Announcement

Collapse
No announcement yet.

মহাবীরদের আত্মত্যাগের এ নাযরানাই আমাদের হৃদয়ের খোরাক

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মহাবীরদের আত্মত্যাগের এ নাযরানাই আমাদের হৃদয়ের খোরাক

    মহাবীরদের আত্মত্যাগের এ নাযরানাই আমাদের হৃদয়ের খোরাক

    [[এক ]]

    হযরত ইকরামা রা. বর্ণণা করেন যে, যামরাতু ইবনে আঈম অসুস্থতার কারণে মক্কায় জীবন-যাপন করছিলেন। এ অবস্থায় তিনি যখন শুনতে পেলেন আল্লাহ তায়ালা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হিজরতের আদেশ করেছেন। এ বাণী শুনা মাত্রই তিো পরিবারের লোকদের বলে উঠলেন। তোমরা আমাকে এ অঞ্চল থেকে বের করে অন্যত্র নিয়ে চলো। কারণ এ আদেশের পর এক মুহূর্ত সময়ের জন্য এখানে আমার অবস্থান করা মানে হাতে জ্বলন্ত অঙ্গার রাখার ন্যায়। তার পরিবারের লোকেরা তার জন্য বিশেষ বিছানা তৈরি করলেন। এবং তার উপর তাঁকে শুইয়ে দিলেন।
    মক্কা থেকে বের হয়ে বেশি দূর নেওয়া সম্ভব হয়নি। মক্কা থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে তানঈম নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন।

    [[শিক্ষা ]]

    আল্লাহর বিধানের ক্ষেত্রে গড়িমসি না করা। ইসলামের প্রত্যেকটা বিধানকে ফরযতুল্য মনে করে আমল করা।
    সুস্থ থাকা অবস্থায় এমনকি অসুস্থতায়ও।


    [[দুই]]

    ইমাম তাবারী রাহি. তার এক নিকটতম বন্ধু থেকে এ ঘটনাটি বর্ণণা করেন। মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ নিজের অতিশয় মোটা ও ভারী দেহের অনুপাতে একটি উর্দির অর্ডার দিচ্ছিলেন। তখন তাবারী রাহিমাহুল্লাহ এর বন্ধু জিজ্ঞাসা করলেন। হে মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ, আপনি ভালো আছেন তো? আর এ সময়ে উর্দির অর্ডার করছেন যে। জবাবে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ বলেন, আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। অন্যকিছু নয় তবে জিহাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি তখন পুনরায় বললেন, হে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ আল্লাহ তায়ালা তো আপনার এ ওজরকে ( অতিশয় মোটা দেহকে) কবুল করেছেন। তারপরও কেন এত কষ্ট স্বীকার? প্রতিউত্তরে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ বললেন, আরে ভাই! তুমিও তো দেখি সাধারণদের মত কথা বলছো। সারাজীবন দরস-তাদরীসে জীবন কাটিয়েছো আর আল্লাহর বিধানের ব্যাপারে এতটাই উদাসীন। অথচ আমাদের ঘর,দরস্ গা, খানকা,মিম্বার থেকে বের হওয়ার জন্য আদেশসূচক আয়াত এসেছে। এটা কি তোমার নজরে পড়েনি। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল-কারিমে ইরশাদ করেন,
    إنفروا خفافا وثقالا وجاھدوا بأموالکم وأنفسکم فی سبیل الللہ ذالکم خیرلکم إن کنتم تعلمون ☆
    অর্থ : তোমরা হালকা হও অথবা ভারী হও জান-মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়ো আর এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে।
    সূরা-তাওবা আয়াত নং ৪১

    [[শিক্ষা ]]
    আমরা হালকা অথবা মোটা,ছোট অথবা বড়,আলেম অথবা গাইরে আলেম, দ্বীন পরিপূর্ণ বুঝি অথবা না বুঝি,
    এসব ওজর জিহাদের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং আমরা সমস্ত ওজরকে পিছনে রেখে জান-মাল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বো আল্লাহর রাহে।আর এটাই আল্লাহর মানশা।


