Announcement

Collapse
No announcement yet.

রাতের শেষ প্রহরের আকুতি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রাতের শেষ প্রহরের আকুতি

    রাতের শেষ প্রহরের আকুতি

    বান্দা ও তাঁর প্রভূর মাঝে প্রেম বন্ধন সৃষ্টি হওয়ার এক মুখ্যম সময়। রাত্রির শেষভাগে কপর্দকবান্দা যখন তাঁর স্বত্ত্বার সামনে অবনত হয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে তখন আল্লাহ ভীষণ খুশি হন। আসমান থেকে শুরু হয় ক্ষমার প্রস্রবণ । ঝিরঝির করে বর্ষণ হতে থাকে রহমতের ফোয়ারা। ঝরঝর করে ঝরতে থাকে পাপের কণিকাগুলো। হৃদয়তন্ত্রীতে তখন জারি হয় পবিত্র-স্বচ্ছ কিছু মেলবন্ধনের। যা দিয়ে গাঁথা যায় মহব্বতের মালা। স্রষ্টার সাথে। সৃষ্টিকর্তার নিখুঁত বিধানের সাথে। পালনকর্তার নিগূঢ় রহস্যের সাথে।

    পেয়ারে হাবীব রাসূল সা. রাতের শেষ প্রহরে নিয়মিত সালাত আদায় করতেন। প্রিয় সাহাবীদেরকেও সর্বদা এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করতেন।
    কারণ শেষ প্রহরের সালাত হলো মুমিনবান্দার তাকওয়ার সিঁড়ি। পরহেজগারিতা স্পর্শ করার মজবুত রশি। মুত্তাকী বান্দায় পরিণত হওয়ার স্বঘোষিত বাণী।

    প্রিয় যুবক ভাই!
    রাসূল সা. যে আমল সর্বদা করেছেন তাঁর উম্মতের জন্য এটা মহা গণিমত। পবিত্র কুরআনে রাতের শেষ প্রহরে সালাতের জন্য বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়েছে। যাকে বলা হয় তাহাজ্জুদের সালাত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে থাকো। এ তোমার জন্য আল্লাহর অতিরিক্ত দয়া ও অনুগ্রহ। শিগগিরই আল্লাহ তোমাকে উভয় জগতে মর্যদায় ভূষিত করবেন। [১]

    রাসূল সা. নিজের উপর তাহাজ্জুদের সালাতকে বাধ্যতামূলক করে নিয়েছিলেন। অক্ষমতা ছাড়া তিনি জীবনে কখনোই তাহাজ্জুদের সালাত পড়া থেকে বিরত হননি। তবে উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য এটা সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা। অর্থাৎ এ নামাজ আদায়ে অশেষ পুণ্য লাভ করা যায়। কিন্তু আদায় করতে না পারলে কোনো গুনাহ হবে না।

    নবী করিম সা. বলেছেন-
    যে ব্যক্তি নিয়তের সঙ্গে সওয়াবের আশায় মাহে রমজানের রোজা পালন করে, তার বিগত জীবনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় মাহে রমজানের রাতে কিয়াম করে, তার বিগত দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে কিয়াম বা রাত জেগে ইবাদত করে, তার বিগত জীবনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ [২]

    ঘুমিয়ে থাকা পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। নিশিরাতে চারদিক কোথাও কোনো শব্দ নেই। কোথাও কোনো আওয়াজ নেই। কোলাহল তো আরো আগেই শূন্য সফরে বেরিয়ে পড়েছে। সে সময় জেগে ওঠে খোদার প্রেমিকরা, খোদার আশেকরা। আল্লাহর প্রেমে ডুবে থাকে যাদের মন-দিল। তাঁরা পবিত্র হয়ে সালাতে দাঁড়ায়। মিষ্টি স্বরে কুরআন তিলাওয়াত করে। করুণস্বরে কাঁদে। বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে। নিজের প্রয়োজনে। অন্যের প্রয়োজনে। উম্মাহর স্বার্থে। এভাবেই রব প্রেমীরা তাদের জীবনকে পরিচালনা করতে থাকে। এভাবেই রব প্রেমীরা নিজের ইমানের খুঁটিগুলোকে মজবুত করতে থাকে। [০]

    তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহুওয়াতাআলা বলেন, “এ সমস্ত লোকেরা মুহসিন তথা সৎকর্মপরায়ণশীল ও মুত্তাকী। তাদের জন্য রয়েছে চিরন্তন সুখ ও অনাদিকালের আনন্দ এবং আল্লাহর রহমত।

    অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে "নিশ্চয়ই মুত্তাকী বান্দা বাগ বাগিচা এবং ঝর্ণার আনন্দ উপভোগ করতে থাকবে এবং যে নিয়ামত তাদের প্রভূ মহান আল্লাহ তাদেরকে দিতে থাকবেন সেগুলো তাঁরা গ্রহণ করবে। কারণ নিঃসন্দেহে তাঁরা এর পূর্বে দুনিয়ার জীবনে নেক আমলওয়ালা ছিল। তারা রাতের খুব অল্প অংশই ঘুমাতো এবং শেষ রাতে ইস্তেগফার করতো। [৩]

    পেয়ারে হাবীব সা.বলেছেন, রাতের শেষভাগে আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কেউ আছো কি আমাকে ডাকার! আমি যার ডাক শুনবো। কেউ আছো কি আমার কাছে প্রার্থনা করার! আমি তাকে ক্ষমা করবো।[৪]

    পবিত্র রমজান মাসে রাত জাগরণ করে যাঁরা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন এবং অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করেন। তাঁরা আল্লাহর অপার রহমতের মধ্যে বিচরণ করেন। আল্লাহর দয়ার দৃষ্টি পড়ে তাঁদের উপর। নবী করিম সা. বলেছেন- আল্লাহ ওই ব্যক্তির ওপর রহমত নাজিল করেন, যিনি রাতে নিদ্রা থেকে জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন এবং তাঁর স্ত্রীকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে দেন। অতঃপর তিনি তাঁর স্ত্রী তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। এমনকি যদি তিনি (স্ত্রী) ঘুম থেকে জাগ্রত হতে না চান, তাহলে তাঁর মুখে পানি ছিটিয়ে দেন। [৫]

    রোজাদার তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি অধিক সম্মানের অধিকারী হন। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘মুসলমানদের মধ্যে কুরআনে অভিজ্ঞ ও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি সম্মানের অধিকারী হবেন।[৬]

    অন্য এক হাদীসে রাসূল সা: বলেন, "ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট নামাজ হল রাতের নফল অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজ।[৭]

    বাস্তবে শেষ রাতের এ তাহাজ্জুদ নামাজ মনন-মস্তিষ্ককে করে তোলে পবিত্র, স্নিগ্ধতার আভাশে জড়িয়ে রাখে সমস্ত দিন। চরিত্রকে নির্মল করে তুলে দিনকেদিন।

    পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
    রাতে ঘুম থেকে উঠা মনকে দমিত করার জন্য খুব বেশি কার্যকর এবং সে সময়ের কুরআন পাঠ বা জিকির একেবারে যথার্থ। [৭]

    তাহাজ্জুদ গুজার ব্যক্তিকে আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন-তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁর নেক ও ইমানদারিতার। কুরআনে বিধৃত-তাঁরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা, যারা তাদের প্রতিপালকের দরবারে বিনয়ী হয়ে সেজদা করে এবং দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাটিয়ে দেয়। [৮]

    প্রিয় যুবক ভাই!
    কে না চায়! আমি বরকতের সাগরে হাবুডুবু না খাবো। রহমতের শিশির ছোঁয়া না পাবো। সন্তুষ্টির এক খন্ড পাথরকণা না কুঁড়াবো। ভালোবাসার মেলবন্ধনে আবদ্ধ না হবো। প্রিয় রব ও বরের দূতের পবিত্র সান্নিধ্য হাসিল না করবো।[৯]

