Announcement

Collapse
No announcement yet.

যেভাবে গণতান্ত্রিক ইসলামপন্থীদের মন্ত্রসমূহ–কুরআনের সাথে প্রতিটি স্থানে সাংঘর্ষি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যেভাবে গণতান্ত্রিক ইসলামপন্থীদের মন্ত্রসমূহ–কুরআনের সাথে প্রতিটি স্থানে সাংঘর্ষি

    যেভাবে গণতান্ত্রিক ইসলামপন্থীদের মন্ত্র সমূহ–কুরআনের সাথে প্রতিটি স্থানে সাংঘর্ষিক বলে প্রমাণিত হয়


    ❑ ইয়া রাব্ব! আপনার কাছে তাওবা করছি! আপনার কতশত আদেশ অমান্য করছি! আপনার কুরআনকে উপেক্ষা করছি। আপনি বলেছেন:

    (হে নবী) “আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করুন, আপনার উপর আপনার নিজের ছাড়া অন্য কারও দায়ভার নেই।! (وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ) আর আপনি মুমিনগণকে উৎসাহিত করতে থাকুন! অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ কাফিরদের যুদ্ধক্ষমতা চূর্ণ করে দেবেন। আল্লাহর শক্তি সর্বাপেক্ষা প্রচণ্ড এবং তাঁর শাস্তি অতি কঠোর।” (নিসা: ৮৪)

    ইয়া রাব! আমি স্বল্পপরিসরে হলেও চেষ্টা করেছি (تَحْرِيْض) ‘উদ্বুদ্ধ’ করতে।

    কিন্তু তারা আমাকে বলেছে, আল্লাহর দিকে ফিরে আস! চুপচাপ দ্বীন পালন করো। চরমপন্থী হয়ো না। সন্ত্রাসবাদী হয়ে যেয়ো না। সবাইকে শান্তির কথা বলো। আশার কথা বলো। উন্নয়নের কথা বলো। (التعايش/ coexistence) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বলো। কেন শুধু শুধু ঝামেলা পাকাচ্ছো! হিকমত অবলম্বন করো! এসব কথা বলার সময় এখনো আসে নি! মরিচীকার পেছনে দৌড়ো না! আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ো না!

    ❑ আমি কসম করে বলছি, আমি এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার লোভী নই। এই তুচ্ছ দুনিয়া আমার পছন্দও নয়। আমি আখেরাতের জীবনকেই পছন্দ করি। আপনার দীদারের ব্যাকুলপ্রতীক্ষা করি। ইয়া রাব! আপনি ‘নাফীর’ (النفير লড়াই)-এর আহবান করেছেন:

    “হে মুমিনগণ! তোমাদের কি হল যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে অভিযানে বের হতে বলা হলো, তখন তোমরা (اثَّاقَلْتُمْ) ভারাক্রান্ত হয়ে মাটির সাথে মিশে গেলে? তোমরা কি আখিরাতের পরিবর্তে পার্থিব জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট হয়ে গেছ? (তাই যদি হয়) তবে (স্মরণ রেখ) আখিরাতের বিপরীতে পার্থিব জীবনের আনন্দ অতি সামান্য!
    তোমরা যদি অভিযানে বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে যন্ত্রণাময় শাস্তি দেবেন এবং তোমাদের স্থানে অন্য কোনও জাতিকে আনয়ন করবেন এবং তোমরা তার কিছুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পরিপূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।” (তাওবা: ৩৮-৩৯)।


    ইয়া রব! আমি সাড়া দিতে গেছি।

    তারা বলেছে, আল্লাহর কাছে তাওবা করো। এসব নৈরাজ্যমূলক কাজে নিজেকে জড়িয়ো না। তুমি কার নেতৃত্বে যুদ্ধ করবে? আমীর আছে? আমীরের হুকুম ছাড়া জিহাদ হয় না। জিহাদের জন্যে মুসলিম শাসক আবশ্যক!

