Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমাদের পথঃ অগ্রবর্তীদের জিহাদ…!

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমাদের পথঃ অগ্রবর্তীদের জিহাদ…!

    আবু হুরাইরা রাঃ সূরা নাসর তিলাওয়াত করে বলেন, “সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ! আজ মানুষ যেভাবেই হক বের হয়ে যাচ্ছে যেভাবে
    মক্কা বিজয়ের পর দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করেছিল।”

    আমরা দেখতে পাই, জিহাদী ধারার কিছু ব্যাক্তিবর্গ বা তানজীমসমূহ, রাজনীতিবিদ ও তাত্ত্বিকগণ উম্মাহকে ব্যাপকভাবে নিজ নিজ আন্দোলনে সম্পৃক্ত করে ‘নিরাপদ জিহাদের’ পর ধরে বিজয় ও শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার কথা বলে থাকেন। বাস্তবে এই চিন্তাধারার কোন ফলাফল কি দেখতে পাই? তারা কি আদৌ তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে? তারা কি নিরাপদে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে?

    উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের উপর নির্ভরশীল হওয়ার বিষয়টি আমাদের দ্বীন, উলামায়ে কেরাম এবং মুসলিমদের ভুমিগুলোকে লাঞ্চিত আর অপমানিত করেছে।

    উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর নির্ভরতা তাগুতের জল্লাদদের উল্লাসিত করেছে। অথিকাংশ ইসলামপন্থীয় এই উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠদের উপর নির্ভরতা, কাঙ্ক্ষিত বিজয় এনে দিতে পারেনি। আর যে ই উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর নির্ভর করে কর্মসূচী সাজিয়েছে ব্যর্থতা ছাড়া তারা কিছুই অর্জন করেনি। উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠদের উপর নির্ভরশীল জ্বিহাদীদের অবস্থা তো আরও ভয়াবহ। তাদের অনেকেরই কারাগারেই জীবনের মূল অংশ কাটিয়ে দিতে হয়েছে।

    আমরা উম্মাহর প্রতি লক্ষ্য রাখব; আমাদের দাওয়াতি, সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচীর সিংহভাগই হবে উম্মাহকেন্দ্রিক। কিন্তু উম্মাহর উপর নির্ভরতা, উম্মাহর মাঝে দ্রবীভূত হয়ে যাওয়া আমাদের আন্দোলনকে ফলপ্রসূ করবে না।
    বরং, এরকম আন্দোলন এক পর্যায়ে মানুষের রুটি-রুজির খোরাক মেটানোর আন্দোলন হয়ে যায়। আমাদের জিহাদ ও সংগ্রাম তো রুটি-রুজির জন্য নয়। বরং, আমাদের আন্দোলন হচ্ছে জমীনে ইসলামের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আনার আন্দোলন।

    আলোচনা থেকে এমনটা বোঝার কারণ নেই যে, উম্মাহকে তাকফীর করা হচ্ছে বা উম্মাহকে পরিত্যাগ করার কথা বলা হচ্ছে। বরং, এখানে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সঠিক কর্মসূচীর দিকে আহবান করা হচ্ছে।

    দশকের পর দশক তাগুতের নোংরামির শিকার উম্মাহ কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে নিজ সভ্যতা সংস্কৃতি প্রতিরক্ষায় সক্ষমতা দেখাতে পারেনি । দরবারী আলেমরা দ্বীন বিকৃতিকরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। উম্মাহর আকিদায় ব্যাপকভাবে প্রবেশ করেছে ইরজা ও শৈথিল্যপরায়নতার জীবাণু। সামগ্রিকভাবে মুসলিমরা মানসিকভাবে পরাজিত। সবরকমের বিপদ তাদেরকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ধরেছে ।

    সাম্প্রতিক সময়ে আমরা মিশর, তিউনিসিয়া ও অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহে লাখ লাখ মানুষকে আন্দোলন করতে দেখেছি। আমরা মানুষের ভিড় দেখেছি। দেখেছি মানুষের রাস্তায় নামা, ভাঙচুর, আস্ফালন আর অগ্নিসংযোগ । এসবের চালিকাশক্তি ছিল ক্ষুধা, রুটি বা বৈষয়িক কোন দুর্যোগ।
    আন্দোলনরত এক ব্যক্তি যখন নিজ গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তখন কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। উম্মাহ অত্যাচারী শাসকের পতনের জন্য একত্রিত হয়েছিল, বিক্ষোভ করেছিল।
    ফলাফল ছিল এই যে, উম্মাহ এক তাগুতকে অপসারণ করে তার স্থলে আরেক তাগুতকে বসায়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই উম্মাহর অর্জন ছিল শুধুমাত্র চেহারায় পরিবর্তন ঘটানো। তারা প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি।

