Announcement

Collapse
No announcement yet.

শাসকের অনুমতি ব্যতীত কি শাতিমে রাসুলদের হত্যা করা জায়েজ?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শাসকের অনুমতি ব্যতীত কি শাতিমে রাসুলদের হত্যা করা জায়েজ?

    শাসকের অনুমতি ছাড়া কি শাতিমার রাসূলদের হত্যা করা জায়েজ?
    একটি সংশয় নিরসন!!

    শাসক ছাড়া যেকোনো মুসলিম কি ব্যাক্তিগতভাবে কোনো নাস্তিক বা শাতিমার রাসূলকে হত্যা করতে পারবে?

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
    সাম্প্রতিক সময়ের প্রয়োজনীয়তায় এই প্রশ্নটিও সবার সামনে বার বার আসছে যে, "শাসক ছাডাই, কোনো সাধারণ মুসলিম কি শাতিমার রাসূলকে(রাসূল সা:'কে অবমাননাকারী) তার প্রাপ্য শাস্তি দিতে পারবে?
    এব্যাপারে আমরা সবাই জ্ঞাত যে, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের সকল আলেমগণের ঐক্যমত যে "শাতিমার রাসূলের একমাত্র শাস্তি তাকে হত্যা করা এবং এটি উম্মাহ'র উপর ওয়াজিব।"

    তো এটা শোনার পর অনেকে প্রশ্ন করে যে 'এটা তো শাসক করবে, শাসক ছাড়া বৈধ না'।
    না, এটা ভুল। বরং যেকোনো সাধারণ মুসলিমই রাসূল(সা এর অবমাননাকারীকে শাস্তি দিতে পারবে, এতে তার উপর কোনো রক্তপণ দেয়ার দায় পড়বে না বরং তাকে আল্লাহ তা'য়ালা এর জন্য উত্তম বিনিময় দান করবেন ইনশাআল্লাহ।
    [দলিল দেয়ার আগে কিছু কথা বলে নেই। রাসূলের শানে বেয়াদবি করা কতটা ভয়াবহ তা ফাতহুল মক্কার ইতিহাস ঘাটলেই বুঝতে পারবেন। মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সা: সকল কাফেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, এমনকি যারা মুসলিমদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন করেছিল তাদেরও। কিন্তু কিছু অপরাধী-হতভাগা ব্যাক্তিরাই সেই মহান দিনেও ক্ষমা পায় নি। তারা কারা? যারা রাসূল সা: এর শানে বেয়াদবি করেছিল, রাসূলের বিরোদ্ধে গান গেয়েছিল, কবিতা লিখেছিল। এমনকি সেদিন তাদের একজন নিজেকে বাচানোর জন্য ক্বাবার গিলাফ আকড়ে দাঁড়িয়ে ছিল,যাতে তাকে হত্যা না করা হয় (কারণ ক্বাবার আশেপাশে রক্তপাত করা আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন)। তখন সাহাবিরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে তো ক্বাবার গিলাফ ধরে ঝুলে আছে। তখন রাসূল সা: বলেন ঐ অবস্থায়ই তাকে হত্যা করো, এবং তাই করা হলো , তাদের কাউকেই জীবিত রাখা হয় নি।
    এবার চিন্তা করুন, রাসূলের অবমাননা কত বড় অপরাধ যেখানে এক্ষেত্রে আল্লাহর বাণী(কাবার আশেপাশে রক্তপাত হারাম) রহিত হয়ে যায়! সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তার রাসূলকে এতো উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন।]