    ❑ আমি তাওবা করছি! আপনি বলেছেন:
    (হে মুসলিমগণ!) “আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো, যাতে দেখে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল এবং যাতে তোমাদের অবস্থাদি যাচাই করে নিতে পারি।” (মুহাম্মাদ: ৩১)

    আমি চেষ্টা করেছি সবর করতে। আপনার রাস্তার ইদাদে-জিহাদে অংশ নিতে। যাতে আপনি আমাকে অবিচলদের কাতারে দেখতে পান!

    কিন্তু তারা বলেছে: আল্লাহর কাছে তাওবা করো। বর্তমানে কোনও জিহাদ নেই। সুতরাং জিহাদের ময়দানে সবর করার ব্যাপারও নেই। হাঁ, সবর হতে পারে জালিম শাসকের জুলুমকে নিরবে সহ্য করে করে। জালিম তাগুত শাসকের জেলখানায় বন্দী হয়ে! রাজপথে মিছিল করতে গিয়ে তাড়া খেয়ে! জিহাদের সময় এখন নয়।

    ❑ আমি তাওবা করছি! আপনি বলেছেন:
    “হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্য হতে কেউ যদি নিজ দ্বীন থেকে (يَرْتَدَّ) ফিরে যায়, তবে আল্লাহ এমন লোক সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং তারাও তাকে ভালোবাসবে। তারা মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনও নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবে না। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যা তিনি যাকে ইচ্ছা করেন দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় সর্বজ্ঞ” (মায়িদা: ৫৪)।

    ইয়া রাব! আমি দ্বীন থেকে ফিরে যাইনি। আমি মুরতাদ নই। আমি মুমিনদের প্রতি গভীর ভালোবাসা রাখি! আপনার রাস্তায় মেহনতকারীদের প্রতি হৃদ্যতা অনুভব করি! কুফুরের প্রতি ঘৃণা অনুভব করি!

    কিন্তু তারা বলেছে: কাফিরদের সাথে লড়াই করো না। তারাও মানুষ। তোমরাও মানুষ। সবাই আল্লাহর সৃষ্টি। তাদেরকে দাওয়াত দেয়ার আগে তাদের সাথে লড়াই করা বৈধ নয়। আর তোমরা যদি একান্তই লড়াই করতে চাও, তাহলে যারা সমাজে বিশৃঙ্খলা ছড়ায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো! তাদেরকে নির্মূল করার কাজে সহযোগিতা করো! জোটে অংশ নাও! এটাই গৌরবের! মহত্ত্বের!

    ❑ আমি তাওবা করছি! আপনি বলেছেন:
    (হে মুসলিমগণ!) “তোমরা কি মনে করেছ তোমরা জান্নাতে (এমনিতেই) প্রবেশ করবে, অথচ এখনও পর্যন্ত তোমাদের উপর সেই রকম অবস্থা আসেনি, যেমনটা এসেছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। তাদের উপর এসেছিল অর্থ-সংকট ও দুঃখ-কষ্ট এবং তাদেরকে করা হয়েছিল প্রকম্পিত, এমনকি রাসূল এবং তাঁর ঈমানদার সঙ্গীগণ বলে উঠেছিল, আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে? মনে রেখ, আল্লাহর সাহায্য নিকটেই” (বাকারা: ২১৪)।

    আমি কাফের ও তার দোসরদের প্রচন্ড বোমা হামলার পরও সবর করেছি। ব্রাশ ফায়ারের মুখে পড়েও অধৈর্য হইনি। কিন্তু শেষমেষ মরিয়া হয়ে যখন প্রতিরোধে নামার মনস্থ করেছি

    তখন তারা বলেছে: আল্লাহর কাছে তাওবা করো। ক্ষমা চাও। বুলেট-বোমার মুখোমুখি হতে যেয়ো না। জানো না, নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া জঘন্য পাপ? আত্মঘাতি হওয়ার শাস্তি চির জাহান্নাম! জাতিসংঘের প্রতি আস্থা রাখো। নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি বিশ্বাস রাখো। হেগের আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের প্রতি অনুগত থাকো। দেখছো না, আমেরিকা-রার্শিয়ার কতো শক্তি! পারবে ওদের সাথে? তো, শুধু শুধু অপচয় কেন?

