Announcement

Collapse
No announcement yet.

অন্তরের শিফাদানে প্রিয় হাবিবের অনুস্বরণ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • অন্তরের শিফাদানে প্রিয় হাবিবের অনুস্বরণ

    অন্তরের শিফাদানে প্রিয় হাবিবের অনুস্বরণ

    ★প্রিয় যুবক ভাই!
    আমরা এক দূষিত সমাজে বাস করি। এই সমাজের রন্ধে রন্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম, অনাচার আর অমানবিকতা। চারিদিকে জরাজীর্ণতার ছড়াছড়ি। এরই মাঝে আবার মিথ্যাসত্যের উদ্ভাবনী। সমাজ ও সমাজ পতিদের, রাষ্ট্র ও রাষ্ট্র নীতিদের চাপিয়ে দেয়া রুলসের ভেতর দিয়ে যেতে যেতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। স্বস্তির নিঃশ্বাস পাওয়ার অভিনয়ে মাঝে মাঝে ভীষণ আর্তনাদে প্রলাপ বকি।

    এর ভেতর থেকেই মাঝে মাঝে এমন কিছু চরিত্র উঠে আসে যারা স্রোতের বিপরীতে চলতে ভালোবাসে। কথা বলে ওঠে শত অনিয়মের ফাঁকে। শত নিষেধাজ্ঞার মাঝে। এরাই যেন ঘুর অমানিশার মাঝে আলোর বিচ্ছুরণ। এরাই যেন ঘন আঁধারের মধ্যে জোনাকির আলোড়ন । আশাহীন হৃদয়ের নির্ভরতার প্রতীক। চৈত্রের ধহনে এক পশলা বৃষ্টির শুভাগমন।★★

    সমাজের প্রয়োজনে জেগে ওঠা এই মানুষগুলোর সম্মিলিত প্রয়াসে নিভু নিভু আলো ধীরে ধীরে রূপ নেয় প্রদীপ্ত অগ্নিশিখায়। অগ্নিলাভায়। জ্ঞানের পূন্যতায়। [00]যার দরুন বিদূরিত হতে থাকে অসুভ আঁধার। চারপাশে বইতে থাকে পরিবর্তনের বাসন্তী বাতাস। সেই বাতাসের ছুটে চলায় ভেঙ্গে পড়ে সব জড়তা আর সংকীর্ণতার দেওয়াল।

    ★★কিন্তু মানুষ হিসেবে আমাদের অবশ্যই জানা উচিত। এই দুনিয়া আমাদের জন্য কখনোই নির্মল আর নির্ঝঞ্ঝাট হবে না। জীবনের একটা পরম বাস্তবতা হলো- জীবন কখনোই সোজা ও সমান্তরাল হয় না। এই জীবন হলো দুঃখ-ক্লেশ-কষ্ট দিয়ে ভরা। ওয়াল বা'ছা ও ওয়াদ দর'র এর আবরণে ঢাকা।

    প্রিয় যুবক ভাই!
    বাস্তবতার নিরীখে বলছি। দুনিয়ার সবাইকে আপনি কখনো আপনার বন্ধু হিসেবে পাবেন না। আপন হিসেবে দেখবেন না। হিতাকাঙ্খী হিসেবে চিনবেন না। আত্মীয়তার বন্ধনে কেমন জানি চির ধরেছে। এটাই হলো স্বকীয়তা । এটাই হলো হাশরের ময়দানে ইয়া নাফসি! ইয়া নাফসি! ঘটার প্রতিফলনতা।

    যাঁচাই করুন সত্য বলছি কিনা! তাহলে আসুন-
    পৃথিবীর সবচাইতে পবিত্র, সবচাইতে তাকওয়াবান, সবচাইতে নিষ্ঠাবান, মানবতার মুক্তির অগ্রনায়ক প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত নিয়ে কিঞ্চিৎ মুযাকারা করি।

    ১.তায়েফবাসীর আঘাতের কথা মনে আছে? ২.মাদয়ান অধিভাষীদের কটু উচ্চারণের কথা?
    ৩.মক্কার কুরাইশের আচরণ?