    [[তিন]]

    ইমাম যুহরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব যুদ্ধের জন্য বের হয়েছেন অথচ তার এক চোখ একটু পূর্বে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন।তাকে বলা হলো আপনি তো অক্ষম, আপনি বিশ্রাম করুন। যুদ্ধে বের হওয়ার জন্য আপনি ছাড়া আরো বহুলোক রয়েছেন।
    জবাবে সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব বললেন, আল্লাহ নামায,রোযা,যাকাতের মত জিহাদকেও ফরয করেছেন প্রত্যেকের উপর। আবার এটাও বলে দিয়েছেন যেন বান্দা ওজর দেখাতে না পারে তোমরা হালকা হও অথবা ভারী হও জান-মাল নিয়ে বেরিয়ে পড়ো আল্লাহর রাস্তায়। সুতরাং আমি কোন বিধান থেকে খালি নই। আল্লাহ বলে দেননি ওজরগ্রস্ত হলে বিধান রহিত হয়ে যাবে। আল্লাহ ক্ষমা করতে পারেন আবার পাকড়াও করতে পারেন। তাই এরকম সন্দিহান অবস্থায় আমি দুনিয়া ত্যাগ করতে চাই না। বরং আল্লাহর বিধানকে আরো মজবুতভাবে আঁকড়িয়ে ধরবো। হ্যা,তবে যদি আমি যুদ্ধ করতে সক্ষম না হই, তাহলে মুজাহিদ বাহিনীর ক্যাম্পগুলো পাহাড়া দিবো। তাও যদি না পারি তাহলে মুজাহিদ বাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে পারবো তো! আমি যেভাবেই হোক তাদের সাথেই থাকবো। আমি শহীদ হওয়া পর্যন্ত এ মর্যাদা লুফে নিতে চাই।

    [[শিক্ষা ]]
    আমরা ও ওজরগ্রস্ত হলে মুজাহিদীনদের সাহায্য করবো, কথার মাধ্যমে, অর্থের মাধ্যমে, তথ্য দিয়ে, তাদের পরিবার-পরিজনের দেখাশুনা করে, তাদের সংখ্যাকে ভারী করে,মুজাহিদীনের বাসায় আশ্রয় দিয়ে,
    তাদের ক্যাম্পগুলো পাহাড়া দিয়ে, তারপরও আমরা এ বরকতময় জিহাদে অংশীদার হয়ে থাকতে চাই।

    [[ চার ]]

    একবার শাম দেশের যুদ্ধে কতিপয় লোক একজন শ্বেত,শুশ্রুধারী বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। যার চোখের পাঁপড়ীগুলো ঝুলে পড়েছে, এমতাবস্থায় লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, চাচাজান! আল্লাহ তো আপনার( বৃদ্ধ হওয়া) অক্ষমতাকে কবুল করেছেন।
    তারপরও কেন আপনি জিহাদের মত এ অসহনীয় কষ্ট সহ্য করার জন্য বের হয়েছেন। চাচাজান প্রতিউত্তরে বললেন, হে আমার ভাতিজারা!
    আল্লাহ তায়ালা তো আমাদের যুবক-বৃদ্ধ উভয় অবস্থায়
    বের হওয়ার আদেশ করেছেন। শুধু যুবকদের আদেশ করেন নি আবার শুধু বৃদ্ধদেরও আদেশ করেননি বরং সকল মুসলিম মুসলিম উম্মাহকে করেছেন। সুতরাং আমি কেন বের হবো না? তাফসীরে কুরতুবী, খন্ড ৮


