Announcement

Collapse
No announcement yet.

“ফুরসান তাহতা রায়াতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” সিরিজ-৪৩

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • “ফুরসান তাহতা রায়াতিন নাবিয়্যি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম” সিরিজ-৪৩

    তৃতীয় অধ্যায়: ময়দানে প্রত্যাবর্তন- পঞ্চম পরিচ্ছেদ:দাগিস্তান: উপায় শেষ হওয়ার পর সাহায্য- প্রথম বিষয়: ককেশাসের পরিস্থিতি নিয়ে কিছু ভাবনা- তৃতীয় ভাগ:


    (পূর্ব প্রকাশের পর)
    খ- জারযুনীতে রাশিয়ান আক্রমণ এবং মুজাহিদগণের প্রতিরোধ:

    আমরা যদি এই ব্যাপক বিবরণের পর বিশেষভাবে জারযুনীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার ব্যাপক আক্রমণের মুখে চেচেন মুজাহিদগণের প্রতিরোধ যুদ্ধটির কথা আলোচনা করি, তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, মুজাহিদগণ রাশিয়ান আগ্রাসী বাহিনীকে সৈন্য ও রসদের দিক থেকে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন করেছেন। তেমনি তাদের মনোবলও চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছেন। তারা রাশিয়ান জনগণের সামনে তাদের সরকারের মিথ্যাচারিতা প্রকাশ করে দিয়েছেন। এছাড়া এই প্রতিরোধের মাধ্যমে তারা সুশৃঙ্খলভাবে জারযুনীর বাইরে সরে পড়ার ব্যবস্থাও করেছেন।

    রাশিয়ার সাথে চেচনিয়ার অন্যান্য লড়াইগুলোর ন্যায় জারযুনীর লড়াইটিও ইসলামী জিহাদী ইতিহাসে বৃহৎ যুদ্ধ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে, যাকে গবেষণা ও পর্যালোচনার প্রকৃত হক প্রদান করা হয়নি।

    এখানে আমি সেই মহা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংঘাতের ঘটনা সংক্ষেপে তুলে ধরব:

    (১) ১৯৯৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে জারযুনীর উত্তর ও পশ্চিম উত্তরে বিদ্যমান রাশিয়ান বাহিনী শহরের উপর পরিপূর্ণ স্থল আক্রমণ করে।

    (২) রাশিয়া শুধুমাত্র দুই দিক থেকে আক্রমণ করেছে। কারণ তাদের সৈন্যসংখ্যা পুরো শহর ঘেরাও করে শহরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ছিল না। একারণে সাত সপ্তাহ ব্যাপী চলা দীর্ঘ অবরোধের মধ্যে শহরটি দক্ষিণ-পূর্ব দুই দিক থেকে উম্মুক্ত ছিল। প্রতিরক্ষাকারীগণ শক্তি ও সাহায্য লাভ করতে পেরেছেন এবং পরিশেষে সুশৃঙ্খলভাবে শহর থেকে বেরিয়ে পড়ার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন।

    এই সরে পড়া আনন্দের ছিল না। বরং এর জন্য চেচেন মুজাহিদগণ বিরাট কুরবানি পেশ করেছেন। সর্বোচ্চ বীরত্ব প্রকাশ করেছেন। এমন একটি কুরবানির ঘটনাই শায়খ সেলিম খান ইয়ানদারবি বর্ণনা করছেন:

    “শত্রুর দ্বারা পরিপূর্ণ অবরূদ্ধ জাওহার শহর থেকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর সরে পড়ার সময় মুজাহিদদের অগ্রদল- যারা অবরোধ ভাঙ্গার জন্য পথ খুঁজছিলেন- তথ্য পেলেন যে, তাদের পথ ফিল্ডমাইন দ্বারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা এড়ানো সম্ভব নয়। তা অতিক্রম করতেই হবে। আর সময়টি নিরাপদে পলায়নের জন্য মুজাহিদগণের অনুকূলে ছিল না। তখন অভিযানের কমান্ডার শামিল বাসিফ অগ্রসর হলেন এবং নিজ সাথীদেরকে এ কথা বলতে বলতে ফিল্ডমাইন অতিক্রম করতে লাগলেন: যদি আমি মাইন বিস্ফোরণের শিকার হই, তবে তোমরা আমার দেহ এক পাশে ছেড়ে সামনে অগ্রসর হতে থাকবে এবং যখনই তোমাদের কোন যোদ্ধা মাইন বিস্ফোরণের শিকার হবে, প্রতিবারই এটা করবে।