    ★★চারপাশের কাউকেই তিনি কখনো বন্ধু হিসেবে পাননি অথচ তিনি ছিলেন আল-আমিন। সবার কাছে ন্যায় ও আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠা লোকটিরও সমালোচক ছিলো। নিন্দুক ছিলো। সমাজের মানুষের সমালোচনার তীর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিদ্ধ করতে ছাড়েনি। নবীজি যখন সমালোচকদের দ্বারা ক্ষতবিক্ষত। তাঁর হৃদয়সত্তা যখন নিন্দুকদের দ্বারা ভারাক্রান্ত। তখন আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'য়ালা বলেন-

    ولقد نعلم انك يضيق صدرك بما يقولون فسبح بحمد ربك وكن من الساجدين،

    আর আমি তো জানি তারা যা বলে তাতে আপনার অন্তর ক্ষতবিক্ষত হয় সুতরাং আপনি আপনার রবের প্রশংসায় তাসবিহ পাঠ করুন আর সেজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হোন।[১]


    প্রিয় যুবক ভাই!
    স্বয়ং নবীজীকে যেখানে সমালোচনার ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছে সেখানে আপনি বা আমি কিভাবে ধরে নিতে পারি যে আমাদের সমালোচক থাকবে না? দ্বীনের দ্বায়ী হবো আর আমাদের পেছনে কুৎসা রটনাকারী থাকবে না? তাওহিদের তবকায় আরোহীত হবো আর আমাদেন পিছুটানকারী থাকবে না?

    ★সবকিছুরই একটা শান আছে, সব পরিস্থিতিরই একটা মান আছে, পাথর ছাড়া ওজনের পাল্লা পাল্লাই না। রক্ত মাংশ ছাড়া কোন প্রাণ প্রাণীই না। তেমনই দুনিয়াবী ঝঞ্ঝাট ডিঙ্গানো ছাড়া কোন মুমিন মুমিনই নয়। হাওয়ায়ী ঝড় কেটে সম্মুখপানে অগ্রসর হওয়া ছাড়া কোন যুবক যুবকই নয়।

    বস্তুত এটাই হলো জীবন।
    কিন্তু অন্তরের শিফা লাভের জন্য কি করা উচিৎ।আল্লাহ তাআলা তা আমাদের শিখিয়ে দিচ্ছেন।

    কিছু জায়গায় পাল্টা গাত-পদাঘাতে অন্তের ক্ষত শুকায় না। বরং এর জন্য প্রয়োজন প্রভুর একান্ত সান্নিধ্য আর তা হলো তাসবীহ-তাহলীল পাঠে আত্মনিমগ্ন হওয়া। এটাই আয়াতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করা হয়েছে।

    ★★সেজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে বলেছেন
    অর্থাৎ সালাত আদায় এতেও রয়েছে ক্ষতবিক্ষত অন্তরে দুঃখ সারানোর উপশম। ভগ্নহৃদয় পুনর্নির্মাণের মহৌষধ।

    নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও আল্লাহর বাতলে দেওয়া উপায়ে হৃদয়কে প্রশান্ত করেছেন। মানুষের অযাচিত সমালোচনায় যখন তার হৃদয় বেদনার ভারে নুইয়ে পড়তো তখন তিনি বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সালাতের জন্য ডাকতেন আর বলতেন বিলাল সালাতের মাধ্যমে আমাদের অন্তরকে প্রশান্ত করে দাও।

    গভীর রাতে মা আয়েশার সঙ্গ ত্যাগ করে মসজিদে নববীর কোণে সালাতে দাঁড়িয়ে পড়তেন। এদিকে নিশিরাতের জোনাকিগুলো তিলাওয়াত শুনতে উপচে পড়া ভীড় করতো। উড়াউড়ি হুড়োহুড়ি বন্ধ করে দলবেদে ঝিঝিপুকাগুলো খেঁজুর পাতায় বসে থাকতো। এর ভিতরেই মা আয়েশার আগমণ। ভুল করে আজ তিনি জান্নাতুল বাকিতে যাননি। প্রিয় স্বামীর মধুর তিলাওয়াত শুনতে শুনতে পায়ে ব্যথা শুরু গেছে । আম্মাজান বসে পড়েছেন। হয়ত সালাত শেষ হয়ে যাবে আর আমিও চলে যাবো কিন্তু না আল্লাহর প্রিয় হাবিব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা বাকারা শেষ করে সূরা আল-ইমরান শুরু করেছেন। আম্মাজান ভেবেছেন হয়ত এ সূরাই শেষ। কিন্তু তাও হলো না।

