Announcement

Collapse
No announcement yet.

নবীজীর প্রতি মহববত : কয়েকজন মহিয়সী নারীর ঘটনা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নবীজীর প্রতি মহববত : কয়েকজন মহিয়সী নারীর ঘটনা

    নবীজীর প্রতি মহববত : কয়েকজন মহিয়সী নারীর ঘটনা


    নবীজীর প্রতি ভালবাসা ঈমানের অঙ্গ। মুমিনমাত্রই নবীপ্রেমিক। নারীদের নবীপ্রেমের বিভিন্ন ঘটনায় ইতিহাসের পাতা উজ্জ্বল।

    এখানে নবীপ্রেমিক কয়েকজন মহিয়সী রমনীর ঘটনা উল্লেখ করছি। যারা আমাদের শিখিয়ে গেছেন-কীভাবে নবীজীকে ভালবাসতে হয়।

    ১. উম্মে হাবীবা রা. নিজ পিতাকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন তুমি মুশরিক, নাপাক। এ বিছানার উপযুক্ত নও। ঘটনার পূর্ণ বিবরণ ইবনে কাছীরের বর্ণনায় নিম্নরূপ :

    ‘অষ্টম হিজরীর ঘটনা। ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে একদিন কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান মদীনায় হাযির। মদীনায় ঢুকেই তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন সঙ্গিনী তার কন্যা হযরত উম্মে হাবীবার ঘরে প্রবেশ করলেন। আবু সুফিয়ান বিছানায় বসতে গেলে উম্মে হাবীবা বিছানা গুটাতে শুরু করলেন। বিষয়টি লক্ষ্য করে আবু সুফিয়ান বিস্মিত হলেন। উম্মে হাবীবাকে জিজ্ঞাসা করলেন, মা আমি কি এ বিছানার উপযুক্ত নই? না এ বিছানা আমার উপযুক্ত নয় বলে তুমি মনে করছ? উম্মে হাবীবা বললেন, এটা আল্লাহর রাসূলের বিছানা। আর তুমি মুশরিক, নাপাক। তাই আমি চাইনা যে, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিছানায় বস। এ কথা শুনে আবু সুফিয়ান মেয়ের কাছ থেকে বের হয়ে অন্যত্র চলে গেলেন।-আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩/৪৭৩ (গযওয়াতুল ফাতহ)

    ২. নবীজীকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজের দেহকে ক্ষতবিক্ষত করলেন উম্মে আমারা :

    উম্মু সাদ বিনতে সাদ বলেন, আমি একদিন উম্মে আমারার নিকট গিয়ে বললাম খালা! আপনার যুদ্ধ-অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলুন। তিনি বললেন, উহুদ যুদ্ধে আমি সকালেই বের হয়ে পড়ি। লোকজন কী করছে তা আমি দেখছিলাম। আমার সাথে একটি পানিভর্তি মশক ছিল। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পর্যন্ত পৌঁছে যাই। সেখানে তাঁর সাহাবীগণ ছিলেন। তখন মুসলমানদের বিজয়ের পালা চলছিল। কিন্তু পরবর্তীতে যখন মুসলমানগণ পরাজিত হলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে আশ্রয় নিলাম। আমি তাঁকে রক্ষার জন্যে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হই। তরবারি পরিচালনা করে এবং তীর নিক্ষেপ করে শত্রুদেরকে দূরে তাড়িয়ে দিই। এতে আমি যখম হই। বর্নণাকারী উম্মু সাদ বলেন- ‘আমি তাঁর কাঁধে যখমের চিহ্ন দেখেছি। সেটি ছিল বৃত্তাকার গভীর গর্ত।’ কে এই আঘাত করেছিল তা আমি তাকে জিজ্ঞেস করি। তিনি বললেন, ওই আঘাত করেছিল অভিশপ্ত ইবনে কুমাইয়্যা। সাথীগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দূরে চলে যাওয়ার পর সে এসে বলল, মুহাম্মাদ কোথায় আমাকে দেখিয়ে দাও। তখন আমি নিজে এবং মুসআব ইবনে উমায়ের ও অন্য কতকলোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রক্ষার জন্য দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন সে আমার উপর এ আক্রমণ চালায়।-আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩/১৬৪-১৬৫

