Announcement

Collapse
No announcement yet.

মন থেকে কিছু কথা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মন থেকে কিছু কথা



    إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُهُ ونستغفره ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلَا مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَا هَادِيَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ


    আজ মনের একান্ত কিছু খেয়াল এর কথা শেয়ার করি ইনশা আল্লাহ। আল্লাহর কাছেই সাহায্য, তাউফিক এবং কল্যাণ কামনা করি।

    যেসব প্রশ্ন মাঝে মাঝেই আমার মাথায় আসে তার মধ্যে কমন একটা প্রশ্ন হচ্ছে - কেন? এই কেন দিয়ে আসলে আরো অনেক প্রশ্ন আসে। যেমন, কেন আমরা আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে পারছি না? কেন মুসলিম উম্মাহ'র দুর্দশাগুলো দূর হয়ে যাচ্ছে না? কেন মুল ধারার অধিকাংশ আলিমগণ উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কথাগুলো বলছেন না? এরকম অনেক অনেক কেন? এ প্রশ্নগুলো থেকে যা আমি শেখার তাউফিক পেলাম তা হচ্ছে, অধিকাংশ সময়েই আমাদের -

    ক। যথার্থ ইলম (জ্ঞান) থাকেনা।
    খ। ইলম যা থাকে তার হিকমাহ (প্রায়োগিক বুঝ, উপলব্ধি) থাকে না।


    এই দুইটি বিষয় আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় নিয়ামত। যদিও বা ইলম কারো অর্জনে চলেও আসে হিকমাহ শুধুমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই। আল্লাহ নবি রাসূলগনের ব্যাপারে বলেছেন আমি তাকে ইলম এবং হিকমাহ দান করেছি। তাই এই বিষয় দুটি আমাদের জন্য খুব জরুরী এবং আল্লাহর কাছে এর জন্য দুয়া জারি রাখা জরুরী। ইলম এর পরিধি অনেক ব্যাপক। ইলম হতে পারে আমার আপনার "জুতা কিভাবে পরতে হবে" সে ব্যাপারে, আবার হতে পারে "মিরাস" এর ব্যাপারে। একটি মনে হতে পারে খুব তুচ্ছ। আরেকটি মনে হতে পারে অনেক বড়! ইলম অর্জন বলতে আমরা সাধারণত কেন জানি বিশাল বড় বড় বিষয়গুলোর ব্যাপারে ইলম অর্জনকেই বুঝে থাকি, যা ভুল নয়। আমি সাথে একটু যুক্ত করে নিতে চাচ্ছি, তা হচ্ছে ডান হাতে খানা খাওয়া সুন্নাত এটি জানাও ইলম। ইলম তার পূর্ণতা পায় আমলের দ্বারা। যে লোক অনর্থক কথা বলে তার সাথে তর্কে না জড়িয়ে যাওয়া ও ইলম এবং আবারো, ইলম তার পূর্ণতা পায় আমল এবং ইখলাস এর দ্বারা।