    ★আম্মাজান তাকিয়ে দেখেন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পাঁ মোবারক ফোলে লাল হয়ে গেছে। গোছাদুটো উটের কুজের মত হয়ে গেছে। অবশেষে আম্মাজান বাধ্য হয়ে ছোট্ট কুটিরে ফিরে গেলেন কিন্তু প্রিয় নবীজি সালাতে দাঁড়িয়ে রইলেন।★

    প্রিয় যুবক ভাই!
    এ হলো আমাদের নেতার অবস্থা সুতরাং একটু ভাবুন তো! তাঁর সৈনিক হিসেবে আমাদের কতটুকু করা প্রয়োজন ছিলো? তিনি তো গোনাহমুক্ত। কিন্তু আমরা! গোনাহযুক্ত পাপী সৈনিক। গোনাহে লিপ্ত নির্লজ্জ, বেহায়া বান্দা। তাঁর অন্তর শিফাতে ভরপুর। কিন্তু আমাদের অন্তর গোনাহের কালো বিশ্রী দাগে ভরপুর। তবুও আমাদের মাঝে চিন্তার কোন লেশমাত্র নেই!

    ★পরিশেষে আবারো স্বরণ করিয়ে দিচ্ছি-
    যখন কেউ আপনার নামে কুৎসা রটাবে। অনর্থক আপনার নামে সমালোচনা করবে। অদৃশ্য কথার আঘাতের তীর ছুঁরবে।গর্দানে তুহমত আর হিংসার তলোয়ার চালাবে তখন আপনি ধৈর্যহারা হবেন না। হতবিহ্বল হয়ে পড়বেন না।

    ★★সবর করবেন। কেমন সবর?
    ইয়াকুব আলাইহিস সালাম এর সাথে সাদৃশ্য রেখে-
    فصبر جميل والله المستعان على ما تصفون
    সর্বোত্তম ধৈর্য্য আর এ বিষয়ে আল্লাহই আমার সহায হবেন।[২]

    অবশ্যই ফল পাবেন।

    ★★দুআ করবেন। কেমন দুআ?
    যাকারিয়া আলাইহিস সালাম এর বাক্যের সাথে মিল রেখে-
    ولم اكن بدعائك رب شقيا
    হে আমার বর! আমি তো কখনোই তোমাকে ডেকে ব্যর্থ হইনি।[৩]

    শুকরিয়া আদায় করুন।


    ★★প্রতিউত্তরে আমার আপনার রব বলবেন-

    و كان حقا علينا نصر المؤمنين
    মুমিন বান্দাদের সাহায্য করা আমার কর্তব্য।[৪]

    হে আমার বান্দা! এতই করে যেহেতু তুমি আমার সান্নিধ্য গ্রহণ করতে চাচ্ছো যাও তোমাকে গ্রহণ করে নিলাম। হে আমার গোলাম! এতই করে যেহেতু আমার রহমত আর বরকতের আশা করছো যাও খাজানা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিলাম। হে আমার বন্ধু! এতই করে যেহেতু নুসরত আর গায়েবি মদদের তামান্না পোষণ করছো যাও বিজয় তোমাদের জন্য অবধারিত করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!!

