿أيما امرأة ماتت وزوجها عنها راض ، دخلت الجنة﴾
    "যে স্ত্রী স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যুবরণ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। "
    [সুনানুত তিরমিজি : ১১৬১]

    আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল বোনকে আমল করার তৌফিক দিন, সবাইকে সুখি ও সমৃদ্ধ দাম্পত্যজীবন দান করুন। আমিন ইয়া রব্বাল আ'লামিন।
    ‘...তোমাদের সন্তানের মাঝে সৃষ্টি করো জিহাদপ্রেম, তারুণ্যের তেজ ও দিগ্বিজয়ের দূরন্ত নেশা। মুসলমানের সমস্যা সম্পর্কে সজাগ থাকো…’’ - শাইখ আবদুল্লাহ্ আযযাম রহিমাহুল্লাহ্

  • #2
    মাশাআল্লাহ, সুন্দর পোস্ট।
    আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      ভাই, ধরুন আমি একজন সুদর্শন পুরুষ ও আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনেক। কিন্তু আমার স্ত্রী তেমনটা সুন্দরী নয় এবং তার মধ্যে উপরোক্ত যোগ্যতাও নেই তাহলে দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার জন্য কী করা যেতে পারে? কারন সব ঘটনাতে দেখছি যে, স্ত্রী খুব সুন্দরী এবং তাকে দেখে উনি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এরকম তো সবার ক্ষেত্রে হয় না। তাদের জন্য আপনি কী পরামর্শ দিবেন?

      Comment


      • #4
        musafir15
        ভাইজান, সুন্দর কথা বলেছেন। সত্যিই সব মেয়ে/ স্ত্রীরা দৈহিক দিয়ে এতটা সৌন্দর্য না। কেউ একটু বেশি সুন্দর, কেউ একটু কম। স্ত্রী হলে, সাথেসাথে যদি তার ব্যবহার ভালো তাহলে পুরুষরা এমনিতেই খুব ভালোবাসে। একটা স্বাভাবিক ব্যাপার আছে সেটা হলো মানুষ সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট। স্ত্রী সুন্দর হউক সবাই আশাকরি (করে)। এখন সবাই যদি শুধু সুন্দর দেশে বিয়ে করে তাহলে একটু কম সুন্দর তারা যাবে কোথায়??? তাই আমাদের জন্য অপরিহার্য হলো আল্লাহর বিধানের অনুসরণ করা। আল্লাহর দেওয়া তকদিরকে মেনে নেওয়া। আপনি যদি তকদিরকে মেনে না নেন তাহলে জীবনে সুখের আশা করাই ভুল হবে। আর দুনিয়ার জীবনটা হলো ধোকার বস্তু। আজকে আমাদের দেশে ইসলাম থাকত, তাহলে পুরুষরা ইসলামের রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যস্ততায় ব্যস্ত থাকত, কেউ দাওয়াতি লাইনে, কেউ জিহাদের ময়দানে। আর এখন আমাদের অবস্থা হচ্ছে সারাদিন চাকরি করে, কাজ করে স্ত্রীর সাথে জগরা(ঝগড়া) করো। তোমাকে ভালো লাগে না তুমি তালাক। এ-ই হচ্ছে অবস্থা। আপনার জীবনে আল্লাহ যাকে মিলিয়ে দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ বলে ফিট করা। আপনি যদি কালো মেয়েকে বিয়ে করেন এবং সন্তুষ্ট থাকেন নিশ্চয় আল্লাহ আখিরাতে এ-র বদলা দিবেন। মন ফেরেশ(ফ্রেশ) করে কালোর সাথে ঘর করেন দেখবেন আল্লাহ আপনাকে অনেক বরকত দিবেন।
        বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

        Comment


        • #5
          মাশা-আল্লাহ, আল্লাহ তাআলা উত্তম প্রতিদান দান করুক, আমীন।

          Comment


          • #6
            অনেক সুন্দর হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন।
            فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِيَآءَ الشَّيْطٰنِ

            Comment

            Working...
            X