    একইভাবে, ইসলাম হচ্ছে বাস্তবমূখী, জীবনধর্মী একটি ধর্ম। এমনকি আমাদের অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, "ধর্ম" শব্দটা উচ্চারিত হবার সাথে সাথে আমাদের মাথায় এর ভিন্ন এক রূপ চলে আসে। ধর্ম শব্দটি উচ্চারিত হবার সাথে সাথে মনে হয়, নামাজ, রোজা, হজ্জ, তিলাওয়াত, সাদাকাহ এই সব। যা ধর্মের অন্তর্ভুক্ত কিন্তু পুরা ধর্ম নয়। একইসাথে, মুসলিমদের ধর্ম, হিন্দুদের ধর্ম, সব গুলোই ধর্ম! আমাদের মধ্যেই কিছু আছেন যারা ধর্ম বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, আবার কেউ আছেন দ্বীন বলতে পছন্দ করেন। যদিও তারা ধর্ম এবং দ্বীন দ্বারা একই জিনিষকে বুঝিয়ে থাকেন তবুও এই পার্থক্য শুধু শব্দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং - সামান্য এই শব্দের হেরফের তাদের অবস্থানের ক্ষেত্রে বেশ বড় রকমের পরিবর্তন নিয়ে আসে। পরিহাসের কথা এই যে, ধর্ম শব্দটার ভিতরেই অর্থগতভাবে এমন ভাব ঢুকিয়ে দেয়া আছে যা অন্য "ধর্ম" গুলোকেও ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়। অর্থাৎ সেগুলোও ধর্ম! আমাদের জন্য ধর্ম শব্দটির সবচেয়ে সুন্দর ব্যাখ্যা আসলে - "দ্বীন" যে কোন কারণেই হোক ধর্ম শব্দটি যেভাবে আমাদের নিয়ে খেলতে পারে দ্বীন শব্দটি ঠিক তেমন নয়। যারা দ্বীন ব্যবহার করেন তারা ধর্ম এবং দ্বীন দু’টি অর্থই বুঝেন এবং জানেন যে, ধর্ম অপেক্ষা দ্বীন অধিক মানানসই এবং দ্বীন দ্বারা এর ভিত্তিগত অধিক প্রকাশ পায়, যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নিজে বলেছেন "আদ দ্বীন"। অপরদিকে যারা ধর্ম ব্যবহার করেন - তাদের সামনে ধর্ম বলতে শুধু ততটুকুই বুঝেন যতটুকু অর্থ তাদের সামনে ধর্মের নাম দিয়ে বুঝানো হয়, উপস্থাপন করানো হয়। অধিকাংশ সময়েই আশা করা ঠিক হবে না যে, তারা দ্বীন শব্দটির প্রকৃত অর্থ বুঝবেন! যেমন, যখন বুঝানো হবে দ্বীন - তখন কেউ বলবে না হিন্দুদের দ্বীন, বৌদ্ধদের দ্বীন। কারন ধর্ম শব্দটির যেমন একটি অদেখা প্রভাব আছে যার দ্বারা সে হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্মকে শামিল করে নিতে পারে, একাকার করে দিতে পারে, সন্দেহের দাগগুলো এলোমেলো করে দিতে পারে, তেমনিভাবে দ্বীন শব্দটির ও একটি অদেখা প্রভাব আছে, তা হচ্ছে দ্বীন, শুধুমাত্র দ্বীন ব্যতিত আর সকল মতবাদকে বাতিল করে দেয়! কারণ দ্বীন হিসেবে আল্লাহ ইসলামকে মনোনীত করে দিয়ে দ্বীন শব্দের অর্থকে প্রচন্ড শক্তিশালী করে দিয়েছেন!

    [এ কথাগুলো আমি কোন প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছি না বরং, প্রাত্যহিক ঘটনা থেকে পর্যবেক্ষণের জন্য একতি উদাহরণ হিসেবে নিয়ে উপস্থাপন করেছি, এগুলোর ব্যতিক্রমও সম্ভব]

    সামান্য একটি শব্দের ব্যাপারে জানার এদিক সেদিক হবার কারণে কোন একজন ব্যক্তির অবস্থান ও কতখানি এদিক সেদিক হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে! এবার তাহলে আমরা ভেবে দেখতে পারি আমাদের প্রতিদিনের জিন্দেগিতে সকল কাজ, ঘটনাগুলোর ব্যাপারে আমাদের অবস্থান কেমন! সে ব্যাপারে আমাদের ইলম এবং বুঝের অবস্থান কেমন! এবং আমাদের আমল ও ইখলাসের অবস্থান কেমন!