    বাসিফ মাইন বিস্ফোরণের শিকার হলেন। তার দেহ টেনে এক পাশে নিয়ে রাখল। এক মুহূর্ত অবচেতনভাবে কেটে গেল। তবে শহরের সম্মানিত ব্যক্তি - যাকে জোহর লেচি দুদায়েভ বলা হয়, যিনি চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রথম প্রেসিডেন্টের ভাগ্নে- মুজাহিদগণের অগ্রদলের নিকট আসলেন এবং বাসেফকে নিজেদের নেতার মর্যাদায় গ্রহণ করলেন। তবে তিনিই ছিলেন সর্বশেষ মাইন বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তি।

    এই ফিল্ডমাইন পারাপারে ২৭ মুজাহিদকে নিহত হতে হয়েছে এবং ফিল্ডমাইন অতিক্রম করতে গিয়ে অনেক সংখ্যক আহত হয়েছেন। এতদসত্ত্বেও মুজাহিদগণের বীরত্ব ও কুরবানীর ফলে তাদের সাথীগণ অবরোধ থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হন।”

    (৩) প্রথম দিনের যুদ্ধটি রাশিয়ান বাহিনীর জন্য কঠিন দুর্যোগময় ছিল। রাশিয়ান বাহিনী শহরের বহিরাংশের প্রতিরোধ সীমা ভেদ করতে সক্ষম হয়। চেচেনগণ কৌশলের জন্য পিছু হটেন। চেচেনগণ রাশিয়ান সাঁজোয়া বহরগুলো ছেড়ে দেন। তা দ্রুত শহরের কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। সেখানেই তাদের জন্য বিস্ময় অপেক্ষা করছিল। আকস্মিকভাবে রাশিয়ানরা দেখতে পেল, চেচেনরা তাদেরকে বেষ্টন করে ফেলেছে। চতুদিক থেকে তাদের উপর অগ্নিবৃষ্টি বর্ষণ করছে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে কয়েক শতক রাশিয়ানকে হত্যা করে ফেলেন। চেচেনগণ অগ্রগামী সাঁজোয়াযানগুলো শিকার করতে ও ফাঁদে ফেলতে থাকেন।

    আনাতুল লেভিন জনৈক চেচেন মুজাহিদের যুদ্ধকৌশল বর্ণনা করতে গিয়ে উক্ত মুজাহিদের বক্তব্য তুলে ধরেন:

    “রাশিয়ান সেনারা তাদের সাঁজোয়ার ভিতরেই বসে রইল আর আমরা বারান্দায় বারান্দায় অপেক্ষা করছি। যখনই কোন গাড়ি আমাদের নিচ দিয়ে অতিক্রম করে, অমনি তাদের বাহনের উপর বোমা নিক্ষেপ করি। রাশিয়ানরা কাপুরুষের দল। তারা তাদের আশ্রয় থেকে নেমে আমাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধের চিন্তাও করতে পারে না। তারা শুধু জানে, তারা আমাদের সমকক্ষ নয়। একারণেই আমরা তাদেরকে মেরেছি এবং সর্বদাই মেরে যাব ইনশাআল্লাহ।”

    (৪) জারযুনীর পরিস্থিতি পাল্টে গেল। আধুনিক যুগের দেখা সর্বোচ্চ বোমা আবরণের মাঝে রাষ্ট্রপতি ভবনের শ্লথ যাত্রা শুরু হল। এর ফলে মধ্য জারযুনী পরিপূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেল।

