Announcement

Collapse
No announcement yet.

সালাফের আদর্শে সন্তানদের কীভাবে গড়ে তুলবেন? ┇ শাইখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ্ (Transcri

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সালাফের আদর্শে সন্তানদের কীভাবে গড়ে তুলবেন? ┇ শাইখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ্ (Transcri

    সালাফের আদর্শে সন্তানদের কীভাবে গড়ে তুলবেন? ┇ শাইখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ্


    নাহমাদুহু ওয়ানুসল্লি আলা রসূলিহিল কারীম আম্মাবাদ

    সন্তান-সন্ততি আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনের অনুপম উপহার। এক অমূল্য নিয়ামত। যাদের দেখে মা-বাবার হৃদয় শান্ত হয়। যাদের খুশি দেখে আনন্দে ভরে যায় মা-বাবার অন্তর। এই নিয়ামতের কোনো তুলনাই হয়না। তাই তো হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম দোয়া করেছিলেন:

    رَبِّ لَا تَذَرْنِى فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْوَٰرِثِينَ

    ‘‘হে আমার রব! আমাকে সন্তানহীন একা ছেড়ে দেবেন না। আপনিতো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী।’’ [সূরা আল- আম্বিয়া ২১ঃ৮৯]

    সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য। যার সন্তান নেই সেই কেবল বুঝতে পারে সন্তানের মর্ম। আল্লাহ আপনাকে সন্তানের মতো নেয়ামত দান করেছেন এ জন্য আল্লাহর কাছে আপনার শোকর-গোজার হওয়া চাই।

    সন্তান কেবল আল্লাহর নেয়ামত নয় এটি মা-বাবার কাছে আল্লাহর আমানত। সন্তানকে সঠিক তা'লীম ও তারবিয়্যাহ' র মাধ্যমে গড়ে তুলে মা-বাবাকে এই আমানত রক্ষা করতে হয়। কিয়ামতের দিন মা-বাবাকে আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে, তারা আল্লাহর এই আমানতের হেফাজত করেছেন নাকি খিয়ানত করেছেন!

    প্রিয় বোন! আজ আমরা সন্তানদের তা'লীম-তারবিয়্যাহ সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করবো ইন শা আল্লাহ্।

    শৈশব থেকেই আপনার সন্তানকে বিশুদ্ধ ইসলামী আকীদা শিক্ষা দিন। সব ধরনের ভ্রান্ত আকিদা থেকে যেন তার কচি হৃদয় পুতঃপবিত্র থাকে। তার হৃদয়ের জমিনে আল্লাহর কিতাব ও রাসূল সাল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ্'র আজমত ও মর্যাদার বীজ রোপন করুন। তাদের অন্তরে সাহাবায়ে কেরামের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করুনন। তাদেরকে সালাফের সোনালী ইতিহাসের গল্প শোনান। সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে সালেহীনদেরকে তাদের হৃদয়ে মহান ও অনুসরণীয় করে তুলুন।

    সাবধান! তারা যেন হালের কোন ভ্রষ্ট অভিনেতা ফুটবল প্লেয়ার কিংবা শিল্পীকে নিজের আদর্শে মনে না করে বসে।

    অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আজ সঠিকভাবে তারবিয়ার অভাবে আমাদের সন্তান-সন্ততি সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফদের সঙ্গে সঠিকভাবে পরিচিত পর্যন্ত হতে পারছে না! সন্তানদের তারবিয়ার প্রতি এমন অমার্জনীয় অবহেলাই মুসলিম সমাজের বর্তমান অবস্থার জন্য অনেকাংশে দায়ী।

    প্রিয় বোন! কচি বয়সেই আপনার আদরের সন্তানের হৃদয়ে ঈমানকে গেঁথে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীনের সার্বক্ষনীক তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণের অনুভূতি তার অন্তরে গেঢ়ে দিন। দেখুন! লোকমান আলাইহিস সালাম তাঁর আপন সন্তানকে কি নাসীহাহ করছেন-

    يَٰبُنَىَّ إِنَّهَآ إِن تَكُ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ فَتَكُن فِى صَخْرَةٍ أَوْ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ أَوْ فِى ٱلْأَرْضِ يَأْتِ بِهَا ٱللَّهُۚ

    ‘‘হে আমার প্রিয় ছেলে! সরিষার দানার আকারের ক্ষুদ্র কোন বস্তুও যদি কোন পাথরের ভেতরে কিংবা আসমানে অথবা ভূগর্ভেও থাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা উপস্থিত করবেন।’’ [সূরা লুকমান ৩১ঃ১৬ ]