    আর একটি উদাহরণ আনতে চাচ্ছি। এমন দুই ব্যক্তির কথা আমরা চিন্তা করি, যাদের একজন আল্লাহর ব্যাপারে, তাওহিদের ব্যাপারে স্পষ্ট জ্ঞান রাখেন। যিনি আল্লাহর ব্যাপারে জানেন। অপরজন, যিনিও আল্লাহর ব্যাপারে জানেন কিন্তু তার এই জানা পূর্ণ নয়, তিনি তাওহিদ এর ব্যাপারে কোন স্পষ্ট ধারনাই রাখেন না। এমন দুই ব্যক্তির সামনে যদি মুসিবত আসে একজন হা হুতাশ শুরু করবে, এর ওর কছে ধর্না দেয়া শুরু করবে, অন্যের কাছে নিজেকে বিক্রি করে দেয়ার ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে থাকবে, এবং মুসিবতকে তার উপরে আরোপিত বিপদ, এবং জুলুম হিসবে দেখবে, সে বিভিন্ন জনকে দোষারোপ করবে, ঝগড়া ফাসাদ করবে। এভাবে বিপদের মাত্রা বুঝে তার অস্থিরতা শুধু বাড়তেই থাকবে, সময়ের সাথে সাথে তার ফাসাদ শুধু বাড়তেই থাকবে। অপরদিকে যিনি আল্লাহ এবং তাওহিদ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা রাখেন, তার অবস্থা হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন! তিনি মোটেও হতাশ হবেন না, বরং সবর করবেন। তিনি নিজেকে আরো সতর্কতার সাথে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে দিবেন, নিজেকে বিনয়ী রাখার চেস্টা করবেন, আল্লাহকে আরো বেশী বেশী খুশি করার চেস্টা করবেন, দান সাদাকা করতে চেস্টা করবেন।

    কি আমূল পরিবর্তন তাই না! আচ্ছা, কখনো কি ভেবে দেখেছি শুধুমাত্র এই একটি শিক্ষাই আমাদের সমাজকে কতখানি পরিবর্তন করে দিতে পারত! শুধুমাত্র তাওহিদের শিক্ষা যদি আমাদের থাকত! সমাজের এমন কোন ফাসাদ নাই, যে ফাসাদ তাওহিদের শিক্ষার সামনে ভীত না হয়ে পারে!

    তাহলে ফাঁকটা কোন জায়গায়? কোন জায়গায় আমরা ভুল করে ফেলছি? কোন জায়গায় আমরা নজর দিতে ভুলে যাচ্ছি? কি মিস হয়ে যাচ্ছে? রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং বলে একটা কথা আছে। যখন কোন বিষয়ের শুরুটা পরিষ্কার বুঝা যায় না, তখন তার শেষ থেকে উলটা দিকে সতর্কতার সাথে যাওয়া শুরু হয়। এভাবে সুনির্দিষ্ট "শুরুটা" খুঁজে বের করা হয়। আমরাও যদি এভাবে উলটা দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো আমাদের মাঝে বিশাল বড় একটা শূন্যতা রয়েছে তা হচ্ছে - "ইলম" তবে কেন আমরা এই শূন্যতা সেভাবে ধরতে পারি না? এর কারণ আমরা কখনো এই শূন্যতা অনুভবই করি না।

    যদি একটু ব্যাখ্যা করতে চাই তাহলে - ফিতরাতগতভাবে আমাদের অন্তরকে আল্লাহর দিকে রুজু করে রাখা হয়েছে। এই অন্তর শুধু আল্লাহকেই চিনে। এই অন্তর শুধুমাত্র আল্লাহ এবং আল্লাহর পবিত্র কথা দ্বারা শান্ত হয়! সুবহান আল্লাহ! এত গেলো ফিতরাতের কথা। কিন্তু যখন আমরা বড় হলাম আর সাথে শুরু হল বিশাল, প্রায় অকল্পনীয় এক দাজ্জালি, ফেরাউনিক এক শয়তানি সিস্টেম যার ভিতরে আমরা বাস করি, বেঁচে থাকি, তখন ফিতরাতের উপরে ইলম এর আলো পড়ার আগেই কলুষতার কালো দাগ পড়তে থাকে। ফিতরাত বিকশিত হবার আগেই জাহেলিয়াত বিকশিত হতে শুরু করে। এই জায়গায় আমরা সময় নিয়ে একটু ভেবে দেখতে পারি ইনশা আল্লাহ। কারণ, এই সেই জায়গা যেখান থেকে আমরা কালো স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছি। স্রোতে হারিয়ে যাবার পরে কিংবা স্রোতের তোড়ে ভেসে যেতে যেতে - কেন? কেন? কেন? করে প্রশ্ন করলে কোন ফায়দা হবে না! স্রোত টান মারার আগেই প্রশ্নগুলো করতে হবে, সচেতন হতে হবে, জানতে হবে, দুনিয়া কি? আমি কেন দুনিয়ায়? আমার ধরন কি? দুনিয়ার ধরন কি? এ ব্যাপারে আমার সমাধান কি? কর্মপন্থা কি? সেটা কোথায়? আপাতভাবে কথাগুলো মনে হতে পারে - আরেহ! বাস্তবতা বিবর্জিত! তাই কি হয় নাকি? আমি অস্বীকার করব না। মনে হতে পারে, কারণ এর সাথে আমরা অভ্যস্ত নই। অর্থাৎ, আমরা দুনিয়ার বুকে হড়হড় করে নেমে যাচ্ছি এটা না জেনেই, দুনিয়া কি? আমি কি? আমার এবং দুনিয়ার মাঝে সম্পর্ক কি? এই ব্যাপারে পথনির্দেশিকা কোথায় আছে? এক, আমরা তো জানিইনা, এর উপরে আমরা একটা শয়তানি সিস্টেমের শেখানো ভ্রান্ত পথনির্দেশিকা নিয়ে নেমে যাচ্ছি।

