Announcement

Collapse
No announcement yet.

কল্যাণ ও অকল্যাণ বিষয়ে আক্বীদাহ কেমন থাকা দরকার? by: হুজাইফা (১ম পর্ব)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কল্যাণ ও অকল্যাণ বিষয়ে আক্বীদাহ কেমন থাকা দরকার? by: হুজাইফা (১ম পর্ব)

    بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيم
    সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লহর (আরবী উচ্চারণ অনুসারে) জন্য যিনি মানব জাতির জন্য পথ নির্দেশিকার ব্যবস্থা করেছেন। স্বলাত ও সালাম বর্ষিত হোক এই উম্মতের শিক্ষক, আল্লহর বান্দা ও তার রসূল মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি। ইসলামের প্রথম *যুগ থেকে এখন পর্যন্ত যত ঈমানদার ভাই ও বোন সঠিক আক্বীদাহ ধারণ করে ছিলেন ও আছেন যারা প্রতিকূল অবস্থাতেও সঠিক আক্বীদাহ ও দ্বীন ত্যাগ করেননি আল্লহ তাদেরকে ক্ষমা করে তদের মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দিন, আর আমাদেরকেও সঠিক আক্বীদাহ ধারণ করত তার দ্বীনের পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।
    কল্যাণ ও অকল্যান বিষয়ে আক্বীদাহ কেমন থাকা দরকার?
    মানুষের জীবনে ভাল মন্দের আবর্তন চলতে থাকে, কখনো সুখের মুহুর্ত আবার কখনো দুঃখের মুহুর্ত, আর অবস্থা পরিবর্তনের এই পর্যায়গুলোতে আদম সন্তানদের বিভিন্নজন থেকে বিভিন্ন রকম বহিঃপ্রকাশ ঘটে-কেউ সুখের মুহুর্তে আনন্দে উল্লাসিত হয়ে উঠে, ভাল কিছু পেলে সেটাকে নিজস্ব প্রচেষ্ঠায় অর্জন বলে, অনেকে নিজের বুদ্ধি বিচক্ষনতার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে থাকে, এ করেছি সে করেছি এসব বলে নিজের কর্মকান্ডের প্রশংসা জাহির করে অথবা তাকে যে সহযোগিতা করেছে তার প্রশংসায় ডুবে থাকে।
    অথচ অতীত জীবনের সমস্ত কর্মকান্ডের রেকর্ড যাচাই করলে দেখা যাবে কত পরিকল্পিত কর্মে সেই ব্যক্তি সফলতা পেতে উপায়, উপকরণ, বুদ্ধি, বিচক্ষণতাকে সর্বোচ্চ হারে প্রয়োগ করেছিল আর নির্বোধ ব্যতিত কেউ-ই তার পরিকল্পনায় সফলতা পেতে কম করে না এরপর ও সেই ব্যক্তি সফলতার মুখ দেখেতে পায়নি, সকল ক্ষেত্রেই সফলতার সাক্ষাত হয় না। আবার হেরে গিয়ে অনেকে অভিজ্ঞতা স্মরণে রেখে এসব অভিজ্ঞতাকে পরবর্তীতে কাজে লাগিয়ে ও অনেকে তার পরিকল্পিত কর্মে সফলতা পায় না দেখা যায় পরিকল্পিত কর্মে অগ্রসর হয়েছে বটে কিন্তু নতুন আর এক ভুলের সম্মুখীন হয়েছে। আবার অনেকে খুব সহজে তার পরিকল্পিত কর্মে সফলতা পেয়ে যায়।
    [বি.দ্র: আল্লহ, রসূলুল্লহ, স্বহাবা এরকম বানানগুলি আরবী ভাষার উচ্চারণের সাথে সঙ্গতি রেখে *নির্ধারণ করা হয়েছে]
    যে ব্যক্তি পরিকল্পিত কর্মে সফলতা লাভ করে আত্ম প্রশংসায় লিপ্ত বা ব্যক্তি, বস্তু, উপায়, উপকরণ, বিচক্ষণতার প্রশংসায় লিপ্ত তার উচিত যে পরাক্রমশালী আল্লহ তাকে মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, *বুদ্ধি-বিচক্ষণতা দান করেছেন, ভাল কাজ করার তওফিক দান করেছেন, এমনকি সফলতাও দান করেছেন আর এ সফলতার পিছনে যত সাজ-সজ্জা, উপযোগী সময়, সুযোগ এবং উপযোগী পরিবেশের ব্যবস্থা যিনি করেছেন আরও যা লাগে এ সবকিছু যিনি দান করেছেন সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক সেই আল্লহর জন্য নির্ধারিত করা, এতে কারো জন্য কোন অংশিদার বা ভাগ সাব্যস্ত না করা। একেবারে পুরো প্রশংসাই অংশিদার মুক্ত আল্লহর জন্য নির্ধারণ করা।
    আর অপর পক্ষ যে বা যারা বিপদ্গ্রস্ত বা কোন কাজে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তাদের অনেককে দেখা যায় শয়তানের কুচক্রে পরে আল্লহর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে থাকে, অন্যরা কৃতকার্য হল আর সে বিভন্ন সমস্যায়/সংকটে পরে আছে কাজে/কর্মে সফলতা পাচ্ছেনা? তার মাঝে এমন অবস্থা বিরাজ করে মনে হয় যেন অন্যায়ভাবে এই বিফলতাকে তার উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, সর্ব অবস্থায় আল্লহর শুকরিয়া আদায় তো দূরেরকথা এমনকি ছোট খাট বিষয়কে কেন্দ্র করেও অনেকের মাঝে (ছোট খাট সফলতা) না পাওয়ার চরম অসন্তুষ্টি বিরাজ করে মনে হয় যেন বিফলতাকে বা সমস্যাকে তার উপর জুলুম করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আসুন কল্যাণ ও অকল্যাণ বিষয়ে আমাদের আক্বীদাহ কেমন হওয়া দারকার তা জেনে নেই মানবজাতির জন্য হিদায়াত গ্রন্থ আলকুরআন ও সহীহ হাদিস থেকে..

