Announcement

Collapse
No announcement yet.

বাঁচতে হলে মৃত্যভয়কে জয় করতে হবে

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বাঁচতে হলে মৃত্যভয়কে জয় করতে হবে

    বাঁচতে হলে মৃত্যভয়কে জয় করতে হবে

    প্রিয় ভাই ও বোন!
    দ্বন্দ্ব-সঙ্গাতের এই সংসারে, হানাহানি ও রক্তপাতের এই পৃথিবীতে, জীবনের বড় সত্য এই যে- যে মরতে জানেনা সে লড়তে পারেনা আর যে লড়তে পারে না, তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই । বেঁচে থাকতে হলে তোমাকে এ লড়াই করতে হবে, আর লড়াই করতে হলে মৃত্যুভয় তোমাকে জয় করতেই হবে।

    দেখুন তো সত্য বলছি কিনা?

    ★★মানবজাতির পুরো ইতিহাস এবং সভ্যতার এত শত উত্থান-পতন এ সত্যেরই প্রমাণ। মুসলিম উম্মাহর হাজার বছরের ইতিহাসে এ সত্য যেন আরো বড় সত্য হয়ে সমুদ্ভাসিত। আমরা যখন মৃত্যু ভয় জয় করেছিলাম, আমাদের তলোয়ারে যখন ধার ছিলো, তখন দুশমনের গর্দান ছিলো নরম, শত্রুদের কন্ঠস্বর ছিলো কোমল, নমরুদদের কাঁধ ছিলো ঝোকানো।

    আমরা তখন বীরের মতো লড়াই করেছি, ইজ্জতের জিন্দেগি যাপন করেছি, মর্যাদার জীবন অর্জন করেছি,
    সম্মানের পদে ভূষিত হয়েছি।

    আমাদের খালিদ ইবনে ওয়ালিদ বলতে পেরেছেন,
    ★★শরাবের পেয়ালা তোমাদের কাছে যত প্রিয়, জামে শাহাদাত আমাদের কাছে তার চেয়ে প্রিয়।১,,

    প্রিয় ভাই ও বোন!
    যখন আমাদের অন্তরে মৃত্যুভয় বাসা বেঁধেছে, যখন আমাদের হৃদয়ে আরাম-আয়েশের খায়েশাত জাগ্রত হয়েছে, দু-চোখ আর উর্দিভরা শরীর যখন খাবারের লাজ্জাত চাখতে শুরু করেছে, তখন থেকে আমরা লড়াই করতে ভুলে গিয়েছি, সাহস হারিয়ে ফেলেছি, বিকট শব্দ শুনলে থমকে দাঁড়াই, বিজলীর আওয়াজ শুনলে আঁতকে উঠি, এই বুঝি আমার সব শেষ।

    কিন্তু চরম আক্ষেপের বিষয় হলো,
    এখন কেউ আর আমাদের ভয় করে না, এখন কেউ আর আমাদের স্যালুট জানায় না, এখন আর কারো অন্তরে কাঁপুনি ধরে না, উমরের অনুসারীদের হাঁটার আওয়াজ শুনেও পথ ছেড়ে দেয় না বরং তাদের দাম্ভিকতা বেড়ে যায়।

    আমাদের অবস্থা তো আরো নাজুক!
    আমরা সবাইকে ভয় করি। থরথর করে কেঁপে উঠি। বাড়ির চতুর্পাশ শত্রুর মহড়া, তবুও আবু বক্করের মুখে ছিলো, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
    আমাদের বাড়ির চতুর্পাশ বদ্ধু-বান্ধবে ঘেরা, তবুও শুনা যায় নাফরমানি আর সেচ্ছাচারির সীমালঙ্ঘনতা।

    হযরত সিদ্দিকে আকবর রাদিয়াল্লাহু আনহু সত্যিই বলেছেন- তুমি মৃত্যুর প্রতি আসক্ত হও তোমাকে জীবন দান করা হবে।২,,