    অনেকদিন পরে আমরা যখন ধর্ম এবং দ্বীন এর মধ্যে বিস্তর ব্যবধান দেখতে পাই তখন খুব তাজ্জব হয়ে যাই, কারণ আমরা তো জানি ধর্ম ই দ্বীন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যারা দ্বীন বলতে দ্বীন বুঝাচ্ছেন, সেই দ্বীন তো আমার ধর্ম না কিংবা আমার ধর্ম তো ঠিক তাদের দ্বীনের মত না! আরে বিস্ময়! খেলা কোথায় ঘটে গেল!

    ঐ সেদিন, যেদিন আমরা হড় হড় করে দুনিয়ার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম! না তাকিয়ে আমাদের পেছনের দিকে। একটু সময় নেইনি, বিরতি নেইনি, মুলধারা থেকে বেরিয়ে এসে কিনারে দাঁড়িয়ে আমি একবার ভাবিনি - আমি কে? কেন এখানে? কি উদ্দেশ্যে? দুনিয়ার সাথে আমার সম্পর্ক কি? অস্বীকার করতে পারবো কি, প্রতিটি নবি-রাসূল আমাদেরকে এই প্রশ্নগুলোরই উত্তর দিয়েছেন, পরিষ্কার করে জানিয়েছেন!

    এখন কি তাহলে প্রথমে বাস্তবতা বিবর্জিত প্রশ্নগুলো বেশ ওজনের মনে হচ্ছে! আচ্ছা, আরো একটু যাচাই করে দেখি ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ যখন আদাম আঃ কে দুনিয়াতে নামিয়ে দেয়ার আদেশ শুনালেন, তখন আর কি বললেন? -

    قُلْنَا اهْبِطُواْ مِنْهَا جَمِيعاً فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدًى فَمَن تَبِعَ هُدَايَ فَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ

    আমি আদেশ করলাম, তোমরা সকলেই এখান হতে নেমে যাও, পরে যখন আমার নিকট হতে তোমাদের কাছে সৎপথের নির্দেশ আসবে তখন যারা তার অনুসরণ করবে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। [বাকারাহঃ ৩৮]


    সুবহানআল্লাহ! আমরা দেখি সেই শুরু সময়ে, আল্লাহ আদাম আঃ কে দুনিয়াতে নামিয়ে দিবেন এবং জানিয়ে দিচ্ছেন, যে জায়গায় যাচ্ছো সেখানে চলার ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে নির্দেশনা আসবে, এবং যে তা মেনে চলবে তার জন্য কোন ভয় নেই! এবং সেই থেকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত এই সিলসিলাই জারি ছিলো আর আমাদের জন্য আল্লাহ বড় অনুগ্রহ করে কুরআনকে সংরক্ষন করে দিলেন! কিন্তু আমরা!

    এ ব্যাপারে আসলে জানিই না!

    খুব সম্ভব এভাবেই জীবন শুরু করার সাথে সাথেই আমাদের সাথে সত্য পথের দূরত্ব শুধু বাড়তেই থাকে। তাই চলার পথে যদি কখনো হক্কের সাথে পরিচয় হয়েও যায় আমরা হক্ককে চিনতে পারি না। ভাবতে থাকি আচ্ছা এটা আবার কি! দেখতে তো হক্কের মতই লাগে কিন্তু বাস্তবে তো মনে হচ্ছে উগ্রবাদ! আবার চোখ বন্ধ করে গা ভাসিয়ে দেই! এভাবে ভাসতে থাকি আর প্রশ্ন করতে থাকি- কেন রে? হচ্ছে না কেন?

