Announcement

Collapse
No announcement yet.

দরসুল কুরআন (পর্ব-১) বিশ্বমঞ্চে মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদা লাভের চাবিকাঠি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দরসুল কুরআন (পর্ব-১) বিশ্বমঞ্চে মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদা লাভের চাবিকাঠি

    বিশ্বমঞ্চে মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদা লাভের চাবিকাঠি

    ইসলাম পূর্বযুগে আরবরা ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে মূর্খ ও অসভ্য জাতি। মানবসভ্যতা ও পৃথিবীকে উপহার দেয়ার মত কিছুই তাদের ছিল না। তারা তো তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে শতশত বছর যুদ্ধ করে যেতো। কিন্তু হঠাৎ তাদের মাঝে আবির্ভাব হলো একজন রাসূলের। যিনি কুরআনের জিয়নকাঠিতে বদলে দিলেন বর্বর আরবদের। তার পরশে চরম অজ্ঞরাই হয়ে গেলো মানবসভ্যতার শিক্ষক। তারাই পৃথিবীকে শিক্ষা দিলেন ন্যায়, আদর্শ ও কল্যাণের। মানুষকে মুক্ত করলেন মানুষের গোলামী হতে, অধর্মের জুলুম-অত্যাচার হতে। মাত্র চল্লিশ বছরের মাথায় তৎকালীন সুপার পাওয়ার রোম-পারস্য তাদের নিকট পরাজিত হয়ে নতি স্বীকার করলো।

    যেমনিভাবে আরবরা কুরআনের মাধ্যমে সম্মান ও প্রতিপত্তি লাভ করেছিল, আজও মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদা লাভের একমাত্র মাধ্যম হলো কুরআন। কুরআন অনুযায়ী আমল করেই তারা বিশ্বমঞ্চে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। নতুবা বৈষয়িক উপায়-উপকরণে তো কাফেররা মুসলিমদের চেয়ে শতবছর এগিয়ে গেছে। এমনকি তারা মুসলিম দেশগুলোতেও তাদের মানসপুত্রদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছে এবং এর মাধ্যমে তারা মুসলিম ভূখণ্ডসমূহের সম্পদ নির্বিঘ্নে ও স্থায়ীভাবে ভোগ করার ব্যবস্থা করে নিয়েছে। তবে যথাসাধ্য উপকরণ অবলম্বন তো কুরআনেরই নির্দেশ। তাই সেটাও অবশ্য করণীয়। কিন্তু যারা মনে করেন ইসলামের পরিবর্তে কাফেরদের অন্ধ অনুসরণের মাধ্যমেই মুসলিমরা এগিয়ে যেতে পারবে তারা আসলেই বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

    لَقَدْ أَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ كِتَابًا فِيهِ ذِكْرُكُمْ أَفَلَا تَعْقِلُونَ

    আমি তোমাদের নিকট একটি প্রেরণ করেছি যাতে তোমাদের জন্য রয়েছে ‘যিকির’ (উপদেশ ও সুখ্যাতি।) -সূরা আম্বিয়া: ১০

    আয়াতের তাফসীরে ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, ‘এতে তোমাদের জন্য সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে।’ আর যাহহাক রহ. ও বলেন, ‘এতে তোমাদের জন্য উপদেশ রয়েছে।’ বাস্তবে উভয় তাফসীরের মাঝে কোন বৈপরীত্য নেই। কারণ কুরআন মুসলিমদের জন্য উপদেশনামা। কিন্তু এই উপদেশনামার অনুসরণ যে মুসলিমদের জন্য শুধু আখেরাতের কল্যাণই বয়ে আনবে তা নয়, বরং দুনিয়াতেও তা মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদার নিশ্চয়তা দিয়ে, শর্ত শুধু একটিই- কুরআন অধ্যয়ন এবং কুরআনের পূর্ণ অনুসরণ।