    হে আমার যুবক ভাই!
    এসো আমরা লড়তে শিখি, এসো আমরা বাঁচতে শিখি,
    মৃত্যুকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসতে শিখি। তখন দেখবে সত্যের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে, সত্যের সজীবতায় মুগ্ধ হয়েছে ঘরকোণে।

    ★★মানুষ! সেতো বুঝতে চায় না, ভালো ফল পাওয়ার জন্য ভালো বীজের প্রয়োজন! জীবনের সর্বক্ষেত্রে এটা সত্য। যেমন ব্যক্তির জীবনে তেমনি পরিবার, সমাজ ও জাতির জীবনে। আর শাহাদাত সেতো জান্নাতের সবুজ বীজ। তুমি হলে সেই বীজের বুপনকারী সুতরাং কেন তুমি এত সহজেই তা হাত ছাড়া করবে?★★

    প্রিয় যুবক ভাই! দেখো, প্রকৃতি কত নির্মম! সামান্য নিদ্রার কি কঠিন প্রতিশোধ! সামান্য অবহেলার কি করুণ দশা ! যুগ যুগের বিনিদ্র রজনীর জ্ঞান সাধনা! যুগ যুগের বিনিদ্র রজনীর আত্মত্যাগ, তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিলো! অন্য জাতির হাতে তুলে দিলো। তুমি এতো সহজেই ছেড়ে দিবে তাকে??

    না, না, ভাই! এতো সহজে ছেড়ে দিবো না তাকে আমরা।
    তাহলে একটু শোন! পৃথিবীর চিরায়িত একটা অভ্যাসের কথা, এটা নিশ্চিত তোমার ভগ্ন হৃদয়ের খোরাক যোগাবে, তুমি যে সত্যিই সাহসী এর প্রমাণ মিলবে, তুমি যে সত্যিই মৃত্যুভয় উপেক্ষাকারী একজন তরুণ, এর দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে, এর নজীর সৃষ্টি হবে।

    হে আমার ভাই! আবারো তোমাকেই বলছি,
    আরেকটু মনযোগ দিয়ে শোন!!

    ★★পৃথিবীর যে কোন মাতৃআঁচল সন্তানকে মমতার শীতলতা দান করে, তবে কোন মাতৃআঁচলে মমতার সঙ্গে দুর্বলতারও মিশ্রণ ঘটে যায়।যে মায়েরা তাদের বুকের মাণিককে জিহাদের ময়দানে ছুঁটে যেতে উদ্ভুদ্ধ করতেন, তাদের আঁচলে কি মমতা ছিলো না! যে মায়েরা তাদের কলিজার টুকরো সন্তানকে রণাঙ্গনে সাঁজিয়ে দিতেন, তাদের আঁচলে কি মমতা ছিলো না!
    আর যে মা তাদের সন্তানকে আঁচলের নিচে লুকিয়ে রাখতে চান সারা জীবন। চূড়ান্ত বিচারে এ মায়ের মমতা পরাস্ত হয়, আর সন্তানের জীবন হয় ক্ষতিগ্রস্থ।৩,,

    হে আমার যুবক ভাই! মায়ের মমতাকে তুমি পরাস্ত করতে পারলে? একটুখানি ভোগ ত্যাগের জন্য, একটুখানি মায়া বিসর্জনের জন্য, আহ! কত নির্দয় তুমি, কত পাষাণ তোমার আত্মা! অথচ মায়ের পবিত্র মহব্বত, স্নেহের ছাঁয়া, তোমার জন্য ওয়াছা করে দিয়েছেন। অথচ মায়ের পবিত্র আঁচল আর নেক দুআ তোমার জন্য শরাহ করে দিয়েছেন।

    ★★হে আমার যুবক ভাই! তোমার দেহ ও শরীরের চাহিদা, কলব ও রুহের চাহিদা, হৃদয় ও আত্মার চাহিদা, চিন্তা ও চরিত্রের চাহদ পূরণের জন্যই রবের পক্ষ হতে পৃথিবীর এ মহাআয়োজন! বিপুল এ সমাহার! সুতরাং তুমি রবের প্রতি কৃতজ্ঞ হও, রবের ভালোবাসাকে প্রষ্ফুটিত করে তুলো, রবের বিধানকে সমুন্নিত করে তুলো, মৃত্যুভয়কে জয় করে দুর্বার গতিতে সম্মুখ পানে এগিয়ে চলো।