    ধর্ষণ কমেনা কেন?
    দুর্নীতি কমেনা কেন?
    জালিমের জুলুম কমেনা কেন?


    এমন আরো কতশত কেন? আমরা আশা করি এগুলো ঠিক হয়ে যাবে কারণ আমরা তো ধর্মের উপরেই আছি, কিন্তু জানি না ধর্মের সাথে দ্বীনের বিস্তর ফারাক হয়ে গেছে! এরপরে ব্যর্থ কাপুরুষের মত কখনো এমনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি আরে এসব ধর্ম টর্ম কিছু না! সবকিছু বিজ্ঞান! কিন্তু যে প্যাচ লেগে যায় তা দিন দিন শুধু বাড়তেই থাকে, কমেনা।

    এভাবে যারা এখনও পুরাপুরি নিমজ্জিত হয়ে যায়নি তাদের ঈমান বা ফিতরাতের শেষ বিন্দুটুকু মাঝে মাঝে একটু জ্বলে উঠে আর তারা চমকিত হয়! আরে! এটা কি ছিল! কিন্তু ঐ চমককে স্ফুলিঙ্গ আর স্ফুলিঙ্গকে আলোতে পরিণত করা আর হয়ে উঠে না। কারণ, কে তাকে সহায়তা দিবে! সেই নূর বা হেদায়েতের পরিচয়ই তো আমরা জানি না, আর তা হচ্ছে কুরআন!

    কুরআন?
    - হ্যাঁ কুরআন।
    কুরআনের মধ্যেই আছে এর সকল সমাধান?
    - হ্যাঁ ঠিক তাই।
    তাহলে আমি এতদিন কোথায় ছিলাম?
    - স্রোতে ভেসে ছিলাম।
    কেউ আমাকে বললো না কেন?
    - বলেছে অনেকেই কিন্তু কাজ হয়নি।
    কেন হয়নি?
    - কারণ কাজ হবার জন্য নূন্যতম যা থাকা দরকার তা ছিল না।
    তাহলে আমি স্রোতে ভেসে যাবার আগেই কেউ আমাকে জানালো না কেন? আমাকে থামালো না কেন?
    - হ্যাঁ, এটা একটা ভালো প্রশ্ন!

    প্রিয় ভাই, আমি চেস্টা করছি সেইদিক গুলো সামনে নিয়ে আসতে যা আমরা ভাবি না। কিন্তু হয়ত আমাদের ভাবা জরুরী, সেই ভাবে চিন্তা করি না যেভাবে চিন্তা করা জরুরী, সেই ভাবে দেখি না যেভাবে দেখা জরুরী।

    আমি শেষ কথাগুলো বলতে চাচ্ছি এভাবে যে, আমাদের থামা দরকার। আমাদের নতুনভাবে ভাবা দরকার সময় নিয়ে হলেও। এবং আমাদের আগে বুঝা দরকার আমাদের অবস্থানটা কোন জায়গায়? এবং এর কোনটাই ইলম ছাড়া হবে না। আগে যেমন বললাম ইলম অর্থ শুধু এই হবে না যে, বিশাল বিশাল কিতাবের উপরে দখল বরং আমার রব্ব - আল্লাহ এটি ও ইলম, জানার জন্য সর্বপ্রথম, সবচেয়ে জরুরী ইলম।

    তাই আমাদের উপরে দায়িত্ব এই যে, আমরা নিজেরা এবং আমাদের পরের প্রজন্মকে ইনশাআল্লাহ এভাবে গড়ে তোলার চেস্টা করব। আমাদের জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য অনেক ব্যাপক, অনেক মহৎ, অনেক উচ্চ! আমি অধম এটি ব্যাখ্যা করার সামর্থ্য রাখি না। একজন বিশ্বাসীর প্রতিটি নিঃশ্বাস, ঈমানের নিঃশ্বাস, যা তাকে মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আরো কাছে নিয়ে যায়, অনন্ত জীবনের পূর্ণ সফলতার আরো কাছে নিয়ে যায়। একজন বিশ্বাসীর জীবন এমন যে, সে বেঁচে থাকে প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর সাথে সম্পর্কের তালাশে আর মৃত্যুর পরে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়! এটিই স্রষ্টা এবং বান্দার মধ্যে একমাত্র সফলতার সংজ্ঞা!