    সন্তানের হৃদয়ের এ কথা বসিয়ে দিন - আল্লাহ সর্বঅবস্থায় আমাদের দেখেন। আমরা কী বলছি কী করছি তিনি সবই জানেন। আপনার সন্তানকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিন- যারা আল্লাহর নাফরমানি-অবাধ্যতায় লিপ্ত হয় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের কঠিন শাস্তি দেন। যারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা চায় তাওবাহ করে, আল্লাহ্ তাদের প্রতি রহম করেন। বিশেষ করে সন্তানদের সালাতের প্রতি মনোযোগ দিন। তাদের অন্তরে সালাতের গুরুত্ব ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করুন।

    নিয়মিত সালাত আদায় করছে কিনা খোঁজখবর রাখুন।

    ফজরের সালাতের জন্য ঘুম থেকে জাগিয়ে দিন। স্নেহ-ভালোবাসার কারন সালাতের ব্যাপারে সন্তানকে অবহেলা করতে দিবেন না। সাত-আট বছর বয়স থেকেই ধীরে ধীরে তাকে সিয়াম পালনে অভ্যস্ত করে তুলুন। যাতে বালেগ হওয়ার পর - রোজা রাখা তার জন্য অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়।

    প্রিয় বোন! আদরের সন্তানদের কখনো তার ইচ্ছার উপর ছেড়ে দেবেন না। তাদেরকে আপনার পর্যবেক্ষণে রাখুন, তারা যেন পরিপূর্ণ ভাবে হারাম থেকে বেঁচে থাকে। আপনার ছেলে গান শুনছে, আপনার মেয়ে পর্দায় শিথিলতা করছে কিংবা অন্য কোনো শরীয়্যাহ বিরোধী কাজ করছে - আর আপনি তাকে কিছু বলছেন না এমন যেন কখনো না হয়। হারামের ব্যাপারে সন্তানদের যেনো কোন ধরনের ছাড় দেয়া না হয়। হকের প্রশ্নে আপনি যেন পাহাড়ের মতো কঠিন ও অবিচল থাকেন।

    প্রিয় বোন! আপনার সন্তানদেরকে খারাপ সঙ্গ থেকে সবসময় দূরে রাখুন, অসৎ সঙ্গের ক্ষতি সম্পর্কে তাদের সচেতন করুন। সময়কে কাজে লাগাতে উদ্বুদ্ধ করুন, বিশেষ করে দ্বীনি কিতাবাদী অধ্যয়নের প্রতি তাকে মনোযোগী করে তুলুন। সম্ভব হলে তার চাহিদা অনুসারে ঘরেই ছোট্ট একটি লাইব্রেরির ব্যবস্থা করে দিন।

    প্রিয় বোন! সন্তানের সুন্দর চরিত্র গঠনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। এ ব্যাপারে অবহেলা করবেন না, একজন নেককার সন্তান আপনার দুনিয়া ও আখেরাত উভয়কেই সাফল্যে ভরে দেবে। ইমাম কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ্ বলেন,

    لا شيء أقر لعين المؤمن من أن يرى زوجته وأولاده مطيعين الله عز وجل

    ‘‘স্ত্রী ও সন্তানকে আল্লাহর অনুগত পাওয়ার চেয়ে মুমিনের জন্য অধিক প্রশান্তিদায়ক বস্তু আর কিছুই নেই।’’
    প্রিয় বোন! আপনার সন্তানের জন্য বেশি বেশি দোয়া করুন। সাবধান কখনো বদদোয়া করবেন না। বদদোয়া কবুল হয়ে গেলে পরে - আপনারই আফসোস করতে হবে।

    আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে সন্তানের নেয়ামতের কদর করার তাওফীক দিন। সঠিক তা'লীম তারবিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের একজন আদর্শ অনুগত বান্দা রূপে গড়ে তোলার তাওফীক দিন। আমীন ইয়া রাব্বাল আ'লামিন।
    ------------------------
    🔘 বৈবাহিক জীবনে সুখী হওয়ার প্রথম মূলনীতি - শাইখ তামিম আল আদনানী হাফিজাহুল্লাহ্ (Transcript)


    🔘মায়েদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা - শাইখ যুবাইর আল-হাসান হাফিজাহুল্লাহ (Transcript)
    ‘...তোমাদের সন্তানের মাঝে সৃষ্টি করো জিহাদপ্রেম, তারুণ্যের তেজ ও দিগ্বিজয়ের দূরন্ত নেশা। মুসলমানের সমস্যা সম্পর্কে সজাগ থাকো…’’ - শাইখ আবদুল্লাহ্ আযযাম রহিমাহুল্লাহ্

  • #2
    মাশাআল্লাহ, খুব উপকারী দিক-নির্দেশনা।
    আমাদের মা-বোনদেরকে আমল করার তাওফিক দিন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X