    ❑ আমি তাওবা করছি আপনি বলেছেন:
    তোমরা কি মনে করেছ তোমাদেরকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে, অথচ আল্লাহ এখনও দেখে নেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করে এবং আল্লাহ ও তার রাসূল ও মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে (وَلِيجَةً)অন্তরঙ্গ বন্ধু বানায় না? তোমরা যা-কিছু কর, আল্লাহ তা পরিপূর্ণরূপে জানেন (তাওবা: ১৬)।

    ইয়া রাব! আমি মুনাফিক ও কাফিরদেরকে (البطانة) অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করিনি! আপনাকে ও আপনার ‘ওলী’দেরকেই বন্ধু বানিয়েছি।

    কিন্তু তারা বলেছে: ছি ছি! তুমি খারেজী-জাহান্নামের কুকুরকে, চরমপন্থীদের বন্ধু বানিয়েছ? সন্ত্রাসীদেরকে আপন ভাবছ? তারা রক্তপিপাসু! তারা ভ্যাম্পায়ার! তারা নরখাদক! তারা ভ্রষ্ট! তারা ‘গুলাত’! তারা তাকফীরি! তারা ‘তাফজীরি’(বিস্ফোরণবাদী)! এখনও সময় আছে: আল্লাহর কাছে তাওবা করো।
    তাদের গৃহপালিত মুফতীরা পইপই করে বলেছে:
    আমরা সব বিষয়ে পারদর্শী সর্বজ্ঞাত (خبير)। আমাদের চেয়ে অভিজ্ঞ কাউকে পাবে না। (لا ينبئك مثل خبير) = যে যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত তাঁর মত সঠিক সংবাদ তোমাকে আর কেউ দিতে পারবে না!


    ইয়া রাব! আমি তাওবা করছি! আপনার হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন:
    “যে ব্যক্তি জিহাদ করলো না অথবা জিহাদ-গমনেচ্ছু কাউকে সাহায্য করলো না অথবা মুজাহিদের পরিবারকে সাহায্য করলো না, আল্লাহ তার উপর কেয়ামতের আগে ভয়ংকর আযাব নাযিল করবেন (আবু দাউদ)।”


    মাবুদ! আমি চেষ্টা করেছি!

    কিন্তু তারা বলেছে: আরে বেকুব! সামলে চল। ওদেরকে কোনও সাহায্য করা নয়। তুমি কি চাও ‘আমেরিকা’ তোমাকে ক্ষমা না করুক? তোমার উপর ড্রোন হামলা করুক?

    ❑ ইয়া রব! আমি তাওবা করছি, আপনার নবী বলে গেছেন:
    “তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার কামনা করো না। আল্লাহর কাছে এর থেকে পানাহ চাও! যদি তাদের মুখোমুখি হয়েই যাও, সবর করো (মুত্তাফাক)। ”

    আমিও তাই করেছি। গায়ে পড়ে তো কেউ শত্রুর মুখোমুখি হতে যায় না। কিন্তু হায়েনারা আমাদের দেশের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালাচ্ছে। হাজারে হাজারে মানুষ মেরে ফেলছে। তখন আমরা ফুঁসে উঠতে গেলেই–

    তারা বলেছে: রসো! কী করছ! আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও! এরা বোমা মারলেও, আমাদের শত্রু নয়। এরা এসেছে কল্যাণ ও মুক্তির বার্তা নিয়ে। শান্তি ও স্বাধীনতা নিয়ে। গণতন্ত্র সভ্যতা নিয়ে। উন্নতি ও প্রবৃদ্ধি নিয়ে।

    ❑ ইয়া রাব! আমি তাওবা করছি! আপনার হাবীব বলে গেছেন:
    “যে ব্যক্তি জিহাদ না করে, এমনকি জিহাদ করার কথা ঘুণাক্ষরেও না ভেবে, মারা গেলো, একপ্রকার মুনাফিক অবস্থাতেই তার মৃত্যু হলো” (মুসলিম)।

    মাবুদ! আমি চেয়েছি ‘নিফাক (النفاق) কপটতা থেকে দূরে থাকতে। চেয়েছি নবীজির কথা মানতে!