    [[শিক্ষা]]
    শরীয়তের বিধানের ক্ষেত্রে সকলে সমান। আর আল্লাহ ব্যক্তি বিশেষের জন্য এ বিধানকে ফরয করেন নি। সুতরাং আমরাও আমাদের বৃদ্ধ বাবা,চাচা,নানা ও পারাপ্রতিবেশি শাইখদেরকে জিহাদের বিষয়ে উদ্ভুদ্ধ করবো, তাদের সামনে এ ঘটনাকে তুলে ধরবো। হয়তো বা এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাকে আপনাকে নাজাত দিবেন।


    [[পাঁচ]]

    হযরত ইবরাহীম ইবনে আদহাম রা. যখন বার্ধ্যকে উপনীত হলেন এবং যখন তিনি উপলব্ধি করতে সক্ষম হলেন যে, মৃত্যু তার একেবারে সন্নিকটে তখন তিনি তার পরিবারকে বললেন, তোমরা আমার ধনুকে তীর লাগিয়ে দাও। তারা তার কথা মত লাগিয়ে দিলেন। এমতবস্থায় তার ইন্তেকাল হয় তীঁর ধনুক তার হাতে মজবুতভাবে ধরা ছিলো। যে কেউ তা তার হাত থেকে ছুটাতে পারবে না। ইন্তেকালের পর রোমদেশের একটি দ্বীপে তাকে দাফন করা হয়।
    তারিখে দামেস্ক, আল্লামা ইবনুল আসাকির
    ভলিয়ম ২, পৃষ্ঠা ১৭৯

    [[ শিক্ষা ]]
    সাথে তরবারি রাখা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দায়েমি সুন্নাত। তিনি হয়তো তাই করতে চেয়েছেন, মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে রাসূলের একটি সুন্নাতকে জিন্দা করেছেন। আর এমতবস্থায় তার মৃত্যু। কতই না সৌভাগ্যশীল ব্যক্তি তিনি ! আমরা ও রাসূলের এ সুন্নাতকে জিন্দা করবো। এবং এ অবস্থায় যেন আমাদের মৃত্যু হয় সেই ফরিয়াদই জানাবো মহান প্রভুর দরবারে।


    [[ছয়]]

    আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারাক রা. যিনি বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও ইসলামের ভৌগলিক সীমান্তে জিহাদ ফি-সাবিলিল্লাহর জন্য দুই হাজার ছয়শত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছিলেন। যার কিছু পথ পাঁয়ে হেঁটে আর কিছু পথ সওয়ারীর উপর আরোহন করে ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন।

    [[শিক্ষা ]]
    দেশ ভিত্তিক জিহাদের মনোভাব অন্তর থেকে ঝেরে ফেলা এবং পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য তরবারিকে উঁচিয়ে তুলে ধরা।

    [[সাত]]

    যুহায়ের ইবনে কুমাইর রাহিমাহুল্লাহ বলেনল,
    চল্লিশবছর ধরে আমার গোশত খাওয়ার স্বাধ জেগেছে। কিন্তু আমি গোশত খাইনি এজন্য যে,আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, আমার গোশত খাওয়ার স্বাধ মিটাবো রোম বিজয়ের পর ঐ শহরের একটি বকরি দ্বারা।
    কিতাবুল মুদারেক, কাযী ইয়ায থেকে
    খন্ড ৩ পৃষ্ঠা ২৪৯

    [[শিক্ষা ]]
    আল্লাহর দ্বীন কায়েমের তরে নিজের মনের দুনিয়াবী খায়েশাত, আরাম-আয়েশ, ও ভোগ বিলাশকে বিসর্জন দেওয়া। ত্যাগ-তিতিগ্যার ময়দানকে শক্তশালী ও সুদৃঢ় করা। যাতে মনের খায়েশাত পূরণে দ্বীনে বিজয় পিছিয়ে না থাকে। আর আল্লাহর দ্বীনের বিজয় আমাকে তার পরিপূর্ণ তৃপ্তি এনে দিবে।



    [[আট]]