    প্রমাণাদিঃ
    ১.সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত নং ৭৯
    ২.বুখারি ও মুসলিম
    ৩.সূরা জারিয়াত, আয়াত নং ১৫-১৮
    ৪. সহীহ বুখারী- হাদীস নং: ৫৯৬২
    ৫.আবু দাউদ ও নাসাঈ
    ৬.মুসনাদে আহমদ,হাদীস নং: ৮০২৬
    ৭.সূরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত নং ৬
    ৮.সূরা ফুরকান,আয়াত নং ৬৩-৬৪
    ৯. একগুচ্ছ সুখ-পৃষ্টা নং ২৭
    ০.ইবনুল জাওযী।

  • #2
    ইয়া আল্লাহ! আমাদের গোনাহের কারণে রাতের শেষ প্রহরের বারাকাহ থেকে আমাদেরকে মাহরুম করবেন না!

    নবী করিম সা. বলেছেন-
    সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম > পূর্ণ দরুদ লেখাই আদব ও খাঁটি মহব্বতের পরিচায়ক।
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুন।
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post

      সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম > পূর্ণ দরুদ লেখাই আদব ও খাঁটি মহব্বতের পরিচায়ক।
      আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুন।
      রব্বে কারীমের সহযোগিয়ার মুহতাজ।

      Comment


      • #4
        Originally posted by নুআইম আন-নাহহাম View Post
        ...কুদরতি পাঁয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে...
        মুহতারাম ...আল্লাহর স্বত্বার সামনে অবনত হয়ে...

        Comment


        • #5
          তাহাজ্জুদ গুজার ব্যক্তিকে আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন-তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন তাঁর নেক ও ইমানদারিতার। কুরআনে বিধৃত-তাঁরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা, যারা তাদের প্রতিপালকের দরবারে বিনয়ী হয়ে সেজদা করে এবং দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাটিয়ে দেয়। [৮]
          হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে আপনার প্রিয় বান্দাদের অন্তভূর্ক্ত করুন।
          আমাদের গুনাহের কারণে মাহরুম করিয়েন না।


          সম্মানিত পোস্টকারী ভাইয়ের লেখায় আলাদা একটা তাসির আছে।
          দুআ করি! আল্লাহ আপানাকে দুনিয়া-আখিরাত উভয় জগতে সম্মান দান করুন। আমিন
          গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

          Comment


          • #6
            আল্লাহ তায়া-লা আমাদেরকে তার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন, আমিন।

            Comment


            • #7
              Originally posted by Sa'd Ibn Abi Waqqas View Post
              মুহতারাম ...আল্লাহর স্বত্বার সামনে অবনত হয়ে...
              শুকরিয়া মুহতারাম। জাজাকাল্লাহ!! আমি এমন কয়েকজন রাহবার খোঁজছিলাম যারা আমার বড় ছোট ভুলগুলো শুধরিয়ে দিবে।

              Comment


              • #8
                Originally posted by Ibrahim Al Hindi View Post
                হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে আপনার প্রিয় বান্দাদের অন্তভূর্ক্ত করুন।
                আমাদের গুনাহের কারণে মাহরুম করিয়েন না।


                সম্মানিত পোস্টকারী ভাইয়ের লেখায় আলাদা একটা তাসির আছে।
                দুআ করি! আল্লাহ আপানাকে দুনিয়া-আখিরাত উভয় জগতে সম্মান দান করুন। আমিন
                ভাইদের নেক সোহবত আর নেক দুআ অনের দূর আমাকে ইনশাআল্লাহ এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমিন আমিন।

                Comment


                • #9
                  Originally posted by Rumman Al Hind View Post
                  আল্লাহ তায়া-লা আমাদেরকে তার প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন, আমিন।
                  আমিন! আমিন!! ইয়া রাব্বাল আলামিন।

                  Comment

                  Working...
                  X