    প্রিয় যুবক ভাই!
    এর জবাবে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলবো। আমার তো মনে হচ্ছে তোমার অবস্থাও তাই হবে! সুতরাং এ ছোট্ট আমলটির বিনিময়ে আমরা কি রবের শ্রুতিমধুর ঐশীবাণী শুনতে চাই না? অন্তরের শিফালাভে ধন্য হতে চাই না?★★

    তাই যদি না হয়, প্রভুর পক্ষ হতে শিফা না পাওয়ার অপরাধ আমরা নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো তো? জনম জনম ধরে এর খেসারত দিতে পারবে তো? কক্ষনোই না, কক্ষনোই না।

    ★তাহলে আসুন! এখন থেকেই আমরা এর উপর আমল শুরু করে দেই।

    প্রমাণাধি__________________________

    ১.সূরা হিজর, আয়াত নং ৯৭.৯৮
    ২.সূরা ইউসুফ,আয়াত নং ১৮
    ৩.সূরা মারযাম, আয়াত নং০৪
    ৪.সূরা রুম আয়াত নং ৪৭
    00. তারা হলেন প্রিয় মুজাহিনীনে কেরাম।

  • #2
    এক কঠিন বাস্তবতা!

    ★★কিন্তু মানুষ হিসেবে আমাদের অবশ্যই জানা উচিত। এই দুনিয়া আমাদের জন্য কখনোই নির্মল আর নির্ঝঞ্ঝাট হবে না। জীবনের একটা পরম বাস্তবতা হলো- জীবন কখনোই সোজা ও সমান্তরাল হয় না। এই জীবন হলো দুঃখ-ক্লেশ-কষ্ট দিয়ে ভরা। ওয়াল বা'ছা ও ওয়াদ দর'র এর আবরণে ঢাকা।★★
    আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদেরকে সবরকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন ও জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিকারী করুন।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      [QUOTE=Munshi Abdur Rahman;110103]
      আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদেরকে সবরকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন ও জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিকারী করুন।
      [/QUOTE
      আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল ! আল্লাম্মান নুর!

      Comment


      • #4
        হে আমার বান্দা! এতই করে যেহেতু তুমি আমার সান্নিধ্য গ্রহণ করতে চাচ্ছো যাও তোমাকে গ্রহণ করে নিলাম। হে আমার গোলাম! এতই করে যেহেতু আমার রহমত আর বরকতের আশা করছো যাও খাজানা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিলাম। হে আমার বন্ধু! এতই করে যেহেতু নুসরত আর গায়েবি মদদের তামান্না পোষণ করছো যাও বিজয় তোমাদের জন্য অবধারিত করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!!



        মাশা-আল্লাহ! জাযাকাল্লাহ!
        কখন যে পড়া শেষ হয়ে গেল টেরও পেলাম না। প্রতিটা বাক্য অন্তরের শিফাদান হলো যেন। প্রতিটা শব্দ হৃদয় ছুঁয়ে গেল। আল্লাহ আপনার কলমে বারাকাহ দান করুন, আমীন।

        Comment


        • #5
          Originally posted by রাইহান মাহমুদ View Post
          হে আমার বান্দা! এতই করে যেহেতু তুমি আমার সান্নিধ্য গ্রহণ করতে চাচ্ছো যাও তোমাকে গ্রহণ করে নিলাম। হে আমার গোলাম! এতই করে যেহেতু আমার রহমত আর বরকতের আশা করছো যাও খাজানা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিলাম। হে আমার বন্ধু! এতই করে যেহেতু নুসরত আর গায়েবি মদদের তামান্না পোষণ করছো যাও বিজয় তোমাদের জন্য অবধারিত করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!!



          মাশা-আল্লাহ! জাযাকাল্লাহ!
          কখন যে পড়া শেষ হয়ে গেল টেরও পেলাম না। প্রতিটা বাক্য অন্তরের শিফাদান হলো যেন। প্রতিটা শব্দ হৃদয় ছুঁয়ে গেল। আল্লাহ আপনার কলমে বারাকাহ দান করুন, আমীন।
          মাশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনাকে দ্বীনের দ্বায়ী হিসেবে কবুল করুন।

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ

            Comment


            • #7
              Originally posted by আবু আহনাফ View Post
              মাশাআল্লাহ
              দুআর মোহতাজ সম্মানিত ভাই

              Comment

              Working...
              X