    আহমাদ ইবনে ইসহাক সুলামি রাহিমাহুল্লাহ বলেন , আমি আব্দুল্লাহ ইবনে কাদুস রাহিমাহুল্লাহ এর ঘটনা বর্ণনা করছি । যিনি স্পেনের খ্রিস্টানদের কাছে মরণজয়ী, অকুতোভয়, যোদ্ধা হিসেবে প্রসিদ্ধ। কোন একদিন জনৈক খ্রিস্টান আর ঘোড়া কে পানি পান করানোর জন্য নদীতে নিয়ে গেল। কিন্তু ঘোড়াটি পানি পান করছে না। বরং নদী থেকে বারবার মুখ উঠিয়ে ফেলছে । এমতবস্থায় ঘোড়ার মালিক ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো । কি ব্যাপার পানি পান করছো না কেন ? পানিতেও কি ইবনে কাদুসের চেহারা ভেসে উঠেছে? যার ভয়ে তুমি পানি পান করা ছেড়ে দিয়েছো এবং বার বার মুখ উঠিয়ে ফেলছো ?
    আল-মাশূল ফি জিহাদ পৃষ্ঠা নং ৭৭


    [[শিক্ষা ]]
    যুদ্ধের ময়দানে হতে হবে একজন বীর, বিচক্ষণ, সেনাপতি, খাওফে ইলাহীর তাড়নায় প্রকম্পিত এক বান্দা । যার ইমানি জজবা আর অস্ত্রের ঝংকারে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠে শূলীপূজারীদের অন্তর।


    [[নয়]]

    বদরুদ্দীন আম্মার রাহিমাহুল্লাহ এমন একজন যোদ্ধা সাহাবী ও বীরপুরুষ ছিলেন। যিনি নিজের চাবুকের আঘাতে সিংহকেও বশ করে ফেলতেন। পশুরা তার ভয়ে থরথর করে কাঁপতো। তার এ অসীম বীরত্ব দেখে এক কবি তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে কবিতা রচনা করেন ।
    কবিতার কিছু অংশ:-

    তিনিই তো সেই বীর
    যিনি চাবুক দিয়ে সিংহকে করেছেন শেষ,
    কিয়ামত অবধি থাকবে বাকি
    তার এই বীরত্বের লেশ।


    [[শিক্ষা ]]
    মুক্তির তরে লড়েছে যারা, হয়নি কভু ব্যর্থ, ইতিহাস দেখে শিক্ষা নেয়া,এটাই যথার্থ। মুক্তির তরে লড়েছে মুহাম্মাদ, হটেনি কভু পিছু, তাইতো প্রভু উদবা,শায়বা,আবু-জাহেলের কাছে, করেনি তাঁকে নিচু।

    [[দশ]]

    শাইখ মুহাম্মাদ ফারগালী রাহিমাহুল্লাহ এর ঘটনা। যখনই ইংরেজরা জানতে পারতো যে,শাইখ ফারগালী এ শহরে অবস্থান করছেন তখন তাদের কমান্ডার সেনা ছাউনীতে সাইরেন বাজিয়ে বিপদ সংকেত জানিয়ে দিতো।কারণ
    তার সেনারা ছিলো আত্মঘাতী হামলাতে খুব পারদর্শী।
    আর তিনি ছিলেন মিডিয়া জগতের একজন শক্তিশালী সাংবাদিক ও সমাজ সংস্কারক । জিহাদ ফি-সাবিলিল্লাহর মহলে অন্তরালোকসম্পন্ন মুসলিহ ও মুযাক্কী। তাই তারা তাঁরবপ্রতি এতটা ক্ষিপ্ত ও ভীত ছিলো যে,তারা ঐ যামানায় পুরষ্কার ঘোষণা করেছিলো, যে ব্যক্তি শাইখ মুহাম্মাদ ফারগালীকে জীবিত বা মৃত গ্রেফতার করিয়ে দিতে পারবে। তাকে মিসরীয় টাকায় পাঁচ হাজার জুনাইহনু মুদ্রা হাদিয়া দেওয়া হবে। এবং তাকে সম্মানিত করা হবে।

