Announcement

Collapse
No announcement yet.

কালের ঘূর্ণাবর্তে তুমি হয়ে উঠবে আইমান

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কালের ঘূর্ণাবর্তে তুমি হয়ে উঠবে আইমান

    কালের ঘূর্ণাবর্তে তুমি হয়ে উঠবে আইমান

    প্রিয় যুবক ভাই!
    ★একদিনে-একরাতে এবং একেবারেই কোন কিছু হয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। একদিনেই কি আমি হাঁটতে শিখেছি? না বরং বারবার হোটচ খাওয়ার পর শিখেছি। উল্টে পড়ে গিয়ে মাথায় বেন্ডেজও লাগিয়েছি। মসৃণ মুথনিটা ডোরাকাটা হয়ে গেছে। হাতের কব্জিতে এখনো ব্যথা অনুভব করি। পায়ের টাকনুর ব্যথাতো সারছেই না। যাক ভালোই হয়েছে সৃষ্টিকর্তা ওখানে গোশতের চেয়ে হাড্ডির পরিমাণ বেশি রেখেছেন। তা না হলে কি যে একটা অবস্থা হতো, বলেন তো? এত কিছুর পরও এখন হাঁটতে পারি। শত শুকরিয়া-হাজার শুকরিয়া। কিন্তু যারা জন্মগতভাবেই পঙ্গুত্ববরণ করেছে। বা শিখতে গিয়ে এদের কাতারে নাম লিখিয়েছে। তাদের তো নিয়ে একটু ভাববেন! তা না হলে বড় নাশুকরিয়া হয়ে যাবে।

    আপনি শুধু হাঁটতে পারছেন না বরং দৌড় প্রতিযোগিতায় শরিকও হতে পারছেন। হরেক রকমের পুরষ্কার ছিনিয়ে এনেছেন আপনার মতই হাঁটতে পারা লোকদের পিছনে ফেলে।★

    ★একেবারেই কি আমি কথা বলতে শিখেছি? জন্মের পর চিৎকার দিয়েই শুধু চেয়ে থাকতাম। পরিচিতদের সাথে একটু একটু আ আ করে কথা বলতে চেষ্টা করতাম। তারা কিন্তু হাসেনি বরং খুশি হতো। মা-বাবার একটু একটু সাধনা। পরিবারের সদস্যদের আলতো আলতো আদর আমার ভিতর কথা বলার স্পৃহা তৈরি হয়েছে। কতদিন লেগেছে?

    একদিন আর দুদিন? তিন তিনটা মাস না তিন তিনটা বছর? তিন তিনটা বছর। এখন আমি বাবা-দাদা অনায়াসেই বলতে পারি। লালাযুক্ত ভিজা ছোট্ট নরম মুখটা মায়ের মুখের সাথে ঘসতে ঘসতে আম্মা আম্মা জবতে থাকি।

    সময় গড়িয়ে যায় মুখের জড়তা কাটিয়ে উঠি। এখন আমি একজন শুদ্ধভাষী। এখন আমি অনর্গল বাংলায় কথা বলতে পারি। আমার পেছনে পরিবারের অবদানের কথা একেরারেই ভুলে গেলাম। তারপরও তো কথা বলতে পারি। রবের গুণকির্তন গাইতে পারি। আল্লাহ আল্লাহ যিকির করতে পারি। বাঘের হুংকার ছুঁড়ে দিতে পারি। সিংহের ন্যায় গর্জে উঠতে পারি। সত্য মিথ্যার বাকবিতন্ডায় বিজয়ী হতে পারি। তবুও তো আমি কথা বলতে পারি।

    ★একদিনেই কি আমি সাঁতার শিখেছি? বারবার ডুবে যেতে যেতে তারপরই না পানির উপর ভেসে থাকার কৌশল শিখেছি। ২০১৪ এর কথা। সাঁতার শিখার আগ্রহ নিয়ে খানিকটা গভীর এমন একটা পুকুরে গিয়েছি। বিসমিল্লাহ বলে নেমে পড়লাম। পুকুরের সিঁড়িতেই সাঁতরাতে লাগলাম। একদিন দুদিন তিনদিন-একমাস। কিছুটা সাঁতরাতে পারি। তারচেয়ে বেশি পানি খেয়ে ফেলি।

    একদিন আমার এক চাচাতো ভাই আমাকে পুকুরে নিয়ে গেলো। সে পা উপরে দিয়ে মাথা নিচে দিয়ে সাঁতরায়। পানির দ্বীপে তার জন্ম। বুঝতেই পারছেন কতটা পারদর্শী। সে জানে আমি একটু একটু সাঁতার শিখেছে। তাই হঠাৎ দিলো এক ধাক্কা। আমি উল্টে পড়ে গিয়ে পানির নিচে। ৫/৬ হাত গভীর নিচে। মনে মনে কালিমা পড়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম। কিন্তু রবের কারিশমা দেখে কে! আমি আলতো করে সাতারুদের মত হাত বারি দিতেই উঠে এলাম পানির উপরে।