    শাসকগোষ্ঠী আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে। হলে জনগণ আন্দলনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের ব্যাপারে অমনোযোগী হয়ে পরে। কেননা, তাগুতি শাসনব্যবস্থার অধীনে জনগণ নিজ মানোন্নয়নে সক্ষম ছিল না।

    যেমন ইখওয়ানুল মুসলিমীনকে মধ্যমপন্থী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তারাও মিশরে গণআন্দোলনের উপর ভর করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ছেয়েছিল। এবং, তারা এটি ভেবেও নিয়েছিল যে, তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে চলেছে। যখন জনগনের দুনিয়াবি চাহিদা পরিপূর্ণ হলো না, তাদের গণতান্ত্রিক নেতাদের পাশাপাশি কর্মীদেরকেও জেলে পাঠানো হল, পরক্ষনেই পরিস্থিতি পাল্টে গেল। উম্মাহর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ তাদের অভিশাপ দিতে লাগলো। এমন কি কেউ কেউ নেতৃবৃন্দের মুখে জুতা নিক্ষেপও করে ।

    একারণে ধোঁয়াশাপূর্ণ স্লোগানের আশ্রয়ে জনগণকে সন্তুষ্ট করার মাধ্যমে পরিচালিত আন্দোলনসমূহ যেন জ্বিহাদীদের মৌলিক প্রচেষ্টা না হয়। তাদের জন্য অবশ্যক প্রতিটি সুযোগকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসার, তবে তা যেন তাদের প্রতারিত না করে।
    মুজাহিদদের জন্য সমীচীন নয়, তারা জনগণের মাঝে দ্রবীভূত হবে। যদিও এই দ্রবীভূত হওয়াটা কিন্তু রাজনীতিবিদ আর তাত্ত্বিকদের খুবই পছন্দনীয়। তবে যে, জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর মাধ্যমে তাওহীদের কালিমাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তার জন্য এতে সন্তুষ্ট হওয়া সমীচীন নয়।

    আরবের মাঝে যখন নবী(সাঃ) এর আবির্ভাব ঘটে তখন তিনি (সাঃ) ছিলেন স্বর্ণতূল্য । তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে পবিত্র। তিনি ছিলেন আনুপম চরিত্রের অধিকারী এবং সর্বাধিক সম্মানিত। এতদসত্তেও, মক্কা বিজয়ের আগ পর্যন্ত অল্প কিছু মানুষই তার অনুসরণ করেছিল।
    আরবের অথিকাংশই তার(সাঃ) দ্বীনের অনুসরণ থেকে বিরত ছিল। বরং যারা তার (সাঃ) অনুসরন করেছিল তাদের বিরুদ্ধে এমন কোন অত্যাচার নেই যা করা হয়নি। এমনকি অগ্রগামী মুসলিমরা নিজ দেশ থেকে হিজরত করতে বাধ্য হয়।

    আল্লাহ্* প্রদত্ত সাহায্য ও বিজয় প্রত্তক্ষ করার আগ পর্যন্ত আরবরা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করেনি। এমনকি পূর্বে বিরোধিতাকারী নেতৃস্থানীয়রাও দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করে।

    আল্লাহ্* সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ক্ষমতা ও বিজয়ের মাধ্যমে মানুষকে একত্রিত করেন। যা শুধুমাত্র দলীল আদিল্লা দ্বারা সম্ভব না। সুস্পষ্ট বিজয়ের ফলাফলস্বরূপ আরবের অধিকাংশ লোক পরাজিত ধর্ম পরিত্যাগ করে বিজয়ী দ্বীন ইসলাম গ্রহন করে।

    আমরা দেখতে পাই, হুনাইনের ময়দানে এই সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশটি ইসলামের সুনির্বাচিত ও অগ্রগামী অংশের সাথে কেবল তাল মিলিয়ে চলার দ্বারাই উপকৃত হয়নি। বরং, তারা পালিয়েছিল।