    কিন্তু তারা বলেছে:করছ কি! জাগো জাগো! তুমি কোনটাকে ‘নিফাক’মনে করছো? আজব তো! আরে বুদ্ধু কাঁহিকা! নিফাক তো হলো: দেশের শাসকের বিরুদ্ধে কিছু করা। কিছু বলা। তাদের হুকুম তামিল না কর! তাদের অবাধ্যাচরণ করা!


    ❑ আমি তাওবা করছি! আপনার রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন,
    “মানুষ যখন ধন-সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখবে! কেনাবেচা করবে উপস্থিত টাকা-পয়সা ছাড়া, গরু-ছাগল-ক্ষেতখামার নিয়ে মশগুল হয়ে পড়বে, জিহাদ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর আযাব চাপিয়ে দেবেন, দ্বীনকে দুরস্ত না করা পর্যন্ত আযাব বহাল থাকবে (আবু দাউদ)।”

    মাবুদ! আমি ক্ষেতি-শস্য ত্যাগ করেছি। আপনার রাস্তার জন্যে টাকা-পয়সা জমা করেছি!

    কিন্তু তারা বলেছে: এসব আসমানী ‘বালা’ নয় রে বোকা! এসব হলো তোদের বোকামীর ফল! ভাল করে কৃষিকাজে মন দে! কলকারখানা সচল কর, শিক্ষালয়গুলো ভরপুর করে তোল, তাহলে অর্থনীতির চাকা চাঙ্গা হয়ে যাবে। তোরা জিহাদ জিহাদ করে আমেরিকাকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিস! তারা আমাদের উপর তাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে! তোরা ঠিক হ, তারাও ঠিক হয়েই যাবে। আমেরিকাকে মারা প্রকৃত জিহাদ নয়, প্রকৃত জিহাদ হলো আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে নিজেকে সংবরণ করে রাখা! নিরাপদে মসজিদে গিয়ে আল্লাহ-বিল্লাহ করা!

    ❑ আমি তাওবা করছি! নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন:
    “একটা সময় আসবে, মানুষের হৃদয়গুলো দুনিয়ার মোহে ‘জর্জরিত’ হয়ে পড়বে! স্বভাব-চরিত্র হয়ে পড়বে বেদুইনদের মতো! টাকা-পয়সা যা আসবে সবই ভোগ-বিলাসে ব্যয় করবে! জিহাদকে ‘ক্ষতিকর’ মনে করবে, যাকাতকে জরিমানা মনে করবে (তাবরানী)।”

    মাবুদ! আমরা তাদেরকে হাদীসটা শুনিয়েছি! তারা ধমক দিয়ে আমাদেরকে থামিয়ে দিয়ে বলেছে:

    তোমরা আমাদের চেয়ে বেশি বোঝ? তোমরা হাদীসের ভুল অর্থ বুঝেছ! আমরা ধন-সম্পদ ভোগ-বিলাসে ব্যয় করি না! জীবনের প্রয়োজনে ব্যয় করি!

    আমরা তাদেরকে আরেকটা হাদীস শোনালাম। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন: “কোনও কওম জিহাদ ছেড়ে দিলে, আল্লাহ তাদের উপর আযাব চাপিয়ে দেন (তাবরানী)।”

    তারা ঝামটা দিয়ে উঠে বললো:- নবীজি ঠিকই বলে গেছেন! তোমরা বুঝতে ভুল করেছ! জিহাদ হলো শান্তির স্বপক্ষে লড়া! আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করা! খারেজীদের খতম করা! এটা করছ না বলে, আল্লাহ আমেরিকার মাধ্যমে তোমাদের উপর বোমার আযাব চাপিয়ে দিয়েছেন।

    ❑ আমি তাওবা করছি! ইয়া রাব! আপনি বলেছেন:
    “হে মুমিনগন! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসায়ের সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাময় শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?
    (তা এই যে) তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটা তোমাদের পক্ষে শ্রেয়-যদি তোমরা উপলব্ধি করো (সফ: ১০-১১)। ”


    আমরা তাদেরকে বলেছি: আমরা আল্লাহর সাথে ব্যবসা করবো। আল্লাহর সাথে বেচাকেনা করবো! আমরা এভাবে লাভ-ক্ষতির হিশেব করেছি!