    [[শিক্ষা]]
    আমাদের ও হতে হবে মিডিয়া জগতের একজন শক্তিশালী সাংবাদিক ও সমাজ সংস্কারক । জিহাদ ফি-সাবিলিল্লাহর মহলে অন্তরালোকসম্পন্ন মুসলিহ ও মুযাক্কী।


    [[এগারো]]

    আহমদ শাহ এর মজলিসে একজন কর্মী ছিলেন । যিনি মোহাম্মদ বানা নামে পরিচিত। তিনি একদা স্বীয় বাহিনী নিয়ে সালাং ঘাঁটিতে আক্রমণ করেন। ফলে শত শত রাশিয়ান গাড়ি ও অস্ত্র মুজাহিদদের কব্জায় চলে আসে এবং শত শত রাশিয়ান সৈন্যকে ওপারে পাঠিয়ে দেন। তখন রাশিয়ান কমান্ডার তার এই অসাধারণ সাহস দেখে তাকে জেনারেল মোহাম্মাদ বানা নামে অবহিত করেন ।

    [[শিক্ষা ]]
    অগ্নি চোখে বারুদ বুকে, উড়িয়ে দে যুদ্ধ জাল, দেখবি শেষে তোদের ভয়ে, পালিয়ে যাবে ভেড়ার পাল।
    আজকে থেকেই দে হাঁকিয়ে, বিন যিয়াদের যুদ্ধ হাঁক, এই হাঁকেরই অগ্নিতাপে, দুশমনেরা নিপাত যাক।


    [[বারো]]

    আব্দুল্লাহ আনাস রাহিমাহুল্লাহ এর ঘটনা । ঘটনাক্রমে কোনো একদিন রাশিয়ান সৈন্যরা তাকে স্বচক্ষে দেখে ফেলে। যেমনটা তারা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। সাথে সাথে তাদের পুরো শরীর কাঁপুনি ধরে যায়।যার কারণে অনেক সৈন্যের হাত থেকে অস্ত্র খসে পড়ে যায়। তখন তাদেরই একজন কমান্ডার বলতে লাগল উনি কি মানুষ না ভিন্নগ্রহের দানব ?


    [[শিক্ষা ]]
    জীবন নদে ঝড় আসিবে, ছিঁড়বে তোমার পাল, তাই বলে কি সত্য পথের, ছেড়ে দিবে হাল?
    একবার কেন শতো লড়ো, হটিয়ো না কভু পিছু, তবেই তুমি সফল মাঝি, মাথা হবে না নিচু।


    [[তেরো]]

    হযরত ফজলু ইবনে যিয়াদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন। একদা আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহিমাহুল্লাহকে শত্রু সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছি। শত্রুর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেললেন এবং কাঁদো কাঁদো স্বরে বললেন , এর চেয়ে অধিক উত্তম আর কোন কাজ হতে পারে না যে, শত্রুর মোকাবেলা করা হবে। অন্য রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে যে, শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য রণাঙ্গনে আগমন করার চেয়ে সর্বোৎকৃষ্ট আর কোন এবাদত নেই । অতপর সরাসরি নিজে স্বশরীরে রণাঙ্গনে উপস্থিত হওয়া তারচেয়েও অধিক উত্তম কাজ ।

    [[শিক্ষা ]]
    কে আছে কোন দলে, সেটা দেখোনা ভাই, সত্য হলে চলো সবাই মর্যাদা লুফে নিতে যাই। বিপদ আসার আগেই সবই এই করিবো পণ,মন্দ কাজে না হয় যেনো কারো আগমন। এমনি করে শেষ হবে ভাই, জীবন স্রোতের মাস, মানলে হুকুম আল্লাহ পাকের তুমিই হবে পাশ।