    কেবল বাইয়াতে রিদ্বওয়ানে অংশগ্রহণকারীগণই দৃঢ় ছিলেন। যারা ছিলেন উম্মাহর সুনির্বাচিত ও অগ্রগামী অংশ।

    বেশী দিন যায়নি, রাসূল (সাঃ) এর ওফাতের পরপরই এই অধিকাংশ নবমুসলিমরা ইসলাম থেকে পালিয়ে যায়। আরবের লোকদের ব্যাপকভাবে দ্বীনত্যাগের উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এগিয়ে আসেন আবু বকর রাঃ এবং উম্মাহর সুনির্বাচিত ও অগ্রগামী মুসলিমদের
    অংশটি।

    অবশেষে তরবারির মাধ্যমে যখন মুরতাদদের মাথা আলাদা করা শুরু করলেন, তখন লোকজন পরাজিত হয়ে নতুন করে ইসলামে প্রবেশ করে।
    এমন উদ্যমি ও অগ্রবর্তী ব্যক্তিবর্গ সব কালেই সবখানেই কিছু না কিছু থাকেন, যারা দ্বীনের প্রকৃত অভিযাত্রী। এরাই দ্বীনের আমানত ও মুল্যবোধ বহন করেন।

    এই মহান ব্যাক্তিদের ব্যপারে আল্লাহর নবী ﷺ প্রশংসা করেছেন।
    যেমন সহিহ বুখারীতে আছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ কে একথা বলতে শুনেছি,
    “যে মানুষ একশত উটের ন্যায়। তবে তার মাঝে সওয়ারী হিসেবে একটি ও খুঁজে পাবে না।”

    ইমাম ইবন বাত্তাল রঃ বলেন, “মানুষের সংখ্যা অনেক।তবে পছন্দসই মানুষের সংখ্যা খুবই কম।”
    এই অর্থের প্রতি ইমাম বুখারী তার গ্রন্থের বাবু রফইল আমানাতে ইংগিত করেছেন।

    ইমাম আহমদ রঃ এর যমানার লোকেরা দ্বীনের অনেক নিকটবর্তী ছিল। এবং তাদের সময়টা রাসুলুল্লাহর (সা) যমানার খুব কাছাকাছি ছিল। এবং তাদের মাঝে যথেষ্ট উলামায়ে কেরামও ছিল।
    ইমাম আহমদ রঃ যখন মৃত্যু বরণ করেন, তখন তার জানাযায় লাখ লাখ লোক অংশগ্রহণ করেছিলো।
    অথচ যখন তাকে শাসকগোষ্ঠী জেলে পুরে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছিলো তখন এ লোকগুলো কোথায় ছিল?

    এলোকগুলো তখন ইমাম আহমদ রঃ ও অন্যান্য হক্কানি উলামায়ে কেরামদের পরিত্যাগ করেছিলো। ফলে বিদআতি শাসকগোষ্ঠী তাদেরকে বন্দী করে নির্যাতন করে এবং কাউকে কাউকে হত্যাও করে।

    আমরা কি তাহলে এটা বলব যে, তিনি জনবিচ্ছিন্ন ছিলেন?
    অথচ বাস্তবতা হলো তিনি ছিলেন অনুপম চরিত্রের অধিকারী। স্বীয় যমানায় তিনি ছিলেন অতুলনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

    কিভাবে তার জানাযায় এতো লোক সমাগম হলো? যখন তাকে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন কোথায় ছিল এ লোকেরা?

    যাই হোক। আবারো বলছি, জননির্ভর জাতীয় আন্দোলনের শেষ পরিণতি হয় মিশর ও তিউনিসিয়ার গণ-আন্দোলনের ন্যায় হবে। অথবা লিবিয়ার জিহাদীদের ন্যায় হবে। যারা জিহাদ পরিত্যাগ করে, নিজেদের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে গেছে।

    হ্যাঁ সঠিক কথা হলো, এখনো পর্যন্ত হকপন্থী মুজাহিদরা পতনমুখী সমাজের মাঝে দ্রবীভূত হয়ে যায়নি।

    বরং, মুজাহিদরা বিভিন্ন ময়দানে সমাজকে স্থিতিশীল ও পরিশুদ্ধ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মুজাহিদগণ হচ্ছেন এই জামানার প্রভাবশালী, অগ্রবর্তী ব্যক্তিবর্গ; যারা নিজেদের কাধে উম্মাহর দায়িত্ব বহন করে চলেছেন।