    (৫) ফেব্রুয়ারির নবম তারিখে রাশিয়ান বাহিনী রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে পৌঁছল। যা প্রতিরোধকারীগণ ওই সময়ই পরিপূর্ণভবে ছেড়ে দিয়েছিলেন, যখন একটি বোমা মুজাহিদগণের আশ্রয় নেওয়া গম্বুজ ভেদ করে ভিতরে ঢুকে পড়েছিল।

    (৬) রাশিয়ানদের ক্ষয়-ক্ষতি ছিল ব্যাপক। তাদের সূত্রমতেই ২৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ১১৪৬ জন নিহত এবং ৩৭৪ জন নিখোঁজ হয়, যাদের অধিকাংশই নিহতদের অন্তর্ভূক্ত। প্রথম কয়েকদিনের পরই তারা সর্বনিম্ন ক্ষতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সম্মুখ অভিযানের পরিবর্তে আর্টিলারি বোম্বিংএর আশ্রয় নেয়।

    গ- শহরগুলোতে যুদ্ধ, বিশেষত: জারযুনীতে, যখন রাশিয়া তা দখল করে নেয়:

    প্রথম যুদ্ধে রাশিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে চেচেন মুজাহিদগণের শহরযুদ্ধ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রকাশ করেছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হল:

    (১) কৃত্রিম বন:

    সবদিকে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা শহরটি, বিশেষ করে ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকাটি বনের মত হয়ে গেছে। যা ঈমানদার গেরিলাদের জন্য বিশাল নিয়মতান্ত্রিক যোদ্ধা বাহিনীর মোকাবেলা করার উপযুক্ত পরিবেশে পরিণত হয়েছে।

    এ ধরণের বন পৃথিবী প্রসারের সাথে সাথে সর্বত্রই সৃষ্টি হচ্ছে।

    এভাবেই চেচনগণ বিজয় অর্জন করেন। কারণ তারা যেমনিভাবে অষ্টবিংশ ও উনবিংশ শতাব্দিতে জঙ্গলের মধ্যে গেরিলা যুদ্ধ শাস্ত্রের উস্তাদ ছিলেন, তেমনি বিংশ শতাব্দির নব্বয়ের দশকে শহরযুদ্ধও ভালোভাবে আত্মস্ত করেছেন।

    যখন গাছ কেটে ফেলার ফলে গেরিলা যোদ্ধাদের সামনে বনের মূল্য হারিয়ে গেল, তখন ঠিক উল্টোভাবে শহরটিই বনের ভয়াবহতা সংরক্ষণ করতে লাগল। বরং কখনো যোদ্ধাবাহিনীর সামনে তার ভয়াবহতা আরো বেশি হয়ে যায়, যখন তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।

    রাশিয়ান নেতৃবৃন্দের নিকট জারযুনীতে ব্যর্থতার একটি অজুহাত হল, রাশিয়ান গোয়েন্দারা তাদেরকে জারযুনীর আধুনিক মানচিত্র দিয়ে সাহায্য করেনি। এটা তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ শহরের ক্ষেত্রেই এমন। প্রায়শই মানচিত্রগুলো থাকে পুরতান বা অবাস্তব এবং দ্রুত বর্ধনশীল এলোমেলো এলাকা শহরকে ঘিরে ফেলে, যার অস্তিত্ব মানচিত্রে নেই। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তার মহাসড়কগুলোর নামও থাকে না। যখন শান্তিপূর্ণ শহরগুলোরই এ অবস্থা, তখন ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরগুলোতে সেনাবাহিনীর বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

