Announcement

Collapse
No announcement yet.

"এক আত্মত্যাগী দরবেশের গল্প।"

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • "এক আত্মত্যাগী দরবেশের গল্প।"

    "সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ হাসসান রহিঃ।"
    এক অকুতোভয় দরবেশের নাম।তিনি প্রকৃত অর্থেই একজন দরবেশ ছিলেন এবং তিনি মুসলমানদের জিহাদের আমিরও ছিলেন।চলুন ফ্লাশব্যাকে ফিরে যায়।

    তখন উসমানী খিলাফত ঘুষ,দূর্নীতি,জিনা,ব্যভিচার সকল প্রকার অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডে জড়িত।আর তাই আল্লাহ তাদের উপর কাফিরদের দ্বারা সৃষ্ট লাঞ্চনা চাপিয়ে দিলেন।একের পর এক মুসলিম ভূ-খন্ড গ্রাস করে নিচ্ছে ব্রিটেন,ফ্রান্স,ইতালি,রাশিয়াসহ একেক কাফের সাম্রাজ্যগুলো।

    উসমানী খিলাফত তখন পতনের দ্বারপ্রান্তে। সমস্ত জৌলুশ হারিয়ে পতনের শেষপ্রান্তে দাড়িয়ে রয়েছে অসহায় বৃদ্ধের মত।আর সেই সময়টাতেই সোমালিয়ার উপর ঝাপিয়ে পড়লো পর্তুগিজ ও আবিসিনিয়ান খ্রিস্টান জোট এবং অন্যদিকে ব্রিটিশ ও ইতালির ক্রুসেডার বাহিনী।

    সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসসান একদিন একটা গ্রামের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং দেখলেন খ্রিস্টান সৈনিকেরা মুসলিম শিশুদেরকে বাইবেল শিক্ষা দিচ্ছে। তিনি একটি শিশুকে ডাক দিলেন এবং নাম জিজ্ঞেস করলেন।শিশুটি বললো "জন ফাদার।" তখন সাইয়্যেদ তার আসল নাম জানতে চাইলেন শিশুটি উত্তর দিল "মুহাম্মাদ"। সাইয়েদ আব্দুল্লাহ হাসসান খুবই মর্মাহত এবং ব্যথিত হলেন। তিনি সেখানকার লোকজনদেরকে ডেকে বললেন " তোমরা কি দেখছো না মানুষ কিভাবে খ্রিষ্টান হয়ে যাচ্ছে। "

    তখন তিনি এক বৃটিশ সৈনিকের দিকে পাথর ছুড়ে মারলেন এবং বললেন "হে আল্লাহ!আজকে আমি এইটুকুরই সামর্থ্য রাখি।"
    তখন বৃটিশ সৈনিকটা জানতে চাইলো "ওই লোকটা কেন আমাকে পাথর ছুড়ে মারলো?"
    লোকজন বললো "তিনি একজন পাগল মানুষ।"

    এরপর কিছু ধর্মপ্রাণ যুবকদেরকে নিয়ে তিনি সেই গ্রাম ত্যাগ করলেন এবং পাশের সব গ্রামে গিয়ে লোকজনকে আগ্রাসী শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য অনুপ্রেরণা দিতে শুরু করলেন।

    একটা পাথর দিয়ে যে জিহাদের সূচনা করলেন সাইয়েদ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ হাসসান সেই জিহাদ পরবর্তীতে এক সশস্ত্র জিহাদের রূপ ধারণ করলো।ইতিহাসে যেটা দরবেশ আন্দোলন নামে পরিচিত।

    আর তার এই প্রচেষ্টা বৃহত্তর পূর্ব আফ্রিকাতে বৃটিশদের লক্ষ্য অর্জনে চরম বাধার সৃষ্টি করে।তিনি এমন এক সময় তাদের প্রতিহত করেছিলেন যখন বৃটিশ সাম্রাজ্য তার শক্তির সর্বোচ্চ চূড়ায় অবস্থান করেছিল।আর তিনি শুধু বৃটিশদের বিরুদ্ধে নয় বরং পাশাপাশি তাদের মুরতাদ সহযোগী,ইটালিয়ান ও আবিসিনিয়ান খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধেও তিনি লড়াই করেছিলেন।

    সোমালিয়াতে আবিসিনিয়ান সাম্রাজ্য বিস্তারের ধারা ও ক্রুসেডারদের আক্রমণ ছিল একটি মিশনারী তৎপরতা যা সাইয়েদ আব্দুল্লাহ হাসসানের নেতৃত্বে বৃহৎ গনজাগরণের মুখোমুখি হয়েছিল।আর সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ বহন করেছিলেন জিহাদের পতাকা আর একটি সামরিক অপারেশনের মাধ্যমে তিনি ক্রুসেডার বাহিনীকে নিরস্ত্র করে পরাজিত করেছিলেন যেটা দীর্ঘ ২২ বছর স্থায়ী ছিল।"