    এই পথ অত্যান্ত দীর্ঘ এবং ধীর গতির, যাতে দোষের কিছু নেই। অথচ নির্বোধেরা এটাকে দোষনীয় মনে করে।

    তবে মুজাহিদীনরা মনে করেন যেহেতু উম্মাহর উপর জগদ্দাল পাথরের ন্যায় তাগুত শাসকগোষ্ঠী চেপে বসেছে এবং সমস্ত সিস্টেমকে তারা কব্জা করে রেখেছে, তাই এই পদ্ধতিতে তাদের অপসারণ যুক্তিযুক্ত।

    দেরীতে হলেও পরিচ্ছন্ন লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারা, ভ্রান্ত গন্তব্যে চলা এবং লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থতা থেকে উত্তম।

    এপথের পথিকগণ একথা ভেবে সান্ত্বনা লাভ করেন এবং ধৈর্য ধারণ করেন যে কিয়ামতের দিন এমন নবী আসবেন যার সাথে একজন অথবা দুই জন অনুসারী থাকবে। আবার এমন নবী ও আসবেন যার সাথে কেউ থাকবে না।

    অধিকাংশ আন্দোলন কর্মী, তাত্ত্বিক, নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং সমাজের অধিকাংশ লোক এ বিষয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথাই নেই।
    এমন কি কিছু জিহাদীও খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা এই নস্ট সমাজের মাঝে দ্রবীভূত হয়ে গেছে।

    মানুষের অবস্থা বর্ণনা করে, এমন আয়াত সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ ই অমনোযোগী।

    যেমন আল্লাহ সুবঃ বলেন

    قوله سبحانه: {ولكنّ أكثر الناس لا يعلمون}
    وقوله سبحانه: {قل الحمد لله بل أكثرهم لا يعقلون}
    وقوله تعالى: {ولكن أكثر الناس لا يشكرون}
    وقوله تعالىوما يؤمن أكثرهم بالله إلا وهم مشركون)..

    কিছু কিছু মানুষ কি এটাই চায় যে, আমরাও মুর্খ ও নির্বোধদের মাঝে বিলীন হয়ে যাই?
    বরং তাদের চাওয়া উচিৎ, যেন উম্মাহর উত্তম ও অগ্রবর্তী অংশ সমাজকে শরীয়া, ইলম ও আকল অনুযায়ী পরিচালনা করেন।

    দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, সমাজের মাঝে বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা বলা লোকের কোন অভাব নেই।

    ইমাম তিরমিজি বর্ণনা করেন, ছাওবান রাঃ থেকে বর্ণিত,
    রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি বলেছেন,
    “আমার উম্মতের একটি দল মুশরিকদের সাথে মিলে যাওয়া ব্যতীত কেয়ামত হবে না। এমন কি তারা মূর্তিপূজাও করবে।”

    এ লোকগুলো কি আমাদের কাছে এটাই প্রত্যাশা করে যে আমরাও যেন সাধারণ মানুষ এবং নস্ট সমাজের মাঝে বিলীন হয়ে যাই?
    তারা কি এটাই চাচ্ছে যে, আমরা বিশাল সংখ্যা দেখে মোহাবিষ্ট হয়ে এক পর্যায়ে গণতন্ত্র নামক আধুনিক শিরকে লিপ্ত হই।

    বরং, আমাদের জন্য আবশ্যক হলো উম্মাহকে সব রকমের পদস্খলন থেকে রক্ষা করা এবং সাধ্যমত তাদেরকে আমাদের জিহাদী আন্দোলনে শরীক করা। যার ফলে তারা তাদের সুনির্বাচিত ও অগ্রগামী লোকদেরকে উম্মাহর নেতৃত্বদানের গৌরবময় মহান কাজে শরীক করবে।

    (শায়খ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসি হাফিজাহুল্লাহ এর লেখার ছায়া অবলম্বনে…)

    আর কীভাবে এই অগ্রবর্তী অংশটি উম্মাহ বা কোনো মুসলিমদের সমাজ প্রত্যক্ষ করবে?