    শাসক ছাড়া শাতিমকে হত্যার দলিলঃ
    • ১ম দলিলঃ
    ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
    জনৈক অন্ধ লোকের একটি ‘উম্মু ওয়ালাদ’ ক্রীতদাসী ছিল। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে গালি দিত এবং তার সম্পর্কে মন্দ কথা বলতো। অন্ধ লোকটি তাকে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে বিরত হতোনা। সে তাকে ভর্ত্সনা করতো; কিন্তু তাতেও সে বিরত হতো না। একরাতে সে যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে গালি দিতে শুরু করলো এবং তার সম্পর্কে মন্দ কথা বলতে লাগলো, সে একটি ধারালো ছোরা নিয়ে তার পেটে ঢুকিয়ে তাতে চাপ দিয়ে তাকে হত্যা করলো। তার দু’পায়ের মাঝখানে একটি শিশু পতিত হয়ে রক্তে রঞ্জিত হলো। ভোরবেলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘটনাটি অবহিত হয়ে লোকজনকে সমবেত করে বললেনঃ আমি আল্লাহর কসম করে বলছিঃ যে ব্যক্তি একাজ করেছে, সে যদি না দাঁড়ায়, তবে তার উপর আমার অধিকার আছে। একথা শুনে অন্ধ লোকটি মানুশের ভিড় ঠেলে কাঁপতে কাঁপতে সামনে অগ্রসর হয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি সেই নিহত দাসীর মনিব। সে আপনাকে গালাগালি করতো এবং আপনার সম্পর্কে অপমানজনক কথা বলতো। আমি নিষেধ করতাম কিন্তু সে বিরত হতোনা। আমি তাকে ধমক দিতাম; কিন্তু সে তাতেও বিরত হতোনা। তার গর্ভজাত মুক্তার মত আমার দুতি ছেলে আছে, আর সে আমার খুব প্রিয়পাত্রী ছিল। গতরাতে সে আপনাকে গালাগালি শুরু করে এবং আপনার সম্পর্কে অপমানজনক কথা বললে আমি তখন একটি ধারালো ছুরি নিয়ে তার পেটে স্থাপন করে তাতে চাপ দিয়ে তাকে হত্যা করে ফেলি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো, তার রক্ত বৃথা গেলো।[সুনানে আবু দাউদ,৪৩৬১]
    *এ হাদিস থেকে যা পাই
    -উক্ত অন্ধ সাহাবি মদিনার শাসকের(স্বয়ং রাসূল সা অনুমতি নেন নি।
    -এই হত্যাকে রাসূল সা: জায়েজ বলেছেন, "তার রক্ত মূল্যহীন"।
    -কোনো শাতিম যদি কোনো মুসলিমের অত্যন্ত প্রিয় ব্যাক্তিও হয় তাহলেও তাকে হত্যা করতে হবে। কারণ নবী সা: এর ইজ্জত সবার আগে।
    -কোনো নারী শাতিমার রাসূল যদি গর্ভবতীও হয়, তাহলেও তাকে হত্যা কর*তে হবে, তার বেচে থাকার বা ছাড় দেয়ার কোনো অধিকার নেই।

    • ২য় দলিলঃ
    মদিনায় থাকাকালীন রাসূল সা: এর নির্দশে সাহাবারা অনেক শাতিমকে গুপ্তহত্যা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কা’ব বিন আশরাফ, ইবনে আবুল হুকায়েক আবু রাফে, খালিদ বিন সুফিয়ান আল হুযায়লী,* মদিনার চুক্তিবদ্ধ ইহুদি মহিলা।
    -এখানে লক্ষণীয় যে শুধু ইহুদি মহিলা বাদে বাকি সবাইকে মদিনার বাইরে হত্যা করা হয়েছে। তাহলে কি এখানে কেউ আপত্তি তুলবে "এটা জায়েজ নয়,মদিনার বাইরের শাসকদের অনুমতি নেয়া প্রয়োজন ছিল"?? নাউজুবিল্লাহ! এরকমটা কেউ বলবে?
    -আর কোনো কাফের যদি মুসলিমদের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকে তাহলে তাকে হত্যা করা হারাম, কিন্তু রাসূলের শানে বেয়াদবি করলে তার রক্ত হালাল হয়ে যায়। হাদিসে আছে যে "উক্ত ইহুদি মহিলা খাটে শুয়ে তার শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছিল, তখন এক সাহাবি লুকিয়ে লুকিয়ে তার ঘরে গিয়ে ঐ অবস্থায়ই থাকে শ্বাসনালী চেপে হত্যা করেন। এই ঘটনা রাসূল সা: এর কাছে পৌছালে তিনি বলেন, তার(ইহুদি মহিলার) রক্ত মূল্যহীন।
    -সুতরাং দেখা যাচ্ছে এক্ষেত্রেও উক্ত সাহাবি মদিনার শাসকের(রাসূল সা অনুমতি নেন নি।
    -যদিও কোনো শাতিমের দুধের শিশু তাকে তথাপিও তাকে হত্যা করা ওয়াজিব।
    -কোনো নামধারী মুসলিম অথবা যিম্মি কাফেরও যদি রাসূলের শানে বেয়াদবি করে তাহলে তাকেও হত্যা করতে হবে। এক্ষেত্রে শাসকের অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই।