    ৩. বিখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক লিখেন-

    ‘উহুদ যুদ্ধ শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবাগণ বাড়ি ফিরছিলেন। তারা যখন বনূ দীনার গোত্রের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন এক মহিলার (ওয়াকিদীর বর্ণনা মতে যার নাম সুমাইয়া বিনতে কায়েস) সাথে তাদের সাক্ষাৎ হল যার স্বামী, ভাই ও পিতা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথী হয়ে যুদ্ধ করতে করতে উহুদ ময়দানে শহীদ হয়েছিলেন। লোকেরা তাকে তাঁদের মৃত্যু সংবাদ শোনালেন। মহিলা বললেন, নবীজীর কী অবস্থা! তিনি বেঁচে আছেন তো? তারা বললেন, আপনি যেমন কামনা করছেন, আলহামদুলিল্লাহ তিনি ভাল আছেন! এবার মহিলা বললেন, তাহলে তাঁকে একটু দেখান, আমি তাঁর জ্যোতির্ময় চেহারা একটু দেখে নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ইশারা করে তাঁকে দেখানো হল। দেখা মাত্রই তিনি চিৎকার করে বলে উঠলেন- ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে সুস্থ পাবার পর সকল বিপদ আমার নিকট তুচ্ছ।’ অর্থাৎ এখন আর আমার মনে আমার স্বামী, ভাই ও পিতা হারানোর কোনো কষ্ট বা শোক নেই। আপনাকে সুস্থ পেয়ে সব কিছুই আমি ভুলে গেলাম। (আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩/১৮১’ আলকামিল ২/১৬৩)

    কবির কন্ঠে- (ভাবার্থ)

    স্বামী, সন্তান না ভাইয়ের খেয়াল

    নবীজী আছেন কেমন-একটিই সুওয়াল (প্রশ্ন)

    হাঁ, দেখে নিয়েছি তাঁর মোবারক চেহারা

    সান্ত্বনা আমার, আমি নই স্বামী-

    সন্তানহারা।

    বস্ত্তত সাহাবাদের নবী প্রেম ছিল সম্পূর্ণ নিখাদ। তাতে কোনো কৃত্তিমতা বা কপটতার আভাষও ছিল না। তাঁদের নবী প্রেম দেয়াল লিখন আর বক্তৃতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। পরিবার, দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি তাদেরও ভালবাসা ছিল তবে তা ইসলাম, কুরআন ও নবীর মান মর্যাদার উর্ধ্বে ছিল না। তাইতো মহান রাববুল আলামীন বলেছেন- ‘তোমরা ঈমান আন যেভাবে লোকেরা (সাহাবারা) ঈমান এনেছে।’(সূরা বাকারা) আর এ কথা তো বলাই বাহুল্য যে, নবীজীর প্রতি ভালবাসা ও ভক্তি ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এটা কোনো ঐচ্ছিক ব্যাপার নয় যে তা অর্জন না করলেও আমাদের চলবে।
    অতএব আমরা যদি সত্যিকারার্থেই মুমিন হয়ে থাকি তবে নবীজীর মহববত কেবল আমাদের অন্তরেই লুকিয়ে থাকবে না বরং আমলেও এর প্রতিফলন ঘটবে।


    *******************

    Collected
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

  • #2
    আল্লাহু-আববার! পোষ্টা পড়তে পড়তে চোখে পানি চলে আসলো,
    আল্লাহ্ আমাদের কলিজার টুকরা নবীর ইজ্জত রক্ষাই আমাদের কবুল করুন,
    আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই, যদি যোদ্ধা নবী, কলিজার টুকরা নবীর ইজ্জত রক্ষা করতে না পারি,
    আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে কবুল করুন আমীন।