    এধরণের আরেকটি আয়াত হলো,

    ص وَالْقُرْآنِ ذِي الذِّكْرِ

    সোয়াদ, কসম ‘যিকর’ সম্বলিত কুরআনের। -সূরা সোয়াদ: ১

    এ আয়াতটি তখন নাযিল হয় যখন কাফেররা আবু তালেবের নিকট নবীজির নামে অভিযোগ দায়ের করে বলে, সে আমাদের উপাস্যদের গালিগালাজ করে (অর্থাৎ সেসব মূর্তির অসারতা প্রমাণ করে) আমাদের (মূর্তিপূজারী) বাপ-দাদাদের গোমরাহ বলে দাবী করে। তখন আবু তালিব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন, ভাতিজা! তুমি তোমার জাতির নিকট কি চাও? নবীজি বলেন, আমি শুধু তাদের নিকট একটি কালিমা চাই যার মাধ্যমে পুরো আরব তাদের নিকট নতি স্বীকার করবে আর অনারবরা তাদেরকে জিজিয়া প্রদান করবে। এ কথা শুনে আবু জাহেল বলে ওঠে, শুধু একটি কালেমার মাধ্যমে (এত কিছু হবে)? নবীজি বললেন, হাঁ, তোমরা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে (এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে)। তখন কাফেররা বলে, ‘সে কি সমস্ত মাবুদকে এক মাবুদ দ্বারা বদলে দিয়েছে? এটা তো বড় আজব কথা!’ (সোয়াদ: ৫) এই প্রেক্ষিতেই উপরোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। -জামে তিরমিযি: ৩২৩২

    কুরআনের অনুসরণই যে মুসলিমদের মর্যাদার একমাত্র চাবিকাঠি এ বিষয়টি হাদিসেও সুস্পষ্টরূপে এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    إن الله يرفع بهذا الكتاب أقواما، ويضع به آخرين

    ‘আল্লাহ তায়ালা এ কিতাব (অনুযায়ী আমল করার দ্বারা) অনেক জাতিকে সম্মানিত করবেন আর (তা না মানার) কারণে অনেক জাতিকে লাঞ্ছিত করবেন।’ -সহিহ মুসলিম: ৮১৭

    পরিশেষে রাসূলের যবানে ‘মুলহাম’ (ইলহামের অধিকারী) বলে স্বীকৃত উমর রাযি. এর মহান বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই,

    إنا كنا أذلَّ قومٍ، فأعزَّنا الله بالإسلام، فمهما نطلب العزة بغير ما أعزنا الله به أذلنا الله

    আমরা ছিলাম (পৃথিবীতে) সবচেয়ে লাঞ্ছিত-অপমানিত। আল্লাহ তায়ালা ইসলামের মাধ্যমেই আমাদের সম্মানিত করেছেন। সুতরাং যদি আমরা ইসলাম ভিন্ন অন্য কোন মাধ্যমে মর্যাদা অন্বেষণ করতে যাই তাহলে আল্লাহ আবারো আমাদের লাঞ্ছিত করবেন। -মুস্তাদরাকে হাকেম: ২০৭
    (যিলালুল কুরআন ও তাফসীরে ইবনে কাসীর অবলম্বনে)
    الجهاد محك الإيمان

    জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

  • #2
    মাশা আল্লাহ, তথ্যনির্ভর লেখা। বারাকাল্লাহু ফিক।
    মুহতারাম ভাই-
    তার তো তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে শতশত বছর যুদ্ধ করে যেতো।
    এখানে সম্ভবত: তার এর পরিবর্তে “তারা” হবে।
    তারা মুসলিম ভূখন্ড সমূহের সম্পদ
    এখানে সঠিক বানান “ভূখণ্ড” হবে মনে হয়। আর “ভূখণ্ডসমূহের” একসাথে হবে।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
      মাশা আল্লাহ, তথ্যনির্ভর লেখা। বারাকাল্লাহু ফিক।
      মুহতারাম ভাই-

      এখানে সম্ভবত: তার এর পরিবর্তে “তারা” হবে।

      এখানে সঠিক বানান “ভূখণ্ড” হবে মনে হয়। আর “ভূখণ্ডসমূহের” একসাথে হবে।
      জাযাকাল্লাহ আখি, ইডিট করে দিয়েছি।
      الجهاد محك الإيمان

      জিহাদ ইমানের কষ্টিপাথর

      Comment


      • #4
        আলহামদুলিল্লাহ্ অনেক সুন্দর আলোচনা প্রিয়.. আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম
        বিনিময় দান করুন,আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন ও আমল করার তাওফিক দিন
        আমীন।

        Comment


        • #5
          আলহামদুলিল্লাহ্,,,
          আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আমল করার তাওফিক দান করুন ৷৷

          Comment


          • #6
            বিশ্বময় আমরা লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত এবং অবহেলিত হওয়ার মূল কারণ হলো- আমরা কুরআন থেকে দূরে সরে গিয়েছি।
            তাই আমাদেরকে আবারো কুরআনের দিকে ফিরে আসবে ও বাস্তব জীবনে কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
            প্রিয় ভাই- আপনার পোস্ট ফোরামে নিয়মিত কামনা করি। জাযাকাল্লাহু খাইরান।
            ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

            Comment

            Working...
            X