    কিন্তু তারা বলেছে:- এটা বুঝি একটা ব্যবসা হলো? বেগার নিজের জান দিয়ে অহেতুক নিজের মাল খরচ করে, কী লাভ? উদয়াস্ত পরিশ্রম করে স্বোপার্জিত টাকার এমন পরিণতিকে লাভ বলে না। এটা পুরোই লস প্রজেক্ট!

    ❑ ইয়া রাব! আমরা তাদেরকে বোঝানোর জন্যে সাধ্যে যতটুকু কুলোয়, তা করতে কসুর করিনি! আমরা আপনার কথা বলেছি:
    “পবিত্র মাসসমূহ অতিবাহিত হয়ে গেলে, তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাবে, হত্যা করবে! তাদেরকে পাকড়াও করবে, অবরুদ্ধ করবে! তাদেরকে ধরার জন্যে প্রতিটি ঘাঁটিতে ওঁত পেতে থাকবে (তাওবা: ৫)।”

    আমরা তাদেরকে এ আয়াতটাও শুনিয়ে দিয়েছি:
    “যখন কাফেরদের সাথে তোমাদের মোকাবেলা হয়, তখন তাদের গর্দানে আঘাত করবে। অবশেষে তোমরা যখন তাদের শক্তি চূর্ণ করবে, তখন তাদেরকে শক্তভাবে গ্রেফতার করবে (মুহাম্মাদ: ৪)।”

    তাদেরকে বলেছি:
    “তোমরা তাদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর এবং তাদেরকে সেই স্থান থেকে বের করে দাও, যেখান থেকে তারা তোমাদের বের করেছিল (বাকারা: ১৯১)।”

    এই আয়াতটাও বলতে ভুলিনি:
    “তাদের সাথে যুদ্ধ কর, যাতে আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি দান করেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করেন এবং মুমিনদের অন্তর জুড়িয়ে দেন (তাওবা: ১৪)।”

    মোক্ষম আয়াতটা শেষে বললাম:
    “তোমরা তাদের ঘাড়ের উপর আঘাত কর এবং তাদের আঙ্গুলের জোড়াসমূহেও আঘাত কর (আনফাল: ১২)।”

    • এতগুলো আয়াত শুনে, তারা চুপ করে থাকল! দৃষ্টি অবনত করে ফেললো! ভাবলাম তাদের সম্বিত ফিরেছে! আমাদের কথাগুলো বুঝতে পেরে ভুল ভেঙেছে! তখন সাহস করে বলেই ফেললাম:
    “হে মুমিনগণ! কাফেরদের মধ্যে যারা তোমাদের নিকটবর্তী তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা। তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায় (তাওবা: ১২৩)। ”

    আমেরিকা আজ আমাদের নিকটবর্তী! রাশা আজ আমাদের নিকটবর্তী! ব্রিটেন আজ আমাদের নিকটবর্তী! বরং তারা আমাদের দেশে এসে গেছে! আমাদেরকে মারছে! আমরা কি কুরআন ছেড়ে বসে থাকবো? কুরআনের সুষ্পষ্ট আয়াতকে অস্বীকার করবো? উপেক্ষা করবো?