    হে আমার যুবক ভাই! অনুসন্ধানিৎসু দৃষ্টিতে তাঁকালে
    তুমি দেখতে পাবে ইতিহাসের অথৈ চুরাবালিতে লুকিয়ে
    থাকা হাজারো সাহসী যুবকের গল্প, হাজারো বীর পুরুষের আত্মকথা, হাজারো সালিহ ও সাখী লোকদের বীরত্বগাঁথা ইতিহাস। যা আমার তোমার প্রেরণার উৎস, জীবনের চাকা ঘুরানোর উত্তম খোরাক ।

    এমনই একজন হলেন,,
    সাইয়্যেদ শহীদ কুতুব রহমতুল্লাহি আলাইহি।৪,,
    উনাকে যখন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হলো। তখন তাকে মুসলিম নামধারী অনৈইসলামী আদর্শের শাসক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। আপনি তার সম্পর্কে কি বলেন? তখন তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন, সে তো কাফের!

    এই অবস্থায় তার সাথে থাকা কয়েকজন ছাত্র তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। শাইখ! কেন আপনি বিচারালয়ে এত স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে গেলেন? কথাগুলো একটু কৌশল করে বললে হয়তো বিচারের রায় আমাদের পক্ষে হতো। শাইখ বললেন, আমি দুটি কারণে স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে বাধ্য হয়েছি।

    এক.
    বিষয়টি ছিলো,আকীদা ও বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত । এক্ষেত্রে কোনো লুকোচুরি চলে না। শরীয়ত আমাকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেবে না । কোন দ্ব্যর্থবোধক কথা বললে আমি কুরআনের বিরুদ্ধচারণ করলাম। আর এটা কখনো আমার দ্বারা হতে পারে না।

    দুই.
    যদি আমি উত্তরে বলতাম। আলহামদুলিল্লাহ!! লোকটি অনেক ভালো। অথবা যদি বলতাম শাসক হিসেবে লোকটি মন্দ নয় । তখন এ কথা হতো আমার ঈমান ও আদর্শের সঙ্গে প্রতারণা ।

    ★★আর কোনো মুমিনবান্দার পক্ষে ঈমান ও আদর্শের প্রশ্নে এ ধরনের লুকোচুরি ও দ্বিমুখীতা জায়েজ নয়।

    হে আমার যুবক ভাই!
    এ সমস্ত লোকদের আত্মোৎসর্গের মাধ্যমেই সাধারণ লোক দ্বীনের প্রতি প্রভাবিত হয় । দার্শনিক সুলভ তাত্ত্বিক আলোচনা ও ওয়াজে খুব কমই প্রভাবিত হয়। ত্যাগের নাযরানা মানুষকে বেশি প্রভাবিত করে এবং ত্যাগের ময়দানে এসে বুক টান করে দাঁড়াতে শিখে।

    ★★ এ ধরনের আত্মউৎসর্গ আল্লাহ রাসূলের ভালোবাসাকে অমলিন করে তুলে। এ ধরনের আত্মত্যাগ ও আদর্শের প্রশ্নে আপোষহীন হওয়াই আল্লাহর কাম্য। কিন্তু এর বিপরীতে নিরাপদে, নিশ্চিন্তে বসে শুধু কিতাবাদি অধ্যায়ন করলে, সত্য বলা থেকে পলায়নরত থাকলে, জিহাদের ময়দানে আত্মত্যাগ বিসর্জনকারী না হতে পারলে, মৃত্যুভয় জয় করতে না পারলে ইসলামের বিজয় পিছিয়েই থাকবে ।ইসলামের দাওয়াতের ধারা সীমিত থাকলে তার ফলাফল হয়ে দাঁড়াবে বিরাট শূন্য।