    আর এর বাইরে একজন অবিশ্বাসী, কিংবা ভ্রান্ত পথে চলে যাওয়া কেউ তার জন্য শুধু অনিশ্চয়তা, বিপদ আর ধ্বংস!

    আর এই মহা সফলতার জন্য আমাদের একমাত্র অবলম্বন আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়েত!

    তাই আমরা যত্নবান হব ইনশা আল্লাহ এই ব্যাপারে - ইলম, আমাল এবং ইখলাস।

    নিশ্চয়ই কল্যাণ এবং হেদায়েত আল্লাহর পক্ষ থেকেই।

    سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ ، أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 10-17-2020, 11:03 AM.
    মিডিয়া জিহাদের অর্ধেক কিংবা তারও বেশি

  • #2
    আমার ঈমানের একটি [[ অবস্থা]]
    আমি খুব করে লক্ষ করে দেখেছি,,যখন আমার সামনে বড় কোন ব্যক্তি উপস্থিত / বসা থাকে। যখন আমি বড় কোন আলিমের পাশে বসা থাকি, তখন আমার ভেতর থেকে পাপের ইচ্ছাটুকুও হারিয়ে যায়। তখন একটু বেশিই সতর্কতা লক্ষ. করেছি। এমনটি কেনো হয়?????
    আবার যখন সাধারণ লোকদের সাথে থাকি তখন নিজেকে এতো সতর্ক মনে হয় না।
    আমি মাঝেমধ্যে লক্ষ করেছি,, যখন আমার পাশে কেউ নাই[[ কোন মানুষ)]] তখন পাপের দিকে মন চলে যায়, কিন্তু হঠাৎ কেউ চলে আসার একটা ভয় কাজ করে! কেউ দেখে ফেলার যে, ভয় এটাকি ঈমানের একটি অংশ?????
    আমার ঈমান হচ্ছে===[[[ মহান রব]]]=== আমাদেরকে দেখছেন,, কিন্তু একজন মানুষের আমার পাপ করা দেখা ফেলার ভয়ের মতো আমার রবের দেখা আমার উপর এতো একশন/ প্রভাব করছে না কেনো????
    আমার রব তো আমাকে দেখছেন,, কিন্তু ওনার দেখা তো মাখলুকের দেখার মতো নয়। আমাকে দেখছেন এরপরেও পাপ করে যাচ্ছি,,কিন্তু কোন মানুষ দেখে ফেলার সাথে সাথে পাপ ছেড়ে দিচ্ছি,, এখানে কোন বিষয়টি অনুপস্থিত দয়া করে একজন (বিজ্ঞ) ভাই জানালে ভালো হয়।
    সম্মান নেইকো নাচে গানে,
    আছে মর্যাদা বিনিদ্র রজনী ও রণে।

    Comment


    • #3
      মাশা আল্লাহ, অনেক উপকারী পোস্ট। যা আমাদের চিন্তার খোরাক যোগাতে সাহায্য করবে, ইনশা আল্লাহ।
      আল্লাহ ভাইকে কবুল করুন ও উত্তম বদলা দান করুন। আমীন
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        সম্মানীত প্রিয় ভাই! সত্যই আলোচনাটা খুবই বাস্তব!
        এই অভাব থেকে বেরিয়ে আসতে চাই, আল্লাহ্ আমাদের সাহায্য করুন আমীন।
        প্রিয় ভাই! আমাদেরকে আরো নাসিহা দিয়ার অনুরোধ থাকলো।

        Comment


        • #5
          আলহামদুলিল্লাহ, অসাধারণ একটি পোস্ট। জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা।
          প্রিয় মডারেটর s_forayeji ভাইয়ের পোস্টের অপেক্ষায় থাকি।
          আশা করি ভাই- নিয়মিত ফোরামে পোস্ট দিবেন। যা দ্বারা আমরা উপকৃত হব, ইনশা আল্লাহ
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment

          Working...
          X