    ★অপরিচিত এক ভাই টানাটানি করে পুকুরের সিঁড়িতে উঠালেন। পেটে কয়েক লিটার পানি ধারণ করেছি। তবে অদ্ভুত এক ব্যাপার। ডাক্তার ছাড়াই অপারেশন চলছে পানি নিষ্কাশনের। কেউ পেটে কেউ পিঠে চাপ দিচ্ছে। কেউ আবার মুখে ফুঁক। শরীরের ম্যাজ ম্যাজ ব্যথার ভাবটাও দূর হলো আলহামদুলিল্লাহ সুস্থও হয়ে উঠলাম।

    এইযে সাঁতার শিখেছি আলহামদুলিল্লাহ আজ অব্দি ভুলি নাই। যদিও নদীর ধারে কাছে যাই না। তবে ঘরের সাওয়ার ছেড়ে পানি জমিয়ে সাঁতরাই। হাসির কথা তাই না? কিন্তু এরপরও আমি সাঁতার শিখেছি।

    এভাবে জীবনের সর্বক্ষেত্রেই দেখা যায় একদিনে এবং একেবারেই কোন কিছু হওয়া যায় না বরং চেষ্টা-সাধনায় লেগে থাকতে হয় তাহলেই সফলতা আসে।

    ★★আমি হিন্দের একজন বীর মুজাহিদ হবো। আমি কাশ্মীর রণাঙ্গনের একজন শ্রেষ্ঠ কমান্ডার হবো। আমি বাংলার জমিনের একজন উৎকৃষ্ট সৈনিক হবো। আমি হবো সমাজ সংস্কারক । আমি হবো মিডিয়ার জগতের একজন ধিমান ও বিদগ্ধ গবেষক । আমি হবো উম্মাহর একজন মুসলিহ ও মুযাক্কী রাহবার । ইবাদতের জায়নামাযে অন্তরালোকসম্পন্ন এক বান্দা । ইলমের ময়দানে এক বিজ্ঞ মুফাক্কির । তাসাওফের সাধনায় এক আত্মত্যাগী । অস্ত্র সাহিত্যের পারদর্শিতায় এক সমরবিদ। ★★


    প্রিয় যুবক ভাই! মাশাআল্লাহ। জাজাকাল্লাহ।
    তোমার প্রতিভাগুলো হুবহু মিলে যায় কমান্ডার মুসা বিন নুসাইরের সাথে। কমান্ডার আব্দুর রহমান আদ-দাখিলের সাথে। কমান্ডার ইউসুফ বিন তাশফীনের সাথে।

    নিশ্চয় তোমার মা সালাহুদ্দিন আইয়ূবী মায়ের মত পরহেজগার। মেধা ও গুণে বুদ্ধিদীপ্ততায় দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তাঁর মা হুমা হাতুন ছেলে সালাউদ্দিনকে ৪ বছর বয়সে পাহাড়ের উপত্যকায় নিয়ে যেতো আর বলতো বাবা! ঐ যে দেখছো রাজ প্রাশাদটা! তুমি সেটা বিজয় করবে। ছোট্ট ছেলে বলতো- মা কীভাবে করবো? সরলমনা মায়ের উত্তর ছিলো-বাবা! আল্লাহর সাহায্য নিয়ে। প্রিয় হাবিবের সুন্নাহর অনুস্বরণ করে। সালতানাত দিয়ে। মায়ের দুআ পেয়ে। আল্লাহ কিন্তু তাই ঘটিয়েছেন।

    ★তোমার মাও মনে হয় তাই করতো এজন্যই আজ তুমি হিন্দ বিজয়ের স্বপ্ন বুনছো। সুবহানাল্লাহ!

    এই ফাঁকে আমরা একটু ইমাম শাফী রাহিমাহুল্লাহ এর মায়ের কথাটা শুনে নেবো। বিরক্তি বোধ করছো নাতো? আমার ছেলে ছোট্ট অবস্থায়ই তীরন্দাজি শিখার খুব সখ। প্রায় সময় বায়না ধরতো। আমি তো একজন সন্তানের মা। পীড়াপীড়িতে দিলটা নরম হয়ে গেলো। ছোট্ট শাফীকে মক্কায় নিয়ে চললাম। ইমাম শাফী রাহিমাহুল্লাহ এর পরবর্তী অভিব্যক্তি- তীরন্দাজিতে আমি এতটাই পারদর্শী হয়ে উঠি দশটা নিশানার মধ্যে দশটাই ভেদ করে ফেলতে পারি।

    আমার তো মনে হচ্ছে তোমার মাও তোমাকে এই পরিমাণ যুদ্ধের কাহিনীগুলো শুনিয়েছেন যে, তুমি শুধু সারাক্ষণ হিন্দের মানচিত্র নিয়ে যুদ্ধের ছক আঁকতে থাকো। সুবহানাল্লাহ!!