    শায়খ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ বলেন,

    “জিহাদী আন্দোলনের জন্য এমন একটি জিহাদী ময়দান (বা জিহাদি বাস্তবতা) প্রয়োজন, যেটা তার জন্য ইনকিউবেটর হিসাবে কাজ করবে, যেখান থেকে অঙ্কুরিত বীজ বেড়ে উঠে। সেখান থেকে তারা সামরিক, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ও কর্মগত অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।”

    শায়খ আবদুল্লাহ আজ্জাম রহঃ বলেন,


    “জিহাদি আন্দোলনের পথে এর দৈর্ঘ্য, দুর্ভোগের তিক্ততা এবং বিশাল ত্যাগ অতিক্রম করার মাধ্যমে নিজেদের হৃদয়কে স্বচ্ছ করে তুলবে, ফলে তারা দুনিয়ার নিম্ন বাস্তবতা থেকে উর্ধ্বে উঠে যাবে এবং তাদের মন—মানসিকতা সামান্য টাকা—পয়সা, সাময়িক স্বার্থ ও তুচ্ছ ভোগ—সামগ্রীর বাক—বিতণ্ডা থেকে উঁচু হয়ে যাবে এবং হিংসা—বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে। তা আত্মাকে পরিস্কার করে দিবে এবং কাফেলাকে নিম্নগামীতা থেকে উচ্চতার দিকে পরিচালিত করব।, যারা দুর্গন্ধময় মাটি ও স্বার্থান্বেষী লড়াই থেকে অনেক দূরে থাকবে।

    জিহাদের দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়ে উঠে, এর ত্যাগ ও কুরবানির মাধ্যমে যোগ্যতা বিকশিত হয় এবং পুরুষরা তাদের বীরত্ব ও বাহাদুরি প্রকাশ করতে পারে।

    আবু বকর, ওমর, উসমান, আলী। রাদিয়াল্লাহু আনহুম। তারা তো এই মহান কর্ম ও সুউচ্চ কুরবানির মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছিলেন। একারণেই উম্মত তাকে খলিফা মনোনয়নের ব্যাপারে একমত হয়ে গিয়েছিল।
    এর জন্য নির্বাচনী প্রচারণার প্রয়োজন হয়নি। ফলে আল্লাহর রাসূলের আত্মা সর্বোচ্চ বন্ধুর পানে জান্নাতের উদ্দেশ্যে উড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সকলের চক্ষুগুলো মাঠে অনুসন্ধানে লেগে গেল। তখন তারা আবু বকর থেকে শ্রেষ্ঠ কাউকে পেল না।

    যে উম্মত জিহাদের চড়া মূল্য ব্যয় করে পাকা ফল কুড়ায়, তাদের জন্য তাদের রক্ত—ঘামে কুড়ানো ফসলের ব্যাপারে অবহেলা করা সহজ নয়।

    পক্ষান্তরে যারা দূতাবাসগুলোর পর্দার আড়ালে তৈরী সামরিক বিপ্লবের প্রথম বক্তব্যের মাধ্যমে মানুষের অন্তরে আসন গেড়ে বসে, তাদের জন্য যেকোন বিষয়েই শৈথিল্য করা সহজ।
    যে বিনাযুদ্ধে দেশ অধিকার করে নেয়, তার জন্য দেশ সমর্পণ করে দেওয়াও সহজ।

    আর দীর্ঘ জিহাদি আন্দোলনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে প্রকাশ লাভ করা সেরা ব্যক্তিদের নেতৃত্বে পরিচালিত জিহাদি উম্মাহর পক্ষে তাদের নেতৃত্বের ব্যাপারে শৈথিল্য করা বা তাকে বিপর্যস্ত করার ষড়যন্ত্র করা সহজ নয়। আর তাদের শত্রুদের পক্ষেও তাদেরকে তাদের বাহাদুরদের গতিবিধি সম্পর্কে সন্দেহে ফেলা সহজ নয়।

    দীর্ঘ জিহাদি আন্দোলন তাদের জাতির প্রতিটি সদস্যের মাঝে এই উপলব্ধি সৃষ্টি করে যে, তারা মূল্য আদায় করেছে এবং ইসলামী সমাজ গঠনের জন্য কুরবানিতে অংশগ্রহণ করেছে। ফলে তারা এই নবজন্মা সমাজের প্রহরী ও নিরাপত্তাকর্মী হয়ে যায়, যার প্রসববেদনা সমস্ত উম্মাহকেই সহ্য করতে হয়েছে।