    [[চৌদ্দ]]

    ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ
    সিয়ারু আলামিন-নুবালা গ্রন্থে হিশাম ইবনে হাসসান রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন।৪/৫৭৮
    کان الحسن أشجع أھل زمانہ ☆

    হাসান রাহিমাহুল্লহু যামানার শ্রেষ্ঠ বীর ছিলেন।
    অন্য রেওয়ায়েতে বর্ণনা আছে
    তিনি অত্যন্ত সুদর্শন, শক্তিশালী, বীর বাহাদুর সুপুরুষ ছিলেন । বীরত্বের জন্য সুখ্যাত ছিলেন ।
    তাই আমিরুল মুজাহিদীন আল-মোহাল্লাব ইবনে আবি সুফরা যখন মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াতেন তখন হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহুকে সামনের কাতারে রাখতেন।
    আর সকল সৈন্যদের বলে দিতেন তোমরা হাসানের অনুগামী হবে। নচেৎ বিপদের সম্মুখীন হবে।


    [[শিক্ষা ]]
    তারা ছিলেন রাতের ইবাদত গুজার আর দিনের ঘোড় সওয়ার। ইলমের ময়দানে মুফাক্কির আর জিহাদের রণাঙ্গনে মুসলিহ। তাদের এ মসরিণ পথে যারা হেঁটেছেন তারাই হয়েছেন দ্বীনের এক ধীমান ওবিদগ্ধ গবেষক। উম্মাহর শফিক ও মুশফিক রাহবার। দ্বীন দরদি ও জন দরদি সা'দিক। তাদের এ পথেই রয়েছে আমাদের মানজিলে মাকসাদ।


    [[পনেরো]]

    ইবরাহীম ইবনে আদহাম রাহিমুল্লাহ এর জীবনের শ্রেষ্ঠ কয়েকটি উক্তি হলো।

    (১)প্রত্যেক সুলতান যে আদেল, ন্যায়পরায়ন না হবে সে আর চুর একই কথা।
    (২)প্রত্যেক আলেম যে পরহেজগার না হবে সে আর হিংস্র বাঘ একই কথা।
    (৩) প্রত্যেক এমন ব্যক্তি যে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সেবক বা গোলাম হবে সে আর কুকুর একই কথা।
    অন্য বর্ণনায় আছে
    প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি যে জিহাদ না করে এবং জিহাদকে অন্যান্য বিধান থেকে পৃথক করে সে আর মুনাফিক একই কাতারের।
    আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১০/১৫১

    [[শিক্ষা]]
    ভোর বিহনে সকল শিশু করে আলোর পণ, তোমার সকল মন্দ কর্মে, ভাঙ্গে তাদের মন। চলো সদা সত্য পথে, কষ্ট যাও সব ভুলে, খোদার রহমত তোমার দিকে আসবে দ্রুত চলে, মানব সেবায় আত্মনিয়োগ পারো যদি করতে,স্বর্গে তোমার আসন হবে, পারবে না কেউ রুখতে



    [[ষোল]]

    ইসমাঈল ইবনে আইয়াশ রাহিমাহুল্লাহ বলেন ।
    لا أعلم أن الللہ خلق خصلة من خصال الخیر إلا وقد جعلھا فی عبد الللہ بن المبارک ☆

    আল্লাহ তায়ালা যত ভালো গুণ সৃষ্টি করেছেন তার সবগুলোই আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারককে দান করেছেন ।
    তিনি ছিলেন জিহাদের ময়দানে সকল সৈন্যদের একমাত্র আইডল ও সুপ্রসিদ্ধ তারকা তুল্য। তাই সবাই তার মতাদর্শ অনুসরণ করে চলতো।



    [[শিক্ষা ]]