    Comment


    • #3
      ইয়া আল্লাহ!
      রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বতকে সকল মানুষের মহব্বত থেকে প্রিয় করে দিন।আমীন। ইয়া রাব্বাল আলামীন।
      দাওয়াহ,ইদাদ ও জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি খিলাফাহ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।

      Comment


      • #4
        বাস্তব জীবনে নবীজির মহব্বত প্রদর্শন ঈমানের অপরিহার্য দাবি।
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

          আবু সুফিয়ান রাযি. কাফির থাকাবস্থায় যে চির সত্য উক্তিটি করেন-
          والله ما رايت من الناس أحدا يحب أحدا كحب أصحاب محمدا
          “কসম খোদার! সত্যিই মুহাম্মাদের অনুসারীরা যেভাবে তাঁকে ভালোবাসে- নিখিল বিশ্বে তার কোনো তুলনা নেই।”
          “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

          Comment


          • #6
            হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় যখন মক্কার কাফেররা উরওয়া বিন মাসউদকে সন্ধির ব্যাপারে আলোচনার জন্য নবীজির নিকট পাঠায়, তখন সে ফিরে গেয়ে এই ঐতিহাসিক বক্তব্য পেশ করে-

            أي قوم، والله لقد وفدت على الملوك، ووفدت على قيصر، وكسرى، والنجاشي، والله إن رأيت ملكا قط يعظمه أصحابه ما يعظم أصحاب محمد صلى الله عليه وسلم محمدا، والله إن تنخم نخامة إلا وقعت في كف رجل منهم، فدلك بها وجهه وجلده، وإذا أمرهم ابتدروا أمره، وإذا توضأ كادوا يقتتلون على وضوئه، وإذا تكلم خفضوا أصواتهم عنده، وما يحدون إليه النظر تعظيما له .صحيح البخاري (2731 (



            হে আমার কওম, আল্লাহর কসম! আমি অনেক রাজা বাদশাহর নিকটে প্রতিনিধি হয়ে গিয়েছি। কায়সার-কিসরা ও নাজ্জাশী (আবিসিনিয়ার) সম্রাটের নিকটে দূত হিসেবে গিয়েছি; কিন্তু আমি আল্লাহর কসম করে বলতে পারি, মুহাম্মদের অনুসারীরা মুহাম্মদকে যেমন সম্মান করে, কোন রাজা বাদশাহকেই তার অনুসারীরা এত সম্মান করে না। আল্লাহর কসম! মুহাম্মদ যদি থুথু ফেলে, তখন তা কোন সাহাবীর হাতে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে সে তা তার গায়ে মুখে মেখে ফেলে। সে কোন আদেশ দিলে তারা তা সঙ্গে সঙ্গে পালন করে; সে ওযু করলে তার ওযুর পানি নিয়ে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা শুরু হয়; সে কথা বললে, তারা নিশ্চুপ হয়ে শুনে। এমনকি তাঁর সম্মানার্থে তারা তাঁর চেহারার দিকে গভীরভাবেও তাকায় না। -সহিহ বুখারী: ২৭৩১


            ফিদাকা আবী ওয়া উম্মী ইয়া রাসূলুল্লাহ
            الجهاد محك الإيمان

            জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

            Comment


            • #7
              Originally posted by আদনানমারুফ View Post
              ফিদাকা আবী ওয়া উম্মী ইয়া রাসূলুল্লাহ
              প্রিয় ভাই- এখানে “ইয়া রাসূলাল্লাহ” হবে মনে হয়।
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment


              • #8
                আল্লাহ তা'আলা তাঁর অনুগ্রহে আমাদেরকেও এমন সত্য ভালবাসার অধিকারী করুক, আমীন।

                Comment


                • #9
                  Originally posted by alyaumul jadeed View Post
                  আল্লাহ তা'আলা তাঁর অনুগ্রহে আমাদেরকেও এমন সত্য ভালবাসার অধিকারী করুক, আমীন।
                  ছুম্মা আমীন। শুকরিয়া ভাই
                  ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                  Comment

                  Working...
                  X