    • ইয়া আল্লাহ! একথা শোনার সাথে সাথেই, তাদের মুখ দিয়ে এমন গালি-গালাজের তুফান শুরু হলো, আমরা যেন সেই বানের তোড়ে উড়ে যাবো! আমরা তাদের নিরবতাকে সম্মতি ধরে মারাত্মক ভুল করেছিলাম! সেটা নিরবতা ছিল না, ছিল ঝড়ের পূর্বাভাস! হড়বড় করে অনেক কিছুই বলেছিল, সবটার মর্ম উদ্ধার করতে পারিনি! মোটাদাগে তারা আমাদেরকে: কাফের বলেছে। খারেজী বলেছে। জাহান্নামের কুকুর বলেছে। ইরানের চর বলেছে। মোসাদের স্লীপার এজেন্ট বলেছে। এমনকি অদ্ভুত ব্যাপার হলো, তারা আমাদেরকে ‘সিআইএ’-এর চরও বলেছে। আরও ভয়ংকর কথা হলো: তারা ‘সিরিয়ার দালাল’ও বলেছে! শেষে পাগল, ভ্রষ্ট বলে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে বিদায় নিয়েছে!

    ইয়া রাব!
    • আপনি কাফেরদের গর্দানের উপর মারতে বলেছেন,
    • গর্দান উড়িয়ে দিতে বলেছেন,
    • আঙুলের আগায় আগায় মারতে বলেছেন,
    • কাফিরদেরকে কঠিন করে শাস্তি দিতে বলেছেন,
    • যুদ্ধের ময়দানে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ খানখান করে দিতে বলেছেন!


    এসব কি নরমভাবে কোমলভাবে করা সম্ভব? নমো নমো করে সম্ভব? আপনি বলেছেন এমন মাইর দিতে, যাতে কাফেরদের মনে ভয়াবহ ত্রাসের সঞ্চার হয়, সেটা কি হাসিমুখে মোসাফা করে সম্ভব?

    ইয়া আল্লাহ! আপনি কি নবীজিকে তরবারী দিয়ে পাঠাননি? একমাসের দূরত্বে থাকতেই কাফেরদের মনে নবীজির ভয় ঢুকিয়ে বিজয় দান করেন নি? তারবারীর ছায়ার নিচেই রিজিক থাকার কথা বলেন নি?

    • তারা আমাকে তাওবা করতে বলে, কিন্তু কিসের তাওবা?
    • আপনার অনুগত্য না করার তাওবা?
    • রাসূলের আনুগত্য না করার তাওবা?
    • সাহাবীগের আনুসরণ না করার তাওবা!


    • ইয়া রাব! তারা বলে, তারাই মানুষের বেশি কল্যাণকামী! তারাই আমাদের চেয়ে বেশি বোঝে! আপনি কি তাদের জন্যে ভিন্ন কোনও কুরআন নাযিল করেছেন?
    • ইয়া রাব! আহযাবের যুদ্ধের দিন, কাফিরদের কঠিন অবরোধের কারনে, নবীজি ও সাহাবীগন আসর পড়তে পারেন নি! সূর্য ডুবে গেছে! নবীজি মনের কষ্টে কাফিরদের জন্যে বদদোয়া করলেন:
    “তারা আমাদেরকে আসর পড়তে দেয়নি! সূর্য ডুবে গেছে! আল্লাহ তাদের ঘরবাড়ি ও কবরকে আগুনপূর্ণ করে দিন (বুখারী)!”
    • ইয়া রাব! এই লোকেরাও আমাদেরকে বিরত রাখছে, বাধা দিচ্ছে! আপনার রাস্তায় মেহনত করতে দিচ্ছে না! মুশরিকদের বিরুদ্ধে কুরআনকে বাস্তবায়নের সুযোগ দিচ্ছে না! ইয়া আল্লাহ! আপনি এদের উপরও আপনার নবীর দু‘আকে বাস্তবায়িত করে দিন!
    • কাফেররা আমাদের ঘরে এসে গেছে! ভাইদেরকে হত্যা করছে! কুরআনের অবমাননা করছে! নবীজিকে গালি দিচ্ছে! আমাদের দেশে, তাদের আইন বাস্তবায়ন করছে! মুসলিম সন্তানকে তাদের ধর্মে দীক্ষিত করছে! ইয়া রাব! এটা কিভাবে মেনে নেয়া যায়?
    • ইয়া রাব! কাফেররা আমাদের দেশ দখল করে নিয়ে শাসন করছে! একদল বলছে! তারা এখন আমাদের শাসক! শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে না!
    • ইয়া রাব! খ্রিস্টান সৈন্যরা আমাদের বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন করছে! তবুও একদল বলছে, তাদেরকে কিছু বলা যাবে না! কারণ তারা ‘সন্ত্রাসী’দের দমন করতে এসেছে! তাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়েছে এখানে আসার!
    • ইয়া রাব! খ্রিস্টানদের যুদ্ধবিমানগুলো আমাদের দেশ থেকে উড়ে যায়! মুসলিম হত্যার জন্যে! একদল লোক বলে, এই বিমান ঘাঁটিগুলো রক্ষা করা মুসলমানদের উপর ওয়াজিব! কারন এখানে বন্ধুদের বিমান থাকে!
    • ইয়া রাব! তারা আমাদের যুবকদেরকে ধরে ধরে মেরে ফেলছে! নামায পড়ার অপরাধে! ‘জিহাদের’ অপবাদ দিয়ে! অথচ নামায হলো: দ্বীনের ইমাদ! খুঁটি!