    কল্যাণ এবং অকল্যাণ উভয়ই আল্লহর পক্ষ থেকেঃ
    কল্যান এবং অকল্যাণ দুটিই আল্লহর পক্ষ থেকে আসে, অনুগ্রহ বা নিয়ামত দাতা যিনি বান্দার মন্দ কর্মের শাস্তি দাতাও তিনি।
    এ ব্যাপারে মহাদাতা ও দয়ালু আল্লহ তার কিতাবে বলেন,
    أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِككُّمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنتُمْ فِي بُرُوجٍ مُّشَيَّدَةٍ ۗ وَإِن تُصِبْهُمْ حَسَنَةٌ يَقُولُوا هَٰذِهِ مِنْ عِندِ اللَّهِ ۖ وَإِن تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ يَقُولُوا هَٰذِهِ مِنْ عِندِكَ ۚ قُلْ كُلٌّ مِّنْ عِندِ اللَّهِ ۖ فَمَالِ هَٰؤُلَاءِ الْقَوْمِ لَا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ حَدِيثًا [٤:٧٨]
    তোমরা যেখানেই থাক মৃত্যু তোমাদেরকে পেয়ে যাবে, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান কর; এবং যদি তাদের উপর কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হয় তবে বলেঃ এটা আল্লহর নিকট হতে এবং যদি তাদের প্রতি অমঙ্গল নিপতিত হয় তবে বলে যে, এটা তোমার (রসূল) নিকট হতে হয়েছে, তুমি বলঃ সবকিছুই আল্লহর নিকট হতে হয়; অতএব ঐ সম্প্রদায়ের কী হয়েছে যে, তারা কোন কথা যেন বুঝতেই চায় না। (সূরা আন-নিসা ৪:৭৮)
    বদরের যুদ্ধের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল কুরআনে আল্লহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
    إِذْ يُوحِي رَبُّكَ إِلَى الْمَلَائِكَةِ أَنِّي مَعَكُمْ فَثَبِّتُوا الَّذِينَ آمَنُوا ۚ سَأُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُوا الرُّعْبَ فَاضْرِبُوا فَوْقَ الْأَعْنَاقِ وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ [٨:١٢]

    (আর ঐ সময়ের কথা স্মরণ কর) যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের নিকট প্রত্যাদেশ করলেন, আমি তোমাদের সাথে আছি, সুতরাং তোমরা ঈমানদারদের সঙ্গে থেকে শক্তি বৃদ্ধি করো, তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত ও অবিচল রাখো, আর যারা কাফির, আমি তাদের হৃদয়ে ভীতি সৃষ্টি করে দেবো, অতএব তোমরা তাদের ঘাড়ে আঘাত হানো, আর আঘাত হানো তাদের আঙ্গুলিসমূহের প্রতিটি জোড়ায় জোড়ায়। (সূরা আনফাল ৮:১২)

    সূরা তাগাবুনে আল্লহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আরও বলেন,
    مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ وَمَن يُؤْمِن بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ ۚ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ [٦٤:١١]
    অর্থঃ আল্লহর অনুমতি ব্যতীত কোন বিপদই আপতিত হয় না এবং যে আল্লহকে বিশ্বাস করে তিনি তার অন্তরকে সুপথে পরিচালিত করেন। আল্লহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা তাগাবুন ৬৪:১১)