    ★★কিন্তু দাওয়াত ও দ্বীনের কার্যকারিতা তখনই অর্থবহ হবে যখন দ্বীনের দায়ীরা দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোন মুরতাদ ও তাগুত শাসকের সামনে মাথা নত করবে না, মৃত্যুকে ভয় পাবে না বরং শরীরের তাজা খুন প্রবাহিত করবে।

    তাহলে হবে কি? তুমি হবে সার্থক, নিছকই সার্থক।
    কারণ জান্নাতী এ বসন্ত সবার জীবনে আসে না, যেমনভাবে রবের দিদার পাওয়া সবার পক্ষে জুটে না।

    তথ্যসূত্রঃ
    ___________________
    ১.المصرة الوقايع
    ২. আন-নিদা ম্যাগাজিন
    ৩.আত্মার আকুতি
    ৪.তাফসীরে সূরা তাওবা

  • #2
    মাশা আল্লাহ, অনেক উপকারী পোস্ট।

    ★★তুমি মৃত্যুর প্রতি আসক্ত হও তোমাকে জীবন দান করা হবে।★★
    -হযরত সিদ্দিকে আকবর রাদিয়াল্লাহু আনহু

    ★★শরাবের পেয়ালা তোমাদের কাছে যত প্রিয়, জামে শাহাদাত আমাদের কাছে তার চেয়ে প্রিয়।★★
    -হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      শুকরান আখি,, ফিল্লাহ

      Comment


      • #4
        আলহামদুলিল্লাহ, উপকৃত হলাম। জাযাকাল্লাহ।
        নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ রইল ভাই।
        ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

        Comment


        • #5
          মুহতারাম ভাই,, দুআ হলো এ পথের রুহ, সুতরাং রুহকে সতেজ করতে আপনাদের একটু ফোটা চোখের জলে ভাগ বসাতে চাই
          [@নুআইম আন-নাহহাম, আপনাকে একক মশওয়ারাহতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল।-মডারেটর]

          Comment


          • #6
            ভাই,, পরামর্শ করে জানাবো ইনশাআল্লাহ,

            Comment


            • #7
              শরাবের পেয়ালা তোমাদের কাছে যত প্রিয়, জামে শাহাদাত আমাদের কাছে তার চেয়ে প্রিয়।১,,


              আল্লাহ তাওয়ালা আমাদের সেই সাহাবিদের মতজাগ্রত ইমানের অধিকারি হওয়ার তাওফিক দান করুন।

              Comment


              • #8
                আল্লাহ পোস্টকারী ভাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
                লেখনি নিয়মিত চালিয়ে যাবেন আখিঁ!!
                "এখন কথা হবে তরবারির ভাষায়, যতক্ষণ না মিথ্যার অবসান হয়"

                Comment


                • #9
                  Originally posted by জুবা আহমাদ View Post
                  শরাবের পেয়ালা তোমাদের কাছে যত প্রিয়, জামে শাহাদাত আমাদের কাছে তার চেয়ে প্রিয়।১,,


                  আল্লাহ তাওয়ালা আমাদের সেই সাহাবিদের মতজাগ্রত ইমানের অধিকারি হওয়ার তাওফিক দান করুন।
                  আমীন

                  Comment


                  • #10
                    Originally posted by নুআইম আন-নাহহাম View Post
                    মুহতারাম ভাই,, দুআ হলো এ পথের রুহ, সুতরাং রুহকে সতেজ করতে আপনাদের একটু ফোটা চোখের জলে ভাগ বসাতে চাই
                    [@নুআইম আন-নাহহাম, আপনাকে একক মশওয়ারাহতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল।-মডারেটর]
                    [SIZE=4]জ্বী ভাই! ভাইদের ডাকে সাড়া দিয়ে একক মশোয়ারাতে যোগাযোগ করুন। অর্থাৎ একক মশোয়ারা লেখা থ্রেডসে গিয়ে পোস্ট দিন।/SIZE]
                    আসুন! নববী মানহাযে শান্তির জন্য কাজ করি!!

                    Comment

                    Working...
                    X