    যে কোন ইসলামী সমাজের জন্মের জন্যই প্রসব বেদনা আবশ্যক। আর যেকোন প্রসবকার্যের জন্য কষ্ট-পরিশ্রম আবশ্যক। আর যেকোন পরিশ্রমের জন্য ব্যথা—বেদনা আবশ্যক।”

    তিনি আরো বলেন:

    “আমরা যদি কাবুল থেকে আল কুদসের দিকে চলার ইচ্ছা রাখি, তাহলে এ পথটি হল ইসলামী দাওয়াতের পথ, যা যুবকদেরকে অস্ত্র বহন করা এবং আকিদার জন্য লড়াই করার চেতনায় গড়ে তুলবে। তখনই তারা বিজয় লাভ করবে। এটা ছাড়া আমরা পানিতে চাষাবাদ করব, শূণ্যে বীজ বপন করব। তখন ব্যর্থতার পর ব্যর্থতাই আসবে। আর বিষয়টা যতক্ষণ শুধু ঘোষণা, স্লোগান, প্রবন্ধ—নিবন্ধ ও মুখরোচক কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, ততক্ষণ অবধি তার গন্তব্যে পৌছতে পারবে না।”

    والله غالب على أمره ولكن أكثر الناس لا يعلمون

  • #2
    মাশা আল্লাহ! খুব চমৎকার পোস্ট!!
    দাওয়াহ,ইদাদ ও জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি খিলাফাহ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।

    Comment


    • #3
      খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী পোস্ট!

      আলহামদু লিল্লাহ, বরাবরের মতোই মুহতারাম ভাইয়ের পোস্ট পড়ে সীমাহীন উপকৃত হই। চিন্তার যথেষ্ট খোরাক পাই। বারবার পড়তে ইচ্ছে হয়।
      আল্লাহ তা‘আলা আপনার চিন্তাশক্তিতে আরো বারাকাহ নসীব করুন ও উম্মাহর কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন ইয়া রব্ব!
      মুহতারাম ভাইয়েরা! সবাইকে অনুরোধ করবো- আপনারা সবাই গভীর মনোযোগের সাথে অধ্যায়ন করুন ও বুঝার চেষ্টা করুন এবং উপকৃত হোন।


      পোস্ট ও কমেন্ট সংক্রান্ত কিছু সাধারণ পয়েন্টঃ

      ১১। একটি মানসম্মত লেখা/রচনাও বানান ভুলের কারণে পাঠককে পড়তে নিরুৎসাহিত করতে পারে, তা থেকে ফায়দা গ্রহণ তো আরো দূরের কথা। তাই আমরা আপনাকে শুদ্ধ বাংলায় লেখার প্রতি উৎসাহিত করবো, সমাজে প্রচলিত যেকোন গ্রহণযোগ্য বাংলা ভাষারীতি আপনি অনুসরণ করতে পারেন। পাশাপাশি, দাড়ি (।), কমা (,)-সহ অন্যান্য যতিচিহ্নগুলো সঠিকভাবে ব্যবহারের প্রতি আপনাকে উৎসাহিত করছি!
      Last edited by Munshi Abdur Rahman; 01-31-2021, 09:33 PM.
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        ভাই, আমি জুনিওর মেম্বার হওয়াতে পোস্টগুলো বিলম্বে আসে। এবং নতুন পোস্টের ভিড়ে দ্রুতই হারিয়ে যায়। এক্ষেত্রে কি কোনো পদক্ষেপ নেয়া যায় ভাই?

        শুকরান।

        Comment


        • #5
          Originally posted by Hasan Abdus Salam View Post
          ভাই, আমি জুনিওর মেম্বার হওয়াতে পোস্টগুলো বিলম্বে আসে। এবং নতুন পোস্টের ভিড়ে দ্রুতই হারিয়ে যায়। এক্ষেত্রে কি কোনো পদক্ষেপ নেয়া যায় ভাই?

          শুকরান।
          সম্মানিত ভাইয়ের পোস্টগুলো অনেক অনেক মূল্যবান। তাই উনার পোস্টগুলো যাতে দ্রত হারিয়ে না যায়, এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভাইয়েরা ব্যবস্থা নিলে ভাল হয়।
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment

          Working...
          X