    উপরে উল্লিখিত আয়াত সমূহ থেকে স্পষ্ট যে, ভাল ও মন্দ উভয়েই আল্লহর পক্ষ থেকে, তিনি যেমন সৎকর্মপরায়ণদেরকে সাহায্য করেন একই সাথে তিনি অপরাধীদেরকেও শাস্তি প্রদান করেন। আল্লহর অনুমতির বাইরে কোন বিপদ কাউকে কখনও স্পর্শ করে না।
    কল্যান এবং অকল্যাণ দুটিই আল্লহর পক্ষ থেকে,
    আল্লহর পক্ষ থেকে কল্যাণ ছাড়া আর কোন কল্যাণ নেই এবং আল্লহর পক্ষ থেকে অনিষ্ট ছাড়া আর কোন অনিষ্ট নেই।

    বান্দা ভাল যা কিছু পায় তা তার রবের অনুগ্রহ এটা বান্দার নিজস্ব অর্জন নয়ঃ
    বান্দা যত কল্যাণকর বা ভাল কিছু পায় এসব আল্লহর পক্ষ থেকে অনুগ্রহ, আমাদের আদি পিতা আদম (আঃ) জান্নাতে থাকা অবস্থায় অপরাধ করার পর যখন আল্লহর কাছে তওবা করলেন এবং আল্লহ তার অপরাধ ক্ষমা করলেন, তাওবা করার ঠিক পূর্বে তিনি যে সকল কথা শিখেছিলেন এসবও মহান আল্লহ দয়া করে তাকে শিখিয়ে দিয়েছেন।
    আদম (আঃ) এর ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল্লহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,
    فَتَلَقَّىٰ آدَمُ مِن رَّبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ [٢:٣٧]
    অনন্তর আদম স্বীয় প্রতিপালক হতে কতিপয় বাক্য শিক্ষা করলেন, আল্লহ তখন তার তাওবা কবূল করে তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (সূরা বাক্বরহ ২:৩৭)

    ইউসুফ (আঃ) এর কথাকে স্মরন করিয়ে দিয়ে আলকুরআনে এসেছে,
    رَبِّ قَدْ آتَيْتَنِي مِنَ الْمُلْكِ وَعَلَّمْتَنِي مِن تَأْوِيلِ الْأَحَادِيثِ ۚ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَنتَ وَلِيِّي فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ۖ تَوَفَّنِي مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِي بِالصَّالِحِينَ [١٢:١٠١]
    [ইউসুফ (আঃ) বলেন] হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে রাজ্য দান করেছেন এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়েছেন; হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা! আপনিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক, আপনি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দান করুন, এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন। (সুরা ইউসুফ ১২:১০১)

    সমস্ত নবীগণ নবুওয়াত পেয়েছেন আল্লহর অনুগ্রহে, এমন কি তাদেরকে যে জ্ঞান ও রাজত্ব দেয়া হয়েছে এটাও আল্লহর অনুগ্রহ, কেউ নবী হওয়ার পূর্বে একবার আবেদনও করেননাই যে, আল্লহ আমাকে নবুওয়াত দাও। এটা আল্লহর অনুগ্রহ এটা তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে দান করবেন।

    এমনকি উম্মতে মুহাম্মাদী যে তাদের মাঝে একজন রসূল পেয়েছেন এটাও আল্লহর অনুগ্রহ, এ ব্যাপারে আল্লহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সূরা আলে ইমরানে বলেন,
    لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ [٣:١٦٤]
    নিশ্চয়ই আল্লহ বিশ্বাসীগণের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের নিজেদেরই মধ্য হতে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তদের নিকট তার নিদর্শনাবলী (আয়াতসমুহ) পাঠ করেন এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দান করেন এবং নিশ্চয়ই তারা এর পূর্বে প্রকাশ্য ভ্রান্তির মধ্যে ছিল। (সূরা আলে ইমরান ৩:১৬৪)

    আমরা উত্তম, ভাল, কল্যাণকর যা কিছু পাই এ সবকিছু আল্লহর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারটি আল্লহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়ে বলেন,
    مَّا أَصَابَكَ مِنْ حَسَنَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ۖ وَمَا أَصَابَكَ مِن سَيِّئَةٍ فَمِن نَّفْسِكَ ۚ وَأَرْسَلْنَاكَ لِلنَّاسِ رَسُولًا ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا [٤:٧٩]

    তোমার নিকট যে কল্যাণ উপস্থিত হয় তা আল্লহর পক্ষ থেকে এবং তোমার উপর যে অমঙ্গল নিপতিত হয় তা তোমার নিজ হতে হয়ে থাকে; এবং আমি তোমাকে মানব মন্ডলীর জন্যে রাসূলরূপে প্রেরণ করেছি; আর আল্লহ’ই সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট। (সূরা আন-নিসা ৪:৭৯)