    ইয়া রাব! আমরা কার কথা মানবো?
    আপনি বলেন: (جاهدوا) তোমরা জিহাদ করো! (তাওবা: ৪১)।
    তারা বলে তোমরা জিহাদ করো না!

    ▶ আপনি বলেন (قاتلوا) তোমরা লড়াই করো! (তাওবা: ২৯)।

    তারা বলে তোমরা লড়াই করো না!

    ▶ আপনি বলেন (اضربوا) তোমরা আঘাত করো! (মুহাম্মাদ: ৪)।

    তারা বলে তোমরা আঘাত করো না!

    ▶ আপনি বলেন (راباطوا) তোমরা সীমান্ত রক্ষার জন্যে স্থিত হয়ে থাক (আলে ইমরান: ২০০)।
    তারা বলে তোমরা স্থিত হয়ে থেকো না।

    আপনি বলেন (ترهبون) তোমরা ভয় দেখাও! (আনফাল: ৬০)।
    তারা বলে ভয় দেখিও না।

    আপনি বলেন (لا تولّوهم الأدبار) তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না! (আনফাল: ১৫)।
    তারা বলে, তোমরা যুদ্ধক্ষেত্রেই গমন করো না।

    ইয়া রাব! যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করবে (من حادّ الله ورسوله) তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে, সমঝোতা করতে নিষেধ করেছেন!
    তারা আমাদেরকে বলে: তোমরা ইহুদি-নাসার সবার সাথে বন্ধুত্ব পাতাও! তাদেরকে ভালোবাসো!

    ইয়া রাব! যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, মুসলিম হত্যা করে, আমাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়, তাদের সাথে কোনও প্রকারের বন্ধুত্ব করতে আপনি নিষেধ করেছেন!
    অথচ এরা বলে: আমরা যেন কাফেরদের দিকে আরেক গাল বাড়িয়ে দেই!

    ইয়া রাব! আপনিই তো বলেছেন:
    ইয়াহুদি ও নাসারা আপনার প্রতি কিছুতেই খুশি হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের ধর্মের অনুসরণ করবেন। বলে দিন, প্রকৃত হিদায়াত তো আল্লহরই হিদায়াত (বাকারা: ১২০)।

    তারা বলে: আমরা শান্তিচুক্তি করলেই ইহুদিরা আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে! আমাদেরকে হত্যা করার পরও আমরা কিছু না বললে, তারা আমাদের প্রতি বেজায় খুশি হয়ে যাবে!

    ইয়া রব! আপনি বলেছেন:
    যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুসারে ফায়সালা করে না, তারা কাফির (মায়েদা: ৪৪)।

    তারা বলে: উহু! বাস্তবতা বুজতে হবে, হেকমত বুঝো না?