    ★তবে যুবক ভাই!
    এ প্রতিভাগুলো তোমার মধ্যে একদিনে হয়ে উঠেনি। একেবারেই জাগ্রত হয়নি। যুদ্ধের ছক তুমি একদিনই এঁকে ফেলছো? না, আজ কিছু কাল কিছু প্রতিদিন একটু একটু তাই তো?

    তোমার প্রতিভার এ বাস্তব রুপরেখা দাঁড়ানো করানো একেবারেই সম্ভব। বিশ্বাস হয়? তালেবানী মোল্লাদের চিনো তো? মার্কিন ন্যাটোজোট পলায়ন করেনি?বিশ্ব শান্তিরক্ষী বাহিনী আফগান ছাড়তে বাধ্য হয়নি? এইতো বুঝে গেলে!

    তাহলে কি করতে হবে জানো?
    নিজেকে যুদ্ধের জন্য যোগ্য করে তুলতে হবে? প্রস্তুতি নিতে হবে তা আবার কিভাবে নেবে? তিলকে তাল বানাতে হবে। এর মানে হলো নিজেকে যোগ্য আলেম হতে হবে। উচু পর্যায়ের সমরবীদ বানাতে হবে। ইতিহাসের কাঠুরিয়া বনতে হবে। তবেই সম্ভব! তবেই তুমি সার্থক!!

    ★★লেগে থাকতে মুজাহিদীনদের সাথে। সুপারগুল আঠার মত। যাতে ছুঁটতে চাইলেইও ছুঁটা যায় না। মুনাফিকি করতে চাইলেও করা যায় না । গাদ্দারি করতে চাইলে সামনে শুধু দেখা যায় ধোঁয়াসা আর কোয়াশা। তাহলে সময়ের ব্যবধানে তুমি হয়ে উঠবে আব্দুর রহমান আন-নাসির। কালের ঘূর্ণাবর্তে তুমি হয়ে উঠবে আইমান আয-যাওয়াহীর। শতাব্দীর ফাঁকা থেকে তুমি বেরিয়ে আসবে ইমরান আল-কাসিম।

  • #2
    ★★কিন্তু মানুষ হিসেবে আমাদের অবশ্যই জানা উচিত। এই দুনিয়া আমাদের জন্য কখনোই নির্মল আর নির্ঝঞ্ঝাট হবে না। জীবনের একটা পরম বাস্তবতা হলো- জীবন কখনোই সোজা ও সমান্তরাল হয় না। এই জীবন হলো দুঃখ-ক্লেশ-কষ্ট দিয়ে ভরা। ওয়াল বা'ছা ও ওয়াদ দর'র এর আবরণে ঢাকা।★★

    Comment


    • #3
      জাযাকাআল্লাহ্ ভাই! খুবই উত্তম পোষ্ট.. আল্লাহ তায়া-লা আমাদেরকে বোঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন,আমিন।

      Comment


      • #4
        জাযাকাআল্লাহ্ ভাই! খুবই উত্তম পোষ্ট.. আল্লাহ তায়া-লা আমাদেরকে বোঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন,আমিন। amin amin ya rabbal almin

        Comment


        • #5
          মাশাআল্লাহ, খুব সুন্দর বলেছেন। জাযাকাল্লাহ
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment


          • #6
            Originally posted by abu ahmad View Post
            মাশাআল্লাহ, খুব সুন্দর বলেছেন। জাযাকাল্লাহ
            জাজাকাল্লাহ! মুহতারাম খাছ করে দুআ চাই মাকবুলিয়্যাতের।

            Comment


            • #7
              অসাধারণ লিখুনি আল্লাহ ভাইজানকে উত্তম বিনিময় দান করুন।

              Comment


              • #8
                Originally posted by উবাইদা আল হিন্দ View Post
                অসাধারণ লিখুনি আল্লাহ ভাইজানকে উত্তম বিনিময় দান করুন।
                ইয়া রব! মুহতারাম ভাইকে আপনার দ্বীনের পথে অবিচল রাখুন। আমীন

                Comment


                • #9
                  জি ভাই অনেক সুন্দর হয়েছে লেখা, আল্লাহ আমাদের শহিদ হওয়ার আগ পর্যন্ত অটল থাকার তৌফিক দান করুন।
                  فَقَاتِلُوْۤا اَوْلِيَآءَ الشَّيْطٰنِ

                  Comment

                  Working...
                  X