    শাকেরীন, সফলকাম তথা জান্নাতী, আল্লহর সন্তুষ্টি যারা লাভ করেছেন আল্লহর এরূপ বান্দারা জান্নাতে পৌছেও জাহান্নামীদের দিকে তাকিয়ে ঘোষণা করবেন, আমার প্রতি আল্লহর অনুগ্রহ না থাকলে আমিও জাহান্নামীদের মধ্যে শামিল হতাম, তারা দুনিয়াতে যেমন শাকেরীন পরকালেও তেমন এবং তাদের ঘোষণা হচ্ছে আমি যে জান্নাতে পৌছেছি এটাও আল্লহর অনুগ্রহে, এটাকে তারা নিজস্ব প্রচেষ্ঠায় অর্জন বলে ঘোষণা করবেননা ।

    মহাদাতা আল্লহ তাদের কথা উল্লেখ করে বলেন,

    وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّي لَكُنتُ مِنَ الْمُحْضَرِينَ [٣٧:٥٧]
    (জান্নাতিদের কথা) আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ না থাকলে আমিও তো (জাহান্নামে) আটক ব্যক্তিদের মধ্যে শামিল হতাম। (সূরা স-ফ্ফা-ত ৩৭:৫৭)

    উল্লিখিত আয়াত সমূহ থেকে স্পষ্ট যে, বান্দা যা ভাল কিছু পায় এসব আল্লহর অনু্গ্রহেই পায়, এসব সে তার নিজস্ব প্রচেষ্টায় অর্জন করেছে এমনটি নয়। বরং শাকেরীনদের বিশ্বাস হচ্ছে, সমস্ত ভাল কর্ম আল্লহর অনুগ্রহেই সম্পাদিত হয়।
    একটি শিক্ষণীয় ঘটনাঃ
    কারূন ছিল মূসা (আঃ) এর সম্প্রদায়ভুক্ত; তাকে আল্লহ বিশাল ধন-ভান্ডার দান করেছিলেন, *যার চাবিগুলো বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল, সে আল্লহর শাস্তির কবলে পরে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, অনেকের কাছে এ বিষয়টি জানা কিন্তু সে কি অপরাধের কারনে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, এটা কিন্তু অনেকের ই অজানা, আসুন এ বিষয়টি আল কুরআন থেকে জেনে নেই, “তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল- দম্ভ করোনা, নিশ্চয়ই আল্লহ দাম্বিকদেরকে পছন্দ করেননা। আল্লহ যা তোমাকে দিয়েছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান কর। আর দুনিয়া হতে তোমার অংশ ভুলো না এবং পরোপকার কর যেমন আল্লহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, আর পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চেয়ো না । নিশ্চয়ই আল্লহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে ভালবাসেন না।” (সূরা ক্বসাস ২৮:৭৬,৭৭) এ কথাগুলোর উত্তরে সে যা বলেছিল এটাই ছিল তার অপরাধ, আর সে হয়েছিল আল্লহর অনুগ্রকে অস্বীকরাকারী কাফুর।
    সে যা বলেছিল সে কথাগুলো উল্লেখ করে সূরা ক্বসাসে ন্যায় বিচারক আল্লহ বলেন,

    قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَىٰ عِلْمٍ عِندِي ۚ أَوَلَمْ يَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَهْلَكَ مِن قَبْلِهِ مِنَ الْقُرُونِ مَنْ هُوَ أَشَدُّ مِنْهُ قُوَّةً وَأَكْثَرُ جَمْعًا ۚ وَلَا يُسْأَلُ عَن ذُنُوبِهِمُ الْمُجْرِمُونَ [٢٨:٧٨]
    সে (কারুন) বললোঃ এই সম্পদ আমি আমার জ্ঞান বলে প্রাপ্ত হয়েছি। সে কি জানতো না যে, আল্লহ তার পূর্বে ধ্বংস করেছেন বহু মানব গোষ্ঠীকে যারা তার চেয়ে শক্তিতে ছিল প্রবল, সম্পদে ছিল প্রাচুর্যশালী? আর অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না (সূরা ক্বসাস ২৮:৭৮)

    ‘এই সম্পদ আমি আমার জ্ঞান বলে প্রাপ্ত হয়েছি’

    এই কাথাটি বলাই ছিল তার চরম অপরাধ। এ কথা বলার মাধ্যমে, সে আল্লহর অনু্গ্রহকে অস্বীকার করেছে, সে যে বিশাল জাগতিক সম্পদের মালিক তা যে আল্লহর অনুগ্রহে সে প্রাপ্ত হয়েছে এটাকে সে অস্বীকার করেছে।

  • #2
    মাশা আল্লাহ, উপকারী পোস্ট।
    বারাকাল্লাহু ফি ইলমকিা ওয়া আমালিক।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ, আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভাল লাগল ভাই। জাযাকাল্লাহ
      এমন পোস্ট আরো দরকার। যা আমাদের ঈমান-আকীদাকে বিশুদ্ধ করবে।
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment

      Working...
      X