Announcement

Collapse
No announcement yet.

ঈমান হরণের ষড়যন্ত্র

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ঈমান হরণের ষড়যন্ত্র

    আজ ফজর সালাতের পর মসজিদের বারান্দায় কিছু লোকদের জমায়েত দেখতে পেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি নতুন একটা অচেনা মুখ,খুব সুরেলা কন্ঠে দরস দিচ্ছে। আমি আকৃষ্ট হয়ে খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে লাগলাম। তার বক্তব্য শুনে আমি আঁতকে উঠলাম। এমন ভণ্ডামি আমাদের মসজিদের বারান্দায়। নিচে তার বক্তব্যের কিছু অংশ তুলে ধরলাম

    “ আসামিরা যখন অপরাধ করে তখন বিচারের সম্মুখীন হতে হয়। বিচারকের দরবারে তাকে সুপারিশ করার জন্য উকিলের দরকার,ঠিক তদ্রূপ বান্দার অসংখ্য গোনাহের কারনে আল্লাহ গোনাহগারকে ক্ষমা করতে চায় না,তখন ক্ষমা পাওয়ার জন্য একজন পীর ধরতে হয়। পীর সাহেব আল্লাহর কাছে অনুনয় বিনয় করে বান্দার গোনাহ মাফ করে, এজন্য পীর ধরা ফরজ, শরীয়ত বলে যার কোন পীর নেই, তার পীর শয়তান। এজন্য পীরের কাছে বাইয়াত নিতে হবে”

    পীররা অসিলা বা মাধ্যমে হবার দাবি করে। কিন্তু পীর বা পুরোহিতের অস্তিত্ব ইসলামে নেই। প্রত্যেক মুসলিম স্বয়ং তার পুরোহিত। প্রত্যেক মুসলিমকে সরাসরি আল্লাহর কাছে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। কিন্তু পীর ফকিরা কোরআনের ‘ওয়াবতাশু ইলাইহিল ওয়াসিলাতা’ এর অপব্যাখ্যা করে বলে যে,আল্লাহ এ আয়াত দ্বারা পীর ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। যদি এ আয়াত দ্বারা পীর ধরার কথা বলা হয়,তাহলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ‘ওয়াস আলুলিয়াল অসিলাতা ইল্লাল্লাহি’ অথাৎ আমার জন্য আল্লাহর কাছে ওয়াসিলা চাও কথার মানে কি? তিনি কি তার জন্য পীর ধরিয়ে দিতে বলেছেন। আবার আযানের দুআয় ‘আ-তি মুহাম্মাদানিল অসিলাতা’ দ্বারা কি আমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদেরকে একজন পীর ধরিয়ে দিতে আল্লাহর কাছে অনুরোধ করি? নিশ্চয়ই না। অসিলা অর্থ হচ্ছে নৈকট্য। আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি দ্বারাই নৈকট্য অর্জন করতে হবে। এ প্রসঙ্গে

    শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (রঃ) বলেন :“অসিলা অর্থ হচ্ছে আল্লাহ নৈকট্যের নাম”

    তাফসীরে জালালাইনে রয়ছে :

    “ইবাদত বন্দেগী দ্বারা আল্লাহর নিকট্য লাভ করার নাম অসিলা”

    তাফসীরে মাদারীকে আছে:

    “ অসিলা ঐ কাজের নাম যার দ্বারা আল্লাহ নৈকট্য লাভ করা যায়”

    তাফসীর ইবনু কাসীরে আছে :

    “ আল্লাহর নিকট্য লাভের অর্থ হচ্ছে অসিলা”

    কোরআনের তাফসীর কারকদের এ সম্পর্কে কোন মতফেদ নেই। মোটকথা সমস্ত তাফসীরে কিতাব সমস্ত তাফসীর কারদের কথা হল‘ অসিলা ঐ সকল ইবাদাত যার আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় ’আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে হলে অবশ্যই কোরআন হাদিস, সুন্নত মোতাবেক করতে করতে হবে তার মানে এই নয় যে কোন মাধ্যম কে রেখে আবার ঐ মাধ্যমের কাছে চাইতে হবে।

    আল্লাহকে পাবার জন্য ইসলামের শরীয়ত মোতাবেক চাইতে হবে। বান্দার দোয়া সরাসরি আল্লাহর কাছে কবুল হয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

    “হে নবী আমার বান্দা যদি তোমার নিকট আমার বিষয় জিজ্ঞেস করে,তবে বলে দাও আমি অতি নিকটে,কোন দু’আকারি যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার দু’আই জবাব দেই,দোয়া কবুল করি।অতএব আমার নিকট জবাব পাইতে চাওয়া তাদের কর্তব্য,অতএব আমার প্রতি তাদের ঈমান রাখা উচিত, তাহলে সম্ভাবত তারা সঠিক পথে চলতে পারবে”(সূরা বাকারাহ,আয়াত, ১৮৬)

    তাই আল্লাহ কাছে দোয়া কবুল করার জন্য কোন মাধ্যমের প্রয়োজন নেই। দু’আকারীর দোয়া সরাসরি আল্লাহর কাছে কবুল হয়। ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ (রঃ) বলেন:

    “ রাজা ও প্রজাদের মধ্যে যেমন মধ্যস্থতা ধরা হয়, তেমনি আল্লাহ ও তার বান্দাদের মধ্যে মধ্যস্থতা ধরা হারাম এরুপ যে করে, যারা কাফির, যারা মুশরিক,যারা বিদআতি তাদের ধ্যান ধারনা রাজা আর প্রজাদের মধ্যে যেমন ব্যাবধান থাকে। ঠিক তদ্রূপ আল্লাহ আর বান্দাদের মধ্যে এরুপ আড়াল বা ব্যাবধান আছে।যারা সাধারন মানুষদের রুজিরোজগার এর জন্য আল্লাহর কাছে চাইবে আর এ জন্য একজন পীর ধরতে হবে। আর পীরের দোয়া আল্লাহ কাছে অধিক গ্রহনীয় হবে এরকম ধারনাকারী সে পীর মুর্শেদ, গুরু, ওস্তাদ যাই হোক না কেন মধ্যস্থ ব্যক্তিকে মান্য করলে সে মুশরিক, কাফের হয়ে যাবে। তাকে তওবা করতে হবে। তার তওবা করা ওয়াজিব ”
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 10-16-2020, 06:17 AM.
    “দ্বীনের জন্য রক্ত দিতে দৌড়ে বেড়ায় যারা,সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর উত্তরসূরী তারা”–TBangla

  • #2
    মহান আল্লাহ আমাদের সকলের ঈমানকে হিফাযত করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X