    যখন এই আধুনিক কৃত্রিম বন হুবহু সেই সুযোগই দেয়, যা পূর্বে প্রাকৃতিক বন দিত, তথা গুপ্ত ঘাতক সেট করা, মাইন পোঁতা, বুবি ফাঁদ ও স্নিপিং করা প্রভৃতি, তখন এটা অবশ্যই ঈমানদার গেরিলাদের মোকাবেলার ক্ষেত্রে শত্রুর সাঁজোয়া, আর্টিলারি ও আকাশ শক্তির শ্রেষ্ঠত্বকেও অকার্যকর প্রমাণিত করবে। আনাতুল লেভিন দোমা পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটির উপ চেয়ারম্যান জেনারেল মিখাইল সুরকুভের নিম্নোক্ত বক্তব্য উদ্ধৃত করেন:

    “শহুরে পরিবেশে আর্টিলারির ব্যাবহারের কোন উপকারিতা নেই। এটা হল চড়ুই হত্যার জন্য আর্টিলারি ব্যবহারের মত। ট্যাংক ও পদাতিক যোদ্ধাদের বাহনও মহাসড়কে অক্ষম। যে বিষয়টি যুদ্ধের শুরুতে বছরের প্রথম রাত্রিতে জারযুনীর উপর প্রথম আক্রমণের দ্বারাই নিশ্চিত হওয়া গেছে।

    রকেট লাঞ্চারগুলো খুব নিকট থেকে বাহনগুলোর উপর গোলা নিক্ষেপ করছিল, মোমযুক্ত দ্রব্যের মাধ্যমে দেখার ছিদ্রগুলো ঢেকে ফেলছিল এবং বাহনগুলোতে আগুন জালিয়ে দিচ্ছিল। আর এ সবগুলো উপায়ই বিদ্রোহীদের আত্মস্থ করা।

    এমনিভাবে রাশিয়ান ইউনিটগুলোর মাঝে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল, তা শহরে বহু জটিলতার কারণ হয়। শুধুমাত্র একটি বিল্ডিংএর অপর পাশে থাকার ফলেই কোন কিছু শুনতে পারত না।”

    (২) বিশাল শক্তিকে ছিন্নভিন্ন করা:

    যে বাহিনী বিশাল বড় ইউনিটের উপর নির্ভর করতে অভ্যস্ত এবং যারা পর্যায়ক্রমিক নেতৃত্বের কঠোর সুনির্দিষ্ট সিস্টেম অনুযায়ী কাজ করত, তাদের জন্য এটা অনেক বড় জটিলতার ব্যাপার যে, নিজেদেরকে এমন একটি শহরে পাবে, যেখানে তারা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গেছে, যা ছোট ছোট অফিসার ও ঐ সকল অফিসারদের কাঁধে বিশাল দায়িত্ব ফেলে দেয়, যারা নিজেদের থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে অভ্যস্ত নয়। বরং তারা তাদের নেতৃবৃন্দ থেকে প্রাপ্ত আদেশাবলির অনুসরণ করতে অভ্যস্ত।

    (৩)
    বড় শহরগুলো অবরোধ করা কঠিন হওয়া:

    জারযুনীতে রাশিয়ান যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত আরেকটি সামরিক শিক্ষা হল, বড় বড় শহরগুলো পরিপূর্ণভাবে অবরোধ করা আমেরিকার ন্যায় বড় বড় রাষ্ট্রগুলোর স্বশস্ত্র সেনাবাহিনীর জন্যও কঠিন। এটাই রাশিয়ান আগ্রাসীদের জন্য পুরো শহর অবরোধ করে বেষ্টন করা এবং প্রতিরোধকারীদেরকে ধ্বংস করা অসম্ভব করে দিয়েছে।

    (৪) নগর যুদ্ধে আরপিজি ক্ষেপণাস্ত্রের ভূমিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের মত:

    যেমনিভাবে জারযুনীর অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ এটা প্রমাণ করেছে যে, আরপিজি ক্ষেপণাস্ত্রটি শহর ও গ্রামযুদ্ধে প্রতিরক্ষা-অস্ত্রগুলোর প্রধান। তেমনিভাবে পাহাড়ি গুপ্ত হামলার ক্ষেত্রেও। এই সস্তা অস্ত্রটি, যা এক ব্যক্তিই বহন করতে সক্ষম- এটা বিশাল ব্যয়বহুল ট্যাংককে তার ক্রু সহ ধ্বংস করতে সক্ষম।