    মানব আদর্শ উন্নত হলে সমাজ হবে সুষ্ঠ,কারো কোন লোভ হবেনা আপন নিয়ে তুষ্ট, মানবাদর্শ শুদ্ধ হলে নিরাপদ হবে নারী, খোদার দেয়া আজাব গজব যাবে মোদের ছাড়ি , মানব আদর্শ জাগ্রত হলে,পাল্টে যাবে দেশ, অশ্লীলতা অপকর্ম সব হবে নিঃশেষ, মানবাদর্শ ছেড়ে দিলে মানুষ হবে পশু , কর্ম তাদের এমন হবে পশুর চেয়ে নিচু।


    [[সতেরো]]

    তারিখের কিতাবে বর্ণিত আছে ইমাম আওযায়ী রাহিমাহুল্লাহ ছিলেন অত্যন্ত সাহসী ও শক্তিশালী বীরপুরুষ। জিহাদের ময়দানে তিনি ছিলেন একজন সুকৌশলী জানবাজ মুজাহিদ । তাইতো বলা হতো,
    ইয়ামান বাসীর জন্য যেমন মা'মার,কুফাবাসীর জন্য যেমন সুফিয়ান সাওরী, মদিনাবাসীর জন্য যেমন ইমাম মালেক, মিশরবাসীর জন্য যেমন লাইস ইবনে সাদ,এবং বসরাবাসীর জন্য যেমন হাম্মাদ ইবনে সালামা ঠিক তেমনি শামবাসীর জন্য ইমাম আওযায়ী।
    সিয়ারু আ'লামিন নুবালা ৬/৫৫৬


    [[শিক্ষা ]]
    জন্ম যাদের আজন্ম হয়, তারাই আসল দামি, মরার পরে হাসবে তুমি কাঁদবে জগৎ ভূমি। হয়তো এখন বলবে তুমি, কি করিবো আমি, জন্ম নিয়ে মেহনত ছাড়া কে হয়েছে দামি??? অস্ত্র হাতে গর্জে উঠো, তুমি হে খালদুন, তোমায় নিয়ে ভাববে সবাই, হে জান্নাতী তরুণ।


    [[আঠারো]]

    আমাদের সালাফদের মধ্যে যাদের মূল ব্যস্ততা ছিল ইলম তারা ও সর্বদা জিহাদের জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতেন।যেন প্রয়োজন হলে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়। এর জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ। যিনি সারা জীবন হাদিস সাধনায় নিমজ্জিত ছিলেন তিনিও জিহাদের জন্য সদা প্রস্তুত থাকতেন ।
    ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ এর শাগরেদ আবু হাতিম আল-ওয়াররাক রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ রিবাতের ভূমিতে বসে বসে যখন বুখারী শরীফ লিখতেন তখন তিনি অধিক পরিমাণে জিহাদের সংকল্প করতেন । আর এটা স্পষ্ট যে পূর্ব থেকে যথার্থ প্রশিক্ষণ না থাকায় প্রথমদিনই যুদ্ধ করা যায় না। তাই তিনি পূর্ব প্রস্তুতিস্বরুপ অশ্ব চালনা, তীরন্দাজি,বর্শা, ও তলোয়ার চালনা সবকিছুই প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছেন। এবং ধারাবাহিক চর্চায়ও লিপ্ত ছিলেন।
    জিহাদি কাফেলা আয়িম্মায়ে দ্বীন ৪৮,৪৯ পৃষ্ঠা।



    [[শিক্ষা ]]
    তাদের সময়ে জিহাদ ফরযে কেফায়া ছিলো তারপরও তারা জিহাদের ক্ষেত্রে প্রস্তুতির কোন ত্রুটি করেননি, অথচ বর্তমান এ সময়ে আমাদের উপর জিহাদ ফরয।
    আমরা আকাবীরদের দোহাই দিয়ে দূরে থাকার চেষ্টা করছি। তবে মনে রাখতে হবে আকাবীরগণ আমাদের কবরের জবাব দিয়ে দিবেন না বরংচো আমাকেই দিতে হবে, সুতরাং আকাবীরদের অজুহাত দেখিয়ে পার পাওয়া যাবে না। তাদের অন্যান্য আমল পাহাড় সমপরিমাণ ছিলো তাদের এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা ছাড় দিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু আমার আপনার কী হবে?
    যাদের আমলের পাত্র একেবারেই খালি?