    • ৩য় দলিলঃ
    *কাফের হত্যার মূলনীতি; কোনো নামধারী মুসলিম বা যে কেউ যদি রাসূলের শানে বেয়াদবি করে তাহলে সে কাফের। আর যেকোনো কাফেরকে(হোক জন্মগত কাফের বা মুরতাদ,নাস্তিক) হত্যা করা যেকোনো মুসলিমের জন্য সম্পূর্ণ হালাল, আর নাস্তিক/মুরতাদ বা শাতিম হলে তো ওয়াজিব।
    • আবূ জুহাইফাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
    তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের কাছে এমন কিছু আছে কি যা কুরাআনে নেই? তিনি বললেন, দিয়াতের বিধান, বন্দী-মুক্তির বিধান এবং (এ বিধান যে) কাফেরের বদলে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না।[সহিহ বুখারী,৬৯১৫]
    -অর্থাৎ কোনো মুসলিম যদি কোনো কাফেরকে হত্যা করে দেয়, যদিও সে কাফের চুক্তিবদ্ধ হয় তবুও ঐ কাফেরের বদলে উক্ত মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না বা ক্বিসাস কার্যকর হবে না।

    • আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
    নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন কাফির ও তার হত্যাকারী (মুসলিম) কখনও জাহান্নামে একত্র হবে না।[সুনানে আবু দাউদ,২৪৯৫]
    -অর্থাৎ কোনো মুসলিম কোনো কাফেরকে হত্যা করলে তাকে আল্লাহ উত্তম বিনিময় দান করবেন, এরজন্য সে জাহান্নামি হবে না, যেহেতু কাফেররা চিরস্থায়ী জাহান্নামি।

    • قال القرطبي: (والمسلم إذا لقي الكافر ولا عهد له: جاز له قتله).
    [تفسير القرطبي 338/5]
    "আর কোনো মুসলিমের সামনে যদি কোনো কাফের পড়ে যায়, যার সাথে কোনো চুক্তি নেইঃ তার জন্য জায়েয আছে একে হত্যা করে দেয়া।" [তাফছীরে কুরতবি ৩৩৮/৫]

    -সুতরাং উপরোক্ত দলিল থেকে স্পষ্ট যে কোনো কাফের,নাস্তিক,মুলহিদ বা শাতিমার রাসূলকে একজন মুসলিম ব্যাক্তিগতভাবে হত্যা করতে পারে।
    আর সে যদি নাস্তিক,মুলহিদ,শাতিমার রাসূল হয় তাহলে তো যেকোনো সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর তাকে হত্যা করা ওয়াজিব, চাই শাসক অনুমতি দিক বা নিষেধ করুক।
    চিন্তা করুন! যেখানে খোদ রাসূল সা: শাসক থাকার পরও সাহাবারা এক্ষেত্রে তার অনুমতি নেন নি সেখানে বর্তমান জমানার শাসকদের অনুমতি কেন প্রয়োজন? তাদের মর্যাদা কি রাসূলুল্লাহ সা: থেকেও বেশি হয়ে গেল? নাউজুবিল্লাহ!!
    [বি:দ্র: বর্তমান জমানায় কোনো মুসলিম শাসক বা ইসলামিক রাষ্ট্র নেই। তাই শাসকের অনুমতির প্রশ্নেই ওঠে না(যেহেতু শাসকই নেই), আর এটা যেহেতু মুসলিমদের উপর ওয়াজিব, তাই সাধারণ মুসলিমদেরই এটা সম্পাদন করতে হবে ইনশাআল্লাহ]।
    পোষ্টটি বেশি বেশি কপি পেস্ট করুন যাতে সবাই দ্বীনের সঠিক ইল্ম অর্জন কর*তে পারে ইনশাআল্লাহ।
    জাযাকাল্লাহু খাইরান।
    ক্বিতাল ব্যতীত দ্বীন অসম্পূর্ণ -ড.আব্দুল্লাহ আযযাম রহিঃ!!

  • #2
    "শাতিমে রাসূলের একমাত্র শাস্তি হলো তাকে হত্যা করা এবং এটি উম্মাহ'র উপর ওয়াজিব।"
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 02-23-2021, 05:24 PM.
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহ তায়ালা আপনার মেহনতকে কবুল করুন। আমীন!
      আসুন! নববী মানহাযে শান্তির জন্য কাজ করি!!

      Comment


      • #4
        সময়োপযোগী পোস্ট করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহ
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
          "শাতিমে রাসূলের একমাত্র শাস্তি হলো তাকে হত্যা করা এবং এটি উম্মাহ'র উপর ওয়াজিব।"
          মাশাআল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার।
          এই পোষ্টটি আমার ঈমানকে জাগিয়ে তুলেছে,
          অন্তর আমার প্রশান্তি পেয়েছে।
          আল্লাহ ভাইকে উত্তম জাযা দান করুন আমীন।
          মুসলিম হয়ে জন্মেছি আমি ইসলাম আমার ধর্ম
          লড়বো আমি খোদার পথে এটাই আমার গর্ব।

          Comment

          Working...
          X