    এই অস্ত্রটি শুধু নিক্ষেপের জন্য ভালো প্রশিক্ষণ প্রয়োজন আর নিক্ষেপকারীর জন্য প্রয়োজন বীরত্ব ও লোহার কড়া। তাতেই শত্রু যোদ্ধাদের কঠিন ক্ষতি সাধন করতে পারে।

    তিন তিন ব্যক্তি নিয়ে গঠিত মুজাহিদগণের ছোট ছোট গ্রুপগুলো (যারা ‘আরপিজি’, স্লিপিং ও পাইকা মেশিনগান বহন করছিলেন) জারযুনীতে এবং চেচনিয়ার অন্যান্য শহরগুলোতে রাশিয়ান সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিজ সাথীদের রক্ষায় এবং রাশিয়ান সেনাদেরকে তাদের সাঁজোয়াযানের ভিতরেই মরে পড়ে থাকতে উত্তম কুরবানী পেশ করেছিলেন।

    এ আলোচনাটি সমাপ্ত করার পূর্বে আমার এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে যে, ইরাকের ইসলামী জিহাদী কাজগুলো উন্নতি ও আকাড়ের দিক থেকে চেচনিয়ার বিস্তৃত জিহাদি কাজগুলো থেকেও উর্ধ্বে। কারণ এখানে রণাঙ্গন বিস্তৃত, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর সাথে পরিপূর্ণ সীমান্ত যোগাযোগ আছে এবং বিভিন্নমুখী প্রতিভাবান লোকদের পরিপূর্ণ সাহায্য আছে। এছাড়াও আছে বিস্তৃত মিডিয়া কভারেজ, যা উম্মতের যুবকদেরকে জাগিয়ে তুলেছে, আগ্রাসী বাহিনী ও তাদের জনগণের অন্তরে হতাশার বীজ বপন করেছে এবং যুদ্ধের শুরুভাগে আত্মপ্রবঞ্চিত অহংকারী ক্রুসেডারদেরকে অনুতপ্ত, অনুশোচিত ও পরস্পর দোষাদোষিতে লিপ্ত করে দিয়েছে।

    ইরাকি অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে, নগরযুদ্ধ পৃথিবীর সর্বোচ্চ শক্তিধরের পিঠও ভেঙ্গে দিতে পারে। এমনকি যদিও ঘন জঙ্গল ও ভয়ংকর পাহাড় মুক্ত উম্মুক্ত সমতল ভূমিতে যুদ্ধ করে, যদি তাদের মাঝে দু’টি প্রধান উপাদান বিদ্যমান থাকে:

    এক. মুজাহিদগণের মাঝে ইসলামী জিহাদি আকিদা থেকে উৎসারিত যুদ্ধ সংকল্প। যা সর্বাধিক শক্তিশালী, উন্নত ও শ্রেষ্ঠ সামিরক আকিদা।
    দুই. সর্বাধিক শক্তিশালী চেতনা থেকে উৎসারিত গণসহানুভূতি। তথা দ্বীন, মাতৃভূমি ও সম্মানিত বস্তুসমূহ রক্ষার চেতনা।

    নিশ্চয়ই ইসলাম আদর্শ ও মূল্যবোধ প্রতিরক্ষার জন্য সর্বাধিক শক্তিশালী চেতনা সরবরাহ করে। মুসলম জাতি যখন নিজেকে চিনবে, নিজের সম্ভাবনাগুলো এবং নিজ আকিদার শক্তি ও শ্রেষ্ঠত্ব বুঝতে পারবে, তখন তারা আল্লাহর হুকুমে সর্ববৃহৎ শক্তিশালী অহংকারী তাগুতের নাকও ধুলোয় লুটাতে পারবে।

  • #2
    আল্লাহ আপনার খেদমতকে কবুল করুন ও জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
    প্রিয় ভাই, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম.........
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X