    এখন আমি জানতে চাই আমাদের দেশের যেসকল রাহবারেরা নিজেদেরকে দূর্বল আর অসহায় বলে দায়িত্ব থেকে দূরে থাকতে চায়,তারা কি সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ হাসসান থেকেও বেশি দূর্বল।তিনি তো ছিলেন এক দরিদ্র দরবেশ যার অর্থ,বিত্ত,খ্যাতি কিছুই ছিল না।কিন্তু আমাদের দেশের কতক তো নিজেরাও স্বীকার করে তারা কোটিপতি এবং তাদের মিলিয়ন মিলিয়ন অনুসারী রয়েছে।তারা কি পারে না আব্দুল্লাহ হাসসানের মত আগ্রাসীদেরকে রুখে দিতে।কোনদিক থেকে তাদের কম আছে।ইতিহাসে এমন কোনো নজির নেই যে একজন আলেম আগ্রাসী শত্রুর বিরুদ্ধে ময়দানে এগিয়ে গিয়েছে আর যুবকরা তার সঙ্গ দেয়নি।যুবকরা তো অবশ্যই মরণপণ লড়াই করে কিন্তু তারপরও তাদের নামে ইতিহাস লেখা হয়না যেমনটা লেখা হয়েছে ইমাম শামিল,শায়খ উমর আল মুখতারের নামে।কারণ যুবকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা এবং জিহাদের পথে পরিচালিত করার জন্য প্রয়োজন উমর আল মুখতারের মত একজন আত্মত্যাগী নেতা।

    পরিশেষে আমাদের দেশের নামধারী রাহবারেরা আব্দুল্লাহ হাসসান,ইমাম শামিল,উমর আল মুখতার থেকে অনেক বেশি সুবিধাজনক স্থানে থাকলেও তারা কিছুই করতে পারবে না।কারণ তারা তাদের বিলাসী জীবন ত্যাগ করতে পারবে না।আর অবশ্যই তারা ছিলেন ঈমানের বলে বলীয়ান এবং আপন রবের প্রতি তাদের ছিল দৃঢ় বিশ্বাস যার কোনোটাই আমাদের নেই।

    তারা কি এখনও সাইয়েদ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ হাসসান থেকে শিক্ষা নিবে না?
    ক্বিতাল ব্যতীত দ্বীন অসম্পূর্ণ -ড.আব্দুল্লাহ আযযাম রহিঃ!!

  • #2
    এ দেশের যুবকদের অন্তরে জিহাদের স্পৃহা আছে, জিহাদের প্রতি তাদের আগ্রহ কম নয়। শুধু পরিমার্জিত করে বাস্তবায়ন করার জন্য এ রকম দরবেশ দরকার।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ, শিক্ষণীয় পোস্ট। তবে হাওয়ালাসহ লিখতে বেশী ভাল হয়। জাযাকাল্লাহ
      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

      Comment


      • #4
        মাশাআল্লাহ ভাই সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন | এই ইতিহাস গুলো আমাদের আরো বেশি বেশি জানতে হবে তাহলেই কি করণীয় !? কী করা উচিত !? তা বুজা সহজ হয়ে যাবে | বিভিন্ন পরিকল্পনা মাথায় আসতে থাকবে ইনশাআল্লাহ |

        যখন যেই যামানায় থাকে ,ঠিক ওই সময়ের জালিমের বিরুদ্ধে কথা বলা সবচেয়ে কঠিন কাজ অথচ আজকে ঠিকই আমরা পূর্ববর্তী জালিমের বিরুদ্ধে কথা বললে সমাজের খারাপ লোকটিও আপনাকে কিছু বলবে না | কিন্তু সময়ের জালিমের বিরুদ্ধে কথা বলা কঠিন |

        তবে মনে রাখতে হবে , ইতিহাস শুধু জানলেই হবে না !
        শুধু জালিমের বিরুদ্ধে কথা বললেই হবে না |

        তাৎক্ষণিকভাবে জালিমের বিরুদ্ধে কিছু করতে না পারলেও এই সাইয়েদ মুহাম্মদ এর মতো অফলাইনে জিহাদের প্রস্তুতি নিতে হবে |

        বিইযনিল্লাহ
        ​​​​​​
        Last edited by Rakibul Hassan; 4 weeks ago.

        Comment


        • #5
          খুব সুন্দর অনুপ্রেরনাদায়ক একটি গল্প। জাযাকাল্লাহ খাইরান ভাই
          শেয়ার করার জন্য এই গল্পের সোর্স / সুত্র জানতে পারলে ভালো হত

          Comment

          Working...
          X