    ইয়া রাব! আপনি বলেছেন:
    তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদেরকে বন্ধু বানাবে, সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে (মায়িদা: ৫১)।

    তারা বলে: তারাও আমাদের অন্তর্ভুক্ত। বরং তারা আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ! কারন তারাই সমাজে মিলেমিশে থাকতে পারে! তারা জ্ঞন-বিজ্ঞানে অনেক উন্নত।

    ▶ ইয়া রাব! তারা কুরআনের তাফসীর করতে গিয়ে আবু বকর ও উমারের উক্তি ও কর্ম বাদ দিয়ে, ইমরাউল কায়স আনতারার কবিতা আওড়ায়!

    ইয়া রাব! আপনার নবী বলে গেছেন:
    একজন মুমিন আরেকজন মুমিনের জন্যে প্রাসাদের মতো! একে অপরকে মযবুত রাখে (মুত্তাফাক)

    একজন মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই, ভাইয়ের উপর যুলুম করবে না, ভাইকে শত্রুর হাতে সোপর্দ করবে না (মুত্তাফাক)।
    তারা বলে: তোমরা ভাইকে ধরতে পারলে, আমেরিকার হাতে তুলে দাও! ইসরায়েলের হাতে তুলে দাও (এরদোগান)!

    ইয়া রাব! নবীজি তার জীবনের তামান্নার কথা বলে গেছেন:
    “আমার একান্ত চাওয়া হলো: আমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হবো আবার জীবিত হবো, আবার শহীদ হবো, আবার জীবিত হবো! আবার শহীদ হবো আবার জীবিত হবো আবার শহীদ হবো! (বুখারী)।”


    তারা বলে: আমি গণতন্ত্রের জন্যে মরবো (মুরসি)! আমি খেলার জন্যে জীবিত হবো আবার মরবো! আবার গান-বাদ্যির জন্যে জীবিত হবো আবার মরবো! আবার কাফিরদের ‘দাস’ হয়ে জীবিত হবো আবার মরবো!

    ইয়া রব! আমাদের নবীজি বলে গেছেন!
    “আমাকে আদেশ করা হয়েছে, আমি যেন কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করি, তারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা পর্যন্ত! যে কেউ ‘কালিমা’ বলবে, সেই আমার কাছ থেকে তার জানমালের নিরাপত্তা লাভ করবে (মুত্তাফাক)!”


    আজ তারা বলে:-ইসলাম শান্তির ধর্ম! ইসলাম আমাদেরকে কাফিরদের সাথে সমঝোতা করে চলতে বলে! শান্তিচুক্তি করতে বলে! আমাদেরকে মারতে এলেও, চুপ থাকতে বলে! বিশৃঙ্খলা না করতে বলে! ইসলামে ‘জঙ্গীপনা’ নেই! ইসলাম আমাদেরকে ইজ্জত বিকিয়ে দিয়ে হলেও নিরব থাকতে বলে! কাফিরদের সৃষ্ট নীতি দিয়ে দেশ শাসন করলেও, শাসকের আনুগত্য করতে বলে!

    ইয়া রাব! আমরা কার অনুসরণ করবো?
    আপনার নবীর নাকি এই লোকদের?
    ইয়া রাব! আমি তাওবা করছি! আপনি আমার তাওবা কবুল করে নিন।
    ইয়া রব আমায় তৌফিক দিন।







    Collected
    Last edited by طوبى للغرباء; 10-15-2020, 06:21 PM.

  • #2
    আয়াত ও হাদিসগুলোর ইবারত এড করে দিলে ভালো হয়।
    والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

    Comment


    • #3
      মা'শা আল্লাহ!
      ثَوَابًا مِّن عِندِ اللّهِ وَاللّهُ عِندَهُ حُسْنُ الثَّوَابِ
      মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, খুব সুন্দর ও উপকারী একটি পোস্ট। জাযাকাল্লাহ
        অনলাইনে ছড়িয়ে দিলে ভাল হয়।
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment

        Working...
        X