  • #2
    জাযাকাল্লাহ, জাযাকাল্লাহ, অনেক জাযাকাল্লাহ ....প্রিয় ভাই > নুআইম আন-নাহহাম
    আপনার পোস্টটি পড়ে মনটা ভরে গেল...আল্লাহ আপনার মেহনতকে কবুল করুন। আমীন
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment


    • #3
      মাশা আল্লাহ, তথ্যবহুল গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। সকল ভাইদের পড়ার আহবান করছি।
      আল্লাহ আপনার ইলম-আমলে বারাকাহ দিন ও জান্নাতের সবুজ পাখি হিসাবে কবুল করুন।
      মুহতারাম ভাই- আপনি একক মাশওয়াহতে যোগাযোগ করলে ভাল হয়।
      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        জাযাকাল্লাহ। অনেক উপকারী লেখা। ভাই দৈনিক একটা করে লেখা দিবেন। যেন পড়া সম্ভব হয়।

        Comment


        • #5
          আলহামদুলিল্লাহ অনেক উপকারী কথা।
          আল্লাহ পোস্টকারী ভাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
          ইলমে ও আমলে বারাকাহ দান করুন। আমিন
          গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

          Comment


          • #6
            জি মুহতারাম ভাই, আপনার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, অধমকে উৎসাহ দেয়ার জন্য।

            Comment


            • #7
              জাযাকাল্লাহ, শুকরান আঁখি ফিল্লাহ।

              Comment


              • #8
                দুআ চাই মুহতারাম,,,

                Comment


                • #9
                  জাজাকাল্লাহ ভাই! আল্লাহ তায়ালা আপনাকে তার মাকবুল বান্দাদের কাতারে শামিল করে নিন৷ আলহামদুলিল্লাহ আমি এনেক উপকৃত হয়েছি৷ আশা করি কাজ চালিয়ে যাবেন৷ আল্লাহ তায়ালা তাওফিক দান করুন৷
                  হজরত আবু বকর রাঃ বলতেন-
                  لو يعلم الناس ما أنا فيه أهالوا عليَّ التراب
                  “যদি তারা আমার হাকিকত সম্পর্কে অবগত হয়, তাহলে আমার উপর মাটি নিক্ষেপ করবে”


                  Comment


                  • #10
                    জি মুহতারাম ভাই,, দুআ চাই, মনের গহীন থেকে, যখন মনটা উৎফুল্ল থাকে, হাসোজ্জ্যল থাকে, অধমের নামটা নিয়ে,,

                    Comment


                    • #11
                      আমরা ও ওজরগ্রস্ত হলে মুজাহিদীনদের সাহায্য করবো, কথার মাধ্যমে, অর্থের মাধ্যমে, তথ্য দিয়ে, তাদের পরিবার-পরিজনের দেখাশুনা করে, তাদের সংখ্যাকে ভারী করে,মুজাহিদীনের বাসায় আশ্রয় দিয়ে, তাদের ক্যাম্পগুলো পাহাড়া দিয়ে, তারপরও আমরা এ বরকতময় জিহাদে অংশীদার হয়ে থাকতে চাই।



                      আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। পোস্টকারী ভাইকে উত্তম জাযা দান করুন। এরকম লেখা আরো বেশি বেশি চাই, প্রিয়!!
                      "এখন কথা হবে তরবারির ভাষায়, যতক্ষণ না মিথ্যার অবসান হয়"

                      Comment


                      • #12
                        প্রিয় ভাই,, আপনার দুআর গভীরতায় প্রবেশ করতে চাই,,

                        Comment

                        Working...
                        X